দীপাকে দেখে চেনা যায় না এমন নয়, চেনা যায়। যদিও অনেকখানিই বদলে গেছে মনে হচ্ছে । বদলটা ঠিক কোথায় আমি ধরতে পারি না, মেয়েদের এই ব্যাপারগুলোতে আমি খুবই অজ্ঞ। হয়তো খানিক শুকিয়েছে নইলে হয়তো চুল কেটেছে কোন নতুন স্টাইলে, সে যাই হোক তবু তার মাঝে একধরনের উৎফুল্ল ভাবই আছে মনে হয় আমার।
আমি এমনটা আশা করিনি, ভেবেছিলাম এই কয়মাসের ধকলে তার চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে , একটা ময়লা শাড়ি পরনে , ক্লান্ত আর বিদ্ধস্ত দীপাকে দেখতে পাব সামনে।
আমাকে দেখে দূর থেকেই হাত নাড়ে সে। আমি সিগারেট ফেলে দিয়ে এগিয়ে যাই, চেয়ারটায় বসি।
তারপর হেসে বলি - কী রে দীপুমনি, আছিস কেমন ?
দীপা ভুরু কুচকে বলে - দীপুমনি !
আমি তরল গলায় বলি - কইলাম আর কি , একটু আদর কইরা। দীপুমনি মানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ,তোর লগে নামের অনেক মিল।
দীপা বলে , তোর ফাজলামোর স্বভাবটা এখনও গেল না । তারপর তুই আছিস কেমন ?
দীপা কেমন আছে সেটা জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন ছিল আমার। ডিভোর্সের চিঠিটা সে পেয়েছে কয়েকমাস আগে , বন্ধুরা সবাই তার বিপদে ঝাপিয়ে পড়েছিল , আসলে ঝাপিয়ে পড়া বলাটাও ঠিক হচ্ছে না , কেউ কিছু করেনি , শুধু ফোনে খোঁজখবর নিয়েছে, আমাদের একটা ক্লোজ মেইল গ্রুপ আছে, সেখানে টুকটাক খবর দিয়েছে আর অনেক অনেক হা হুতাশ করেছে।
আমি কিছুই করিনি, সময়ের সাথে সাথে বন্ধুত্ব বোধহয় ফিকে হয়ে যায় কিছুটা, নইলে যে দীপা একসময় আমার জিগরী দোস্ত ছিল তার এই বিপদের দিনে আমি খোঁজখবর নিলেও পারতাম।
আসলে ঠিক বুঝতে পারিনি কিভাবে খোঁজ নেয়া যায়, আমি তাকে ফোন করে কী বলতে পারি, তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেছে , সেই স্বামী যাকে আমরা সবাই রায়হান ভাই বলে ডাকতাম , গরীব নার্সের ছেলে সেই লোকটি যে নিজের চেষ্টায় একটা ভালো অবস্থানে চলে গিয়েছিল, সেই লোকটা যখন অকারনেই দীপার মতো একটা ভালো মেয়েকে রেখে চলে যায়, তখন আমরা সেখানে কী বলতে পারি।
আমি তাই দীপার খোঁজখবর নেই না , গ্রুপ মেইলে মাঝে মাঝে টুকটাক খবর পেলেও সযতনে সেই মেইলের উত্তর দেয়া থেকে বিরত থাকি। যা হওয়ার হোক , আমরা ভার্সিটি ছেড়েছি আজ ১২ বছর আগে, এই সময়ে এসে কারো কারো সংসার ভাঙবে , সেটা নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু আমি পাই না।
আমি তাই স্বাভাবিক গলায় তাঁর প্রশ্নের উত্তর দেই । বলি , ভালো আছি, তুই কেমন আছিস ?
আমার আর থাকা - দীপা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
আমি শান্তনা দেয়ার সুরে বলি- ধ্যাত ! এমন ভাব করছিস যেন জলে পড়ে গেছিস। এসব তো আজকাল হরদম হয় । হায়ার এন্ড ফায়ার সিস্টেম। বিদেশে তো আরো সহজ , বিয়েশাদীর ঝামেলাই উঠে যাচ্ছে, লিভ টুগেদার করছে সবাই।
দীপা বলে - বলা সহজ, কিন্তু নিজের উপর পড়লে সহ্য করা কঠিন।
আমি এবার খানিকটা খেপে উঠি।
- শোন দীপা, তুই জলে পড়ে যাসনি। তোর নিজের একটা চাকুরি আছে, বাচ্চাকাচ্চার ঝামেলা থাকলেও না হয় একটা কথা , সেসবও নেই , তোর আর চিন্তা কী।
কিছুদিন যাক, তারপর ভালো একটা ছেলে দেখে আবার চিন্তা করা যাবে।
দীপা কথা ঘুরায়- তোর হাতে কি সময় আছে ? বসবি কিছুক্ষন ? অনেক দিন পরে তোর সাথে দেখা হলো।
আমি কিছুটা রাগ করে বলি - তুই আমাকে এরকম ভাবলি ? তুই না আমার দোস্ত ? তুই ডেকেছিস আর আমি দুনিয়ার সব কাজকর্ম নিয়ে এখানে এসেছি নাকি। আমার হাতে সময় আছে, অফুরন্ত সময়।
আমরা কফির অর্ডার দেই। কফির দোকানে বিরিয়ানী পাওয়া যায় না কেন সেটা নিয়ে আমাদের সেই ভার্সিটি জীবনের একটা চরম রসিকতা স্মরণ করে হাসাহাসি করি।
দীপা অনেকটাই সহজ হয়।
আমি বলি - দোস্ত, এসব ভুলে যা প্লিজ। এসব মনে রাখার কিছু নেই। ট্রাস্ট মি, আজ থেকে ৫ বছর পরে তোর কাছে মনে হবে এগুলো গতজীবনের ঘটনা, তখন তুই আমি এই দিনগুলো নিয়ে হাসাহাসি করব। কষ্ট পুষে রেখে কী করবি বল ?
দীপা বলে - না রে , রায়হানের সাথে ছাড়াছাড়ি নিয়ে কষ্ট পাই না । যে যাওয়ার সে যাবেই , তাকে ধরে রাখা যায় না। কষ্ট পাই বন্ধুদের আচরনে !
এবার আমি কিছুটা অবাক হই। বন্ধুরা আবার কী করল , আমি জিজ্ঞেস করি ?
তুই জানিস , রিক্তা আমার নামে যা তা বলছে আমারই নাকি দোষ, তাই ডিভোর্স হয়েছে।
আমি আবার বলি - ধুর। রিক্তা এরকম বলবে না। কেউ এগুলো তোর কাছে লাগাচ্ছে।
যদিও বলি , তবু আমি জানি রিক্তা এরকম বলছে। আরো কয়েকজনই বলছে, টুকটাক আমার কানেও আসে, আমি বিম্বাস করি না। দীপা খুবই ভালো একটা মেয়ে , ভার্সিটির জীবনে সে আমাদের বন্ধু ছিল , ক্লাসের গণ বন্ধু নয়, আমাদের ক্লোজ গ্রুপের বন্ধু , আমরা বলতাম - মায়ের পেটের বন্ধু।
তবু ফিসফাস হয় , বন্ধুদের চেয়ে বন্ধুদের বউরাই বেশি করে , দীপা তো আর তাদের বন্ধু নয় । রিক্তাও আমাদের ক্লোজ গ্রুপের বন্ধু , তার পক্ষে বলা অসম্ভব নয়। কিছুটা কূটকচালি স্বভাব আছে তার।
তবু আমি জোরগলায় অস্বীকার করি । আমি চাই না রিক্তা, আমাদের বন্ধু রিক্তা এরকম বলেছে এটা দীপা বিশ্বাস করুক। বন্ধুদের থেকে এরকম আচরন পাওয়া কষ্টকর।
দীপা আমার কথার প্রতিবাদ করে না। আবার কথা ঘুরায়। বলে , তোর ফ্ল্যাটটার কী খবর ?
আমি ডেভেলপরকে গালি দেয় বলি - হারামজাদা খালি ঘুরাচ্ছে। জুনে হ্যান্ডওভার দেয়ার কথা ছিল, মনে হয় না ডিসেম্বরের আগে হবে।
দীপা বলে - তোর ফ্ল্যাটে আমাকে একটা ঘর ছেড়ে দিস। আস্ত একটা বাসা নিয়ে একা থাকতে ভালো লাগে না।
আমি জানি রসিকতা করে বলা, দীপা কখনোই আমার বাসায় উঠে আসবে না , সে ওরকম মেয়েই না । সবসময় মাথা উঁচু করে থাকা স্বভাব।
আমি বলি - কেন রে, আস্ত বাসায় তো একটা মজাই আলাদা।
দীপা বলে- বাড়িওয়ালা বাসা ছাড়ার জন্য প্রেশার দিচ্ছে। বাসা পাচ্ছি না।
বাড়িওয়ালা বাসা ছাড়ার কথা বলবে কেন ? আমি পাল্টা জানতে চাই।
ব্যাচেলরের কাছে বাড়ি ভাড়া দেবে না - দীপা চোখ টিপে রসিকতা করে।
আমি খুব অশ্লীল একটা গালি দেই। এসব কোন বিষয় না , ভার্সিটিতে আমরা হরদম অশ্লীল কথা বলতাম সবার সামনে , সেখানে , আমাদের ক্লোজ গ্রুপটায় ছেলে মেয়ে বলে আলাদা কোন বিষয় ছিল না।
আমি বললাম - তুই খানকির পোলারে বল যে তুই ঐ বাসায় চার বছর ধলে আছিস, এখন হঠাৎ করে তোরে বের করে দিলে তো চলবে না।
দীপা কিছু বলে না , হাসে। তারপর বলে - একাকী ডিভোর্সড মেয়েমানুষ খুব বিপজ্জনক।
আমি বলি - ছি: ,এটা কেমন কথা।
দীপা আবার চোখ টিপে বলে আমার কথা না , আমার বসের কথা। হারামজাদা ইদানীং প্রায়ই রাতে ফোন টোন দেয়, খোজ খবর করে ।
আমি বলি , হারামজাদেকে একটা চটকনা লাগাস একদিন।
দীপা বলে - হু, আর আগালে চটকনাই দেব।
আমি বলি , তুই এক কাজ কর, রোমেলকে বল । রোমেল দাবড়ি দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
রোমেল আমাদের সবচাইতে শক্তিশালী বন্ধু , সে এই ঢাকা শহরেই কালো বাহিনীর সহ অধিনায়ক , আমাদের বিপদ আপদে তার কাছে গেলে সে সমাধান করে দেয়। বন্ধুমহলে একজন শক্তিশালী বন্ধু থাকার অনেক উপকারিতা।
দীপা যেন খানিকটা আতকে উঠে যেন রোমেলের নাম শুনে , খুব কম সময়ের জন্য, তবু আমার চোখ এড়ায় না।
তারপর কিছু না বলে মাথা নাড়ে।
আমি পকেট থেকে মোবাইল ফোনটা বের করি , বলি দাড়া , এখনই রোমেলকে লাগাচ্ছি।
না না , দীপা বেশ জোর গলায় বলে । আমি মোবাইল টেবিলে রাখি, তারপর জিজ্ঞাসু চোখে তাকাই ।
দীপা ম্লান হেসে বলে - তোকে কী আর বলব , আমি রোমেলকে ফোন করেছিলাম একদিন।
-সাহায্য করে নাই ? আমি প্রশ্ন করি।
দীপা মৃদু গলায় বলে , তোকে বলতে অসুবিধে নেই। রোমেলে কথাবার্তা আমার পছন্দ হয়নি।
- কেন , কী বলেছে ? আমি বুঝতে পারি না রোমেল কী এমন বলতে পারে।
দীপা মিনমিন করে বলে - থাক, বাদ দে ! তুই বুঝবি না। মেয়েরা অনেক কিছু বুঝতে পারে, একলা মেয়ে মানুষের অনেক বিপদরে এই দেশে ।
আমি কিছুটা হতভম্ব হই। রোমেল এরকম করবে আমার বিশ্বাস হয় না, আবার হয়ও । এমনিতে সে ছেলে খারাপ না , বন্ধুবান্ধবদের জন্য নিবেদিত প্রাণ। সেই ছেলে দীপার কাছ থেকে কোন সুযোগ নিতে চাইবে ,এতোদূর ভাবাটা কষ্টকর ।
আমরা আরো খানিকক্ষন কথা বলি। পুরোনো দিনের স্মৃতি নিয়ে হাসাহাসি করি। সময় গড়িয়ে যায়।
আমি এবার ঘড়ির দিকে তাকাই। উঠা দরকার।
দীপা ইঙিতটা বুঝতে পারে। বলে- চল , উঠি।
দুজনেই উঠে পড়ি। ক্যাফে থেকে বেরিয়ে ম্যাটম্যাটে বিকেলে আমি দীপার জন্য রিক্সা খুঁজি।
দীপা রিক্সাতে উঠে বসে , হাসে; তারপর আমাকে বলে - তোকে থ্যাংকস দোস্ত। অনেকদিন পরে একটু ভালো সময় কাটলো। আজকাল সবার সাথে কথা বলতে পারি না, অনেক বাঁধা এসে দাড়ায়। শুধু তুই একজন , যাকে বিশ্বাস করে কথা বলা যায়। তুই আমার খুব ভালো বন্ধু রে আনিস।
আমি মুচকি হাসি। কথার উত্তর দেই না।
দীপাকে নিয়ে রিক্সা চলে যায়।
আমি পেছনে দাড়িয়ে একটা সিগারেট ধরাই।
আমি আসলেই ভালো, আমার কোন তাড়াহুড়ো নেই, আমি দীপার বস নই, বাড়িঅলা নই, রোমেল নই।
আমি অপেক্ষা করতে পারি, খুব ধীরে ধীরে এগুতে পারি...।
মন্তব্য
মারাত্মক হইছে। সকাল বেলা কফি হাতে এরকম একটা জিনিশ পড়লাম। দূর্দান্ত!!!
শিমুলের প্রশংসা পাওয়া সহজ নয়। আপ্লুত হইলাম।
গল্পটা খুব ভাল লাগছে
আচ্ছা আপনার মালয়েশিয়া ভ্রমণের কাহিনী কি আর শেষ হবে না?
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
ধন্যবাদ নিবিড়। নিশ্চয়ই মালয়েশিয়া পর্ব একসময় শেষ করে ফেলব একটানে ।
বুড়াঙ্গুল
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
বুড়াঙ্গুল ডরাই না , মানিকের বামহাত ঢুকানোটাকে চ্রম ডরাই ।
ভয়ানক বেশি রকমের ভালো !!
পাঠকের মন্তব্য শিরোধার্য।
বেশি দেরি করলে আবার লেট হয়ে যাবে।
গল্পে জাঝা।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
যে কাজের যে রীতি ।
- চারদিকে খালি ধান্দা রে ভাই, খালি ধান্দা!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হ !
গল্পের শুরুতেই শুধু চমক আছে।
দীপুমনি বলার পরপরই ভাবছিলাম পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে কোনো স্যাটায়ার হবে। তাই আগ্রহভরে আরো পড়তে যাই, কিন্তু হোঁচট খাই, বোর লাগে। গল্পের শেষটা তখনই বুঝে গেছি।
তবে ঝরঝরে লেখা। শুধু - কফির দোকানে বিরিয়ানী পাওয়া যায় না কেন সেটা নিয়ে আমাদের সেই ভার্সিটি জীবনের একটা চরম রসিকতা স্মরণ করে হাসাহাসি করি - লাইনে হুমায়ুনীয় প্রভাব।
সোজা গল্প তো , তাই আগেই বুঝা যায়।
হুমায়ূনী প্রভাব এড়ানোর জন্যই তো রসিকতাটা ভেঙ্গে বললাম না , কিন্তু প্রভাব তো দেখি রয়েই গেল।
ভবিষ্যতে সাবধান থাকব।
আমার কাছে গল্পটি খুবই ভাল লেগেছে। লেখার শেষে যে মোচড়টি আছে, সেটাও কষ্টকল্পিত বলে মনে হয়নি। সুন্দর!
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
শেষের মোচড়টি কষ্টকল্পিত নয়। আমরা আসলে এরকমই অনেকে।
গল্পটা চমতকার লাগল৷
-----------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
ধন্যবাদ দময়ন্তী।
গল্পটা খুব ভালো লেগেছে।
আরো বড় হলে আরো কিচ্ছুক্ষণ আয়েশ করে পড়তে পারতাম।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
বড় করে লিখতে পারি না , এই এক সমস্যা ।
ভাল্লাগছে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
শুইনা খুশলাগছে।
চমকাই নাই, আরিফ জেবতিকের হাত দিয়ে লেখা গল্প তো অসাধারণ হবেই!
লজ্জা পাইলাম। কৃতজ্ঞতা।
গল্পের থিম'টা যে এমন হবে বুঝেছিলাম প্রথমেই। তবে শেষের লাইনটায় ভিন্নতা আছে, সমাপ্ত বরাবরের মতোই। কিন্তু গল্পটির মধ্যে উপন্যাসের আস্ত ছায়া আছে! যেটা ছোট গল্পে কেমন কেমন লাগে।
হু, উপন্যাসের সম্ভাবনা আছে অনেকটাই ।
কিন্তু সবগুলো গল্পতেই ঐ ছায়াটা কোথাও না কোথাও থাকে;
তবু সব গল্প শেষ পর্যন্ত উপন্যাস হয় না ।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
খুব চমকে গেলাম।
চমৎকার লাগল আপনার গল্পটা।
ধন্যবাদ অনিন্দিতা।
ঠিক ছোট গল্প মনে হয়নি, কিন্তু বড়গল্পের একঘেয়ে ভাবটাও নাই, প্লট বুঝেছিলাম, কিন্তু শেষ লাইনটা খুব ভাল লাগল। একটা চমৎকার শেষ!
--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
এটা ঠিক গল্প না , আবার গল্পও।
শেষ পর্যন্ত কাহিনীটাই আসল , আকারটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।
এক্সিলেন্ট, দুইসিলেন্ট, তিনসিলেন্ট ...
অসাধারণ !!!
বহুদিন পর আপনার লেখা পেয়ে আবার দারুণ ভালো লাগলো। ---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
এক ধন্যবাদ , দুই ধন্যবাদ , তিন ধন্যবাদ।
ভাল্লাগছে।
রাজনীতি নিয়ে এখানেও দুয়েকটা লেখা দেন, পড়ি
রাজনীতি আসলে ব্লগের দৈনন্দিন বিষয়। সচলে সাহিত্য চর্চাটা আমার বেশি পছন্দ।
[ এভোগেড্রো ] সিলেন্ট হইছে।
কিন্তু, কি হবে এরপরে ????????????????
তাই তো , এরপরে কী হবে ?
চিন্তায় ফেললেন।
চমৎকার গল্প। বিশেষ করে শেষের লাইনটা।
_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি। ( জয় গোস্মামী)
_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি। ( জয় গোস্মামী)
ধন্যবাদ রুনা ।
বেশ ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ পান্ডব মহোদয়।
আগাগোড়া নির্মেদ গল্প। আমি ভালো লেখকদের লেখা হিংসাত্মক মন নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ি, যদি কোন ভুলচুক খুঁজে পাওয়া যায়! কিন্তু আরিফ ভাই আমাকে কখনই সেই সুযোগ দেন না, এবারেও দিলেন না। অপেক্ষা পড়ে বুঝলাম আমার অপেক্ষার প্রহর আরও অনেক বাকী।
অত্যাধিক লজ্জিত হইলাম।
নিজের মাইনষের দোষ পাওয়া যায় না।
আপনার লেখার হাত ভাল বলে পড়তে ভালই লেগেছে। কিন্তু গল্পের কাহিনী খুব "শ্যালো", বিন্যাসটাও বিস্তৃত না। আরেকটু কমপ্লেক্সিটি আশা করছিলাম।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আসলে কমপ্লেক্স গল্প আমি লিখতে চাই না, " একদেশে ছিল এক রাজা, রাজার দুই রানী , সু্য়োরানী আর দুয়োরানী। " এই চিরন্তন সহজিয়া স্টাইলটা আমার পছন্দ।
কমপ্লেক্স তৈরী করার জন্য হয়তো আরেকটু চেষ্টা নেয়া যেত।
দীপাকে বিধবা বানিয়ে দিতে পারতাম , তার মৃত স্বামী তার সাথে সাথে ঘুরে , দেখে এবং এই গল্পটা সেই বলে যায় ... আনিসের জায়গায় বাড়ির দারোয়ানকে বসিয়ে দেয়া যায় ..এভাবে অনেক কিছু করে গল্পটাকে আরো জটিল করার সুযোগ আছে।
আশাকরছি ওভাবেও কখনো লেখার সুযোগ হবে।
মতামতের জন্য ধইন্যা ।
বস আমি 'শ্যালো' ব্যাপারটা নিয়ে একটু সন্দিহান। গল্পের গভীরতা মাপার কোন উপায় আছে কী? আমার কাছে কিন্তু এটাকে চারপাশের নিত্যদিনের কাহিনী বলেই মনে হয়েছে।
গল্পের গভীরতা নির্ভর করে আসলে পাঠকের নিজস্ব চাহিদার উপর।
আমাদের উপমহাদেশীয় যে গল্পধারার উত্তরাধিকার আমরা বহন করছি, সেখানে এই কমপ্লেক্স কতোটুকু প্রয়োজনীয় উপাদান আমার সন্দেহ আছে।
টানটান গল্প, সহজ কাহিনী..গল্পের এই স্টাইলটা আমার পছন্দ।
লেখার স্টাইলের চাইতে লেখার বিষয়কে আমি বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখি।
দুনিয়ার অন্য কোন জায়গার কথা জানি না, তবে এই দেশে Single Woman-দের জন্য জীবনটা যে কত ভয়ঙ্কর তা খুব ভালোভাবে জানি। এই ভয়ে ডিভোর্স না দিয়ে নরক যন্ত্রণা ভোগ করছে এমন নারীদেরও দেখেছি। বিষয়টা যেহেতু তুলেছেন তাই আরেকটু বিস্তারিত আনতে পারতেন। এই কথাগুলো নিয়ে ঘরোয়া আলোচনা হয়, আনুষ্ঠানিক লেখালেখি হয় না। গল্পের সাইজ এইটুকুই হতে হবে এমনতো কোন কথা নেই, তাই বড় হতেই পারত। কেউ কেউ তো এর মধ্যে উপন্যাসের ছায়াটা ঠিকই ধরে ফেলেছেন। যাকগে, শেষটা আপনারই অন্য একটা গল্পের মত হয়ে গেছে। তবে এর অল্টারনেটিভও কিছু ভাবতে পারলাম না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
উপন্যাসের ছায় আছে সেটা সত্যি। কখনো উপন্যাস লিখলে বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে।
এই গল্পে আরেক গল্পের ছায়া পাওয়াও স্বাভাবিক , আমরা আসলে একটা গল্পই বারবার লিখে যাই ...।
কবে যে এসব গল্পে প্লাসাইতে পারবো!!!
এক ঝটকায় বন্ধুদের মনে পড়ে গেল। খুব ভাল লাগলো পড়তে। শেষটুকু খুব সাবলিল ভাবে যেন ছুঁয়ে গেল।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর গল্পের জন্য।
নৈশী।
সচলে যাদের গল্প দেখলেই সবকিছু বাদ দিয়ে পড়া শুরু করি জেবতিক ভাই তাঁদের একজন। একজন লেখক যার লেখা গল্প প্রথম বার পড়ছি তার গল্প পড়ার পর মোটামুটি হলেই চলে। কিন্তু যার অনেক গল্প পড়া এবং যার গল্পের মান তিনিই উঁচুতে নিয়ে গ্যাছেন তার ক্ষেত্রে আশাটা আগে থেকেই ঠিক করা থাকে।
এই গল্পটা কেমন যেন সাক্ষাৎকার সাক্ষাৎকার লেগেছে। নতুন একটা চরিত্রের কথা যখন গল্পে আসলো- যেমন ধরা যাক রোমেল, তার আগমনটা কেমন যেন ওরকম সাক্ষাতকারই মনে হলো।
আপনার অন্য একটা গল্প 'আমাদের পাশের বাড়িটা' পড়ে কিছুক্ষণ ঝিম মেরে বসে ছিলাম। কারণ শেষের ধাক্কার রেশ কাটিয়ে ওঠা অত সহজ ছিল না। কিন্তু এই গল্পে কেমন যেন 'কৃত্রিমতা'টাই পাইলাম। হয়তো এরকম ঘটনা ঘটে- কিন্তু পড়ে মন সায় দিল না। গল্পের মাঝপথে এসেই বুঝে গেলাম- শেষে একটা বাঁক থাকবে। বাঁক ছিল। কিন্তু যুতসই লাগলো না (শুধু আমার কাছে)। কারণ আমার মনে হয় গল্পকার আরিফ জেবতিক এই একই মোচড় আরো ভালোভাবে দিতে পারেন। সে গল্পই হোক কিংবা 'গল্প অথবা না গল্প"ই হোক।
জানি কোনদিন- এই গল্পের ধারে কাছেও কোনদিন লিখতে পারবো না। কিন্তু পাঠক হিসেবে তো আপনার কাছে একটা দাবী আছে।
কিচ্ছু মনে করবেন না জেবতিক ভাই। আপনার গল্পের ফ্যান দেইখা এসন আবোল তাবোল কইলাম। এবং পরের গল্প পড়ে মুগ্ধতা আকাশ ছাড়ায়ে যাবে- এটা তো জানি।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আসলে সবগুলো লেখা একধরনের হয় না। আমাদের পাশের বাড়িটা- ঐ গল্পটাও এক সিটিংয়ে লেখা , এবং পোস্ট করি সময় লেখাটা পাঠকদের এতো ভালো লাগবে , এমনটা আশা করিনি। কিন্তু লেখাটা অনেক ভালো লেগেছে একথা অনেকেই বলেছেন।
অপেক্ষা গল্পটিও এক সিটিংয়ে লেখা। আমার বেসিক সমস্যা হচ্ছে তাড়াহুড়ো করা, এ কারনে বেশির ভাগ সময়েই পাঠকের পছন্দ হয় না, কিন্তু খুব ধীরে গুছিয়ে লেখাটা আমার হয়ে ওঠে না, এটা একটা বিরাট সীমাবদ্ধতা।
ভবিষ্যতে ভালো লেখার চেষ্টা করব।
হয়তো কোন একটা লেখা আপনার পছন্দের তালিকায় ঢুকেও যেতে পারে।
এর আগ পর্যন্ত শুধুই চেষ্টা ...।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
গল্পটা খুবই ভাল লাগলো।
কেমন কেমন করে জানি আমি শেষটুকু আগে বুঝতে পারিনি, হয়ত এ কারণেই ভাল লেগেছে। আর গল্পের আকারও আমার কাছে ঠিকঠাক মনে হয়েছে, এর চেয়ে বেশি হলে ঝুলে যাবার আশংকা ছিলো।
একদম লিকার আর দুধ চিনি মিলিয়ে পার্ফেক্ট এক কাপ চা!
-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
ধন্যবাদ কনফু। সদয় মন্তব্য অনুপ্রাণিত করে।
খুবই ভালো লাগলো!
ধন্যবাদ স্নিগ্ধা।
ঠিক অতোটুকুই। পর্যাপ্ত এবং পরিমিত
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
জেবতিক ভাই,
গল্পটা পোস্ট করা মাত্র পড়েছিলাম, কিন্তু কাজের মাঝে, চুরি করে। মন্তব্য করার আর সুযোগ পাই নি। পরে ঠিক ভুলে গেছি। কিন্তু এতদিন পরের মন্তব্য দেখবেন কিনা এই আশংকা নিয়েও লিখছি, চমৎকার লেগেছে। পারফেক্ট ছোট গল্প। সহজ, সরল এবং প্রাণবন্ত।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
এতোদিন পরে মন্তব্যটা পড়ে ফেললাম।
নতুন মন্তব্য করুন