দুইভাই গেছি ডিভিডি কিনতে রাইফেলস স্কয়ারে। আমার ভাইটি সব ডলারে হিসেব করে বলে দোকানী যা দেখাচ্ছে তাই কিনে ফেলছে (সেই লিস্টে থান্ডারক্যাটস্ কার্টুন সিরিজের পুরো সেটটাও ছিল)। আমি হলাম অ্যাসিসট্যান্ট। হু-হা বলাই কাজ আমার, তারও খুব একটা মাথাব্যথা নেই আমার "মূল্যবান" মতামত নিয়ে। হঠাৎ পাঁচটা ডিভিডির একটা সেট নিয়ে সে ঘুরে দাড়াল আমার দিকে। কিছু বলার আগেই আমি বললাম, "নিয়ে নাও.."। আমার ভাই সেটা শুনলো কিনা বোঝা গেল না।
"এইটার BluRay ভার্শন হল বেস্টসেলার..", বলতে গিয়ে তার চোখ খানিকটা চকচক করে উঠল, "আব্বার জন্য নেই.."
আমি বাড়তি কোন উৎসাহ ছাড়াই যথারীতি মাথা ঝাকাই
বাড়ি গিয়েই যে সে ডিভিডি দেখানো শুরু করবে সবাইকে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। ডিস্ক চালানোর পরে কারো কোন উত্তেজনা দেখা গেল না, আমি ব্যস্ত আমার নতুন L লেন্স নিয়ে, বাবা ব্যস্ত মা-র চোখ এড়িয়ে পানে আরেকটু জর্দা ঢালতে।
"A hundred years ago, there were one and a half billion people on Earth. Now, over six billion crowd our fragile planet. But even so, there are still places barely touched by humanity. This series will take you to the last wildernesses and show you the planet and its wildlife as you have never seen them before."
ন্যারেশন দিয়ে শুরু হল। এই খসখসে গলাটা আমরা সবাই চিনি, সেই "Life on Earth" থেকে, আর কেউ না, ডেভিড অ্যাটেনবরো। আমরা এবার একটু নড়েচড়ে বসি, শুরু হয় আমাদের "Planet Earth" দর্শন..
প্ল্যানেট আর্থ প্রানীজগৎ নিয়ে ডকুমেন্টরী এবং সম্ভবত আমাদের সময়ের শ্রেষ্ঠ প্রকৃতি বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র। বিবিসি-র উদ্যোগে তৈরি এই প্রামাণ্যচিত্রটির প্রযোজক অ্যালাস্টেয়ার ফদারগিল আর ধারাবর্ননা করেছেন খ্যাতনামা প্রকৃতিবিদ ও ব্রডকাস্টার ডেভিড অ্যাটেনবরো।
প্ল্যানেট আর্থ এর মতো ডকুমেন্টরী তো আগেও হয়েছে, তাহলে এর বিশ্বব্যপী জনপ্রিয়তার রহস্যটা কি? অল্পকথায় বললে, শ্রেষ্ঠতম প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্লভতম মুর্হুতগুলো বন্দীকরা..
আটান্ন মিনিটের একেকটা এপিসোডের শেষে থাকে প্ল্যানেট আর্থ ডায়রিজ বলে একটা অংশ যেখানে দেখানো হয় কি বিপুল সাধ্য সাধনা করে চিত্রায়িত করা হয়েছে একেকটি পর্ব।
কিছু উদাহরন দেওয়া যাক। উত্তর আমেরিকার হরিনের পালের পিছে তাড়া করলো নেকড়ের দল। পাল থেকে আলাদা হল একটি শাবক, তারপর শেষমেষ সে পরিনত হল নেকড়ের খাবারে। এই পুরো দৃশ্যটি ধারন করা হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার উচ্চতা থেকে মিলিটারী গ্রেডের অসাধারন শক্তিশালী জুম লেন্স দিয়ে। জাইরোস্কোপিক স্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করায় ক্যামেরা ঝাঁকুনি খেলেও ছবি দেখে মনে হবে ক্যামেরা ছিল স্থির!
সিংহের পাল বেশী ক্ষুধার্ত হয়ে গেলে দল বেধে হাতি শিকারে নামে। এই দুর্লভ দৃশ্যও ধারন করেছেন প্ল্যানেট আর্থ টিম। বিশাল বিশাল ইনফ্রারেড বাতি আর নাইটভিশন গগলস পড়ে একদম আর্মি স্টাইলে তোলা হয়েছে ভয়ংকর সেই দৃশ্য!
একটি পর্বে ছিল গ্রেট হোয়াইট শার্কের সীল শিকার। এরকম সময় হাঙরেরা পানি থেকে লাফিয়ে ওঠে কয়েক মুহুর্তের জন্য। এই দৃশ্য তোলা হয়েছে গাড়ির দুর্ঘটনা বিশ্লেষন করার জন্য ব্যবহৃত আলট্রা স্লোমোশন ক্যামেরা। সময়কে চল্লিশগুন ধীর করে দেখাতে পারে এই ক্যামেরাগুলো আর ছবি জমা হয় অসম্ভব ক্ষমতাশালী একটা কম্পিউটারে।
প্ল্যানেট আর্থ টিমের লক্ষ্যছিল শ্রেষ্ঠতম রিসোর্স ব্যবহার করে পুরো সিরিজটাকে হাইডেফিনিশনে ধারন করা যেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য দলিল হয়ে থাকে এটি। বলতেই হবে তারা সার্থক। ধন্যবাদ তাদের..
ইউটিউবের সৌজন্যে গ্রেট হোয়াইট হাঙর নিয়ে একটা ছোট্ট ক্লিপ দেখা যাক
স্নো লেপার্ডের অসম্ভব চিত্রায়ন যেভাবে হল (১/২)
স্নো লেপার্ডের অসম্ভব চিত্রায়ন যেভাবে হল (২/২)
------
কেএল ফেরার আগে বাসার কপিটা মেরে দিয়েছি ঢাকায় গেলে এই জিনিস না কেনাটা ভুল হবে।
আর যদি আমাজন থেকে যদি কিনতে চান তাহলে এইখানে ক্লিকান
মন্তব্য
চালিয়ে যান অরূপ ভাই...
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
প্ল্যানেট আর্থ যারা দেখেননি তারা অতি অবশ্যই দেখে নিন। দারুণ লেগেছে আমার ...
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আমার কাছে কিন্তু প্ল্যানেট আর্থকে একটি ভিজ্যুয়াল গিমিক মনে হয়েছে। নেচার ও ওয়াইল্ডলাইফের স্টানিং সব সটের এ এক সংগ্রহ বললে আরও ভাল হয়। স্টানিং সব সট নিতে গিয়ে তারা অনেক সিচুয়েশন তৈরী করেছে অনেকটাই আন-ন্যচুরাল।
প্ল্যানেট আর্থের "সুইট ওয়াটার" অংশ আমাদের সুন্দরবন এবং নদীর কিছু অংশ আছে (কিছু আছে অতিরিক্ত অংশে -পাইরেটেড ডিভিডি তে না ও থাকতে পারে)।
বিবিসি আজকাল (ব্যবসায়ীক কারণেই বোধ হয়) খুব বেশী গিমিক সর্বস্ব দুর্বল স্টোরির ডক্যুমেন্টরিতে বেশী উত্সাহী। বিবিসি "গ্যানজেস" ডক্যুমেন্টরিতে আমাদের সুন্দরবনের এক বাঘকে অসত্যভাবে উপস্থাপিত করে। বাঘটি ভূল প্রক্রিয়ায় গবেষনার জন্য মারা যায় কিন্তু বৃটিশ গবেষক (বিবিসির বৃটিশ প্রডিউসারের বন্ধু) ঘটনাকে অসত্যভাবে ডক্যুমেন্টরিতে উপস্থাপিত করে। উল্লেখ্য "গ্যানজেস" এর বেশ কিছু অংশ বাংলাদেশে চিত্রায়িত।
এই বিষয়ে আমার দুইটি প্রতিবেদন ডেইলি স্টারে প্রকাশিত হয় এবং বন্য বাঘের উপর ক্ষতিকর গবেষনা বন্ধ হয়।
এখানে দেখুন:
http://shossain.wordpress.com/2008/06/07/death-of-two-tigers-the-other-agendas/
এবং এখানে:
http://shossain.wordpress.com/2008/02/22/death-of-two-tigers-immature-science-in-immature-hands/
:.:::....:..::..:.::...:.:.:...:.:..:..:::....::..:...:..:.:.:....:..:.:.:.:.
To see Photos Visit: www.sirajul.com
:.:::....:..::..:.::...:.:.:...:.:..:..:::....::..:...:..:.:.:....:..:.:.:.:.
To see Photos Visit: www.sirajul.com
সিরাজ ভাই, আপনি তাহলে আছেন আমাদের সাথে!
পুরোটাই ডাউনলোড করা আছে। সবগুলো দেখা হয়নি এখনও। Pole to pole দেখে মাথাটা খারাপ হয়ে আছে।
বিবিসি-র ডকুগুলোর বেজায় ভক্ত আমি।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
সময় করে দেখতে হবে।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
ডেভিড অ্যাটেনবরো দারুন পাবলিক । একবার ন্যাশনাল জিওগ্রাফি অথবা ডিসকভারিতে একে নিয়ে সারাদিন মাতামাতি করা হয়েছিল । সেই সময়ের একটা সাক্ষাতকারে বলেছিলেন কোন জঙ্গলের মধ্যে এক দল জংলী বাস করে তাদের স্বাগত জানানর নিয়ম হল বর্শা নিয়ে তাড়া করা ।
তো অ্যাটেনবরো কে দেখে ওরকম তাড়া দেয়ার পর গাইড বলে ভয়ের কিছু নাই ওরা 'হ্যালো' কইতেছে । জবাবে অ্যাটেনবরো কোন রকমে কাঁপতে কাঁপতে বলল 'হাউ ডু ইউ ডু' ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
ইউটিউবে খুঁজে দেখি....
ক্যামেরাম্যানকে প্রশংসা করার ভাষা নেই। দ্বিতীয় পার্টের শেষ কয়েক সেকেন্ড-- অসাধারণ।
রাইফেলস স্কয়ারে তাহলে হাই ডেফ ব্লু রে পাওয়া যায়! আরো কিছু ছবির নাম দাও ম্যান, আনানোর ব্যবস্থা করি।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ব্লু-রে ডিস্ক পাওয়া যায় গুলশান-২ এর ইউনিকর্ন প্লাজার HDCity দোকানে। দাম শুরু ৪০০০/- টাকা থেকে।
আরো অন্য কোথাও পাওয়া যেতে পারে, আমার জানা নেই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
ব্লু-রে ডিস্ক পাওয়া যায় গুলশান-২ এর ইউনিকর্ন প্লাজার HDCity দোকানে। দাম শুরু ৪০০০/- টাকা থেকে
খাইসে !! এত দাম হয় কেমনে ? এরপর তো লোকজন আমেরিকা আসা শুরু করবে ব্লুরে কেনার জন্য।
সুমনও শেষ পর্যন্ত পাইরেটেড সিডি কিনবা ? কেম্নে কি !
ডেভিড অ্যাটেনবরোর কয়েকটা এপিসোড দেখেছি, বিশেষ করে মনে আছে পিপড়া নিয়ে একটা। ঢাকায় পাওয়া যায় জানতামনা। দেখি আজকে কিনতে পারি কিনা।
...........................
Every Picture Tells a Story
নেট-এ কয়েকটা পাওয়া গেছে। দেখা যাক কেমন লাগে!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কিনে ফেললাম
...........................
Every Picture Tells a Story
হুঁম, তাই করছি
...........................
Every Picture Tells a Story
নতুন মন্তব্য করুন