আমানুল হক আলোকচিত্রী ছিলেন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, সত্যজিৎ রায়, চিরায়ত বাংলা.. অমূল্য সে সংগ্রহ
যারা বিচিত্রার ঈদ সংখ্যার প্রচ্ছদের সাথে পরিচিত ছিলেন, তাদের জন্য হয়তো চিনে ফেলাটা একটু সহজ..
কিছুক্ষন আগে তিনি মারা গেছেন (রাত সোয়া নয়টা বাংলাদেশ সময়)
সচলায়তনের কিছু মানুষ তাকে নানাভাবে চিনতেন বলে এখানে পোস্ট দিলাম..
মন্তব্য
খুবি মন খারাপ হয়েছে খবরটা শুনে। ওনাকে কখনো দেখিনাই কিন্তু অরূপের মুখে শুনে শুনে ওনার অনেক কথাই জানতাম। এই সপ্তাহ দুয়েক আগেই ওনাকে নিয়ে ওনার কাজ নিয়ে আমরা গল্প করছিলাম। বিদায় আমানুল হক।
facebook
সুজোগ থাকার পরও উনাকে কাছে থেকে দেখা হলো না। দুঃখটা থাকবে সবসময়।
স্বজন হারাবার বেদনা অনুভব করছি। দেশ আজ তাঁর অনন্য এক সন্তানকে হারালো।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।
...
তার কিছু ছবি নিয়ে আরেকটা পোস্ট দেয়া যায়না?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
খুব মন খারাপ হয়ে গেল।
আমানুল হক আর্ট কলেজে বাবার ক্লাসমেট ছিলেন, ৫০এর দশকে কিছু সময় বাবার রুমমেট ছিলেন। বাবার কাছে অনেক গল্প শুনেছি ওনার।৫২'র সেই অসাধারণ ফটোগ্রাফির গল্পও।
একবার দেখেছি ওনাকে সম্ভবত ৮৮ সালে এলিফেন্ট রোডে, রাস্তার উল্টো দিক দিয়ে যাচ্ছিলেন, বাবা আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছিল .... ঐ যে লোকটা হেটে যাচ্ছে দেখেছিস? উনি ১জন সময়ের সাক্ষী! সেদিন কথা বলার সুযোগ হয়নি ব্যস্ত ছিলেন। ফটোগ্রাফি করতেন অসাধারণ, পুরানো বিচিত্রায় ছবি দেখতাম।
বাবার কাছেই শুনেছি উনি সত্যজিৎ রায়ের সাথে কাজ করেছেন!! আরও দারুণ সব ইন্টেরেস্টিং গল্প!
পরে আমানুল হকের বিষয় আমার নিজের প্রচন্ড আগ্রহ তৈরী হয় আসলে সত্যজিৎ রায়ের ১টা স্টেটমেন্টে... সত্যজিৎ রায় মনে করতেন আমানুল হকের ফটোগ্রাফি কার্তিয়ের ব্রেঁসোর (cartier bresson) সমতুল্য!!!
আমি ফটোগ্রাফির ধার দিয়েও ঘেসিনা, কিন্তু কার্তিয়ের ব্রেঁসোর বিষয় জানতাম "বাইসিকেল থিফ"এর কারণে!
নেটে খুব খুজলাম আমানুল হকের ছবি কিন্তু কোথাও পেলাম না ! বিচিত্রায় দেখা ছবির স্মৃতিও ছিল ঘোলা.... তো বাবাকেই আবার জিজ্ঞাসা করলাম (আমি তখন দেশের বাইরে)। বাবা বললো আমানুল এখনো জীবিত তুই এলে দেখা করে কথা বলিস! ২০০৮ এ দেশে গেলাম, অরুপের কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে ফোন করলাম কথা হলো কিন্তু উনি ভীষন অসুস্থ ছিলেন, দেখা হলোনা....
২০১১ তে বাবাও চলে গেলেন ... তো আমানুল হক বাবার বলা গল্পই রয়ে গেলেন আমার কাছে।
তারপরও সৌভাগ্যের বিষয় আমানুল হক ১টা বই লিখেছিলেন "প্রসঙ্গ সত্যজিৎ" নামে, সেটা দিয়েই অনেকটা চিনেছি ওনাকে। অসাধারণ তথ্যবহুল বই! অসাধারণ ফটোগ্রাফিতে ঠাসা!
হতভাগ্য বাঙ্গালী আমরা... এমন সব মানুষকে চেনার সুযোগ হয়না।
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
অনেক ধন্যবাদ সুজন দা ।
আচ্ছা একুশে পদক যারা পান তাদের কি কোন জীবনী বের করে বাংলা একাডেমি? আমার চোখে পড়েনি - তবে বের করা উচিত তাদের কর্মবহুল জীবন অন্যদেরকে জানানোর জন্য। একুশে পদক পাওয়া আমানুল হক এর জন্য শ্রদ্ধাঞ্জলি।
স্যামদা,জীবনী বের হয় নিশ্চুই, তবে কারা বের করে ঠিক জানিনা।
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
আপনার মন্তব্যটা পোস্টের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।
"প্রসঙ্গ সত্যজিৎ" বইটার কপি আছে আপনার কাছে?
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
হা আছে ফাহিম।
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
শ্রদ্ধা
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
উনার উপর আরেকটি ব্লগ লিখেছিলেন অরূপ ভাই, "একুশের সাড়া জাগানো সেই ছবিটির গল্প" নামে। আগ্রহীরা পড়ে দেখতে পারেন।
ওনার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
তুহিন সরকার।
শ্রদ্ধা...
ঈদসংখ্যা বিচিত্রার প্রচ্ছদের ছবিগুলো আজো মনে উজ্জ্বল। এক ঈদসংখ্যা বিচিত্রাতেই পড়েছিলাম খোদ আমানুল হকের লেখা - সত্যজিত রায়ের 'ঘরে বাইরে'র শ্যুটিং-এর গল্প আর ছবি নিয়ে। সেই লেখায় সত্যজিত রায়, ভিক্টর ব্যানার্জী, সৌমিত্র চ্যাটার্জী, স্বাতীলেখা'র স্থিরচিত্রগুলো চোখ বন্ধ না করে আজো দেখতে পাই। আমি সৌভাগ্যবান যে তাঁর ছবি দেখার, তাঁর মুখে ভাষা আন্দোলনের ছবি তোলার গল্প শোনার সুযোগ হয়েছে। গত বছর তাঁকে দেয়া এক সম্মাননা অনুষ্ঠানে থাকারও সুযোগ হয়েছে। তিনি যে মাপের শিল্পী সেই মাপের প্রচারণা ও সম্মান তিনি পাননি। এতে আমি অবাক হই না। আমাদের দেশে এটাই স্বাভাবিক।
ছবির প্রযুক্তি এখন যে পর্যায়ে গেছে তাতে এখন সন্ধান মেলে তাঁর এমন সব ছবি নিয়ে একটা ভার্চুয়াল গ্যালারী তৈরি করা সম্ভব। তাতে বর্তমান ও ভবিষ্যতের ফটুরে ও ফটোপিয়াসীদের উপকার হয়। তবে এটাও যে হবে না তাও জানি। আজ থেকে দশ-বিশ বছর পর এম এ বেগ বা আবুল কাশেম ড্যাডীকে কতোজন চিনতে পারবে? তাঁদের কাজের হদিসও কি তখন পাওয়া যাবে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ছবির কবিকে শ্রদ্ধাঞ্জলি
সিরাজুল লিটন
নতুন মন্তব্য করুন