১.
সপ্তাহে একবার ঢাকায় ফোন দেই। মা-বাবা দুইজন তাদের একমাত্র পৌত্রের সাথে গল্প করার চেষ্টা করেন। সেই গল্প বেশীদূর যায় না। দাদুর চেয়ে ইউটিউবের মনস্টার ট্রাক নিয়ে আমার পুত্রের অধিকতর আগ্রহ। তাই এটা সেটা জিজ্ঞাসা করে উপসংহার টানতে হয়। ফোন রাখার আগে টের পেলাম মা কি যেন বলতে চাচ্ছেন। দূর থেকে অস্পষ্টস্বরে বাবা বলে ওঠেন "এইসব আর বলার দরকার নাই"। "এইসব" প্রসঙ্গটা আমি আন্দাজ করতে পারি। "এই্সব" যে আমিও শুনতে চাই না।
২.
বাড়িতে অতিথি আপ্যায়ন পর্ব ছিল। ভদ্রলোক বিলেত থেকে চাকরি নিয়ে এদেশে এসেছেন। গপ্পে মানুষ, আসর জমে জমজমাট। দেশের কি হাল, ডলারের দাম কেমন এইসব করে শেষে "এইসব" প্রসঙ্গটাও উঠলো। খোশগল্পে বাগড়া না দিয়ে আমি রেজালার পাত্র থেকে আরেকটু ঝোল নিয়ে মন দিয়ে ভাত মাখাতে থাকি, ভাতটা শেষে আর খাওয়া হয়ে ওঠে না।
৩.
লেখালেখি করে আসলে কিছু হয়না। যা হয় তার খানিকটা লোকদেখানো, খানিকটা নামকামানো, খানিকটা হিপোক্রেসি, আর খানিকটা নির্ভার হওয়া। মানুষ মারতে গেলে চাপাতিই লাগে, কাগজ-কলমে কাজ হয়না। লিখে "বাল"-টা হয়। মাথায় চাপাতির কোপ নিয়ে অভিজিৎ রায় পড়ে থাকে টিএসসির ফুটপাথে। এখানে সেখানে লোকে আহা-উহু করে কেউ, কেউ ভাবে আপদ গেল ভালোয় ভালোয়।
৪.
অভিজিৎ রায়কে কোপাতে জঙ্গি লাগবে কেন?
ডানে-বামে হাজার হাজার ফারাবী। কিংবা কোটি কোটি।
হুদাই সবাই লাগে ছেলেটার পিছে। জাকির নায়েকের ভক্ত দেখতে দেখতে এখন আর কোন খুব ভরসা পাই না।
হয়তো ঠিকমতো খেয়াল করলে চশমা পড়া দাড়িওয়ালা ছেলেটার ছায়া দেখা যাবে আয়নাতেও।
৫.
বিড়াল নিয়ে কি শুধু বাচ্চু মিয়া আপোষ করে?
মাথায় তিনটে কোপ খেয়ে মরে কি ফায়দা?
"চাইপা যাওয়া" এখন সময়ের দাবী।
মুক্তচিন্তার মায়রে-বাপ..
অথবা, না..
৬.
"রাই জাগো, রাই জাগো, শুকশারী বলে,
তোমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে বাড়ল কারা দলে..."
মন্তব্য
তিতা হইলেও সত্য কথা
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন-“ডানে-বামে হাজার হাজার ফারাবী। কিংবা কোটি কোটি।”
দেবদ্যুতি
নাঃ, কিচ্ছু ভালো লাগছে না। লিখছিলাম, মুছে দিলাম।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
রাই জাগো, রাই জাগো, শুকশারী বলে, তোমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে বাড়ল কারা দলে
ধর্ম যেখানে রাজনৈতিক পাশা,মুক্তচিন্তা সেখানে বাকরুদ্ধ। জেগে উঠে মরার চাইতে ঘুমিয়ে থেকে স্বপ্ন দেখাও উত্তম।
নিটোল আরন্যক
কিচ্ছু কইলাম না
খালি আমার এইবারের বইয়ের শেষ ফ্ল্যাপে নিজের যে পরিচিতি লিখছি তা তুইলা দিলাম এইখানে
যদিও এইটা লেখা জানুয়ারিতে
এখনো সময়োচিত
এটাই...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
"রাই জাগো, রাই জাগো, শুকশারী বলে,
তোমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে বাড়ল কারা দলে..."- এটাই কথা।
স্বয়ম
'এইসব' ছেড়ে দেবার কথা গত দুই সপ্তাহে কতবার যে শুনেছি আর শুনে যাচ্ছি ...
ঘটনার ঘনঘটায় অনেক দীর্ঘশ্বাস জমা হয় ।
-----------
রাধাকান্ত
নিরাশা ঝিনুকের মতো। তার অন্ধকার গর্ভেই আশার মুক্তো জন্মে। ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
মাঝে মাঝে মনে হয়, শুধু আমিই ঘুমাই, মাকড়শা ঘুমায় না ?
জব্বার ফারুকী
..............................
মনের মুকুরে মন-খারাপ করা লেখাটাই উঠে আসলো। তিন বছর পূর্ণ হলো, কোন বিচার নেই। আর বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার উপর আমার দৃঢ় বিশ্বাস আছে যে এই বিচার কখনোই হবে না। শুধু আমরা, হাতেগোণা কয়জন সবসময় মনে করবো অভিজিৎ-দা কে। দীপনপুরে বই পড়তে গেলে যেমন সবসময় দীপন ভাইয়ের সেই টেবিল-চেয়ারের সামনে একবার দাঁড়াই। মন থেকে সম্মান জানাই। এটুকুই পারি আমি, এটুকুই সাধ্য।
অন্তরা রহমান
নতুন মন্তব্য করুন