প্রথমবার শালবনে গিয়ে অদ্ভুত লেগেছিল। এক পাশে চওড়া কালো ফিতার মত পিচের রাস্তাটা দিয়ে হুস হুস করে সভ্য মানুষের বাস ট্রাক ছুটছে কিন্তু রাস্তা টুকু পেরোলেই সবুজ বন। কি সুন্দর। বনের ভেতর এঁকে বেঁকে ঘুরে গেছে লাল মাটির রাস্তা। সেই পথ বেয়ে একটুখানি ভেতরে গেলেই সভ্যতার চেনা শব্দ গুলো আবছা হতে হতে মিলিয়ে যায়। তখন চারদিকে হরেক পাখির অচেনা শিস, ঝিঁ ঝিঁ পোকার তান আর হাওয়ার সরসরানি। শুকনো পাতাগুলো মাড়িয়ে মাড়িয়ে ভেতরে যেতে চোখে পড়ল গাছপালার ঘন আড়ালের ভেতরে খড়ের ছাউনি দেয়া ছোট্ট গোল একটা চালামত বসার জায়গা। বনের মাঝখানে ঐ চালাটা দেখে কেমন যেন থমকে গেলাম, ভারী ভালো লাগল। ইচ্ছে হল কোন এক ঘন বৃষ্টির ঘোরলাগা দিনে যখন চারধারের বন ভিজে মাতাল হয়ে উঠবে তখন ঐ ছাউনিটার শান বাঁধানো বেদিতে প্রিয় মানুষটার পাশে বসে থাকব। চারধারের ঝুম বৃষ্টির মাঝে ওখানে চায়ের কাপ হাতে হয়ত নিতান্তই পার্থিব দু এক টুকরো কথা বলব দুজনে, হয়ত তাও নয়। কিন্তু সবুজ পাতার ওপর জলের অলৌকিক বুনো ঘ্রানে বুঁদ হতে হতে প্রিয় হাতটা ধরে মনে হবে, আহা, বেঁচে থাকাটা কী তীব্র সুখের।
একবার গেলাম সমুদ্র দ্বীপ বেড়াতে। বিকেলের নরম আলোয় দেখি প্রবালের ফাঁকে এক লাল কাঁকড়া জলের তলায় শরীর ছেড়ে দোল খাচ্ছে। ঢেউ এর তালে তালে একবার এদিক, আরবার ওদিক, গড়িয়ে অস্থির। ভারী হিংসে হল। ইচ্ছে হল, আমিও ঐ কাঠের নৌকোগুলো একটা পেতাম, তাহলে অম্নি করে রাতভর নৌকোর পাটাতনে শুয়ে ঢেউয়ের দোলায় জীবন দুলিয়ে নিতাম। চারধারের ঝড়ো বাতাস লোনা জলের ঘ্রান নিয়ে হুটোপাটি করে কেবলি দূর সমুদ্রের গান শোনাত আর আমি দুচোখ পুরে তারাজ্বলা আকাশটা দেখতে দেখতে জীবনের ক্ষুদ্রতাকে অগ্রাহ্য করবার অসীম সাহস পেয়ে যেতাম।
কেমন শিরশিরানি ভয়ে শরীর কাঠ হতে থাকে বলে ভয়েই উঁচুতে যাইনা। কিন্তু একবার আট তলা এক বাড়ির ছাদে যেয়ে ভীষণ ভালো লেগেছিল। দরজাটা খুলে ছাদটায় পা রাখতেই হু হু হাওয়া এসে আষ্টেপৃষ্ঠে এমন জড়াল যে হুট করে একদম মন ভালো হয়ে গেল। বাড়ির পেছনটায় বোধ হয় বিস্তীর্ণ জলা। নিচের গাছপালার ফাঁক ফোকরে কাঁচ পোকার টিপের মত নীলচে পানিতে শেষ বিকেলের আলো ঝিকিয়ে উঠছে। অত ওপর থেকে পৃথিবীটা কি ভীষণ অন্যরকম। যেন পার্থিব কোন পাঁক এসে আত্মাকে ছুঁতে পাবেনা আর কখনও। অত উঁচুতে ঐ ছাদের কোনটায় দাঁড়িয়ে বাতাস মেখে এলোমেলো হতে হতে হটাৎ কেমন ঘোর লেগে গেল। ইচ্ছে হল বাতাসে ভেসে শরীরটা ছেড়ে দিই শূন্যে। মোটে তো একহাত দুরত্ব, এক পা বাড়ালেই ইচ্ছেটা পুরণ হয়ে যায়। প্রবল ঘোরে আছন্ন হয়ে নেমে গেলাম সরু কার্নিশে, লম্বা শ্বাস নিয়ে ভেসে পড়বার ঠিক আগ মুহূর্তে ডাক ভেসে এল, আপুউউ...তুমি ওখানে কেন, শিগগির চল, আজ আমাদের পুতুলের বিয়ে যে...।
পুরোটা জীবন জুড়েই মুক্তোদানার মত ছোট বড় কতরকম ইচ্ছে যে হয় আমাদের। এই রকম ইচ্ছেগুলো খুব দামি কিছু নয়, নয় অসম্ভবও। একটু গা হাত নাড়লেই পুরণ হয়ে যায় হয়ত, কিন্তু কেন যেন সব ইচ্ছে পুরণের ইচ্ছেটাই হয়না কখনও। মনে হয় থাকনা কিছু বাকি। নইলে তো জীবনটা রূপকথা হয়ে যাবে। রূপকথার কল্পলোকে তো এরকম আকাশ ভেঙ্গে বর্ষা নামেনা। ওখানে তো কচি দুটো হাত গলা জড়িয়ে বলেনা, আজ অফিস যেওনা মা, খুব করে জড়িয়ে ধরে আমার কাছে থাকো। মৃন্ময় জীবনে কত সাধ অধরা থেকে যায়। প্রিয় মানুষটার সাথে পাহাড়-সমুদ্র-মহানগর কত জায়গায় যাওয়া হয়, পাঁচতারা হোটেলের ব্যালকনি থেকে নীল সাগরের দেখাও মেলে, কিন্তু ঐ শালফুলের রেণু জড়ানো তীব্র বুনোগন্ধি স্বপ্নটাকে ছোঁয়া হয়না কখনও। পাওয়া হয়না তারাভরা ঐ লোনা জলের রাতটাও। আর প্রায়ই পুতুল খেলার মত তুচ্ছ ডাকেও জীবনের ঘরে ফিরে আসতেই হয়।
কোন এক ভেজা বর্ষার রাতে মেঘ কেটে গেলে একফালি চাঁদের আলো কখন এসে জানলা গলে বিছানায় লুটোয় । চুপিচুপি আলোটা গায়ে মুখে মেখে নিতে নিতে ভাবি, মরার আগেই মরে গেলে বাকি রইল কি। তার চাইতে এই আলোটার মত করে বাঁচা চাই। হাজার ঝড়-জলেও ম্লান হয়নি, ঠিক ঠিক মেঘ কেটে বেরিয়ে এসে হাসছে তো। ইচ্ছের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির গোলমেলে হিসেবকে এক লহমায় তুচ্ছ করে দিয়ে ঐ নীল জোছনাটুকু হাজার ভুলে ভরা, ভাঙাচোরা জীর্ণ জীবনটাকে আবার ভালবাসতে শিখিয়ে দেয় ।
তাই হয়ত ভেঙ্গে পড়তে পড়তে, ফুরিয়ে যেতে যেতে আরও একবার জীবনকে ভালোবেসে রোজদিন বেঁচে উঠি একটু একটু করে।
সব কিছুর পরেও...জীবন তো বাঁচার জন্যেই; নয় ?
মন্তব্য
আগেভাগে কিছুই বলবুনি বাবা, অন্যরাই আগে বলুক, ছেড়ে দিলুম!
তৃতীয় প্যারায়, আপনি সেই মুহূর্তে সুইসাইড করে গেলে, পছন্দনীয়'র এখন কিছু সুবিধা হত মনে হয়
একেবারে মন্তব্যের জন্য মুখিয়ে থাকা যাকে বলে পোস্ট পড়তে যা দেরি!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
@পছন্দনীয়ঃ
ওহো, আপনার পছন্দ হচ্ছে না বুঝি ? এক কাজ করুন, ঐ রাস্তায়ই ভুলিয়ে ভালিয়ে কোন একটা হাই রাইজ বিল্ডিঙের ছাদে তুলে দিন, বাকিটা আপনাতেই হয়ে যাবে
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
কী সুবিধা হতো?
ঠাম্মি তো সচল হওয়ার রাস্তায় জোরেশোরেই এগোচ্ছেন...
@কৌস্তুভঃ
এই রে, কারুর পাকা ধানে বোধ হয় খুব করে মই দিয়ে দিয়েছি, এখন আমার মৃত্যু কামনাও করছে লোকজন! কি সর্বনাশ! কিন্তু কেন যেন মনে হচ্ছে, কারুর কারুর কপালে দুর্ভোগ বোধ হয় বাকি আছে আরও কিছু
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
না না, অনার্য সঙ্গীত, ভুল বুঝছেন বেচারাকে, উনি তো লেখা পড়তে আসেন না, আসেন ঐ আইসক্রিম, জেলোপি, নারকেল নাড়ু ইত্যাদির খোঁজে । না পেয়ে পছন্দনীয়র আড়ে আমার মুণ্ডু পাত করেন
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
বেচে থাকা কি তীব্র সুখের। বেচে থাকা কি তীব্র বেদনার।
চাঁদের আলোর মত হয়তো পারিনা, তবু বেচে থাকি। প্রতিদিন।জীবন নিজেই বাচিয়ে রাখে।
এতো অদ্ভুত কেন আপনি? মনটা স্যাতস্যাতে করে দেন।
ভীষণ ভাল লাগলো।
পদ্মজা।
ধন্যবাদ পদ্মজা। লোকে বলে আমার ব্রেনের জায়গায় ভুল করে হার্ট বসে গেছে, এইজন্যেই আমার পুরা সিস্টেম উলটা পাল্টা। মন স্যাঁতস্যাঁতে করবেন না, কড়া ফ্রাই করে বয়ামে পুরে রাখুন। সময়ে কাজে দেবে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ঐ যে শঙ্খ ঘোষ নামে এক ভদ্রলোক আছেন --- কীকরে যেন মনের কথাগুলো ঠিক লিখে ফেলেন| তাঁর থেকেই ধার করে বলি
'নিভন্ত এই চুল্লীতে মা একটু আগুন দে
আর কটাদিন বেঁচেই থাকি বাঁচার আনন্দে'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
তাইতো আমি বলি, যে কটা দিন বেঁচে আছি, সূর্যে সূর্যে চলি
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আরেকটা কবিতা মনে পড়লো---
''সকল প্রতাপ হল প্রায় অবসিত…
জ্বালাহীন হৃদয়ের একান্ত নিভৃতে
কিছু মায়া রয়ে গেলো দিনান্তের,
শুধু এই –
কোনোভাবে বেঁচে থেকে প্রণাম জানানো
পৃথিবীকে।
মূঢ়তার অপনোদনের শান্তি,
শুধু এই –
ঘৃনা নেই, নেই তঞ্চকতা,
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু।''
# কিছু মায়া রয়ে গেলো: শক্তি চট্টোপাধ্যায়।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ তিথীডোর। আমাকে কবিতা টবিতা বললে পরে একটু বেকায়দায় পড়ে যাই ভাই, মানে...ইয়ে ঐ বুঝি একটু কম তো হে হে হে
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
সব কিছুর পরেও... জীবন তো বাঁচার জন্যই; নয়?
অবশ্যই, কত কাণ্ডে এই মানব জনম মেলে, এমনি এমনি বয়ে যাবে কেন ?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমার সব লেখাতেই আপনার চিন্তান্বিত চেহারা কেন ? ভালো না লাগলে কষে মাইনাস দিয়ে দিন।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ঠাকুমা, এত উচ্চমার্গীয় রচনা পড়ে বোঝার মত বয়স হয়নি আমার এখনো - তাই চিন্তিত!
এত উচ্চমার্গীয় রচনা পড়ে বোঝার মত বয়স না হলে আর এখেনে বসে ডেঁপোমি হচ্ছে কেন বাপু, কটা নারকেলের তক্তি পড়েছিল ঘরে, চিবোতে চিবোতে স্বরবর্ণ পরিচয়খানা পড়ে ফেল দিকিনি। দেখি শুরু করো, বল, অ-য় অজগর...। খবদ্দার দুষ্টুমি করবেনা, কান লাল করে দোব...
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সব কিছুর পরেও... জীবন তো বাঁচার জন্যই; নয় এটাই সবচেয়ে বড় কথা।
"জীবন তো বাঁচার জন্যেই" খুব ঠিক! খুউব ঠিক!!! লেখায়
অভিভূত ধন্যবাদ আয়নামতি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
খুব সুন্দর, মাঝে মাঝের বাক্যের কারুকাজগুলো চমৎকার।
আর হ্যাঁ, অবশ্যই বেঁচে থাকতে হবে, ভেঙে যাওয়া যাবে না, দাঁড়িয়ে থাকতেই হবে।
ধন্যবাদ কবি-মৃত্যুময়
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আপনি এত সুন্দর করে কিভাবে লেখেন?
এই রে... কই যে পালাই
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ছোট্ট একটা জীবন..
কত সুখ, কত আশা..
কত দুঃখ,ব্যাথা..
ছোট ছোট অসংখ্য মনে দাগ কেটে যাওয়া যত ক্ষন,
ভাল লাগা ভাল বাসা..
এরি মাঝে
কী অসাধারন আনন্দের এই বেচেঁ থাকা!
লেখাটা বেচেঁ থাকার মত ই অসাধারন।
ভাল থাকুন,অনেক ভাল..সবসময়..
অনেক অনেক ধন্যবাদ বিষণ্ন বাউন্ডুলে
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
সবাই আপনাকে কবিতা লিখে দিচ্ছে, আমিও দিই, আর আপনার লেখাটা পড়ে আমার এই কবিতাটার কথাই মনে হচ্ছিল। লেখার শিরোনাম ভারি পছন্দ হল, ইচ্ছে মোতি, ইচ্ছে মোতি, বাহ আর উঁচু যে কোন জায়গায় দাঁড়ালে আমারো খালি লাফ দিতে ইচ্ছা করে, কেমন একটা ঘোর ঘোর লাগে
যেতে পারি, কিন্তু কেন যাব?
শক্তি চট্টোপাধ্যায়
ভাবছি, ঘুরে দাঁড়ানোই ভাল
এত কালো মেখেছি দু হাতে
এত কাল ধরে।
কখনো তোমার করে, তোমাকে ভাবিনি।
এখন খাদের পাশে রাত্তিরে দাঁড়ালে
চাঁদ ডাকেঃ আয়, আয়, আয়
এখন গঙ্গার তীরে ঘুমন্ত দাঁড়ালে
চিতাকাঠ ডাকেঃ আয়, আয়
যেতে পারি
যে-কোনো দিকেই আমি চলে যেতে পারি
কিন্তু, কেন যাবো?
সন্তানের মুখ ধরে একটি চুমো খাবো
যাবো
কিন্তু, এখনি যাবো না
তোমাদেরও সঙ্গে নিয়ে যাবো
একাকী যাবো না- অসময়ে।
চমৎকার মন্তব্য পেয়ে ভারী আনন্দ হল আনন্দী কল্যাণ। জেনে আশ্বস্ত হলাম যে শুধু আমার একার মাথায়ই ইস্ক্রু ঢিলা না, আরও আছে, হা হা হা... আর আপনাদের সঙ্গগুণে আমিও বোধ হয় শিগগিরই কবিতা ভক্ত হয়ে যাব
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
মাঝে মাঝে এরকম ধুলোমাখা মেঠো পথে পা ছড়িয়ে বসার অবসর পেলে আরো বাঁচতে ইচ্ছে করে। এই ছোট ছোট পাওয়া গুলোর জন্যই যেন স্বার্থপর বাঁচা।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমার কল্পনার পথটা অবশ্য এরকম না...আরও মন কেমন করা...তবু এটাও ভারী ভালো।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
মন উদাস করে দেয়া লেখা! পড়েই শক্তির সেই কবিতাটি মনে পড়লো! স্ক্রল করে একটু নেমেই দেখি আনন্দী কল্যানের মনেও বাজছে সে সুর। আমার তো মনে হয়, গলিত স্থবির ব্যাঙ হয়ে হলেও আরো দু'মুহূর্ত বেশী বাঁচি। আসুন বুড়ি চাঁদটাকে বেনোজলে দূরে বহুদূরে ঝেটিয়ে তাড়িয়ে দিয়ে আমরা সকলে মিলে সাঙ্গ করে দেই জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার। যুগ যুগ জীয়ে!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ধন্যবাদ রোমেল চৌধুরী । আপনার মন্তব্য পড়া একাই একটা মধুর অভিজ্ঞতা
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
বৃষ্টিভেজা পথ ধরে যাচ্ছি, যেতে যেতে লিখাটি পড়লাম। মনের ভেতর কোথায় যেন একটা ব্যাথাতুর আবেশ তৈরী হলো। বেঁেচ থাকার যে তীব্র আনন্দ, যাতনা আর অপেক্ষা তার তুল্য আসলেই কিছু নেই। জীবন বড়ই সুন্দর, এতেটাই যে বিষাদের কোলঘেষে পড়ে থাকতে থাকতে কেবলি মনে হয় - খুব করে থাকিনা বেঁচে আরো কিছুদিন।
তবুও উচাটন মন খুব করে চায়
আরো কিছু সময়ের হাত ধরে
চলে যাক সে; যেন যত দূরে
যাওয়া যায় ততোই সে খুজেঁ পায়
জীবনের মানে -
অদ্ভূত আনমনে।।
কবিতাটা আপনার জন্য আশালতাপু!! শুভেচ্ছা,
ধন্যবাদ তানিম এহসান। কবিতার লাইনগুলো ভারী ভালো লাগলো।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
এই লাইন গুলো কার লেখা জানতে ইচ্ছে করছে তানিম এহসান।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমার লেখা, তখন লিখতে লিখতে লিখেছি। কেন বলুনতো?
খুব খুব খুব ভালো লেগেছে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ধন্যবাদ ধন্যবাদ! কবিতা কিন্তু আপনার জন্যে লিখা, নিয়ে নিন তাড়াতাড়ি, নইলে তেল-গ্যাসের মত দিনেদুপুরে ডাকাতি হয়ে যেতে পারে!
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
বাতাসে ভেসে যাওয়ার ইচ্ছে পড়ে আমার মনে পড়লো আবুল হাসানের কবিতা... পাখি হয়ে যায় প্রাণ!
###
অবশেষে জেনেছি মানুষ একা !
জেনেছি মানুষ তার চিবুকের কাছেও ভীষণ অচেনা ও একা !
দৃশ্যের বিপরীত সে পারে না একাত্ম হতে এই পৃথিবীর সাথে কোনোদিন।
ফাতিমা ফুফুর প্রভাতকালীন কোরানের
মর্মায়িত গানের স্মরণে তাই কেন যেনো আমি
চলে যাই আজো সেই বর্নির বাওড়ের বৈকালিক ভ্রমণের পথে,
যেখানে নদীর ভরা কান্না শোনা যেত মাঝে মাঝে
জনপদবালাদের স্ফুরিত সিনানের অন্তর্লীন শব্দে মেদুর !
মনে পড়ে সরজু দিদির কপালের লক্ষ্মী চাঁদ তারা
নরম যুঁইয়ের গন্ধ মেলার মতো চোখের মাথুর ভাষা আর
হরিকীর্তনের নদীভূত বোল !
বড় ভাই আসতেন মাঝরাতে মহকুমা শহরের যাত্রা গান শুনে,
সাইকেল বেজে উঠতো ফেলে আসা শব্দে যখোন,
নিদ্রার নেশায় উবু হয়ে শুনতাম, যেনো শব্দে কান পেতে রেখে :
কেউ বলে যাচ্ছে যেনো,
বাবলু তোমার নীল চোখের ভিতর এক সামুদ্রিক ঝড় কেন ?
পিঠে অই সারসের মতো কী বেঁধে রেখেছো ?
আসতেন পাখি শিকারের সূক্ষ্ম চোখ নিয়ে দুলাভাই !
ছোটবোন ঘরে বসে কেন যেনো তখন কেমন
পানের পাতার মতো নমনীয় হতো ক্রমে ক্রমে !
আর অন্ধ লোকটাও সন্ধ্যায়, পাখিহীন দৃশ্য চোখে ভরে !
দীঘিতে ভাসতো ঘনমেঘ, জল নিতে এসে
মেঘ হয়ে যেতো লীলা বৌদি সেই গোধূলি বেলায়,
পাতা ঝরবার মতো শব্দ হতো জলে, ভাবতুম
এমন দিনে কি ওরে বলা যায়- ?
স্মরণপ্রদেশ থেকে এক একটি নিবাস উঠে গেছে
সরজু দিদিরা ঐ বাংলায়, বড়ভাই নিরুদ্দিষ্ট,
সাইকেলের ঘণ্টাধ্বনি সাথে কোরে নিয়ে গেছে গাঁয়ের হালট!
একে একে নদীর ধারার মতো তার বহুদূরে গত!
বদলপ্রয়াসী এই জীবনের জোয়ারে কেবল অন্তঃশীল একটি দ্বীপের মতো
সবার গোচরহীন আছি আজো সুদূর সন্ধানী!
দূরে বসে প্রবাহের অন্তর্গত আমি, তাই নিজেরই অচেনা নিজে
কেবল দিব্যতাদুষ্ট শোনিতের ভারা ভারা স্বপ্ন বোঝাই মাঠে দেখি,
সেখানেও বসে আছে বৃক্ষের মতোন একা একজন লোক,
যাকে ঘিরে বিশজন দেবদূত গাইছে কেবলি
শতজীবনের শত কুহেলী ও কুয়াশার গান!
পাখি হয়ে যায় এ প্রাণ ঐ কুহেলী মাঠের প্রান্তরে হে দেবদূত
পাখি হয়ে যায় প্রাণ, আবুল হাসান
###
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আবুল হাসান, ''সে এক পাথর আছে, কেবলি লাবণ্য ধরে....''
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
@ তিথীডোরঃ
আজ নেট ঘেঁটে আবুল হাসানের কয়েকটা কবিতা পড়লাম। ভালো লাগলো। এই লাইনটা ভারী সুন্দর, খুঁজছিলাম, পাইনি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
''সে এক পাথর আছে কেবলি লাবণ্য ধরে, উজ্জ্বলতা ধরে আর্দ্র, মায়াবী করুণ...
এটা সেই পাথর নাকি? এটা তাই?
এটা কি পাথর নাকি কোনো নদী? উপগ্রহ? কোনো রাজা?
পৃথিবীর তিনভাগ জলের সমান কারো কান্না ভেজা চোখ?
মহাকাশে ছড়ানো ছয়টি তারা? তীব্র তীক্ষ্ণ তমোহর...
কী অর্থ বহন করে এইসব মিলিত অক্ষর?''
#আবুল হাসান : রাজা যায় রাজা আসে
♥আহাকে নিয়ে একটা আবজাব লিখেছিলাম বহু আগে, এই তার লিঙ্ক--
‘যাই.. আমার পকেটে আছে তাহাদের নীল চিঠি, নীল টেলিগ্রাম।’
তবে আমি বাপু আর এ পোস্টে ঢুকছি না.. চুলোয় যাক কবিতা!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সেকি! এই পোস্ট টায় ঢুকলেই আমার তো ভীষণ মন ভালো হয়ে যাচ্ছে। দুদিনেই প্রিয় হয়ে যাওয়া অদেখা মানুষগুলোর দেয়া উপহার, একটা পাশে আরেকটা কি সুন্দর সুন্দর লাইন... আর আপনি কিনা কবিতা পর্যন্ত চুলোয় দিয়ে চলে যাচ্ছেন!
ও ও বুঝেছি, ঐ হাঙরপাখনা বলায় মান হয়েছে বুঝি ?! আচ্ছা বাপু, ঘাট হয়েছে, বলা কথা ফিরিয়ে নিয়ে আবার করে গিলে নিলাম, এই দেখুন গপাস গপাস গপ্, আর নাই !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
@ নজরুল ইসলাম
এই পোস্টে সবাই আমাকে কবিতা দিচ্ছে দেখে অবাক হলেও ভীষণ ভালো লাগছে। অভ্রর যন্ত্রণা সহ্য করে টাইপ করে লেখা দেয়ার কষ্টের বহু বহুগুন বেশি পুরস্কার মিলে গেল।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
খুক খুক, প্রথম মন্তব্য করার ক্ষেত্রে ফাস্টো না হলেও সবচেয়ে লম্বা কবিতা পোস্ট করার ক্ষেত্রে নজরুল ভাই ফাস্টো হয়ে গেছেন
বা রে, লোকেরা বড় বড় পদ্য লিখলে সেটা কি ওনার দোষ ? আপনার হিংসে হচ্ছে বুঝি ? আচ্ছা ঠিক আছে, আমিই নাহয় আপনার জন্যে একখানা দিলাম, আপনার পছন্দের লেখিয়ের -
আমরা ভাল লক্ষ্মী সবাই, তোমরা ভারি বিশ্রী,
তোমরা খাবে নিমের পাঁচন, আমরা খাব মিশ্রী ।
আমরা পাব খেলনা পুতুল, আমরা পাব চম্চম্,
তোমরা ত তা পাচ্ছ না কেউ, পেলেও পাবে কম কম ।
আমরা শোব খাট্ পালঙে মায়ের কাছে ঘেঁষটে,
তোমরা শোবে অন্ধকারে একলা ভয়ে ভেস্তে ।
আমরা যাব জামতাড়াতে চড়ব কেমন ট্রেইনে,
চেঁচাও যদি "সঙ্গে নে যাও" বল্ব "কলা এই নে" !
আমরা ফিরি বুক ফুলিয়ে রঙিন জুতোয় মচ্মচ্,
তোমরা হাঁদা নোংরা ছিছি হ্যাংলা নাকে ফঁচ্ফঁচ্ ।
আমরা পরি রেশমি জরি, আমরা পরি গয়না,
তোমরা সেসব পাওনা ব'লে তাও তোমাদের সয় না ।
আমরা হব লাটমেজাজি, তোমরা হবে কিপ্টে,
চাইবে যদি কিচ্ছু তখন ধরব গলা চিপ্টে ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
উচু উচু বিল্ডিং এর ছাদে গেলেই আমার ঘোর লাগে।মনে হয় দুহাত ছড়িয়ে বাতাসের গান গাই। গাইতে গাইতে হাত দুখানে ছড়িয়ে লাফ দিলেই মনে হয় উড়ে যেতে পারবো! ডানা নেই তো কী হয়েছে, মন তো আছে!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আহা কি সুন্দর একটা কমেন্ট ! আপ্নারে ভালা পাইতে আছি...
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ইয়ে মানে, আমি কিন্তু খারাপ!
না মানে আমি আসলে থোতো আর ভালো!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
তাতে কি ?! আমি একদম খুনখুনে বুড়ি, ঐ পদি পিসির মত, আর বড্ড পাজি। ছোট ছোট মুণ্ডু খেতে ভারী ভালো লাগে !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
নতুন মন্তব্য করুন