ইয়ার ফাইনালের ক'দিন আগে একদম টিপিক্যাল বাংলা সিনেমা কায়দায় টেলিগ্রাম এলো, ফাদার ইল, কাম শার্প। নিচের ঠিকানাটা উত্তরের এক জায়গার। খোঁজ নিয়ে জানা গেলো কদিন আগে বাবা বদলি হয়ে ওখানে গেছেন আর গিয়েই অফিসের বদলে হাসপাতালে। সেই ধ্যাদ্ধেড়ে গোবিন্দপুরে চব্বিশ ঘণ্টায় বাস যায় একখানা, তাও কেবল রাতের। উপায় নেই বলে বিরস মুখে তাতেই চাপতে হল। টিকেটে লেখা আছে আরামদায়ক সুপার সেলুন কোচ। একটু পরেই দেখি সুপার সেলুন কোচের এ জানলা ও জানলা বেয়ে দড়ি বাঁধা সাইকেল, ছাগল আর কাঁড়ি কাঁড়ি মুরগির খাঁচা টপাটপ ছাতে উঠে যেতে লাগলো। এতটা পথ মুরগি ছাগলের সাথে ধাক্কাধাক্কি করে যেতে হবে ভেবে মনে মনে প্রমাদ গুনলাম। বিধাতা বোধকরি মুখ টিপে হাসলেন।
ঘন্টাখানেকের মধ্যে সেলুন কোচ ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই ছোট এ তরী হয়ে গেলো। সামান্য কিছু হাদিয়ার বিনিময়ে বহু আর্ত প্রাণের ঠাঁই হয়ে গেলো ভেতরে। তারা সকলে ঘাড়ের ওপর পায়ের কাছে এদিক ওদিক দাঁড়িয়ে বসে রাতের বাসের একমাত্র মহিলা যাত্রীটিকে সরাসরি কৌতূহলী চোখে মাপজোখ করে নিতে লাগল। এতগুলো উৎসুক চোখের সামনে একটু ফাঁপরে পড়লেও আমি পড়ি কিনা ইউনিভার্সিটিতে। এইসব লুঙ্গি পড়ে পান চিবোতে চিবোতে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা নিতান্ত ক্ষ্যাত লোকজনের কাজকারবার দেখে মনে বড় বিরক্তি এল। নাক মুখ কুঁচকে একখানা মোটা ইংরিজি বই টেনে পড়তে শুরু করলাম। ইঙ্গিত বড় স্পষ্ট- পাবলিক তুমি মুড়ি খাও।
একটু পরেই পাশে থেকে প্রশ্ন এলো, কোথায় যাচ্ছেন? মুখের থেকে বই সরিয়ে দেখি পাশের সিটে সাদা পায়জামা পাঞ্জাবি পড়া মাঝারি গড়নের এক লোক জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে আছে। বটে! একা মেয়ে দেখলেই খাতির জমাতে ইচ্ছে করে, না? সাথে সাথে তাই উত্তর না দিয়ে লোকটাকে আপাদমস্তক দেখে নিয়ে হেলাভরে বল্লাম, গোবিন্দপুর। সাথে সাথে মুখের ওপর বই। পড়ছি টরছি না। মনে বলছি, ব্যাটা ফাজিল, বাস তো ওখানেই যাচ্ছে, নাকি? লোকটা দেখি নাছোড়বান্দা। সামনে ঝুঁকে এসে বারে বারে জিজ্ঞেস করে, আপনি কোথায় পড়েন? ওখানে কার কাছে যাচ্ছেন? কতদিন থাকবেন, এইসব। আরে, এ তো ভ্যালা যন্ত্রণা হল রে বাবা। ভুরু কুঁচকে চোখা গলায় বল্লাম, যেখানেই যাই, আপনার কোন সমস্যা আছে? এবার লোকটা পিছু হটে দ্রুত গলায় বল্ল, না না, ঠিক আছে, আপনি পড়ুন।
আর পড়া! মাথা গর্মে গেছে ততক্ষনে। আমার মত শহুরে শিক্ষিত মেয়ের সাথে ইল্লি, অ্যাঁ? গাঁইয়া ভুত কোথাকার। ভুরু কুঁচকে গজগজ করি। তবে মাথা ঠাণ্ডা হতে সময় লাগেনা বেশি। শীতের বেলাটা ঝুপ করে নেমে যেতেই ঠাণ্ডাটা ঝাঁকিয়ে বসতে শুরু করল। পথ যত উত্তরে ছুটছে, হাড়ের ঠোকাঠুকি বাড়ছে তত। জানলার বাইরে নিকষ কালো রাত। কাউন্টার থেকে বলে দিয়েছে ভোর সাড়ে ছ'টা সাতটা নাগাদ পৌঁছবে, কাজেই একটু ঘুমিয়ে নেয়া যায়। শাঁ শাঁ করে ছুটে যাওয়া আবছা ঘরবাড়ি গাছপালা দেখতে দেখতে কখন যেন চোখ লেগে এসেছিল, চটকা ভাঙল কন্ডাক্টারের চেঁচামেচিতে। দমাদম বাস পিটতে পিটতে বলছে, আপা নামেন নামেন, গোবিন্দপুর আসি গেছে। তাকিয়ে দেখি বাইরে ঘুরঘুট্টি অন্ধকার, ঘড়িতে বাজে রাত তিনটে চল্লিশ, এখনি আসি গেছে মানে কি ? ওরা যে বলল ছ’টা সাতটা বাজবে? লোকটা তাড়াহুড়ো করে ব্যাগটা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললে, লাস্ট স্টপেজ তো এইটা না। ওইখানে যাইতে টাইম লাগবে। এইটা গোবিন্দপুর। হাসপাতাল এইখান থাকি এক মেইল দূর। আপ্নাক হাঁটি যাইতে হবে, এখন নামেন- বলে সত্যি সত্যি আমাকে নামিয়ে দিয়ে বাসটা চলে গেলো।
ঘটনার আকস্মিকতায় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম কতক্ষণ। অন্ধকারটা চোখে সয়ে যেতে তাকিয়ে দেখি একটা জনশূন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। এটা বোধ হয় একটা বাজার। দুপাশে বন্ধ পড়ে থাকা সার সার ছাপরা দোকানঘর। সামনে তিন দিকে তিনটে রাস্তা কিছুদূর এগিয়ে গাঢ় অন্ধকারে হারিয়ে গেছে। পথের দিকে তাকিয়ে মনে পড়ল মা তো টেলিগ্রামে ঠিকানা টিকানা কিছুই দেয়নি। ওখানে হাসপাতাল নাকি ওই একটাই, লোকজন সবাই চেনে। কাজেই জিজ্ঞেস করলেই পেয়ে যাব এমন ভরসা ছিল। কিন্তু এখন লোকজন তো দূরের কথা একটা কুকুর বিড়ালও তো কেউ কোথাও নাই। এত রাতে অন্ধকারে একা একা কোথায় কোনদিকে যাব বুঝতে না পেয়ে আক্ষরিক অর্থেই দিশেহারা হয়ে গেলাম পুরাই। শহুরে মেয়ের তেজিয়াল ভাবটা উবে গেলো হুশ করে।
সারাজীবনে তো আমরা কতইরকম ভয় পাই। জোঁক সাপ বিচ্ছু আরশোলা পুলিশ দাঁতেব্যথা বেতের বাড়ি, মায় মানুষ। কিন্তু একা হয়ে যাওয়ার আতঙ্ক বোধহয় তুলনাহীন। ঘরের ঘেরাটোপে অভ্যস্ত মানুষ মাঝরাতে অচেনা পথের মোড়ে দিশাহীন একা একা দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে সেদিন টের পেলাম সত্যিকার ভয় কাকে বলে। মাথার ওপরের ছাত কি খিল আঁটা দরজায় কী প্রবল স্বস্তি। সত্যি সত্যি বিপদে পড়ে স্নবারি ভুলে তখন তিনদিকে চলে যাওয়া অন্ধকার রাস্তার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছি। তীব্র আতঙ্কে মাথা কাজ করছে না। তাই সাদা পায়জামা পাঞ্জাবি পড়া বাসের সেই লোকটা যখন অন্ধকার ফুঁড়ে সামনে এসে কথা বলতে শুরু করল আমি চোখ বড় করে তাকিয়ে থাকলাম শুধু। কিছু শুনতে পেলাম না। অনেকক্ষণ পর বুঝতে পেলাম লোকটা হেসে হেসে বলছে, ভয় পাবেন না, আমি এখানকার স্কুলে বাচ্চাদের পড়াই। বাসে ওরা বলছিল আপনার বাবা এখানকার হাসপাতালে আছেন। আপনি নতুন মানুষ, নিশ্চয় রাস্তা চেনেন না। বেশ খানিকটা হাঁটতে হবে, চলুন পৌঁছে দেই- বলে ব্যাগটা হাতে নিয়ে হাঁটতে শুরু করলেন।
এই মানুষটার প্রতি কি আমি কৃতজ্ঞ? জানিনা ঠিক। এই বোধটার সাথে আমি পরিচিত নই। ঘরে ফিরে সেদিন এই মানুষটাকে কিছুই বলা হয়নি। ধন্যবাদ কিংবা এক টুকরো হাসি কিছুই না। অন্তত নামটুকু মনে রাখা উচিত ছিল। অথচ কোন বিচিত্র কারণে আমার ব্রেন সেটা ইরেজ করে ফেলেছে। নাম চেহারা বাকি ডিটেলস সবকিছু। শুধু একটা অদ্ভুত দৃশ্য মনে পড়ে। দুধারে ফসলি জমির মাঝ দিয়ে সরু পিচের রাস্তা চলে গেছে দূরে। আবছায়া তারার আলোয় যতদূর চোখ যায় আদিগন্ত হা হা করছে শূন্যতা। কোথাও কেউ নেই। মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া হু হু করে বয়ে এসে আছড়ে পড়ে এলোমেলো করে দিয়ে যাচ্ছে সব। সামনে সামনে হাঁটতে থাকা এক ছায়ামানুষের সাদা পাঞ্জাবি ঘিয়ে শালের কোনা থেকে থেকে উড়ে উঠে হারিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে। সেইদিকে তাকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ঘোর লেগে যাচ্ছে আমার। স্বপ্নে পাওয়া মানুষের মত আমি হেঁটে চলেছি আবছায়া অন্ধকারে, কোথায় জানা নেই।
আমাদের সারাটা জীবনে এইরকম কত মানুষের দেখা মেলে। সারা জীবনে কতরকম মানুষ আমরা সঞ্চয় করে যাই। কেউ নুড়ি, কেউ মোহর। নুড়িতে ঠোকর তো রোজই খাই, কিন্তু মোহর? সে বড় দামী। কষ্টের অন্ধকার দিনে সেই তো আলো দেয়। বড় ভরসা মেলে তাতে। কদিন আগে শ্লার্লাইপের উপ্রে একগলা অভিমান হতে ঘোষণা ঠুকে দিয়ে বল্লাম মর্গে যা, আর লিখবই না, কারো সাথে কথাও কইব না। সক্কলের সাথে আড়ি। তা এরকম ঘোষণা আমি মাসে পাঁচবার দিই, নতুন কিছুনা। তাতে বাকি লোকেরা কেঁদে বুক ভাসাবে এমন আশা মাছিটাও করেনা। অথচ অভিমান কমলে মেলবক্স খুলে থতমত খেতে হল। যে মানুষগুলোকে আমি গ্রাহ্যিই করিনা, এক কথায় যাদের নাম কেটে দিয়ে হেঁটে চলে যাই সোজা, সেই মানুষগুলো কালো কালো অক্ষরে কতরকম করে লিখে পাঠিয়েছে, যেওনা, তোমায় বড্ড ভালোবাসি হে।
নিজের ওপর সেদিন বড় লজ্জা হল। ছোটবেলায় গল্পের বই পড়ে পড়ে খুব গুপ্তধন খুঁজবার সাধ হত। কখনো পাইনি বলে কপালের ওপর রাগ হত খুব। অথচ মোহর ভরা কলস পায়ের কাছে পড়ে থাকে আমি দেখতে পাইনা। আবার ফিরতে হল তাই। আবার লিখতে হল আমার বোকা বোকা গল্প। অকেজো সব ভাবের কথা। না লিখেই বা কোথা যাই? বোকা মানুষ বলে চিরকাল ঠেকে শিখেছি। কিন্তু শিখেছি খুব দামী কথা। ভালোবাসা জিনিষটা পথের কাঁকর নয় যে রোজদিন দশটা পাঁচটা পথে ঘাটে কুড়িয়ে পাওয়া যাবে। ক্ষুদ্র এ জীবনে সত্যিকারে সে মেলে বড় অল্প। তাকে পেলে তাই যত্ন করা চাই।
কষ্ট দিতে তো সবাইই পারে। তাতে নতুন কিছু না। কিন্তু সত্যি করে ভালোবাসতে পারে আর কয়জনা?
মন্তব্য
আপনি কে ভাই?
এইরকম করে নুন দিলেন সাফি ভাই?
তয় নুন ভাল্লাগসে। আপনার মন্তব্যটা দেখলেই হেসে ফেলছি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
একটানে পড়ে ফেললাম। শুরুর বর্ণনাটা ভালো লেগেছে, আর শেষে এসে আত্মবিশ্লেষণটাও।
এটার মানে বুঝলাম না: "কদিন আগে শ্লার্লাইপের উপ্রে একগলা অভিমান হতে ঘোষণা ঠুকে দিয়ে বল্লাম ..."
এটাকি "শালার লাইফের উপরে"? নাকি অন্য কিছুর টাইপো?
শুভেচ্ছা
[মেঘলা মানুষ]
আপনি ত খাসা ডিকোডিং করেছেন!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
শুরু আর শেষটুকুই শুধু ভালো লাগল, মাঝেরটুকু বুঝি ভালো লাগেনি ? তবু ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ।
আর হ্যাঁ, ডিকোডিং ঠিকই করেছেন। এটা একটা ব্লগিয় পরিভাষা, জীবনের ওপরে মেজাজ খারাপ হলে মিষ্টি করে গালি দেয়া আরকি। এর প্রথম কয়েনিং কে করেছে আমার ঠিক জানা নেই, যাযাবর ব্যাকপ্যাকারকে ব্যাবহার করতে দেখেছি অনেক বার।
অফ টপিকঃ আপনার সাথে কি আমার কখনো দেখা হয়েছিল?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আশাদি ফিরে এসেছে
অভিমান টভিমান আকাশে তুলে রেখে এখন থেকে নিয়মিত হও দেখি দিদি।
দিন শেষে এই কথাটুকুই সত্যি বাকি সব মিথ্যা।
ভাল ছিলে তো নির্বাসনে?
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
নিয়ম করে কিছু একটা করতে হবে ভাবলেই বাতাসে কেমন জানি অক্সিজেন কমে যেতে থাকে। ঐটা তাই থাক। বরং ভাবের লেখা থাকুক। হুট হাট দেখা হবে, লম্বা এক শ্বাস টেনে ভাবব, আহ্ এই মানুষগুলোকে কি ভীষণ ভাল্লাগে! সেইই ভালো, নয় ?
নির্বাসনে আর ভালো থাকে কে?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
এমন একটা লিখা, পড়লেই মন ভাল হয়ে যায়।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এত সুন্দর করে বললেন অথচ নামটা দিলেন না? আপনার মন্তব্যটা দেখেই যে খুব মন ভালো হয়ে গেলো, সেটা তো আপনাকে বলাই হোল না।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
একা হয়ে যাওয়ার আতঙ্ক আসলেই তুলনাহীন। মানুষ জীন-ভুত ওই আতঙ্কেই দেখে। মানুষটা কোন জীন ছিলোনাতো ?
আমারা মানুষ জাতের প্রকৃতিই এমন যে পদে পদে ভালবাসা চাই। কিন্তু কোনটা যে সত্যিকার ভালবাসা সেটা বোঝা আসলেই মুশকিল। তাই কোনটা মোহর আর কোনটা পথের কাঁকর বুঝতে পারিনা দিদি। চাহিদা তো অনেক কিছুই। আর তাই মোহর-কাঁকর দোটানা।
আপনি নির্বাসন কাটিয়ে ফিরলেন আর আমি নিতান্তই নতুন। আপনাকে ধন্যবাদ, কিন্তু আমায় করবেন দোয়া।
আদিত্য জামান
জ্বিন ?!
জ্বিন ভুত তো জানি না রে ভাই। তবে মানুষই ছিলেন বোধ হয়। পৃথিবীতে ভালো মানুষ আছে এইটা আমি খুব বিশ্বাস করি।
আমার ফেরাফিরি আসলে কিছু না। এরকম হুট হাট অকাজের ভাবের লেখা লিখি। আপনি নতুন মানুষ হলে সচলে পড়বার মত প্রচুর লেখা পাবেন। একেকজন এত ভালো লেখেন যে পুরনো হয়েও আমার নিজেরি একেক সময় চোখ ট্যারা হয়ে যায়। চমৎকার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ আদিত্য জামান।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
বা:, মন ভরানো লেখা। আরো চাই।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
মন্তব্যে ধন্যবাদ এক লহমা। কিন্তু...আরও চাইলে আমি একটু বিপদে পড়ে যাই ভাই। আজকাল দোয়াতে কালি বড় কম থাকে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
লুঙ্গি পড়ে পান চিবোতে চিবোতে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা নিতান্ত ক্ষ্যাত লোকজনের কাজকারবার, তাইলে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ আপনার কথা অনুযায়ী ক্ষ্যাত?
সামুরাই
না, আমার কথা অনুযায়ী বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ ক্ষ্যাত না। এখানে শ্লেষের তীরটা আসলে উন্নাসিক বোকা একজন মানুষের দিকে, মানুষগুলোর দিকে নয়। আমার লেখার ধরনের সাথে আপনি বোধ হয় পরিচিত নন, এজন্যে সারকাজমটা হয়ত ধরতে পারেননি।
পড়ার এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হে সামুরাই! কী পড়লেন আর কী বুঝলেন!
ভালই। একটি মধুর অভিজ্ঞতা আর কি!
জ্বী, ধন্যবাদ। তবে আপনার নামটা লিখলে কাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি জানতে পেলে বেশিভাল লাগত আমার।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আহা, আশা'দি ইজ ব্যাক!!
অনিকেতদা, আপনি এইরকম ইমো দিলে আমি যে ঘাবড়ে যাই।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
টক করি আসিলেন বাহে!
টক করে আর কই হল। লিখতে তো আমার কেবলই দেরি হয়ে যায়।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ওয়েলকাম ব্যাক, অনেক মিস করি আপনার লেখা
দ্য গ্রেট চরম উদাস আমার লেখা মিস করেন শুনলে তো আমার আর মাটিতেই হাঁটাহাঁটি করতে রুচি হয়না।
ইশশ্ এই কমেন্টটা বাঁধিয়ে আমার ওয়ালে টানিয়ে রাখতে হবে দেখছি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আর লিখবেন না জেনে খুব খারাপ লেগেছিল। আপনার লেখা ভাল লাগে। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সুন্দর একটা লেখা নিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
পড়ার জন্যে ধন্যবাদ দীনহীন।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
রে পাষাণী নারী! তুমার দিলে এট্টুও রহম নাই এমন করে কেনু চলে যাও বার বার?
আর অমন করে যেও না গো তুমি
নিয়মিত লিখবে এই আশাটুকু করতে পারি তো? খুউব ভালু থেকো
হা হা হা ... তুমি আর পাল্টালে না। অবশ্য সেইই ভালো। সচলে এসেই এইরকম ঝমঝমে আয়নামতিকে দেখলেই দিলখুশ হয়ে যায়।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
তুমার যেমন কথা দি! আমি কী প্রথমালু নাকি যে বদলে যাবো? ঝমঝম মানে সেই গল্পের পাথরবাবার মত ব্যাপার নাকি!
জানো তো তার গল্পটা? তিনি পাথর খেতেন তাই তার পেট জুড়ে থাকতো পাথর। হাঁটলে সেকারনে ঝমঝম শব্দ হতো
তোমারে কিন্তু আমি এট্টুও মিসাই না সত্যি বলছি! ভালু থেকো খুউব।
আরে ধ্যেত, পাথর হতে যাবে কেন? সেই যে সেতার বাজে যেমন ঝমঝম করে আর চারপাশটা খুশি খুশি হয়ে গিয়ে শুনতে ভারি ভালো লাগে, সেইরকম।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
দারুন মজা লাগল পড়তে!
তবে আপনার ভয়ের কথা পড়তে পড়তে একই বিষয়ে আমার নিজের মজা পাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে আরও মজা লাগল।
আমার আবার রাত, অচেনা জনশুণ্য জায়গায় একাকীত্ব, ইত্যাদি জোশ্ লাগে! যেচে যাব কিনা জানি না, কিন্তু গিয়ে পড়লে মজা লেগে যায় অনেক সময়।
একবারের কথা মনে পড়ছে এই মুহূর্তে। সিলেটের কোন এক প্রত্যন্ত এলাকা। শীতার্ত গভীর রাতে দুপাশে নিকষ কালো ভীতিকর জঙ্গলে ঢাকা টিলার সারি। মাঝখান দিয়ে চলে গেছে আঁকাবাঁকা সূচীভেদ্য কুয়াশাকীর্ণ অন্ধকার সরু রাস্তা। ত্রিভূবনে কেউ নাই - এমন একটা জনশুণ্য গা-শিউরানো অপার্থিব পরিবেশ। এরই মধ্য দিয়ে চাকাওলা ট্রাভেল-ব্যাগ গড়গড়িয়ে ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে সম্পূর্ণ একা হেঁটে চলেছি মাইলের পর মাইল। রাস্তার উপর ব্যাগের চাকা গড়ানোর আওয়াজে নিজেই চমকে যাচ্ছিলাম। জঙ্গল আর টিলা পেরুনোর পর আবার দেখি একইরকম কুয়াশাচ্ছন্ন, জনশুন্য, ধূ-ধূ অন্ধকার তেপান্তরের মাঠ। হাড় ভেদ করা হিমেল বাতাস। এটাও পেরুতে হবে।
আহ্, সে-কি মজা! সে-কি মুক্তির আস্বাদ! তুরীয়ানন্দ বোধহয় একেই বলে। মনে হচ্ছিল স্বর্গে চলে এসেছি!
****************************************
আরিহ্ বর্ণনা শুনেই তো গা ছমছম করে দারুণ লাগলো! কি জানেন, নিশুত রাত টাত, একাকিত্ব এইসব আমারও বেজায় ভাল্লাগে। কিন্তু তার একটা লক্ষ্মণ রেখা থাকে। ইন্সিকিওরড হলে ভাব টাব পালিয়ে যায় এই আরকি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
"কদিন আগে শ্লার্লাইপের উপ্রে...."-র সঠিক বানান 'শ্লার্লাইপেরুপ্রে' হবে না? টাইপো মনে হয়।
****************************************
ওটা ঠিক টাইপো নয়। ইচ্ছে করেই লেখা। একসাথে লিখলে কেন যেন দেখতে ভালো লাগছিলো না। আর ব্লগে নতুনদের ধরতেও অসুবিধে হবার কথা। একজন তো জিজ্ঞেস করলেনই দেখলাম। তাই ওরকমই থাকুক নাহয়।
দারুণ মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ মনমাঝি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ফিরে আসতে হয় বলেই বিদায় নিতে নেই। কিন্তু উল্টোদিকে দেখলে, বিদায় না নিলে ফিরে আসার উচ্ছ্বাসটা থাকে না।
যা হোক মনে করিয়ে দিয়ে যাই, ছ'টা লেখা ঝটপট দেয়ার কথা ছিল আপনার, 'বিদায়-পূর্ব' আর 'প্রত্যাবর্তন-পরবর্তী' দুটোকে গোণায় ধরলে চারটে এখনো বাকি!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
কি জানো, ফিরে টিরে আসাআসি ব্যাপারটা আমি ধরতে পারিনা ঠিক। আমার কখনই মনে হয়না সচল থেকে দূরে আছি। আগের মত নিয়ম করে লেখা হয়না, আড্ডা হয়না এটা ঠিক, কিন্তু মনের যেইখানটায় সচলায়তন থাকে, সেখান থেকে সেটা নড়ে যায়না কখনো। বরং অনেক দিন পর বাড়ি ফিরলে যেমন ভালো লাগে, এইখানেও তেমনি চেনা মানুষগুলোকে দেখলে ভারি আনন্দ হতে থাকে।
আচ্ছা, আগের জন্মে কি তুমি কচ্ছপ ছিলে? আমিসহ সব্বাই ভুলে গেছে কবেই, তুমি সেই যে কড়ে গুনে বসে আছ আর ছাড়ান নাই। ওরে, এইবার মাফ দেনা ভাই, কড়ার করছি, মরার আগে চারখানা লেখা দিয়ে যাব নাহয়।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আহা! আজ বুঝলাম কেন পুরানো সচলেরা আশাদি আশাদি করে!!
আপনার মেলবক্সের ঠিকানাটা দেন তো দিদি, কয়েকদিন লেখা না দিলেই মেল দিয়ে জ্বালাতন করবো! এই লেখাটা পড়েই আপনার ফ্যান হয়ে গেছি!!
____________________________
মেলবক্সের ঠিকানা তো আমার সচল প্রোফাইলেই দেয়া আছে। কিন্তু জ্বালাতন করলেই তাতে কাজ দেবে এমন ভরসা কিচ্ছুতে নেই প্রোফেসর সায়েব। আর আমার লেখা বুঝি এই প্রথম পড়লেন? আমি তো বরাবরই এইরকম ক্যাতক্যাতা লেখা লিখি। দুনিয়ার যত আকাজের কথা। এইরকম লেখিয়ের ফ্যান হওয়া কিন্তু মোটে বুদ্ধিমানের কাজ না।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আচ্ছা আপনি কি কাল বইমেলায় ছিলেন? অতন্দ্র প্রহরীদের সাথে? আপনাকে দেখেছি তো! চিনতে পারিনি। আর আমি অসামাজিক বলে নিজে থেকে পরিচিতও হতে যাইনি। এখন আফসোস হচ্ছে
ছিলাম তো। আপনাকে দেখে চিনতে পেরেছিলাম, কিন্তু আপনি যেরকম চোখমুখ শক্ত করে অন্যদিকে তাকিয়ে ছিলেন আমি আর সাহস পেলাম না। ওদেরকে একটু মিনমিন করে বললামও একবার কিন্তু হাসির তোড়ে কথা উড়ে গেলো।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমি একটা অসামাজিক লুক, সেটা আপনাদের বুঝতে হবে তো! আর আপনারা যেভাবে দলবেধে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তাতে আমার মত নিরীহ মানুষ আর কী করবে?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
যাক, ফেরার পথ ভোলেন নাই দেখে ভাল্লাগলো। অনেক পুরনো সচল হা্রিয়ে গেছে। তাদেরকে খুব মিস করি।
আমি অবশ্য বেশি পুরনো না, তবে সচলে এত এত সব দারুণ লেখিয়ে ছিলেন যে পুরনো সচলদের আমি নিজেও খুব মিস করি। ওই সময়টায় ব্লগিং শুরু করতে পারিনি বলে আফসোস লাগে।
মন্তব্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ আজরফ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ঠাম্মী ইজ ব্যাক ইন ফুল ফর্ম।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
বলছ?!
থেঙ্কু!
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
গ্রামের লোকজন আর তাদের সহজ সরল উপকারী মন মানসিকতা আসলেই একটা গুপ্তধন
শুধু গ্রামের মানুষ বলে নয় একেকজন মানুষ থাকেন যাঁদের দেখলে আবার খুব করে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে যে দুনিয়াটা খুব খারাপ জায়গা না আসলে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
মিস করেছি আপনার লেখা। দারুণ একটা লেখা নিয়ে ফিরে এসেছেন। আপনার গল্প বলার একটা নিজস্ব বৈশিষ্ট আছে। পড়তে ভাল্লাগে।
আপনারা এমন সুন্দর করে বললে নিজের ওপর বিশ্বাসটা আবার থিতু হতে থাকে। কৃতজ্ঞ বোধ করি। অনেক ধন্যবাদ রকিবুল ইসলাম কমল।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
কোথায় হারিয়ে গেছিলেন ? আপনাকে যে বড্ড ভালবাসিগো। আপনার লেখাও ।
ভাল থাকুন । আনন্দে কাটুক প্রতিটা মুহূর্ত ।
কেউ বেশি ভালো ভালো কথা বল্লেই ফ্যাচফ্যাচ করে কান্তে বসি সেইটা জানেন তো?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
লাইনটা মনে থাকবে।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আর আমার পছন্দ হয়েছে ওই কোটেশনটা। শোধবোধ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
শেষ লাইনটা আসলেই মনে রাখবার মত
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
থ্যাঙ্কিউ সাক্ষী সত্যানন্দ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
এহহ আশাদি যে! আপনার পদার্পনে এক্কেবারে ধুন্দুমার কাণ্ড দেখি! আর তার ফাঁক গলে সুড়ুত করে নেই হয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা অ্যা? ছয়খান লেখার কি করলেন হিসাবটা দেন দেখি এই বেলা শিগগির শিগগির।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হিসাবটা কো আশাদি?
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
আগে নিজের হিসান দ্যন! আপনার মজার-মজার কমেন্টগুলি এখন আর দেখি না কেন
****************************************
আমার হিসাবে গড়বড় মাঝিদা
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
নতুন মন্তব্য করুন