তড়িঘড়ি করে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে বিপদ, পা পিছলে চিৎপটাং। কোনমতে বিছানায় এসে শুয়ে পড়লাম। আব্বা-আম্মা এসে হাত পা নেড়েচেড়ে দেখে যখন নিশ্চিত হলেন হাড়গোড় ভাঙেনি, তখন শুরু হলো ঝাড়ির পালা। "তোকে যে কি জন্য ছাদে পাঠালাম...একটা কাজ যদি ঠিক মতো করিস" অথবা "এম্নিতেই ভারী শরীর, ব্যালেন্স কম" কিংবা "রেলিং ধরে নামবি না?" ইত্যাদি।
এই প্রসঙ্গ ধরে আমাদের পূর্বপুরুষ ও আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে কে কবে আছাড় খেয়ে কি রকম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, সেই পরিসংখ্যানও বের হয়ে এলো। রোমাঞ্চকর সেই সব কাহিনী শুনে কোমরের ব্যাথা বেশ কম মনে হচ্ছে এখন!
আব্বা ফিরে গেলেন তার ছেলেবেলায়। সেই সময় নাকি একটা বিপত্তি প্রায়ই ঘটতো, টং (গোটা চারেক বাঁশের কলামের উপর অস্থায়ী ঘর) এর উপর নির্মিত শৌচাগার থেকে পা পিছলে লোকজন পড়ে যেত নিচে। তো একবার কালাচান নামক এক গৃহভৃত্য সেই নড়বড়ে স্থাপনার ওপর বসে গভীর ঘুমে মগ্ন। আব্বার দোর্দন্ডপ্রতাপ পিতৃব তাকে এ অবস্থায় দেখতে পেয়ে হাঁক দিলেন "এই হারামজাদা! এখানে ঘুমাচ্ছিস কেন??!!" মনিবের হাঁক শুনে দ্রুত উঠে দাড়াতে গিয়ে ঘটলো দুর্ঘটনা, কালাচান পতিত হলো নিচের চৌবাচ্চায়।
তারপর খালের পানিতে কয়েক দফা অবগাহনেও যখন সেই বিষম দুর্গন্ধের কোন ব্যবস্থা করা গেল না, পিতামহী আদেশ দিলেন দুধ দিয়ে গোসল করাতে। রাজকীয় এই আপ্যায়নের পর তাকে অন্তরীন করে রাখা হলো কিছুদিন, তারপর অনুমতি দেয়া হয় মনুষ্য সমাজে ফেরত আসার।
"যাই হোক, এইরকম ভোগান্তি থাকলেও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতো না" আব্বা তার কাহিনী শেষ করলেন।
"তা ঠিক, কিন্তু মনুষ্য বর্জ্যের চৌবাচ্চায় একবার স্নান করার পর কেউই নাকি সেই ভীষণ স্মৃতি ভুলতে পারতো না" - পাশে উপবিষ্ট আলমগির ভাই জানালেন। "দুই-তিন বছর পর এমনিই মরে যেত............"।
কয়েকদিন মনে হয় শয্যাশায়ী হয়ে থাকতে হবে। যাকগে, বেঁচে আছি - আমি এতেই খুশি।
মন্তব্য
আমার চকলেট লুটপাট করে জ্বালাতন করার আগে বা শর্মা হাউজে আমাকে গুষ্টিশুদ্ধা ছিল দেবার আগে এরকম পড়ে যাস না ক্যান ব্যাটা বদমাস!
পোস্টটা ভাল হয়েছে। বেঁচেই গেলি তবে এবারের মত! ভাগ্যিস টং এর ধারে-কাছে সং সেজে ঢং করতে যাসনি।
ভাল আছি, ভাল থেকো।
ভাল আছি, ভাল থেকো।
কি কন, আপনার কথা চিন্তা কইরা ওইদিন সবাই আধাপেটা খাইছি।
ফটুটা জোস
লেখাও খারাপ না ... তবে ঘটনাগুলি বড়ই প্যাথেটিক ...
আহারে!
মানে, সিঁড়িটার লাইগা কষ্ট হচ্ছে!
-যা দেখি তা-ই বলি...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।
----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।
বিয়াস তো ভালো লিখছে!
-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!
বিয়াস তো ভালই লেখে!
তবে ব্লগিং এর থেকে নাটক লেখাতেই বেশি সময় দিয়েছে এতদিন। লাস্ট মেকা ফেস্টে ওর লেখা প্রত্যেকটা নাটক ফাটাফাটি ছিল। আমার গায়ে-হলুদে তোমার চৌদ্দ গুষ্টিসহ তোমাকে পঁচানো জটিল নাটকটারও যা একখানা ঝাক্কাস এন্ডিং দিসিল এই ছ্যাঁড়া! আর সে কি দুর্দান্ত অভিনয় (একটু পিঠ চুলকে দিলাম তোর, এই ব্লগের ব্লগারুদের আবার এর-ওর পিঠ চুলকে দেবার বদোভ্যাস আছে, বুঝলি)! ব্লগিং-ও তাই স্বাভাবিকভাবেই ভাল হচ্ছে। চালিয়ে যা।
ভাল কথা, তোদের আবার আধাপেটা! আমার বাড়ি এসে বিস্কিটের প্যাকেটসহ নিয়ে গিয়েছিলি মনে আছে? যতরাজ্যের বদমাইশ পোলাপান! ক্যান যে সময়মতো তোদের পদস্খলন হয় না!
ভাল আছি, ভাল থেকো।
ভাল আছি, ভাল থেকো।
হাহাহা মজা পাইলাম। সিঁড়ি ভাল আছে? নিজের কথা বললেন, সিঁড়িটা কি মানুষ না? তার কথা বলতে নাই?
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
সিঁড়িও শয্যাশায়ী, গত কয়েকদিন একই জায়গায় চুপচাপ পড়ে আছে।
কেমনে কী?
সিঁড়ির চিন্তায় সব পাগল।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
ভাইজান, সাবধান কইলাম!!
জীবনে একবার পদস্খলন হইলো পদস্থ হওয়া খুব কঠিন ব্যাপার!!!
__________
কি মাঝি? ডরাইলা?
চামে চামে নিজের ঘটনাটা যে গৃহভৃত্যের উপর চাপায়া দিলেন টের পাইসি।
_______________________________________
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
কি আর কমু...আপনি অন্তর্যামী
নতুন মন্তব্য করুন