প্রখ্যাত ইংরেজ ঔপন্যাসিক E.M. Forster তাঁর 'Aspects of Novel'বইতে বলেছেন, উপন্যাস হতে হলে একটি বইয়ের থাকতে হবে -"A unified and plausible plot structure,sharply individualized and believable characters, and a pervasive illusion of reality". আমাদের আলোচ্য উপন্যাস 'জোহরা' বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখি উপরের তিনটি উপকরণের চমৎকার এক সমন্বয়। লেখক এখানে - - -
পরীক্ষার খাতায় উপন্যাস হিসেবে 'জোহরা'-র সার্থকতা আলোচনা করতে গিয়ে এসব কোটেড কথা লিখে দু'চার নম্বর বেশী পাওয়া যায় বৈকী! কিন্তু তারপরে? তারপরে শেষ। উপন্যাস হিসেবে 'জোহরা' স্বার্থক হয়নি কিংবা দূর্বল, এমন কথা কেউ বোধ হয় পরীক্ষার খাতায় লিখে না। লিখলে নম্বরও পাওয়া যায় না!
তাই কেতাবী আলোচনা বাদ।
আমাদের 'সচলায়তন'এ আছেন বেশ ক'জন প্রতিষ্ঠিত লেখক, যাদের উপন্যাস পৌঁছে গেছে পাঠকের হাতে। আরও আছেন একদল প্রচারবিমুখ - অন্তর্মুখী অথচ ভীষণ শক্তিশালী লেখনী সমৃদ্ধ বোদ্ধা। ব্লগে দেখা যাচ্ছে খড়ি হাতে আরেকদল লেখক যারা টুকটাক লিখে গদ্যের ঝলক দেখাচ্ছেন। এ সবাই মিলেই আমরা, আমাদের যাপিত জীবনের ব্লগ।
এবার আমরা জানতে চাইবো, উপন্যাস কীভাবে লিখে? কী কী গুণের কারণে একটি লেখা উপন্যাস হয়ে উঠে? কিংবা কখন একটি লেখা উপন্যাস হিসেবে ব্যর্থ হয়! বিষয়ের গভীরতা নাকি আয়তন নির্ধারণ করবে উপন্যাসের জাত-পাত? সময়ের সাথে উপন্যাসের মান নির্ধারণ কী পরিবর্তিত হয়? কীভাবে? অথবা উপন্যাসের খসড়া তৈরী থেকে শরীর নির্মাণ প্রক্রিয়া কীভাবে অগ্রসর হয়? শেষটায় এসে কেমন হওয়া উটিৎ?
এরকম হাজারো বিষয় - - -।
দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
'সমবেত হয়ে আসুন সকলে, গোল হয়ে বসুন সকলে।'
আলোচনা চলুক গুরুগম্ভীর কিংবা হাল্কা চালে - - -।
বিষয়: উপন্যাসের ভেতর বাহির।
মন্তব্য
ঠিক মনে করলে আড্ডার কপি দিতে পারেন।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আমার চ্যাট বক্সে কনভারসেশনগুলো মুছে গেছে। অসুবিধা নাই, ঐ কথাগুলো আবার আসবে আশা করি, আরো গুছানো ভাবে।
আপনার কাছে থাকলে কপি রাখেন। বিষয়গুলো সম্পুরক হিসেবে তুলে দিয়েন ফাঁকে ফাঁকে।
কী বলেন?
আমার গদ্যজ্ঞান ভয়ঙ্করী। তবে সবসময় মনে হয় উপন্যাসে একটা টোট্যালিটিরে ডিটেলস দিয়া বর্ণনা করা হয়। ছোট গল্পে এই টেকনিকটা উল্টা।
যা কইলাম না জাইনা কইলাম। যারা জানেন মুখ খোলেন।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
মুখ খোলার জন্য বদ্দাকে ধন্যবাদ। তার কাছ থেকে আরো বিশদ জানার আশায় রইলাম।
পোস্টটা খুব কাজে আসবে আমার।
ধন্যবাদ!
আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে
যেহেতু এখানে সবাই লেখক, সেহেতু লেখকের সৃষ্টির দ্বিধা থেকে এদিকে আলো ফেলা যায়। মানে যারা উপন্যাস লিখেন তারা বলতে পারেন। প্রথম হলো, আমার মাথায় একটা ভাবনা আছে, বা একটা ছেঁড়া ছেঁড়া গল্প ঘুরাঘুরি করছে। সেই গল্পটা থেকে একটা ছোট গল্প, বড় গল্প না উপন্যাস তৈরি করার দিকে আমি হাঁটবো সেই সিদ্ধান্ত আমি কিসের ভিত্তিতে নেব? কিসে বুঝা যায় গল্পটা একটা উপন্যাসের ট্রিটমেন্ট দাবী করে? কিসে বুঝা যায়, এই গল্পটা উপন্যাস পর্যন্ত ঠেলে নেয়া ঠিক হবে না।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
শুনছি।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
মন্তব্যগুলো পরে এসে পড়তে হবে।
তবে আমার কাছে সেইসব উপন্যাস ভালো লাগে, যা একটা নোতুন ভাবনার জগতকে খুলে দেয়, অথবা ভাসা ভাসা জল রঙা কোনো জগতের রঙ গুলো হালকা হোক, তীব্র হোক - আলোর রঙে রাঙিয়ে তোলে।
উপন্যাস হয়তো জীবনের কোনো একটা কনসেপ্টের টোটালিটিকে ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করে। কিন্তু মানুষের জীবন স্বভাবতই যেকোনো উপন্যাসের চাইতে অনেক বেশি বিচিত্র। প্রত্যেক ঔপন্যাসিক জীবনের কাছাকাছি যেতে চেষ্টা করে মাত্র। যে উপন্যাস জীবনের যতোটা কাছে যেতে পারে, আমার কাছে সে উপন্যাস ততো বেশি জীবন্ত।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
জীবন হইল অসংখ্য টোটালিটির ডিসকোর্স। একটা জীবনে গাদা গাদা উপন্যাস থাকে(গাঁজা খাওয়া এবং তৎপরবর্তী মনোবিকলন সহ)। উপন্যাস লেখক সেরকম একটা কিছুরেই খুইজা বাইর করার চেষ্টা করে।
(যা কইলাম না বুইঝা কইলাম)
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
আমি বরং উপন্যাস ও ছোটগল্পের মাঝে একটা তুলনা করি(মানে, আমি যা বোঝি আর কি)
উপন্যাস লেখায় হাত দেয়া বেশ সাহসী ব্যাপার । অলংকার,অনুসর্গ,বর্ননা,পরিপ্রেক্ষিতের ঘনঘটা । শেষ পর্যন্ত ছন্দটা ধরে রাখা গেলে ভালো । অবশ্যই ভালো । বেশ বড় ঘটনা ঘটলো । কিন্তু এর জন্য যে শ্রম ও সময় দেয়া জরুরী মনে হয় । যথেষ্ট প্রস্তুতি না থাকলে উপন্যাস কেঁচে যাওয়ার সমুহ সম্ভাবনা ।
তুলনামুলকভাবে ছোটগল্পকে আমার অনেক সার্প , স্মার্ট ও কন্ডেন্সড(সঠিক বাংলা পাচ্ছিনা,ক্ষমাপ্রার্থী) মনে হয় ।
উদাহরন দেয়া যায়ঃ শিমুলের 'মনিকা-টাহির' কিংবা আরিফ এর 'বৃদ্ধাশ্রম' নিয়ে হয়তো কেউ উপন্যাস ও লিখতে পারবেন । তবে মর্মার্থ যা বোঝানোর তা ছোটগল্প আকারেই কিন্তু চলে এসেছে ।
আরেকটা প্রাসংগিক কিংবা অপ্রাসংগিক মন্তব্য করি-বাংলাদেশের সাহিত্যের ক্লাসিক থেক শুরু করে হুমায়ুনীয় উপন্যাস-বিশাল তালিকা থেকে খুব কম সংখ্যক কেই আমার উপন্যাস মনে হয়(বিশ্ব উপন্যাসের তুলনায়) ।এসবের প্রায় সবগুলোকেই আমার কাছে ছোট বড় গল্প বলে মনে হয় ।
দস্তভস্কির ইডিয়ট কিংবা টলস্টয় এর রেজারেকশন এর তুলনায় আমাদের রবীবাবুর উপন্যাসগুলো অনেক খেলো (ক্ষমাপ্রার্থী,কারো অনুভূতি আহত হলে) মনে হয়- কি বিষয়ে,কি আংগিকে,কি চিত্রকল্পে,কি বর্ননায় ।
শিমুলকে ধন্যবাদ ।
-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
মোরশেদ ভাই:
আপনাকেও ধন্যবাদ।
আরেকটি ব্যাপারে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আয়তনে বিশাল হওয়ার পরও অনেক ব্ই পাঠকের বিবেচনায় উপন্যাস বলে গণ্য হচ্ছে না। তাহলে কী বিষয়ের গভীরতা বেশী গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি? 'লালসালু' কিংবা 'তেইশ নম্বর তৈলচিত্র' আয়তনে খুব বিশাল না হয়েও কালজয়ী। এক্ষেত্রে সময় কিংবা সমাজ ধারনকে আপনি কতটা জরুরী বলে মনে করেন?
রুশ সাহিত্যের উপন্যাসগুলি রুশদেশের মতোই বিশাল ব্যাপ্তির। অসংখ্য চরিত্র, জটিল তাদের সরলতা, সরল তাদের জটিলতা, সংলাপ আর বর্ণনার আধিক্যে পাঠক ডুবে যান সে উপন্যাসের গভীরে। বাংলার্ উপন্যাস বাংলার মতোই, আকারে ছোট কিন্তু সবুজ। সে আবর্তিত হয় তুলনামূলকভাবে স্বল্প চরিত্র নিয়ে। পথের পাঁচালিতে সর্বসাকুল্যে ক'জনের কথা পড়ি আমরা, কিংবা খেলারাম খেলে যা, নীল দংশনে? চিলেকোঠার সেপাই বা রহু চন্ডালের হাড়ে?
বিশাল ব্যাপ্তির উপন্যাস নিয়ে পশ্চিম বাংলার লেখকরা মনোযোগ দিয়েছেন। ইতিহাস নিয়ে আবর্তমান উপন্যাসগুলি, সেই সময়, পূর্ব পশ্চিম কিংবা প্রথম আলো, মৈত্রেয়ী জাতক, অথবা মানুষের চলমান জীবনের দর্পণ নিয়ে পার্থিব, দূরবীণ। বাংলাদেশের ঔপন্যাসিকরা শিকার হয়েছেন অর্থনীতি ও প্রযুক্তির ট্রাফিক কন্ট্রোলের। স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় তাঁরা হেঁটে গেছেন স্বল্পায়তন উপন্যাসের গলি ধরে। উপন্যাসের ব্যাপ্তি যদি কেউ বাড়িয়ে থাকেন, তার সাথে উপন্যাসে কোলাহল বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। পাঠকও কয়েক দশকের এই চর্চায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন। বাংলাদেশের উপন্যাস মানেই শীর্ণ উপন্যাস, কিংবা স্বাস্থ্যবান বড়গল্প।
একটি উপন্যাসের পেছনে আমাদের ঔপন্যাসিকরা সময় দিচ্ছেন কম। এত বিচিত্র সব উপাদান আছে আমাদের জীবনে, ইতিহাসে, কিন্তু সেই অগাধ সমুদ্র মন্থনের আগ্রহ অনেকেরই নেই, তাঁরা সৈকতে ঝিনুক কুড়িয়েই খুশি।
কী আর কমু।
হাঁটুপানির জলদস্যু
বিশাল আকার নিয়ে এখানে লিখা হচ্ছে না ,তা কিন্তু নয়।সৈয়দ হকের বৃষ্ঠি ও বিদ্রোহীগন তো আয়তনে বিশাল,কিন্তু তার ব্যাপ্তিতো বিশাল নয়।জোছনা ও জননীর গল্প লিখে হুমায়ূন কেদে কেটে অস্থির,কিন্তু সেই বিশাল আয়তনের উপন্যাস হয়তো প্রকাশকের পকেট ভারী করে,বিশালত্ব ধারন করে কই?
-----------------------------------
কিস্তিমাতের যুদ্ধ শেষে,সাদাকালো ঘুটিগুলো এক বাক্সেই ফেরত যাবে...
ঠিক। উপন্যাসের কাজ যদি হয় জীবনের পুরো চিত্রণ, তাহলে রাশানরাই এর সবচে বড় চিত্রী। তারা জানে কিভাবে সংগ্রাম ও পরাজয়কে সমান মমতা দিতে, মুহূর্তের আবেগকেও বিবেচনা করা লাগে চিরকালীন প্রেক্ষিতে। কী সব চরিত্র দিয়েছে তারা বিশ্ব উপন্যাসে! আন্না কারেনিনা, নেখলিউদভ, রাসকলনিকভ, দস্তয়েভস্কির তামাম পাত্রপাত্রী, তুর্গেনেভ-এর উন্নতশির মহিলারা, তারাস বুলবা, জমিলা....।
তুলনায় ফরাসী উপন্যাস অনেক বেশি দার্শনিক। প্রশস্ত দনের মত বয়ে চলবার তাড়না নেই তার, বরং দনের বয়ে চলবার ধরন নিয়ে নিরন্তর প্রশ্নশীল থাকা তার উদ্দীষ্ট। আমেরিকান উপন্যাস হচ্ছে অপরাজিত এবং সাহসী মানুষের জীবনকাব্য। তীব্রভাবে সেনসুয়াল। আবার জার্মান উপন্যাসের পাঠ মেরুদণ্ড দিয়ে হিমের মত নামে। নানাপথ ঘুরে অবশেষে পৃথিবী শাসন করা লাতিন আমেরিকান নৈঃশব্দ! রুলফো, কার্পেন্তিয়ের, আরগুইরাস, মার্কেজ, ফুয়েন্তেজ, সোসা, কর্তাজার। রাশানদের মতই, এক ঝাঁক লেখক, একশ বছর সময়সীমার মধ্যে।
দস্তয়েভস্কি বলেছিলেন, গোটা রাশান গদ্য বের হয়েছে গোগলের "ওভারকোট" থেকে। মার্কেজ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, কাফকার গদ্য, বিশেষ করে "মেটামরফসিস"এর পাঠ পুরো লাতিন আমেরিকান গদ্যের ভূগোল নাকি বদলে দিয়েছে।
বাংলা ভাষার বৃহদায়তন উপন্যাসের জন্য ট্রিগারিং ফ্যাক্টরগুলো কি ছিল? তার আগে বলে নেয়া ভাল, বাংলা ভাষায় কিন্তু বৃহৎ উপন্যাস লেখার বৃহৎ চল বহুদিন ধরেই আছে: সে রবীন্দ্রনাথের "গোরা" বা তাকেও ছাপিয়ে যাওয়া তিরিশ-চল্লিশের উপন্যাসমালা। অমিয়ভূষণের নাম মনে আসে, কিন্তু তার আগে তারাশংকর। তারাশংকর, মানিক, অমিয়ভূষণ, সতীনাথ ভাদুড়ী, অসীম রায়, মহাশ্বেতা দেবী, আবু জাফর শামসুদ্দীন। এরা উপন্যাস বলতে এথনোগ্রাফিই বুঝেছেন, এবং তাদের উপন্যাসে কিন্তু চরিত্রের ছড়াছড়ি।
বাংলার উপন্যাস সবুজ কিনা জানি না, তবে আকারে ছোট সে হয়েছে অনেক পরে। মোটের ওপর দুটো ঘটনা বাংলা উপন্যাসকে বড় ক্যানভাস দিয়েছিল: দেশভাগের দুঃস্বপ্ন এবং সাম্যবাদের স্বপ্ন। এত বছর পর, যখন স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন দুইই ধূসব হয়ে গেছে, কোন প্ররোচনায় বাংলা উপন্যাস বৃহদায়তন হয়ে উঠবে?
সতীনাথ ভাদুড়ীর উপন্যাস "প্রমাণ" আকারের মনে হয়েছে আমার কাছে। ঢোঁড়াই চরিত মানস বা জাগরী, অনেক ঘন। রুশ উপন্যাসকে বৃহদায়তন ধরলে তার কাছে বাংলা সাহিত্যের বৃহদায়তন উপন্যাসগুলিও আরো হ্রস্বায়তন মনে হয়।
হাঁটুপানির জলদস্যু
মুহম্মদ জুবায়ের ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আমার প্রিয় উপন্যাসের তালিকায় আছে খোয়াবনামা, চিলেকোঠার সেপাই ও লালসালু।
মিলনের একটা উপন্যাস আছে, ৪৩ অথবা ৪৯ পৃষ্ঠার। বাকাজল নাম। আমি নিশ্চিত যেই পড়বেন মিলনের ব্যপারে তার ধারনা কিছুটা হলেও বদলাবে।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
মিলনের লেখার মাঝে ভূমিপুত্র আর নূরজাহানটা ভালোই।
-----------------------------------
কিস্তিমাতের যুদ্ধ শেষে,সাদাকালো ঘুটিগুলো এক বাক্সেই ফেরত যাবে...
মিলনের 'যাবজ্জীবন'ও ভালো লাগছিল।
নজমুল ভাই, মিলনের অন্য উপন্যাস থেকে বাকাজল কেনো আলাদা সে ব্যাপারে কিছু কথা আশা করছিলাম। তাহলে হয় তো আপনার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উপন্যাস কেমন হওয়া উচিত সেটা বের হয়ে আসবে---
সুমন ভাইয়ের কথার রেশ ধরে সুমন ভাইকে একটা প্রশ্ন করি।
এই যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মতো একটা বিশাল ঘটনা,মাত্র ৩৬বছরের পুরোনো,সেটা নিয়ে কোন বলার মতো উপন্যাসকি আমরা পেয়েছি?
এতো বড়ো একটা ঘটনা কেন তার বিশালত্ব নিয়ে আমাদের পরের প্রজন্মের কাছে ধরা পড়বে না কোন উপন্যাসে?এটা কি বাঙালি লেখকদের ব্যর্থতা?
আপনার কি মনে হয়?এর কারনটা আসলে কী?
-----------------------------------
কিস্তিমাতের যুদ্ধ শেষে,সাদাকালো ঘুটিগুলো এক বাক্সেই ফেরত যাবে...
আরিফ, আপনার প্রশ্ন আগেই চোখে পড়েছিল। নানা কারণে জবাব দেয়া হয় নি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কেন ৩৬ বছরেও একটা ভালো উপন্যাস হয় নি, এ এক জটিল প্রশ্ন। অনেকে অনেকভাবে এর উত্তর দিয়েছেন, আপনি জানেন সেটা। আমার একটা ভাবনা আছে। গুছিয়ে বলি:
আপনি জানেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক ভাল ভাল গল্প লেখা হয়েছে। শওকত ওসমান থেকে হাসান আজিজুল হক, আফসান চৌধুরী, ইলিয়াস, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, হুমায়ুন আহমেদ, শহিদুল জহির আরো অনেকে। ভাল গল্প হল অথচ ভাল উপন্যাস হল না... কেন?
একটা হতে পারে: লেংথ। মুক্তিযুদ্ধের এবং উপন্যাসের। হয়ত, মুক্তিযুদ্ধের লেংথ উপন্যাসের আয়তনের জন্য প্রতুল ছিল না। অনেকে বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ অনেক তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেছে। এ কারণেই নাকি আমরা মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযোদ্ধাদের মহত্ত্ব বুঝি না। আমার মনে হয়, উপন্যাসের ক্ষেত্রেও এরকম হতে পারে।
স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা কয়টা উপন্যাসের নাম বলি এবং পড়ার মত মনে করি। ঘুরে ফিরে ইলিয়াসের চিলেকোঠা আর খোয়াবনামা। ফলে আমাদের গদ্যলেখকেরা তৈরি ছিলেন কিনা অমন মহৎ কোনো উপন্যাস রচনার জন্য, এও এক প্রশ্ন।
তবে আমি এখনো মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে উপন্যাসের যথেষ্ট সম্ভাবনা দেখি। শাহীন আখতারের "তালাশ" মুক্তিযুদ্ধকে আশ্রয় করে লেখা একটা ভাল উপন্যাস। তিনি আমাদের প্রজন্মের লেখক।
ডিটেলসের দিক থিকা অবশ্য জার্মান উপন্যাস অআমার সবিশেষ প্রিয়। মানে এই পর্যন্ত যেই কয়জনের চিনি আর কি। টমাস মানের ডিটেলস অসাধারণ।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
বদ্দা ডিটেইলসগুলো কী কী নিয়ে আসে, কেমন স্রোত হয় আরেকটু বলেন - - -
জুবায়ের ভাই কিছু বলছেন না।
উনাকে প্রশ্ন:
উপন্যাসের শব্দ সংখ্যা কেমন হওয়া উচিত? বিষয়ের ব্যাপকতায় বড় গল্প থেকে উপন্যাসকে কিভাবে আলাদা করা যায়?
শুনছি।
---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
শুধু শুনলে হবে না, আপনাকে কিছু বলতেও হবে!!
আমার পানপাত্রটি কিন্তু এখনো হাতে পাইনি, কথা হবে কী করে!
ঠাট্টা থাক, কাজের কথা বলি।
যার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ, তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে কী লাভ, শিমুল! আমার solitude শত বছরের ন হলেও তার দৈর্ঘ্য একুশ বছর। অনেক দীর্ঘ সময়, এর মধ্যে একটা দিনও মনে করতে পারি না যখন সাহিত্য বা লেখালেখি ইত্যাদি নিয়ে এক ঘণ্টা দরকারি কথা বলেছি। যা পড়ি, যা ভাবি - সবই নিজের মতো করে। তার কোনো সংহত, সংগঠিত আকার-অবয়ব নেই। ফলে বৈঠকি মেজাজে বা গুছিয়ে কিছু বলা আমার জন্যে দুরূহ। সংগঠিত ভাবনা একটা চর্চার বিষয়। তার প্রকাশও। আমি তার থেকে যোজন যোজন দূরে।
মাঝেমধ্যে আলটপকা মন্তব্য করে দিতে পারি, এর বেশি আর কী বলবো? একই কারণে কনফুসিয়াসের গল্প লেখালেখি বিষয়ক পোস্টেও কিছু বলা হয়নি।
এই আলাপগুলো উপভোগ করছি, শিখছিও অনেক।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
পানপাত্র অবশ্যই পাবেন, আজ নয়তো কাল - - -
ধন্যবাদ।
আমি যে প্রসংগ তুলেছিলাম সে নিয়ে কিছু 'আলটপকা মন্তব্য'ই না হয় করুন। আমরা ঋদ্ধ হই!
- শিমুল, আপনার জন্য ইমেইল করেছি। ইম্পর্টেন্ট।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধাক্কা দিলাম, দেখি কেউ কিছু বলে কিনা।
বস, নতুন লেখা কই? প্রতিদিন উঁকি দেওয়ার সমানুপাতিক হারে রাগও বাড়তেছে কিন্তু, গররররর...
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
বস, একটু ঝুটঝামেলা থেকে বের হই, তারপরে পাবেন, শিউর!
আর এই পোস্টে আপনার কিছু মতামত আশা করছিলাম, সম্পুরক আলোচনা যতটা আশা করেছিলাম ততটা হয়নি। সবাই ব্যস্ত বোধ হয়!
পড়ছি!
আমি ছোট, আমাকে মারবেন না।
কি মাঝি? ডরাইলা?
শিমুলের লেখা মেলা দিন পাই না ভেবে ক্লিক করে দেখি এই বিরাট কাহিনী। ভালো! পড়লাম।
--তিথি
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
জ্ঞানী লোকজন খালি পড়েই গেলো। কথা বললো না।
_________________________
'আজকে না হয় ভালোবাসো, আর কোন দিন নয়'
- আলোচনার পরের রিফ্রেশমেন্ট পর্ব আসলে গরীবরে সাউন্ড দিয়েন জনাব।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
নতুন মন্তব্য করুন