ভার্চুয়াল আচরণ বনাম ব্যক্তি অনুসন্ধান

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
লিখেছেন আনোয়ার সাদাত শিমুল (তারিখ: সোম, ১৭/১১/২০০৮ - ৩:০১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যারা ব্লগস্পটে ব্লগান তাঁদের বেশিরভাগই কাউন্টার বসান - কে এলো গেলো, কোত্থেকে এলো, কেমন ভিজিটর এলো এসব জানতে। ব্যাপারটা নিঃসন্দেহে ইন্টারেস্টিং। গুগলে কোন শব্দ সার্চ করে আমার ব্লগস্পটে কীভাবে কে এলো সেটাও দেখা যায়। গত এক মাসে খেয়াল করেছি জনৈক জম্মানবাসী সচলের নাম ধরে গুগলিং করে আমার নিজের ব্লগস্পটে ভিজিটর বাড়ছে। আটলান্টিকের এপার ওপার দুপার থেকেই গুগলিং হচ্ছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, যে পোস্টে ভিজিটররা আসছেন সেটা নিছক কল্পগল্প। ব্লগ ইন্টার‌্যাকশনের অতীত না জানা থাকলে ঐ লেখা পড়ে নতুন কারো বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা মারাত্মক।

‘কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি’ সেমিনারে প্রফেসর আভনার প্রশ্নটা তুলেছিলেন কয়েক সপ্তাহ আগে। ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে কারও সম্পর্কে যা তথ্য পাওয়া যায় সেটা কতোটা বিশ্বাসযোগ্য। কিংবা পাওয়া তথ্য পুরোপুরি সত্য হলেও তার কতোটা গ্রহণ কিংবা কতোটা বর্জন করতে হবে?
তর্ক হয়েছে তুমুল।
কেউ তার নিজস্ব অবস্থান থেকে নিজের সাইট/ব্লগ চালাতে পারে। সেখানে তার নিজের রাজনৈতিক বা সামাজিক অবস্থান নিয়ে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ চলতে পারে। এটা নিতান্তই তার ব্যক্তিগত। কিন্তু, অন্যরা তার এ মত কিংবা আদর্শকে কীভাবে দেখবেন?

এ ব্যাপারেই জানতে চাইছি প্রিয় সচলদের কাছে -

কয়েকটা দৃশ্যকল্প দিলে মনে হয় ভালো হয়ঃ

এক.
একজন মানুষের সাথে নতুন পরিচয় হলো আপনার। তার সাথে সামাজিক কিংবা পেশাগত সম্পর্কের একটা সম্ভবনা আছে। যেমন, প্রেম বন্ধুত্ব বা বিয়ের প্রস্তাব হতে পারে। আবার হতে পারে তার সাথে ব্যবসা করবেন অথবা সে আপনাকে চাকরী দিবে তার অফিসে কিংবা আপনি তাকে চাকরী দিবেন আপনার অফিসে।
হঠাৎ মনে করলেন, আররে, গুগলে ওর নামে সার্চ মেরে দেখি তো কী কী আছে! এখন বেশিরভাগ মানুষ কোনো না কোনোভাবে ইন্টারনেটে যুক্ত হচ্ছে। আপনি হয়তো তার ব্লগ পেলেন, কিংবা কোনো ফোরামে আলাপ-আড্ডা পেলেন, অথবা ফেসবুক একাউন্টের খবর পেলেন।

প্রশ্নঃ এসব জায়গায় পাওয়া তথ্যগুলোকে আপনি কতোটা সিরিয়াসলি নিবেন? যা পড়বেন তা কি বিশ্বাস করবেন? আগে যেমনটা বলেছি, সামাজিক বা পেশাগত সম্পর্ক নির্মাণের ক্ষেত্রে এসব ভার্চুয়াল তথ্য আপনাকে কতোটা প্রভাবিত করবে?
__

দুই.
এটা আগেরটার সম্পুরক বা পরিপূরক। অনেকেই বলেন, ভার্চুয়াল স্বত্বা বাস্তব থেকে আলাদা। তার মানে কি এটা দাবী করা যাবে যে আমি অন্তর্জালে যা বলছি সেটা আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস নয়! যাঁরা ছদ্মনামে লিখেন তাঁদের ব্যাপারটা আলাদা করে রাখি। কিন্তু যাঁরা নিজের নামে লিখেন, বিভিন্ন বিষয়ে তর্ক বিতর্কে অংশ নেন, তাঁরা কি নিজের সব মন্তব্যের কিংবা অবস্থানের দায়ভার নিবেন? ধরি একজন মানুষ নাম ‘গাজী ওবামাকেইন’। এটা তাঁর আসল নাম, তিনি এই নামেই ব্লগে লিখেন। যুক্তির আসরে ঝাপিয়ে পড়েন স্বউদ্যোমে। অন্যায় কথাবার্তা দেখলেই যুক্তি দিয়ে বোঝাতে চান ঠান্ডা মাথায়। মাঝে মাঝে পারেন, মাঝে মাঝে পারেন না। তখন মাথায় রাগ চড়ে যায় আর প্রায়ই বলে ফেলেন – ‘রামছাগলের মতো কথা বললে গদাম লাত্থি খাবি’। এই কথা তিনি এতোবার বলেছেন যে একটু ডিটেইল গুগলিং করলে এই ব্যাপারটা সার্চে চলে আসে। এখন গাজী ওবামাকেইন চাকরি বা বিয়ের জন্য মাঠে নামলেন। চাকরীদাতা বা হবু শ্বশুর দিলেন গুগলে সার্চ। দিয়ে বললেন, ‘ধুর, ওতো অভদ্র রগচটা। দেখো কী সব নোংরা কথা বলে নানান ফোরামে।‘
আর এভাবে ক্রমাগতঃ বাদ পড়েন গাজী ওবামাকেইন। বন্ধুরা বিয়ে করে, বন্ধুরা চাকরি পায়। গাজী ওবামাকেইন অপেক্ষা করে সুদিনের। জানেও না কেনো সে বাদ পড়ে বারবার। জানলেও যুক্তি দেখায়, ‘আরে ওটা তো ভার্চুয়াল...’।

প্রশ্নঃ ভার্চুয়াল স্বত্ত্বা আর বাস্তব স্বত্ত্বাকে আপনি কতোটা একাত্ব বা আলাদা করে দেখেন? গাজী ওবামাকেইনের অন্তর্জালিক আচরণকে আপনি কেমন করে দেখবেন?

__
তিন.
এটা একটু ভিন্ন প্রেক্ষাপট। এটা হলো অন্তর্জাল আচরণের দায়ভার। যেমন ধরি, আমি সময় পেলে প্রায়ই ইউটিউবে ঘুরি। এরকম ঘুরতে ঘুরতে আজ পেলাম বাংলাদেশী সদ্য কিশোরী এবং সদ্য যৌবনা দুই বোনের মর্ডান নাচের ফাইল, গায়ে টি শার্ট- থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট। পুরোটাই ঘরোয়া এমেচার কাজ। ভিডিও করেছে তাঁদের মা বা খালা বা বড়বোন বা অন্য কেউ। গুতিয়ে দেখলাম ঐ ইউজারের ফোল্ডারে এরকম আরও হাফ ডজন শৌখিন নাচ-গানের ভিডিও আছে। ধরি, নাচগুলো আমার কাছে খুব ভাল লাগলো। একটু ঝাকানাকা, তবে বারবার দেখার মতো ব্যাপার। কিংবা ধরি, আসলে সেরকম শিল্প মানের কিছু নয়, আমার উথাল-পাথাল বয়সের কারণেই এরকম অসাধারণ জিনিশ বলে মনে হচ্ছে। সিদ্ধান্ত নিলাম, সচলায়তনে কিংবা ফেসবুকে দিই, সাথে আরও কিছু ইন্টারেস্টিং ভিডিও দিই। সবার সাথে শেয়ার করি। দেয়ার আগে কথা বললাম, আমার বাল্যবন্ধু দীপ্তর সাথে। সে প্রতিভাবান কম্পিউটার বিজ্ঞানী। এবং সে কম্পু-এথিকসের ব্যাপারে ভালো জানে। সে আমাকে বললো, ‘এটা একটু গ্রে সিদ্ধান্ত। তবে যেহেতু ধরা যায় এগুলো পাবলিক প্লেসে ওপেন করে রাখা আছে, সেহেতু তুমি সচলে এমবেডেড ভিডিও করে দিতে পারো। কিন্তু, খেয়াল রাখো – উলটা পালটা কমেন্ট আসলে তার দায়ভার তোমাকেই নিতে হবে’।
এরপরে চিন্তা করলাম, আসলেই কী তাই? উচ্ছ্বলা উদ্ভিন্না দুটো মেয়ে নাচবে, দুলবে; এটা দেখে কেউ একজন সরেস কমেন্ট করে বসতেই পারেন। আরও দুয়েকজন তাতে রসদ দিতে পারেন, কারণ – যারা নাচছে তাদের আমরা কেউ চিনি না, তারাও আমাদের চিনে না। এই ফোরামে এরকম কমেন্ট চালাচালি হচ্ছে সে খবর তাদের কানে হয়তো যাবেও না। যেহেতূ মালিকের অনুমতি ছাড়া এরকম ক্লিপ আমি অন্য কোথাও শেয়ার করছি, এবং সেখানে ‘অনুভূতিতে আঘাত আসতে পারে’ টাইপ কমেন্ট করা হচ্ছে, সেহেতু পাবলিশার/ডিস্ট্রিবিউটর হিসাবে এর পুরো দায়ভার আমাকেই নিতে হবে। দীপ্তর এ ব্যাখ্যাটা মনে ধরেছে।

প্রশ্নঃ দীপ্ত যা বলেছে তা কি শতভাগ ঠিক? কোনো পারফরম্যান্স, সেটা লেখা হোক – গান হোক – নাচ হোক, যখন পাবলিকলি আসে তখন পাঠকের/শ্রোতার/দর্শকের মতামত দেয়ার স্বাধীনতা কি অসীম নয়? সকল প্রকার মতামত কি পারফরমারকেই নিতে হবে না?

প্রিয় সচল, আপনি কী ভাবছেন?
__

বাংলা অন্তর্জাল বিস্তৃত হচ্ছে। নিত্য আসছে নতুন ফোরাম। থাকছে নানা রকম নীতিমালা, অবস্থান। উপরের দৃশ্যপট বিবেচনায় এই মুহুর্তে ভার্চুয়াল আচরণের সীমানা নির্ধারণ কি প্রয়োজন?


মন্তব্য

গৌতম এর ছবি

এক নিঃশ্বাসে পড়লাম। উত্তর দেবার আগে ভাবতে হবে। তাই আপাতত কিছু লিখলাম না। কিন্তু প্রশ্নগুলো ভাবাচ্ছে এটুকু জানিয়ে রাখলাম। লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ধন্যবাদের জন্য ধন্যবাদ, গৌতম। বিস্তারিতের অপেক্ষায় রইলাম।

দিগন্ত এর ছবি

প্রথমটা আমি নিয়মিত করে থাকি এবং প্রভাবিতও হই তথ্য ঘেঁটে। তার কারণ, কিছু না জানার তুলনায় কিছুটা জানা কিছুটা বায়াস তৈরী করতে বাধ্য - এটা মানবপ্রকৃতি। তবে আমার ধারণা, আরো ভবিষ্যতে আরো আরো তথ্য থাকবে ইন্টারনেটে এবং তখন ঠিক-ভুল বের করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। কিছু ভুল ধারণা থেকে শিক্ষা নেওয়াটাও শেখা জরুরী।

ভার্চুয়াল সত্ত্বা বলে কিছু হয় না, এটা ছদ্মনামে লেখকের লেখার মতই। লেখকের বক্তব্যই যেমন ছদ্মনামে প্রকাশিত হয়, সেরকমই ভার্চুয়াল সও্বার পেছনের ব্যক্তিই আসল।

ইউটিউবে পাবলিক কিছু থাকলে সেটা আপনি আরেকটা পাবলিক প্লেসে দিলে তার পাবলিসিটির স্কোপ কিছু বাড়ে না, সুতরাং আপনার কোনো দায়ভার আমি তো দেখি না। যে ভিডিওটা পাবলিশ করেছে তার সেটা ভেবে দেওয়া উচিত যে ইউটিউব ভিডিও যেকোনো জায়গায় এমবেড করা যায়। তবে, যদি আপনি কোনো রেসট্রিক্টেড সাইট বা কপিরাইটকৃত ভিডিও এমবেড করতেন তার দায় আপনার ঘাড়ে পড়তে পারত। এটা আমার কম্পু এথিকস।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, দিগন্ত। একটা মত পাওয়া গেলো। দেখি বাকীরা কী বলেন।

আপনি বলেছেন, "আরো ভবিষ্যতে আরো আরো তথ্য থাকবে ইন্টারনেটে এবং তখন ঠিক-ভুল বের করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। "

এই ব্যাপারে একটু আগ্রহ জাগলো - এখন কি চ্যালেঞ্জ একেবারেই নেই? সিদ্ধান্ত গ্রহণে আইডেন্টিটি থেফট সম্ভবনাকে আপনি কতটা মাথায় রাখবেন।

দিগন্ত এর ছবি

মানে চ্যালেঞ্জটা আরো অনেক বাড়বে বইকি। আইডেনটিটি থেফট ব্যাপারটা যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তার মাথায় থাকা উচিত। শুধু থেফট নয়, কনটেক্সট অনুসারে অনেকেই বিভিন্নরকম ব্যবহার করে থাকেন। মানুষ যে কত বিচিত্র হতে পারে সে ধারণাও রাখা উচিত।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

ভালো পর্যবেক্ষণ। অনেকেই অন্তর্জালিক সত্ত্বা থেকে ব্যক্তি সত্ত্বাকে পৃথক করে রাখেন। আমি তা পারি না। এই আমি'র যা পরিচয় ব্যক্তি আমি তাই-ই। তাই এখান থেকে কেউ যদি আমাকে চিনে নেন, তাইলেও কোনো অসুবিধা নাই। একদা পাফো করার সময় জয়দীপ দে শাপলু আমাকে ভেবেছিলেন আমি অন্তর্মুখী ধরনের মানুষ। আসলেই আমি অন্তর্মুখী ধরনের। তো এটাই আমি। আমার ব্যাপারে এতটুকু ঠিক। কিন্তু ভার্চুয়াল জগতে অনেককেই এমন সব আচরণ করতে দেখি, এমন সব মন্তব্য করতে দেখি বিশেষত বেনামে যারা লেখেন, কিন্তু আমার ধারণা বাস্তব জগতে হয়তো এমন নন। কাজেই গুগল মামার কল্যাণে প্রাপ্ত সব তথ্যই বাস্তব বলে ধরে নিতে হবে কিংবা সিরিয়াসলি নিতে হবে এমন নয়। কাজেই বাস্তব জগতে সে কেমন সেটাতেই গুরুত্ব দেয়া উচিৎ।

দীপ্ত যা বলেছে, তা মোটামুটি ঠিকই মনে হয় আমার কাছে। তবে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে পাঠকেরও কিন্তু কিছুটা রেসপনসিবিলিটি থাকে। সে কী বলছে, কাকে বলছে, কিংবা কোন পরিস্থিতিতে বলছে তা বিবেচনা করা উচিৎ বলেই আমার মনে হয়।

অফটপিক: গুগল মামার কল্যাণে আপনার ব্লগস্পটে যাওয়া হয়নি কিন্তু আজকেই আপনার ছাদের কার্ণিশে দাঁড়কাক বইখানা পেয়েছি। পড়ে পাঠানুভূতি জানাবো আশা রাখছি।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ধন্যবাদ পান্থ! এত সময় পরে কাকটা দাঁড়কাক হয়ে গেছে জানলাম। আপনার কেমন লেগেছে তা জানার আশায় রইলাম।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

১) আমি সবই সত্যি ভাবব। শুধু মাত্র বন্ধু হতে আমি কাউকে এত যাচাই করিনা। কিন্তু যদি চাকরি দেয়া বা ওরকম কোনো সিরিয়াস ইন্টেনশন আমার থাকে তাইলে যাচাই করার চেষ্টা করব।
২) আমি ভার্চুয়াল স্বত্ত্বা আর বাস্তব স্বত্ত্বাকে মোটামুটি একি দেখি। যদিও অনেক সময় তা আলাদা হয়। গাজী ওবামাকেইন এর আচারন আমি রিয়েলই ভাবব।
৩) দীপ্তর কথা আমার মনেহয় শতভাগ ঠিক না, যদি কেউ ওপেন ভাবে এমন ভিডিও আপলোড করে তাইলে এটার রেফারেন্স যে কেউ দিতে পারে আর এর দায় ভার আমি মনেকরি অরিজিনালি যে আপলোড করেছে তার।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

প্রশ্নঃ এসব জায়গায় পাওয়া তথ্যগুলোকে আপনি কতোটা সিরিয়াসলি নিবেন? যা পড়বেন তা কি বিশ্বাস করবেন? আগে যেমনটা বলেছি, সামাজিক বা পেশাগত সম্পর্ক নির্মাণের ক্ষেত্রে এসব ভার্চুয়াল তথ্য আপনাকে কতোটা প্রভাবিত করবে?

একটা প্রভাব তো থাকবেই। সিরিয়াসনেসের কমবেশি হবে পরিস্থিতি বুঝে।

প্রশ্নঃ ভার্চুয়াল স্বত্ত্বা আর বাস্তব স্বত্ত্বাকে আপনি কতোটা একাত্ব বা আলাদা করে দেখেন? গাজী ওবামাকেইনের অন্তর্জালিক আচরণকে আপনি কেমন করে দেখবেন?

এখানেও পরিস্থিতি বিচারের ব্যাপারটা চলে আসে। গালি দেয়ার দক্ষতা থাকা খারাপ না, দেখতে হবে গালি কাকে এবং কেন দেয়া হচ্ছে। একজন মানুষের অনেকগুলো দিক থাকতে পারে, এক একটা ভার্চুয়াল স্বত্ত্বায় তার এক একটা দিক প্রকাশ পেতে পারে। বাস্তব স্বত্ত্বা = ভার্চুয়াল স্বত্ত্বাগুলোর যোগফল, যা আবার পরিস্থিতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

প্রশ্নঃ দীপ্ত যা বলেছে তা কি শতভাগ ঠিক? কোনো পারফরম্যান্স, সেটা লেখা হোক – গান হোক – নাচ হোক, যখন পাবলিকলি আসে তখন পাঠকের/শ্রোতার/দর্শকের মতামত দেয়ার স্বাধীনতা কি অসীম নয়? সকল প্রকার মতামত কি পারফরমারকেই নিতে হবে না?

এই সমস্যার ২টা অংশ, যার প্রথমটা আমার মতে সহজ, দ্বিতীয়টা একটু কঠিন। প্রথমটা হলো, কেউ পাবলিক প্লেসে কিছু প্রকাশ করলে সেটা বিভিন্ন ধরনের পাবলিক দেখবে, এটা এক্সপেক্ট করা প্রকাশকারীর দায়িত্ব। ২য় অংশটা কমেন্ট নিয়ে। কমেন্টে কেউ সৎ থাকলে কোনো সমস্যা নেই। কারো গান ভালো না লাগলো, বললাম ভালো লাগে নি। কিন্তু হ্যারাসমেন্টের উদ্দেশ্যে নেয়া পদক্ষেপ সমর্থনযোগ্য না। এখানে কঠিন অংশটা হচ্ছে, সততা জিনিসটা নিশ্চিত করা।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

বরাবরের মতোই টু দ্য পয়েন্ট। জাঝা।

তানবীরা এর ছবি

আজকাল ইনফরমেশন আর কমিউনিকেশনের জন্য ইন্টারনেটের কোন বিকল্প নেই। কোন রেষ্টুরেন্টে খেতে যাওয়ার আগেও একটু গুতা মেরে দেখে যাই, কোথায় যাচ্ছি।

কোন ইনফরমেশন নিতে গেলে অবশ্যি কোন ওয়েবসাইট থেকে নিচ্ছি সেটা বুঝতে হবে। আবুল - গাবুল নাকি উইকিপেডিয়া।
আমি নিজেকে দিয়ে বিচার করলে ভার্চুয়াল আর নন ভার্চুয়াল ব্যাক্তি স্বত্ত্বাকে তেমন আলাদা ভাবে দেখি না।
যে ইউটিউবের মতো জায়গায় নিতান্ত ব্যাক্তিগত জিনিস শেয়ার করে তার দ্বায়িত্ব তাকেই নিতে হবে কিন্তু একজন ভুল করেছে বলেই যদি সেটা আমি মিস ইউজ বা এক্সপলয়ট করি তাহলে আমার নিজের মূল্যবোধ কিংবা রুচির প্রশ্ন থেকেও নিজে বের হতে পারি না।

ভালো পর্যবেক্ষন শিমূল।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সৌরভ এর ছবি

ঠিকাসে। সবাই কি বলে দেখেশুনে আমিও দু্পয়সা দেবো।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

পলাশ দত্ত এর ছবি

বিষয়টা কঠিন। কিঞ্চিত্ ভেবে মতামত দিতে হবে।

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

শামীম এর ছবি

প্রশ্নঃ এসব জায়গায় পাওয়া তথ্যগুলোকে আপনি কতোটা সিরিয়াসলি নিবেন? যা পড়বেন তা কি বিশ্বাস করবেন? আগে যেমনটা বলেছি, সামাজিক বা পেশাগত সম্পর্ক নির্মাণের ক্ষেত্রে এসব ভার্চুয়াল তথ্য আপনাকে কতোটা প্রভাবিত করবে?

কেউ যদি বিবাহের জন্য সিভি পাঠায় কিংবা চাকুরীর জন্য সিভি পাঠায় ওটার তথ্য বা চারিত্রিক সার্টিফিকেট যতটুকু বিশ্বাস করি, এটাও সেরকম হওয়ার কথা।

প্রশ্নঃ ভার্চুয়াল স্বত্ত্বা আর বাস্তব স্বত্ত্বাকে আপনি কতোটা একাত্ব বা আলাদা করে দেখেন? গাজী ওবামাকেইনের অন্তর্জালিক আচরণকে আপনি কেমন করে দেখবেন?

প্রেম করার সময়, প্রতিদিন ২/৩ ঘন্টা খুব ভাল সেজে থাকা যায়। এটা দিয়ে ২৪ ঘন্টার আচরণ কীরকম হবে তা কি বোঝা যায়? চমৎকার সাজুগুজু, ব্যবহার/ভাষা হলেও অন্য সময় ঘরে অন্যদের সামনেই যে খুটে নাকের লোম তোলে না সেটা নিশ্চিত হওয়া কি ঠিক।

সামনে চমৎকার প্রগতিশীল ব্যবহার মনে হলেও নিজ আত্মীয়ার সাথে বিবাহের সম্ভাবনা জাগানো তরুন সহকর্মী নিজ জীবনে যে একগুঁয়ে ধর্মান্ধ বুরবক না সেটা কী নিশ্চিত হওয়া যায়? সব সাজানো হতে পারে কী না?

ভার্চুয়াল সত্ত্বাও ওরকম হলে আলাদাভাবে অবাক হব না।

অন্য প্রশ্নের উত্তর অন্যদের সাথে একই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

এলোমেলো ভাবনা এর ছবি

Interesting observation.

I know, a college that denied an applicant, just coz the applicant trashed the school in his myspace page. Employers these days search employees in myspace , FB and other community sites. Officially they can't use these to deny or accept people, but these definitely leave some impression on their minds.

I think people should take responsibility what they say even on their personal sites.

--------------------------------------------------------------------------------------

এমন শহরে আমি ঘুরি , নাকি শহরটাই ভবঘুরে?


হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই,

দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ইন্টারেস্টিং! ঘটনাটা আরও ডিটেইল শুনতে মন চাচ্ছে।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

একই রকম একটা বিষয়ে একটা লেখা অর্ধেক লিখে ফেলে রেখেছি। মন খারাপ

প্রশ্নঃ ভার্চুয়াল স্বত্ত্বা আর বাস্তব স্বত্ত্বাকে আপনি কতোটা একাত্ব বা আলাদা করে দেখেন? গাজী ওবামাকেইনের অন্তর্জালিক আচরণকে আপনি কেমন করে দেখবেন?

- বেশী আলাদা দেখি না। প্রায় কাছাকাছি দেখব।

বাকি গুলা পরে বলি।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

ধুসর গোধূলি এর ছবি
কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

নাঃ, ব্যাক্তিগত আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরি থেকে একটু দূরে আছে দেঁতো হাসি
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

দেঁতো হাসি
না বসে আইসা পড়ছিল। উপরন্তু লেখতে গিয়া মনে হইল এক্সপ্লানেশন না দিয়া খালি প্রশ্নের উত্তর দিলে ব্যাপারটা খোলাশা হবে না। তাই...

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

বস, আপনার লেখাটা পড়ার অপেক্ষায় আছি। তাড়াতাড়ি দেন, 'জরুরী কাজে ঢাকার বাইরে' গেলে 'ব্যাস্ত' হয়ে যাবো। চোখ টিপি

রণদীপম বসু এর ছবি

চমৎকার একটি বিষয়কে আলোচনায় নিয়ে আসার জন্য শিমুল আগে আপনাকে একটি ধন্যবাদ দিয়ে নিই। দিনের মাত্র ১৪৪০ টি মিনিট থেকে আমাদেরকে যে বেশ কতটুকু সময় দান করলেন এজন্য কৃতজ্ঞতাও জানাতে হয়।

তিনভাগ করলেও এখানে প্রধানত দুটো বিষয়।
প্রথমত এটা তো আমাদেরকে মানতে হবে যে, পূর্ণ ব্যক্তিসত্ত্বায় কোন খন্ডিত প্রকাশ গোটা ব্যক্তিকে প্রকাশ করে না। তেমনি আবার চৌর্য মনোবৃত্তিসম্পন্ন একজন ব্যক্তির সাময়িক কিছু সময়ের ভালো থাকার প্রদর্শনীও তাকে ভালো প্রমাণীত করে না। আমি যে কোন ফোরামেই একটি জঘন্য গালি দিতে পারলে এটা তো প্রমাণীত হলো যে আমার রুচিবোধে গালি দেবার প্রবণতা ও সক্ষমতা উভয়টাই রয়েছে। অতএব এখানে ব্যক্তি সত্ত্বা ও ভার্চ্যুয়াল সত্ত্বাকে আলাদা করে দেখার কোন কারণ রয়েছে বলে আমি মনে করি না। কেননা আমার রুচিবোধে খারাপভাবে গালি দেয়াটাকেও অনুমোদন করছে। এবং আমার জিহ্বায় এক্ষেত্রে জড়তা নেই। অতএব আমি সুযোগমতো আবারও আমার এ রুচিবোধ প্রকাশ করতে পারি। যিনি যুক্তিবোধে চালিত হন, তিনি ব্যক্তি জগৎ কিংবা ভার্চ্যুয়ার জগৎ সবক্ষেত্রেই চালিত হবার কথা। একজায়গায় যুক্তিবোধ আরেক জায়গায় যুক্তিহীনতা মানে গোটা ফলাফল আমি যুক্তিহীন গোঁয়ার। যেটুকু যুক্তিবোধ দেখিয়েছি তা দায়ে পড়ে।

দ্বিতীয়ত ইউটিউবের বিষয়টি। ব্যক্তি নিজেকে পাবলিকলি যেভাবে প্রকাশ করলেন তাতে তাই তো প্রমাণীত হচ্ছে যে তাকে এভাবে সবাই দেখুক। অতএব তার ইচ্ছাকে সহযোগিতা করে অন্য কেউ যদি সেটা আরো ছড়িয়ে দেয় দ্বিতীয় পক্ষের কোন দোষ তো আমি দেখি না ! আর এ ক্ষেত্রে যারা কমেণ্টস ছুঁড়বেন সেখানে তাদের রুচিবোধের প্রকাশ ঘটবে। ভালো খারাপ যাই হোক, আপলোডকারী প্রথমপক্ষ সে মন্তব্য জেনে হোক বা না জেনে হোক তা তাকে বইতে তো হবেই। এই দায়বদ্ধতা দ্বিতীয়পক্ষের বইতে হবে কেন ?

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আরিফ জেবতিক এর ছবি

এখানে একটা প্রশ্ন আছে আপনার কাছে ।
ধরা যাক আপনি লিখেছেন সচলায়তনের জন্য , যেহেতু রেস্ট্রিকটেড করে দেননি , তাই সচলের সদস্য নন এমন পাঠকও এটি পড়তে পারছেন । স্বাভাবিকভাবেই আপনার লেখার বহুল প্রচার হলে আপনার আপত্তি থাকার কথা নয় । সেই লেখা যদি কেউ আরেকটি ভালো ফোরামে কোট করে , আপনার হয়তো আপত্তি থাকবে না ।

কিন্তু সেই একই লেখা যদি দৈনিক সংগ্রাম কিংবা সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর ওয়েবসাইটে দেখা যায় , তাহলে আপনার প্রতিক্রিয়া কী হবে ?

রণদীপম বসু এর ছবি

খুবই যুক্তিসঙ্গত প্রশ্ন।
সংগ্রাম বা সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর ওয়েবসাইটে আমার লেখাটি দেখা গেলে তো আমার আনন্দিতই হবার কথা ! কেননা আমার লেখাটি নিশ্চয় আমার চিন্তা-ভাবনাকেই প্রতিনিধিত্ব করছে। আর সেই ক্ষেত্রে লেখাটি নিশ্চয়ই রাজাকার বিরোধী হবে। অতএব এই কল্প-সম্ভাব্যতাটুকুর সম্ভাব্যতা আসলে মোটেও নেই।

আর যদি রাজাকার সমর্থিত লেখাই লিখি আমি। ধরুন সচলায়তনে পোস্ট করা হলো। তখন কি আর সংগ্রাম পর্যন্ত যাওয়া লাগবে ? তার আগেই তো আমি পালিশ। আর সে ক্ষেত্রে আমার এই লেখা নিশ্চয়ই প্রগতিশীল কোন সাইটে কোট করবে না।

যেমন আরিফ জেবতিকের লেখাই বলে দেবে ওটা কোথায় কোট হবে। খাল কেটে কেউ কি কুমির নেবে ?

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আরিফ জেবতিক এর ছবি

না , কিছু লেখাতে কিছুই বুঝা যায় না । ধরা যাক আপনি একটা গল্প লিখেছেন , সাধারন গল্প । এই গল্পে কোন রাজনীতি নেই ।
তখন কী হবে ?
আপনার অনুমতি চাইলে নিশ্চয়ই এই লেখা আপনি কোন জামাতিকে দিবেন না , কিন্তু ওয়েবে পাবলিশড ধরে নিয়ে যদি সেই লেখা সাইমুমের সাইটে ওরা দিয়ে দেয় , তাহলে কী করবেন ?

রণদীপম বসু এর ছবি

হুঁম, তা ঠিক বলেছেন।
সেক্ষেত্রে অবশ্য চরিত্রনাশের একটা ব্যাপার থেকেই যায়।
সমাধান না পাওয়াতক হয়তো বুড়ো আঙুল চুষে চুষে ভাবতে হবে তখন, দেখি চোরায় তার পরে কী করে !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আরিফ জেবতিক এর ছবি

১.
তথ্য কোথা থেকে নিচ্ছি এর উপর নির্ভর করবে তথ্যটি কতোটুকু বিশ্বাস করব । যদি উইকি থেকে হয় ,কোন নির্ভরযোগ্য গবেষনা ফোরাম থেকে হয় , তাহলে তথ্যগুলোকে অবশ্যই বিবেচনা করব । আর যদি সাইটের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে খুঁতখুঁতি থাকে , তাহলে তথ্যগুলো নোট করব , কিন্তু সরাসরি বিশ্বাস অবিশ্বাস কিছুই করব না , আরো তথ্যের জন্য অপেক্ষা করব । পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যগুলোর সাথে যদি এই তথ্যগুলোর মিল থাকে তাহলে ধারনা পোক্ত হবে ।

২.
মানুষের নেট আচরনে তার ব্যক্তিগত প্রভাব কিছুটা পড়বে বলে মনে হয় । আমি শুধু নেট আচরনের উপর নির্ভর করে একটা লোককে যাচাই করতে যাব না , কিন্তু নেট আচরনকেও বেশ কিছুটা বিবেচনায় নেব ।

অচ্ছুৎ বলাই'র সাথে আমিও একমত যে "গালি দিচ্ছে" না দেখে "কোন ধরনের লোককে " গালি দিচ্ছে সেটা বেশি দেখব । এতে করে তার বিবেচনা বোধের উপর নির্ভর করতে পারব । কেউ যদি দেখি ওয়েবে কোন ইস্যুতে ছাগলের মতো মতামত দিচ্ছে , তাহলে ব্যক্তিগত জীবনেও তার বুদ্ধিশুদ্ধি ছাগল শ্রেনীর হবে বলেই মনে করব । আবার খুব বুদ্ধিমান আচরন যে করছে তার ব্যাপারে মনে হবে ,না লোকটা বুদ্ধি রাখে ।
"ওবামাকেইন" যদি দেখি নেট জগতে পারভার্ট তাহলে ব্যক্তি জীবনেও তার পারভার্ট হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল । হয়তো সুযোগের অভাবে অথবা সামাজিক কারনে এই লোকের মাঝে সেটি দৃশ্যমান নয় , কিন্তু কখনো না কখনো সেটা সুযোগ পেলে বেরিয়ে আসতে পারে বলেই মনে করব ।

যদি দেখি কোন লোক নেটে গোষ্ঠীগত আচরন করছে , তাহলে ধরে নেব অফিসে সে একটি টিমের সাথে কাজ করতে সক্ষম হবে ।
নেটে একটা লোক তেলবাজ হলে ব্যক্তি জীবনে সে তেলবাজ হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেই আমি নিয়োগকর্তা হিসেবে ধরে নেব ।


অনুমতি ছাড়া কারো ব্যক্তিগত ভিডিও অন্য ফোরামে প্রকাশ করাটাকে আমি সমর্থন করি না । কিন্তু কমার্শিয়াল ভিডিও এমবেড করা যেতে পারে বা সেই তথ্যগুলো শেয়ার করা যেতে পারে ।

ধরা যাক , আমার ব্লগ থেকে কিছু কথা কেউ রেফারেন্স নিয়ে কোট করল অন্য কোথাও , সেক্ষেত্রে কোথায় করা হচ্ছে তার উপর বিষয়টি নির্ভর করবে । তবু আমি আশা করব আমার অনুমতি নেয়া হবে । কারন আমি সচলায়তনের পাঠকদের জন্যই হয়তো এক্সক্লুসিভলি লেখাটি লিখেছি , আমার হয়তো এই লেখাটি অন্য কোথাও প্রকাশ করার ইচ্ছা নেই । সাধারন ভাবে আমার বক্তব্য যদি বেশি জায়গায় প্রকাশিত হয় তাহলে তা তো খারাপ না , কিন্তু কোথায় প্রকাশ হচ্ছে তার উপরই নির্ভর করে বিষয়টা।

তাছাড়া ফেসবুকে আমি আমার ফ্যামিলি ছবি প্রকাশ করলাম , সেটি হয়তো আমি শুধু ফেসবুক ব্যবহারকারীদের দেখার জন্যই রেখেছি , সেই একই ছবি যদি কেউ তার ওয়েবসাইটের প্রথম পাতায় বড় করে প্রকাশ করে তাহলে আমার ভালো লাগবে না ।

আলোচ্য ক্ষেত্রে কারো পারিবারিক ভিডিও শেয়ারের যে কথা আপনি বলেছেন , সেটিতে আমার সমর্থন নেই । আবার যদি মিলার নাচ কিংবা তিশমার কোমর দুলানো হয় , তাহলে আমার আপত্তি নেই । কারন এগুলো বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে বহুল প্রচারের আশাতেই করা ।
এসব ক্ষেত্রে "কিয়াস" বা কমনসেন্স ব্যবহার করাটাকেই শ্রেয় মনে করি ।

পলাশ দত্ত এর ছবি

তথ্য কোথা থেকে নিচ্ছি এর উপর নির্ভর করবে তথ্যটি কতোটুকু বিশ্বাস করব । চলুক

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

পারফেক্ট!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

১.
ইদানিং চাকরি দেওয়ার আগে ফেসবুক প্রোফাইল যাচাই করে নেওয়া হয়। এই ন্যূনতম সুযোগটুকু আমিও কাজে লাগাবো। দেখে যদি মনে হয় যে আমি এই ব্যক্তিকে সামলাতে পারবো না, বা তার সাথে আমার সমস্যা হবে, তাহলে আমি দূর দিয়ে হাঁটবো। আমার মতে, এটা উভয় পক্ষের জন্যই ভাল।

২.
আমি বলাই'দার সাথে একমত। শুধু গালি দেখলে হবে না, কাকে গালি দিচ্ছে সেটাও দেখতে হবে। কতটুকু উৎপাতের পর গালি দিচ্ছে, কেন দিচ্ছে, কতটা বাজে ভাষায় দিচ্ছে, কত ঘন ঘন দিচ্ছে, এরকম অনেক প্রশ্ন আছে। অবশ্যই কারও চরিত্রের এই দিকটার সাথে পরিচয় হলে সেটা আমার উপর প্রভাব রাখবে।

৩.
আমি যতটুকু জানি, পাবলিক প্লেস-এ যে-কেউ ছবি তুলতে পারে। সে-কারণে বাইরে গেলে সেটা মাথায় রেখেই পোষাক পড়ি। ইউটিউবের বেলায়ও তো একই রকম ব্যাপার। আপনি একবার তুলে দিলে সেটা যে-কেউ ব্যবহার করতে পারে। কাজটা অনৈতিক হবে হয়তো, কিন্তু অবৈধ না। তবে অন্যের কাজকে স্বীকৃতি না দেওয়া, বা নিজের বলে চালিয়ে দেওয়ার ঘোরতর বিরোধী আমি।

আলমগীর এর ছবি

১. পরা-অস্তিত্ব আর বাস্তব অস্বিত্বের মধ্যে যতই পর্দা থাকুক কোন একসময় পর্দার আড়ালের ব্যক্তিটাকে বের করা যায়। মানুষের লেখার ধরন, বাক্যের গঠন, শব্দচয়ন, প্রতিউত্তরের ধরন, বিশেষ কোন শব্দের প্রতি দুর্বলতা ইত্যাদি দিয়ে। কিন্তু তার জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন আছে। সেজন্য এভাবে পাওয়া তথ্যের নির্ভরতা নির্ভর করে তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যয়িত ধৈর্যের প্রতি। গুগলে নাম ধরে অনুসন্ধান দিলে যা আসে তা কিন্তু প্রায় সময়ই কাছাকাছি পৌঁছে যায়।

২. আলাদা করি দেখি না। অনেকে পছন্দ করে, তাদের সামাজিক অবস্থানটা আড়াল করার জন্য। ধরুন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আমি যদি এখানে অহরহ চ-শব্দ বলি তা আমার ব্যক্তিজীবন/কর্মজীবনে প্রভাব ফেলতে বাধ্য।

৩. ভিডিওগুলো পাবলিক সাইটে আছে মানেই যে তা পাবলিক ঠিক তা না। ফেসবুকের কথাই ধরুন। ফেসবুকের আজব ফিডের কারণে অনেকের কমেন্ট, ছবি, আমি/আপনি দেখতে পান। সেসব ছবি কী অন্য জায়গায় ব্যাবহারযোগ্য? ইউটিউবে যে মেয়েটি ভিডিওগুলো আপলোড করেছে, সে হয়ত প্রাইভেসি সম্পর্কে ততটা জ্ঞাত না। নেটের বিপদ সম্পর্কেও হয়ত কিচ্ছু জানে না। কাজেই আমি বলব তাদেরকে জিজ্ঞেস করা ছাড়া ব্যক্তিগত ভিডিও অন্যত্র প্রচার অনুচিত হবে। (কিন্তু বেআইনি হয়ত হবে না।)

তো ভাইজান কী পাইছেন নেটে, তার জন্য এত হাউকাউ চোখ টিপি

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

শেষ লাইন প্রসংগে, হা হা। ওটাই আসল ব্যাপার। জনমত জরিপ তো পক্ষে গেলো না। তাই বলা যাবে না।
আচ্ছা, আপনি কি হেদায়েতোত্তর সচলদের পিজা খাওয়ান? ঠিকানাটা দিয়েন, আসবো একদিন বিকালে।

হিমু এর ছবি

আর সব ফাঁকিবাজের মতো আমিও পরবর্তীতে উত্তর দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কেটে পড়লাম হাসি

পোস্টে জাঝা!


হাঁটুপানির জলদস্যু

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

এতো চিন্তা মাথায় নিয়া ঘুমান ক্যামনে?
ভারী এই বিষয়গুলা নিয়া ভাবা শুরু করতেই আমার মাথা ঝিমঝিম করতেসে...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আমারো... ইয়ে, মানে...

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

এসব জায়গায় পাওয়া তথ্যগুলোকে আপনি কতোটা সিরিয়াসলি নিবেন? যা পড়বেন তা কি বিশ্বাস করবেন? আগে যেমনটা বলেছি, সামাজিক বা পেশাগত সম্পর্ক নির্মাণের ক্ষেত্রে এসব ভার্চুয়াল তথ্য আপনাকে কতোটা প্রভাবিত করবে?

যখন কোন ব্যক্তিকে যাচাই করার প;রশ্ন আসে, তখন স্ট্যাটিসটিকাল ভিউপয়েন্ট থেকে মোট ব্যাপারটাকে বিশ্বাসযোগ্য ভাবা যায় .... আমি ধরে নিই অধিকাংশ মানুষই মিথ্যা বলবেনা, বা ম্যানিপুলেট করবেনা ... তবে একটা পেইজে কিছু তথ্য দেখেই ধারনা করে নেয়াটা হয়ত বোকামী .... এখানেও বাস্তবজীবনের মতই ক্রসচেক অপরিহার্য

প্রশ্নঃ ভার্চুয়াল স্বত্ত্বা আর বাস্তব স্বত্ত্বাকে আপনি কতোটা একাত্ব বা আলাদা করে দেখেন? গাজী ওবামাকেইনের অন্তর্জালিক আচরণকে আপনি কেমন করে দেখবেন?

"ভার্চুয়াল" বলা হলেও নেটে দৃষ্ট সত্ত্বাও ব্যক্তির এক ধরনের বাস্তব সত্ত্বাই .... এটাকে ওভারলুক করার কোন কারণ নেই ... এখানে মূল প্রশ্নটা হলো কে কিভাবে নিচ্ছে? .... আপনার উদাহরনের ওবামাকেইনের নেট-আচরণ দেখে কেউ যেমন তাকে রগচটা ভাবতে পারে, আবার অনেকেই তাকে "আপোষহীন" ভাববে ... তবে হোয়াটএভার, নেটে যা সে করছে, সেটা সে নিজেই করছে, সেটাকে তার সত্ত্বা থেকে আলাদা করে দেখার কারণ নেই বলে মনে করি

প্রশ্নঃ দীপ্ত যা বলেছে তা কি শতভাগ ঠিক? কোনো পারফরম্যান্স, সেটা লেখা হোক – গান হোক – নাচ হোক, যখন পাবলিকলি আসে তখন পাঠকের/শ্রোতার/দর্শকের মতামত দেয়ার স্বাধীনতা কি অসীম নয়? সকল প্রকার মতামত কি পারফরমারকেই নিতে হবে না?

পাঠকের/শ্রোতার/দর্শকের মতামত দেয়ার স্বাধীনতা অসীম
এখানে কপিরাইট লঙ্ঘন না হলেই হলো ... কারুর ইউটিউব ভিডিও বা ব্লগপোস্ট নিজের নামে চালিয়ে না দিলেই হলো .... আলোচনা করার জন্য অন্য যেকোনখানের কন্টেন্ট আনা যেতেই পারে .... এটা বেআইনি না

আপনার এই প্রশ্নের সাবজেক্ট যদি শুধু ইউটিউব হয়, তাহলে এটা শেয়ার করাতেও দোষ দেখিনা; কারণ যে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে তার জানা উচিত যে এটাকে এমবেড করা যায়, এবং এটা ধরে নেয়া যেতে পারে যে যেকেউ এমবেড করে শেয়ার করতে পারবে এই আন্ডার্স্ট্যান্ডিংয়ের আওতাতেই সে এটা আপলোড করেছে ... এখানে অবৈধতা নেই

তবে , নীতিবোধের বেলায় ব্যাপারটা বেশ গ্রে আকার ধারণ করে ... যেমন আপনি একটি ইউটিউবের ঝাকানাকা নাচের ভিডিও সচলে এমবেড করে দিলে সেটার যে অর্থ হয়, যৌবনজ্বালায় এমবেড করলে একই অর্থ থাকেনা ... আমি জানিনা অন্যব্যক্তির ইউটিউব ভিডিও পর্নোসাইটে এমবেড করার ক্ষেত্রে আইনি কি বাধ্যবাধ্যকতা আছে, তবে নৈতিক বাধ্যবাধকতাটা সেখানে এসেই যাবে ... এখানে অবশ্য দায়ের ব্যাপারটাও কনটেক্সটের উপর ডিপেন্ড করবে ... যেমন ধরুন সচলে কোন সদস্য বা অতিথি ঝাকানাকা নাচ দেখে নাচিয়ে সম্পর্কে খুব বাজে একটা মন্তব্য করলো ... তখন দায়টা মন্তব্যকারীর ... কারণ এখানে এটা কাম্য নয় ... কিন্তু যৌবনজ্বালায় কোন সদস্য/অতিথি যদি একই কাজ করে, তখন দায়টা যে এমবেড করেছে তার ওপরও বর্তায়

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

ধুসর গোধূলি এর ছবি

-

যে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে তার জানা উচিত যে এটাকে এমবেড করা যায়, এবং এটা ধরে নেয়া যেতে পারে যে যেকেউ এমবেড করে শেয়ার করতে পারবে এই আন্ডার্স্ট্যান্ডিংয়ের আওতাতেই সে এটা আপলোড করেছে
ধরি, এমন কেউ আছেন যার আপলোড করা ভিডিওটি কীভাবে 'প্রাইভেট' রাখা যায় এ ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই (যেকোন কারণেই হোক), তখন কী হবে! তার কি একান্তই পারিবারিক কিছু জিনিষ নিয়ে ইউটিউব সার্ভিস ব্যবহার করা ঠিক হবে না, নাকি ব্যবহার করলে তার খেসারত দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে!

আমি মনে করি যে আপলোড করলো তার চাইতেও বেশি সচেতন হওয়া উচিৎ যে শেয়ার করতে চাইলো তার।

গত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সময় বাংলাদেশ দলের 'থিম সঙ'কে একেবারে নিজের খেয়ে যেখানে সেখানে জুড়ে দেয়াটা নিজের ঈমানি দায়িত্ব মনে করেছি। কিন্তু ইউটিউব ঘুরে যখন দেখলাম বান্ধবীদের মোবাইলে ধারণকৃত দু'জন উপমহাদেশের কলেজ বালিকার পরষ্পর চুম্বনের বিশাল ক্লীপ, সেটা কোথাও শেয়ার করার তাগাদা পেলাম না কোথাও।

ভার্চুয়াল প্রোফাইল নিয়ে কিছু বলার সাহস পেলাম না। যদি সত্যিই বিয়ে আর চাকুরীর ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল প্রোফাইল কনসিডারেশনে আনা হয় তাহলে ধুসর গোধূলি'র আম এবং ছালা দুইটাই অলরেডি গেছে। এখন ইয়া নাফসি ইয়া নাফসি করা ছাড়া গত্যন্তর নাই। দেঁতো হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

দ্রোহী এর ছবি

পড়লাম। আমার কোন মন্তব্য নাই ।

পরীক্ষার চাপে ইয়ে দিয়ে লাল সুতো বের হচ্ছে। এর মধ্যে এইসব ভারী জিনিসপত্র চিন্তা করলে মাথা পুরাটাই যাবে।


কী ব্লগার? ডরাইলা?

তাসিফ আহসান দীপ্ত এর ছবি

আরে শিমুল, আপনি দেখি আমাকেও ব্লগে ঢুকিয়ে দিলেন। আমি নিতান্ত নার্ড মানুষ, এতো ভারী কথকদের মাঝে নিজের নাম দেখে ভয় পেয়েছি ভীষণ। আমি কিন্তু এথিকস নিয়ে খুব বেশি জানি না, নিজের ফিল্ড নিয়েও নয়। সত্যি বলছি।

আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবো। আর নিজের মতের পেছনে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যার একটা সুযোগ নেবো।

প্রশ্ন১ও২- ভার্চুয়াল তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা কিংবা ভার্চুয়াল চরিত্র

এই যুগে এসে ভার্চুয়াল তথ্যেরই বিশ্বাসযোগ্যতা বেশি বলে আমি মনে করবো। কিন্তু ঘটনা হলো কে কীভাবে তথ্যগুলোকে বিশ্লেষণ করবন। ধরুন, ফেসবুকে আপনার খুব দারুণ একটা প্রোফাইল আছে, আপনার অ্যালবামে ছবি আছে, আপনি পার্টিতে ব্যাপক হৈ-হুল্লোড় করছেন। এখন আপনার নিয়োগকর্তা এই ছবি দেখে দুই ধরনের ধারণা করতে পারেন, এক. আপনি ভীষণ মিশুক, কাজের স্ট্রেস দূর করার উপায় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। কিন্তু তিনি আরেকভাবেও চিন্তা করতে পারেন, আপনি ভীষন ফূর্তিবাজ, কাজে সিরিয়াস হবেন কি না, সন্দেহের ব্যাপার।

আমি ব্যক্তিগতভাবে কারও ভার্চুয়াল চরিত্রকে তার বাস্তব সত্তার সাথে আলাদা করে দেখি না। ভার্চুয়াল মানুষটিও তার চরিত্রের একটা অংশ। হয়তো খুব একপেশে অংশ। হয়তো মানুষটি বাস্তব জীবনে ড. জেকিল এবং ভার্চুয়াল জীবনে মি. হাইড। কিন্তু, পুরোপুরি দুটো সত্তাকে আলাদা করে যাপন করা একজন ভার্চুয়াল জগতে নিয়মিত বিচরণ করা কোন নাগরিক এর পক্ষে অসম্ভব।

প্রশ্ন৩ - আত্মপক্ষ সমর্থন

আমি কেন গ্রে বলেছিলাম। ধরুন, কেউ একজন তার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে তার পরিবারের কোন অনুষ্ঠানে তার মেয়ের নাচের ভিডিও তুলে দিয়েছেন। হয়তো, খু্ব একটা উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে। সেটা আমি কোন একটা ভার্চুয়াল অনলাইন কমিউনিটিতে সেই ভিডিও এমবেড করে দিলাম। তারপর, নানান ধরনের মন্তব্য আসতে থাকলো। এমন মন্তব্য যেটা আমার নিজেরও পছন্দ হলো না।

এখানে বেশ কয়েকটা ধূসর জায়গা আছে..
১. ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট হোক আর ইউটিউবের মতোন পাবলিক ব্রডকাস্টিং ব্যবস্থা হোক, এমবেড করার অধিকার আমার আছে কি?

২. ধরলাম, পাবলিক ব্রডকাস্টিং ব্যবস্থায় যখন ছেড়েছে, তখন সেটাকে এমবেড করার অধিকার আমার আছে। রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া কোন প্রচারণা আমি কেন ভূত থেকে ভূতে ছড়াবো? আমি যখন ছড়াচ্ছি, তার দুটো উদ্দেশ্য থাকতে পারে, আমি তার ভালো চাই অথবা আমি তার খারাপ চাই। মোটিভেশন টা কি আমার?

৩. ধরলাম আমি তার ভালো চাই। কিন্তু, যার ভিডিও, সে কি চায় আমি তার প্রচারণা চালাই। এই জায়গায় আসে কন্টেন্টের স্বত্ব যার তার ইচ্ছা-অনিচ্ছার ব্যাপার। আরিফ জেবতিক একটা মন্তব্য করছেন, তিনি তার লেখা জামাতী সাইটে দেখতে চান না। ম্যাকেইন যেমন চান নি, বুশ তার প্রচারণা চালাক।

কথা হলো এই। অনেক দিন পরে বাংলা টাইপ করছি। আগে বিজয়ে অভ্যস্ত ছিলাম। সেই বিদ্যাটা কাজে লাগলো।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আরে দীপ্ত!
ভালো লাগলো তুমি কমেন্ট করেছো বলে।
সময় নিয়ে লেখালেখি শুরু করো। তোমাকে সচলে দেখলে খুশি হবো খুব।

(সচলে কিন্তু বন্ধুকে তুমি করে বলা যায়, আপনি বলতে হয় না চোখ টিপি )

হিমু এর ছবি

অন্তর্জালে কোন মানুষের যে ছবিটি ফুটে ওঠে, তা কর্মক্ষেত্রে বা পারিবারিক পরিমন্ডলে তার চেহারার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না-ও হতে পারে। তবে মানুষের মূল্যবোধ সম্পর্কে খানিকটা ধারণা পাওয়া যায় বলেই আমি মনে করি। সেটিকে অফলাইনেও কিছুটা লিটমাস টেস্ট করে দেখা জরুরি।

উদাহরণ দিচ্ছি। আমি কোন বিষয়ে প্রচন্ড বিরক্ত হলে মুখ খারাপ করে ফেলি। বাল বলে ফেলি। ক্ষেত্রবিশেষে চুতমারানি বা মাদারচোদ বলে ফেলি। তবে তা পরোক্ষ পরিবেশে। বাস্তবজীবনে "ফ্রেন্ডলি ফায়ার" বাদে মুখের ওপর আমার গালি খেয়েছে, এমন লোকের সংখ্যা অঙ্গুলিমেয়। আমাকে যারা প্রত্যক্ষ পরিবেশে চেনেন, তারাও জানেন ব্যাপারটা। এখন কেউ যদি অনলাইন কোয়েরি থেকে সিদ্ধান্তে আসেন যে "এই লোকটা খুব খারাপ, সে বাল বলে", তাহলে হেসে ফেলা ছাড়া আমার আর কিছু করার থাকবে না। কারণ প্রশ্নটা কিন্তু তথ্য নিয়ে নয়, তথ্যের বিশ্লেষণ নিয়ে। এই যে আমি বাল বলছি, ডাজ ইট মেক মি আনঅ্যাক্সেপ্টেবল টু সামওয়ান? ডু অর ডোন্ট আই হ্যাভ দ্য রাইট টু এক্সারসাইজ মাই এক্সপ্লিটিভস?

বরং খোঁজ নেয়া উচিত ভিন্ন প্রসঙ্গে। বিশ্লেষ্য ব্যক্তিটি মানুষের অধিকার ও তার সীমারেখা নিয়ে কী ভাবেন, তিনি পরমতসহিষ্ণু কি না, একটি বিতর্কে তার অবস্থান ও আচরণ কেমন, তাঁর চিন্তা ও কর্মে সামঞ্জস্য আছে কি নেই ... এসব ব্যাপার বরং তলিয়ে দেখা বেশি জরুরি। অনলাইন কোয়েরিতে এসব খুঁটিয়ে দেখতে গেলে দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হবে, অনেক সময় এসব হয়তো চোখেও পড়বে না। সারফেসের ব্যাপারগুলি বেশি চলে আসবে, যেমন ওপরের উদাহরণে "বাল" বলে ফেলা হাসি

প্রয়াত টেরেন্স পিনেরোর কথা মনে পড়ে গেলো। সহপাঠী নূর একবার রসায়ন পরীক্ষাগারে এক ব্রাদারকে মুক ফসকে বিড়বিড় করে বাল বলায় সেই ব্রাদার তৎক্ষণাৎ আইডিকার্ডসহ পিনেরোর কাছে এক কপি অভিযোগনামা দাখিল করেন। উত্তেজিত টেরেন্স ক্লাসে ঢুকে নূরকে এক পশলা উস্তমকুস্তম পেঁদিয়ে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে জলদগম্ভীর সুরে তাকে হুকুম করেন, সারা ক্লাসের সামনে কথাটা আবার উচ্চারণ করতে। নূর মার খেয়ে ঝিমিয়ে পড়েছিলো, সে ইতিবাচক সাড়া না দিয়ে চুপ করে থাকে। টেরেন্স তারপর গর্জন করে বলেছিলেন, "সে একটি অত্যন্ত বাজে কথা বলেছে। কী বলেছে জানো? না, সে বাল বলেছে!"


হাঁটুপানির জলদস্যু

সুমন চৌধুরী এর ছবি

"সে একটি অত্যন্ত বাজে কথা বলেছে। কী বলেছে জানো? না, সে বাল বলেছে!"

(গড়াগড়ি দিয়া হাসি)



অজ্ঞাতবাস

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অন্তর্জালে কোন মানুষের যে ছবিটি ফুটে ওঠে, তা কর্মক্ষেত্রে বা পারিবারিক পরিমন্ডলে তার চেহারার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না-ও হতে পারে।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনেক রকম কথা-মত এসেছে।
এবার সবগুলো নিয়ে দেখি কোনো সিদ্ধান্তে যেতে পারি কিনা চোখ টিপি

আলাদা আলাদা করে নাম বলছি না। সবাইকে অজুত নিজুত ধন্যবাদ সময় নিয়ে মতামত জানানোর জন্য...।

রানা মেহের এর ছবি

আরিফ ভাইয়ার সাথে সহমত।
শিমুলের লেখা জটিল
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সৌরভ এর ছবি

মেলা লোকে মেলা কিছু বলছে। সব মিলিয়ে সব মতামত আসছে। আমারো মনে হইসে, অনেক কিছুই গ্রে ভার্চুয়াল জগতে।
আর, দ্বৈত সত্তার ব্যাপারগুলোন ভাবানোর মতোন। হয়তো ভার্চুয়াল জগতে আমি লুইস, কিন্তু বাস্তব জগতে আমি গুডি বয়। কিংবা, হিমু ভাইর কথামতোন, বাস্তবে আমি কোনদিন কাউরে গালি দেই নাই। কিন্তু অনলাইনে ভার্চুয়াল মুখোশের আড়ালে কখনো গালি দিয়েও থাকতে পারি।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

সৌরভ স্যার, আপনার কথা তো ভুলে গেছিলাম...। তবুও ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ, প্রিয় রানা মেহেরকেও।

পটলবাবু [অতিথি] এর ছবি

ভার্চুয়াল আর রিয়াল অস্তিত্বের পারস্পরিক সম্পর্কটা খুব সম্ভবত ( imho ) এইভাবে দেখানো যেতে পারে যে science-fiction is no more pseudo-science than fiction is pseudo-truth. শুভেচ্ছা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।