• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

বরফ মোড়ানো দিনে চিরায়ত অবিশ্বাস

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
লিখেছেন আনোয়ার সাদাত শিমুল (তারিখ: রবি, ২৩/১১/২০০৮ - ৩:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বুধবার থেকে বরফে ঢাকছে সারা শহর। ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে করে না। সকাল মানেই হুলস্থুল, হুড়োহুড়ি। আধ মগ চা''য়ে আধা চুমুক দিয়ে, শীতের ভারী কাপড় গায়ে চাপিয়ে, ক্যালেন্ডার চেক করে বই খাতা ব্যাগে ভরতে সোয়া আটটা পার। দরজা লক করে সামনে তাকাতেই দেখি আটটা তেইশের বাস চলে গেলো মাত্র। আবার পনেরো মিনিট অপেক্ষা...। কালকে আর দেরী করবো না, এ বাস ধরতেই হবে ভেবে ভেবে ঠান্ডা বাতাসে দাঁড়িয়ে থাকি। নাক মুখ দিয়ে ধোঁয়া বের হয়।
ম্যাকগাইভার কে মনে পড়ে...।

ঝামেলা লেগে আছে প্রথম দিন থেকে। আসার দিন এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন শেষে স্টাডি পারমিট পেয়েছিলাম সহজে। সহজে বলতে - লাইনে অপেক্ষা করা লাগেনি বেশি, উটকো প্রশ্ন করে বিব্রত করেনি। দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি শেষে ঐ পারমিট পেয়ে ভাজ করে পাসপোর্টে রেখেছিলাম সযত্নে। পরে দেখেছি, ভেতরে ঘাপলা আছে। সুন্দর করে লেখা আছে, অথরাইজেশন ছাড়া পার্ট টাইম - ফুল টাইম কোথাও কাজ করার অনুমতি নেই। এই জিনিস কেনো লিখে কার জন্য লিখে তার কোনো ঠিকঠিকানা নেই। কাউকে দেয়, কাউকে দেয় না। ইচ্ছেমতোন ব্যাপার-সেপার। ধারণা করা হয়, ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট সুযোগ পেলে অন-ক্যাম্পাস কাজ করবে। পেলামও সেটা। কিন্তু, অনুমতি নিয়ে ঝামেলা রয়ে গেলো। সোশ্যাল আইডেন্টিফিকেশনের কাগজ আনতে স্পেশাল অনুমতি লাগতে পারে, বিগত ভুক্তভোগীরা এমনটাই জানালো। অনেক চক্কর দিলাম, তবে শেষে জানা গেলো - এখন নিয়ম শিথিল, ঐ কথা লেখা থাকলেও সমস্যা নেই, অনুমতি পাওয়া যাবে। এবং গেলো। তবে - আমার নানান ভুলে এবং এইচ আরের বিচিত্র ছুতোয় পেমেন্টে ঝামেলা থাকছে। শেষ নেই ঝামেলার, কতোই আর বোঝাপড়া করা যায়। 'শিখছি দিবা রাত্র'।

অবশেষে পাকি চক্করেঃ
পাকি'প্রজাতির সাথে মেলামেশার দূর্ভাগ্য আগে হয়নি। টুকটাক সম্ভবনায় সযতনে এড়িয়ে গেছি। এবার তিনটা কোর্সে গ্রুপ মেম্বার পড়লো পাকি। কিছু করার নাই, র‌্যান্ডমলি সিলেক্ট করা হয়। সচলে ঐ সময় কী বোর্ড ঝড়, বিষয় - পাকিদের সাথে অবস্থান-ঘৃণা নাকি সহানুভূতি নাকি কনটেক্সট বিচার। অনেক কিছু পড়লাম, অনেক কিছু বুঝার চেষ্টা করলাম, বেলুচ সৈয়দের কাহিনীও জানলাম। আর ভাবলাম, কে জানে এবার আমি হয়তো নিজের 'গোয়ার্তুমি' থেকে বেরিয়ে আসবো। পাকিদের আলাদা আলাদা করে বিচার করবো। আমার সহপাঠী আমিনা মালিক (আটলান্টিক পেরিয়ে নামের প্রথম অংশ 'আম্ন্যা' হয়ে গেছে), আমের আব্দুল্লাহ কিংবা ফ্যাসাল (আসলে 'ফয়সাল') মুমতাজদের কাছে থেকে চিনে নেবো। ক্ষতি কী যদি নতুনভাবে ভাবার কিছু সুযোগ পাই। তাই চুপ থাকি যখন আমের পাঞ্জাব আব্দুল্লাহ পরিচয়ের শুরুতেই আমি রোজা আছি কিনা, ও পরে আমাকে তারাবীর নামাজের জন্য ভালো মসজিদের সন্ধান দিতে চায়। বলি, এ শহরে আমার বন্ধু-বান্ধব যে একেবারেই নেই তা কিন্তু নয়। কোথায় কী আছে সে-ই ওরিয়েন্টেশন আমার হয়ে গেছে। অথবা আমি থাই খাবারের ফ্যান শুনে আম্ন্যা যখন আমাকে বলে - 'থাই ফুড হালাল না। ফিশ স্যুপ কিংবা ভ্যাজিটেবল খেলেও ইনগ্রিডিয়েন্ট নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়।' তখন কড়া কথা না বলে প্রবাস জীবনে এত ক্ষুদ্রাক্ষুদ্র ব্যাপারে আমার উদাসীনতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। বড়জোর বলেছি, 'দ্যাখো, এসব নিয়ে আমার সমস্যা নাই'। এরপরে আর কথা বাড়ায়নি - কারণ, আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম 'ওরিয়েন্টেশনের ২য় দিন লাঞ্চে পিজা খেয়েছো সেটা কি হালাল ছিলো'? তখন সে বলে, আসলে বাইরের ব্যাপারগুলো যতটা পারে এভয়েড করে, কিন্তু ঘরে তার হাজব্যান্ড এবং সে এসব ব্যাপারে খুব সতর্ক। আমের আবদুল্লাহ তখন হে হে করে হাসে। এই হাসিতে আমার মনে পড়ে - আমার দাদীর কাছে, নানীর কাছে এখনো ৭১এর হানাদার মানে পাঞ্জাবী। পাকি সৈন্য মানে পাঞ্জাবী। আমার খুব সহজ হিসাব - এ আমের আব্দুল্লার পূর্ব পুরুষ এসে আমার পূর্ব পুরুষের ঘর জ্বালিয়ে গেছে, মানুষ মেরে গেছে নির্বিচারে। তার এই হে হে হাসিতে আমি পিশাচের শব্দ ছাড়া কিছু পাই না। কিন্তু, তখন আমি চুপ থাকি। অধুনা ডাইভার্সিটি ম্যানেজমেন্টের ছাত্র হয়ে আমি শেখার চেষ্টা করছি অনেক কিছু। তাই তীব্র আবেগ তখন চেপে রাখি। সে তুলনায় আমেরিকায় বড় হওয়া ফেস্যালকে মান সম্মত মনে হয়। অন্ততঃ আচরণে সমস্যা নেই। শেষে তাদেরকে মনে না নিলেও মেনে নিই।
এ মাঝে আরেক পাকির খপ্পরে পড়লাম। তার নাম দিলাম 'তর্তাজা বাটপার'।

তর্তাজা কাহিনীঃ
বিজনেস স্কুলের অনেক ইতং বিতং আছে। মুখের কথায় বেচাকেনা করতে হবে। আর ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টরা লোকালদের তুলনায় এদিকে একটু পেছানো। কম্যুনিকেশন ডেভেলপমেন্ট ও নেটওয়ার্ক বিল্ডিং প্রোগ্রামে বিদেশী ছাত্রদের একজন করে সুপারভাইজর দেয়া হয়। পড়ালেখার কিছু নেই। এটার মূল কাজ হলো, ভিনদেশী ছাত্র যারা এই কালচারে একেবারে নতুন তাদের লোকাল বিজনেজ কম্যুনিটির সাথে পরিচয় করানো। নানান লোকাল ইভেন্টে পাঠানো, লোকজনের সাথে পরিচয় বাড়ানো। এবং এসব করে করে বাজার চাহিদার সাথে নিজেকে চাল্লু করা। খুব ইন্টারেস্টিং মনে হলো। অন্ততঃ আমার জন্য তো উপকারী বিষয় বটেই। প্রথম একটু ধাক্কা খেলাম যখন জানলাম আমার সুপারভাইজরের নাম তর্তাজাবাটপার ফ্রম পাকিস্তান।
এসিস্টেন্ট প্রোগ্রাম ডিরেক্টর অভয় দিলো, সমস্যার কিছু নেই, সে খুব ভালো লোক।
ভাবলাম, ক্ষতি কি যদি একজন ভালো পাকির দেখা পাই ভবে...।

কথা অনুযায়ী মেইল করলাম, বললাম - তোমার সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে, তোমার অফিস আওয়ার জানাও।
রিপ্লাই আসে না।
৮ দিনের দিন দেখা এসিস্টেন্ট প্রোগ্রাম ডিরেক্টরের সাথে, নিজ থেকে জিজ্ঞেস করলো সুপারভাইজর কেমন? বললাম, সে তো আমার মেইলের রিপ্লাই করে নাই। এসিস্টেন্ট প্রোগ্রাম ডিরেক্টর বললো, ঠিক আছে আমি দেখছি।
কী হলো জানি না, সে রাতেই মেইল পেলাম, তর্তাজা লিখেছে - শুক্রবার আফটারনুনে দেখা করো।
শুক্রবার সোয়া ১২টায় গেলাম। আমাকে দেখেই রুম থেকে বেরিয়ে এলো - 'তুমি এখন কেনো এসেছো? আমি তো এখন ব্যস্ত। আমি এখন দুপুরের খাবার খাবো, অনেক কাজ।'
ক্ষ্যাপা আচরণ।
বললাম, 'আমাকে মেইলে বলেছ আফটারনুনে আসতে। তাই আসলাম। তাহলে বলো আমি কখন আসবো?'
'চারটায় আসো'।
কী আর করা, অপেক্ষা করি। আর ভাবি, আমাকে প্রথম দেখায় এই হারামি চিনলো কীভাবে? উত্তরটা খুজে পেতে দেরি হয়নি। স্টুডেন্ট প্রোফাইল চেক করা কঠিন কিছু না।
চারটায় আবার গেলাম। রুমে বসতে বললো।
বাংলাদেশে কোথায় ছিলাম, কী করতাম এসব জেনে জিজ্ঞেস করলো - বাংলা বলি কিনা। (আরে হারামি, বাংলা বলবো না তো কী বলবো? উর্দু/হিন্দি?)
এরপরে সে 'আমার সোনার বাংলা' বলার চেষ্টা করলো। বুঝলাম, প্রিপারেশন ভালো নিয়েছে, আমাকে ভড়কানোর চেষ্টা করছে। এটা একেবারে নিশ্চিত হলাম যখন জিজ্ঞেস করলো - মনিকা আলীর নাম শুনেছ?
বললাম, 'হু, ব্রিক লেন লিখেছে'।
'পড়েছ?'
'না'।
'অবশ্যই পড়বা। লিখে রাখো, এটা কিনতে হবে - যদিও তুমি মনিকাকে পছন্দ করবা না।'
জিজ্ঞেস করলাম, 'কেন? মনিকাকে কেনো পছন্দ করব না?'
'যে কারণে তোমরা তসলিমাকে পছন্দ করো না...'
কী আজব! জিজ্ঞেস করলাম 'তোমাকে কে বলছে, আমি তসলিমাকে পছন্দ করি না?'
তর্তাজা আকাশ থেকে পড়লো, 'তুমি তসলিমার লেখা পছন্দ করো? লেজ্জা পড়েছো?'
বললাম পড়েছি।
এরপরে সে আরামবোধ করলো না, 'ওকে, এ প্রসংগ বাদ দাও'।
এবার শুরু করলো আমার কী কী করতে হবে, প্রতিদিন ১টা করে বিজনেস নিউজ এনালাইসিস, ৫০০ শব্দের মধ্যে। প্রতি উইকেন্ডে লোকাল কম্যুনিটি লাইব্রেরিতে গিয়ে যা যা প্রোগ্রাম হয় ওগুলো এটেন্ড করতে হবে, সেটা নিয়ে রিপোর্ট লিখতে হবে। সাথে বললো 'পত্রিকা হার্ড কপি সাবস্ক্রাইব করবা, লেখার সাথে পেপার ক্লিপ দিবা, ইন্টারনেট থেকে প্রিন্ট আউট নিলে তুমি সিরিয়াস থাকবা না'।
আর এর মাঝে ৩বার বললো, 'ডোন্ট চিট'।
এটা আমার মেজাজ চরম খারাপ করে দিলো। ফুল টাইম স্টুডেন্ট, পার্ট টাইম কাজ; ঐসব বাড়তি এসানমেন্টের টাইম কই? আর এই তর্তাজা দেখি আগে থেকে সব ডিসিশন নিয়ে আছে। আমাকে কথা বলার কোনো সুযোগ না দিয়ে ইচ্ছা মত আউল-ফাউল কথা বলে যাচ্ছে।
আঙুল তুলে বলে, 'শোনো - তুমি কানাডা আসছো, ঢাকা কখনো ফিরবা না, সুতরাং তুমি কানাডার কালচার সোসাইটি ভালো করে বোঝার চেষ্টা করো।'
বললাম, 'আমি থাকবো না। পড়া শেষে ঢাকা ফিরবো, এখানে থাকতে আসি নাই।'
সে বলে, 'না, তুমি ফিরবা না, আমি জানি।'
আবারও বলি, 'আমি ফিরবো, তুমি জানো না'।
তর্তাজা বলে, 'আমার সাথে ২ বছর পরে দেখা করো...'
বললাম, 'দু বছর না, যাবার আগেরদিন তোমাকে মেইল দেবো'।
তর্তাজা এবার থামে।
শেষে বললো, সব মিলিয়ে ৫টা কাজের লিস্ট। এই ৫টা কাজ শেষ করে নিয়ে যেতে পারলে যেন আগামী সপ্তায় যাই, নইলে আর যেন দেখা না করি। তখন আমার মাথার ভেতর টং টাং কিরকির শব্দ করে।
ততক্ষণে আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি এর সাথে কাজ করা যাবে না। সুপারভাইজর পাল্টাতে হবে। তাই চুপ থাকি, আম্ন্যা আর আমেরের মত একেও আপাতঃ সুযোগ দিই।...কথা বলে যা হে তর্তাজাবাটপার।

পরের সপ্তায় আমার প্রথম কাজ ছিলো এসিস্টেন্ট ডিরেক্টরের সাথে কথা বলা। বললাম সব কাহিনী। বলি, তর্তাজা যা করছে সেটা স্রেফ যন্ত্রণা দেয়া, কারণ এই প্রোগ্রামের অন্য কোনো সুপারভাইজর এসব শয়তানি করছে না। কিন্তু এ আবার উল্টা কথা বলে। আমাকে বুঝায় - 'জীবনে সব মানুষ একই রকম পাবানা। এটা তোমার জন্য চ্যালেঞ্জ। অপছন্দের লোকের সাথে কাজ করতে হয়।' পালটা টক্কর দিই, কিন্তু পাঞ্জা দেয়া যায় না। সেও স্বীকার করে তর্তাজার কিছু ইস্যু আছে, কিন্তু তাকে ম্যানেজ করতে হয়। আমি সাউথ এশিয়ার লোক হয়ে এসব বোঝার কথা। বলি, 'আমার বোঝার খায়েশ নাই। আমার সুপারভাইজর পাল্টাও।'
এসব শেষে দফা করলো তর্তজাকে ২ সপ্তাহ দেখবো, এর পরে কেমন লাগে জানাবো। কিন্তু, আমি তো বুঝে গেছি এই হানাদারের সাথে আমার মিলবে না। তবুও এসিস্টেন্ট ডিরেক্টরের কথা রাখি। পরের শুক্রবারে সময়মতো দুইটায় যাই। কোনো কাজ করি নাই। সে যদি বলে 'আল বিদা'। আমি বলবো 'আলহামদুলিল্লাহ'।
কিন্তু, দুটা বিশ মিনিটেও সে রুমে ফিরে না। চলে আসি। পরের সপ্তায় এসিস্টেন্ট ডিরেক্টরের কাছে যাই। সে জিজ্ঞেস করে -শুক্রবারে কী হলো। আমি বলি- কিছু হয় নাই। কারণ তর্তাজাকে পাই নাই। সে রুমে ছিল না, আমি ২০ মিনিট অপেক্ষা করেছি, এমনকি সে আমাকে মেইলও করে নাই। শুনে এসিস্টেন্ট ডিরেক্টর একটু কী যেনো চিন্তা করলো। তাকে বললাম, আমি এর মাঝে অন্য সুপারভাইজরের সাথে কথা বলেছি, সে আমাকে নিতে রাজী হয়েছে। এডমিন পারমিশন লাগবে। সো, তুমি প্রসেস করো। এসিস্টেন্ট ডিরেক্টর আমার ইমেইল ঠিকানা নিলো। বললো, মেইলে জানাবে।

বিকেলে তর্তাজার সাথে দেখা। আমাকে ডেকে বলে, স্যরি আমি ভুলে গেছিলাম সেদিন, কালকে আসবা আর আজকেই মেইল করবা টাইম কনফার্ম করে। সন্ধ্যায় মেইল করলাম, কালকে ৩টা থেকে ৫টা ফ্রি আছি। সে পরদিন রিপ্লাই করলো, আমি বিজি, শুক্রবারে ১১টায় আসো। আমি তারপরের দিন জবাব দিলাম - শুক্রবারে ঐসময় আমি ক্লাসে থাকি। এরপরে আমার সময় নাই। এবার সে মেইল করছে - নেক্সট মংগলবারে আসবা, ১টায়।
এখনো এই মেইলের রিপ্লাই করি নাই। করার ইচ্ছা নাই।
এই একটা অহেতূক যন্ত্রণা গত ৩ সপ্তাহ লেগে ছিলো। আশা করছি - নতুন সুপারভাইজর পেয়ে যাবো সোমবারে। না পেলেও সমস্যা নেই। এটাই ফাইনাল ডিসিশন - আলবিদা তর্তাজাবাটপার, পাকি হানাদারের উত্তরাধিকার।

আমের আব্দুল্লার হারামিনামাঃ
পরশু সকালে তাড়াহুড়া করে ক্লাসে চলে গেছি। ল্যাপটপের চার্জার নিতে গেছি ভুলে। দুপুরের মধ্যে চার্জ শেষ। টীমের সাথে প্রজেক্ট মিটিং। আমেরকে বললাম, 'তোমার ল্যাপটপে মেইল চেক করি?'
বিলকুল বিল্কুল বলে এগিয়ে দিলো।
লগ ইন করতে গিয়ে দেখে নিলাম রিমেম্বার পাসওয়ার্ড আছে কিনা। নেই।
মেইল চেক করলাম দ্রুত, ৪/৫ মিনিট লাগলো মোট। লগ আউট করে ল্যাপটপ ফেরত দিলাম।
ফেরত দিয়ে আবার মনে হলো, অন্য কোনো উপায়ে ইউজার নেম-পাসওয়ার্ড সেভ হয়ে যায় নাই তো?
সন্দেহ উকি দেয়ায় ল্যাপটপ আবার নিলাম।
কী আশ্চর্য্য! ইউজার নেমে s টাইপ করলেই আমার ইমেল এড্রেস চলে আসে। আর নিচে অটো হাজির আমার পাসওয়ার্ড!! ক্লিক করলে সাইন-ইনও হয়!!!
জিজ্ঞেস করলাম, কম্পুতে এই জিনিশ করে রাখছো আমাকে বলো নাই কেনো?
হারামির পাঞ্জাবী হারামি হে হে করে হাসে। বলে, এইটা ইচ্ছা করে করে রাখছি।
কিন্তু, পাকির বাচ্চা - তুই আমাকে আগে বললি না কেনো? তোর কম্পুতে আমার নাম আর পাসওয়ার্ড যে সেইভ হইল সেটা কি এথিক্যাল?
সে বলে, ' না না, আমি তোমার মেইল চেক করবো না'।
আরে কুত্তা, চেক করবি কিনা সেইটা পরের কথা। কিন্তু, তুই দেখলি আমি মেইল চেক করলাম। তখন বললি না কেনো? এটা তো ফাইজলামি না। এইটা সাইবার ক্রাইম।
সাথে সাথে ওর ল্যাপটপে কুকিজ ডিলিট মারলাম সব। আবার চেক দিলাম। আমার চিল্লাচিল্লি দেখে হারামি চুপ মেরে আছে।
ইচ্ছা করছিলো, কষে চড় মারি।
অনেক চেষ্টায় রাগ চেপে ল্যাবে গিয়ে বসে থাকি। এক বড়ভাই জিটকে, শুনে বললেন 'ওরে থাবড় মারা দরকার'।

থাপড় দেয়া হয় না।
কেবল নিজেকে নিজে বলি, 'হু, আমি কেবল গোয়ার্তুমি করেই পাকিদের অবিশ্বাস করি...'


মন্তব্য

রেনেট এর ছবি

হারামজাদা পাকিদের ধরে খালি থাবড়াতে ইচ্ছা করে।
---------------------------------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আপনার ইচ্ছায় সহস্ত্র সালাম ।

রণদীপম বসু এর ছবি

হা হা হা ! শিমুল বড়ো মজা পাইলাম ! আপনি জ্ঞানী হচ্ছেন। কারণ, অভিজ্ঞতা মানেই জ্ঞান।

কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

'শিখছি দিবা রাত্র'

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

তাড়াতাড়ি এইসব "***" পাকিদের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পান, সেই দু'আ করি। পাকি সুপারভাইজর আর আমের আব্দুল্লার কাহিনী শুনে তো আমারই ইচ্ছা করলো পিটাই দুইটারে! ফাইজলামির সীমা থাকে একটা!

কেন যেন সন্ন্যাসী'দা'র সিগনেচারে হুমায়ূন আজাদের কথাটা মনে পড়ে গেল- "পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও।"

ভাল থাইকেন, পাকি-মুক্ত দিন কাটান :-)

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

পাকি-মুক্ত দিনের স্বপ্ন দেখি...।
ধন্যবাদ।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভালো অভিজ্ঞতা হচ্ছে, বোঝা যায়।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

জ্বী।

তারেক এর ছবি

ব্যাপক গ্যাঞ্জামে আছেন দেখি শিমুল ভাই! তর্তাজা বাটপাররে আমার তরফ থেইকা দুইটা থাবড়া দিয়েন।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

এই গিয়াঞ্জামটা বড়ই যন্ত্রণার, তারেক।
থ্যাংক্স ।

কল্পনা আক্তার এর ছবি

লেখা বরাবরের মতোই সাবলীল। পারলে পাকিগুলার ছায়ারেও লাত্থি মারেন।
আপনি তো সহ্য করতেছেন আমার এখান থেকেই গা জ্বালা করতাছে
ওদের কাজ/ব্যবহারের কথা শুনে X(

..................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অসহনীয় ব্যাপার...

হিমু এর ছবি

সূর্যের চেয়ে বালি বেশি গরম। পাকি মাদারচোদ আসে কানাডার কালচার চোদাইতে। অর মায়রে বাপ।


হাঁটুপানির জলদস্যু

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

শান্তি লাগলো মনে। কমেন্টে জাঝা ।

নন্দিনী  এর ছবি

ভাইরে আপনি কেম্নে এতোটা ধর্য্য ধরে থাকতে পারলেন ....আমি হলে পারতামনা । কোন পাকি উর্দূ বলা শুরু করলেই আমার মেজাজ সপ্তমে চড়ে । রুড বলে এমনিতেই আমার বদনাম আছে পরিচিত মহলে ! আপনার কাহিনী পড়ে আমার নিজের-ই দেখি রক্ত গরম হয়ে মাথায় উঠেছে ! হাত মুঠো হচ্ছিলো নিজের অজান্তেই ...! পারলে আমার পক্ষ থেকে ঐ তর্তাজা বাটপাররে
একটা কষে তাপ্পর দিয়েন :-)
ভালো থাকুন বৈরী পরিবেশে,কামনা ।
(হালাল হারাম নিয়ে পাকির সাথে আমার একটা অভিজ্ঞতা আছে , পরে কখনো লিখবো )

নন্দিনী

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ধন্যবাদ।
আমারও এসব আচরণ 'গোয়ার্তুমি' বলে পরিচিত অনেকের কাছে। এবার ধৈর্য্যের চেষ্টা করলাম। কী আর হলো!
শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার গল্প শোনার অপেক্ষায় রইলাম ।

রানা মেহের এর ছবি

পাকিস্তানীদের আমি ভালোবাসি, যখন তারা যন্ত্রনা নিয়ে আসে, তখনও

রানা আজাদ
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

!!!

রানা মেহের এর ছবি

???
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

(বিব্রত)

রানা মেহের এর ছবি

ইমো দিতে পারিনা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

পথে হারানো মেয়ে এর ছবি

দূঃখ পাইলাম আপনার জন্য। পাকিগুলার কাছ থেকে যায় দূরে থাকা যায় ততই উত্তম। শান্তিও বটে।
আশা করি, নতুন সুপারভাইসারের অধীনে সবকিছু ঠিকঠাক চলবে। ঃ)

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ভর্তাজা আর আমের হারামজাদারে দুইটা লাথি দিতে পারলে আনন্দ পাইতাম। আমার পক্ষ থেকে দিয়া দিয়েন।

লেখা যথারীতি চমৎকার।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ধন্যবাদ; ধু গো, পথে হারানো মেয়ে ও পরিবর্তনশীল।

আলমগীর এর ছবি

মানিয়ে যান না রে ভাই।
হিংসা করা ভাল না।
আমিনার বিষয়-সম্পত্তি কেমন :D

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হিংসা!!!
হা হা হা।
বিষয় সম্পত্তির দস্তাবেজ দেখি নাই। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় লাহোরেই বিকিকিনি হয়ে গেছে বেশি।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ধুর, ব্যাডলাক খারাপ। পাইলো তো পাইলো একটা বিয়্যাইত্যা অ্যাম্না। তর্তাজা হালায় তো অনেকদিন আছে কানাডায়। আসলে বিল্টইন স্বভাব মানুষের কখনো পালটায় না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

;(।
হু, অনেকদিন ধরে আছে।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আসলেই বজ্জাত !

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

রানা মেহের এর ছবি

লাথি বিষয়ক সবার অনুরোধে সহমত
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আমিও সহমত।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

১ ...

স্টাডি পারমিটে কিন্তু এই কথাটা লেখা থাকারই কথা ... এটলিস্ট এখানে যে কয়জন বাঙালি দেখলাম সবারটাতেই লেখা আছে ... কিন্তু এটার জন্য তো অন ক্যম্পাস কাজ করতে সমস্যা হয় না, এটা শুধু অফ-ক্যম্পাসের বেলায় সত্য [আমি যদ্দূর জানি ... জানায় ভুল থাক্তেও পারে ... ]

২ ...

আইইউটিতে একবার এক পাকি পোলা ঢাকা ঘুইরা আসিয়া আমারে কয়, তোমাদের না মুস্লিম দেশ? তোমাদের মেয়েদের মাথায় হিজাব নাই কেন?

আমি বললাম, তুমি কি জানো বাংলাদেশ খুবই করাপটেড দেশ? প্রচুর করাপশন হয়?

পোলা কইলো, হ্যা জানি ...

আমি বললাম, তাহলে তুমি আমারে জিগাইতে পারতা তোমাদের মুসলিম দেশে এত করাপশন কেন? ইসলামে তো এইগুলি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ... সেটা না জিগায়া মেয়েদের হিজাব নিয়ে মাতলা কেন?

পোলা কিজানি বলতে নিছিল, আমি চালায়ে গেলাম, "সেটা কি এই কারণে যে তোমাদের মুসলিম দেশে করাপশন আমাদের চেয়েও বেশি?"

আরো ডোজ দিতাম, পোলা সুন্দর কাজ আছে বইলা ফুটলো ...

ভাব্লাম আমার সাথে মনে হয় আর কখনো কথা বলতে আসবে না, কিন্তু কিসের কি, পরের দিনই দেখি হ্যাল্লো ব্রাদার বলে আগায়ে আসে ...

৩ ...

তর্তাজারে লাথি দেন ...
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

দারুণ প্যাঁচ।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

@কিংকং -
কারো কারো থাকে, কারো কারো থাকে না। আগে ঝামেলা করতো, কই কই নাকি হাবিজাবি ডকুমেন্ট পাঠানো লাগতো। এবছর থেকে লাগবে না। এমনটাই জানলাম এবং দেখলাম।

বাদবাকী বিষয়ে জাঝা।

সবজান্তা এর ছবি

শিমুল ভাই, ম্যালা ব্যস্ততায় লেখাটা অনেক দিন পর পড়লাম।

তর্তাজা নামক চুদির্ভাই এর শিক্ষার কথা সবাই আগেই কইছে। আর শেষে শুয়োরের বাচ্চার কথা বললেন, ওইটারে কি সাইজ দিছেন ?

না দিলে আমারে জিটকে নক কইরেন। এরকম বদমাইশ সাইজ করার জন্য আমি সানন্দ চিত্তে চেষ্টা করবো।

পাকির বাচ্চারা নিপাত যাক...


অলমিতি বিস্তারেণ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

প্রিয় সবজান্তা,
এরকম পাকিকে শায়েস্তা করার জন্য নিজের দৃঢ়তাই বেশি দরকার। কাছের বন্ধু-স্বজনের মানসিক সমর্থন তো খুব প্রয়োজন আমি যেমন পেয়েছি, ব্লগে -চ্যাটে।

পাকি প্রফেসরের কাছে নাজেহাল হওয়ার ১ম কাহিনি শুনেছিলাম, মুর্শেদ ভাই(এম এম৩)এর কাছে। তাই আমার ব্যাপারে ১ম ইম্প্রেশনেই ডিসিশন নিয়েছিলাম - তর্তাজার সাথে কাজ করা যাবে না। এরকম শ্রুত-পঠিত ঘটনা আমাদের অভিজ্ঞতার হয়ে থাকে। পরে পরিস্থিতি অনুযায়ী ট্যাকেল করা যায়।

এখন আমি যেমন বলবো, বাংলাদেশের ছাত্ররা যতটুকু পারেন, পাকি-প্রফেসর এড়িয়ে যান। এদের বিশাল অংশ এখনো ৭১এর পরাজয়ের ক্ষত মনে নিয়ে বেঁচে আছে, আর এই ক্ষোভ প্রজন্মান্তরে ছড়াচ্ছে তাদের সন্তানাদির কাছে।
এরাই সুযোগ পেলে আমাদের ঝামেলায় ফেলে, বিব্রত করে।

তানবীরা এর ছবি

আমি কুল থাকি শিমূল উত্তেজিত হই না। আমার জীবনের প্রথম কম্পিউটার ভাইরাস এক পাকির দেয়া। ওইটা ওর বোনের আইডিতে লগ ইন কইরা আমারে এম এস এনে একটা ফাইল ট্রান্সফার করছে, ওইদিকে অন্য উইন্ডোতে ভাইয়া বলে তোর পিসিতে ভাইরাস। এই হলো এরা। হেনো কোন চুরি নাই এরা করে না। বাসার এটিকে তিনটা জায়নামাজ পাইতা, গভমেন্টরে কয় সোস্যাল সার্ভিস দিচ্ছি, ধর্ম - কর্ম করছি সাবসিডি দাও।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

পাকিদের কোনো বিশ্বাস নাই, এক বিন্দুও না...

অতিথি লেখক এর ছবি

তখন করি হকারগিরি...।সাধারনত,আমি একটু আউলা থাকি...।।ঘুম থেকে উইঠা আর ঘুমাইতে যাওয়ার আগ পরযন্ত...।মানুশ এর বেশির ভাগ কথাই মাথার উপর দিয়া চইলা যায়...
আগে খুব পেরেশান করত এই বেপারটা,এখন আর করে না।।ভবিতব্য বলে মেনে নিসি আর কি...।।
ত একদিন আমারে পাঠাইলো এক ইস্টেশান এ হকারগিরি করার জন্য।।আমি মনে মনে কই,হায়রে কবির নি‌য়তি...আর মুখে মুখে ভেবলার মত হাসি।।আমারে গাড়ি কইরা নিতে আইসে টিম লিডার।জিগায়,কইথথন?আমি কই বাংলাদেশ।তুমি?কয়,পাকিস্থান।বহুত কষ্টে হাত মিলাই।।যথারিতি অগো ভাষায় কথা কই না.. কথা হয় ইংলিশ এ...গাড়ি চলে...আমি ঝিমাই...ড্রাইভার ক্রিকেটের ভক্ত,কিন্তু ল্যতিন...।আমি ত অবাক।ঝিমুনি কাইটা কথা শুরু হয়...।।পাকিরে জ়িগায়,তোমরা ভাল না অরা।।পাকি কয়,আরে অগরে আমরা ঘুমায়া ঘুমায়া হারাই...
আমি ক্রুর চখে অর দিকে তাকাই কই,'কি কইলা এইটা?'
ও ওবাক হয়া কয়,'কেন!'
আমি কই,"লাস্ট বিশশকাপ এ তো তোমগোরে হারাইসি আমরা।এইটা তো গেলো খেলা,আরো হারোনের কাহিনি শুনবা?...... তোমগো মেমোরি আসলে ঢিলা...।।আমরা কিন্তু সব মনে রাখি.....সব......'
আমার চোখের দিকে তাকায়া কথা বাড়ায় না ও...।।
কাম শেষে আর দেখি না ওরে...।
মনে মনে ভাবি,সুন্দর একটা দিন গেল আইজ...

বোহেমিয়ান

অতিথি লেখক এর ছবি

তো ভাই শিমুল,আপনার জীবন পাকি মুক্ত হোক......
শিগগির.....

বোহেমিয়ান

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, প্রিয় অতিথি বোহেমিয়ান!

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

শক্ত-হয়ে যাওয়া বরফের ওপর দিয়ে হাঁটার সময় যে-রকম মচমচ শব্দ হয়, লেখাটি সে-রকম মচমচে।

পাকি-প্রসঙ্গে খিস্তি-খেউড় না করাটাই দুষ্কর আমার পক্ষে।

কিছুদিন আগে এক পরিচিতা তার নতুন ডাচ বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে আমার বাসায় বেড়াতে আসার খায়েশ প্রকাশ করলে আমি দিনক্ষণ ঠিক করে তাকে জানানোর পর জানতে পারি, ব্যক্তিটি জন্মসূত্রে পাকি। তার সঙ্গে একসাথে বসলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রসঙ্গ অনিবার্যভাবে উঠবে এবং তখন আমন্ত্রিত এই অতিথির প্রতি আমার আচরণ অননুমেয় দিকে মোড় নেয়ার সম্ভাবনা অনুমান করে অপ্রত্যাশিতভাবে-নাযেল-হওয়া ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে অনুষ্ঠানটি বাতিল করে দিই নির্ধারিত দিনের তিনদিন আগে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? :-?

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

থ্যাঙ্কস, প্রিয় সংসারে এক সন্ন্যাসী।
শুনে ভালো লাগলো অনেক...

ঝরাপাতা এর ছবি

বস, পাকিদের থেকে সাবধানে থাইকেন। ইহারা সর্প প্রজাতির মতো।


যে রাতে গুঁজেছো চুলে বেগুনি রিবন বাঁধা ভাট,
সে রাতে নরকও ছিলো প্রেমের তল্লাট।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . (আবু হাসান শাহরিয়ার)


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, বস!!

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আপডেটঃ
সোমবারে নতুন সুপারভাইজর পাওয়া যায়নি। মংগলবারে এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর বললো, দেরী হবে আরো দু'তিনদিন। শুনে খানিক মেজাজ বিগড়ালো।

কাল সন্ধ্যায় তর্তাজাকে মেইল করলাম, 'বিগত ৩ সপ্তায় তোমার ধরণ ও আচরণ আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। তোমার থেকে শেখার মতো কিছু হবে বলেও মনে হচ্ছে না। তাই আমি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেছি আমাকে নতুন সুপারভাইজর দিতে। আমি এখন তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছি। তাই তোমার সাথে আমি আর এ সংক্রান্ত ব্যাপারে দেখা করবো না। সকল এপয়েন্টমেন্ট ক্যানসেল করা হলো। আমি কী বলতে চেয়েছি সেটা বুঝার জন্য ধন্যবাদ।'

আজ সকালে এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টরের মেইল পেলাম, 'সবার সাথে আলাপের পরে তোমার নতুন সুপারভাইজর ঠিক হয়েছে, তার ই-মেইল...।'

ভীষণ বিরক্তিকর কয়েক সপ্তাহ কাটলো এই তর্তাজাভিজ্ঞতায়। প্রিয় সচলদের কমেন্ট এ সময়ে অনেক স্বস্তি ও সাহস দিয়েছে। সবাইকে ধন্যবাদ।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।