গল্প: ভালোবাসা একটি মোহ বৃক্ষ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
লিখেছেন আনোয়ার সাদাত শিমুল (তারিখ: রবি, ১০/০৬/২০০৭ - ১১:১৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:
আত্মীয় পরিজনহীন ঢাকা শহরে মেস জীবনের বাইরে আমার বৈচিত্র্য বলতে মাঝে মাঝে মহলার মোড়ের মনিরমিয়ার চা স্টলে গিয়ে সন্ধ্যা কাটানো। কোণার টেবিলে একাকী বসে ঘন্টা দুয়েক একটানা চা সিগারেট খাওয়া আর নিত্য নতুন মানুষদের রাজনৈতিক আলোচনা শোনা। আওয়ামী লীগ-বি.এন.পি ঝগড়ায় কেউ কেউ আমাকেও টানতে চায়, কিন্তু আমার নির্লিপ্ত হাসি দেখে তারা আগ্রহ পায় না। ব্যাপারটি আমি মনির মিয়াকে দেখেই শিখেছি। সবসময় সে নির্দলীয় নিরপেক্ষ শ্রোতা, নি:সন্দেহে ভালো বিজনেস স্ট্র্যাটেজী! যেহেতু মনির মিয়ার দোকানের বাইরে ভালো বিনোদন মানেই আমার জন্য অন্যরকম ব্যাপার তাই সকালে টিকিটটি পাওয়ার পর থেকে আমার মন উড়ুউড়ু করছিল কখন অফিস ছুটি হবে! কখন সুরেলা চৌধুরীর গান শুনতে যাবো! আমার অফিসের কলিগ আলতাফ ভাই কিভাবে কিভাবে যেন সুরেলা চৌধুরীর একক সঙ্গীত সন্ধ্যার দুটো টিকিট ফ্রিপেয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তার বৌ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের আর যাওয়া হলো না। ভাগ্যক্রমে একটি টিকিট পেয়ে গেলাম আমি। বাংলাদেশ বেতার ঢাকার 'ক' চ্যানেলে মাঝে মাঝে সুরেলা চৌধুরীর গান শুনেছি, তা-ও মনিরমিয়ার দোকানে বসে। কিন্তু কখনো সামনা সামনি তার গান শুনবো অমনটা ভাবিনি। পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে টানা দুই ঘন্টা তার গানে মন্ত্রমুগ্ধ হয়েছিলাম। আমি বসেছিলাম তৃতীয় সারিতে। সামনের দিকে বেশ কিছু নামী দামী চেহারা চোখে পড়লো। দেশের একজন সাবেক প্রধান বিচারপতিকেও দেখলাম। অনুষ্ঠান শেষে সবাই যখন হুড়োহুড়ি করে বেরুচ্ছিল তখন আমি ভাবছিলাম - আস্তে ধীরে বাসায় যাই। ভালো লাগা সন্ধ্যাটা আরেকটু দীর্ঘ হোক। অডিটোরিয়াম থেকে বেরিয়ে দেখি হালকা বাতাস বইছে। খুব চায়ের তেষ্টা পেলো তখন। পাশের দোকানে খুব আয়েশ করে চা খাচ্ছিলাম, ইচ্ছে করেই আস্তে ধীরে খাচ্ছিলাম। উদ্দেশ্য একটাই - ভালোলাগাটুকু আরো কিছুক্ষণ থাক। রাত তখন আটটার মতো। সবাই চলে গেছে। বলা নেই - কওয়া নেই আচমকা ঝমঝম বৃষ্টি নামলো। তুমল বৃষ্টি হচ্ছে। সাথে ঠান্ডা বাতাস। সিড়ির ওপাশে গুটিসুটি মেরে দাড়িয়ে আছি। বৃষ্টির ছটা এসে গায়ে লাগছে। মাথার ভেতর তখনো সুরেলা চৌধুরীর গানের লাইন গুলো ঘুরপাক খাচ্ছে। গুনগুন করে গাইছিও কয়েক লাইন। হঠাৎ আমার পাশে এসে দাড়ায় সুরেলা চৌধুরী। আমাকে চমকে দিয়ে অনেকদিনের চেনা মানুষের মতো বলে - আপনি দেখি বৃষ্টিতে আঁটকা পড়ে গেছেন! আমি আড়ষ্ঠ হয়ে হাসি দিই। - বাসা কোথায় আপনার? - নাখালপাড়া। কিছুটা সংশয় নিয়ে জবাব দিই। - আমি ও পথেই যাবো, আপনি ইচ্ছে করলে আমার সাথে যেতে পারেন। আপনাকে পথে নামিয়ে দেবো। একটি বায়িং হাউজে সামান্য বেতনে চাকরী করা আমার এই ছা-পোষা সাতাশ বছরের জীবনে এমন আহবান কেউ করেনি। সুরেলা চৌধুরীর মতো জনপ্রিয় শিল্পীর সাথে কথা বলাই আমার কাছে মহা আনন্দের ব্যাপার। তাই আর কথা বাড়ালাম না। বিনয়ী হয়ে সুরেলা চৌধুরীর পিছুপিছু গাড়িতে উঠলাম। আমি বসলাম ড্রাইভারের পাশে। সুরেলা চৌধুরীর সাথে এক মধ্যবয়েসী লোক পেছনের সীটে। বাংলামটরের ট্রাফিক সিগন্যালের জ্যামে বসে বসে নানান কথা হয় আমাদের মাঝে। জানতে পারি - স্টেজে গান গাওয়ার সময় নাকি সুরেলা চৌধুরী আমাকে লক্ষ্য করেছেন। আমার মনোযোগী ভাব নাকি তার ভালো লেগেছে। এটুকুই শুনে জানি না কী কারণে আমি আরো বিনয়ী হয়ে পড়ি। নিজ থেকে বলা শুরু করি - আমি সুরেলা চৌধুরীর গানের ভীষণ ভক্ত, রেডিও তে প্রায়ই তার গান শুনি, একক সংগীতানুষ্ঠানের অগ্রীম টিকিটও কিনেছিলাম। এ সবই বানোয়াট কথা। অতি উৎসাহ ও বিনয়ের বহি:প্রকাশ। তবে আর একটু হলেই ধরা পড়ে যেতাম যখন সুরেলা চৌধুরী আমাকে জিজ্ঞেস করলো - তার কোন কোন অ্যালবাম আমি শুনেছি ...। শত জনমের ভাগ্য - তখন গাড়ি ড্রাম ফ্যাক্টরী পার হয়ে গেছে। আমি তাড়াহুড়া করে বললাম - আমাকে এখানেই নামতে হবে, ড্রাইভার সাহেব, এখানেই থামান! গাড়ি থেকে নেমে সুরেলা চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি আমার একটি ভিজিটিং কার্ডও দিলাম। সুরেলা চৌধুরী হাসি দিয়ে কার্ডটি নিলেন। চলে যাওয়া গাড়ীর দিকে না তাকিয়ে আমি দৌড়ে বৈশাখী কুলিং কর্ণারের সামনে দাড়ালাম। তখনো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। দুই. সুরেলা চৌধুরীর সাথে ওটাই আমার শেষ দেখা হতে পারতো। আমার এ আপাত: সাদামাটা জীবনে সুরেলা চৌধুরীর সঙ্গীত সন্ধ্যা এবং পরবর্তী সময়টুকু এক অবিস্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকতে পারতো। একইভাবে আগামী দিনের একান্ত নিজস্ব সময়গুলোর স্মৃতিচারণের চমৎকার উপাদান হতে পারতো। অথবা মনিরমিয়ার দোকানে রেডিওতে সুরেলা চৌধুরীর গান শুনতে শুনতে চা-য়ের কাপে আরেকটু আয়েশ করে চুমুক দেয়া যেতো। সাথে যোগ হতে পারতো দু'তিনটি বেনসন সিগারেট। ...এরকম অনেকগুলো ভবিষ্যৎ সম্ভবনা হারিয়ে যায় এক বিকেলে সুরেলা চৌধুরীর ফোন পেয়ে - আমি কি মুহিব আলমের সাথে কথা বলতে পারি? - জ্বী বলছি - আমি সুরেলা চৌধুরী হিন্দি সিনেমা 'তুম বিন'-এ নায়িকার হাত থেকে গ্লাস মেঝেতে পড়ে যে রকম শব্দ হয়েছিল, আমার মনে হলো, সে রকম অনেকগুলো গ্লাস ঝুনঝুন করে ভেঙে পড়ে ফোনের অপর প্রান্তে। নিজেকে সামলে নিয়ে বলি - হ্যাঁ, মুহিব বলছি। কেমন আছেন? - যাক্, আপনাকে পাওয়া গেল। ফ্রি থাকলে আজ সন্ধ্যায় রুশ কালচারাল সেন্টারে চলে আসুন। আমার একটা প্রোগ্রাম আছে - সন্ধ্যা সাতটায়...। খানিকটা আমতা আমতা করে বলি - আমি তো টিকিট কিনিনি... আরে না, টিকিটের কথা ভাবতে হবে না। আমার নিজস্ব গেস্টদের জন্য কিছু ফ্রি এন্ট্রি আছে। ভাবলাম - আপনাকে একটা দিই। আফটার অল আমার গানের একান্ত ভক্ত হিসেবে তো আপনাকে মনে রাখতেই হয়। কি বলেন? - থ্যাংকস - তাহলে আসছেন সন্ধ্যা সাতটায়। আমি আসবো সাড়ে সাতটার দিকে। আপনি সাতটার আগে চলে যাবেন, গেটম্যানকে আপনার নাম বলা থাকবে। - জ্বী আচ্ছা। - আরেকটা কথা, আপনি বসবেন ডান পাশের সারিতে। ঠিক আছে? - ওকে - বাই - বাই সুরেলা চৌধুরীর নিজস্ব গেস্টের তালিকায় নিজেকে পেয়ে ক্যামন যেন অন্যরকম অনুভূতি জাগে নিজের ভেতরে। অফিসের কাজগুলো তাড়াতাড়ি শেষ করে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা চলে যাই রুশ কালচারাল সেন্টারে। ঘড়িতে তখন পৌনে সাতটা। আয়োজকরা আমাকে বেশ খাতির করে সামনের সারিতে বসায়। সুরেলা চৌধুরীর কথা মতো ডান পাশের একটি চেয়ার বেছে নিলাম। স্টেজের ব্যাকগ্রাউন্ডে লেখা আছে 'সেকাল-একালের বৃষ্টির গান' - সুরেলা চৌধুরী। পাশে তিনটি তবলা, একটি দোতারা এবং আরো কিছু বাদ্যযন্ত্র। আরেকটু ডান পাশে একটি খয়েরি প্রজাপতি। স্টেজের লাইটিং বেশ চমৎকার। আলো-আঁধারীর মাঝে পুরনো দিনের ঘ্রাণ ভেসে আসে। দর্শক জমতে শুরু করেছে ধীরে ধীরে। বেশ কিছু নাগরিক চেনা মুখ দেখতে পেলাম। আমার ডান পাশে বসেছেন - একটি মালটিন্যাশনালের মার্কেটিং ম্যানেজার। বাণিজ্যের মানুষ হলেও সঙ্গীতে তার বিশেষ আগ্রহ। এরকম প্রোগ্রামে তার কোম্পানী যথেষ্ঠ পৃষ্ঠপোষকতা করে। খবরের কাগজে পড়েছিলাম - তিনি নিজেও টুকটাক গান লিখেন। পরিচিত কয়েকজনের সাথে তিনি হাত মেলালেন হাসি মুখে। আমি অপো করছি কখন গান শুরু হবে। অনুষ্ঠান শুরু হলো প্রায় আটটার দিকে। পুরনো দিনের চমৎকার চমৎকার সব গানের ফাঁকে টুকটাক স্মৃতিচারণ করছিলো সুরেলা চৌধুরী। মেট্রিক পরীার সালের সূত্র ধরে অনুমান করে নিলাম - সুরেলা চৌধুরী আমার চেয়ে অন্তত: বছর দশেকের সিনিয়র। এ ভাবনাটি অবশ্য খুব বেশি গুরুত্ব পায়নি তখন। কারণ, সুরেলা চৌধুরী তার চমৎকার গলায় হারানো দিনের মনকাড়া কিছু গান দিয়ে শ্রোতাদের অন্য জগতে নিয়ে গিয়েছিলেন। দুয়েকবার মনে হলো আমার দিকে তাকালেনও আড়চোখে। রাত দশটায় অনুষ্ঠান শেষ হলে আমি বেশ কিছুক্ষণ গ্রীণরুমের বাইরে দাড়িয়ে ছিলাম সুরেলা চৌধুরীর সাথে দেখা করবো ভেবে। গাড়ি করে লিফট নয় বরং ফ্রি টিকিটের জন্য ধন্যবাদটুকু জানাতে। অনেকণ অপেক্ষা করেও সুরেলা চৌধুরীর দেখা পেলাম না। পরে শুনলাম - কোন এক টিভি চ্যানেলে গানের রেকর্ডিং আছে তাই সরাসরি ওখানে চলে গেছেন তিনি ভাবলাম, ফোনে ধন্যবাদ জানাই। দুপুরে যে নম্বর থেকে ফোন করেছিলেন - ঐ নম্বরে রিং করলাম। মোবাইল অফ। খানিকটা মন খারাপ হলেও একটু আগে শোনা বর্ষার গান গুলো এক ধরণের স্নিগ্ধতা এনে দিলো পরের মুহূর্তগুলোয়। বাসায় ফেরার পথে ফার্মগেট মিউজিক পয়েন্ট থেকে সুরেলা চৌধুরীর একক অ্যালবাম 'ভালোবাসার চিঠি' কিনলাম। রাতে শুয়ে শুয়ে যখন গান শুনছিলাম তখন বাইরে ঝমঝম বৃষ্টি নেমেছে। বিজলী চমকাচ্ছে। বারবার মনে হলো - সুরেলা চৌধুরী আমাকে আবার ফোন করবে, এবং খুব শীঘ্রই...। তিন. আবার দেখা হলো। এবং পরের ঘটনাগুলো ঘটলো নাটকীয়ভাবে। সুরেলা চৌধুরীর বাসায় যেতে হলো আমাকে অফিস ছুটির পর সন্ধ্যায় কিংবা ছুটির দিনে বিকালে। কয়েকবার এক সাথে ডিনারও করলাম বাসায়। পরিচিত হলাম তার হাজব্যান্ড সিরাজী চৌধুরীর সাথে। তাদের মেয়ে কুহেলী চৌধুরীর সাথেও দেখা হলো কয়েক দিন পর। সিরাজী একজন পাঘাতগ্রস্ত মানুষ। হুইল চেয়ারে চলাফেরা করেন গত চার বছর ধরে। তবে বসে নেই একদম - সারাণ অফিসের কাজকর্ম দেখছেন, কাগজে সই করছেন, এখানে ওখানে ফোন করছেন। কয়েকজনকে ধমকও দিচ্ছেন। দারুণ ব্যস্ত মানুষ। এভাবেই দেখা হলো আরো বেশ কয়েকবার। দিনগুলো কাটলো খুব দ্রুত। বুঝি নিয়মটাই এমন - আনন্দের মুহুর্তগুলো কেটে যায় চোখের পলকে। আনন্দ কেমন ছিল তা অবশ্যই আপেক্ষিক ব্যাপার, তবে খুব অল্প সময়ের মাঝে তিনটি ঘটনা ঘটে। প্রথমত: জানতে পারি সিরাজী চৌধুরী আমার অফিসের বসের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। অনেকগুলো কারণে আমার বসকে সিরাজী চৌধুরীর সাথে সুসম্পর্ক রাখতে হয়; যার মধ্যে ব্যবসায়িক স্বার্থই প্রধান। তাই সময়ে অসময়ে অফিসের কাজ বাদ দিয়ে সিরাজী চৌধুরীর ডাকে তার বাসায় গিয়ে সময় কাটানোয় আমার বসের কোন আপত্তি থাকতো না। বলা যায়, আমার কাজের ধরণ গেলো পাল্টে। সিরাজী চৌধুরীর সাথে কথা বলতে গিয়ে বারবার খেয়াল করেছি, ভদ্রলোক অতীতচারী। ঘুরে ফিরে একই বিষয়ে তার কথা ফিরে আসে - তার অতীত; ছোটবেলা, বেড়ে উঠা, দারিদ্র্যের আঘাতে নিপীড়িত জীবন, গ্রাম ছেড়ে শহরে আসা, সংগ্রামী নাগরিক জীবনে না পাওয়ার যাতনা এবং ধীরে ধীরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার গল্প। পরের অংশটুকু বলতে গিয়ে সিরাজী চৌধুরীর মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠে। আমি দেখতে পাই, একজন সফল মানুষের প্রত্যয়ী মুখ। কিন্তু এর পেছনেও কোথায় যেন একটা চাপা কষ্ট - অভিমান লুকিয়ে থাকে সবসময়। প্রায়ই দেখি তিনি দুহাতে চেপে ধরেছেন হুইল চেয়ারের হাতল। মনে হয় নিজের সমস্ত ক্ষোভ গিয়ে জমা পড়ছে ঐ হুইল চেয়ারের মাঝে। মাঝে মাঝে সিরাজী চৌধুরীর আচরণে আমি নিজেও ইমোশনাল হয়ে পড়ি। শ্রোতা হিসেবে তখন নিজেকে ভীষণ দূর্বল একজন মানুষ মনে হয়। তবে আমার আগেই সিরাজী চৌধুরী নিজেকে সামলে নেন দ্রুত। এক বিষয় থেকে আরেক বিষয়ে মন দেয়ার অসাধারণ মতা তার। আমার সাথে কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে অফিসের ফোন কল রিসিভ করছেন। অদ্ভুত এক মানুষ! আমাদের এ আড্ডায় মাঝে মাঝে কুহেলী এসেও যোগ দেয়। কুহেলী তখন মাত্র ভার্সিটিতে অ্যাডমিশান নিয়েছে। কাস শুরু হতে আরো সপ্তাহ কয়েক বাকী। কুহেলীর মাঝে কৈশোর পেরুনো চাঞ্চল্য আছে, তবে উচ্ছলতা ছাড়িয়ে এক ধরণের অবসন্নতা ধরা পড়ে বেশী - অন্তত: আমার চোখে। আরো একটি ব্যাপার আমি খেয়াল করেছিলাম মাসখানেক পর। সিরাজী চৌধুরীকে কুহেলী 'আংকেল' বলে সম্বোধন করে। নিজের মাঝে অনেক সংশয় রেখে, অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তপে না করার ভদ্রতাজ্ঞান রেখে কিছু জিজ্ঞেস করিনি প্রথমে। আমার কৌতুহলী মুখ দেখে একদিন কুহেলীর অনুপস্থিতিতে সিরাজী চৌধুরী নিজেই আমাকে বলেছিলেন - পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার পর বৌ চলে যায় অ্যামেরিকায় ছেলের কাছে। বছর পার হলেও ফিরে আসেনি। লোকমুখে খবর এসেছিলো - কোন এক হোয়াইট ছেলের সাথে লিভ টুগেদার করছে ওখানেই। আপন ছেলে তো অনেক আগেই বিদেশীনি বিয়ে করে চিরতরে প্রবাসী। নিজের শারীরিক অক্ষমতার মাঝে বিজনেসের কাজ, বৌয়ের বিদেশ চলে যাওয়া, নি:সঙ্গতার অসহায় জীবন। নিজের প্রতি তীব্র ঘৃণা। খুব বাজে সময় তখন - বলতে বলতে, আমি আড়চোখে দেখি, সিরাজী চৌধুরীর হাতের মুঠি দুটি শক্ত হয়ে এসেছে। তখন পরিচয় হয় - সুরেলা চৌধুরীর সাথে। পরিচয়ের ডিটেইল অবশ্য জানা হয়নি আমার। শুধু জেনেছি - সাগরে ডুবে যাওয়া মানুষ যেমন শেষ মুহুর্তে খড়-কুটো ধরে বেঁচে থাকতে চায় তেমনি সুরেলা চৌধুরীকে আশ্রয় করে আরেকবার প্রবল স্রোতের বিপরীতে ভাসার চেষ্টা করেছিল সিরাজী চৌধুরী। সে চেষ্টা বৃথা যায়নি। তিরিশ পেরুনো বয়সে ডিভোর্সী, এ কারণটাও আমার জানা হয়নি, সুরেলা চৌধুরী শেষ পর্যন্ত সিরাজী চৌধুরীর জীবনে নুহের কিস্তিসম রূপ নিয়েছিল। সারাদিন গান নিয়ে ব্যস্ত থাকলে সুরেলা চৌধুরী যথেষ্ঠ কেয়ার দিয়েছেন নতুন স্বামীর প্রতি। কিশোরী কুহেলীও মেনে নিয়েছে স্বাভাবিকভাবে। জীবন কখনো হঠাৎ ফুরিয়ে যায় না - বিশ্বাস করে, সিরাজী চৌধুরী আবার উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। চার. এরকম গল্পে গল্পে সময় কেটে যেতো। কালেভদ্রে সুরেলা চৌধুরীও এসে যোগ দিতেন আমাদের আড্ডায়। অফিসে কাজ করতে ভালো না লাগলে আমি সোজা সুরেলা চৌধুরীর বাসায় চলে যেতাম। আমার বস তেমন কিছু বলতেন না, যতটুকু জেনেছি সিরাজী চৌধুরীর বদন্যতায় এবং আমার মধ্যস্থতায় বেশ কিছু বিজনেস ডীল এরমাঝে আমার অফিস হাতিয়ে নিয়েছে। যেমনটি বলছিলাম - তিনটি ঘটনা, যার দ্বিতীয় ঘটনাটি খুব আহামারি কিছু নয়; সরকারী সাংস্কৃতিক দলের প্রতিনিধি হয়ে সুরেলা চৌধুরী বিদেশে গেলেন দুই সপ্তার জন্য। কিন্তু এ দ্বিতীয় ঘটনাটি সুযোগ করে দেয় তৃতীয় ঘটনার। আমি নিশ্চিত - এ ঘটনার জন্য কোন প্রস্তুতি ছিল না, অন্তত: আমার পক্ষ থেকে তো নয়ই। বরং আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি কুহেলীও এ ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিল না। ছুটির দিনের বিকেল বেলায় মনিরমিয়ার টি স্টলে সময় না কাটিয়ে চলে গেলাম সুরেলা চৌধুরীর বাসায়। তেমন কোন প্রয়োজন অবশ্য ছিল না, যেমনটি ছিল না কখনোই। প্রায়ই যেতাম সিরাজী চৌধুরীর একাকী সময়ে গল্প গুজবের জন্য, সে বিকেলে গিয়েছিলাম নিজের একাকীত্ব কাটানোর জন্য। গুলশান দুই নম্বর মোড় পার হওয়ার পরই গুড়িগুড়ি বৃষ্টি নামলো। অনেক কষ্টে মাথা বাঁচিয়ে সুরেলা চৌধুরীর বাসায় যখন পৌঁছলাম তখন বৃষ্টি বাড়ছে ক্রমাগত। জানলাম, পড়ন্ত বিকেলে সিরাজী চৌধুরী ঘুমুচ্ছিলেন নিজের ঘরে। কুহেলী এগিয়ে এসে নিজের রূমে নিয়ে গেল। খুব পরিপাটি গুছানো ঘর। কম্পিউটারে গান চলছে - সব বৃষ্টির গান। আকাশ মেঘে ঢাকা, শাওন ধারা ঝরে, এমন বরষা ছিল সেদিন শিয়রে প্রদীপ ছিল মলিন, একখানা মেঘ ভেসে এলো আকাশে; এরকম চমৎকার চমৎকার সব গান। বাইরে তখন তুমুল বৃষ্টি। বৃষ্টির শব্দকে ছাপিয়ে রূমে গানের সুর, এর মাঝে আমার আর কুহেলীর টুকটাক কথা। আবারো বলি - আমি নিশ্চিত, কোন কিছুই পরিকল্পিত ছিল না। আমাদের কোন হাত ছিল না ঐ সন্ধ্যার ঘটনা প্রবাহে। জানি না - কেন জানি আমার বারবার মনে হচ্ছিল কোথায় যেন একটি গড়বড় হতে যাচ্ছে আজ!কোথায় যেন আজ উল্টো বাতাস বইছে! এতসব ভাবনার মাঝে খেয়াল করি - আমরা দুজনেই নীরব হয়ে আছি। কোন কথা নেই। বৃষ্টি বাড়লো কি কমলো জানি না, তবে কম্পিউটারে গান চলছিল তখনো। বাতাসে জানালার পর্দা উড়ছিল কিনা জানি না, ওদিকে চোখ দেয়ার সময়টুকুও ছিল না। কারণ, আমি এবং কুহেলী তখন একে অন্যের চোখে তাকিয়ে। আমি জানি না - কেন হঠাৎ এ নীরবতা নেমে এলো, কেনই বা আমরা একে অন্যের চোখে হারানোর নেশায় মাতলাম। কুহেলীর চোখ দুটো ঐ মুহুর্তে কেনই বা এমন মোহ জাগানিয়া হয়ে উঠেছিল! আমি কিছুই জানি না। তবে টের পাই - আমার নৈতিক ও আদর্শগত অবস্থানের ছোটখাটো পাহাড়টা তখন ভাঙছে। ভেঙে গুড়িয়ে যাচ্ছে কুহেলীর মাঝে। কুহেলীও ভাঙছে নদীর মতো। শরীরের সব নিয়ন্ত্রণ হারিয়েও আমি ফিরে আসার চেষ্টা করি, নিজের মনকে বারবার বলি - আমি মুহিব আলম, আমি মুহিব আলম, সাধারণ চাকরী করা মানুষ, এ মোহ আমার জন্য নয়, এ অন্যায়, অন্যায় ভাবনা। তবুও আমি নিজের মাঝে ফিরতে পারি না। ততণে ভাঙা-গড়ার খেলা চলছে বিরামহীন। আরো পরে, এক সময় আমি মুহিব আলম এ স্বাভাবিক জগতে ফিরে এলে জানালার পর্দা তুলে দেখি - বাইরের ঝড়ও থেমে গেছে। সন্ধ্যা নেমেছে আরো আগে। সোডিয়াম আলোয় শহরের রাস্তাগুলো খুব অচেনা মনে হয় তখন। বাতি নেভানো ঘরে কুহেলীর মুখ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। আমি জানি না কুহেলী কী ভাবছে, তবে নিজের মনে নিজেকে নিশ্চিত বলে রাখি - এ ঘটনার জন্য আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না। পাঁচ. ঘটনা পরবর্তী মানসিক প্রস্তুতি সুদৃঢ় করার চেষ্টা করি - আমি মুহিব আলম নিজের সমস্ত সত্তার উপর বিশ্বাস ও আস্থা রাখার সংকল্প করি। কুহেলীর মোহ নিতান্তই কোন এক সন্ধ্যার অপ্রত্যাশিত আচরণ বলে মেনে নিই। দিন-যাপনের রুটিন আগের মতোই বাসা-অফিস আর মনিরমিয়ার টি স্টলের গন্ডিতে ফিরিয়ে নিয়ে আসি। সুরেলা চৌধুরীর বাসায় যাওয়ার কথা ভাবি না, তবে মাঝে মাঝে ঐ সন্ধ্যাটি মনের মধ্যে হানা দেয় না অমন কথা বলবো না। মাঝে কয়েকবার সিরাজী চৌধুরী ফোন করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবে কথা বলেছি। কুহেলীর ফোন কল পাইনি, আমি নিজেও ফোন করিনি। ...এভাবেই চলছিল, ভালোই। হঠাৎ একদিন সুরেলা চৌধুরীর ফোন পেলাম, তার বাসায় যেতে হবে। আমি আবার নিজের সাথে সংগ্রাম করি। অনাকাংখিত সন্ধ্যাটা আমাকে কুঁকড়ে দেয়। নিজের প্রতি থুতু দিই - অতটুকু আত্মনিয়ন্ত্রণ নেই আমার! এরকম অনেক ভেবেচিন্তে গেলাম সুরেলা চৌধুরীর বাসায়। এবার খুব বিপ্তি আলাপ হয় আমাদের মাঝে; গান, নাটক, রাজনীতি, ট্রাফিক জ্যাম, চড়া বাজার...। আমি জানি না কেন, নিজের কাছে কোন ব্যাখ্যা নেই এর, আমাদের মাঝে হঠাৎ নীরবতা নামে। আমি স্পষ্ট টের পাই - ঐ সন্ধ্যার অনুভূতিগুলো আবার ফিরে আসছে। জানি না বাইরে বৃষ্টি ছিল কিনা, তবে সুরেলা চৌধুরীর আহ্বান ছিল প্রকট। আমি মুহিব আলম, টের পাই - এ ঘটনা পরিকল্পিত! আমি মুহিব আলম, ছা পোষা চাকরীজীবি মানুষ - আমাকে এ মোহ থেকে বেরুতেই হবে। এসব ভাবনায় যখন আমি অস্থির হয়ে উঠছি তখন আচমকা দরজার সামনে কুহেলী চিৎকার করে উঠে - "ইট'স ইনাফ, মাম! ইট'স ইনাফ অ্যাট য়্যূর এজ!" শুনে সুরেলা চৌধুরী আমাকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়। আমি দ্রুত পায়ে বাড়ী থেকে বের হয়ে আসি। গলি পেরিয়ে মূল রাস্তায় চলে যাই। খুব দ্রুত হাঁটার চেষ্টা করি। ...আরেকটু জোরে হাঁটলেই গুলিস্তান-পীরজঙ্গী রুটের ছয় নম্বর বাসটা ধরতে পারবো। (আগে বাংলালাইভে ছাপা হয়েছিল।) ___________ উৎসর্গ: নজমুল আলবাব। মুগ্ধতার কারণ সব সময় ব্যাখ্যা করা যায় না! ______

মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
ওয়ার্ড থেকে কপি পেস্ট করার ফরম্যাটিং উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে। অনেক 'ক্ষ' হারিয়ে গেছে মহা যন্ত্রণা!!!
উৎস এর ছবি
একটা প্রশ্ন। আপনার অনেক গল্প পড়লাম গত কয়েকদিনে। এমনিতে গল্পগুলো লিখতে কতটা সময় লাগে, যেমন এই গল্পটা, মানে একদম প্লটের বীজ থেকে শুরু করে টাইপ শেষ করা পর্যন্ত?
আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
উৎস ভাই: এটা ভাবিনি কখনো। সামহয়্যারে আমার মাঝারি আকারের বেশীর ভাগ লেখা একবারেই টাইপ করা। মাথায় আইডিয়া আসার সাথে সাথে লিখে ফেলা। মোট সময় ১-৩ ঘন্টা। মূল যে থিমটা মাথায় আসে ওটাকে ধরে রেখে চারপাশে একটু পলেস্তারা লাগাই। বড় লেখা কিংবা তর্ক-বিতর্ক টাইপ পোস্ট সময় নিয়ে লিখি, পড়ে ভাবি - কীভাবে সাজানো যায়। তাও বেশী সময় নিতে পারি না। একটা অস্থিরতা কাজ করে, তাড়াহুড়া করে ২/৩ দিনের মাঝেই শেষ করি। (এ লেখাটা সম্ভবত: ৩/৪ দিনের ভাবনা, ১ দিনের টাইপ)। পরে মনে হয় - অনেক ভুল রয়ে গেছে। আইডিয়াটা মারা গেছে, এরকম। নিজের কোনো একটি লেখা পড়ে আমি নিজে এখনো খুশি হতে পারিনি। কারণ, শেষমেশ আমার ভেতর থেকে মনে হয় - লেখাটা কিচ্ছু হয়নি। ::::: উৎস ভাই, এবার বলেন - আপনার প্রশ্নের কারণ কী! খানিকটা পরামর্শ কী প্রত্যাশা করতে পারি!
অমি রহমান পিয়াল এর ছবি
আগে ছাপা হইছে পরের কথা, আগে বলেন এইটা কত বছর আগের ল্যাখা। অনেস্টলি কইলে, শিমুলরে মিস করছি ........................................ তুমি হাসো, আমি কাঁদি, বাঁশি বাজুক, কদম তলেরে...

তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
পিয়াল ভাই, কখন কোথায় মিস করলেন! এইটা এই বছরের জানুয়ারীতে লেখা।
হাসান মোরশেদ এর ছবি
গল্প বলার ধরনটা সেরকমই । শিমুল এখন গল্প বলে আরো সহজ কিন্তু আরো ধারালো সুরে । গল্পের বিস্তার বেড়ে গেলে কেমন যেনো অসম্পুর্ন উপন্যাসের মতো মনে হয় । আরো পড়তে চাই শিমুলের লেখা । -------------------------- আমি সত্য না হলে গুরু সত্য কোনকালে?

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
মোরশেদ ভাই: এবার শেষ। নেক্সট টাইম থেকে ভুলগুলো ধরিয়ে দিবেন। নাকি - এত্তো ভুল যে কোনটা রেখে কোনটার কথা বলি! বরং অল্প দু'য়েকটা ভালো দিক যা আছে ওগুলোই বলা ভালো!!!! এরকম ব্যাপার নাকি? হা হা হা
ধুসর গোধূলি এর ছবি
শিমুল, 'ক্ষ' অক্ষরের সাথে মনেহয় ওয়ার্ডের শত্রুতা আছে। নোটপ্যাড ট্রাই দেন। সেভ করার সময় 'ANSI'কে 'Unicode'-এ পরিবর্তন করে নিয়েন। _________________________________ <স্বাক্ষর দিমুনা, পরে জমিজমা সব লেইখা লইলে!>
আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
ভালু বুদ্ধি!ভালু বুদ্ধি!ভালু বুদ্ধি!
সুমন চৌধুরী এর ছবি
ধরলাম বেশ কিছু আগেরই। তবে তাতে শিমুলের গুণাগুণ অনুপস্থিত বলবো না। এখন লিখলে হয়তো ডিটেলস কিছু কমে আসতো। লেখার কায়দা পরিবর্তিত হতে না থাকলে তো সর্বনাশ! ....................................... ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
বদ্দা, ইচ্ছা করে ডিটেইল বাড়ানোর চেষ্টা করছি। ঘৃতম্ পীবেৎ .
নজমুল আলবাব এর ছবি
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল আমি। অভ্যাসমত শিমুল পড়তে গিয়ে আজ কি এক অভাবনিয় ব্যপার ঘটল! মুগ্ধতা নিয়ে পড়তে পড়তে একবারে শেষে এসে এ আমি কি দেখি। আমারে উৎসর্গ... আমি শুধু আনত হই শিমুল... আমি শুধু আপ্লুত হই...
ঝরাপাতা এর ছবি

এই গল্পটা বাংলালাইভের আই পত্রিকাতে পড়েছি। ভালো লেগেছে, তবে খুব বেশি নয়।
_______________________________________
পোড়াতে পোড়াতে ছাই, ওড়াতে ওড়াতে চলে যাই . . .


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

দৃশা এর ছবি

ইট'স ইনাফ, শিমুল! ইট'স ইনাফ " -এতো ভাল লেখার অধিকার
সবার হওয়া উচিত্ত শুধু আপনার না ...তবে এটা ঠিক এর থেকেও ভাল লিখবার কেপাবিলিটি আপনার আছে...তার অপেক্ষায় রইলাম।

দৃশা

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

মুগ্ধ আবার হাসি

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

অমিত আহমেদ এর ছবি

অন্য পাঠকদের মত আমারো মনে হয়েছে যে শিমুলকে আমি চিনি সে শিমুল এ লেখায় অনুপস্থিত। তবে পার্থক্য হলো, আমি লেখকের প্রতি লেখাই একটা নতুন দিনের মত শুরু করি, যেখানে ফেলে আসা দিনের ছাপ আমাকে কাতর করে না। লেখা পড়ার সময় মনে হচ্ছিল কিছুটা জোর করে গল্পের বিস্তার বাড়ানো হচ্ছে, সেটা পরে শিমুলের মন্তব্যে নিশ্চিত হলাম।

এবার এসব আঁতেলামী বাদ দিয়ে মনের কথা বলি, গল্পটা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে! বিপ্লব... বিপ্লব... এবং বিপ্লব!


ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি তোমায়!
ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ অমিত। আমার অন্য লেখায় মনে হয়েছে কেবলই তাড়াহুড়া, বিবরণ কম। এটায় চেষ্টা ছিল - কিছুটা ডিটেইল আনতে। এরপরও 'বিপ্লব' পেয়েছি। খুশি।
সময় করে পড়ার জন্য আবারও ধন্যবাদ, বাকী সবাইকেও।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।