লিখেছেন আনোয়ার সাদাত শিমুল (তারিখ: সোম, ১১/০৬/২০০৭ - ২:৫১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:
কৈশোরের জিলেট চালানো হলদেটে চোরা চোরা মুখের কিশোর।
অথবা অকালপক্ক স্কুল-বালক।
বয়েসটা হয়তো সেরকম জরুরী কিছু নয়।
আরও বেশীই ধরি, যুবক, তিরিশ-মধ্য তিরিশ কিংবা চল্লিশ-পঞ্চাশের ধুসর চোখের মানুষ।
নিশ্চয়তা দেয়ার অথবা সীমারেখা টানার জটিলতা দূরে রেখে স্বীকার করি - আগ্রহটা হয়তো একেবারে কম না। দোষই বা কীভাবে কাকে দিই।
আদম যখন স্বর্গের আপেলে লোভাক্রান্ত তখন জ্ঞানীজন ব্যাখ্যা করেন - নিষিদ্ধের প্রতি মানবের আকর্ষণ দূর্দম।
আরো বছর ছয় কিংবা সাতেক আগে হুটহাট করে আমাদের ভালোবাসার শহরে চমক জাগালো কিছু নিষিদ্ধ সিডি। গোলগাল ফরসা মুখের ক্লাস টেন পড়ুয়া সুবোধ বালকটিও বন্ধুদের আড্ডায় মন খারাপ করে - 'দোস্ত সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো না, কী কয় বুঝলাম না'। এ প্রবণতা কমে না বরং বাড়ে। সুশীল সমাজের সাপ্তাহিকটি কভার স্টোরি করে। সে সময়কার একমাত্র বেসরকারী চ্যানেলের প্রাইম নিউজে দেখা যায় নিষিদ্ধের এক ঝলক। ক্লাস টেন পড়ুয়া বালকটি বড় হয়। ক্রমে ক্রমে কেবল নিষিদ্ধ ভিডিও নয়, একদিন দেখে ফেলে নিষিদ্ধ ভিডিও তৈরির কলা-কৌশল। জেনে যায়, ক্যামেরার পেছনের মানুষগুলো কীভাবে সাজায় এবং গুছায় টুকরো টুকরো দৃশ্য। তারপর ঐ একদা বালকের আর আগ্রহ জন্মায় না। বড্ড নিরস মনে হয় ঐসব ছবি, মনে হয় - কোথাও অভিনয় হচ্ছে। দর্শক হিসেবে সে প্রতারিত হচ্ছে। - - - কৈশোর পেরিয়ে সে এখন ভার্সিটি যায়।
আমাদের শহর আবারো মেতেছে।
এসেছে নতুন সিডি।
কথা বলছে - রাজনীতির নাট্যমঞ্চের উজির নাজির।
আবার সেই গন্দম মোহ।
নিষিদ্ধের আকর্ষণ।
সুশীল সমাজের সাপ্তাহিকটি স্পেশাল রিপোর্ট করেছে।
প্রশ্ন-উত্তরের লিখিত ভার্সন ছেড়েছে।
কারো কারো হাতে চলে গেছে এমপি থ্রি সিডি।
এডিটিং নিয়ে চলছে ধুমসে তর্ক।
ঐ একদা বালক এবার আগ্রহ পায় না। তার কেন জানি মনে হয়, কোনো ভাবে একটা প্রতারণা আছে এখানে। হয়তো সামনে আরো সিডি আসবে। অডিওর বদলে ভিডিও। এখনকার অডিওকে তুচ্ছ করে দিবে ঐসব ভিডিও। এখন যারা ক্যামেরার পেছনে আছে, ঐ মানুষগুলো তখন সামনে আসবে। নতুন মাত্রা পাবে - পলিটিক্যাল পর্ণোগ্রাফি।
মন্তব্য
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
অজ্ঞাতবাস
শিমুল গেছে কই?
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
দুর্দান্ত শিমুল। মুগ্ধতা যে দিগন্ত ছাড়িয়ে গেছে বহু আগে। ছবির মানুষটার মুখ কি এদিকে ফেরানো যায়?
_______________________________________
পোড়াতে পোড়াতে ছাই, ওড়াতে ওড়াতে চলে যাই . . .
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
আরে এই লোকটা গেছে কই? কেউকি জানেন?
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
নজমুল ভাই, আমারও একই প্রশ্ন। এই রকম নোটিস ছাড়া উধাও হওয়া লোকরে ধোলাই দেয়া দরকার!
মুগ্ধ হতে হতে একদিন মুগ্ধ হওয়া ভুলে যাব...মুগ্ধ হওয়ার শেষ সীমাটা কই?
দৃশা
ঠিক জায়গায় ক্লিক করেছেন। এরকম মুগ্ধতার শেষ হয় অনুধাবনে, যখন বুঝবেন - এইসব ছাইপাশ আসলে কিচ্ছু ছিল না। পড়েছেন, সেই জন্য ধন্যবাদ।
জটিল কইরা ভাবলেই জটিল...ভাবার দরকারটা কি?
জ্ঞানী মানুষদের ভাবার হয়ত দরকার আছে... আমার এমনেই গ্রে ম্যাটার কম...আমার জন্য এই যথেষ্ট।
দৃশা
কথাগুলা আরেকটু সরাসরি কইতে কী এমন লজ্জা আপনার। পলিটিকাল প্রস্টিটিউটরা কিশোর-তরুণ-যুবার মস্তিষ্কে নিষিদ্ধ নেশা জাগিয়ে তছনছ করে ফেলছে সব সুকুমার সাধনা আর আমরা কি শব্দের সাম্পানে পাল তুলে ভাটিয়ালি গাইবো এখনো ? নাকি শব্দকেই মন্ত্র করে নেবো সেই নেশা ছুটিয়ে দিতে....
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
মার্জনা করবেনঃ লজ্জার কিছু ছিল কিনা জানি না, যদ্দুর মনে পড়ে ১/১১ পরবর্তী সময়ে অনলাইন মিডিয়ায় জলপাই বাহিনীর নজরদারী, রিমান্ডের অডিও ফাইল প্রকাশ এসব নিয়ে একটা অস্বস্তিকর সময়ে লেখা, তেমন গুরুত্বপূর্ণ হয়তো নয়, নিছক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল এ পোস্ট; এমনটাই মনে পড়ছে এখন।
নতুন মন্তব্য করুন