ফিডব্যাক খ্যাত মাকসুদের গাওয়া "না চাহিলে যারে পাওয়া যায়" নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছিলো পত্রপত্রিকায়। যারা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন তাদেরকে রবীন্দ্র মৌলবাদীও বলা হয়েছিলো সেসময়। এরপরে নচিকেতার "একলা চলতে হয়" গানটির কথাও মনে পড়ছে। [গান দুটোর লিংক এখন পাচ্ছি না, পেলে পরে যোগ করার আশা রাখি]
গত দু'সপ্তায় বেশ কয়েকজনের ফেসবুকে দেখলাম "রক উইথ রবীন্দ্রনাথ" গানের অ্যালবাম নিয়ে নানান প্রতিক্রিয়া। গানগুলো ডাউনলোড করা যাবে এখান থেকে।
ধৈর্য/সময় না থাকলে, এটা শুনে নিতে পারেন -
|
আজ 'একটুকু ছোঁয়া লাগে' গানটি শোনার ইচ্ছে হলো হঠাৎ।
ল্যাপটপে নেই দেখে, ইস্নিপ্সে সার্চ করলাম। পেলাম, কিন্তু গান চালিয়ে দেখি হিন্দি সংস্করণ-
|
আমি ঠিক নিশ্চিত না, এসব গান রবীন্দ্রনাথ হিন্দিতে লিখেছেন নাকি কেউ অনুবাদ করছে এখন।
হিন্দি শুনে ঠিক মনে ধরলো না।
মানে, ঠিক মনের ভেতর যে কথা ও সুরের আকাঙ্ক্ষা জেগেছিলো - তা পূর্ণ হলো না।
আগে শুনেছিলাম, হিন্দি আর বাংলার মিশ্রণে "মম চিত্তে নাচে নৃত্যে" গানটি অবশ্য ততো খারাপ লাগেনি,
|
খারাপ লেগেছিলো - ইয়্যুটিউবে দেখা এই রবীন্দ্রসঙ্গীত -
আমি সঙ্গীতের 'স'-ও বুঝি না, তবুও সাধারণ শ্রোতা হিসেবে বলতে পারি - সামিনা চৌধুরী কিংবা সুমনা হকের রবীন্দ্রসঙ্গীত ভালো লাগেনি। বরং শাহানা বাজপেয়ীরটাই অনেক মনে গেঁথেছিলো।
এসব ভাবতে ভাবতে মনে পড়লো - বিবিসি বাংলার এক বিতর্কের কথা -
৩১ জানুয়ারী ২০০২ তারিখে বিবিসি বাংলা রেডিওর 'এ মাসের বিতর্ক'-এর বিষয় ছিলো - "রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে পরীক্ষা নীরিক্ষা"। আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন সুমন চট্টোপাধ্যায় (অধুনা কবীর সুমন পরিচয় দেয়া হয়েছিল) ও বিশ্বভারতীর সঙ্গীত সমিতির সম্পাদক প্রদীপ ব্যানার্জী। স্রেফ আগ্রহের বশে অনুষ্ঠানটির অডিও রেকর্ড করেছিলাম, পরে ডায়েরীতে লিখেও রেখেছিলাম কথাগুলো। একটু আগে খুঁজে পেলামও সে ডায়েরী। হাতে সময় থাকলে পুরো আলাপ টাইপ করে সচলায়তনে তুলে দিতাম পাঠকদের জন্য। [আচ্ছা, বিবিসির নিজস্ব অনুষ্ঠানের শ্রুতি লিখন প্রকাশের কপিরাইট কি আমার আছে?]
মানসী বড়ূয়ার উপস্থাপনায় ঐ তর্কের সমাপ্তিতে কবীর সুমন বলেছিলেন, "...রবীন্দ্রনাথের মার নেই। মানে, আমি যা ইচ্ছে তা করে পার পেয়ে যাবো...। আমি মনে করি, এটা সম্ভব হবে না।"
জবাবে প্রদীপ ব্যানার্জী বলেছিলেন, "এটাই আমাদের একমাত্র ভরসা যে কেউই তা মেনে নেবে না।"
রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে নানা পরীক্ষা নীরিক্ষা বা আধুনিকীকরণ যা-ই হোক না কেনো, এখনো পর্যন্ত নতুন কিছু আমার মনে জায়গা করে নিতে পারেনি।
আজ যে গানটি খোঁজ করছিলাম, "একটুকু ছোঁয়া লাগে", বাংলা সংস্করণ শুনতে পারেন একবার...
|
.
.
.
মন্তব্য
একটুকু ছোঁয়া লাগে.. এটা মেয়ে-কন্ঠেই বেশী ভালো লাগছে।
এলব্যামটি শুনতে শুনতেই কমেন্ট করলাম
প্রথম রক উইথ রবীন্দ্রনাথ আমি শুনিনি কিন্তু দেখেছিলাম। কোন এক কারনে প্রচন্ড বিরক্তি লেগেছিল এবং আমি লিঙ্ক টা শেয়ার করাতে দেখলাম বেশ গরম প্রতিক্রিয়া [গেল গেল রব]।
পরে ডাউনলোড করে শুনলাম এবং মনে হচ্ছে একটা ভালো পদক্ষেপ। রবীন্দ্রনাথ সব সময়ই 'আধ মরাদের ঘা মারতে বলেছেন' এবং আমার খুব সোজা সাপ্টা ভাবে মনে হয়েছে এই পরিবর্তনে রবীন্দ্রনাথ ই খুশী হতেন।
মাকসুদ কে নিয়ে এদেশীয় আর কিশোর কুমার কে নিয়ে কোলকাতার ব্রাক্ষ্মন সমাজ যা করেছে সেটা অতিমাত্রায় বাড়াবাড়ি। রবিন্দ্রানাথ এই বাড়াবাড়ি দেখলে খুশী হতেন না।
আমার কাছে এই মুহূর্তে রেফারেন্স নেই, কিন্তু রবীন্দ্রনাথ তার গানের কথা এবং সুর নিয়ে বেশ স্পর্শকাতর ছিলেন। তাঁর নিজের কোন লেখাতেই পড়েছিলাম, "আমার গান যেভাবে ইচ্ছে গাওয়ার অধিকার তো আমি দেই নি।" নজরুল বরং তাঁর গানে গায়কদের স্বাধীনতা দিয়েছেন।
নতুন কিছু করতে হবে, খুব ভাল কথা। নতুন কিছু করুন না, রবীন্দ্রনাথের মত প্রাচীন কাউকে রেহাই দিন।
রবীন্দ্রনাথ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে নতুন গান সৃষ্টি করলে কেউ কিছু বলবে না। রবীন্দ্রসঙ্গীত নাম দিয়ে এই বিকৃতিকে আমার কাছে অগ্রহণযোগ্য মনে হয়, কারণ এগুলো রবীন্দ্রসঙ্গীত না। আর এটার প্রচার নিয়ে তর্ক করি এই জন্য যে এই গানগুলো ইউটিউব না নেটের কল্যাণে অনেকদিন পাওয়া যাবে। আসল সুরের গানগুলো সেরকম কি পাওয়া যাবে? আমার অনেক প্রিয় রবীন্দ্রসঙ্গীত আছে যা আমি নিজের ভাঙ্গা গলায় গাই, কারণ সেগুলোর রেকর্ড নেই। "আজ তারায় তারায়", "ধরণীর গগনের মিলনের ছন্দে", "সন্ধ্যা হলো গো মা"। এখন এই গানগুলো যদি কেউ রিমিক্স করে, পরবর্তীতে সেগুলোই রবীন্দ্রসঙ্গীত হিসাবে হয় তো স্বীকৃতি পাবে, যদিও আসল গানের সুরমাধুর্য তাতে কিছুই থাকবে না।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
রবীন্দ্রসংগীতের আরেকটা এক্সপেরিমেন্ট হল পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর "অজানা খনির নূতন মণির" অ্যালবামটি। উনি অত্যন্ত গুণী শিল্পী। কিন্তু এই গানগুলো একটুও ভাল লাগেনি আমার। "ভাঙা গান" এর ধারণাটাই উলটে দিয়েছেন। আলাপ, তেহাই ইত্যাদি যোগ করে জবরজং অবস্থা।
আগ্রহীরা এখানে শুনতে পারেন।
http://calcuttaglobalchat.net/calcuttablog/rabindra-sangeet/ajay-chakrabarty/
আর কী কারণে জানিনা্ অনেক আধুনিক গানের শিল্পীই কোন না কোন সময়ে রবীন্দ্রসংগীত করেন। আশা, লতা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত। অনেকেরটা ভাল হয়, অনেকেরটা শুনে মন এহয়েছে কী দরকার ছিল করার, সবাইকে কেন গাইতেই হবে রবীন্দ্রনাথের গান!!
"মম চিত্ত" টা শুনে বেশ ভাল লাগল, তবে মিক্সিংটা ঠিকমতো হয়নি মনে হল। হোক, আরো অনুবাদ হোক। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষায় গাওয়া হোক রবীন্দ্রনাথ কে। চলুক নিরীক্ষা, শ্রোতারাই ঠিক করে দেবেন কী টিকে থাকবে
নচিকেতার "একলা চলতে হয়" আমিও খুঁজছিলাম, পাচ্ছিনা।গানটা বেশ ভাল লেগেছিল আমার তখন।
আরো আছে....
http://www.eprothomalo.com/contents/2010/2010_05_12/content_zoom/2010_05_12_16_7_b.jpg
রবীন্দ্রনাথকে শতবর্ষের পুরোনো বেঁধে রাখার পক্ষপাতি আমি কোনোভাবেই না
বরং রবীন্দ্রনাথকে নতুন করে পুনর্গঠনের পক্ষপাতি
০২
রবীন্দ্রনাথের গানকে যারা নতুন করে গাইছেন। অনেকগুলো গানই আমার বেশ ভালো লাগে
আমার মনে হয় এটা কন্টিনিউ করা উচিত নতুন জেনারেশনের জন্য
লীলেন্দা, আপনার কোন একটা লেখা পড়ে হয় তো অর্বাচীন আমার মনে হল লেখাটা ঠিক হয় নি। আমি আমার মত করে লেখাটা ঠিক করে ব্লগে ছড়িয়ে দিলাম। আপনার কাছে সেটা কেমন লাগবে?
রক উইথ রবীন্দ্রনাথ বা এই জাতীয় গান যারা করছে, তাদের নিয়ে আমার প্রথম অভিযোগ হল এদের গান নিয়ে চর্চা আছে বলে আমার মনে হয় নি। একটা খুব সহজ কাজ করে এদের আটকে দেওয়া যাবে আমার ধারণা। নিয়ম করে দিন যারা এর পর থেকে রিমিক্স করবে, তাদের আসল গানটা রিমিক্সের সাথে শুদ্ধ সুরে গাইতে হবে, তারপরে তাদের ইম্প্রোভাইজড গান।
কোন গান টিকে থাকবে, কোনটা থাকবে না সময় তার বিচার করবে ঠিকই। কিন্তু প্রযুক্তিগত কারণেই রবীন্দ্রনাথের অনেক পুরানো গানের রেকর্ড এখন নেই। এই নিয়ম করে দিলে কমপক্ষে আমি আমার প্রিয় কিছু গান আসল সুরে পেতে পারি।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
লেখা সংশোধন আর গানের সুর বদলানো বোধহয় সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়
একটা মূল লেখাও কিন্তু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্বীকৃত উপায়ে বদলানো হচ্ছে এবং আমরা তা মেনে নিচ্ছি
আমরা যখন টলস্টয় কিংবা শেক্সপিয়রের বাংলা অনুবাদ পড়ি তখন কিন্তু সেটা একই সাথে ভাষান্তর এবং রূপান্তর
ভিন্ন ভাষায় যদি রূপান্তর আপত্তিজনক না হয় তবে নিজ ভাষার পরের জেনারেশনে রূপান্তরে আপত্তি কেন?
চার্লস আর মেরি ল্যাম্বের টেলস ফ্রম শেক্সপিয়র কি শেক্সপিয়র বিকৃতি না শেক্সপিয়রের নতুন সংযোজন?
আমার তো মনে হয় নতুন সংযোজন
০২
আমাদের জাতীয় সংগীত হিসেবে কিন্তু রবীন্ত্রনাথের মূল গানের পুরোটা গাই না আমরা। পুরোটা জাতীয় সংগীতও নয়
আমার গাই প্রথম কয়েকটা লাইন?
এক অর্থে কিন্তু এটাও এক ধরনের খণ্ডন কিংবা সংশোধন কিংবা সংযোজন (যেহেতু পুরো গানটাই রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন গাইবার জন্য)
এখন রবীন্দ্রনাথ যা লিখেছেন যেভাবে গাইতে বলেছেন সেভাবেই গাইতে হবে কিংবা ততটুকুই গাইতে হবে নীতিতে গেলে কিন্তু বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতও রবীন্দ্রনাথকে লংঘনের উদাহরণ হয়ে যায়
(সুরটাও তো অরিজিনাল সুর না)
কিন্তু আমি মনে করি রবীন্দ্রনাথের এই গানকে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত (তার পারমিশন ছাড়া। মরার বহু পরে) হিসেবে নির্বাচন বাঙালির রবীন্দ্রপাঠ এবং অস্তিত্বে রবীন্দ্রধারণের আরেকটা বড়ো দিক
০৩
বাঙালি অস্তিত্বে রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করে বলেই তাকে নতুন রূপে রূপায়ন করে নতুন প্রয়োজনে নতুন ভাষায় নতুন সুরে
এটা কিন্তু রবীন্দ্রনাথের অনিবার্যতাকেই বুঝিয়ে দেয়। অতিক্রম নয়
তাকে ধারণ না করলে তার গান নিযে কারো মাথা ব্যথা হতো বলে মনে হয় না
০৪
আরেকটা বিষয় হলো লীলেনের লেখা লীলেনের সম্পত্তি। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের লেখা সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার। ওটা আর দেবেন্দ্রনাথের ছেলের সম্পত্তি নয়
তার নতুন সংযোজনের অধিকার কিন্তু আছে বাঙালির...
০৫
এটা কিন্তু যে কোনো নতুন কিছুর আগমনে যে কোনো প্রাচীন বুড়োর কথা হয়ে গলো
গান চর্চা না করলে ও গান গাইতে আসবে কেন?
আমি যদি বলি ও যে ধরনের গান চর্চা করে তা শোনার কান তৈরি হয়নি আমাদের? আমরা পড়ে আছি পুরোনো স্টাইলে। তাহলে?
০৬
আটকাতে হবে কেন?
০৭
এই ফর্মান কেউ তার ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষেত্রে জারি করতে পারে। সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে নয়
(ত্যাড়া বাংলায় বললে বলতে হয়- ঠ্যাকায় পড়ছে কেউ?)
০৮
আসল সুর নয়
কথাটা হবে প্রথম সুর কিংবা পুরোনো সুর
মাকসুদ যখন রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইলো, তখন আমি পত্রিকার ছিলাম। আমি খুব স্পষ্টভাবেই তার পক্ষে বিশাল একটা লেখা লিখেছিলাম বলে মনে পড়ছে। যেখানে সানজীদা খাতুন, ওয়াহিদুল হকদের বিবেচনাও ছাপা হয়েছিলো।
রবীন্দ্রনাথরে আমি কীভাবে দেখি?
এই প্রশ্নে আমি ব্লগের উদাহরণ টানবো।
একসময় মত প্রকাশের মাধ্যম পত্রিকাতেই সীমাবদ্ধ ছিলো, কিন্তু নানান রেস্ট্রিকশন।
ব্লগ হলো উন্মুক্ত। যার যা খুশি তাই বলতে পারছে।
এই উন্মুক্ততার জায়গাটারে আমরা সহজভাবে নিলাম। হাজার হাজার ব্লগার লিখছে। যার যা খুশি লিখছে। কিন্তু শেষ বিচারে কোনটা শ্রেয়তর, তা কিন্তু আমাদের বলে দিতে হচ্ছে না।
রবীন্দ্রনাথ এখন কপিরাইট মুক্ত। যার যা খুশি তাই করতে পারবে তাকেঁ নিয়ে। এটাকে আমি পজিটিভলিই দেখতে চাই। যার যা খুশি তাই করুক। আমার তাতে কিছু আসে যায় না। শেষ বিচারে কোনটা টিকবে সেটাই বিবেচ্য। এবং তা নির্ধারণ করে দিবে আমজনতাই। আমি আমজনতার পক্ষেই থাকতে আগ্রহী।
একটা ধারণা আমার ভালো লাগে না। শিল্পীদের আমরা খুব সহজে ক্যাটাগোরিতে ফেলে দেই।
রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদেরকে আমরা শুরুতেই জায়গাটা দিয়ে দেই। কিন্তু তাদের মধ্যেও সবাই যে ভালো গাইতে পারেন সেটা না কিন্তু।
আমি মনে করি শিল্পী শিল্পীই... কণ্ঠে সুর থাকলে সে যে কোনো গানই কণ্ঠে তোলার যোগ্যতা রাখেন। যার কণ্ঠে সুরের দখল আছে, তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতও গাইতে পারবেন, মেটালিকাও গাইতে পারবেন। যার নাই, তিনি কিছুই পারবেন না। তিনি আসলে কোথাও কি টিকবেন?
সাহানাকে নিয়ে বলি... সাহানা জন্মের পর থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীতের ছাত্রী। সেই ছোটবেলায় সে শান্তিনিকেতনে ভর্তি হয়েছিলো শুধু রবীন্দ্রসঙ্গীত শিখতেই। অর্ণবকে বিয়ে করা, তার ভারত জাতীয়তা, এসব তাকে বাংলাদেশে আধুনিক শিল্পীর পরিচয় দিয়েছে, কিন্তু আমি তাকে জানি আজন্ম একজন রবীন্দ্রশিল্পী হিসেবেই।
তুলনায় অর্ণব কিন্তু শিল্পীই না। অর্ণবের শান্তিনিকেতন পরিচয় অনেককেই বিভ্রান্ত করে। অর্ণব কিন্তু শান্তিনিকেতনে গান শেখে নাই। অর্ণব চিত্রকলার স্টুডেন্ট ছিলো। বেসিকেলি অর্ণব একজন পেইন্টার। গান তার শখের জায়গা। এখন প্রফেশন।
যা হোক, রবীন্দ্রনাথরে নিয়া সবাই কাজ করুক। আমি এটাকে পজিটিভলিই দেখতে চাই। কাজে বাধা দিতে আগ্রহী না। তবে আমার খারাপ লাগলে সেটার নিন্দা আমি জানাবো।
আমি জানি... রবীবুড়োটা এতটাই আধুনিক ছিলেন... আগামী অন্তত একশ বছরে তারে আর নতুন করে আধুনিক করতে হবে না আমাদের...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মন্তব্যে
নজু ভাইয়ের শেষ দুটো কথাই বলার ছিলো আমারও।
এর বাইরে...
আমার কাছে হিন্দি অনুবাদ দুটো বেশ ভালো লাগলো। কে জানে, হয়তো হিন্দি কম বুঝি বলেও ভালো লেগে থাকতে পারে! রবীন্দ্রনাথ শুধু বাংলার নয়, ভারতবর্ষের। তাঁর প্রতি সম্মানের অনেকটাই স্রেফ নোবেল পুরষ্কার পাওয়ায়। হিন্দিতে অনুবাদ হলে আরও অনেক মানুষ রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির প্রকৃত মর্ম বুঝে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।
- আমি নিজেই রবীন্দ্র সঙ্গীত গাওয়া ধরবো বলে ঠিক করেছি। বাকিটা উপর ওয়ালার ইচ্ছা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
উহুঁ, আগে ড. ধুগো হতে হবে, সাথে লাগবে একটা চ্যানেল। তার পর একটা বউ লাগবে (সেরকম বউ, শিমুলের ফ্লিকারে যার পোস্টার শোভা পাচ্ছে)। তার পরে রবীন্দ্র জয়ন্তীতে বড় বড় শিল্পীদের দাওয়াত এবং উপঢৌকন দিয়ে ডেকে এনে তাদের সামনে আপনার বোনি করতে হবে।
- আপনাদের মুখের দিকে তাকিয়ে আর কষ্ট সহ্য হয় না পিপিদা। দেন ধুগোরে একটা বিবাহ করায়ে। আপনাদের খাতিরে মহামান্য ধুগো এইটুকু ত্যাগ স্বীকার করতে রাজী আছে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কিছুদিন আগে রাহিন একটা লিঙ্ক শেয়ার করেছিলো ফেসবুকে। অলিম্পিকে বিভিন্ন দেশের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে গবেষণা করে একজন সঙ্গীতসাংবাদিক বিশ্বের সেরা দশ জাতীয় সঙ্গীত [তার বিচারে] তালিকাবদ্ধ করেছিলেন। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের স্থান সেখানে দ্বিতীয় (উরুগুয়ে প্রথম)। এতে আমাদের মৃদু গর্ব বোধ করা স্বাভাবিক। লিঙ্কে ক্লিক করে যা দেখলাম আর শুনলাম, তাতে মেজাজ খিঁচড়ে গেলো। ইউটিউবে জাতীয় সঙ্গীতের একটি স্থূল অর্কেস্ট্রেশনের সঙ্গে গান, ভিডিওটি সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো ভক্তের তৈরি করা, তাতে মইনুল-মতিনদের হাসিমুখের ছবি শোভা পাচ্ছে। অতি কুরুচিকর নিম্নমানের ঐ মিউজিক ভিডিওটি ইউটিউবের কল্যাণে আমাদের জাতীয়সঙ্গীতের পরিচয়বাহী হয়ে গেছে একজন বিদেশী সাংবাদিকের চোখে, আমাদের অজান্তেই।
এ কারণেই বলি, "আমজনতার নির্বাচন" আসলে সবসময় উঁচুমানের জিনিসকেই ধরে রাখে না। এ কারণেই পৃথিবীতে মূল্যবান জিনিসকে সংরক্ষণের জন্যে নানা প্রতিষ্ঠান, প্রশিক্ষণ ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আমি রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে এক্সপেরিমেন্টাল গানগুলো আগ্রহ নিয়ে শুনি। সত্য কথা হচ্ছে সবাই মিক্স করতে জানে না, কী মিক্স করতে হয় তা-ও বোঝে না। এই হারে মিক্স চলতে থাকলে রবীন্দ্র সঙ্গীতের পরিচয় হয়তো সিমেন্টের ছাতা ধরে ঘূর্ণায়মান কোনো হাফটনী উঠতি গায়িকার "আয় তবে সহচরী"র ইউটিউব ভিডিও ধরেই রবীন্দ্রঅজ্ঞ মানুষের কাছে পৌঁছাবে। কপিরাইট উঠে যাবার কারণে মিক্স করার স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি, কিন্তু সেই স্বাধীনতা সবার হাতে মানায় না, যেমন মানায় না বানরের হাতে খন্তা।
সহমত। সাহানা বাজপেয়ীর গান গুলা (নতুন বাদ্য বাজনা সহযোগে) বেশ ভালো লেগেছিলো। কিন্তু সম্প্রতি যে অ্যালবামটা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, সেটার কোন আগা মাথা নাই। রুচিশীল কোন শ্রোতার সে গান ভালো লাগার সম্ভাবনা কম। ফেসবুকে দেখলাম এরা নিজেদের ছায়ানটে গান শেখা জাতীয় পুরষ্কার পাওয়া শিল্পী বলে দাবি করছে। চিন্তার বিষয় এখানেই যে এদের প্রচারণা বেশি ( যেমন বেশি ইভা আপার ও।) ফলে একটা অসম প্রতিযোগিতায় পড়ে আদি সুর গুলো হারিয়ে যাবার ভয় আছে।
রবি দাদু অনেক আধুনিক ছিলেন সত্য তাই বলে এইসব বাদরের (গানের গলা এবং লম্ফঝম্পের বহর দেখে তাই তো মনে হয় ) গলায় তার মুক্তার মালা দান করার পক্ষপাতী হবেন বলে মনে হয় না।
হ্যাঁ আমাদের জাতীয় সংগীতের উপরে কথা নাই...খালি এইটার জন্য আমি আরো একশ বার বাঙ্গালি হয়ে জন্মাতে রাজি আছি।
এই মন্তব্যের সাথে খুবই সহমত।
____________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
" "আমজনতার নির্বাচন" আসলে সবসময় উঁচুমানের জিনিসকেই ধরে রাখে না। এ কারণেই পৃথিবীতে মূল্যবান জিনিসকে সংরক্ষণের জন্যে নানা প্রতিষ্ঠান, প্রশিক্ষণ ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে। "
মন্তব্যে পূর্ণ সহমত।
১.
ঠাকুর এখন পাব্লিক ডোমেইনের মাল। লে-আউটের কপিরাইটের দিন ফুরিয়ে গেছে। সত্যি বলতে কী আমি নিজেও ঠাকুরের গান লিখবো ভাবছি।
২.
ঠাকুরকে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষায় আমার আপত্তি নেই। ইতিহাসই ঠিক করে দেবে আদি অকৃত্রিম ঠাকুর টিকে থাকবেন নাকি এইসব "ড়ক উইদ রবি গ্রুপ"। এখন পর্যন্ত ইতিহাস দেখে মনে হয় ঠাকুরকে হারানো এত সহজ হবে না।
৩.
পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমেই নতুন জিনিস বের হয়ে আসে। কিন্তু সমস্যা হয় তখন যখন বানরের হাতে খন্তা তুলে দেয়া হয় [হিমু ইতিমধ্যেই বলে ফেলেছে এটা। কথাটা যেহেতু সত্য তাই আরেকবার বলাটা দোষের না]।
ইউটিউবের লিংকটা থেকে "সেদিন দুজনে" শুনলাম।
আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় কেমন লেগেছে তাহলে আমি বলব শিল্পী গানটির এতই দুরবস্থা করেছেন যে গানটিকে ফর্মুলা খাওয়া বাচ্চার পাদের মত মনে হচ্ছে।
গানটিকে ফর্মুলা খাওয়া বাচ্চার পাদের মত মনে হচ্ছে।
অফটপিক - বাচ্চাকাচ্চার টেরনিং দেখি ভালই হচ্ছে। ভাতিজাদ্রোহী কি সমাগত?
আরে নাহ! ভাতিজার আসার আরো অনেক দেরি।
- আর আইছে!
ভাতিজা আইতে আইতে দুনিয়া কালিদাস আর গুলাবিদাসে ভরে যাবে!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
দুটো ব্যাপার।
১। পরীক্ষা নিরিক্ষা চালানো উচিৎ কিনা।
২। পরীক্ষা গ্রহণ করবো কিনা।
আমি মনে করি সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে পরীক্ষা নিরিক্ষার স্বাধীনতা যেমন থাকা উচিৎ। তেমনি, শ্রোতা হিসেবে শ্রোতার গ্রহণ বা বর্জন করবার স্বাধীনতাও থাকা উচিৎ।
পরীক্ষা চলুক, শ্রোতাই/সময়ই বলে দেবে কোনটা কালের পরিক্রমায় টিকবে নাকি টিকবে না। জাত গেল জাত গেল বলে এই পরীক্ষাটাকেই বন্ধ করে দিলে রবীন্দ্রসঙ্গীত নতুন মাত্রা পাবে না।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আমি ব্যক্তিগতভাবে র্যাপ এবং রক ফিচারিং রবীন্দ্রনাথের ঘোর বিরোধী।
গায়কেরা পঅরীক্ষা চালাক, সময়ই বিচার করবে।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
কে যেন বলেছিলেন- কবিরা শব্দ নিয়ে খেলা করে বেশি, শব্দ ভাঙাগড়ার খেলার কাজটা মূলত তাদের-ই। তবে তার আগে কবিরা যেন ভাষাটা ভালোভাবে শিখে নেয়।
রবীন্দ্রনাথের গানের ক্ষেত্রেও তাই।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
স্বরলিপি মানুক না মানুক, সুরে গাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। তারপর, পাব্লিক চাইলে নিবে নাইলে নাই।
_________________________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ডুপ্লি ঘেচাং
এসব শুনলে মনে হতে পারে রবিবুড়োটা ইংরেজী জানতো না, তাই দয়া করে তার গান ইংরেজী করলে সেটার মান বাড়ানো যাবে, বেশী লোকে সেটা শুনবে। বলি শোন রে অবুঝ, তোদের, আমাদের আর আজকের ইংলন্ডের রানী (ভদ্রমহিলা জার্মান) র চাইতেও রবিবুড়োর ইংরেজী জ্ঞ্যান ঢের টনটনে ছিল। তার দু একটা ইংরেজী লেখা পড়েই দেখনা। 'বিদেশিনী'র মত গানটি ইংরেজীতে করার দরকার পড়লে রবিবুড়ো নিজেই কি সেটা করে যেতে পারতো না? তাও যদি তোর ইংরেজীটা বোঝা যেত। 'ঔ মেইঢেন অব ঢিস্ঠ্যান্ঠা ল্যান্ঠ' এর ধষ্টামিটা বড়ই অখাদ্য হয়েছে।
মন্তব্য গুলো পড়ে ভালো লাগছে l বিশুদ্ধতার পক্ষে ও বিপক্ষে কণ্ঠস্বরগুলো বেশ জোরালোই শোনা যাচ্ছে।
আমার সাদা মাথায় মনে হয়,
মেম্বর যেমনটা বলছে, ঠাকুর এখন পাবলিক ডোমেইন এর মাল, তার কপিরাইটও নাই। ঠাকুর এখন ফ্রি-সোর্স।
তারে সিন্দুকে বন্ধ কইরা রাখনেরও চেষ্টা কইরা কাম কি?
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
একদিন মাহিনের ঘোড়াগুলির "পৃথিবীটা না কি ছোট হতে হতে" গানটা শুনছিলাম। একজন পাশ দিয়ে যাবার সময় মন্তব্য করলো --
"মাত্র জেমস-পঞ্চমের ভিগি ভিগি গানটা বের হলো, আর এর মধ্যেই বাংলা নকল হয়ে গেল?"
"অজ্ঞতাই শান্তি" আর "কর্পোরেট দুনিয়া"-র কল্যাণে এর চেয়েও অনেক বেশি বিভ্রান্তি আমাদের মধ্যে আছে।
ময়ূর আর কাক-ময়ূরের সহাবস্থানে সাধারনত আমার আপত্তি নেই। মিক্সিং চলতেই পারে। তবে আশংকা এই যে, যিনি ময়ূর দেখেননি, তাহার কাছে কাক-ময়ূরকেই আসল ময়ূর বলিয়া ঠাহর হইবে। তাই কাক-ময়ূরের "যেমন খুশি তেমন সাজো" প্রতিযোগিতায় যেন আসল ময়ূর লুপ্ত না হয় তা খেয়াল রাখা জরুরী।
এই দুনিয়ায় তেলাপোকা টিকিয়াছে, ডায়নোসর টিকেনি। এই প্রতিকূল পরিবেশে মানুষ তাই "সারভাইভাল অব দ্যা ফিটেস্ট" ত্বত্ত্বের উপর ভর করে বসে না থেকে পরিবেশ সংরক্ষণে নেমেছে।
[উত্তরাধুনিকতা নামছে না মাথা থেকে :)]
-----------
"সে এক পাথর আছে কেবলি লাবণ্য ধরে"
-----------
চর্যাপদ
এই নামে কোন ব্যান্ড আছে নাকি?
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
এই বিষয়ে কিছুদিন আগে বক বক করে "সাংস্কৃতিক মৌলবাদী" উপাধি পেয়েছি। নতুন কিছু বলার নেই।
______________________________________
ভাষা উন্মুক্ত হবেই | লিনলিপি
______________________________________
লীন
রবীন্দ্রনাথ যেখানে নিজেই বাউল গান চুরী করে সেখানে মাকসুদের ্উপর ক্ষ্যাপা হাস্যকর।
ইউটিউবের ভিডিওটা ভাল লাগল- সিংগার কে?
প্রত্যেকটা গানই শুনলাম, সাথে ইউটিউবেও কয়েকটা পেলাম। কমেডি হিসেবে মন্দ না, তবে রবীন্দ্রসঙ্গীতকে ধর্ষণ না করে এই রিমিক্সারদের উচিত নিজেরাই কিছু করা।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
নতুন মন্তব্য করুন