তাজুল ইসলামের কোনো ডাক নাম ছিল না।
তাকে সবাই তাজুলিসলামই ডাকতো। তাজুলিসলাম আমার বন্ধু ছিল; ক্লাস ফোরে, ক্লাস ফাইভে, সিক্সে এবং সেভেনে। এরপর তাজুলিসলাম আর স্কুলে আসেনি। আমরা কেউ তাকে মনে রাখিনি, এর প্রধান কারণ সম্ভবত তাজুলিসলাম হাই স্কুলে ওঠার পরে ফুটবল খেলেনি। তাজুলিসলাম আমাদের বন্ধু হয়েছিল ক্লাস ফোরে। ক্লাস ফোরের আগে, আমরা যখন ক্লাস থ্রিতে – তাজুলিসলাম তখনও ফোরে পড়তো। তখন সে আমাদের শত্রু ছিল। আমাদের স্কুলে বছরে দু’তিনবার উপরের ক্লাসের সঙ্গে নিচের ক্লাসের, অর্থ্যাৎ ক্লাস থ্রি’র সঙ্গে ক্লাস ফোরের এবং ক্লাস ফোরের সঙ্গে ক্লাস ফাইভের, যে ফুটবল ম্যাচ হতো সেখানে তাজুলিসলামের জন্য আমাদের ক্লাস কখনো জিততে পারেনি। আমরা ক্লাস থ্রি তিন-তিনবার ডজনেরও বেশি গোল হজম করলাম যার অর্ধেকের বেশি গোল করেছিল তাজুলিসলাম। এজন্যই তাজুলিসলাম আমাদের শত্রু হয়ে যায়। আমরা বুঝে গিয়েছিলাম পরের বছর আমরা ক্লাস ফোরে গেলে তাজুলিসলাম ক্লাস ফাইভে যাবে। যথারীতি আমরা আবারো গোল হজম করবো। কিন্তু, ক্লাস থ্রি’র বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল যেদিন প্রকাশ হলো, সেদিন বিকেলে তাজুলিসলাম ভেজা চোখে ঘরে ফিরে। তাজুলিসলাম ফেইল করেছে, ক্লাস ফোর থেকে ফাইভে প্রমোশন পায়নি, একথা পরে জেনে আমাদের ক্লাস ফোরের ছাত্রদের মাঝে উল্লাস হয়েছিল। ক্লাস ফোরে তাজুলিসলাম যখন “আমাদের” হয়ে গেল, সে বছর ক্লাস থ্রি ও ফাইভকে এবং পরের বছর ক্লাস ফোরকে আমরা হারিয়ে দিয়েছিলাম। তাজুলিসলামের গতি, শ্যুট, নিখুঁত হেড – কেউ দমাতে পারেনি।
তাজুলিসলামের সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিল বছর সাতেক আগে কোনো এক ঈদে। তাজুলিসলাম ততদিনে মধ্যপ্রাচ্যবাসী। ছুটিতে দেশে ফিরেছে। শরীরে তাগড়া হয়েছে বেশ। গলায় সোনার চেইন, তীব্র আরব্য পারফিউম। স্কুলের মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে স্মৃতিচারণ করেছিলাম পুরনো দিন, ফুটবলের বিকেলগুলো নিয়ে। তাজুলিসলাম অন্যমনষ্ক হয়ে বলে, মাঠটা এখন ছোট হয়ে গেছে – একপাশে নতুন ভবন উঠেছে। আমি ঠাট্টা করে বলি, উঁহু! তুমি বড় হয়ে গেছ। তাজুলিসলাম ফিরতি খোঁচায় বলেছিল, তুমি তো এখনো ছাত্রই রয়ে গেছ। এই ছিল শেষ আলাপ। আজকাল টিভির খবরে বিভিন্ন আরব দেশ থেকে ফিরে আসা শ্রমিকদের মুখের ভীড়ে তাজুলিসলামকে মনে পড়ে। স্মৃতিকাতর হই। এসবই নিতান্তই ব্যক্তিগত কফি হাউজের গল্প।
প্রিয় পিপি’দা উইন্ডজর সফরের স্মৃতিচারণ করে পোস্ট দিয়েছিলেন।
পড়ে আবেগী হয়েছিলাম, বলেছিলাম একটা গান খুঁজে নিয়ে আসি। অনেকদিন হয়ে গেল, এখনো গানটি দেয়া হলো না। বিশেষ কিছু নয়, মান্না দে’র কফি হাউজ- দুই। শেষ বয়সে এসে ভাঙা-ক্লান্ত কন্ঠে মান্না দে গেয়েছেন নতুন কফি হাউজ। সেই সাতজন বন্ধুর এখনকার খবর নিয়ে লম্বা গান। এরকম কালজয়ী গানের সিক্যুয়েল করা সাহসের কাজ। মান্না দে সে সাহস করেছেন। যারা শোনেননি শুনতে পারেন।
|
খ্রাপ লাগলে সাহস না থাকা মুনের ‘ফাতেমা’ শুনুন।
বিনোদন হিসেবে মন্দ না
_
শিরোনামে যেটা বলছিলাম, রেবেকা ব্ল্যাক।
তেরো বছর বয়েসী এ অ্যামেরিকান কিশোরীর ফ্রাইডে গানটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলকালাম হয়ে যাচ্ছে। ফ্রাইডে শিরোনামের গানটি অফিসিয়ালি রিলিজ হয়েছে আজ থেকে মাত্র সতেরো দিন আগে, ১৪ মার্চ ২০১১ এ। তবে ইউট্যুবে আপলোড করা হয়েছে গত মাসে, ১০ ফেব্রুয়ারীতে। গত পঞ্চাশ দিনে ইউট্যুবে ডিজলাইক বাটন ক্লিকে রেকর্ড করেছে এ গান। এ মুহূর্তে দেখতে পাচ্ছি, ১৩ লাখ ১৯ হাজারেরও বেশি ডিজলাইক! আগামীতে এ সংখ্যাটা কোথায় যায় সেটাই বড় প্রশ্ন।
শেষে আরেকটা প্রশ্নও মনে জাগলো। আমাদের ছাপিত মিডিয়ার পাহারাদার, জিম্মাদার, বাঘ-ভাল্লুকেরা প্রায়ই অনলাইন নেটওয়ার্ক – সোশ্যাল মিডিয়ার শক্তি নিয়ে তুচ্ছ মন্তব্য করেন। জেফ জার্ভিসের “ডেল হেল”, ডেভ ক্যারলের “ইউনাইটেড ব্রেকস গিটার” অথবা সাম্প্রতিক মিশর-লিবিয়া ঘটনাপ্রবাহে অনলাইন নেটওয়ার্ক কী ভূমিকা রেখেছে সেটা আমাদের মিডিয়া মুঘলদের যারা বুঝতে পারছেন না, তাদেরকে আগামীতে রেবেকা ব্ল্যাকের মতো মাইনাসের বন্যায় ভাসতে হবে, এটা নিশ্চিত।
মন্তব্য
ঠিক।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়ছি,ভালো লাগছে। আচ্ছা আপনি সামহোয়্যারে লিখেন না কেন আর? জাস্ট কৌতুহল থেকে প্রশ্ন করা
পড়ার জন্য ধন্যবাদ, নিপুণ রায়ান! সামহোয়্যারে লিখতাম, এখন লিখি না; অনেকদিন হলো। এখন সচলায়তনে লিখছি, লিখতে পড়তে সচলায়তন ভালো লাগে... এই আর কী!
আপনি অনেকদিন গল্প লেখছেন না কিন্তু! এমন করলে আপনাকেই বরং মাইনাস দেয়া হবে একটু ভয় দেখালাম আমার প্লাস কিংবা মাইনাস দেবার ক্ষমতা নাই। থাকলে ঠিকই প্লাস দিতাম! কফি হাউজ আর ফাতেমা দুটোর একটাও শুনতে পারছিনা। সমস্যাটা কার আমার এদিকে, নাকি আপনার একটু দেখবেন দয়া করে। আমাদের মিডিয়া মোঘলেরা সবই বোঝেন, ভান ধরে থাকেন কিছু না বোঝবার। আপনার জন্য শুভেচ্ছা।
- আয়নামতি
লিংক ঠিক করে দিচ্ছি। তবে মাইনাসের ধমকে ভয়ই পেলাম
ধন্যবাদ।
শিরোনাম, বিষয়বস্তু, উপসংহার এর সমন্বয়টা কেমন যেন খাপছাড়া লাগতেছে ....
শুধু Dislike টা আলোচনা করলেন, প্রায় ৭০ মিলিয়ন হিটের কথাটা কি এড়িয়ে গেলেন ?
-- কেমন সুর
ঠিক আছে, আগামিতে সমন্বয় করা হবে।
কফি হাউজ- দুই বাজাতে পারলাম না। এম্বেডেড লিঙ্ক কাজ করছে না। ডিরেক্ট লিঙ্ক দিতে পারবেন?
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
http://www.esnips.com/doc/e67e0941-af52-48a6-8f7c-f3f82f2b58fc/Cofee-House-II/?widget=flash_player_esnips_blue
আমিও পারছিলাম না। উইজেটের নিচে দেখুন ট্র্যাক ডিটেইলস আছে, সেখানে ক্লিক করলে ডিরেক্ট লিংক পাবেন।
কাফি হাউজ ২ এর লিঙ্কটা কাজ করছে না। Track details এ ক্লিক করলে শুনতে পারবেন। আমিও এখানে অন্য একটা শেয়ারিং সাইট থেকে এম্বেড করে দিলাম।
- সায়ন
অনেক ধন্যবাদ।
এই ভিডিও টার একটা এনালাইসিস দেখতে গিয়া হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হয়ে গেল http://www.youtube.com/watch?v=cqhiRRJ1vOk&feature=related
সানডে-মানডে'র পর এবার ফ্রাইডে "ক্লোজ" করার জন্য "কুচক্রী"-রা উঠেপড়ে লেগেছে দেখা যাচ্ছে!
love the life you live. live the life you love.
মাওলানা, ১৩ বছর বয়সী বালিকাদের ভিড্যু দেখলে গোপনে দেইখেন। মনির হোশেন আপনেরে পেডোফাইল হিসাবে চালায়া দিতে পারে।
মনির হোশেনের বয়স কত?
তেতাল্লিশ না চুয়াল্লিশ শুনছিলাম।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
শিরোনাম দেইখা মনে করলাম, মাইয়া বোধহয় পাইয়া গেছেন। এখন খালি কবুল বলার অপেক্ষা।
রেবেকা বেগমরে দুই সপ্তাহ আগে আমিও একটা মাইনাস দিসি ইউটিউবে।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
যাক, রেবেকার টানে তবু আপনার দেখা মিললো... আপনেরে প্লাস
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
তুম্রা হিংসুটেরা খালি মাইনাচের ব্যাবসাই কর্বা। ছুঁড়ি এট্টু তারছিড়া হৈলেও তেমন খারাপ না।
Which Seat Should I Take? w/ Rebecca Black from Rebecca Black
কষ্ট করে গানটা খুঁজে দিয়েছে সেজন্য ধন্যবাদ, শিমুল। তবে গানটা বিশেষ সুবিধার না
গানটার এত 'ডিসলাইক' খাবার কারণ কী? মাইয়া পিচ্চি, গানটাও একটু শিশুতোষ, 'ফান ফান ফান' বলে কিছুক্ষন চিল্লাইসেও। তাই বলে এতগুলা 'ডিসলাইক'
ধৈবত
নতুন মন্তব্য করুন