সীট ছিল একেবারে শেষ সারির আগে সারিতে।
সিনেমা শেষের পরে ধাক্কাধাক্কি এড়ানোর জন্য বসে থাকা নয়, একরকম বিমোহিত অনুভূতি নিয়ে বসেছিলাম আরো কিছুক্ষণ। সম্ভবতঃ গতবছর রেডিওতে শুনছিলাম ‘গেরিলা’ ছবির শ্যুটিং নিয়ে আলোচনা, ফোনে কথা বলছিলেন – জয়া আহসান, নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুসহ আরো ক’জন কুশলী। শুনেছিলাম, সৈয়দ শামসুল হকের “নিষিদ্ধ লোবান” অবলম্বনে কাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের ছবি, নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু এবং সৈয়দ হক; এই তিনের সংমিশ্রণ আছে বলেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলাম – গেরিলা দেখতে যাবো।
অনেকদিন ধরে পড়বো পড়বো করেও পড়া হচ্ছিলো না – সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস “নিষিদ্ধ লোবান”। আজ সকালে প্রস্তুতি নিয়ে পড়া শুরু করলাম। কাহিনী খুব দীর্ঘ নয়, সম্ভবতঃ দুই কি তিনদিনের গল্প, কিন্তু সৈয়দ হকের সম্মোহনী গদ্য একটানে নিয়ে যায় চৌষট্টি পৃষ্ঠার উপন্যাসের শেষে। বিশাল অংশ জুড়ে আছে লাশ সরানোর, মাটি চাপা দেয়ার গল্প। টানটান বিবরণ।
পর্দায় গেরিলার কাহিনী অবশ্য অন্যরকম।
শুরুতে আছে শহুরে জীবন। একেবারে বিরতির আগে পর্যন্ত। এরপরে বিলকিস গ্রামে ফিরে গেলে ‘নিষিদ্ধ লোবান’এর গল্প শুরু হয়। অবশ্য ছবি শুরুতে দেখেছিলাম, কাহিনী - একজন মুক্তিযোদ্ধার অভিজ্ঞতা ও সৈয়দ শামসুল হকের “নিষিদ্ধ লোবান” অবলম্বনে। ছবির গল্পটুকু থাক না দেখা দর্শকের জন্য। ছবি নির্মাণ, শিল্পের বিদগ্ধ সমালোচকের ‘ক্যামেরার কাজ’ও বাকী থাক। শুধু বলি -পুরো ছবিটির দৃশ্য, জীবন, ধারণ – সবকিছু ছিল ৭১এর। রাস্তা, বাড়িঘর, পোশাক – সবকিছুতে সে সময়ের ছায়া ছিল।
গেরিলা কোনো ফ্যান্টাসি ফিকশন নয়। গেরিলা মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের একদল গেরিলার অপারেশন, সাধারণ মানুষের শংকা, প্রাণের অনিশ্চয়তা, পাকি হানাদারদের নৃশংসতা, ধর্মের নামে হত্যা, খুন, লুটপাট, ধর্ষণ, সংখ্যালঘু নিধন – এর অনবদ্য আখ্যান। দেয়াল লিখন ও ব্যানারগুলো অসাধারণ। ম্যুভি রিভিউ বা দর্শক প্রতিক্রিয়া লেখা চেষ্টা করলাম না। বরং রায়হান আবীরের পোস্টের বক্তব্যের সাথে সহমত জানালাম।
২০১১ সালের এপ্রিলে এসে “গেরিলা” সিনেমাটি গুরুত্বপূর্ণ কেন?
গুরুত্বপূর্ণ একারণে যে মুক্তিযুদ্ধের সিনেমার নামে এখন “মেহেরজান” বানানো হচ্ছে। বাঙালি নারীর সঙ্গে পাকি সৈন্যের সঙ্গম-প্রেম কাহিনী দেখানো হচ্ছে। বিদেশী সেলিব্রিটি সেখানে অভিনয় করছে। “মেহেরজান” বানাচ্ছে কোনো ঝন্টু-মন্টু-মোহাম্মদ হোসেন না। মেহেরজান বানাচ্ছে - বিদেশে পড়ালেখা করা একদল জ্ঞানপাপী। দু’লক্ষ উনসত্তর হাজার নারী নিপীড়নের সত্যতাকে মিথ্যে প্রমাণ করতে শর্মিলা বসুরা যখন তৎপর তখন আমাদেরই মন্ত্রীকন্যা নির্মাণ করে “মেহেরজান” নামক এক অশ্লীল ছবি। এ অশ্লীলতা মুনমুন-ময়ুরী-ঝুমকার স্বল্পবসনা স্থুলকায়া সুড়সুড়ির চেয়ে অশ্লীল, ডিপজলের গালির চেয়েও অশ্লীল, মালেক আফসারীর রাজা’র চেয়েও অশ্লীল। “মেহেরজান” আমাদের ইতিহাসকে বিকৃত করে, “মেহেরজান” একাত্তর সালে আমার কিশোরী মায়ের পালিয়ে বেড়ানোর অনিশ্চিত দিন, মাইলের পর মাইল রাতে হাঁটাকে অপমান করে। “মেহেরজান” বিদ্রুপ করে গুরুদাসীকে। তাই দর্শক মেহেরজানকে বয়কট করে।
কিন্তু হায়, ঈশ্বর!
নষ্টেরও বুঝি পরিতোষক থাকে? সেটাই দেখলাম। একদল নষ্ট অধ্যাপক, স্থুল সৌন্দর্য্যধারক, ভন্ড সমালোচক, লোভী গবেষক মেহেরজানকে হালাল করতে এগিয়ে আসে। এরা কাউন্টার ন্যারেটিভ, আউট অফ ফ্রেম, ডিসকোর্স - এজাতীয় জার্গনে মায়ের ধর্ষণকে জায়েজ করতে খাটুনি দেয় ব্লগে, পত্রিকায়, ফেসবুক নোটে। পৃথিবীর কুৎসিততম জিনিশটিকেও এইসব নষ্ট-ভ্রষ্টদল অ্যাকাডেমিক আলোচনার তকমায়, বাহারী মোড়কে সুন্দর করে পরিবেশন করবে। আমি নিশ্চিত – একাত্তরের নিপীড়িত নারীদের নিয়ে অনলাইনেই যেসব লিখিত ডকুমেন্ট – ভিডিও পাওয়া যায় এগুলো এই অসভ্য অধ্যাপকদের চোখে পানি আনে না, আনবে না। তলানীর শরাবের লোভ, লেনাদেনার খুদ-কুটা, মিডিয়ায় ফোকাস; এসবের লোভে এই নিজের জন্মকে অস্বীকার করবে, নিজের মা’কে বিক্রি করে দেবে, এটুকুও কুন্ঠা করবে না।
নিন্দিত “মেহেরজান” যখন তার মিশনে ব্যর্থ, নষ্ট অধ্যাপক-সাংবাদিক-বিজ্ঞের দল যখন মেহেরজানের পক্ষে আরো ‘অ্যাকাডেমিক” পেপার লেখায় ব্যস্ত, তখন “গেরিলা” যেন এক সত্যালোকিত সকাল। গেরিলা’য় আমরা দেখি – পাকি কুত্তার বাচ্চা সেনাগুলো এদেশে প্রেম করতে আসেনি। আমাদের মায়েরা পাকিদের প্রেমে পড়ে নিজেদের বিকিয়ে দেয়নি। পাকি হানাদার ও এদেশীয় জামাত ইসলামের রাজাকারগুলো একাত্তরে কী করেছে, নারী ও সংখ্যালঘুকে কোন দৃষ্টিতে দেখেছে – তার এক ঝলক আছে গেরিলায়। কাউন্টার ন্যারেটিভের কুৎসিত ডিসকোর্সের গালে এক প্রচন্ড চড়-আঘাত। স্যালুট - নাসির উদ্দীন ইউসুফ, জয়া আহসান, এবং অন্যসব কুশলীব।
পুনশ্চঃ
একাত্তরের মতো একটি মীমাসিংত বিষয় নিয়ে এখনো কেন তর্ক হয়, এখনো কেন মিরপুর স্টেডিয়ামে তেইশে মার্চের খেলায় পাকি পতাকা ওড়ে, কেন পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান উচ্চকিত হয়, কেন জার্সি বদল হয়, কেন সমালোচকের বেশে একদল সুশীল ‘মেহেরজান’ তও্বকে লেহন করে – সে্সব প্রশ্নের খানিক উত্তর পেলাম “নিষিদ্ধ লোবান”এ শেষের অংশে। জলেশ্বরী হাইস্কুল ক্যাম্পে বিলকিসকে উদ্দেশ্য করে পাকি মেজরের সংলাপ –
“আমি তোমায় সন্তান দিতে পারব। উত্তম বীজ উত্তম ফসল। তোমার সন্তান খাঁটি মুসলমান হবে, খোদার ওপর ঈমাণ রাখবে, আন্তরিক পাকিস্তানী হবে, চাওনা সেই সন্তান? আমরা সেই সন্তান তোমাদের দেব, তোমাকে দেব, তোমার বোনকে দেব, তোমার মাকে দেব, যারা হিন্দু নয়, বিশ্বাসঘাতক নয়, অবাধ্য নয়, আন্দোলন করে না, শ্লোগান দেয় না, কমিউনিস্ট হয় না। জাতির এই খেদমত আমরা করতে এসেছি। তোমাদের রক্ত শুদ্ধ করে দিয়ে যাব, তোমাদের গর্ভে খাঁটি পাকিস্তানী রেখে যাব, ইসলামের নিশানা উড়িয়ে যাব। তোমরা কৃতজ্ঞ থাকবে, তোমরা আমাদের পথের দিকে তাকিয়ে থাকবে, তোমরা আমাদের সুললিত গান শোনাবে।”
নিষিদ্ধ লোবানে বিলকিস সে সুযোগ দেয়নি। কিন্তু পাকি মেজরের স্বপ্ন কিছুটা হলেও সত্যি হয়ে গেছে দূর্ভাগ্যজনকভাবে। মেহেরজানের পক্ষে ক্যানভাসার সুশীল সন্তানগুলো মূলত পাকি মেজরের বর্ণিত উত্তম বীজের উত্তম সন্তান। শুক্রাণু ডিম্বানুর বিচারে না হলেও আত্মাগতভাবে এরা পাকিস্তানী। এরা পাকিস্তানের নিশানা উড়িয়ে যাবে, কৃতজ্ঞ থাকবে, পাকিস্তানের পথের দিকে তাকিয়ে থাকবে। আর সুললিত গান? সেটা তাদের নির্মোহ অ্যাকাডেমিক ডিসকোর্সের কুৎসিত শব্দমালা ছাড়া আর কিছু নয়।
২৯ এপ্রিল, ২০১১
মন্তব্য
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
অলস সময়
চমৎকার
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
তারায়া গেলাম।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ফাডায়েলাইসেনতো ভাই।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
আমি তোমায় সন্তান দিতে পারব। উত্তম বীজ উত্তম ফসল। তোমার সন্তান খাঁটি মুসলমান হবে, খোদার ওপর ঈমাণ
মারাত্মক লাইন!
লেখায়
খুব ভাল লাগলো।খেলার সাথে রাজনীতি নয় এ কথা যারা বলেন তারা এই যুক্তি বুঝবে তারা লেখকের ভাষায় "উত্তম বীজ"।
খুব ভাল লেগেছে...
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
কম বয়সে না বুঝে অনেক কিছু পড়ে ফেলাম একটা কুফল আছে, সময়মতো সেটা নতুন করে পড়তে হয়। নিষিদ্ধ লোবান আবার পড়তে হবে।
লেখাটা ভালো হয়েছে। লক্ষ্যভেদ করার মতো।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
শিমুল,আপনাকেও স্যালুট। প্রয়জনীয় সময়ে লেখাটি লেখায় জন্য। কিছুকাল আগে একটি সিনেমা ও বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলতে আসা একটি দল নিয়ে সমাজের একটি শ্রেণীর অতিরিক্ত মাতামাতি আমাদের মত অনেককে ব্যাথিত করেছে। আপনারা যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্ম তাঁরা সিনেমায় নৃশংসতার দৃশ্য দেখেছেন, বাস্তবে দেখেননি। সে সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অবচেতনেও কিছু পাবার আকাঙ্খা ছিলনা। ছিল পচন্ড আবেগ আর মাতৃভূমিকে মুক্ত করার সপথ। তাঁদের ও তাদের পরিবারবর্গের অসাধারন ত্যাগের এবং তাদের পরিবারের উপর যে নিষ্ঠুরতম নৃশংসতা হয়েছে তারই সামান্য ঊদাহরন সিনেমাটির দৃশ্যে দেখেছেন। নতুন প্রজন্মের কাছে অনুরোধ সিনেমাটির কারিগরি দিক নিয়ে আলোচনায় না গিয়ে মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে আপামর জনসাধারনের আবেগ,ত্যাগ ও চেতনার বিষয়টিকে মুল্যায়ন করে যারা নিষ্ঠুরতম নৃশংসতার শিকার তাদের পাশে দাড়িয়ে তাদেরকে বাকি জীবনটি পার করে দেবার অনুপ্রেরনা দিন। গেরিলা সিনেমাটির জন্য নির্মাতা,কলাকুশলী এবং এর সাথে সম্পৃক্ত সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সেই সাথে সচলায়তনের প্রতি থাকল হাজারো সমর্থন।
য়ে
প্রতিটি বাক্যের সাথে সহমত।
গেরিলা দেখার পরপরই নিষিদ্ধ লোবান পড়েছিলাম। সৈয়দ হকের লেখার মুগ্ধ পাঠক বরাবরই, এই লেখায়ও সেই মুগ্ধতায় কোন খামতি ছিলনা। তবে গেরিলার সাথে মেলাতে গেলে কিছুটা হতাশ হতে হবে, অবশ্য সচেতন পাঠক সেটা ধর্তব্যের মধ্যে না আনলেও পারেন। শেষদিকে পরিণতি যদিও একটু আলাদা, কিন্তু তাতে মূল সুরের ছন্দপতন হয়না কোথাও।
শিমুল ভাইকে ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
চমৎকার লাগলো। গেরিলা যে কবে দেখার সুযোগ পাবো ঃ(
দারুন লাগল লেখা ভাইয়া, গেরিলা দেখতে চাই
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
তুখোড়!
ব্লগস্পটে আগেই পড়েছিলাম। আবারও পড়লাম।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"
গতকাল গেরিলা দেখে এলাম। সিনেমাটা শেষ হওয়ার পর কিছুক্ষণের জন্য কথা বলার ক্ষমতাই যেন হারিয়ে ফেলেছিলাম। স্তব্ধ হয়ে বসেছিলাম আমরা। যারা এখন দেখেননি, সময় করে দেখে ফেলুন, সবাইকে দেখতে উৎসাহ দিন। আরো আরো সিনেমা আসুক 'গেরিলা'র মতো।
লেখাটা অন্তর ছুয়ে গেল। মেহেরজানের পরে এই ছবিটা মুক্তি পেয়ে অনেক ভাল হয়েছে কিছু আবাল মার্কা পাকি তোষনকারীদের জন্যে ভালো একটা উত্তর।
সংক্ষেপে, খুব সহজ ভাষায়, অতি সত্য কথাগুলা বলার জন্যে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
চমৎকার ...
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
মুক্তিযুদ্ধের এতোটা পারফেক্ট চিত্রায়ন আমি আগে দেখি নাই
এই সিনেমা যারা না দেখবেন, তাদের জন্য করুণা
লেখাটা অসম্ভব ভালো হইছে...
গেরিলা শতসপ্তাহ পার করুক...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বইটার ই-বুক কি কোথাও আছে বা কারো কাছে কি আছে?
লেখায়
প্রবাসী দর্শকদের কাছে গেরিলা এবং ভালো বাংলা সিনেমাগুলো পৌছানোর একটা ব্যবস্থা দরকার। অনলাইনে পয়সা দিয়ে সিনেমা দেখা সম্ভব এরকম একটি ব্যবস্থার কথা সিনেমা সংশ্লিষ্টরা চিন্তা করতে পারেন। প্রবাসে বেশ ভালো সংখ্যক দর্শক আছে বলে বিশ্বাস করি।
একটা বাংলা ফিল্ম ফেস্টিভালের মতো আয়োজন করতে পারেন কি না দেখেন, যেখানে অনেক বাঙালি বাছাই কিছু বাংলা সিনেমা দেখতে জড়ো হবেন দুই-তিনদিনের জন্য।
আন্তর্জাতিক বিতরণ সত্ত্ব বিক্রি হয়ে গেলে হবে না। "মাটির ময়না" দেখে মুগ্ধ হয়ে তারেক মাসুদের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম, ইচ্ছে ছিলো ইউনির থিয়েটারে দেখাবো। উনি বলেছিলেন, উনার পক্ষে আর অনুমতি দেয়া সম্ভব না, ডিস্ট্রিবিউটারের সাথে কথা বলতে হবে, ওরা আবার অনেক পয়সা চায়। ফলে ব্যাপারটা আর হয়নি। অনেকে অবশ্য অনুমতি না নিয়ে (অনেক সময় অবৈধ কপি সংগ্রহ করে) সিনেমা দেখিয়ে দেন - যেটা নীতিগত ভাবে ঠিক নয়।
স্যালুট শিমুলকে। অসম্ভব ভালো একটি লেখার জন্য। প্রতিটি শব্দ তীক্ষ্ণ তীর। বিশেষ করে-
আমার এতদিনের ক্ষোভ-রাগ-ঘৃণা প্রকাশের যে ভাষাটা মনে মনে খুঁজছিলাম তা এর মধ্য দিয়ে বলা হয়ে গেছে। কিছুটা হলেও স্বস্তি পেলাম।
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
কি লিখলে "নিষিদ্ধ লোবান, গেরিলা ও মেহেরজান" লেখাটার সার্থকতা প্রকাশ পাবে তা জানিনা..................
জয় হোক আমার দেশের সব সাহসী 'আনোয়ার সাদাত শিমুল' এর মতো লেখকদের
সবাই গেরিলা দেখতে যান। এই ছবিটা ব্যবসা সফল হলে এরকম আরো ছবির প্রযোজক পাওয়া যাবার আশা রাখা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সেটা আমাদের জন্য এবং সিনেমা শিল্পের জন্য অস্থির হবে!
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
চমতকার লাগলো শিমুল।
মেহেরজানের বন্ধুরা কেন গেরিলা নিয়ে কিছু বলেনা?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
সেটাই!
অসাধারণ শিমুল ভাই...
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসাধারণ লেখা। ঔপোনিবেশিক দাসসুলভ মনোভাব দূর করা খুবই কঠিন , তাই মেহেরজানের মতো আরো ছবির আগমন রোধ করা হয়তো সম্ভব হবে না, কিন্তু এখনো এসব নিমকহারামের সাজানো বাগানে লাথি মারার লোক আছে, তাই নিরাশ হচ্ছি না। তবে আমাদের আরো স্বক্রিয় হতে হবে। যত জন এই পোস্টে মতামত দিয়েছেন তারা যদি শুধু ধন্যবাদের বাইরে তাদের ধারণাগুলো সংক্ষিপ্তভাবে হলেও প্রকাশ করতেন তাহলে জ্ঞানপাপীদের বিরূদ্ধে আমাদের অবস্থান দৃঢ় হতো।
গেরিলা স্বাধীন বাংলাদেশে আমার দেখা সেরা ছবি। সবাই দেখুন, একবার নয়- একাধিকবার হলে গিয়ে দেখুন।
... শিমুল ভায়ের লেখাটা সময়পোযোগী হয়েছে।
আমার একটা কথা আছে এখানে।
গেরিলার আলাপে মেহেরজানকে এবং মেহেরজান সমর্থক জ্ঞানপাপীদের টেনে আনার কোনো প্রয়োজন আমি দেখি না।
অন্তত কয়েকযুগ দেখে টিভি দেখা ও পত্রিকা পড়ার অভিজ্ঞতায় (মতিকণ্ঠে এই যোগ্যতাকেই মিডিয়া বিশেষজ্ঞ বলা হয় মনে হয়) আমার ধারণা, মেহেরজানের মতো একটি অতি দুর্বল ও ফালতু সিনেমাকে নিয়ে আলোচনার এই ধারাবাহিকতা শেষ পর্যন্ত এই সিনেমার উপকারেই আসে।
মেহেরজান কিন্তু প্রথম সপ্তাহের পরেই বেশির ভাগ হল থেকেই নেমে গিয়েছিল, মাত্র ২/৩টা হলে চলছিল; সেখানে বলাকায় আমি যেদিন দেখি সেদিন দর্শক ছিল আমি সহ মনে হয় ডজন দুয়েক, এর মাঝে অন্ধকারের চান্স টান্স নেয়া তরুণ তরুণির সংখ্যাও ছিল বেশ।
এরকম দুর্বল ছবিকে জিইয়ে রাখার পেছনে ফাহমিদুল হক এবং বিডিআর্টসের ইচ্ছা থাকতে পারে, কিন্তু বড় আকারে অন্যদের মাঝে সমালোচনার ঢঙে হলেও এই আলাপের কোনো দরকার আমি দেখি না।
মিডিয়া বিষয়ে আমার ক্ষুদ্র ধারণায় মনে হয়, মেহেরজান আবার মুক্তি দেয়ার চেষ্টা চলবে, সেই চেষ্টার জন্যই মেহেরজানকে জিইয়ে রাখা হচ্ছে।
এই কূচেষ্টার ফাঁদে যেন আমরা পা না দেই।
অসাধারণ হয়েছে লেখাটা!
আর, আরিফ জেবতিক'এর মন্তবে্যর সাথে একত্মতা প্রকাশ করছি। মেহেরজান'কে আমাদের 'ডিসকোর্স' থেকে তাড়াতাড়ি ঝঁেটিয়ে বিদেয় করলেই মঙ্গল।
অধৃষ্য!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
অসাধারণ লেখা। এখানে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মিল পেলাম।
কেউ কি "নিষিদ্ধ লোবান" আর "গেরিলা"-র লিঙ্ক দিতে পারবেন?
আর ভাল কিছু লেখা চাই।
দারুন লেখা।
আর আরিফ জেবতিক ভাইয়ের সাথেও একমত !
শেষ শব্দগুলো এতো ধারালো ! এতো এতো ধারালো!
কতদিন এমন চাবুকের মত শব্দবন্ধ পড়িনা !
নতুন মন্তব্য করুন