“রোজ ঘুম থেকে ওঠা, আর দাঁত মাজা, খবর কাগজে দুঃসংবাদ খোঁজা, দারুণ ব্যস্ততায় স্নান খাওয়া সারা হয়, জীবনে আরেকদিন আবার বাড়তি হয় হয়।” নচিকেতার গানের মত করে দিনযাপনের ঘটনাগুলো একই হলে একঘেঁয়ে হয়ে ওঠে। প্রতিদিনের গল্পে সেই ট্রাফিক জ্যামের গল্প, অনিশ্চয়তার গল্প আজ থাক। বরং বলি, ঢাকার দেয়াল লিখনের কথা। কষ্টে আছি আইজুদ্দিন অথবা অপেক্ষায় নাজির নেই। যাপনের কষ্ট এবং সুখক্ষণের অপেক্ষার এ শহরে নির্বাচন হবে। তাই সালাম শুভেচ্ছায় বিলবোর্ড পোস্টার ভরে যাচ্ছে। মেয়র প্রার্থীরা ফটোসেশনে ব্যস্ত হচ্ছেন। ডাঃ তুহিন মালিক, শিরিন আকতার, হাজী সেলিম, মাহমুদুর রহমান মান্না আরও কিছু নাম। নির্বাচন কবে হবে? বিএনপি কি প্রার্থী দেবে? কী হবে ফলাফলে? ফেসবুকে বহুল-বিজ্ঞাপিত ইরাজ আহমেদ সিদ্দিকী নির্বাচনে কত ভোট পাবে? ঢাকা উত্তর নাকি দক্ষিণ তার এলাকা? এসব ভাবতে ভাবতে সকাল ৭টা ৬ মিনিটে যখন গুলশান পার হচ্ছিলাম, পাকিস্টান অ্যাম্বেসি পার হয়ে, ৭১ নম্বর রোডের ডান পাশে দেয়াল লিখন দেখলাম – What would happen if one day you decide to follow your heart?
কে লিখেছে এই লাইন, কেন লিখেছে, কার জন্য লিখেছে? হৃদয় সে তো কাদামাটির মুর্তি নয়, গানটি কি সে শুনেছে?
সকাল ১১টা ৫৫ মিনিট
বিশ্বরোড রেলগেইট থেকে দেশবাংলা পরিবহনে উঠলাম। বড় বাস, বাতাস আসে প্রচুর। র্যাtডিসন পার হতেই জ্যাম। জ্যামের গল্প লিখতে চাই না। বরং পড়া শুরু করলাম – কাজী আনোয়ার হোসেনের “তিন উপন্যাসিকা”। পরপর পড়লাম এইচ জি ওয়েলসের দ্য স্টোরি অভ দ্য লেইট মিস্টার এল্ভেশাম এর অনুবাদ ‘রূপান্তর’ এবং জর্জ ল্যাঙ্গেলানের দ্য ফ্লাই এর অনুবাদ ‘মাকড়সা’। দুটো গল্প পড়ে মাথা ঝিম ঝিম করে উঠলো। অনেকদিন পরে দূর্দান্ত দুটা রহস্য গল্প পড়লাম। বিশেষ করে রূপান্তরের কাহিনী, একজন মানুষ আরেকজনের শরীরে নিজেকে প্রবেশ করিয়ে অমর হওয়ার যে গল্প, মাঝে মাঝে গা শিউরে ওঠে। অসাধারণ গল্প। অনুবাদটাও ঝরঝরে...। সেবার পেপারব্যাক সাইজে ৪৮ পৃষ্ঠার দুটো গল্প পড়তে কতো সময় লাগলো? দেড় ঘন্টা। গল্প শেষ করে বাইরে তাকিয়ে দেখি বাস তখনো বনানী পার হয়নি।
দুপুর ২টা ১০ মিনিট
এবার এশিয়া কাপ চলাকালীন সময়ে মিরপুরবাসীর দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। বিশ্বকাপের সময়ও এমন হয়নি। দুপুর ১২টার পর থেকে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়। একদিকে ১৩ নম্বর বিআরটিএ’র সামনে থেকে বন্ধ, অনেক ঘুরে আসতে হবে – অরিজিন্যাল ১০ দিয়ে। ওদিকে আগারগাঁও থেকে মিরপুর ১০ নম্বরের দিকে রাস্তা বন্ধ। শুধু রিক্সা-সিয়েঞ্জি ট্যাক্সি যেতে পারবে। জনা ষাটেক লোক দাঁড়িয়ে আছে বাহনের অপেক্ষায়। একটা স্কুল মাইক্রোবাস এসে খেপ মেরে দিলো, বিশ-পঁচিশজন লোক দৌড়ে গেল উঠতে। একটা সিয়েঞ্জি এলো, মিরপুর ১০ নম্বর পর্যন্ত জনপ্রতি ২০টাকা। উঠে বসলাম। ততক্ষণে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ শুরু হয়ে গেছে। দলে দলে লোক ছুটছে স্টেডিয়ামের দিকে। মিরপুর ১০ নম্বরে এসে রিক্সা পেলাম না। আম্মা এর মাঝে ফোন করে বলেছে, কবুতরের বাচ্চা কিনে নিতে, অসুস্থ আপার জন্য রান্না করে পাঠাবে। মধ্য দুপুরে খাঁ খাঁ রোদ। হেঁটে মিরপুর ২ নম্বর বাজারে এলাম। চক্কর দিয়ে দেখলাম, মাত্র একটা দোকানে কবুতরের বাচ্চা বিক্রি হয়। দোকানী চাচা, টুপি মাথায়, মুখে বিড়ি ফুকে মনোপলি ব্যবসার সুযোগ নিলো। এক জোড়ার দাম চাইলো ১৬০টাকা, দুই জোড়া কেনায় ১০ টাকা ছাড় দিলো, মোট ৩১০ টাকা। সাথে একথাও শুনিয়ে দিলো – লাভ হয়েছে ৫টাকা। কিছু বললাম না। তখন বাজারে হঠাৎ চিৎকার। নাহ্! পাকিস্তানের উইকেট পড়েনি, অ্যাপিল বাতিল হয়ে গেছে।
বাজারের পরে মনিপুর স্কুলের দিকে যাওয়ার পথে রাস্তার কাজ চলছে, রিক্সা যাবে না। আবার হাঁটা শুরু করলাম। বাসার মোড়ে আসতেই চিৎকার শুনি চারপাশে, মানে এক উইকেট গেল। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে আবার চিৎকার, মানে আরো এক উইকেট!
সন্ধ্যা ও রাত
আমি পুরো খেলা দেখলে বাংলাদেশ জিতে না। এরকম একটা (কু)সংস্কার মাথায় ঢুকে গেছে। তাই আপার বাসা থেকে চক্কর দিয়ে এলাম। বাংলাদেশ ব্যাটিং করছে, রান তোলার গতি কম, কিন্তু উইকেট যায়নি। টিভির সামনে বসে থাকি। বাংলাদেশ ধুকে ধুকে এগুচ্ছে। মনের ভেতর বারবার খচখচ লাগে, শাহাদাতের শেষ ওভারের ১৯ রানই নাকি কাল হয় আবার। সেটা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলাম। গত ম্যাচে স্টাটাস দিয়েছিলাম, শাহাদাত একটা রামছাগল। আজ পাকিস্তানের ব্যাটিং ৩০ ওভারে তখনি স্ট্যাটাস দিলাম – ইশ্মাট শাহাদাত একটা রামছাগল।
এবং এই রামছাগলের জন্যই আর বাংলাদেশ হেরে গেল।
তামিম ইকবাল অর্ধশত করে এক দুই তিন চার করে যখন চার আঙুল দেখালো, সেটা নিশ্চয় সিলেক্টরদের দিকে, চার আঙুল নয়, সেটা মিডল ফিঙ্গার দেখানো হয়েছে। গন্ডারের চামড়াঅলা সিলেক্টররা কি বুঝবে এবার? আশরাফুল নামক অপদার্থটিকে এবার বাদ দেয়া হয়েছে। শাহাদাত নিয়ে কিছু ভাববে কি টিম সিলেক্টররা? তর্জনে গর্জনে হালুম করা ফার্স্ট বোলার শাহাদাতের বোলিং বিশ্লেষণ কি দেখবে কেউ? গড়ে যেখানে ওভারপ্রতি রান ৭/৮! ক্রিকেট কেবল শরীরের শক্তির খেলা নয়, বুদ্ধি-চিন্তা-বিবেচনারও খেলা। স্বঘোষিত স্মার্ট শাহাদাতের এই ইন্টারভিউটি [http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-09-04/news/182729] কি ভুলে গেছে কেউ? ওর কথা শুনলে কি ভাঁড় ছাড়া অন্য কিছু মনে হয় তাকে?
খেলা শেষে মুখ দিয়ে গালির স্টক বের হয়ে এসেছে, বৌ ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকাচ্ছে। এসব গালি সে শোনেনি আমার মুখ থেকে আগে।
মিরপুর স্টেডিয়ামের মতো আমাদের বাসার পাশেও নীরবতা নেমে এসেছে। কতটুকু দূরে, হাঁটা পথে ৪ মিনিট। অনুমান করছি সেখানেও মন খারাপের মেঘ। টিভি স্ক্রীণে দেখছি – সাকিবকে জড়িয়ে ধরে মুশফিক হু হু করে কাঁদছে। এ কান্না, এক অধিনায়কের কান্না, দেশকে স্বপ্ন দেখানো দলের কান্ডারীর কান্না, দেশের কান্না! এ অশ্রুর ভাগ আমাদেরও নিতে হবে। ক্যাপ্টেন, আমরা পাশে আছি – কেঁদো না!
আমাদের সামনের বাসায় তিন তলায় নিপু থাকে। মনিপুর স্কুলে ক্লাস ফাইভে কি সিক্সে পড়ে। গত বিশ্বকাপের সময় কেনা ভুভুজেলা সযতনে রেখে দিয়েছে সে। বাংলাদেশের সকল খেলায়, চারে, ছয়ে, উইকেটে, উল্লাসে সে বারন্দায় এসে পোঁ পোঁ করে বাজায়। আমরা হাততালি দিই ওর দিকে তাকিয়ে। আর বাংলাদেশ হারার পরে দেখলাম হাল্কা অন্ধকার বারান্দায় নিপু দাঁড়িয়ে আছে। রেলিংয়ে থুতনি লাগানো। কিছু বললাম না। ততক্ষণে মিরপুর স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের সমাপনী অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। বাজি ফোটছে, আতশবাজির উৎসব। আম্মা-বৌ বারান্দা থেকে দেখছে। আমি গেলাম না। পটকার প্রতিটি শব্দ বুকে লাগছে। কষ্ট হচ্ছে। আমি জানি, সামনের বাসার ১০/১১ বছরের নিপু নামের ছেলেটির আরো বেশি কষ্ট হচ্ছে। আমার ইচ্ছে করে ওকে গিয়ে বলি, ১৯৯৪ সালে, আমি যখন ওর মত বয়েসি, কেনিয়ার নাইরোবিতে ১১ কি ১২ রানে কেনিয়ার কাছে হেরে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ খেলার মিশন শেষ হয়েছিল, সেদিন আমি হু হু করে কেঁদেছিলাম। ওকে বলি, বাংলাদেশে ক্রিকেটের একটা প্রজন্ম শুধু খরাই দিয়ে গেছে। ২০০০ থেকে ২০০৫ খুব বাজে সময় কেটেছে, টেস্ট দূরে থাক ওয়ানডেতে জয় পাওয়াও স্বপ্ন ছিল। তখন কেনিয়া জিম্বাবুয়ের কাছে নিয়মিত হেরেছি আমরা। ২০০৩এ ঈদের আগেরদিন বিশ্বকাপে কানাডার কাছে হেরেছি আমরা। আজকে ২ রানে হেরে যাওয়া এই কষ্টের চেয়েও আরো বড় কষ্ট আমরা পেয়েছি। এখন বাংলাদেশ আগের তুলনায় অনেক ভালো খেলে। এশিয়া কাপ নয়, আমরা একদিন বিশ্বকাপ জিতবো। নিপু মন খারাপ করো না।
আসলে, নিপুকে নয়। এ কথাগুলো আমি আমাকেই বলছি।
কাল সকালে ঘুম ভাঙতেই যে কথাটা মনে পড়বে তা হলো, বাংলাদেশ মাত্র ২ রানে হেরে গেছে। বাগে পেয়েও পাকিস্টানকে হারাতে পারেনি। এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। আমি জানি সাথে এও মন পেরিয়ে মুখ থেকে বেরিয়ে পড়বে, শাহাদাত তুই একটা আস্ত হারামজাদা। বাংলাদেশ দলকে সমর্থন দেবো, কিন্তু শাহাদাতের মত খেলোয়াড়ের জন্য আমাদের স্বপ্ন ভেঙে যাবে – এমনটি চাই না।
শুরুতে বলেছিলাম, একঘেঁয়ে দিনের কথা।
আজ দিনটি আমাদের জন্য রূপকথার দিন হতে পারতো। হলো না।
সকালে দেখা দেয়াল লিখনটি আবারও মনে পড়ছে - What would happen if one day you decide to follow your heart?
কেন? জানি না।
মন্তব্য
ইসমাট শাহাদত আর লোটাসকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ক্রিকেট থেকে বাহির করে দিতে পারলে পরম আনন্দ পেতাম, দেশের ক্রিকেটেরও উপকার হত।
facebook
মুখে অনেকের পুটু মারার কথা বললেও কখনো ভাবিনি উহা করবার বাসনা জগিবে। আইজ সাহাদাতের মহিমায় উহা করিতে তেব্রভাবে মুঞ্চায়।
এত কাছাকাছি এসে… মেনে নেয়াটা অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। ‘রামছাগলে’র শেষ ওভারেই মনে হয়েছিল এই উনিশটা রান ডিসাইডিং ফ্যাক্টার হয়ে উঠতে পারে…। সিম্পলি আনএক্সেপ্টেবল।
তারপরও এই সিরিজে বাংলাদেশের প্রতিটা খেলায় আমি মুগ্ধ…। শুভকামনা রইল।
মন খারাপ হয়ে গেল। আমার এমন একটা সন্দেহ ছিল। অল্পের জন্য হেরে গিয়ে ব্যাথাটা বেশি করে অনুভব হচ্ছে।
___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে
এত কাছে এসেও হলনা
তবে আমরা এগিয়ে চলেছি দূর্বার গতিতে , যাত্রা অব্যাহত থাকুক
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রতি ভালবাসা। সামনে আছে নতুন সূর্যের দিন।
লোটাস কামাল খুব ক্ষমতাধর লোক। তার নামে খবরের কাগজে শেয়ার বাজারের কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে নাম এসেছে, খামাখা পাকিদের পাছা চাটতে আমাদের খেলোয়াড়দের পাকিস্তানে মৃত্যুর মুখে পাঠানোর মতলবে তার নাম এসেছে। এই লোকটাকে কেউ শাস্তি দিতে পারে না। কিন্তু লোটাসের নিশ্চয়ই বাপ আছে? মা আছে? বড় ভাই আছে? তারা কি পারেন না, এই অপদার্থ লোকটাকে দুই গালে চটাশ চটাশ করে দুইটা রামথাবড়া মেরে বলতে, শুয়োরের বাচ্চা তুই বিসিবি থেকে গেলি?
এ কথা কি সত্যি যে , লোটাস কামালের নাতনীর পছন্দ অপছন্দেও দল গঠিত হয়?
আজ কেঁদেছি, আগামী দিন হাসব।
একটু একটু করে বাংলাদেশ হয়ে উঠছে ক্রিকেট পরাশক্তি।
জয় বাংলা, জয় বাংলার ক্রিকেট দল।
পদ্মবাবু আর ভাপার্গজম-ভোগী শাহাদাতের অপসারণ চাই।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
ঊনিশটা রানের জন্য অশ্রাব্য গালাগালি করেছি ইশমাট, গুজার বাচ্চা গুজারে। কিন্তি খেলা শেষে জমা হওয়া কষ্টের পরিমানের কাছে আর গুজার উপস্থিতি নাই হয়ে গেছে। আকরাম খানদের প্রতি করজোর অনুরোধ থাকবে, এর পরের বাংলাদেশ দলের প্রতিটা খেলোয়াড় যেনো হয় পাকি আর ভারতের প্রেমদিওয়ানা মুক্ত। এদের সুপ্ত কিংবা দীপ্ত- কোনো প্রকার প্রেমের প্রতিফলন যেনো বাংলাদেশের খেলায় না পড়ে! আর, কোনো খেলোয়াড় যদি বাংলাদেশ ছাড়া ভারত কিংবা পাকিস্তানের প্রেমে হাবুডুবু খায়, তাকে কান ধরে দলের বাইরে যেনো পাঠিয়ে দেন তাঁরা, সসম্মানে। আমরা স্মার্ট পাকিপ্রেমী খেলোয়াড় চাই না, আনস্মার্ট বাংলাদেশপ্রেমী খেলোয়াড় হলেই চলবে আমাদের।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
২ রানে হারার ম্যাচে আসলে অনেক কিছুই অন্যরকম হইতে পারতো। ব্যড লাক । জিতে গিয়েও হারলাম আজকে
লেখা উড়ুম, যথারীতি।
কাল জেনেছিলাম, ষোল কোটি লোকের সম্মিলিত হাহাকার কত তীব্র!!
সম্মিলিত উল্লাসের দিনও নিশ্চয়ই আসবে, আসছে আবার, সামনেই...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আপনার মতো আমার মাথার ভেতরেও এমন একটা (কু)সংস্কার ঢুকে গেছে যে আমি খেলা দেখলে দল জেতে না। কাল খেলা দেখা শুরু করে বন্ধ করে দিলাম টিভি। কিছুক্ষণ পরপর আশেপাশের আনন্দ-চিৎকার শুনে টিভি চালাই, আপডেট দেখে নেই, তারপর আবার বন্ধ করে দেই।
নিজে থেকে একবার টিভি চালালাম। মুশফিক আউট হলো। যথারীতি আবারও টিভি বন্ধ! ফেসবুকে আপডেট দেখি একটু পরপর। বিভিন্নজনের স্ট্যাটাস। ৬ বলে ৯ রান। আশা জাগে বুকে। টিভি বন্ধই রাখি। সময় যায়। কয়েক মিনিট। আরও কয়েক মিনিট। কিন্তু বাইরে থেকে এবার আর কোনো শব্দ আসে না। বাজি-পটকা ফোটে না। সংশয়ে আবারও ফেসবুকে উঁকি দেই।
মাত্র ২ রানে পরাজয়। এ আফসোস আর কষ্ট প্রকাশের ভাষা নাই। শাহাদাতকে মনে মনে গালি দিলেও পরে কেন যেন ওর জন্য মায়াই লাগলো। ইচ্ছা করে তো আর নিশ্চয়ই ও অত রান দেয় নি। আর খেলা শেষে এই পরাজয়ের জন্য ওর নিজের আফসোসও কি কম? কিংবা অনুতাপ? কত রাত ঘুমাতে পারবে না বেচারা! এত মানুষের ঘৃণা নিয়ে দিন কাটানো খুবই কঠিন একটা কাজ।
নতুন দিনের সূচনা হলো। নতুন স্বপ্ন। দিনশেষে এই সিরিজ থেকে বিজয় আমাদেরই।
নতুন মন্তব্য করুন