পদ্মা সেতুর ভাগ্যে কী আছে তা এখনো আমরা জানি না, বিশ্ব ব্যাংকের আনীত দুর্নীতির অভিযোগগুলোর প্রমাণও নাকি এ সপ্তাহে অর্থমন্ত্রীর কাছে দেয়া হয়েছে, আর নতুন যোগযোগ মন্ত্রী বলছেন- চায়না নয়, মালয়েশিয়ার অর্থায়নেই হবে পদ্মা সেতু। তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতু হলো আমের মতো- সিজন ব্যাপার না, ব্যাপার হলো, জনগণের দাবীকৃত আম পাওয়া যাবে কিনা সেটা। তবে রাষ্ট্রিক কূটনৈতিক গতিবিধির দিকে লক্ষ্য রেখেই বোধ করি, এম অনন্ত জলিল তার সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটিকে বাংলাদেশ মালয়েশিয়া যৌথ প্রযোজনা বানিয়েছেন। ছবির পুরো নাম “দ্যা স্পীড- ডু অর ডাই”। ছবির নামই আলাদা স্বাদের। হালের বাংলা ছবিগুলো যখন একঘেঁয়ে নাম আর একঘেঁয়ে শাকিব খানের বিরক্তিকর পুনরাবৃত্তি, তখন অনন্ত জলিল বাংলা চলচ্চিত্রের মরুভূমিতে এক পশলা বৃষ্টি না, বিনোদনের বন্যা বইয়ে দেন। তিনি পারবেন, তার ক্ষমতা আছে, সে ইংগিত অবশ্য তিনি “খোঁজ দ্য সার্চ’-এই রেখেছিলেন। এরপর মাঝে দমকা হাওয়ার মতো বয়ে গেছে – “হৃদয় ভাঙা ঢেউ, হার্ট ব্রেকিং ওয়েভ”। তিন নম্বর সিনেমায় এসে অনন্ত এবার নিজেকেই অতিক্রম করেছেন। সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির কোনো কিং খান তার প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, অনন্ত নিজেই যেনো নিজের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। অভিনয়ে, সংলাপে, বাচনে, বডি ল্যাংগুয়েজে, ফাইটিংয়ে এবার তিনি নিজেকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। এ উচ্চতায় গমনের প্রমাণের জন্য বৌদ্ধমুর্তির ছবি প্রয়োজন হয় না, সমবেত দর্শকের মুহূর্মুহু করতালি হর্ষধ্বনিই তার প্রমাণ।
বছর দুয়েক আগে বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দায় যখন চাকরি বাজারের দুর্দশা, ছাটাই আর ব্যবসা বন্ধ যখন সপ্তাহ শুরুর সংবাদ শিরোনাম তখন অনেকেই আবার পড়ালেখায়, বিশেষ করে বিজনেস স্কুলের এমবিএ প্রোগ্রামে ফিরে গেছে। বিশ্বের অর্থনীতি নতুনভাবে মোড় নিচ্ছে, সন্ত্রাসবাদ কমছে লাদেনের মৃত্যুর পর, আন্তর্জালিক সামাজিক সাইটগুলো আরব বসন্ত ঘটিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু কী ঘটছে এমবিএ পড়তে যাওয়া হতভাগাদের কপালে? আর্থ-সামাজিক সংকটের এমন প্রশ্ন নিয়েই শুরু হয়েছে দ্যা স্পীড – ডু অর ডাই। এমবিএ পাশের পরেও যখন ঘুষ না দেয়ায় চাকরি হয় না এক হতভাগার, নায়ক অনন্য (অনন্ত জলিল) তাঁর বাসার গেইটেই চাকরি অফার করেন। কাহিনীতে অনন্য এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, এজেআই গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক। সসস্ত্র প্রহরী আর বিলাসবহুল গাড়িতে চড়ে তিনি অফিসে যান, পথে ল্যাপটপে কাজ করেন, দারুণ সব স্যুট টাই পরে নিজেই মাঝে মাঝে কারখানার যন্ত্রপাতির জটিল সব সমস্যা দূর করে দেন। অন্যদিকে ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একা, ভাতিজি দৃষ্টি (দীঘি)-ই তার জীবন। দৃষ্টিকে দেখাশোনার জন্য দু-দু-টো হাতি সার্বক্ষণিক নিয়োজিত, এরপরও চাচ্চুর আদর না পেলে বাবা-মা হারানো দৃষ্টির জীবন চলে না। এইটিজের ম্যানেজমেন্ট স্কুলের হট টপিক হয়ে ওঠা “ওয়ার্ক-লাইফ-ব্যালান্সিং” যখন এখনো বি-স্কুলের কেইস স্টাডি হয়ে থাকছে, এ ছবির কাহিনী এবং নায়ক অনন্যের ভূমিকা অবশ্যই অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হতে পারে। আপত্তি শুধু একটা জায়গায়, ছোট্ট ভাতিজির সংগে নাচের দৃশ্যে দুজন প্রায়ই নায়ক-নায়িকার মত করে নেচে উঠছিল। দীঘিরও বোধ করি শিশুশিল্পী হয়ে কাটানোর দিন ফুরালো।
যদিও গত সপ্তায় সিপিডি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে, দেশের মুদ্রাস্ফীতির হার এক অংকের ঘরে নেমে এসেছে, বাজার পরিস্থিতি কিন্তু ভিন্ন। আজ বিকেলেও মিরপুর বাজারে আলুর কেজি ছিল – বিশ টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রী এবং বিমানমন্ত্রী ঘর বদলিয়েছেন কয়েক মাস হলো, বাজারের আগুন কি কমলো? হয়তো এ কারণেই গার্মেন্টস ব্যবসায়ী অনন্য সব কর্মচারীর বেতন ৩০ ভাগ বাড়িয়ে দেন। ভাবছিলাম, বিমান মন্ত্রণালয়ের কী হবে? সিংগাপুরে এখনো একটি ক্রাফট পড়ে আছে যন্ত্রের অভাবে। বিমানের পরিচালনা পরিষদেও রদবদল ঘটছে। অভিযোগ, বিমান লোকসান দিচ্ছে প্রতিবছর। কিন্তু, কাহিনীর নায়ক ব্যবসায় লস দেন না, তিনি প্রফেশনাল কিন্তু ক্রিমিনাল নন। তাই বাংলার আকাশে উড়ে আসে পাকিস্তান এয়ার লাইন্সের প্লেন। শোঁ শোঁ শব্দ করে ল্যান্ড করে। কে নামলো? ঢাকা এয়ারপোর্টের অ্যারাইভাল ফ্লোর। দশ বছর ইংল্যান্ডে ফ্যাশন ডিজাইনিঙ্গের ওপরে পড়ালেখা শেষ করে দেশে ফিরেছেন নায়িকা। দশ বছরে দেশ অনেক বদলে গেছে, কিন্তু নায়িকা বাংলা ভোলেননি। ভাঙা ভাঙা আদুরে গলায় বাংলা বলেন। নায়িকা বাঙালি নন, মালয়েশিয়ান। তাই বস্তাপঁচা শাকিব খানের নায়িকা অপু বিশ্বাসের মত তার গড়ন নয়। মালয়েশিয়ান নায়িকা পারভিন, কাহিনীতে নাম সন্ধ্যা, লম্বা সুশ্রী; দর্শকের অসন্তুষ্টি থেকে যাবে সুষম পুষ্টির অভাব চিহ্নে। দর্শকের হয়তো আপত্তি নেই, পেছনের সারির বোদ্ধা জানালেন, মালয়েশিয়ান মেয়েগুলো এরকমই। ততক্ষণে সিনেমার এক ঘণ্টা শেষ।
গত কদিনের পত্রিকায় সংবাদ হচ্ছে – ঢাকার গুলশানের ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক ভেঙে দেয়া হচ্ছে। হাইকোর্ট রুল জারি করেছে কেন ভেঙে পাবলিক সম্পত্তি ঘোষনা করা হবে না? দ্যা স্পীড চলচ্চিত্রে ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক এক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে কাজ করে। এখানেই নায়ক নায়িকার প্রথম খুনসুটি অভিমান শুরু। ম্যাজিস্ট্রেট রোকনুদ্দৌলা যখন রাজউকের লোকজন নিয়ে ওয়ান্ডারল্যান্ড ভাঙার সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন, তখন কাহিনীতে নায়িকা নায়কের প্রেমে পড়ে গেছে। কল্পনায় গানও হয়ে গেছে, “আমি রোমিও তুমি জুলিয়েট, প্রেম করতে আমরা আর করবো না লেট”। কল্পনার গানেই থেমে থাকেনি, নায়িকা চাকরি পেয়ে গেছে নায়কের অফিসে, গার্মেন্টস ব্যবসা + ফ্যাশন ডিজাইনার = সোনায় সোহাগা। কিন্তু, ওয়ান্ডারল্যান্ডের কারণে নায়িকা চাকরি হারায়। নায়কের অনুমতি না নিয়ে দৃষ্টিকে ওয়ান্ডারল্যান্ডে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার অপরাধে নায়িকাকে ক্লোজ করা হয়, এবং একই সন্ধ্যায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয় অনেক দামী দামী শাড়ি গহনাসহ। বিয়েও হয় খুব দ্রুত। পরের দৃশ্যে দেখা যায় - নায়ক নায়িকাকে নিয়ে বাসর ঘরে ঢুকছেন, দর্শক অপেক্ষায় থাকে, সিনেহলে পিনপতন নীরবতা, কারণ – দর্শক জানে, এখানে চিরায়ত মালাবদলের গান হবে না, ধপ করে বাতি নিভে যাবে না; এখানে অন্য কিছু ঘটবে। এবং বাংলা চলচ্চিত্রের বাসর রাতের, নায়কের ভাষায় বিশেষ রাতের, ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে। খাটের চারপাশে নায়ক নায়িকা কানামাছিভোঁভোঁ এবং ছোঁয়াছোয়ি খেলায় মেতে ওঠে। দর্শকের দমবন্ধ ভাব কেটে যায় যখন একে অন্যকে জাপ্টে বিছানায় গড়াগড়ি খায় এবং চাদরে নিজেদের ঢেকে নেয়। বাংলা চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে অশ্লীলতার যে অভিযোগ আমরা শুনি, সেটার বিরুদ্ধে এ যেনো এক দৃষ্টান্তমূলক প্রতিবাদ।
মাঝখানে আলু হয়ে গেছেন হিলারীবান্ধব প্রফেসর ইউনুস, হরতালে পোড়ানো বাসের নিভুনিভু আগুনে তাকে পুড়িয়ে নিচ্ছে লীগ-দল, এবার নতুন করে এলেন স্যার আবেদ আর সামবাদী বড়ুয়া। চ্যালেঞ্জ চারিদিকে। কোথায় আমাদের গন্তব্য ভিশন ২০২১? দ্যা স্পীড এখানেও থেমে নেই; সমকালীন চ্যালেঞ্জ যুক্ত করতে দুদুবার বলা হয়েছে – ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নের কথা, নায়িকা বলছে - “এত দেরি করে অপিস গেলে ডিজিটাল বাংলাদেশ কী করে করবে বাইয়া?” কিন্তু, প্রিয় দর্শক আপনারা জানেন – লড়াই ছাড়া কোনো কিছু হয় না, জীবনের পথ বিশেষ রাতের বিছানার মত গোলাপ বিছানো নয়। কাহিনীতে ভিলেন হয়ে আসে কিবিরিয়া খান, এক কালের পর্দাকাঁপানো নায়ক- আলমগীর। সাথে যোগ দেয় এন্ড্রু, ইয়াদকিদ্দ নিনো অব খোঁজ দ্য সার্চ। ব্যাপক একশন আর গোলাগুলির পরে দৃষ্টি মারা যায়, নায়ক নায়িকা ছুটে যায় মালয়েশিয়া, কুলায়ালামপুর, লংকাউবি, আর কতো জায়গায়। নায়িকা কিডন্যাপড হয়। নায়ক গুলি খায়। আসে সেকেন্ড নায়িকা ক্রিস্টিনা (রাশিয়ান মেয়ে নানা)। সেও মারা যায়। কাঁচঘরে বন্দী নায়িকা, অক্সিজেন কমে যাচ্ছে, বাড়ছে কার্বণ-ডাই-অক্সাইড, গ্লোবাল ওয়ার্মিং কি উপেক্ষিত থাকতে পারে? আই-রে প্রযুক্তি ব্যবহার করে নায়িকাকে উদ্ধার করতে হবে। নায়ক যেন সেই ডালিমকুমার, ভ্রমরার ভেতরে লুকানো আছে দৈত্যের প্রাণ। কুয়ালালামপুরের রাস্তায় একা একা নায়ক গান গেয়ে বেড়ায়, ঘোড়া দৌড়ায়, ডুব সাতারে মাঝ সমুদ্রে চলে যায়। আর একটা একটা করে শত্রু খতম করে।
প্রশ্ন থেকে যায়, ছবির নামকরণের সার্থকতা কোথায়? কীসের স্পীডের কথা বলা হচ্ছে? কীসের জন্য ডু অর ডাই? এসব প্রশ্নের উত্তর ঠিক সরলরৈখিক নয়, বহুমাত্রিক ও জটিল এক ক্রিস্টাল মেইজ। দর্শককে শেষ দৃশ্য পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, যখন আলমগীর বলবে স্পীডের কথা। কিন্তু সেটাই শেষ উত্তর নয়। সমগ্র চলচ্চিত্রে, দৃশ্যায়নে, ছবির নামকরণ স্বার্থক হয়ে ধরা দেবে। নায়ক এক লাফে শুন্যে উঠে যান, পতেঙ্গা বিচে গুলি খাওয়া দৃষ্টিকে মুহূর্তে নিয়ে আসেন ঢাকার কেয়ার হসপিটালে। গাড়ি চালনা, স্লো মোশনে হাঁটা, সজোরে বলা ইস্টপ কিংবা ইস্কুল – এসবই স্পীডের মাল্টিডাইমেনশ্নাল স্যালুলয়েড প্রচেষ্টা। ল্যাটিন জাদুবাস্তবতার বিপরীতে এ যেন, গতিবাস্তবতা।
পরিশেষে নায়ক অনন্তের কথা বলতেই হয়। তিনি একজন অসম্ভব পরিশ্রমী অভিনেতা। কাহিনীর ৯০ শতাংশ দৃশ্যে তিনি আছেন। প্রচুর মারপিট করেছেন, দৌড়িয়েছেন, দৌড়েছেন, ঘাম আর রক্ত ঝরিয়েছেন। অনুমান করি, দৃশ্যগুলো বারবার নিতে হয়েছে। আমার বারবার মনে পড়ে যাচ্ছিল – খোঁজ দ্য সার্চের কথা। আগের মতোই নায়ক এ সিনেমায় অলরাউন্ডার, বাফ ব্রেস্টেড স্যান্ডপাইপার সিন্ড্রম এখনো রয়ে গেছে। তবে সার্বিকভাবে- তিনি নিজেই বোলার, নিজেই ব্যাটসম্যান, নিজেই ফিল্ডার। তাই সমস্ত কৃতিত্ব তার একার। হাবিব-ন্যান্সির কন্ঠে “অমর প্রেম” গানের ক্রেডিট নিতে পারেন ক্যামেরাম্যান। মালয়েশিয়ান নায়িকা পারভীন বাংলা চলচ্চিত্রে নিয়মিত থাকবেন, অন্ততঃ অনন্ত জলিল সে চেষ্টা করবেন বলে বিশ্বাস করি। ছবির শেষ দৃশ্যে মালয়েশিয়ান ট্যুরিজম বোর্ডের প্রমোশন হয়েছে আদালতের বক্তব্যে। নায়ক অনন্য চার মিলিয়ন রিঙিট পুরস্কার পেয়েছেন। আশা করছি, আমাদের নীতিনির্ধারকরা জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কার সম্মাননা দিয়ে নায়ক প্রযোজককে সমর্থন দিয়ে যাবেন।
প্রিয় ব্লগার দেখে আসুন, দ্যা স্পীড।
বিনোদিত হবেন, পয়সা উসুল হবেই!
মন্তব্য
ভালো লাগলো রিভিউ। দেখার ইচ্ছা আছে। দেখব। এর আগে "হার্ট ব্রেকিং ব্লো" না দেখতে পেরে খুব আফসোস হয়েছে। এটা মিস করা যাবে না।
এমন প্রিভিউ লিখছেন, এই সিনেমা না দেইখা উপায় কী !!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
দেশের ক্রমবর্ধমান অস্থিরতায় নায়ক অনন্ত তো আর বসে থাকতে পারেন না; তাই শূন্যে লাফালাফি আর কি?
facebook
ঠিক সরলরৈখিক নয়, বহুমাত্রিক ও জটিল দুর্ধর্ষ এক রিভিউ । দেখতে ইচ্ছে হয়।
মুভি রিভিউতে ঝাঝা। দেখতেই হবে এমন বিনোদন আজকাল আর পাওয়া যায়না।
পোস্ট চরম । তবে অনন্তের মুখ নিঃসৃত কিছু মারাত্মক ইংলিশ ডেলিভারি থাকেল পোস্ট টা আর মারাত্মক হত।
ওই ক্লাসিক জিনিশগুলো লিখে নয়, শুনতে হয়
আমাদের অবসরের বিনোদন এখনও খোঁজ দ্যা সার্চ। দেখার মতো কোন ছবি না পেলে এই এল ক্লাসিকো দেখি।
আবদুল জলিল অনন্ত একটা মারাত্মক কাঁচা কাজ করেছে হৃদয় ভাঙা ঢেউ দ্য হার্ট ব্রেকিং ব্লোতে। সে নিজে কণ্ঠ না দিয়ে অন্যকে দিয়ে ডাব করিয়েছে। গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধনের মতোই অন্যের কণ্ঠে নিজের সংলাপ তুলে দিয়ে বাংলার নতুন ঘরানার অ্যাকশন সিনেমাকে অঙ্কুরেই বিপন্ন করে তুলছেন আবদুল জলিল অনন্ত। আমরা তাঁর স্বকণ্ঠনির্গত সংলাপের ভক্ত। কোথায় গ্যালো তাঁর সেই ইপিউডোনমাইনমেআইআক্সিউআকোয়েশ্চন? এই সিনেমাতেও যদি অনন্ত তার সেই সংলাপসুধা থেকে শ্রোতাকে বঞ্চিত করেন, তাহলে আমি কোনো আশা দেখি না।
স্পীডএ তিনি আমাদের বঞ্চিত করেন নি।
মুভিটা দেখার আশা রাখছি।
শিমুল, ধরে নিচ্ছি এটা সিরিয়াস রিভিউ। কোন এক অজানা কারণে প্রথমে অন্যরকম ভেবেছিলাম।
অসম্ভব ভালো রিভিউ । এক কথায় অনবদ্য। পড়েই মনে হচ্ছে, রবীন্দ্র, নজরুল পরবর্তীযুগে এধরণের ছবি আর আসেনি ...অসাধারণ।পানি চলে আসলো।
এবারের ঈদের ছবি।
বাবারে বাবা ট্রেইলার দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম
পিস্তল দিয়ে গুলি করে হেলিকপ্টার উড়ায় দিসে দেখসেন নাকি? হুদাই দেশগুলি মিসাইল কিনে, পিস্তল দিয়াই তো হয়
..................................................................
#Banshibir.
ট্রেইলার তো পুরাই রজনীকান্ত, ডানাছাড়া ব্যাটম্যান।
তবে এফডিসির চিপা থেকে বের হয়ে নিজের ডায়িং ফ্যাক্টরির ফ্লোর আর বিভিন্ন হোটেলের সামনে শুটিং করতেসে। এইটার জন্যই অনন্তকে
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
এটা কী দেখলাম?
এক লোকের বুকের মধ্যে চাপ দিয়ে তার এক্স-রে রিপোর্ট বের করে আনে হো হো হো!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
যত যাই বলি না কেন, এ ব্যাটা অন্ততঃ চেষ্টা করে যাচ্ছে । নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে বাংলা ছবির নামে কিছু একটা বানাচ্ছে যখন এফডিসি নির্ভর বাংলা চলচ্চিত্রের মোটামুটি ফাতেহা পাঠ শেষ । হয়ত এমন চেষ্টা থেকেই একদিন মুখ থুবড়ে পড়া এই বহুমাত্রিক বিনোদন বাংলাদেশে আরেকবার ঘুরে দাড়াবে । আর সবকিছুর মত এখানেওতো এখন শূন্য ধু ধু প্রান্তর ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই ।
কথা সত্য।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
সম্পূর্ণ সহমত।
দুর্দান্ত রিভিউ। ঠিক যেন সুপার স্পিড। পাঁচ তারা না দাগিয়ে পারলাম না।
টুইটার
দয়া করে এবং নিজের ভালো চাইলে কেউ দেখতে যাইয়েন না।আমার দুরমতি হইছিল,১দিন পুরা বমি করছি।ভাবলে এখোনো বমি পায়।
অনেকদিন পরে সেদিন টাইটানিকের থ্রিডি দেখতে গিয়ে দুই হাত ভরে তালিয়া মেরেছিলাম। মুখে আঙুল দিয়ে শীষ মারার চেষ্টা করেছি, কিন্তু মরার শীষ সময় আর জায়গামতো বের হয় নাই! জায়গায় জায়গায় আমাদের এলাকার সিনেমা হলে সিনেমা দেখার স্টাইলে শ্লোগান মেরেছি। সেদিন, বহু বহু বছর পর সিনেমা হলে সিনেমা দেখে মনে হয়েছে বাংলাদেশেরই কোনো হলে মন ভরে সিনেমা দেখলাম।
তো, বলছিলাম যে সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে হলে কিছু ব্যাপার স্যাপার থাকে, সিনেমা হলের আমল। সেই আমলগুলো সহীভাবে পালন করতে পারলে শাকিব খান, জুলমত খান সহ সব রকমের খানের আলামতের সিনেমাই উপভোগ করা যায় ষোলআনা। আর যেখানে আমাদের জলিল ভাইয়ের নাম আসে, সেখানে এইসব আমল পালন না করা হলো বিরাট অপরাধ, গুনা।
জলিল ভাইয়ের সিনেমা খালি দেখলে বা খিলখিল করে হাসলেই হবে না, যথাযথভাবে সিনেমা হলের আমলগুলো পালনও করতে হবে। এইটা, যাঁরা স্পীড দ্য জলিলকাহিনি দেখতে সিনেমা হলে যাবেন, তাঁরা যেনো কখনোই বিস্মৃত না হোন। আমিন।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
জলিলের কোনো মুভি দেখা হয়নি। বিরাট মিস হয়ে যাচ্ছে!!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
'দ্য স্পীড', কি চমৎকার নাম। গতি গর্বে গর্বিত হয়ে কি স্থিতি সুখের সন্ধান মেলে? তবে গতিরও যে সুখ আছে, তাই বা অস্বীকার করি কি করে?
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
উপরে একটা ট্রেইলার দেখলাম। এ তো মেট্রিক্স! আমি ইম্প্রেস্ড।
শিমুল, অতি চমত্কার রিভিউ। এরকম রিভিউ-এর নিশ্চয়তা পেলে, আমিও আলহামদুলিল্লাহ বলে একটা সিনেমা বানায় ফেলবো।
নিশ্চয়তা দিলাম। কিন্তু, জলিল ভাইয়ের ধারে কাছে পৌঁছতে পারবেন বলে মনে হয় না।
জলিল ভাইকে বাংলা সিনেমার নায়ক হিসাবে আমার খারাপ লাগে না।
অ্যাভাটার দেখার আশা নিয়ে যে বাংলা সিনেমা দেখতে বসে তাকে বলদ ছাড়া কিছু বলা যায় না। আমি গতানুগতিক বাংলা সিনেমার চাহিদা নিয়েই খোঁজ দ্য সার্চ দেখতে বসেছিলাম। খোঁজ দ্য সার্চ আমার ধারণার চেয়েও ভাল ছিল। আশা করছি দ্য স্পীড-ডু অর ডাই ও ফাটাবে।
ফাটাবে মানে? ফাটাচ্ছে। এই যে কমেন্টে দেখেন, লোকজন টিকিট পাচ্ছে না।
খোঁজ দ্য সার্চ দেখেছি। এটাও দেখবো আশা করি।
অস্পৃশ্যা
টিকেট পাইনাই বিধায় হাঙ্গার গেইম দেইখা আসতে হইসে।
;(
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
সবাইকে মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনাদের প্রতিক্রিয়ার আশায় রইলাম।
দেখে আসলাম শিমুল ভাই।
... বলতেই হয়, জলিল চাচ্চুর ফর্ম এবার একটু পড়তির দিকে
ওরে না রে, সুহান! ঘি খাওয়ার অভ্যেস নেই তো।।। -
দারুন সমালোচনা ! দেখার সাধ জাগছে
অসাধারণ! আমার জীবনের দেখা সবচেয়ে এন্টারটেইনিং সিনেমা এটি!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
নতুন মন্তব্য করুন