আবদুল মান্নান সৈয়দের গল্প

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
লিখেছেন আনোয়ার সাদাত শিমুল (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৯/১১/২০১২ - ১:০২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আবদুল মান্নান সৈয়দের লেখা আগে পড়িনি। গল্প নয়, উপন্যাসও নয়।
কখনো সংবাদপত্রের সাময়িকী পাতায় তাঁর লেখা চোখে পড়েছে বলেও মনে পড়ছে না। 'সত্যের মতো বদমাশ' নামে বইয়ের লেখক তিনি - এটুকুই মাথায় ছিল।

এ সপ্তাহে আবদুল মান্নান সৈয়দের ১৫টি গল্প পড়লাম - বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত 'শ্রেষ্ঠ গল্প' মলাটে।
পড়েই আফসোস হলো - এতো দেরী করে পড়লাম কেন!

পাঠ অভিজ্ঞতার শুরুটা অবশ্য আরামের ছিল না। 'মাতৃহননের নান্দিপাঠ' পড়ে মনে হলো - অনেক গভীর বিষয়ের গল্প, জানি না সহজ না কঠিন করে লেখা - তবে শেষ বিচারে উচ্চমার্গেরই থেকে যায়। পাঠকের একনিষ্ঠ মনোযোগ দাবী করে এ গল্প। নয়তো - খেই হারানোর সম্ভবনা আছে প্রতি অনুচ্ছেদে।

চমকালাম দ্বিতীয় গল্প পড়ে। চাবি।
গল্পের নায়ক চাবি হারিয়ে যখন প্রতিবেশীদের দরজায় কড়া নাড়েন প্রতিটা ঘরেই দেখা হয় ভিন্ন ধরণের মানুষের। তাদের আচরণ, তাদের প্রতিক্রিয়া - এসবই নাগরিক বাস্তবতা। গল্পের নায়কের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। চাবি আর পাওয়া হয়নি। রূপকার্থে ব্যবহৃত চাবি আসলেই কি পাওয়া যায় জীবনে? যেমন করে পথ খুঁজে পায়নি 'রাস্তা' গল্পের নায়ক।

'গল্প ১৯৬৪', 'মাছ' আর 'জলপরী' পরের তিনটি অসাধারণ গল্প।
গল্প ১৯৬৪ বলার কৌশলে চমক আছে, শুরুতে বোঝাই যাইনি এ গল্প কবীরের। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় সংখ্যালঘু বন্ধুর বোনকে আশ্রয় দেয়ার মাঝেও আপাতঃ সচেতন তরুণের ভেতরের পশু জেগে ওঠে। প্রকাশ পায় অপরাধবোধ। কিন্তু, একেবারে শেষ লাইনে - গরমের সময় সাপ বেরোয় - বলার প্রয়োজন ছিল কিনা সেটা নিয়ে ভাবলাম অনেকবার। কখনো মনে হয়েছে শেষ ভাবনার দায় পাঠকের কাঁধে দেয়া যেতো, আবার মনে হয়েছে - কবীরের অনুতাপ বোঝাতে বা আত্মপক্ষ সমর্থনে এর দরকার ছিল।
চাবি আর মাছ - গল্প দুটোর মাঝে কোথায় যেন একটা সুক্ষ্ম মিল আছে। আত্ম অনুসন্ধান কিংবা আত্মমুক্তির ছায়া আছে দুটো গল্পেই। মাছ এর চেয়ে জলপরী আরেকটু সরলরৈখিক গল্প। তবে শেষে পানিতে ডুব দিয়ে শম্পাদের দরজার কড়া নাড়ার কৌশলটিই গল্পের কারিশমা।

'অস্তিত্ব অন্যত্র' গল্পটির শরীর কাঠামো একটু অন্যরকম। দাদার মৃত্যুর পর নাতির স্মৃতিচারণের ক্রমানুসারিক বিবরণ। অতীত থেকে বর্তমান আবার অতীতে যাওয়ার লাফ। লাফের মাঝখানেই মানুষের নিঃসঙ্গতার করুণ প্রলাপ।

আম্রকাননে, রাজা, অমরত্বের জন্য মৃত্যু - গল্প তিনটিকে এক শ্রেণীতে রাখা যায়। পৌরাণিক বা রূপকথার গল্প বলে মনে হয় - কিন্তু বর্তমানের সাথে যেনো মিলে যায় অনেক কিছু।
আরো বর্তমানের গল্প, যদিও ১৯৮৯ সালে রচিত, আবদুল হাফিজঃ জীবন ও সাহিত্য। সাহিত্য চর্চায় দলাদলি, এবং বণিকের সাহিত্য মাঠ দখলের যে কুশ্রী বাণিজ্য আমরা দেখি - তার চমৎকার বিবরণ আছে এ গল্পে। গল্পটি যেখানে শেষ, যেনো সেখানেই শুরু আরেক গল্প 'হোসেন মিয়ার সঙ্গে' - অন্ততঃ শুরুতে এমনটিই মনে হয় - লেখার উপকরণ সংগ্রহে লেখকের গণিকালয়ে যাওয়ার মিলের কারণে।
অতীতকে বর্তমানে আনার গল্প 'হোসেন মিয়ার সঙ্গে'। পদ্মানদীর মাঝির চরিত্ররা নতুনভাবে জেগে উঠেছে গল্পে, যেখানে নায়ক স্বয়ং মানিক বন্দোপাধ্যায়। কালক্রমে অনেক কিছু বদলালেও, হোসেন মিয়া কি আর পাল্টালো?

জানলাম, আবদুল মান্নান সৈয়দ একজন জীবনানন্দ গবেষক।
জীবনানন্দ নামের একটি সাহিত্য পত্রিকাও তিনি সম্পাদনা করতেন। জীবনানন্দ বিষয়ে দুটো গল্প আছে এ বইতে।
'জীবনানন্দ দাশের একটি অপ্রকাশিত গল্প্‌', ব্র্যাকেটে লেখকের ভূমিকাসহ প্রকাশিত, কার লেখা?
জীবনানন্দের হলে সেটা মান্নান সৈয়দের শ্রেষ্ঠ গল্পে কেন? নাকি ভূমিকাসহ পুরোটাই গল্প। সে দ্বিধা রয়ে গেল মনে। অবশ্য 'নারী হৃদয় প্রেম গৃহ অর্থ কীর্তি স্বচ্ছলতা' শিরোনামের গল্পটি জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুর আগেরদিন ও ঐদিনের ঘটনা নিয়ে লেখা। ব্যক্তি জীবনানন্দকে জানা যায় এখানে।

সংকলনের শেষ গল্প 'বিদ্যা-সুন্দর কাহিনী' লেখা ২০০৬ সালে। ২০০০ পরবর্তী সময়ে সামাজিক প্রেক্ষাপট ও সম্পর্ক পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে এ গল্পের ধাঁচ দ্রুত গতির। আর এ কারণেই আবদুল মান্নান সৈয়দের বাকী গল্পগুলো যেমন ধীর বাতাসের মতো পরশ দেয়, 'বিদ্যা-সুন্দর কাহিনী'তে সমকালের স্থান-পাত্র-দৃশ্য এসে সে শক্তিকে দূর্বল করে দেয়।

উপরে উল্লেখিত প্রথম ৬টি গল্পের ধারা এক।
সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন নিঃসঙ্গ মানুষের গল্প। গল্পগুলোর বেশিরভাগ নায়ক পেশায় শিক্ষকতা, নাইট কলেজে পড়ায়। একা একা থাকে। সীমিত সামাজিক পরিধি। অন্ততঃ দুটি গল্পে প্রশ্ন জেগেছে - বিবাহ-আর-মৃত্যু ছাড়া আত্মীয় স্বজনদের মাঝে দেখা হয় কখন?
এ শেষ প্রশ্নটি মাথায় রেখে মান্নান সৈয়দের গল্পগুলো আবার পড়লে বা আগামীতে নতুন গল্প পড়লে অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে বলে আশা রাখছি।


মন্তব্য

তারেক অণু এর ছবি

চলুক

উনাকে অনেক জায়গাতেই দেখেছি দুই বাংলার শ্রেষ্ঠ জীবনানন্দ গবেষক বলা হয়।

সবজান্তা এর ছবি

শ্রেষ্ঠত্বের আলোচনা বোধহয় এইভাবে করা সম্ভব না, তবে উনি নিঃসন্দেহে জীবনানন্দ গবেষকদের মধ্যে অত্যন্ত উঁচু মানের। জীবনানন্দ বিষয়ক তাঁর কিছু লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।

কাক্কেশ্বর কুচকুচে এর ছবি

আমিও উনাকে কেবল মাত্র দুই বাংলার শ্রেষ্ঠ জীবনানন্দ গবেষক বলেই এত্তদিন জেনে এসেছি।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ হাসি

অমি_বন্যা এর ছবি

আপনার লেখা তার গল্পগুলো পড়ার তাগিদ দিল। চলুক

স্যাম এর ছবি

আমাকেও... ধন্যবাদ শিমুল।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আপনাদেরও ধন্যবাদ!

সবজান্তা এর ছবি

আব্দুল মান্নান সৈয়দের প্রথম পড়েছিলাম কবিতা, মুক্তধারা থেকে জলের দামে কেনা। সে সময় কেন জানি না, তেমন ভালো লাগেনি। এরপর বছর খানেক বাদে তার জীবনানন্দ বিষয়ক কিছু লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আবার বের করে পড়লাম তার কবিতার বইটা, এবার অনেকগুলি কবিতাই পছন্দ হয়ে গেলো। তারপর পড়লাম 'সত্যের মতো বদমাশ' আর 'কেনো আসিলে ভালোবাসিলে'। তাঁর গদ্যকে আমার কাছে খুব স্বাচ্ছন্দ্যেই পড়া যায় এমন মনে হয় নি, বরং বেশ ভেবে চিন্তে পড়তে হয়, এমন মনে হয়েছে।

জীবনানন্দ দাশের একটি অপ্রকাশিত গল্প আসলে বলতে পারেন জীবনানন্দের প্রতি তাঁর একটা ট্রিবিউট- নামের কারণেই অনেক একটু ধোঁকা খায়।

তাঁর গল্প সম্পর্কে আপনার পর্যবেক্ষণ বেশ ইন্টারেস্টিং। অসম-প্রেম নিয়েও তার গল্পে একটা ছায়া পাওয়া যায়, অন্তত 'কেন আসিলে ভালোবাসিলে'র গল্পগুলিতে। তাঁর ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে এমন কিছু ঘটনা শুনে মনে হয়েছিলো, অনেকটা সেই অন্তর্বেদনা থেকেই হয়তো লিখা।

আলোচনা চমৎকার লাগলো শিমুল ভাই, মাঝে মধ্যে বইয়ের এমন আলোচনা হলে ভালো হয়।

অট: উৎকট দামের জন্য কিনি কিনি করেও একটা বই কেনা হয়নি, আবদুল মান্নান সৈয়দের- শুদ্ধতম কবি, জীবনানন্দ দাশের কবিতা নিয়ে আলোচনা। দেশ থেকে আনা জীবনানন্দ সমগ্রটা কয়েকদিন আগে পড়তে পড়তে আফসোস লাগলো, কিনে ফেললেই পারতাম মন খারাপ

তিথীডোর এর ছবি

'শুদ্ধতম কবি' কেনার প্ল্যান ছিল অনেকদিনের।
দাম চুকাতে গিয়ে (আমি গরিব মানুষ) বুক খচখচ করলেও পড়ে মনে হয়েছে দিয়েছি অল্পই, বরং জিতেছি অনেক।

আলোচনা ভাল লাগল। কিনতে হবে বইটা।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ সবজান্তা। ঐ গল্পটা নিয়ে বারবার ভাবছিলাম - বাস্তব না কল্পনা!
ভাষা তো জীবনানন্দের কবিতার মতো, আবার খামটা অমন বেখেয়ালে ট্রেনে রেখে যাবেন মঞ্জু?! এ ভাবনাও মাথায় ছিল।

মান্নান সৈয়দের লেখা আসলেই মনোযোগ দিয়ে পড়তে হয় - আপনার সাথে একমত! সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন-আত্মকেন্দ্রীক মানুষের গল্প তিনি চমৎকারভাবে বলে যান। 'কেন আসিলে ভালোবাসিলে' পড়ার ইচ্ছা রইলো।

ফাহিম হাসান এর ছবি

আলোচনাটা চমৎকার, ছোটগল্প চেখে দেখার আগ্রহ হল।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই লেখাটার জন্য ধন্যবাদ। কারণ, আবদুল মান্নান সৈয়দকে নিয়ে লেখাগুলো, আলোচনাগুলো মূলত 'শুদ্ধতম কবি' আর সত্যের মতো বদমাশ'-এ সীমাবদ্ধ থাকে। সবজান্তার মতো মুক্তধারা থেকে আমিও জলের দামে তাঁর কবিতার বই কিনেছিলাম। কিন্তু কবিতা নিয়ে লেখার সামর্থ্য আমার নেই, তাই কিছু বললাম না। তবে যারা কবিতা ভালোবাসেন, আব্দুল মান্নান সৈয়দ তাদেরকে বিমুখ করবেন না এটুকু বলতে পারি।

এই লেখার সাথে সম্পর্কিত নয় এমন দুটো কথা বলি। এক, জীবনানন্দ দাশের জীবন ও কর্মের ওপর গবেষণা নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে তারা ভূমেন্দ্র গুহের রচনা পড়ুন। দুই, বাংলা ছোটগল্পের ব্যাপারে যাদের আগ্রহ আছে তারা আবুল খায়ের মুসলেহ্‌উদ্দিনের ছোটগল্প পড়ুন। আরও পড়তে পারেন অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত আর রমাপদ চৌধুরীর ছোটগল্প।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

অ.ট. সঞ্জয় ভট্টাচার্যের "জীবনানন্দ দাশের কবিতা" বইটাও ভালো।

আব্দুল মান্নান সৈয়দের কবিতা-প্রবন্ধ টুকটাক পড়া হয়েছে পত্রিকায়। গল্প পড়ি নাই।

রণদীপম বসু এর ছবি

রমাপদ চৌধুরীর নাম আসায় কথাপ্রসঙ্গে বলি, তাঁকে নাকি লেখকদের লেখক বলা হতো, মানুষের মনোজগতের মিথষ্ক্রিয়াগুলো নিয়ে সফল নাড়াচাড়ায় হয়তো তাঁর উচ্চমার্গীয় গভীরতার কারণে। সে যাক্, বহু বহুকাল আগে সেই ছাত্রকালে তখন প্রথম রমাপদ চৌধুরীর তিন খণ্ডে উপন্যাস সমগ্র বেরোতেই নিয়ে নিলাম। আজ আর এগুলি সংরক্ষণে নেই। তবে একটা উপন্যাসের নাম মনে রয়ে গেছে এখনো, বীজ। সে সময়ে অসাধারণ লেগেছিলো এটা।

লজ্জার কথা হলো রমাপদের গল্প পড়েছি কিনা সেটাই মনে করতে পারছি না।

আর মান্নান সৈয়দের লেখাজোঁকা নিয়ে বলতে বসলে মনে হয় যে সময়কালে লেখা, ঠিক সেই সময়টাতে অবস্থান করলে তাঁর লেখাগুলোর আবেদন আরো বেশি করে নাড়া দিতে পারে। তবে একালের আলোচনায় একালের একজন প্রতিশ্রুতিশীল দক্ষ গল্পকারের আলোচনা থেকে সেই জিনিসটাই বেরিয়ে আসবে, প্রকৃতই মান্নান সৈয়দ কতোটা সময়কে ধারণ করতে পারছেন।
শিমুলের মাঝে মাঝে ছলকে উঠা এই উদ্যোগটাকে স্বাগত জানাই, আরো বেশি বেশি করে এরকম আলোচনা আশা করি তাঁর কাছ থেকে।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

কাজি মামুন এর ছবি

রমাপদ চৌধুরীর একটি বিখ্যাত গল্প পড়ার সুযোগ হয়েছিল আমার, নাম- 'ভারতবর্ষ'। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি কিভাবে একটি সমৃদ্ধ অঞ্চলরের সর্বস্ব শুষে নেয়, মানুষগুলোকে মেধা-মননে পঙ্গু করে দেয়, তা অনেকটা 'গল্পের ভিতরের গল্পে'র মত করেই বলা আছে এই গল্পে, গল্পের ভঙ্গিটি সম্প্রতি সচলেই পড়া কালভিনোর গল্পের কথা মনে করিয়ে দেয়। 'ভারতবর্ষ' গল্পটির শেষ লাইনগুলো মনে রাখার মতঃ

কিন্তু আমেরিকান সৈন্যদের সেই ট্রেনটা অন্যদিনের মতো এবারে আর আন্ডাহল্টে এসে থামল না। প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলোর মতোই আন্ডাহল্টকে উপেক্ষা করে হুস করে চলে গেল। আমরা জানতাম ট্রেন আর থামবে না। ট্রেনটা চলে গেল। কিন্তু মাহাতোগাঁয়ের সবাই ভিখিরি হয়ে গেল। ক্ষেতিতে চাষ করা মানুষগুলো সব - সব ভিখিরি হয়ে গেল।

তিথীডোর এর ছবি

ভূমেন্দ্র গুহের আলেখ্য জীবনানন্দ?
আর কোন বই পড়িনি।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মুহিত হাসান  এর ছবি

জীবনানন্দ ও সঞ্জয় ভট্টাচার্য বইটিও অবশ্যপাঠ্য, ভূমেন্দ্র গুহ'রই। এখানে জীবনানন্দের পাণ্ডুলিপি নিয়ে তাঁর যে মহাকাজ, সেটার বিববরণ মিলবে।

আরশাদসাদেক  এর ছবি

আবুল খাযের মুসলেহ উদ্দিন পুলিশ অফিসার ছিলেন; তার গল্পের আমিও ভক্ত| কিন্তু কেন জানি বড়ো জানতে ইচ্ছে করে, ভদ্রলোক ঘুষ খেতেন কি?

দিগন্তু চৌধুরী এর ছবি

নামের বানানটা ঠিক করলে ভালো লাগবে। হাসি
জলপরি গল্পটা নিয়ে কিছু ব্যক্তিগত আবেগ অনুভূতি জড়িয়ে আছে। আবদুল মান্নান সৈয়দের সাথে দেখা করতে চেয়েছিলাম। ঢাকার যাবার মাত্র তিনদিন আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। তাঁর সাথে দেখা হলে প্রথমেই একটা কথা বলার ইচ্ছা ছিল : জলপরি গল্পটা কেবল আপনার পক্ষেই লেখা সম্ভব, আর কেউ পারতো না।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

বানান ঠিক করে দিলাম। অমার্জনীয় অপরাধ। দুঃখিত এবং ধন্যবাদ। হাসি

অচল  এর ছবি

কোন PDF লিঙ্ক কি আছে এই বইটার ??

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

লিস্টিতে তুললাম শিমুল ভাই। আমিও পড়িনি মান্নান সাহেবের লেখা।

অনভিপ্রেত এর ছবি

প্রতিবেশী ছিলেন আমার। দারুণ একজন ভদ্রলোক, কিছুটা অন্তর্মুখী স্বভাবের যদিও। আব্বার সাথে মোটামুটি খাতির ছিল ওনার। যখন কলেজে পড়ি, একদিন শুনেছিলাম আব্বাকে বলছেন, "জীবনানন্দ আমাদের ঘরের কবি। তাকে ফেলে দিয়ে কী যে ভুল করেছি আমরা!" খুব একটা ধাক্কামত খেয়েছিলাম। এরপর একটু একটু করে কিভাবে যেন জীবনানন্দ দাস আমার প্রিয় কবিই হয়ে উঠলেন।

ওনার সাহিত্যকর্মের সাথে অবশ্য তেমন পরিচয় নেই আমার। আমি এত মনোযোগী পাঠক না। গড়পরতা বাঙ্গালি তরুণরাও আমার মতই। তাঁর নাম এজন্যই খুব একটা পরিচিত না।

সৌরভ  এর ছবি

আব্দুল মান্নান সৈয়দের কোন একটা লেখাতে পড়েছিলাম, তিনি নিজের সম্পর্কে বলেছেন যে তিনি অনেকটা আত্ম জগতের অধিবাসী। তাই তাঁর লেখাও অন্তর্জগতের। কখনো বাড়ির বাইরে না থাকায় (হল বা হোস্টেল), বহিঃজগতের সাথে তাঁর কিছুটা দূরত্ব তিনি নিজেই স্বীকার করেন। আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো।

রিক্তা এর ছবি

গ্রন্থালোচনা করে পড়ার ইচ্ছা জাগলো খুব। কতদিন আরাম করে একটা ভাল বই পড়ার সময় খুঁজে পাই না ওঁয়া ওঁয়া

--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা ও আলোচনাগুলো পড়তে পড়তে বই পড়ার তৃষ্ণা প্রবলভাবে জাগ্রত হল। আবদুল মান্নান সৈয়দের লেখা পড়েছি সামান্যই, তাও দৈনিক পত্রিকার কল্যাণে। সায়ীদ স্যারের লেখায় আবদুল মান্নান সৈয়দের লেখার প্রশংসা পড়েছি। কয়েকটা বই আগেও কিনতে গিয়েছি কয়েকবার, কিন্তু দামের মারপ্যাঁচে ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। অনেকদিন পর আবার ওনার লেখা পড়তে ইচ্ছে জাগলো। ধন্যবাদ।

রাশেদুল ইসলাম ফরহাদ

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

পড়া হয় নি বইটা। আপনার লেখাটা পড়ে উনার লেখা গল্প পড়ার আগ্রহ হচ্ছে। এর আগে উনার নাম দেখেছি শুধু জীবনানন্দ দাশের কবিতাসমগ্রতে "সম্পাদক" হিসাবে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।