“একজন মানুষ আছে যার বাবা-মার মাঝে তেমন একটা সদ্ভাব নেই। অর্থাৎ কিনা তারা ঝগড়া করেই বেশীরভাগ সময় কাটান। সাম্প্রতিক কালে এই মানুষটি আরও কিছু তথ্য তার বাবা-মা সম্পর্কে আবিষ্কার করেছে। আর তারপর থেকেই তার সমস্যা হচ্ছে।”
সাধারণত আমাকে কেউ কিছু দুঃখের কথা বলা শুরু করলে আমি তা মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করি। একারণে স্কুল জীবন থেকেই আমি অনেকের কথা শুনতাম। এটা আমার কাছে ভালই লাগত। এক সময় আমি অনেকের সমস্যা শোনার পাশাপাশি সমাধানও দেবার চেষ্টা করতাম। তারপর এমন একটা সময় এলো যখন আমি কেউ নাম প্রকাশ না করে আমাকে যোগাযোগ করলেও আমি তার জবাব দেবার চেষ্টা করে যেতাম। যোগাযোগ ফোন, ই-মেইল, চিঠি ইত্যাদি যেকোন মাধ্যমেই করা যেত। আমি পরিচয় জানার চেষ্টাও করতাম না।
শুরুতেই এতগুলো ফালতু কথা বলার কারণ হচ্ছে পাঠকদের জানান দেয়া যে আমি কেন সমাধান চাই কথাটা একদম মাথায় লিখে বসে আছি। কারণ, আমি বুঝতে পারছিনা এবারে আমার কাছে আসা এই সমস্যার কি সমাধান দেয়া যেতে পারে।
সমস্যাঃ
এখানে বলে নিই যে মানুষটির বয়স মাত্র ১৬ বছর। এবং সে আমাকে আদৌ বলেনি সে কি ছেলে নাকি মেয়ে। সে আমাকে ই-মেইল করে সমস্যাটি দিয়েছে, এবং জিজ্ঞেস করেছে যে, আমি কি বলতে পারি নাকি এক্ষেত্রে কি করা যেতে পারে। আমি তার ভাষাই তুলে ধরার চেষ্টা করছি। (চেষ্টা বললাম, কারণ, সে বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি মেশানো এক খিচুড়ি ভাষায় ই-মেইল করেছে।)
“আমার বয়স ১৬ বছর। আমার বাবা-মা মোটামুটি ৮০% সময়ই ঝগড়া করে থাকেন। আমার এটা একেবারেই পছন্দ না। আমার ছোট ভাই আছে। তারও এটা আদৌ ভাল লাগেনা। তাই আমরা দুইজন মিলে এই সমস্যার কারণ খুঁজে বের করার চিন্তা করলাম। ওহ, আমার ভাইর বয়স মাত্র ১৩ বছর। তাই আমরা ভাবলাম একটা কাজ করার। বাবা-মা দুজনেই ডায়রি লিখে, এবং খুবই সাবধানে তালা মেরে রাখে যাতে কেউ কারও ডায়রি কোনভাবেই পড়তে না পারে। অনেক কষ্টে সে চাবি যোগাড় করে আমার ড্রয়ারের চাবি বলে দারোয়ান চাচাকে দিয়ে নকল করালাম। সে বর্ণনা আমার ধারণা না দিলেও চলবে। তারপর আমার ভাই আর আমি মিলে এক সপ্তাহ সময় নিয়ে ২টি ডায়রি পড়ে কারণ খুঁজে বের করলাম। আমার ভাই পাহারা দিত, আর আমি পড়তাম। তাই শুধু আমিঈ জানি সমস্যাটা কোথায়।
এখন মূল সমস্যায় আসি। ডায়রি পড়ে জানতে পারলাম যে, আমার বাবা-মা কেউই জানেনা যে তারা একে অপরকে একেবারেই পছন্দ করেনা। তারা অন্য কাউকে পছন্দ করে। আমার বাবা পছন্দ করেন অন্য একজন আন্টিকে, যিনি বিবাহিতা, এবং তার স্বামি বিদ্যমান। আমার বাবা এবং ওই মহিলার কারণে আমার একজন সৎ বোন আছে, যাকে আমি আজ পর্যন্ত দেখিনি। আর মার ডায়রি পরে জানতে পারলাম যে ১৩ বছর বয়স্ক আমার ছোট ভাইর বাবা এবং আমার বাবা এক ব্যক্তি নয়। আমার ছোট ভাইর বাবা আমার বাবার একজন বন্ধু, এবং ইনিও বিবাহিত, এবং তার আরও সন্তান আছে। বাবা-মা দুজনেই সমাজ কি বলবে চিন্তা করে কেউ কাউকে কিছু বলেন না, এবং তাদের এই অবৈধ সম্পর্কের কথা কেউ জানেনা। এটা জানার পর থেকে আমি আমার বাবা-মার প্রতি এত অত্যধিক ঘৃণা বোধ করছি যে তাদের সাথে কথা বলারও রুচিবোধ হচ্ছেনা। আমি আমার ছোট ভাইকে কি বলব বুঝে উঠতে পারছিনা, কেননা সে আমায় বারবার জিজ্ঞেশ করছে যে আমি ডায়রি পরে কি জেনেছি। আমি তাকে এতই ভালবাসি যে এসব বলে তাকে কষ্ট দিতে পারছিনা। কিন্তু আমি তাকে কিছু বলছিনা বলেও আমি তাকে বিশ্বাস করছিনা মনে করে দুঃখ পাচ্ছে। আবার আমাদের বাবা এক না ভাবতেই খারাপ লাগছে। তাকে আমার সৎ ভাই ভাবতে ইচ্ছা করছেনা। এখানে যদি আমাদের বাবা এক না হয়ে থাকে, তবে সেখানে আমার ভাইরতো আর কিছু করার ছিলনা। আমার বাসা ছেড়ে বের হয়ে যেতে ইচ্ছে করছে। আবার ভাইটার কথা ভেবে তাও করতে পারছিনা। এখন কি করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা। শুনলাম আপনার নাকি শখ সমস্যা শোনা আর আজব আজব সমাধান দেয়া। এরকম সমস্যা কি আগে পেয়েছেন? বলতে পারেন আমার সমস্যার সমাধান কি হতে পারে?”
এতটুকুই ছিল ই-মেইল। আমি জানিনা এই কিশোর/কিশোরীকে আমি জবাব দিব। যদি কেউ খুব দ্রুত কোন সমাধান দিতে পারেন, তাহলে আমি তাকে সেই সমাধান দিয়ে দিই।
মন্তব্য
আপনি আজমেরি বাবার মতো কোত্থেকে উদয় হলেন? আপনার আইডি দেখে মনে হচ্ছে আপনিও একজন সচল। যাইহোক কথা না বাড়িয়ে বলি, যদিও জানিনা এই দু’জন টিন এজ কই থাকে (জানলে পরামর্শটা যৌক্তিকভাবে দেয়া যেত)! যদি বাসার পরিবেশ বাস করার জন্য আসলেই অসহনীয় হয় তো সম্ভব হলে তারা কোন বোর্ডিং স্কুলে চলে যাওয়ার জন্য নিজেদের পেরেন্টদের মোটিভেইট করতে পারে। অথবা তারা যদি ভাবে যে, তাদের বাবা-মা নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো না হলেও তাদের (সন্তানদের প্রতি) প্রতি বেশ মাই ডিয়ার তবে বেনামে বাবা-মা দু’জনকে দু’টো চিঠি দেয়া যেতে পারে (কিছুই না একটু তাদের পাষ্ট লাইফ সম্পর্কে ইঙ্গিত দিয়ে অনুরোধ করতে হবে যেন তারা ঘরের শান্তি ফিরিয়ে আনে)। আর যদি এই ঘটনার ভিকটিম দেশের বাইরে থাকে তো ১৯ বছরের পর নিজেরা আলাদা থাকার জন্য সরকারকে আবেদন জানাতে পারে। জানিনা আদৌ এসব পরামর্শ কাজে লাগবে কিনা তাদের। খারাপ লাগে কার পাপে কাদের কষ্ট পেতে হয় দেখে! হায়রে জীবন...!
জিজ্ঞাসা করে দেখবনে যে কোথায় থাকে
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
যেই দেশেরই হোক না কেন, কাউকে কিছু জানানোর দরকার নাই। চেপে যাক আরো কিছু বছর। ছোট ভাইয়ের ব্যাচেলরর্স ডিগ্রির আগ পর্যন্ত কিছু জানানোর কোন প্রয়োজন নেই। কার ঔরসজাত, তা নিয়ে ভেবে লাভ নেই। ভাই তো ভাই হিসেবেই বড় হয়েছে।
বলা সহজ ভায়া, করা নয়
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
খুব মন খারাপ হয়ে গেল ছেলে মেয়ে দুজনের জন্য। বোঝাই যাচ্ছে তারা যে কারনে ডায়রি পরেছে, মা বাবার অমিলের কারণ জেনে তাদের মিল করা, তা সম্ভব নয়। আমার মনে হয় ভাইকে সত্যি কথাটা না জানানই ভাল। ভাইকে আপাতত সে বরং বলতে পারে ঝগরার কারন মা বাবা অন্য কাউকে ভালবাসে ব্যস এটুকুই। তাদের উচিৎ হবে এখন বাবা মার সাথে মিটিং এর মত করে জানানো যে তারা যেন অন্তত ছেলে মেয়ের সামনে নরমাল ব্যবহার করে নয়ত ওরা বাসায় থাকবেনা, আমার মনে হয় বাবা মা তা শুনবে। ওরা পড়াশোনা করে যাক এবং পরে hscর পর বাসায় না থেকে অন্য কোথাও গিয়ে থাকবে। আমি ওর জাগায় হলে ভাইকে কখনই বলতাম না যে ও আমার সৎ। মা তো এক। কিছু সত্য না হয় থাকলই গোপন।
---------------------------------------------------------
মূর্ছনা কেটে গেছে সুর
জোছনা ছড়ায় বেদনা, হৃদয় আনমনা ... চির চেনা তুমি অচেনা।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
বাবা-মার সাথে কি মিটিং করাটা এই মুহূর্তে খুব সহজ কাজ হবে?
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
বাবা মার ব্যবহার/সম্পর্ক ছেলে মেয়ের সাথে কেমন তার ওপর ডিপেন্ড করছে মিটিং করাটা সহজ হবে কি হবেনা। যতদূর মনে হচ্ছে মা বাবা ওয়েস্টার্ন মেন্টালিটির (এমন জঘন্য কান্ড ওয়েস্টার্ন মেন্টালিটির না হলে সম্ভব নয়), ওরা ফরমালি বাবা মা কে বলতে পারে যে এত তারিখ এই সময়ে আমাদের তোমাদের কিছু বলার আছে। মা বাবার ঝগরা যে তাদের মেন্টালি এফেক্ট করছে সেটা তখন ভাই বোন তাদের বোঝানোর চেষ্টা করবে, আর ওরা যদি নিজেদের বাচ্চাদের সামনে কন্ট্রল না করতে পারে তবে ওরা বাসায় থাকবেনা। বড় কারো উপস্থিতি এতে সাহায্য করবে। যদি সম্ভব হয় তবে তাদের রেপ্রেসেন্ট করবে (যেমন ফুপু, খালা, আপু, ভাইয়া, মামা, চাচু etc) এমন কাউকে সাথে নিয়ে মিটিং করতে পারে। আর এই বড় কেউ যদি এমন কেউ হয় যাকে বাবা মা দুজন রেসপেক্ট করে বা ভয় পান তাহলে আরো ভালো।
-------------------------------------------------------
মূর্ছনা কেটে গেছে সুর
জোছনা ছড়ায় বেদনা, হৃদয় আনমনা ... চির চেনা তুমি অচেনা।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
খারাপ বলেননি। কিন্তু অনেক সময় বড়রা ছোটদের খুব একটা পাত্তা দিতে চায়না। অন্তত আমার ক্ষেত্রে কিছু কিছু সময় হয়েছিল।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আমি মিসির আলি নই, তবু কেন যেন মনে হচ্ছে সমস্যাটায় কোন গড়বড় আছে।
বাচ্চা দুটো ছোটবেলা থেকেই বাবা মার খারাপ সুম্পর্ক দেখে বড় হয়েছে। এটা তাদের কাছে স্বাভাবিকতা। হটাত করে বাচ্চা দুটো বাবা মার ঝগড়ার কারণ খুঁজতে যাওয়াটা একটু যেন কেমন?
আর অবৈধ কাজের কথা বাবা মা ডায়রীতে লিখে বাসায় রেখে দিবে এটাও ঠিক বিশ্বাসযোগ্য নয়।
আজমীর আপনি কি নিশ্চিত যে কেউ আপনার সাথে কোন গেইম প্লে করছে না??
আমিও এ কথাই ভাবছিলাম। কারণ, একটু বেশি নাটকীয়তা ঘটনায়।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
কি বলব বুঝতে পারছি না। ওদের দুজনের জন্য আসলেই খুব খারাপ লাগছে।
ছোট ভাইকে কিছুই জানানোর দরকার নেই, কখনোই না। ও বরং বাবা অথবা মাকে অনুরোধ করতে পারে যেন ওদের সামনে ঝগড়াঝাটি না করে অথবা কম করে। যে যার সন্তানই হোক না কেন, বাবা-মা সবসময়ই মনের গভীরে সন্তানের জন্য ভালবাসা লালন করেন। পরিবারে মুরুব্বী কেউ থাকলে যার কথা বাবা-মা দুজনেই মোটামুটি মান্য করেন এবং যার সাথে ও নিজেও বেশ ঘনিষ্ট, তার মাধ্যমে এই বিষয়টার মধ্যস্থতা করা যেতে পারে, অন্ততপক্ষে চেষ্টা করা যেতে পারে। তারপরও কাজ হবে কিনা বলা যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে প্রাপ্তবয়স্করাও এমন সব কাজ করে বসেন যে তাদেরকে বাচ্চাদের চেয়েও অবুঝ মনে হয়!
শুভকামনা রইল। পারলে পরে জানাবেন ঘটনা কোনদিকে মোড় নিল।
যদি আমি জানতে পারি, তাহলে অবশ্যই জানাব।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আমিও অপরিচিতার সাথে একমত। ছোটবেলা থেকে এদের কেন আজকাল কার জেনারেশনের সব বাচ্চআদেরই বাবা - মা নামক দুটি প্রথক সত্বআর ঝগড়আ দেখে অভ্যআস হয়ে যায়। তাছাড়আ এই বয়্সই বাচ্চআদের বেশীর ভাগ সময়ই নিজেদের আলাদা জগত থাকে, তারা সাধারনত্ঃ বাবা - মা নিয়ে ততো আর ভাবে না। আমারো মনে হ্য় কেউ মজা করছে।
ভাইকে জানানোর ব্যআপার নিয়ে ভাব্বআর কিছুই নেই। কতো শিশুইতো এডাপ্ট হ্য়। তারা যখন জানে তারা "এডাপ্ট", বাবা - মা, ভাইবোনের প্রতি ভালোবাসা কমে যায় না তাতে। কারন ভালোবাসা কখ্নই বায়োলোজি বা নন বায়োলোজীর উপড় ভিত্তই করে হয় না। ভালোবাসার আধার হলো ভালোবাসা।
তানবীরা
আমার বাবা মা কোন দিন ঝগরা করত না
____________________
ওয়েব সাইট | ফেইসবুক | অরকুট |
_____________________________
টুইটার
দীর্ঘশ্বাস!
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
শুভ জন্মদিন!!!
নতুন মন্তব্য করুন