পুলিশ আমার যথেষ্ট পরিমাণে দেখা সাক্ষাৎ হয়ে থাকলেও পুলিশ আমি কখনই পছন্দ করিনা। কথায় আছে, বাঘে ছুঁলে আঠার ঘা আর পুলিশে ছুঁলে ছত্রিশ ঘা। কিন্তু শিশুকাল থেকেই আমার আজব আজব পরিকল্পনার জন্য বহুবার পুলিশের সাথে না চেয়েও দেখা হয়ে গিয়েছে। তেমনি একটি পরিকল্পনার জন্য কিভাবে পুলিশের সাথে আমার আবার দেখা হয়েছিল তাই এখানে বলি।
তখন আমি ৭ম শ্রেণিতে পড়ি। অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া শেষ। পরীক্ষার আগের দিন সবকিছু পড়া সম্ভব নয় বলে গুরুত্বপূর্ণ কি পড়া যায় তাই নিয়ে বন্ধুদের মধ্যে আলোচনা চলছে। এমন সময় এক বন্ধু এসে বলল,
- একটা লিফলেট ছাপাইতে হবে। বলতে পারস, কোন printing press এ গেলে পরে সস্তা হইব? কারণ, ১০০০ কপি ছাপাইতে হবে।
আমরা সবাই মিলে পরীক্ষার চিন্তা বাদ দিয়ে চিন্তা করতে লাগলাম কোথায় যাওয়া যায়। এরই মধ্যে আরেকজন বলে দিল পুরান ঢাকাতে যাবার জন্য। সেখানে নাকি সস্তায় করা যেতে পারে। সেই বন্ধুটি একা যাবে ভেবে আমি ওর সাথে রওনা দিলাম। পুরান ঢাকায় পৌঁছাবার পর আমরা একটা ছাপাখানা বের করে সেখানে দর কষাকষি করে বের হয়ে আসার সময় শুনতে পেলাম কোন স্কুলের কি জানি ওদের ছাপাতে হবে। এটা শুনেই আমার মাথায় ২ নাম্বারি চিন্তা খেলে গেল। আমি আমার বন্ধুটিকে বললাম,
- এই, আমাদের স্কুলের প্রশ্নপত্র আবার এখানেই কোথাও ছাপায় নাতো? খোঁজ নেব নাকি?
-যাঃ। তোর মাথা খারাপ। আর প্রশ্নের দরকার কি? পড়া হয় নাই ঠিক মত?
-পড়া হইসে। কিন্তু অন্য কারণে চিন্তা করতাসি। যদি দেখি যে এদিকেই কেউ করে, তাইলে বাকিদের মাথায় এই কথাটা ঢুকায় দিলে ওরা এটা নিয়া মাথা ঘামাবে এবং খোঁজ নিবে। পাইলে আমাদের প্রতি কৃতজ্ঞবশত জানাবে, আর না পাইলে ওদের সময় নষ্ট হবে। আমাদের রোল একটু আগাবার সম্ভাবনা বাড়বে।
-নাহ। আমি এতে নাই দুইটা কারণে। এক, বাকিদের পাকানের জন্য খোঁজ নেবার দরকার নাই। গিয়ে বললেই হইল যে, প্রশ্ন দেখসি, কিন্তু জিগানের সাহস পাই নাই। তাইলেই পাগল হইয়া উঠবে। আর দুই, নিজেদের বন্ধুদের ক্ষতির মধ্যে আমি নাই।
-এগুলা অবশ্য আমি চিন্তা করি নাই। না, বাদ দে। প্রশ্নপত্র ফাঁস পরিকল্পনা হইলনা। কিন্তু পাকানি হবে কিছুক্ষণের জন্য।
এমন সময় হঠাৎ ঘাড়ে শক্ত হাতের স্পর্শ অনুভব করলাম। গম্ভীর এক গলা গর্জে উঠল,
-আজকালকার ফাউল পোলাপাইন আইসস প্রশ্ন ফাস কইরতে। খাড়া বাইর করতাসি তোদের তেল।
পিছনে তাকিয়ে দেখি এক হাবিলদার দাঁড়িয়ে আছে। তারই শক্ত হাত আমাদের ঘাড়ে। বলেই সে আমাদের রীতিমত টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া শুরু করল। আমরাতো কাকুতি মিনতি শুরু করলাম যে, চাচা আমরা সে জন্য আসিনি। এসেছি অন্য কাজে। কিন্তু ও ব্যাটার কথা হচ্ছে সে আমাদের এসব কথা বলতে শুনেছে। অনেক কষ্টে তাকে বোঝাতে সক্ষম হলাম যে সে ছিল শুধুই আমাদের আলোচনা। আর কিছু নয়। কিন্তু এটা তাকে বোঝাতে আমাদের প্রায় ১ কিলোমিটার পথ হাঁটতে হয়েছিল, দুইটা গলা ধাক্কা খেতেছিল, এবং ১০০ টাকা জরিমানা দিতে হয়েছিল।
দেখুন পাঠক মহল, শুধু চিন্তার কি খেসারত, কাজটা সম্পাদন করলে চিন্তা করুন কি হতে পারত।
মন্তব্য
সেই জন্য গান্ধীজী বলছিল, বুরা মাত শুনো, বুরা মাত দেখো ------
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
আর বলতে
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
- "ললনার কোমল হাতে শক্ত চড় যদি খেতেই হয় তবে তাকে চুমু খেয়েই খাওয়া ভালো"- এইটা একটা প্রবাদ।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কয়টা চুমু খাইছেন আর কয়টা চড় খাইছেন গইনা গইনা বলেন এইবার...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
- নজু ভাই, আপনে কিন্তু আমারে টেকনিক্যালী কিছু একটা কইতে চাইতাছেন!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
হেহেহেহে। মজা পাইছি।
আহারে , তঅ ভালো ১০০ টাকার উপর দিয়া গেসে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আর বলতে
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
নতুন মন্তব্য করুন