পুলিশের সাথে কেন জানি আমার বারংবার দেখা হয়েই যায়। ২০০৯ সালকে স্বাগত জানাবার জন্য ভ্রমণে বের হয়ে পুলিশের হাত হতে আমি নিস্তার পেলাম না। মাঝে মাঝে তাই মনে হয়, যেন পুলিশ ও আমি = লাইলী ও মজনু।
যাই হোক, এখন আমি মূল কাহিনীতে চলে আসি। কাহিনীর শুরুর অংশটি সরাসরি পুলিশের সাথে সাক্ষাৎ থেকে শুরু না করে একটু আগের ঘটনা থেকে শুরু করি। ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে আমার বড় ভাই আমার কাছে বেড়াতে আসে। তার উদ্দেশ্য আমাদের সাথে সময় নষ্ট করা, এবং সম্ভব হলে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে কোথাও থেকে ঘুরে আসা। যদিও আমার এখানে এসে বড়দার (আমার বড় ভাইকে আমি বড়দা ডাকি) এই "সময় নষ্ট" নামক প্রকল্পটি আমার আদৌ পছন্দ নয়, কিন্তু ঘুরাঘুরির স্বার্থে আমি রাজি হয়ে গেলাম। অবশেষে বড়দা তার পরিকল্পনা আরও একটু আগিয়ে এনে তার জন্মদিনও আমাদের সাথে করবে বলে জানাল। তার আবার ২০শে ডিসেম্বর জন্মদিন কিনা। শুনেতো আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। আমি অতি দ্রুততার সাথে তাকে ফোন করে বললাম,
- অই, এত আগে আসবা ক্যান? কোন দরকার নাই। তুমি দুনিয়াতে জন্মায় মহান কিসুই কর নাই যে তোমার জন্মদিন পালন করতে হবে। এইসব প্ল্যান বাদ দাও। এত আগে আইসা আমার মাথা খাওয়ার কোনই মানে হয় না। পরে আস।
- তুই আগেও একটা ইতর আসিলি, এখনও আসিস। এখনতো আগেই আসতে হবে।
- হায় হায়, তাইলেতো এবার বিশাল ঝগড়া হবে। তাইলে শর্ত একটাই, সব ঝগড়াতে আমি আগে থেকে winner, আর কোন ঝগড়ার শুরুর জন্য আমি দায়ী না। সব দোষ তোমার।
- ঠিক আছে, দেখা যাবেনে।
কি আর করার, বড়দাকে যখন কিছুতেই আটকানো যাবেনা, তখন তাকে আসতে দিতাই হবে।
যথারীতি বড়দা সময় মত এসে উঠল আমার খুপড়িতে। তারপর আমরা বসে পড়লাম পরিকল্পনা করতে যে কোথায় যাওয়া যায়। থাকি আমেরিকার পূর্ব প্রান্ত ভার্জিনিয়াতে। সুতরাং পূর্ব প্রান্তেরই কোন শহরে বর্ষবরণ উৎসব দেখতে যাওয়া উচিত। কিন্তু তাই যদি হবে, তবে আমরা আর আমরা হলাম কোথায়। তাই আমাদের লাস ভেগাস এ যাবার পরিকল্পনা স্থায়ী হয়ে গেল। তাও আবার গাড়ি চালিয়ে। সেই অনুযায়ী আমরা বের হয়ে গেলাম।
লাস ভেগাসে বর্ষবরণ উৎসব আমাদের কাছে যদিও তেমন একটা ভালো লাগেনি, কিন্তু তাও দেখাতো হলো - এই ছিল মানসিক স্বান্তনা। যদি আপনি আমাদের মত মদ্যপানে অনাগ্রহী, হালাল (যাবিহা) মাংস ছাড়া অন্য মাংস আহারে অপারগ হয়ে থাকেন, তবে আপনার জন্য লাস ভেগাস এর বর্ষবরণ উৎসব আমাদের মতই ফালতু লাগা ছাড়া উপায় নেই।
লাস ভেগাস থেকে বের হয়ে আমরা পৌঁছে গেলাম আমাদের খালার বাসা কলোরাডোতে। আমেরিকার এই স্টেটটি আমার কাছে সবসময়ই খুব সুন্দর লাগে। খালার সাথে একদিন সময় অতিবাহিত করে আমরা কলোরাডোরই আরেক খালার সাথে দেখা করে ক্যানসাস এর উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেলাম। আমাদের যাত্রা শুরু হয় সন্ধ্যার সময়।
সন্ধ্যার সময় যাত্রা শুরু করাতে সূয্যি মামার দেখা পাওয়া গেলনা। রকি পাহাড়ের সর্পিল রাস্তার মধ্য দিয়ে যাত্রার শুরু করল ওয়াসেফ নামের আমার আরেক যাত্রাসংগী। এই ফাঁকে আমিয়ে একটু ঘুমিয়ে নিলাম, যাতে পরবর্তী অংশে আমি চালাতে পারি। ঘন্টা ২-৩ চালাবার পর ক্লান্ত ওয়াসেফ আমার হাতে গাড়ি সোপর্দ করে পাশের আসনে ঘুমাতে চলে গেল। কিন্তু হায়, ছোট বেলায় পড়েছিলাম - অভাগা যেদিকে যায়, নদী শুকায়ে যায় - তারই যেন চাক্ষুষ প্রমাণ হাতেনাতে পেয়ে গেলাম। আমি চালানো শুরু করার অল্প কিছুক্ষণের মাঝেই শুরু হয়ে গেল তুষার ঝড়। গাড়ির গতি কমাতে আমি বাধ্য হলাম। যেখানে গতিসীমা ৬৫ মাইল প্রতি ঘন্টা, সেখানে আমাকে চালাতে হচ্ছিল ২৫-৩৫ মাইল প্রতি ঘন্টা। আধা ঘন্টার মাঝে আমাকে বিরক্তি চেপে ধরল। তাই একটু গতি বাড়িয়ে ৩৫-৪৫ মাইল প্রতি প্রতি ঘন্টা বেগে চালানো শুরু করলাম। এভাবে কখন যে আমার গতিবেগ ৬৫ ছাড়িয়ে চলে গিয়েছিল আমি তা আদৌ উপলব্ধি করিনি। হঠাৎ পিছনে পুলিশের গাড়ি দেখে অভ্যাসবশত গতিবেগ প্রদর্শক কাটাটির দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম যে, আমি আসলে ৮৫ মাইল গতিতে ছুটে যাচ্ছি। তাই তাড়াতাড়ি আমি আমার গতিবেগ নামিয়ে ৬০ মাইলে নিয়ে আসলাম। সেই সাথে আশা করলাম, হয়তোবা পুলিশ ব্যাটা এ যাত্রায় আমায় ছেড়ে দিলেও দিতে পারে।
আমার পেছনের পুলিশ হঠাৎ করে exit নিয়ে চলে গেল। দেখেতো আমি মহা খুশি। যাক, এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম। কিন্তু আমার আশায় গুড়ে বালি দিয়ে হঠাৎ করে সেই একই exit থেকে বের হয়ে এল সেই পুলিশের গাড়ি। দেখেই আমার বুকের ভেতর আবার ধড়ফড় শুরু হয়ে গেল। আর আমার বুকের ধড়ফড়ানি বাড়িয়ে দিয়ে ২ মাইল যেতে না যেতেই পুলিশের গাড়িটি পেছন থেকে লাল-নীল ঝলমলে চোখ ধাঁধানো বাতি জ্বালিয়ে দিল।
একেতো তুষার ঝড়ের মাঝে গাড়ি চালাতে হলে এমনিতেই চোখ ব্যাথা হয়ে একটানা অতিরিক্ত মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে থাকার কারণে, তার উপর এই পুলিশের আলো একেবারে মাথাটা খারাপ করে দেয়। কিন্তু কিচ্ছু করার নেই। সহ্য করতে হবে। অপরাধ করলে তার সাজাতো পেতেই হবে। আমি গাড়ি থামিয়ে পাশের আসনে ঘুমিয়ে থাকা ওয়াসেফকে, এবং পেছনের আসনে ঘুমিয়ে থাকা বড়দাকে ডাক দিয়া বললাম -
- মামারা উঠে যাও। পুলিশে ধরেছে। মনে হয়, আরেকখান টিকেট খাইয়া গেলাম। ধুরু, কপালটাই খারাপ। দেখি কি বলতে চায়, আর কত টাকার মূলা ঝুলায়।
সাথে সাথেই দুজনই উঠে গেল। চোখ কচলে বোঝার চেষ্টা করতে লাগল পুরো ঘটনা।
পিছের পুলিশের গাড়ি হতে পুলিশ নেমে এসে আমার জানালার পাশে টোকা দিয়ে জানালাটি নামাতে বলল। নির্দেশ অনুযায়ী আমি জানালাটি নামিয়ে ফেললাম। তারপর শুরু হল পুলিশের সাথে আমার কথোপকথন। যদিও পুরো অংশটিই ছিল ইংরেজিতে, কিন্তু আমি তুলে ধরছি বাংলাতে। যদিও বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষাতে আমি বঙ্গানুবাদ অংশটিতে সর্বদাই দুর্বল ছিলাম, কিন্তু ধারণা করছি এই বঙ্গানুবাদটি আমি খারাপ করিনি। যাই হোক, শুরু করি পুলিশের বক্তব্য থেকে -
- তুমি কি ঠিক আছ?
- জ্বি, নিঃসন্দেহে।
- তুমি কি মদ্যপান করেছ?
- নাহ, মোটেও না। আমি কখনই মদ্যপান করিনা।
- তোমার কি কোন ধারণা আছে যে আমি তোমাকে কেন আটকালাম?
- তা ঠিক জানিনা। তবে হতে পারে আমি দুই লেইনের মাঝ দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলাম বলে। কিন্তু কি করব বল, যে পরিমাণ তুষার ঝড় হচ্ছে, দাগতো আদৌ দেখতে পারছিনা। ( এদিকে মনে মনে ভাবছি, ব্যাটা জানিনা আবার, সোজা কথায় বলে ফেলনা যে আমাকে গতিসীমা লংঘনের অপরাধে আটকেছিস। এত পেচানের কি দরকার??!!)
- আসলে তোমাকে সেজন্য আটকাইনি। তোমার সাথে কি তোমার লাইসেন্স আছে?
- নিশ্চয়। লাইসেন্স ছাড়া কি আর কেউ গাড়ি চালায়? (জানিতো চাইবি। আগে থিকাই ready কইরা রাখসি)
- তাহলে আমাকে দাও।
- নিশ্চয়। আমি কি আমার ব্যাগ বের করতে পারি আসনের নিচ থেকে? (দ্যাখ, আমার ভদ্রতা, এগুলা দেখাইয়াইতো মাফটা নাওয়ার চেষ্টা করতে হবে)
- নিশ্চয়।
- তোমার কি গাড়ির অন্যান্য কাগজপত্র লাগবেনা? যেমন, রেজিস্ট্রেশন, ইন্সুরেন্স ইত্যাদি। (আরে ব্যাটা, তোর আগে পুলিশ আমারে আরও বহুবার আটকাইসে, মুখস্থ হইয়া গেসে তোরা কি কি চাবি)
- নিশ্চয়।
- তাহলে এই সকল কাগজপত্র। আসলে আমি সব একসাথে রাখিতো, তাই ভাবলাম তোমার যদি কিছু প্রয়োজন হয় তাহলে একবারেই সব দেয়া যাবে। তাই জিজ্ঞেস করলাম আরকি যে কি কি লাগবে।
- কোন অসুবিধা নাই। তুমি একটু অপেক্ষা কর, আমি এখুনি আসছি তোমার কাগজপত্র মিলিয়ে। বেশি সময় লাগবেনা, ধর গিয়ে ৫ মিনিট।
- কোন অসুবিধা নেই। এমনিতেও আমার মাথা ব্যাথা করছিল এই তুষারের মাঝে গাড়ি চালাতে চালাতে। এমনিতেই আমি হলাম মাইগ্রেনের রোগী, তার উপর এরকম আবহাওয়ার মাঝে গাড়ি চালান রীতিমত যন্ত্রণা। আর কোথাও যে থামব সে উপায়ও নেই। এখন যদি আমাকে কোন কারণে জরিমানাও কর তাও তোমাকে ধন্যবাদ থামাবার জন্য। আসলেই আর পারছিনা চালাতে, এবং থামার কোন স্থানও পাচ্ছিনা। উফ, বাঁচালে। (এতগুলা প্যাচাল পাইরা নিজেরে রোগী বানাইয়া ফালাইলাম তোর মনে দয়ার উদ্রেক করার জন্য। এই কথায় যদি মামা তোমার মন ভেজে, তাইলেই হবে। তাইলে তুমি আর আমারে জরিমানা করবেনা। আর এটাইতো আমি চাই। দেখা যাক মামা, তুমি কি কর আমার সাথে।)
- আহহা, অনেক কষ্ট হয়েছে নিশ্চয়। তার উপর দেখতে পারছি সুদূর ভার্জিনিয়া থেকে আসছ। আচ্ছা, একটু বস, আমি এক্ষুনি আসছি।
- ঠিক আছে। কোন সমস্যা নেই। তুমি তোমার মত সময় নাও।
তারপর পুলিশ গেল তার গাড়ির কম্পিউটারে আমারে কাগজপত্র নিয়ে গবেষনা করতে। যদিও সে বলেছিল ৫ মিনিট এর কথা, কিন্তু মাত্র ৩ মিনিট পরেই সে ফিরে এল।
- এই নাও তোমার কাগজপত্র। আমি আসলে তোমাকে থামিয়ে ছিলাম গতিসীমা লংঘনের দায়ে। এই রাস্তার গতিসীমা ৬৫ মাইল প্রতিঘন্টা, কিন্তু তুমি গাড়ি চালাচ্ছিলে ৮৬ মাইল প্রতিঘন্টা বেগে। তাই তোমাকে না থামিয়ে আমার কোন উপায় ছিলনা।
- ও আচ্ছা। আমি আসলে বুঝতেই পারিনি কখন যে এত গতি উঠে গিয়েছে। আসলে তুষার ঝড়টা না সব এলোমেলো করে দিল। আমি আমার জীবনে কখনও তুষার ঝড় দেখিনি। তাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম বলে ভুল হয়ে গিয়েছে। তাও তোমাকে ধন্যবাদ। একেতো ভয় পাচ্ছি, তার উপর আশেপাশে কেউ নেই - আমিতো ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলাম। এখন তুমি যদি আমাকে জরিমানাও কর তাও আমার কোন দুঃখ নাই। (ভাই এবার মাফ করে দে। ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার চরম ঝড়েও গাড়ি চালাইলাম। তাও তোর সাথে মিথ্যা বললাম যে জীবনে ঝড় দেখি নাই। ভয় পাই নাই, বিরক্ত হইয়া গেসিলাম, এটাও বানাইয়া বললাম মামা তোমার মন গলাইতে, তাও এত জ্বালাও কেন? ক্ষমা কর মামা।)
- এটা একটা বোকার মত কথা বললে। ঝড়ের সময় তুমি আরও আস্তে গাড়ি চালাবে, কারণ বিপজ্জনক সময়, আর তুমি কিনা বলছ ভয় পেয়ে আরও জোরে গাড়ি চালানো শুরু করলে? এটা কেমন যুক্তি হল? ভয় পেলে তোমার আরও আস্তে চালাবার কথা।
- তাইতো, ঠিকই বলেছ। ভয়ের কারণে আমি মনে হয় আমার জ্ঞান-বুদ্ধি হারিয়ে সব গুলিয়ে ফেলেছিলাম। যাই হোক, কি আর করার, অপরাধ করলে তার শাস্তিতো পেতেই হবে। টিকেট দাও, জরিমানা কর, আর একটু বলে দাও কিভাবে টাকাটা দিতে পারি। কারণ এতদূরে কোর্টকাচারি করতে আমি আসছিনা।
- নাহ, তোমাকে আসতে হবেনা। আমি তোমাকে কোন টিকেট দিচ্ছিনা, বা জরিমানাও করছিনা। তুমি যেতে পার।
- আসলেই দেবেনা? কিন্তু আমি যে অপরাধী, গতিসীমা লঙ্ঘনের অপরাধ করেছি?
- এটা কোন ব্যাপার না। অনেক সময় এরকম হয়।
- কিন্তু আমি যে অপরাধে?
- এটা নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই।
- কিন্তু আমাকে যখন কেউ জিজ্ঞেস করবে আমাকে কেন পুলিশ থামিয়েছিল, আমি কি বলব? (ধুরু, এই নাটকটা বেশি হইয়া গেল)
- তুমি আমার একখানা কার্ড নিয়ে যাও। আর অন্য কোন পুলিশ বা কেউ জিজ্ঞেশ করলে বলবে, এমনি সব ঠিকঠাক আছে কিনা দেখার জন্য থামিয়ে ছিল। তাহলেই হবে।
- (ইয়াহু, মামাতো দেখি চমৎকার লোক) আচ্ছা ঠিক আছে। আচ্ছা কোন জরুরি কাজ না থাকলে তুমি কি আমাকে একটু এগিয়ে দেবে? আমিতো জানিনা কতক্ষণ এই ঝড় চলবে।
- আর মাত্র ১-১.৫ মাইল পরেই ঝড় নেই। তুমি আগে আগে চল, আমি তোমার পেছনেই আছি। ভয় পেওনা, আস্তে আস্তে চালাও। পরে কোথাও থেমে একটু বিশ্রাম করে নিও। তোমাদেরতো এখনও অনেক পথ যাওয়া বাকি।
- আচ্ছা ঠিক আছে। আমি খালি শুনেছিলাম কলোরাডোর মানুষ নাকি ভাল হয়। আজ নিজে চোখে দেখে গেলাম। এখন বলতে পারব যে, কথা মিথ্যা নয়, আসলেই রকি পাহাড়ের কাছের ওই মানুষগুলো খুবই ভাল। আমার বিপদের সময় আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ তোমাকে। আসলে তোমার মত পুলিশ থাকলে পুলিশকে ভয় না পেয়ে বন্ধু বলেই মনে হবে। আবারও অসংখ্য ধন্যবাদ তোমাকে, এবং একই সাথে আমি খুবই দুঃখিত যে আমি তোমার মূল্যবান সময় নষ্ট করলাম।
- আরে নাহ, এটাইতো আমার কাজ, আমি যদি এটা না করি, তবে আর এই চাকরি কিসের জন্য। যাই হোক, তুমি রওনা দাও, আমি আগামী ২ মাইল তোমার সাথেই আছি।
- ঠিক আছে।
তারপর পুলিশ তার গাড়িতে উঠে পড়ল, আর আমি আমার গাড়ি চালু করে আবার রওনা দিলাম। কথা অনুযায়ী সেই পুলিশ আমাদের পরবর্তী ২ মাইলের মত পেছন পেছন আসে, এবং পরে একটি exit এর আগে দিয়ে দুবার হাই বীম দিয়ে, অর্থাৎ কিনা আমাকে টাটা জানিয়ে সে চলে যায়।
তবে আমি গাড়ি চালু করা মাত্রই আমার বাকি দুই যাত্রাসংগী আমার উপর যে কথার বাণগুলো চালিয়ে দিল তার সারমর্ম দাঁড়ায় অনেকটা এরকম -
- ন্যাকামির আর যায়গা পাওনা? সুন্দর মত ছাইরা দিতাসে, আর ঢং মারা শুরু করস যে তুমি অপরাধী। ২১ মাইল উপরে চালাইতাস, ধইরা জেলে ঢুকায় নাই, তাও তোমার বিটলামি থামেনা।
আরে পাঠক/পাঠিকা - আপনারাই বলুন, আমার কি দোষ? আমি কি আসলেই কোন ন্যাকামি করেছিলাম? আমি হলাম ভোলাভালা মানুষ, পুলিশের আমাকে দেখে দয়া হল, তা সত্বেও আমি কি সুন্দর ভাল মানুষের মত নিজের দোষ স্বীকার করে জরিমানাও দিতে রাজি হয়ে গেলাম। এখানে ন্যাকামির কি আছে? আমার মত ভাল মানুষ কি আর কোথাও কে খুঁজে পাবে?
( বানান ভুল হলে ক্ষমা চাই। দ্রুত লিখে চট করে পোস্ট করলাম, বানানসহ অন্যান্য ভুল দেখার আর ধৈর্য্য নাই)
মন্তব্য
হা হা হা
হেব্বি মজা পাইলাম। পুলিশ তো সত্যি আপনারে অনেক বালা পায় দেখি। এতো বিটলামি দেইখাও অতো জামাইআদর...
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
তা যা বলেছেন, আজ পর্যন্ত বহুবার এই জামাই আদর পেয়েছি। সময় পেলে আরও এমন বহু ঘটনা লেখার চেষ্টা করব। কিন্তু সৌভাগ্য আমার যে কখনও শ্বশুর বাড়ি যেতে হয়নি। মানে, দরজা থেকে ঘুরে এসেছি বটে, তবে সেথা বসবাস করতে হয়নি।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
ইরকম অধৈর্য্য হলি তো চইলবে না ।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
কি করব বলুন, সেই ছোট্ট বেলা থেকেই খালি ছটফট করে বেড়াচ্ছি।
ধয্যির কারণি কত মার খেলাম, সে কতি লাগলে যে দিন কাবার হয়ে যাবানে।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আপ্নের কপাল তো দেকি খুব বালা
নিঃসন্দেহে।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
জম্পেস হয়েছে। পুলিশের সাথে কথোপকোথন বরাবরই ভালো লাগে। ভাগ্যভালো আপনাকে টিকিট দেয়নি।
আমি একবার টরন্টো থেকে বাড়ি ফেরার সময় কুয়াশার মধ্যে পড়েছিলাম। রাত তখন ১০-১১টা হবে। ভিজিবিলিটি হয়তো ২০-৩০ মিটারের বেশী ছিলনা। ১০০কিলো লিমিট থাকলেও ৬০-৭০এর উপর চালাতে পারিনি। আপনার মতই দুই লেনের মাঝখান দিয়ে চালাতে হয়েছিল। অবশ্য পুলিশের দেখা আমি পাইনি।
...............................
নিসর্গ
টরেন্টো থেকে কোথায় যাচ্ছিলেন? মানে বাড়ি কোথায় আরকি? মন্ট্রিয়াল হয়ে থাকলে আসলেই রাস্তা বেশ ফাঁকা। আর কানাডার দিকে আবহাওয়া একটু খারাপই বটে। সময় পেলে রকির ভেতর দিয়ে ক্যালগেরি হতে ভ্যাংকুভার গিয়ে দেখবেন, বুঝতে পারবেন বাজে রাস্তার সংজ্ঞা কি।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
বেশি বললে আবার গোপনীয়তা থাকেনা। তবে দক্ষিণ দিকে মিশিগানের কাছে একটা শহরে থাকি। টরন্টো, কিচেনার, লন্ডন, চ্যাথাম, উইন্ডজর, এর মধ্যে বিশেষ করে লন্ডনের আশেপাশে জায়গার ওয়েদার খুবই খারাপ থাকে। একবার ব্লিজার্ডের মধ্যে পড়েছিলাম প্রায় ১৫মিনিট, তাও দিনের বেলা। ১৮চাকার ট্রাকের পেছনে পেছনে ১০০কিমিতে চালাতে বাধ্য হয়েছিলাম। কারণ আমার সামনে পেছনে দুদিকেই ছিল এইটিন হুইলার। ঝড় থামার পরে মনে হয়েছিল, আহা জীবন কত মধুর!
ক্যালগেরিতে যাওয়ার সুযোগ এই মুহূর্তে নেই। তার উপর আমি আবার বেশি অভিযান-প্রিয় নই, হেঃ হেঃ হেঃ
...............................
নিসর্গ
থাক, গোপনীয়তা বজায় থাক। নিউ মেক্সিকো, কলোরাডো, ইউটা সহ বিভিন্ন স্থানে ব্লিযার্ডের মুখোমুখি আমাকেও হতে হয়েছে। সে অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। আর ১৮ চাকার পেছনে গাড়ি চালানো যে কি যন্ত্রণাদায়ক, তা আমি জানি।
বেশি না ঘুরলেও মিশিগানের উত্তরে তিন হ্রদের সমন্বয় যেখানে হয়েছে সেখানে যে দ্বীপটি আছে, সেখানে যেতে যেন ভুলবেননা। খুবই সুন্দর।
মিশিগানেও আমার পুলিশের সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিল। সময় পেলে সে ঘটনাও তুলে ধরব।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
পুলিশেরা কী বেসিক্যালি ভোদাই হয়?
মোটেও না। তবা মাঝে মাঝে খুব ভাল হয় বটে।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
পুলিশ ভোদাই হয় না, শুধু আজমীরের দ্বারা ওভার-বাটপারিফাইড হয়। এই ঘটনাগুলো যে শতভাগ সত্য, তার গ্যারান্টি দেওয়ার জন্য অধম আছি। আরও অজস্র ঘটনা আছে এমন। আসতে থাকুক।
r.
প্রথমেই ধন্যবাদ ধৈর্য্য = ধৈর্য বলে দেবার জন্য।
নিঃসন্দেহে তুমি আমার সাক্ষী হতে পার। কেননা, তুমিওতো ছিলে একবার।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
ভার্জিনিয়ার পুলিশও খুবই ভালো! আমাকে থামায় - (না স্পীডিং এর জন্য না, অন্যান্য নিয়ম লংঘনের জন্য) কিন্তু টিকিট দেএএএয় নাআআআআ
আমাকেও বহুবার ভার্জিনিয়ার পুলিশ আটকেছে। তবে ২ বারের বেশি কখনও টিকেট দেয়নি।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
- এইটা একটা জোশ ফটুক হৈছে। আমারও প্রায় এরকম কাহিনী আছে। পরে কমুনে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বলে ফেলুন। জানতে পারলে আমার খুবই ভাল লাগবে। বুঝতে পারব যে আমি একাই নই, আমার সাথীও আছে।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
হইতো আমাগো সার্জেন্ট, বুঝতেন কতো গমে কতো আটা।
হয়তোবা।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীরের পুলিশকণ্যা বিবাহ করা উচিৎ ।
রাজাকার ইস্যুতে
'মানবতা' মুছে ফেলো
টয়লেট টিস্যুতে
পুলিশকণ্যা বিয়ে না করে,
পুলিশকন্যা বিয়ে করলে ভাল হতো না
--
আমার এই দেশেতে জন্ম, যেন এই দেশেতেই মরি...
ভাল বলেছেন ...... চেষ্টা করা যেতে পারে
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
তাও ভালো যে ফুলিশ কন্যা লিখি নাই।
রাজাকার ইস্যুতে
'মানবতা' মুছে ফেলো
টয়লেট টিস্যুতে
এই বাংলাদেশে বইসা তুষার ঝড়ের ভেতর গাড়ি চালানো আর হাইওয়েতে পুলিশের সাথে কথোপকথনের অভিজ্ঞতাটা হেবি লাগল! একেবারে রোমাঞ্চকর গল্পের মতো!
---------------------------------------------
আমাকে ছুঁয়ো না শিশু... এই ফুল-পাখি-গান সবই মিথ্যা!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
অসংখ্য ধন্যবাদ ...... আনন্দ দিতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
ব্যাপক হইসে!
জরিমানার বদলে গার্ড অফ অনার।
আপনে মিয়া বস
এই চাপানউতোর আমাগো পুলিশমামাদের সাথে চালাইলে অবস্থা কি হইতো কে জানে ?
--
আমার এই দেশেতে জন্ম, যেন এই দেশেতেই মরি...
মনে হয় ধইরা বাইন্ধা পিটাইত।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
জোস লাগলো আজমীর ভাই!
ধন্যবাদ
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আমি ভোট দিতে পারি না, নাহলে একটা ৪ পেতো!
৪ পাওয়ার মত ভাল লেখা এটা না। নিছক সময় কাটানো ধরনের লেখা। এগুলা হল ১-১.৫ এর লেখা।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
বর্তমানে টিভি স্টার আমার এক বন্ধু এক রাতে মোহাম্মদপুরের এক বাসায় বসে ব্যাপক মালপানি খাইছে। মাতাল হয়া বাইর হইছে রাইত দুইটার দিকে, তখন তার গাড়ি নাই। রাস্তাতেও নাই কোনো গাড়ি, খালি কুত্তা। তার বাড়ি এলিফ্যান্ট রোড। এতদূর হাঁটতে হবে? নেশা ছুটে যাওয়ার অবস্থা। এমন সময় পুলিশের এক ভ্যান আইসা থামলো পাশে। উঠাইলো... নানান কথা কয়া টয়া, ঝাড়ি টাড়ি দিয়া বাড়ির সামনে নামায়া দিলো। নাইলে পুরাডা রাস্তা তার হাঁটতে হইতো!
আমার এরকম ঘটনা আছে ছিনতাইকারীর সাথে। ঈদের দুইরাত আগের ঘটনা। আমি বেতন বোনাস সব পকেটে নিয়া শেওড়াপাড়ার একটু ভিতরের দিকের এক বাড়িতে গেছি কেউ একজনরে একটা ঈদের গিফট দিতে। কখন যে রাত একটা বেজে গেছে তা খেয়াল করি নাই। সেই বাড়ির বাসিন্দার লিস্টে খালি মা আর মেয়ে। তো এই বাড়িতে রাত্রিযাপন তো ভালো দেখায় না, তাই বাইর হইলাম। একটা গলি পার হইলাম নির্দ্বিধাতেই। তারপরেই কুকুরের আক্রমন। আমি বন্ধ এক দোকানের সামনে খাড়ায়া খাড়ায়া রইলাম মূর্তির মতো। কিন্তু এইভাবে কতোক্ষন?
একসময় সেই একজনের সাথেই মোবাইলে কথা বলা শুরু করলাম। কথা বলতে বলতে কুকুরভীতি কিছুটা দূর হইলো... তারপর কথা বলতে বলতেই হাঁটতে থাকলাম। কুকুরেরা আমার পিছে পিছে। আরেকটা গলি পার হয়া দেখি এক ল্যাম্পপোস্টের নিচে কতেক তরুণ খাড়ায়া একটা মাইক্রোবাস সহযোগে।
আমি তো নিশ্চিত হইলাম আজকা একটা পয়সাও পকেটে থাকবো না। আমি মোবাইলে কথা কইতে কইতেই একেবারে তাদের দিকে তাকায়া তাদের সামনে গিয়া খাড়াইলাম। তারা তো অবাক।
বললাম ভাই, আমি কুকুর খুব ভয় পাই, খুব বাজে অবস্থায় আছি, আপনাদের তো মাইক্রো আছে, আমারে একটু মেইনরোড পর্যন্ত লিফট দিবেন?
তারা বলে খালি কুকুর ভয় পান? আর কিছু ভয় পান না?
আমি বললাম- না... আর কারে ভয় পামু?
-এত রাতে ছিনতাই হইতে পারে না?
-ছিনতাইকারী আমার কী নিবো? মোবাইল ছাড়া আর তো কিছু নাই...
তারা আমারে মেইনরোড পর্যন্ত আগায়া দিলো মাইক্রোতে কইরা।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অসামান্য! ওয়ান-পিস!!
ভাই, এটা কি করলেন?!!!!
এটাতো ভাই একদম ঠিক হলোনা।
এমন মজার কাহিনী আপনি দিলেন মন্তব্য হিসাবে। এটা কিছুতেই মানা যায় না। আপনি এটাকে একটা পোস্ট হিসাবে দিন। এটা আপনার দুই পায়ে ধরে আমার অনুরোধ থাকল। বাকি জনগণও তাহলে এরকম মজার কাহিনী থেকে বঞ্চিত হবেনা।
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.
নতুন মন্তব্য করুন