সাইকেল পর্ব
হঠাৎ হাওয়ার শব্দ এমনভাবে ঝাঁপিয়ে আসতে লাগল যে অয়ন ভড়কে গেল। উল্টো দিক খেকে বয়ে আসা প্রচণ্ড বাতাসে সাইকেলের প্যাডেল ঘোরানো এ মুহূর্তে বড্ডো কষ্টের কাজ হয়ে দাড়িয়েছে তার উপর যখন তখন বজ্রপাতের শব্দে কানে একদম তালা লেগে যাচ্ছে।
বাজার থেকে এ সময়ে সাইকেলে করে বাড়ির দিকে পা বাড়ানোটাই বোকামি হয়ে দাড়িয়েছে। প্যাডেল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সাইকেলএর চাকা দুটোকে সামনের দিকে না নিতে পেরে অয়ন সাইকেল থেকে নেমে গেল অগত্যা হেঁটে হেঁটে সামনে যেতে থাকল। ঝিরঝির করে পড়া বৃষ্টি এখন যথেষ্ট জোড়ে পড়তে আরম্ভ করেছে। সন্ধা ঘনিয়ে যাওয়ায় কাদা রাস্তার উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দলা দলা কাদা স্যান্ডেলের সাথে উঠে আসছে।
অয়ন হিসেব কষতে শুরু করলো বাজার থেকে বাড়ির পথ মাত্র সাড়ে চার কিলোমিটার, সূর্যের আলোতে এ পথটুকু পেরোতে তার মাত্র ঘন্টাখানেক সময় লাগে অথচ এখন এ অন্ধকারে বিশাল হা করে থাকা হাওরের মধ্য দিয়ে এগোতে থাকাটাকে জীবনের সবচেয়ে কষ্টকর অধ্যায় বলে মনে হচ্ছে।
সাধারনত এ সময়টাতে কেউ গঞ্জ থেকে বাড়ির দিকে পা বাড়ায়না, সকলেই দিনের আলো থাকতে থাকতে বেড়িয়ে যায়। খালি শরীরটাকে টেনে নিয়ে যাওয়া যায় অনায়াসে তবে নিজ শরীরের চেয়ে দ্বিগুন একটি ধাতব যন্ত্রকে সাথে সাথে টেনে নিয়ে যাওয়া চরম কষ্টকর অভিজ্ঞতাই বটে।
আবছা আলোতে পা বারবার পিছলে পিছলে যাচ্ছিল অয়নের। একবার ভাবল সাইকেল ফেলে রেখে যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে কিন্তু পরবর্তীতে বাড়িতে উত্তম মধ্যম খাওয়ার চিন্তা করতেই গা শিউরে শিউরে উঠতে থাকল তাই এ অন্ধকারে আপাতত সে চিন্তা বাতিল করে দিল।
আবারো বিকট শব্দে একটি বাজ পড়লো এবং সাথে সাথে দক্ষিণ দিকের আকাশটি ক্ষণিকের জন্য লালে লাল হয়ে গেলো, ভীতু অয়ন সাইকেল ছেড়ে দিয়ে বসে পড়লো। এ শোঁ-শো করে বাতাসের সাথে বৃষ্টি পড়া অন্ধকারে অয়নের মনে পড়ে গেলবারের কথা, ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসা রফিক ভাইয়ের কখা, বিকেলে অয়নদের সাখে বাড়ির পেছনের মাঠটিতে একসাথে ক্রিকেট খেললেন সেই রফিক ভাই কিনা সন্ধ্যের দিকে বজ্রপাতে নাই হয়ে গেলেন, ভাবতেই অয়নের গায়ের সবগুলো লোম দাড়িয়ে পড়লো।
চারপাশের উড়ে উড়ে যাওয়া ঠান্ডা বাতাসগুলোকে অয়নের একেকটি প্রেতাত্মা মনে হতে থাকলো। জীবনে কখনোই অয়ন ভূতে বিশ্বাস করেনি কিন্তু এ মুহূর্তে অশরীরি বিশ্বাসী সবচেয়ে খাঁটি ছেলেতে পরিনত হলো অয়ন।
যদিও সে ভূত প্রেতে কখনোই বিশ্বাস করেনি তথাপি সে সবসময় প্রার্থনা করেছে যে ইহজীবনে কখনোই সে যেনো তাদের মুখোমুখি না হয়। তাদের বাইরের ঘরটিতে এ পর্যন্ত একা একা কখনোই সে শুতে যায়নি। তার মা অবশ্য তাকে প্রায়ই ক্ষ্যাপায় এই বলে: “এত্তো বড়ো ছেলে, এখনো ভূতে ভয় পাও”
পানিফল পর্ব
অয়নের বাবা যেবার বদলি হয়ে এই দূরবর্তী ইউনিয়ন পরিষদের অফিসটিতে আসলেন তখনি বাসার পেছনের দিকটার জানালা খুলে অয়ন আবিষ্কার করলো বিশাল হাওরের এ অংশটুকু একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ছাড়া আর কিছুই নয়। বর্ষার বাতাস যথন তাণ্ডব চালায় তখন খড়কুটোর মতোই কাঁচা ঘরগুলো উড়ে যেতে খাকে।
অবশ্য রাতে ঘুমোবার সময় যখন অয়ন তাদের ঘরের টিনের চালায় বৃষ্টির ঝাপটা শুনতে পেতো, সাথে শুনতে পেতো কলাপাতার খসখসে আঁচড়ানোর শব্দ তখন এ ভেবে আশ্বস্ত হতো যে অন্তত তাদের ঘরটিকে বাতাস কোনক্রমেই উড়িয়ে নিয়ে ঐ বিশাল হাওরের মধ্যে ফেলতে পারবেনা, অয়ন কখনোই ডুববেনা ঐ বিশাল পানির রাজ্যে। ভাবতে ভাবতেই অয়ন ঘুমের রাজ্যে হারাত এবং সকালে ঘুম থেকে উঠেই আবিষ্কার করতো বাড়ির চারপাশটিতে ঝকঝকে রোদ খেলা করছে।
নিরঞ্জনের কথাটিতেই সায় দিয়ে সে নৌকায় চড়েছিল, হুটোপুটি হয়েছিল বেশ। সবচেয়ে ভাল লাগত পুরো হাওর জুড়ে ফুটে থাকা হাজার হাজার সাদা শাপলার হাসি। নিরঞ্জন বলেছিল সাদা শাপলা টেনে তোলার পাশাপাশি তারা পানিফল টেনে তুলবে, কাঁচা পানিফল খাওয়ার মতো মজা আর নেই সাথে আরো আনন্দ রয়েছে তাদের জন্য তা হলো শাপলা ঢ্যাঁপের মুড়ি খাওয়ার কখা।
ঢ্যাঁপের মুড়ি খাওয়া অয়নের জন্য এক বিশাল ঘটনা ছিল। অয়নের বাবা সবসময় বাজার থেকে খোলা মুড়ি কিনে নিয়ে আসতেন, সেটার সাথে কাঁচামরিচ, পেঁয়াজকুচি আর খাঁটি সরিষার তেল মেখে প্রচণ্ড ঝাল করে তারা মুড়ি মাখা খাওয়ায় অভ্যস্থ কিন্তু ঢ্যাঁপের মুড়ির নাম সে জীবনেও শোনেনি।
তাই নিরঞ্জনের কখায় অয়ন ভাবলো দেখতেই হবে কেমন স্বাদের এ মুড়ি তাই মাকে চমকে দেয়ার জন্য অয়ন অনেকটা চুপিচুপি নিরঞ্জনের ডিঙ্গি নৌকায় চড়েছিল। নিরঞ্জন দেখতে অয়নের চেয়ে কিছুটা খাট আর গাট্রাগোট্রা।
জাল টানতে টানতে এবয়সেই নিরঞ্জনের হাত পায়ের পেশী অনেকটা মজবুত হয়ে গেছে তাই আলগোছে সে নৌকাটিকে দক্ষতার সাখে শাপলা-হাওরের মাঝখানে নিয়ে গেল। অয়নের মনে পড়ে এ স্থানটিতে আসার বেশ কিছুদিন পরেই এক রাতের বেলায় অয়ন হাওরের মাঝখানে বিন্দু বিন্দু আলো দেখতে পেয়েছিল, সাথে সাথে বাবাকে বলতেই বাবা বলেছিলেন
“এগুলো হল মাছ মারার নৌকা, রাতে হ্যাজাক লাইটের আলোতে ‘কাঁইক্যা’ মাছ মারার দৃশ্য এটি, একদিন তুমারে নিয়া মাছ মারতে যামুনে”
অয়নের অবশ্য ‘কাঁইক্যা’ মাছ মারার বিচিত্র ও ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা অনেক পরে হয়েছিল।
নৌকায় হাওরের মাঝামাঝি আসার পরেই অয়নের মনে হতে থাকলো সে সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, সে ঠাহর হারিয়ে ফেললো, কোনভাবেই বুঝতে পারলোনা কোনদিক থেকে নিরঞ্জন তাকে আর নৌকাটিকে নিয়ে এ রাজ্যে ঢুকেছে। অয়নের ভাবনাতে বিষ্ময় ক্রমেই বেড়ে চললো নিরঞ্জনের কথা ভেবে যে এই বয়সে এতো কিছু ঠাহর করে কিভাবে।
যেদিকেই চোখ যায় সেদিকটাতেই অয়নের মনে হল ওদিক দিয়েই তারা এখানে এসেছে। নিরঞ্জন একহাতে বৈঠা সামলাচ্ছে এবং অপর হাতে টেনে টেনে শাপলা তুলে নৌকার মাঝখানটিতে ফেলছে, কিন্তু অয়নের কাছে ছেড়া শাপলাগুলোকে বিরক্তিকর মনে হচ্ছে।
অয়নের মনে হল টেনে টেনে ছিড়ে নেয়া শাপলাগুলোর চেয়ে ফুঁটে থাকা শাপলার সৌন্দর্য অনেক। প্রথমদিকে আনন্দের আতিশায্যে সে কয়েকটি শাপলা নাকের নিকটে নিতেই একটু কেমন কেমন গন্ধ তার গা গুলিয়ে দিল, সে শাপলাগুলোকে নৌকার মাঝখানটিতে রেখে পানিফল খুঁজতে শুরু করলো।
পাতার ফাঁক ফোকড় দিয়ে মাঝে মাঝে দুয়েকটি ঢোঁড়াকাটা সাপ দেখেই অয়নের বুক চাপ দিয়ে উঠলো। নিরঞ্জন বললো:
“এইগুলান ডোরা সাপ, কামড়াইলে কিচ্চু হয়না, ব্যাতা কইরা খালি ফুইল্যা যায়, আফনা আফনি ঠিক হইয়া যায়”
অবশ্য নিরঞ্জনের অভয়বানীও কিছুমাত্র সুবিধা করতে পারেনি অয়নের মনে, সে ভাবল কোনভাবে যদি একটি কামড় খায় তাহলে সে আর কখনোই বাড়ি ফিরে যেতে পারবেনা, এখানেই মরে পরে থাকবে, নিরঞ্জন তাকে এখানেই পানির মধ্যে ফেলে রেখে চলে যাবে। অয়ন জীবনেও আর ‘ম্যাকগাইভার’ দেখতে পারবেনা। সে শাপলা তোলা বাদ দিয়ে নিরঞ্জনকে বললো ‘পানিফল কই?’
নিরঞ্জন বললো:
“আরে খাড়াও, পানিফল থাকে শাপলা পাতার নীচে, হাত ঢুকাইয়া টাইন্যা ধইরা তুইল্যা নিয়া আসতে হয়, কাচা খাউন যায়, খুব মজা লাগে”
অয়নের মনে কাঁচা পানিফল খাওয়ার চিন্তা প্রচণ্ডরকম জেঁকে বসলো, সে ভাবলো কোনভাবেই পানিফল না খেয়ে বাড়ির পথ ধরা যাবেনা, জীবনে অনেক রকম ফল খেয়েছে, কিন্তু পানিফলের নাম সে জীবনেও শোনেনি কিংবা চেকেও দেখেনি।
চিন্তা করতে করতেই নিরঞ্জন পানিফল একটি দুটি করে টেনে তুলতে শুরু করলো। অয়নের মূল লক্ষ হয়ে দাড়ালো পানিফলের স্বাদ নেয়ার জন্য। সেও নিরঞ্জনের দেখাদেখি দুয়েকটির খোসা নখের সাহায্যে তুলে ফেলে মুখে পুরে দিল, অনুভব করতে চাইলো পানিফলের অকৃত্রিম স্বাদ-রহস্য।
কিছুক্ষনের মধ্যেই অয়নের হাত ও চলে গেল শাপলা পাতার নীচে তবে অনেকটা ভয়ে ভয়ে। অয়নের হুঁশ ছিলনা নৌকার কিনারে চলে যাওয়ায় নৌকা ক্রমেই কাত হয়ে পড়েছে। দুয়েকবার টাল সামলাতে পারলেও একটি বিকট আকারের শাপলার ডগা ধরে টান দিতেই অয়ন হুড়মুড়িয়ে পানিতে পড়লো।
পানিতে পড়ার মুহূর্তে অয়নের চোখ একদম অন্ধকার হয়ে গেল, পানি প্রবলবেগে নাকমুখ দিয়ে ঢুকতেই সে হাত পা নাড়ানো শুরু করলো। ভাগ্যিস! সাতার শেখা ছিল। তবে চতুর্দিকে বিভিন্ন ধরনের লতাপাতায় প্যাঁচিয়ে ধরার কারনে ভেসে থাকার চেষ্টা তার জন্য কঠিন হয়ে গেলো।
অয়ন পানিতে পড়ে যাওয়ার পরপরই নিরঞ্জনের খেয়াল হলো অয়নের দিকে, সাথে সাথে অয়নের নৌকার দিকটায় চলে আসার চেষ্টা করতেই নৌকা এক ঝাঁকুনিতে অয়নের মাথার উপর চলে আসলো। অয়ন নৌকার প্রান্ত ধরার চেষ্টা করতেই তলিয়ে গেল নৌকার নীচে।
অয়নের রাজ্যে এখন কেবলই অন্ধকার, চতুর্দিক থেকে প্রেতাত্মারা তাকে ধরে নিয়ে যাবার জন্য আসছে। সে বাঁচার জন্য তীব্রভাবে চেষ্টা করে চলেছে, যখন ভাসার চেষ্টা করলো তখন বুঝতে পারলো মাথার উপর নৌকার তলাটি ঠেস দিয়ে আছে। পানির নীচে ঘোলা ছাড়া আর বিশেষ কিছু নজরে আসলোনা। তার মনে হচ্ছে অদৃশ্য কোন একটাকিছু তাকে এই বুঝি টেনে নিয়ে যাচ্ছে, সে তলিয়ে যেতে যেতে গভীর কোন অন্ধকার রাজ্যে প্রবেশ করছে। অয়নের মনে হল হঠাৎ কোন অশরীরি হাত তাকে অনেক দূর থেকে টেনে তুলতে শুরু করলো, সে ভেসে উঠতে থাকলো।
শেষ মুহুর্তে অয়নের হাতটিকে নিরঞ্জন ধরে ফেলতে পারলো, নৌকার নীচের দিকে কিছুটা হাত ঢুকিয়ে অয়নকে সে টেনে তুলতে শুরু করলো। নিরঞ্জন ভেবেছিল অয়ন একাই উঠে যেতে পারবে কিন্তু যখন সে নৌকার নীচে চলে গেল তখন ভাবলো সে হাত দিয়ে ধরতে না পারলে একেবারে পানিতে নেমে অয়নকে উপরে টেনে তুলবে। যেহেতু পানির গভীরতা এ অংশে বেশী নয় তাই অনায়াসে সে তাকে টেনে তুলতে পারবে।
বাড়িতে ফেরার পর নিরঞ্জনের উপর উত্তম মধ্যমের ব্যাপারটি অয়ন সারাজীবনের জন্য ভুলে যেতে চাইবে।
সমন্বয় পর্ব
বাবার অবশ্য প্রচণ্ড ভয় কাজ করে এই বজ্রপাতের উপর। আরেকটি বাজ পড়ার সাথে সাথে অয়ন জমে গেল, তার নিজের উপর নিজের বিরক্তি এসে ভর করলো, কেন সে আগের দুজনের সাথে একইসময়ে বাড়ির পথে রওনা হলোনা। বাড়িতে নিশ্চয়ই সকলে তার জন্য অপেক্ষা করে আছে।
তার সারা শরীর অবশ হয়ে আসছে, বৃষ্টির ছোঁয়া ও ক্লান্তিতে এখনি মাটিতে শুয়ে পড়তে ইচ্ছে করছে। অবশেষে সাইকেলটাকে একটি শক্ত গাছের নীচে হেলান দিয়ে রেখে হাঁটতে শুরুই করলো, ভাবলো ঝড় কমলে পরে এসে সাইকেল নিয়ে যাবে।
সাইকেল ছেড়ে দেয়ায় অয়নের এখন খুব হালকা হালকা বোধ হতে থাকলো। জামা কাপড় ভিজে শরীরের সাথে লেপ্টে গেছে। সেদিকে অবশ্য এখন তার কোন ভ্রূক্ষেপ নেই, মাথায় শুধু ভন ভন করে ঘুরছে কিভাবে তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌছা যায়।
ব্রিজ কখন পার হলো অয়নের কোন খেয়াল নেই অখচ সুস্থ মস্তিষ্কে থাকলে একা একা ব্রিজ পার হওয়ার জন্য বিশবার চিন্তা ভাবনা করতো। এটা সেই ব্রিজ যেখানে হিন্দুদের সব মড়াগুলো পোড়ানো হয়। এই সেদিনো পেছন পাড়ার হিন্দু যোগিনীকে এখানে নিয়ে এসে পোড়ানো হয়েছিল। ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো।
অয়ন খুব জোড়ে জোড়ে হাঁটতে থাকলো, বাতাসের বেগ ক্রমেই বাড়ছে। ঐতো কিছু দূরে আবছা আলোর মতোন তাদের গ্রামের শেষ মাথাটিকে দেখা যাচ্ছে, আরেকটু পরেই সে পৌছে যাবে। চলার পথে ঝড়ে প্রচুর ডালপালা ভেঙ্গে ছড়িয়ে আছে, কোনটিকে মাড়িয়ে কোনটিকে এড়িয়ে অয়ন চলছিল।
কিছুদূর এগোনোর পর অয়নের সামনে আরো দুটো ভাঙা গাছের অংশ পড়লো। একটি পখের মাঝে আড়াআড়ি আর অন্যটি একপাশে হেলে আছে। এমুহূর্তে দূরে একটি বাজ পড়ায় চারপাশ আলোকিত হয়ে পড়লো, অয়ন ভাবলো ‘যাক বাবা দেখে শুনে যাওয়া যাবে।'
যেইমাত্রনা গাছটির উপর পা দেবে তেমনি বাজের আলোতে তার নজরে পড়লো আসলে ওখানে শুয়ে হাঁ করে আছে একটি মানুষ, চোখদুটো প্রচণ্ডভয়ে উল্টে আছে, জিভ যেন অনেকখানি লটকে আছে মুখ দিয়ে বের হয়ে। মনে হলো হা পা কুঁকড়ে শুয়ে আছে ভয়ঙ্কর ধরনের কোন মানুষ, মানুষ না বলে বিকৃত অন্য কোন কিছু বলাই বরঞ্চ শ্রেয়।
অয়ন আর পাশের পড়ে থাকা গাছটির দিকে তাকানোর সাহস করলোনা বরং প্রচণ্ডবেগে দৌড়াতে শুরু করলো, কেবলি মনে হতে থাকলো পেছন থেকে তার দিকে ধেয়ে আসছে অশরীরি জীবটি, কতোক্ষণ সে দৌড়েছিল ঠিক তার মনে নেই তবে জ্ঞান ফেরার পর সে দেখল বাবা তার দিকে অপলক চেয়ে আছে। তাদের ঘর ভর্তি মানুষজন, সকলেই বলাবলি করছে ওপাড়ার মুকুন্দ আর ছোটভাই গতকাল রাতে বজ্রপাতে মারা গিয়েছে যারা তার আধাঘন্টা পূর্বেই বাজার থেকে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছিল।
মন্তব্য
শিরোনামটা ঠিক করলে ভালো লাগে।
শিরোনামটা ঠিক করলে ভালো লাগে।
#ধন্যবাদ জামাল খান ভাই আপনাকে। শিরোনামের সমস্যা ঠিক কোথায় ধরতে পারছিনা, বলে দিলে পরবর্তীতে সতর্ক থাকতে পারতাম। জীবন কখার বাঁকে: অয়ন চরিত মূলত অয়নের ফেলে আসা জীবনের অনেকগুলো বাঁকের বা খণ্ডিত অংশের প্রতিচ্ছবি, তাই অয়ন চরিত নামে শিরোনাম করা হয়েছে।
#তারপরেও পরবর্তীতে লেখার শিরোনামের ব্যাপারে যথেষ্ট খেয়াল থাকবে।
#ভাল থাকুন সবসময়, এ প্রত্যাশা
অসাধারণ আশরাফ। আপনার গল্প বুননের কারিশমা সত্যিই মুগ্ধকর। কয়েকটা বানান ঠিক করে নেবেন।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
অসাধারণ আশরাফ। আপনার গল্প বুননের কারিশমা সত্যিই মুগ্ধকর। কয়েকটা বানান ঠিক করে নেবেন।
#প্রিয় সুমাদ্রী ভাই, অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর ও গঠনমূলক মনোভাব উন্মোচন করার জন্য। ভালবাসা জানবেন।
#ভাল থাকুন সবসময়, এ প্রত্যাশা
#পুনশ্চ: ভুল বানানগুলো লেখার সময় কোখায় যে লুকিয়ে থাকে
গল্পের গঠন দারুণ। পড়তে ভাল্লাগসে
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
গল্পের গঠন দারুণ। পড়তে ভাল্লাগসে
#অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে প্রিয় রিশাদ ময়ূখ। ভাললাগায় আনন্দিত হলাম।
#ভাল থাকুন সবসময়, এ প্রত্যাশা
______________________________
জানালাটি খুলে দিও কোন এক পৌষের কোলাহলে।
ইরেজারে মুছে দিও সবগুলো কাল্পনিক খসড়া চিত্র,
অযথা সব আঁকাআঁকি, কাটাকুটি পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে
বিটোফেনের বিষাদময় এক করুন আবাহনের সুরে।
আহা, সেই কতোকাল আগে সাইকেল চড়েছি। রাত দুপুরে নৌকায় করে আলোকাটায় মাছ মারা দেখেছি। আপনার লেখা সেই সব দিনগুলোতে নিয়ে গেল, মনে হলো যেন সেই দিনগুলোতেই ফিরে গিয়েছি।
ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
#অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় প্রৌঢ় ভাবনা আপনাকে, লেখা ভাল লাগায় আনন্দিত হলাম, ভাল থাকুন সবসময়, এ প্রত্যাশা
_______________________________________
সময় হয়েছে আবারো, তাই
মিশে যেতে চাই কোলাহলপূর্ণ পৃথিবীতে
অধরা হয়ে থাকুক ডানাকাটা পাইন
সময় শকটে যদিওবা চলে যাই
মেনে নিও স্ক্র্যাপখাতার আইন।
নতুন মন্তব্য করুন