কানাডা যাবার পর আমার মনে হয় আমার জীবনের সব চেয়ে বড় ভুলটা আমি করে বসেছি। দেশের যে সব ব্যাপার আমার কাছে আলাদা ভাবে অর্থবহ ছিল না আশ্চর্যজনক ভাবে ঠিক সে জিনিস গুলোই আমার বেশী বেশী করে মনে পড়তে থাকে। বাংলাদেশের রাস্তার ধূলো, সকালে কাকের ডাক, বিকালে মাগরিবের আযান, রাস্তায় রিক্সার বাড়াবাড়ি, ফার্মগেটে মানুষের ধাক্কা, টং দোকানের বেশী মিষ্টি চা কিংবা দুই টাকার ঝালমুড়ির চিন্তা আমাকে কাতর করে তোলে।
আমি চার মাস পরেই তিন মাসের জন্য দেশে চলে আসি।
সময় কাটতে থাকে।
কাজের চাপে এবং অর্থনৈতিক দৈন্যতার কারনে আমার দেশে আসার হার কমতে লাগে। আমি বিস্ময় নিয়ে দেখি আস্তে আস্তে আমার মনের পরিবর্তন হচ্ছে। আমার কাছে কানাডার মানেও পরিবর্তিত হতে থাকে। কেউ কানাডা নিয়ে কটু কথা বললে আমার সেটা গায়ে লাগে। নির্বাচনের আগে আর সবার সাথে আমিও প্রিপোল এ চোখ রাখি। আগে কানাডিয়ানদের সাথে কথা শুরু করতাম, ‘তোদের’ বলে, আস্তে আস্তে বলতে শুরু করলাম ‘আমাদের’। সব চেয়ে বড় ধাক্কা খেলাম যেদিন টরান্টো থেকে থান্ডার বে, চব্বিশ ঘন্টার রাস্তা গেলাম ড্রাইভ করে, এক বড় ভাইয়ের সাথে। এত অপরূপ দৃশ্য আমি খুম কম দেখেছি! ঘন্টায় ঘন্টায় চারপাশ, দিগন্ত বদলে যেতে লাগলো। আমি বিস্ময়াহত চোখে ব্যকুল তাকিয়ে ভাবলাম, ‘আমাদের দেশটা এত সুন্দর’! কথাটা মনে আসতেই সম্বিত ফিরে আসে। অবাক আমি ভাবি, এ কি হলো! আমি কি বদলে গেলাম। আমি কি আর বাংলাদশী থাকলাম না?
শুধু তাই নয়।
দেশে এসে আমি এমন সব জিনিসের বিরহ বেদনায় কাতর হতে লাগলাম যা কানাডায় থাকা অবস্থায় কোন অর্থ বহন করতো না। সাবওয়ের দরজা বন্ধ হবার আগে টুংটাং সতর্ক ঘন্টি, রাস্তার মোড়ের হটডগ স্ট্যান্ড, টিম হর্টনসের কফি, রাস্তার চারপাশে বরফের স্তুপ, অচেনা পথিকের সিগারেট চাওয়া, বিস্তৃত খোলা মাঠে গাছের তলে একা বসে বই পড়া, ডাউনটাউনে মানুষের ব্যস্ত পদচারণ কিংবা অ্যাপার্টমেন্টের মেইলবক্সে একশ জাঙ্ক মেইল।
ভয়ংকর কিছু আবিস্কার করে ফেলতে পারি সে ভয়ে আমি আমার মস্তিষ্কে ইনডেমনিটি আইন জারী করলাম। এ বিষয়ে অহেতুক চিন্তা নয়। মনের সংশয় মনেই চাপা থাক।
এ সংশয় দূর হয়ে যায় অতর্কিতেই, এই কদ্দিন আগে।
আমার জীবনের সংচেয়ে অসহনীয় মুহূর্তটি হলো দেশের মাটিতে উড়ানের চাকা ছুঁবার আগ মুহুর্ত।
কানাডা থেকে আমি দেশে আসি মধ্যপ্রাচ্যের কোনো এক দেশ হয়ে। সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কাতার, ইরাক, কুয়েত কিংবা অন্য কোনো আরব দেশ। সেসব দেশে যাবার আগে পর্যন্ত আমার যাত্রা খুব ভাল যায়। আরব দেশ থেকে উড়ান বদলানোর পর থেকেই আমার ভেজা ফ্রাই হতে থাকে।
এসব দেশ থেকে আমাদের শ্রমিক ভাইরা ওঠেন। ওঁদের দেখলেই আমার মনটা খারাপ হয়ে যায়। কি অমানুষিক পরিশ্রম যে এই মানুষ গুলি করেন, আর কি পরিমান খারাপ ব্যবহার যে তাঁরা তাঁদের মনিবদের কাছ থেকে পেয়ে থাকেন তা আমি নিজের চোখে দেখেছি।
এ শ্রদ্ধার উপরে বিরক্তির প্রলেপ দেয়াটা খুব কঠিন, সে কঠিন কাজটাই তাঁরা খুব সাবলিল ভাবে করে ফেলেন।
উড়ানে উঠেই প্রথমে যে জিনিসটা দেখবো সেটা হলো আমার সিটে অন্য কেউ বসে আছেন। আমার এ প্রবাস জীবনে একবারো এমন হয়নি যে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ থেকে আমি বিমানে উঠেছি কিন্তু আমার সিটে অন্য কেউ আসীন ছিলেন না।
আমি খুব নম্র ভাবেই বলি, ‘ভাই, এটা আমার সিট।’
এর জবাবটাও আমার মুখস্থ, ‘কি ভাই? এখানে বসবেন? আমি তো আগে বসছি?’
এ সমস্যার সমাধান হবার পরেই উড়ানের অন্যদিকে একটা মারামারি কিংবা ঝগড়া লেগে যাবে। এটাও নিয়মিত ব্যাপার। মারামারির কারন খুবই তুচ্ছ। যেমন একবার এক শ্রমিক ভাই লাগেজ বিনে আরেকজনের ব্যাগ সরিয়ে নিজেরটা রাখলেন। যাঁর লাগেজ সরানো হয়েছে উনি মানবেন কেন? কথা কাটাকাটি থেকে ঘটনা খুব সাবলিল ভাবে হাতাহাতিতে চলে গেল। মধ্যবয়স্ক দু’জন মানুষ একজন আরেকজনকে ঘুষি মারার চেষ্টা করছেন, অন্য যাত্রীরা তাঁদের জাবড়ে ধরে আছেন, কেবিন ক্রুরা নিরাপদ দূরত্ব থেকে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে কি হচ্ছে বোঝার চেষ্টা করছেন। খুব একটা সুখের দৃশ্য নয়।
আরেকবার এক ভদ্রলোক বাচ্চার সিটবেল্ট বাঁধবেন না। কারন বাচ্চা ভয় পায়। কেবিন ক্রুও নাছোড়বান্দা, সিটবেল্ট না বাঁধলে উড়ান উড়তে দেবেন না। ভদ্রলোককে অনেক বোঝানো হলো এটা বাচ্চার ভালোর জন্যই, সিটবেল্ট না বাঁধলে যে কোনো এ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যেতে পারে। আমাদের ফ্লাইটের আধা ঘন্টা বিলম্ব হয়ে গেল সে সমস্যা সমাধানে।
যাত্রাপথে ছোট খাট ঝগড়া চলতেই থাকে। যেমন একবার দেখলাম কার দেশের বাড়ি কোথায় সে আলোচনা থেকে তুমুল ঝগড়া লেগে গেল। আর মাঝ আকাশে ওয়াশরুমে সিগারেট ধরানোটাও একটা সাধারণ ঘটনা। উড়ান ছাড়ার দু’ঘন্টা পর অবধারিত ভাবেই সেটা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
কেবিন ক্রু যারা এ রুটে নিয়মিত, তারাও এসব ব্যাপারে বেশ পারদর্শি। নির্দ্বিধায় যাত্রীকে ধমক মেরে বসেন। ওদের কাজে কর্মেও একটা ঢিলেমি থাকে। একবার এক ভদ্রলোকে দেখলাম অসংখ্য বার পানি চেয়েও পেলেন না। ডেকে সামান্য ঝাড়ি দিতেই অবশ্য ম্যাজিকের মত কাজ হয়।
আমি খুব চেষ্টা করি আমাদের এ কর্মঠ মানুষ গুলোকে যথাসম্ভব সাহায্য করতে। এমন অনেকবার হয়েছে কারো কিছু লাগলে আমার আশেপাশের সবাই আমাকে বলছেন, আমি সেটা কেবিন ক্রুকে বলে আনিয়ে দিচ্ছি। নামার এক-দেড় ঘন্টা আগে আমার ব্যস্ত সময় কাটে অবতরণ ফর্ম পূরন করে দিতে। আমাদের শ্রমিক ভাইদের একটা বড় অংশ যে সম্পূর্ণ নিরক্ষর এটা আমি তখনই আবিষ্কার করি!
আমাদের বাঙালিদের গোয়ার্তুমির ব্যাপারটা বেশ মজার। তাঁরা যে ফর্মটা নিজে পূরণ করতে পারবেন না এটা স্বীকার যাবেন না। এ সময়ে সাধারণত আমার পাশের সিটের যাত্রী খুব অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেন। তাঁর চড়া গলা শোনা যায়, ‘কি মিয়া পারবেন না? সেটা আমারে আগে কইবেন তো?’ কিংবা ‘ওই মিয়া ওইডা হাতে নিয়া বয়া আছেন ক্যান? দেন আমারে দেন!’ অথবা ‘কি হইছে? এখনো হয় নাই! আমারে দিলেই তো হয়া যাইতো এক্ষণ!’ আমার মজাই লাগে। উনিই সব পাসপোর্ট আর ফর্ম এক করে আমাকে দেন, আমি দ্রুত লিখে কোথায় স্বাক্ষর করতে হবে তা দেখিয়ে দেই।
আমাদের বাঙালিদের ধন্যবাদ দেয়ার ধরণটাও খুব মজার। কেউ হয়তো কয়েকটা খেজুর আমার পাশের যাত্রীর মাধ্যমে আমাকে দিলেন। কেউবা এসে অহেতুক আমার সাথে অপ্রাসঙ্গিক কোনো ব্যাপারে আলাপ শুরু করে দিলেন। কিংবা আমি ঘুমিয়ে আছি ভেবে কেউ সহযাত্রীকে বললেন ‘হের গায়ে কম্বলটা দিয়া দেন।’
বলছিলাম নামার ঠিক আগে আমার জীবনের সবচেয়ে অসহনীয় মুহুর্তটির কথা।
নামার ঠিক আগে আমার সারা দেহে এক অদ্ভুত শিহরণ বয়ে যায়। মাথায় একলক্ষ চিন্তা একসাথে জমাট বাঁধে। আমি কিছুতেই মন দিতে পারি না। গায়ের রোম খাড়া হয়ে যায়। তেষ্টা পায়। তিরতির করে কাঁপতে থাকে হাত।
আমার যখন এ অবস্থা ঠিক তখনি উড়ানে শুরু হয় অসহনীয় আবেগের এক অসহ্য বিচ্ছুরণ। হঠাৎ করেই হয়তো আযান দিতে থাকেন কোনো এক অতি আনন্দিত মানুষ। কেউ হয়তো কেবলি বলতে থাকেন, ‘আমাদের দেশ... দেখছেন ভাই? আমাদের দেশ! কত্ত ছোট রে আমাদের দেশটা! দেখছেন ভাই? ভাই দেখেন...’ আমার পাশের ভদ্রলোক শুরু করেন হাউমাউ কান্না, ‘ভাইরে আমার ছেলেটারে দেখিনা আট বছর!’
আমার ইচ্ছে হয় আমিও চিৎকার করে কাঁদি!
কোন শালা বলে আমি আর বাংলাদেশী নাই?
© অমিত আহমেদ
মন্তব্য
.......................................................................................
প্রিয় পোস্টে এ্যডিত হইল ...
আপনি কানাডিয়ান হয়ে গেছেন কে বললো? কী সুন্দর একটা বাঙালি ছবি তুলে এনেছেন - পরবাসী বাঙালির এক টুকরো।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
হুম...টিম হর্টন্সের কফি...খাঁটি কানাডিয়ান ট্রেডমার্ক
ধন্যবাদের ধরণের ব্যাপারটা দারুণ বলেছেন। আম্রিকানদের মতো সারাক্ষণ জিভের আগায় থ্যাংকিউ লাগায় রাখতে আগে আমিও পারতাম না। একবার এক প্রবাসী বাংলাদেশী ভদ্রলোক আমাকে একটু হেল্প করেছিলেন, আমি বোধহয় ধন্যবাদ বলতে ভুলে গিয়েছিলাম (আসলে মুখে শুকনো ধন্যবাদ দিয়ে তার সহযোগিতাকে ছোট করতে চাই নি)। কিন্তু ভদ্রলোক খোঁচা দিয়ে বল্লেন, আমেরিকানরা উন্নতি করেছে, কারণ কেউ কিছু করলে ওরা সেটা এপ্রিশিয়েট করে; আর বাঙ্গালীরা নাকি কেউ কিছু করলে মনে করে ওটা তার হক ছিল! ভদ্রলোক বয়সে বড় হওয়ায় সেদিন মুখে কিছু বলতে পারি নি। কিন্তু আসলে আপনার কথাগুলোই বলতে চেয়েছিলাম। আমাদের মতো করে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ দিতেও কেউ পারে না। গায়ে কম্বলটা টেনে দেয়া, যেচে একটু বেশী কথা বলা, দোকানে খাওয়ার বিলটা দেয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করা, ইত্যাদি বিদেশীদের ঠুনকো থ্যাংকিউর চেয়ে কি বেশী আন্তরিক নয়?
========
"পুনরায় রৌদ্রহীন রৌদ্রে আমি, পথহীন পথে"
নিঃসন্দেহে!
ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল
একদম নিজের কথা মনে হচ্ছিল পড়তে পড়তে। খুউব ভালো লাগলো!
- শেষ প্যারাটায় এসে ধাক্কা খেলাম বুঝি।
দেশের প্রতি ওঁদের মায়া দেখলে মনে হয়, কি হইলাম জীবনে, না ঘরের না ঘাটের!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
যে দেশে পরবাসী, তার প্রতি ভালোবাসা জন্মালে অপরাধবোধে ভোগার কোনও কারণ নেই। এই ভালোবাসার সঙ্গে মাতৃভূমিকে ভালোবাসার সম্পর্ক অন্তত আমি দেখি না।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
যে দেশে আপনি আছেন,
যেই দেশটা আপনাকে এতো এতো যোগ্যতা দিল,
সেই দেশকে ভালো না বাসাটাই অন্যায়।
প্রবাস ভালো বাসলে
নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসা কমে যায়না অমিত।
মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমিকদের ব্যাপারে আরো
ঘটনা জানা থাকলে লিখবেন কি?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
ধুত্তোর...শুধু শুধু চোখে পানি আনিয়ে দেন...
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
দেশে গেলে প্রবাসের জন্য মন কাঁদে, প্রবাসে আসলে কবে দেশে যাবো এই দোলা চালে কিভাবে যে সময় গড়ায় টেরই পাইনা!!
না হইলাম দেশি, না বিদেশী !!
আমি এক যাযাবর...
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
আগের সবসময় বৃটিশ এয়ারেই উড়েছি । এই প্রথম এমিরেটস এ । দুবাই ই গিয়ে ভালোই অভিজ্ঞতা হবে মনে হচ্ছে
----------------------------------------
শমন,শেকল,ডানা
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
অসম্ভব ভালো লেখা।
বাঙালির থ্যাংকু না বলায়ও আন্তরিকতা প্রকাশের কমতি থাকে না, তবে অন্যভাবে; এটা সবসময় চোখে পড়ার মতো।
ফুটপাতে যখন তখন চা খাওয়ার আনন্দ যেখানে সেখানে বসে আড্ডা দেয়ার স্বাধীনতা পৃথিবীর কোথায় পাওয়া যাবে ? তিন বছর পরবাসে থেকেও মনটাকে প্রবাসী বানাতে পারি নি। ফিরে এসেছি দেশে। অথচ অনেকেই দেখেছি কী অবলীলায় দেশকে গাল দিয়ে বসে। প্রবাসী আত্মীয়দের কেউ কেউ উন্নত দেশগুলোর তুলনায় দেশটা কত নিকৃষ্ট আর কত জঘন্য তার উদাহরণ দিতে দিতে হয়রান হয়।
দারুন লিখেছেন। ধন্যবাদ
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
ভাই শেষ বলে একদম ছক্কা মারলেন।
* প্রিয় পোস্টে যোগ হল।
** ৫ দাগানো হৈল।
-----------------------------------------------------------
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
(বিপ্লব)
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
দুই সপ্তা পর ব্লগে ঢুকেই এমন অসাধারণ একটা পোস্ট দিয়ে শুরু করলাম .... আমার পড়া সেরা পোস্ট .... অসাধারণ অনুভূতি, অসাধারণ অভিব্যক্তি ...বিপ্লব
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
গ্রাম ছেড়ে আমরা শহরে আসি
ফের শহর বদল করি
মায়া সঙ্গে আসে
মায়া ঘুমে, মায়া তন্দ্রাচ্ছন্নতায়
মায়া সর্বত্র ছড়ানো
মায়ায় মায়ায় ভরা এ জগৎ
মায়াই আঁঠার মতো লেগে থেকে
এ জগৎ অখণ্ড রেখেছে
..................................................................................
শোনো, বীণা আমি বাজাইনি প্রতিবারই নিজে, এমনও হয়েছে
বীণায় রেখেছি হাত, নিজেই উঠেছে বীণা বেজে!
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
অসাধারণ পোস্ট। দেশে ফিরেছি কাতার এয়ারে। সেসময়ের কিছু অভিজ্ঞতার কথা লিখবো লিখবো করে লেখা হয়নি, আপনার লেখা থেকে অনুপ্রেরণা পেলাম। আশা করছি দু'এক দিনের মধ্যে সেটা সম্ভব হবে।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
হুমম!
আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
• কিংকর্তব্যবিমূঢ় / সবজান্তা / মুহম্মদ জুবায়ের / মুজিব মেহদী » আমি আপ্লুত! অসংখ্য, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদেরকে!
• সুশান্ত / ধুসর গোধূলি » এই মায়া এই ঘৃণা, আমরা বাঙালিদের মাঝে এতো রহস্য!
• লুৎফুল আরেফীন » প্রবাসী আমাদের সবার গল্প কিন্তু সেই কয়েকটা ধাঁচের মধ্যেই ঘুরপাক খায়।
• সংসারে এক সন্ন্যাসী / রানা মেহের » একমত। তবে এ ব্যাপারটাই প্রবাসী হবার আগে ঘাড় গুঁজে অস্বীকার করতাম। এখন বুঝতে শিখেছি।
• নিঘাত তিথি » দুঃখিত তিথি!
• থার্ড আই » লাইফের আয়রনি তো এই
• হাসান মোরশেদ / ঝরাপাতা » অভিজ্ঞতা নিয়ে বিশদ লেখা চাইছি। তবে দেরি করে বোর্ডিং করলে আপনার সিটে যে অন্য কাউকে পাবেন সে বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পারেন।
• ধূপছায়া » আংশিক ভাবে একমত। এখন সময় পালটে যাচ্ছে। কেউ সাহায্য করলে এক ধরনের মানুষ স্বার্থ খোঁজে, ভাবে স্বার্থ ছাড়া কি সাহায্য করে কেউ। আরেক ধরণের মানুষ ভাবে কিসের সাহায্য এটা তার ন্যায্য প্রাপ্য ছিলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, অতিথি হিসেবে কমেন্টের কষ্ট অগ্রাহ্য করে উৎসাহ দেবার জন্য।
• মাহবুবুল হক » দেশকে গালি দেয়া লোকের সংখ্যাই কিন্তু চোখে পড়ে বেশি... ইচ্ছে করে... থাক বললাম না! আপনাকে ধন্যবাদ!
• বিপ্লব রহমান / সৌরভ » ধন্যবাদ আপনাদেরকে।
• জ্বিনের বাদশা » এমন কমেন্ট পেলে কেমন করে যেন ছাতিটা বেড়ে যায় দু'ইঞ্চি!
ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল
সবসময়ের মতই অসাধারণ লেখা।অনেক অনেক দিন পর মনে হল চোখে রাজ্যের মেঘ!
অমিত, আমিও কাক মিস করি।মশা মিস করি।ফুচকা মিস করি।রাস্তার ঝাঁকি মিস করি।বইমেলা মিস করি।আমার ভাইয়ামনি কে মিস করি।আমি আমাকেও খুব বেশি মিস করি।মনে হয় প্রবাসে আমরা কেউই মানুষ না।
ওয়েলশ ব্রিটিশ আইরিশ আর স্কটিশরা একে অন্যকে দেখতে পারেনা।অথচ আমরা কেউ হেটে গেলে ঠিক একভাবেই "রক্তাক্ত হেনতেন" বলে গালি দেয়।কেন যে আসলাম মরতে!
::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::
::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::
অসাধারণ! অসাধারণ! অসাধারণ!
অসাধারণ পোস্ট!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
এত ভালো লাগায় নির্বাক হয়ে গেলাম....................................
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
নতুন মন্তব্য করুন