ফেলে দেয়া প্লটগুলোর জন্য এলিজি

অমিত আহমেদ এর ছবি
লিখেছেন অমিত আহমেদ (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৩/০৩/২০০৮ - ৭:৪৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

ছোটবেলা থেকেই আমার সাথে একটা নোটবুক রাখার অভ্যাস। নোটবুক বলতে আমি গুড ওল্ড কাগজের নোটবুকই বোঝাচ্ছি। যেখানে কলম কিংবা পেন্সিল চালানো যায়।

আমার সেই নোটবুকে হাজারো আঁকিবুকিতে ভরা থাকে। কোনো সামঞ্জস্য নেই, খুঁজে পাওয়া সম্ভন নয়। হঠাৎ মাথায় আসা কোনো গল্পের প্লট, সেলুলোজ এর গঠন, সিনাপসর কাজের ধরণ, স্পাইডারম্যানের প্রধান শত্রুদের নাম, পড়তে হবে এমন বইয়ের তালিকা, এমন আরো শত সহস্র হাবিজাবি।

নোটবুকের আকার হতে হবে পকেটে ভরে রাখার মত। বেশি বড় কিংবা ছোট নয়। পাতায় দিন তারিখ লেখা থাকলে হবে না। প্রতিটি পাতাই হতে হবে আনকোড়া।

সব সময় সাথে নোটবুক রাখা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে পাঞ্জাবি কিংবা আনুষ্ঠানিক জামা পড়লে পকেটে এই জিনিসটার সংকুলান হয়ে ওঠে না। তখন আমার কাজ চলে ন্যাপকিন কিংবা রেস্তোরায় দেয়া বিলের উলটো পিঠে। বাসায় এসে সেই টুকটো কাগজ গুলোরও জায়গা হয় সেই নোটবুকের ভেতরে।

তাই খুলে আসা পাতা আর বিচ্ছিন্ন কাগজ সামলানোর জন্য আমার নোটবুকের খোলা প্রান্তে অবশ্যই কিছু একটা ব্যবস্থা থাকবে। হোক না সেটা টিপ বোতাম কিংবা আদি ও অকৃত্রিম রাবার ব্যান্ড।

তাই শেষ-মেষ নোটবুকটার চেহারা গিয়ে দাঁড়ায় সেই ড. জোনসের ডায়রির মত। একটা ছবি দিলাম ভদ্রলোকের ডায়রির।

নোটবুকের স্থায়িত্ব হয় পাতা ফুরাবার আগ পর্যন্ত। আমার বন্ধুরা আমাকে একটা কথা মাঝে মাঝে বলে সেটা হলো আমার মধ্যে আঁকড়ে ধরে রাখার ব্যাপারটা নেই। হুট করে আমি আমার খুব প্রিয় কাউকে, কিছুকে আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলতে পারি। সেই মতবাদকে প্রমান করতেই যেনো আমি পাতা ফুরাবার সাথে সাথেই আমার সর্বক্ষণের সঙ্গি নোটবুকটিকে আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলি। সেই সাথে আস্তাকুঁড়ে চলে যায় না লেখা গল্পের প্লট, তাচ্ছিল্য ভরে আঁকা কার্টুন, আর সংগ্রহ করা তথ্য গুলো।

আজ আমার নোটবুকটার পুরানো পাতা গুলো ঘাঁটতে গিয়ে চমৎকার কিছু গল্পের প্লট পেয়ে গেলাম। সে থেকে আট-দশটা গল্প, দুইটা উপন্যাস সহ মোট পঁচিশ-ত্রিশটা লেখা চোখ তো অনায়াসে নামিয়ে ফেলা যায়। এখন আফসোস হচ্ছে না জানি আমার পুরানো নোটবুক গুলোতে এমন কত প্লট নষ্ট হয়েছে।

বর্তমানে আমার অবস্থা খুব সঙ্গিন। দেশে গিয়েছিলাম এক মাসের ছুটি নিয়ে। ফিরে এসেছি তারো দেড় মাস পর! অনেক... অনেক কাজ জমে আছে কিন্তু কাজে মন বসাতে পারছিনা। নিজের কার্যক্রম সামলে নিয়ে একে একে এবারে সব লেখাই নামাবো। এবারে আর কোনো প্লট নষ্ট হতে দিচ্ছি না!

© অমিত আহমেদ

বিঃদ্রঃ মালয়শিয়া যাবার আগে আমার গবেষণা টুকে রাখা ছিলো আমার নোটবুকে, মানে কোথায় কোথায় যাবো এসব আর কি। মাশীদ আপুকে দিয়ে দেখিয়ে নিয়েছিলাম সেগুলো। মনে আছে মাশীদাপু? আর বইমেলায় অনেকেই হয়তো মনে করতে পারবেন আমার বর্তমানের নোটবুকটিকে।

ডায়রির প্লট থেকে লেখা গুলো

৩) অণুগল্প / সর্বনাশ / ২৬ মার্চ ২০০৮
২) অণুগল্প / বিভ্রাট! / ২২ মার্চ ২০০৮
১) গল্প / পালিশ / ১৪ মার্চ ২০০৮


মন্তব্য

শেখ জলিল এর ছবি

এবার তাহলে লেখা জমবে ভালো। প্লট আর ফেলে দেয়া নয়!

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

নজমুল আলবাব এর ছবি

হুট করে আমি আমার খুব প্রিয় কাউকে, কিছুকে আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলতে পারি। সেই মতবাদকে প্রমান করতেই যেনো আমি পাতা ফুরাবার সাথে সাথেই আমার সর্বক্ষণের সঙ্গি নোটবুকটিকে আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলি। সেই সাথে আস্তাকুঁড়ে চলে যায় না লেখা গল্পের প্লট, তাচ্ছিল্য ভরে আঁকা কার্টুন, আর সংগ্রহ করা তথ্য গুলো।

তুইকি আমগোরেও এইভাবে আতকা...?

যাইহোক এইবার লেখাগুলা নামাইতে শুরু কর বাপধন। নোটবুক ফালাইয়া দেয়ার ধান্দাতো আর দেখাইতে পারবানা। পোস্টটা স্বাদু হইছে।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

অমিত আহমেদ এর ছবি

কইলেন একটা কথা!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সে থেকে আট-দশটা গল্প, দুইটা উপন্যাস সহ মোট পঁচিশ-ত্রিশটা লেখা চোখ তো অনায়াসে নামিয়ে ফেলা যায়।

তাহলে ৫০ বছর পরে অমিত আহমেদ অমনিবাসের সাইজটা কতো হবে?

অমিত আহমেদ এর ছবি

আমার লেখার গতি খুব কম। দেখা যায় কয়েক লাইন লিখে আর ইচ্ছে করে না। এরমাঝে হপ্তা চলে যায়। পরে আবার বসে মনে হয়, ধুর অন্য কিছু করি। এভাবে চলতে চলতে হুট করে একবসায় একবার পুরোটা লেখা হয়ে যায়।

তাই দেখেন, আমার পোস্টের সংখ্যা কিন্তু খুবই নগন্য। অমনিবাসের আকারো তাই রুগ্নই হবার কথা।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ক্লাস টেন পর্যন্ত আমার একটা ডায়েরী ছিল।
অনেক কিছু লিখতাম সেখানে।
একদিন একজনের সাথে রাগ করে ডায়েরীটা ফেলে দিয়েছিলাম।
আবার যদি আমার সুযোগ আসত।
তবে ঐ একজনকেই ফেলে দিতাম...কিন্তু ডায়েরীটা ফেলতাম না

---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অমিত আহমেদ এর ছবি

সেটাই যথার্থ হতো। আমার ডায়রি লেখার অভ্যেস ছিলো সেই ছোটবেলাতেই। আছে এখনো সাজানো আমার লাইব্রেরিতে।

কনফুসিয়াস এর ছবি

একটা আলাদা নোটবুকে লিখবার কষ্ট যখন করেনই, তো ফেলবার দরকার কি?
এরপর থেকে সচল সদরদপ্তরে পোস্ট করে পাঠিয়ে দিবেন দয়া করে, ফেলবার দরকার নেই।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

অমিত আহমেদ এর ছবি

কষ্ট না আসলে। এটা আমার একটা টাইমপাস বলা যায়। আর প্লটের বিস্তারিত লেখা থাকে না... কয়েকটা শব্দ। যেমন একটা উদাহরণ - "ডিমখোড়, বিনোদোন, আঞ্চলিক"। এই গল্পটা লেখা হবে শীঘ্রই।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- জোন্সের নতুন এ্যাডভেঞ্চার আসছে মে মাসে। এটা মনে পড়লো নোটবুকটার ফটুক দেখে।

আপনার কোমা থেকে ফিরিয়ে আনা লেখাগুলোর জন্য ভালোবাসা। অচিরেই গোটা গোটা কালো বর্ণে দেখার প্রত্যাশায় রইলাম।

ভবদীয়,
ধু.গো.
সাক্ষরঃ (অস্পষ্ট)
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

অমিত আহমেদ এর ছবি

মে ২২... ওয়েট করতেছি

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আরে বাহ!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।