৬ ফেব্রুয়ারী, ২০০৭
সময়: রাত ৯:০০-১২:৩০
স্থান: রাফী আহমদ রোড, কোলকাতা
রাতের খাবারের পরে রকে বসে বন্ধুদের সাথে ঘন্টা দুয়েক আড্ডা মারাটা দীপকের অনেক দিনের অভ্যাস।
একটা সময় ছিল যখন এলাকায় রাত ন'টার দিকে ঘড়ি ধরে লোডশেডিং হতো। সেই সময়টা গরমে টেকা যেত না বাসায়। এলাকার কম বেশি সবাই রকে বেড়িয়ে পড়তো। এখন লোডশেডিংয়ের রুটিনটা পাল্টে গেলেও দীপকদের আড্ডা মারার সময়টা আর পাল্টায়নি। প্রধান কারন হচ্ছে রাতের খাবারের পরে অন্ধকারে মিশে চায়ের সাথে সিগারেট টানার একটা সুবিধা। এছাড়া একমাত্র এ সময়টাতেই পাড়ার সবাইকে একসাথে পাওয়া যায়।
তাড়াহুড়ো করে মুখে দু'টো গুঁজে দীপক আজ একটু আগে আগেই বেড়িয়ে পড়ে। বাসায় মোটেই মন টিকছে না।
দীপকের দিদি সুভদ্রার অভ্যেস হচ্ছে ছুতো পেলেই পিঠাপিঠি ছোট ভাইটির কাছে এসে ঋতুকে নিয়ে অহেতুক মস্করা করা। এমনি সময় সেই টানটান কথা চালাচালিটা ভালই লাগে। কিন্তু যখন ঋতুর সাথে ঝগড়া হয় তখন দিদি কিছু বললেই দীপকের চট করে রাগ উঠে যায়। দিদির তখন বুঝতে বাকি থাকে না কিছু একটা গড়মিল হয়েছে।
এমনিতে যতই ঝগড়া-ঝাটি হোক না কেন দুই ভাইবোনে, দীপকের সব চেয়ে বড় বন্ধু এই দিদিই। তাই দীপক কিছু লুকোচ্ছে এটা মোটেই সহ্য হয় না সুভদ্রার। নির্লজ্জ্ব আঠার মত দীপকের সাথে লেগে থেকে ঠিকই বের করে ফেলে কি হয়েছে। সে সুযোগটা আজ দিদিকে দিতে চাচ্ছেনা দীপক। কি বলবে ও দিদিকে? কি হয়েছে আর কি হচ্ছে সেটা তো ও নিজেই ধরতে পারছে না!
রাফী আহমদ জামে মসজিদটা পেরিয়ে গিয়ে হাতের বামেই রতনের ইলেকট্রনিক্সের দোকান। রতনের লেখাপড়া বেশি হয়নি, দশ ক্লাস পাস করেই সে বাবার দোকানে বসা শুরু করেছে। আড্ডাটা ইদানিং ওর দোকানের সামনেই জমে।
“রতন, তোর ছোকড়াটাকে চা বল। সিগারেটও ফুরিয়ে গেছে!” দোকানের সামনের চাতালে বসতে বসতে বলে দীপক।
দোকান থেকে ভারী শরীরটা নামিয়ে দীপকের পাশে এসে বসে রতন, “ছোকড়াটাকে ছুটি দিয়েছি আজ। অঞ্জন অবিশ্যি গেছে ফ্লাস্ক ভরে চা আনতে, এখনই চলে আসবে। নে সুট্টা নে!” নিজের সিগারেটের প্যাকেটটাই বের করে দেয় রতন।
সিগারেট ধরিয়ে আপন মনেই জিজ্ঞেস করে দীপক, “অঞ্জনের নতুন খবর জানিস কিছু? সারা দিন মনে হয় এখানেই পড়ে থাকে... না?”
“আমাকে কিছু বলে না রে। বাসায় মনে হয় মন বসে না ছেলেটার, সারাদিন আমার সাথেই কাটায়। দুপুরে এক সাথেই দু’টো খাই। কাজেও বেশ সাহায্য করে। আজ ছেলেটাকে ছুটি দিয়েছি, তার সব কাজ অঞ্জু একা হাতে করেছে। আমাকে কিচ্ছু ধরতে দেয়নি।”
দীপকদের বন্ধুদের মধ্যে অঞ্জনই সবচেয়ে মেধাবী। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি নিয়ে আর্কিটেকচারে পড়ছিল... কি একটা সমস্যার কারনে যেন ওকে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। কেন করা হয়েছে সেটা ও নিজে কখনও ওদেরকে কিছু বলেনি। নানা মুখে নানান কাহিনী শুনেছে ওরা, তবে সব কাহিনীতেই বেলা নামের একটা মেয়ের উপস্থিতি ছিল।
ওদের কথার মাঝেই প্রতুল আর সন্তু চলে আসে। কাস্টমস অফিসার ধনী বাবার ছেলে প্রতুল এই কদিন আগে দীপকের সাথেই প্রেসিডেন্সি থেকে ইকোনমিক্সে অনার্স নিয়ে বেরিয়েছে। বেরিয়েই এখন এয়ার ইন্ডিয়াতে কাজ করছে। সন্তু ওদের এক বছরের জুনিয়র, এখনও প্রেসিডেন্সিতে সমাজ বিজ্ঞানে পড়ছে। এক পাড়াতেই গলাগলি-মারামারি করে বড় হয়েছে বলে ওদের বয়স কিংবা সামাজিক বৈষম্যটা কখনও নিজেদের বন্ধুত্বের মধ্যে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
“যাচ্চলে! আমাদের ছাড়াই শুরু হয়ে গেছে মনে হয়?” হাত বাড়িয়ে রতনের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট তুলে নেয় প্রতুল।
“আমার প্যাকেট থেকে সুট্টা নিবি না শ্লা!” বলে রতন, “তুই না কামাই করছিস ইদানিং? আমার প্যাকেটে টান দিচ্ছিস কেন আবার?”
রতনের কথায় কোন ভ্রুক্ষেপ করে না প্রতুল, আকাশের দিকে তাকিয়ে সিগারেটে টান দেয়।
সন্তুর আবার সিগারেট চলে না। ও বলে, “রতন, তোর ছোকড়াটা কই? চা বল!”
“চা চলে এসেছে!” ফ্লাস্কটা পাশে রেখে ধপাশ করে বসে পড়ে অঞ্জন, “কি হয়েছে শোন, পরিমল কাকার ছোট মেয়েটা আছে না?”
“সোমা?” ভ্রু উঁচু করে সন্তু।
“ওরে ব্বাপরে বাপ! নাম তো একদম ঠোঁটের ডগায় আটকে আছে?”
“আরে ধুর, কি হয়েছে তাই বল!”
“সোমাকে দেখি একটা দাদা টাইপ ছেলে নামিয়ে দিয়ে গেল স্কুটারে!”
“বলিস কি?” চোখ কপালে তোলে রতন।
“মাইরি বলছি! দেখিসনি তো ছেলেটাকে। যিশুর মত লম্বা লম্বা দাড়ি-গোঁফ, ফাটা জিনস আর ক্যাম্বিসের জ্যাকেট! সে এক কান্ড!”
“মেয়েটা না কদিন আগেই হাফ প্যান্ট পরে ঘুরতো?” বলল দীপক।
“তাহলে আর বলছি কি... আমাদের বয়স কত হলো সে খেয়াল আছে? টুক করে টোপর পড়ে ফেলার সময় এখন!”
“টোপর যে পড়বি, কে তোর জন্য মেয়ে সাজিয়ে বসে আছে শুনি? সবাই কি আমাদের দীপক? নাকি সব মেয়েই ঋতু যে আমাদের মত রকে বসা ছেলের গলায় মালা পড়াবে?” দীপকের কাঁধে হাত রেখে বলে রঞ্জন।
ওদের কথা গুলো দীপকের কান দিয়ে ঢোকে ঠিকই, কিন্তু কোন আঁচড় কাটে না। নন্দীগ্রামের গরম আলাপকে পাশ কাটিয়ে ওর বরং ঋতুর সাথে প্রথম দেখা হবার ঘটনাটা মনে পড়ে যায়।
ও তখন প্রেসিডেন্সিতে শেষ বর্ষে পড়ছে। প্রতিদিনের মতই ক্লাস শেষে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের চা স্টলটাতে মাটির ভাড়ে চা খাচ্ছে, এমন সময় নামলো উথাল-পাথাল বৃষ্টি। চায়ের স্টলের উপরে যে পাতলা প্লাস্টিকের ছাউনি দেয়া, সেটা পানির তোড়ে প্রায় মাটি ছুঁয়ে যায়, এমনই অবস্থা! দীপক গুটিসুটি মেরে অন্যদের সাথে সেই প্লাস্টিকের ছাউনিতেই মাথা লুকোনোর চেষ্টা করছে, এমন সময় মুখ তুলেই একটা মেয়েকে দেখে ও। রাস্তার ওপাশ থেকে এপাশে আসার চেষ্টা করছে। গায়ের নীল সালোয়ার-কামিজ চুপচুপে ভিজে ছিপছিপে দেহের সাথে আদ্যোপান্ত লেপ্টে আছে। চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিতে দিতে ভাবে দীপক, কি এমন তাড়া যে এভাবে বৃষ্টিতে ভিজেই রাস্তা পেরিয়ে আসতে হবে!
বৃষ্টি ভেজা জামায় সুন্দর মেয়ে দেখার একটা মজা আছে। গরম চায়ের সঙ্গে অন্য সবার সাথে দীপকও নির্লিপ্ত ভাবে সে মজাই নিতে থাকে। মেয়েটার মধ্যে এমন একটা ব্যতিব্যস্ত ভাব যে রাস্তার এপাড়ে সবাই যে তাকিয়ে মজা দেখছে সেটাও তার খেয়ালে নেই।
ব্যস্ত রাস্তার মাঝে এসে কেবল দাঁড়িয়েছে, এমন সময় মেয়েটার বাম পায়ের চটিটা ছিড়ে গেল। এমন অবস্থায় অন্য সবার যা করার কথা মেয়েটাও তাই করে বসে। হুট করে রাস্তার মাঝেই থেমে যায়। মেয়েটার পিছেই ছোট-খাট এক ভদ্রলোক রাস্তা পেরুচ্ছিলেন, তিনি হটাৎ থামা ঠাওর করতে না পেরে হুমড়ি খেয়ে পড়েন মেয়েটার উপড়ে। মেয়েটার হাতে একটা হাত ব্যাগ ছিল, সেটা ফস্কে গিয়ে ভেতরের সব কিছু রাস্তায় উগড়ে যায়। মেয়েটা হতবিহঃবল হয়ে ওর কলম, পেনসিল-খাতা-বই রাস্তার পানির স্রোতের সাথে ভেসে যেতে দেখে। এরই মাঝে বাস-গাড়ি গুলোও বেশ আনন্দ নিয়ে ভিজে চুপচুপে খাতা বইয়ের উপরেই টায়ার চালিয়ে যেতে থাকে।
দীপক বোঝার আগেই আবিষ্কার করে ও নিজেও রাস্তার মাঝে এসে দাঁড়িয়েছে।
ব্যস্ত রাস্তা থেকে বজ্রাহত মেয়েটার খাতা-বই তুলে ব্যাগে ভরে দিয়ে ও মেয়েটার বাহু ধরে রাস্তাটা পার করে দেয়।
রাস্তা পেরিয়ে দীপককে উল্টো বকা দেয় মেয়েটা, “আপনি আমাকে এপারে নিয়ে আসলেন কেন? আমি তো অন্য দিকে যাচ্ছিলাম!”
বিব্রত দীপক খেয়াল করে দেখে মেয়েটাকে ও আসলেই অন্য দিকে নিয়ে এসেছে।
“কটা বাজে?” ঝাঁঝালো গলায় জিজ্ঞেস করে মেয়েটা।
“আজ্ঞে?”
“বাজে কয়টা এখন?” দীপকের হাত ঘড়ির দিকে ইঙ্গিত করে বলে ঋতু।
“দু’টো চল্লিশ!”
মেয়েটার মুখে হতাশার ছাপ পড়ে। বলে, “দু’টো ত্রিশে ক্লাস ছিল একটা! স্যার দশ মিনিটের বেশি দেরি হলে আর ক্লাসে ঢুকতে দেন না। আজ ক্লাসটা মিস হয়ে গেল!”
জানে ওর দোষ না, তবু একটা অনুশোচনা আসে দীপকের। একটা মেয়ে একটা ক্লাস মিস করে এতটা কাতর, এটাতে যে হাস্যরসের আভাস সে অন্যসময় পেত, সেটাও আজ ধরা পড়ে না। ও ভিজতে ভিজতে কাচুমাচু মুখ করে বলে, “কি কান্ড বলুন দেখি!”
বাঁকা চোখে দীপকের দিকে তাকায় মেয়েটা, “আমার বই গুলো সব রাস্তা থেকে অন্তত্য তুলে দিয়েছেন, ধন্যবাদ!”
মেয়েটার গলায় একটা প্রচ্ছন্ন বিদ্রুপের আভাস পেয়ে অনেকটা মরিয়া হয়েই বলে বসে দীপক, “কফি হাউস...”
“হুম?” বড় বড় চোখ তুলে তাকায় মেয়েটা।
“না... মানে... বলছিলাম, কফি খাইয়ে যদি দোষ স্বীকারের সুযোগটা দিতেন।”
মিটিমিটি হাসে মেয়েটা... ভ্রু নাচিয়ে বলে, “চলুন! বৃষ্টির ছাঁট থেকে তো অন্তত্য বাঁচা যাবে!”
হঠাৎ ঝাঁকুনিতে ঘোর ভাঙে দীপকের, প্রতুল বলে, “কিরে রোমিও, কোথায় হারালি?”
“হুম? কি বলছিলি?”
“বলছিলাম, তোর কথা বাবাকে বলেছিলাম ক’দিন আগে। এরার ইন্ডিয়াতে মনে হয় নতুন সার্কুলার দেবার সম্ভাবনা নেই। তবে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াতে নাকি একটা ব্যবস্থা করা যাবে।”
নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারে না দীপক, “চাকরী? স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াতে? কাকা বলেছেন এ কথা?”
“তোকে বাবা বেশ পছন্দ করে যা বুঝলাম। আজ নিজে থেকেই আনন্দবাজারে সার্কুলার দেখে আমাকে বললেন। ওখানে নাকি বাবার কলেজের কোন বন্ধু আছেন। সুপারিশ করা যাবে। কিন্তু তোকে রিটেনে আগে পাশ করতে হবে।”
“কাকা নিজে বলেছেন রিটেনে হলে সুপারিশ করবেন?”
“এক কথা কত বার বলবো? বললাম তো, নিজে থেকেই বলেছেন।”
দীপকের ইচ্ছে হলো ধেই ধেই করে নাচতে। রিটেনে পাশ করতে পারবে সে আত্মবিশ্বাসটা ওর আছে। কিন্তু বাবা-কাকার জোর না থাকলে ভাইভা পেরুনো যায় না। এখন পর্যন্ত যে কটা ইন্টারভিউয়ে গেছে সবখানেই এই কাহিনী দেখেছে।
দীপকের বাবা সরকারী অফিসে চাকরী করতেন। এখন অবসর নিয়েছেন। সংসার চলছে বাবার পেনসন আর পৈত্রিক বাড়ির একটা অংশের ভাড়া দিয়ে। গৃহিনী মা আর বাবা এই দীপকের উপরেই ভরসা করে আছেন। দিদির বিয়ের কথা চলছে, তার আগেই একটা চাকরি পাওয়া দীপকের জন্য খুব জরুরী ছিল।
এদিকে ঋতুর বাবা-মাও ঋতুর জন্য এখান সেখান থেকে সম্বন্ধ পাচ্ছেন। তাঁরা অবশ্য ঋতুকে বলেছেন লেখাপড়া শেষ না হবার আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না, কিন্তু ভাল সম্বন্ধ এলে সে শপথ টিকবে কি না সে ভয় ঋতুর সব সময় ছিল। এখন একটা চাকরী পেয়ে গেলে এই সব সমস্যার সমাধান পলকে হয়ে যাবে!
প্রতুলের বাবাকে এখন সামনে পেলে নির্ঘাত ঢিপ করে প্রনাম করে ফেলত দীপক।
“এত বড় খবর আমাকে এতক্ষণে দিচ্ছিস তুই?” কাঁপাকাঁপা গলায় বলল দীপক।
রঞ্জনটা সব সময় হতাশাবাদী, ও মাথার পিছে দু'হাত নিয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে বলে, “আগে তো রিটেনে টেক, তার পরে না হয় হই-হুল্লোড় করিস। সার্কুলারটা আমিও দেখেছি। আগামী মাসেই পরীক্ষা কিন্তু!”
কিছু হবার আগেই হই-হুল্লোড় করাটা দীপকের পুরনো অভ্যাস। শেষ বর্ষের দীপকের যখন প্রথম বর্ষের ঋতুর সাথে ঘনিষ্টতা হলো তখনো ও সম্পর্কটা গড়ে ওঠার আগেই সবাইকে বলে দেয়, “ওই যে মেয়েটাকে দেখছিস, ওটা আমার বউ!”
এ কথা যে নানা কান ঘুরে ঋতুর কানেও যেতে পারে সেটা ওর বিবেচনায়ই আসেনি। পরে কফি হাউসে ঋতু যখন সরাসরি জিজ্ঞেস করে তখন দীপকের ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। রাগে মুখ লাল করে আবোলতাবোল বকে চলে গিয়েছিল ঋতু। সেদিনই ফোনে জীবনে প্রথম কোন মেয়েকে ভালবাসার কথা বলে দীপক।
“আমি কাটলাম এখন। কালকে প্রজেক্ট জমা।” উঠে চাপড়ে প্যান্টের ময়লা ঝাড়ে সন্তু।
“আমিও যাব।” সিগারেটের গোড়াটা দূরে ছুঁড়ে দিয়ে দাঁড়ায় প্রতুল, “অঞ্জন, তুই যাবি না?”
“নাহ! আমি থাকি আর কিছুক্ষণ” উদাস ভাবে বলে অঞ্জন।
“থাক তাহলে। আমরা যাই?”
“যা... কালকে আগে আগে চলে আসিস।” অঞ্জনকে নিয়ে দোকানে ঢুকে পড়ে রতন।
রাস্তায় তিনজন হাঁটতে হাঁটতে প্রতুলের কাঁধে হাত তুলে দেয় দীপক, “কাকাকে আমার প্রনাম দিস। বলিস পরীক্ষায় আমি পাস যাবই!”
হাসে প্রতুল, বলে, “সেটা বাবাও জানেন।”
সন্তু বলে, “তোমরা সবাই ভাল চাকরি করবে ঠিক আছে, মা কালীকে আমি নিজ হাতে ভোগ দেব! কেবল আগামী বছরে আমাকে মনে রেখো গুরু!”
হেসে যে যার গলিতে ঢুকে পড়ে ওরা।
দীপক ঘড়ি দেখে, প্রায় সাড়ে এগারটা বাজে। বাসায় গিয়েই ঋতুকে ফোন করতে হবে। খবরটা ঋতুকে জানাতে আর তর সইছে না!
বাবা-মা-দিদিকে এখনই জানানো যাবে না। বেশি আশা করে পরে চাকরি না হলে মন খারাপ করবে। এরচে ওদেরকে পরে জানানোটাই ভাল।
পেছনের দরজা দিয়ে বাসায় ঢুকে বাবা-মার ঘরে একটু উঁকি দিয়ে যায় দীপক, ঘুমিয়ে পড়েছে। দিদির রুমে আলো, তার মানে নির্ঘাত গল্পের বই পড়ছে শুয়ে শুয়ে। নিজের রুমে ঢুকে দরজাটা ভেজিয়ে টেবিল থেকে মোবাইলটা নিয়ে ঋতুর নাম্বার টেপে দীপক। এতক্ষণ উত্তেজনায় সব ভুলে ছিল, কিন্তু ফোনটা কানে চাপতেই আজ কি হয়েছে তা ওর চোখের সামনে বায়োস্কোপের মত এক মুহুর্তে ছুটে যায়। কয়েক সেকেন্ড পরে এনগেজ টোন পেয়ে মোবাইলটা আস্তে করে টেবিলে নামিয়ে রাখে দীপক। কেন জানে না, কিন্তু ওর মন বলছিল এমনটাই হবে!
[চলবে...] © অমিত আহমেদ
মন্তব্য
আরে ম্যান অনেক দিন পর!
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
একটু রেস্ট নিলাম। ব্লগে আসি নাই, লিখিও নাই![হাসি হাসি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/1.gif)
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে
ডিফেন্স সামনে নাকি?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আরে নাহ... কেবল তো phd শুরু হলো। ২০০৬য়ের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করেছি।
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে
একটা টাটকা ঝলক পেলাম। চলুক!
হাঁটুপানির জলদস্যু
চলুক...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
চলুক বস
পড়ছি ।
-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
গন্দমে একটা ছোট্ট এক্সপেরিমেন্ট করছি, কেউ খেয়াল করেছেন কিনা জানি না। কোলকাতার পাত্র-পাত্রীদের ভাবনা-চিন্তা আমার নিজস্ব ধরনটা বজিয়ে রেখে অনেকটা ক্যালকেসিয়ান স্টাইলে লিখছি, আবার বাংলাদেশের পাত্র-পাত্রীদের কথা বর্ননার সময় লেখার ধরনটা পাল্টে যাচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃত।
যারা পড়ছেন তাদের সবাইকে শুভেচ্ছা!
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে
আমি একশভাগ লক্ষ্য করেছি। এটা খুব সুন্দর ম্যানেজ হচ্ছে ...
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
ধন্যবাদ দিগন্ত।
আমি খুব করে চাচ্ছিলাম কলকাতাবাসী কেউ আমাকে এ বিষয়ে একটু ফিডব্যাক দিক।
আপনার স্বীকৃতি পেয়ে ভাল লাগছে।
ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি তোমায়!
ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
একসাথে পুরো গল্প পড়া গেলে বেশ হয়। শেষ পর্ব নামানোর পরে পি.ডি.এফ সংযুক্ত করে দিবেন। তাহলে উপকৃত হবো।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
অনেকদিন অপেক্ষা করতে হবে![হাসি হাসি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/1.gif)
বড়গল্প বললেও এটা আসলে বড়গল্প খোলশে আস্ত উপন্যাস। এখনও অনেক পর্ব আসতে বাকি।
শেষ হলে অবশ্যই pdf বানানো হবে।
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে
আপনার এই লেখাটা এত ভাল লাগছে যে সচলায়তনে প্রতিদিন আসি আপনার এই লেখাটির পরবর্তি পর্ব পরার আশায়।
পড়ছি
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
নতুন মন্তব্য করুন