বেহুদা পোস্ট: খন্ড-ঘটনায় অখন্ড-কাহিনী!

অমিত আহমেদ এর ছবি
লিখেছেন অমিত আহমেদ (তারিখ: শুক্র, ০৫/১০/২০০৭ - ৫:১০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

পাকিস্তান দেশটা নিয়ে আমার মনে সব সময় একটা অবজ্ঞা, অবহেলা... ক্ষেত্র বিশেষে ঘৃণা কাজ করে। কেন করে তার কারণ খুঁজতে গবেষণা করতে হয় না, আমার পরিবারের দিকে একবার তাকালেই কারণটা স্পষ্ট হয়ে ধরা পরে যায়।

পাকিস্তানীদের সম্পর্কে আমার অবজ্ঞার একটা উদাহরণ দেয়া যাক। নিরানব্বইয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের খেলা দেখতে গিয়েছি। স্টেডিয়ামে ঢোকার আগে সিগারেট কয়টা আছে তার হিসেব করছি, এমন সময় এক দঙ্গল পাকিস্তানী এসে ঊর্দূতে জিজ্ঞেস করলো, "বারো নাম্বর গেটটা কোন দিকে?"
আমি নির্লিপ্ত ইংরেজীতে বললাম, "গোলাকার স্টেডিয়াম, যে কোন দিক থেকে হাঁটা শুরু করলেই বারো নম্বর গেট পাওয়া যাবে!"

একটা সময় পর্যন্ত আমার ধারনা ছিল সব বাংলাদেশীদেরই মনে হয় দেশটা নিয়ে একই রকম অনুভূতি। সে ধারণাটা পালটে যায় সবুজের সাথে পরিচয় হবার পর।

সেদিন কোন এক ক্রিকেট ম্যাচে পাকিস্তান জিতে গেছে। আমার মন সেটা নিয়ে একটু বিক্ষিপ্ত। সবুজ আর আমি সে সময় তুমুল ভাবে সব খেলা (ফুটবল, ক্রিকেট থেকে শুরু করে হকি) দেখতাম, আর পরে সে নিয়ে গলাবাজী করতাম। ও ক্রিকেটে পাকিস্তানকে সমর্থন করে সেটা আমি জানি, স্বাভাবিক ভাবেই ও যুক্তি দেয় "খেলার সাথে রাজনীতি মিশানো ঠিক না"। আমিও বন্ধু বলে সেটা মেনে নিয়েছি।

কিন্তু সেদিন সে ক্লাসে এসে আমাকে বলে, "দোস্ত, মনটা খারাপ!"
পাকিস্তান জিতলে ওর মন খারাপ হবার প্রশ্ন আসেনা, তাই আমি একটু অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করি, "কেন?"
সে বলে, "যদি একাত্তরে যুদ্ধটা না হইতো, তাইলে আমরা সবাই পাকিস্তানী হিসেবে আজকে কত আনন্দ করতাম!"
আমি বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে থাকি, কিছু বলারও ভাষা খুঁজে পাই না। ওর সাথে আমার বন্ধুত্বের তাল সেদিন থেকেই কাটতে থাকে। তবে সে সময় তার মনোভাবটা আমার সব বন্ধুদের টইটম্বুর আধারের মধ্যে বিচ্ছিন্ন একটা বিন্দু বলেই মনে হয়েছিল।

কানাডাতে আসার পর ভাবলাম, বহুজাতীক দেশ। এখানে আন্তর্জাতিক হতে হবে ...when in Rome! ঠিক করলাম পাকিস্তান নিয়ে আমার যে অনুভূতি সেটা আমার কাছেই থাক, প্রকাশ করার কি দরকার। পাকিস্তানী হোক আর আফগানী, সবার সাথেই মিলে মিশে থাকবো।

একটা জিনিস খেয়াল করার মত, পাকিস্তানী ছেলে-মেয়েদের একটা ধারণা আছে, আমরা বাংলাদেশীরা আসলে ওদের খুব পছন্দ করি! একাত্তরের ব্যাপারটা পুরোটাই ভারতের ষড়যন্ত্র ছিল। সে ধারনা নিয়ে ওরা খুব উৎসাহের সাথেই বাংলাদেশীদের সাথে আগ বাড়িয়ে পরিচিত হয়।

কানাডাতে আসার পরপরই, আমরা এক দঙ্গল বাংলাদেশী আর পাকিস্তানী ছেলে বাসস্টপে যাচ্ছি। হঠাৎ করেই কি প্রসঙ্গে ইরফান নামের পাকিস্তানী ছেলেটা বলে বসে, "বাঙালির আবার সাহস আছে নাকি! মাছ খাও না তোমরা? মাছ খেলে সাহস হবে কি করে!"
আমি বিস্ময় নিয়ে দেখলাম এ কথায় পাকিস্তানী ছেলে গুলো তো বটেই, সাথে যে তিনজন বাঙালি ছিল তারাও দুলে দুলে হাসতে শুরু করেছে।
আমি ভাবলাম ভুল শুনেছি বুঝি, বললাম, "Excuse me?"
সে বলে, "মাছলি... মাছলি খেলে কি সাহস হয়?"
আমি বললাম, "মাছলি খেয়েই তো আমাদের দুই দিনের কাঁচা ক্রিকেট দল হারিয়ে দিল তোমাদের!"
সে বলে, "আরে ওইটা তো আমরা ইচ্ছে করে হেরে গেছি! তোমরা যাতে টেস্ট স্ট্যাটাস পাও সেজন্য।"
আমি বলি, "আমাদের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়াটা তোমাদের দেশপ্রেমের চেয়েও বড় বুঝি? বিশ্বকাপে হেরে যেতে হলো?"

আমার ধারনা ছিল অন্তত্য এ সময় বাংলাদেশী ছেলে গুলোর সমর্থন আমি পাবো। কিন্তু কিসের কি! কেউ কথা বলে না। তারেক নামের আরেক বিজ্ঞ বরং বলে ওঠে "ওইটা হওয়ার একটা বড় সম্ভাবনা আছে!"

নিজের লোক যদি বিপক্ষে চলে যায় তাহলে আর কিভাবেই বা লড়াই চালানো যায়! এমন ঘটনা কয়েক বারই ঘটলো।

একবার খুব সরল মনেই এক পাকিস্তানীকে জিজ্ঞেস করেছি "তোমাদের ইতিহাস বইয়ে একাত্তরের বর্ণনা কিভাবে দেয়া আছে?"
সেও সরল মনেই জবাব দেয়া শুরু করেছে।
ঠিক সে মুহুর্তে তারেক নামের সেই ছেলেটা আমার উপর প্রায় হামলে পড়লো। আমি নাকি সে ছেলেকে অপমান করেছি, একাত্তর নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না।
আমি তো অবাক হয়েছিই, সে ছেলেটাও থতমত খেয়ে গেছে। তুমুল ঝগড়া হলো তারেকের সাথে।
পাকিস্তানী ছেলেটা যতই বলে, "আমি কিছু মনে করি নাই!"
তারেক ততই উত্তেজিত হয়ে আমার সাথে লড়তে থাকে।

আরেকবার এক মেয়ে দাবী করে বসে একাত্তরে নাকি কোন ধর্ষন হয়নি, যত লোক মারা গিয়েছে বলা হয় তত লোক মারা যায় নি!
সেখানে ছিলাম আমি, রোমেল আর আরেকজন সিনিয়র ভাই, নাম মনে নেই। আমি ছাড়া কেউ একটা কথাও বললো না। সে মেয়ে আবার বলে আমার ওর সাথে তর্ক করাই উচিত না যেহেতু সে পলিটিক্সের ছাত্রি। সে কথায় আবার সেই দুই কামেল খুব মাথা নাড়লো।

এ ধরনের ঘটনাগুলো কানাডায় আসার শুরুর দিকেই ঘটে যাওয়ায় আমি প্রথম থেকেই কানাডায়-বাংলাদেশীদের এড়িয়ে চলা শুরু করছি। কানাডা-প্রবাসী বাংলাদেশীদের আরো কিছু অসহ্য ব্যাপার আছে, যেগুলো অন্য কোন দিন বলা যাবে। প্রবাসী বাংলাদসশীদের এহেন আচরনের কারন হিসেবে আমার একটা hypothesis-ও আছে, সেটাও পরে আলোচনা করা যাবেখন।

পাকিস্তানীদের সবসময় বাঙালি জাতিকে ছোট করে দেখানোর একটা প্রয়াস থাকে। আমি কাছে থাকলে সে প্রয়াসের একটা তীব্র প্রতিবাদ আমার দ্বারা হবেই (এবং বলতে গেলে কক্ষনোই আমি দেশী ভাই-বোনদের সমর্থন পাইনি)। তাই পাকি দেখতে পারিনা বলে আমার একটা বদনাম (কিংবা সুনাম) পাকিদের মাঝে অল্প দিনের মধ্যেই ছড়িয়ে যায়।

দক্ষিণ এশীয় দঙ্গলদের সঙ্গ এড়িয়ে চললেও পাকিস্তানীদের কিছু ব্যাপার আমার কাছে প্রথম দিকেই স্পষ্ট হয়ে গেল।
তার একটা হচ্ছে ওদের হিপোক্রেসী। উইকএন্ডে ক্লাবে গেছি, গিয়ে কয়েকজন পাকিস্তানীকেও দেখেছি, তারাই আবার সে কথা পরে বেমালুম অস্বীকার করবে। বলবে ওরা ক্লাবে যায় না, মদ ছোঁয় না! আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে ওদের কাছে ধর্মটাই যেন বড়। বাংলাদেশের খেলা হলে বেশীর ভাগ পাকিস্তানীই বাংলাদেশকে সমর্থন করবে, ধর্মের কারনে। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করাটাও ওদের স্বভাব। নিজেরা কিছু পালন করুক না করুক, এমন ভং ধরবে, যেন ওরাই ইসলামের রক্ষাকর্তা।
কাজ উদ্ধারে চাটুকারিতায় ওদেরকে বিশেষজ্ঞ বলা যায়। ভুল বলা হলো, বিশেষজ্ঞ না আসলে। কারণ বিশেষজ্ঞ হলে ওদের চাটুকারিতার চেষ্টা এমন নগ্ন ভাবে ধরা পড়ে যেত না। এর কথা ওকে, ওর কথা একে উলটে-পালটে বলার অভ্যাসটাও ওদের মধ্যে ভাল ভাবেই আছে। ওদের আরেকটা জিনিস, যেটা আমাকে খুব বিরক্ত করে, সেটা হলো "মেয়ে" বিষয়ক আলাপ। মেয়ে মানেই যেন একদলা মাংসপিন্ড, যেটাকে শরীরে না হলেও মনে মনে ব্যবচ্ছেদ করার অধিকার পাকিস্তানী পুরুষদের আছে।

আমার এ বিশ্লেষণটা একটু মোটা দাগে করা হয়েছে, কেবল সাদা আর কালোতে দাগিয়েছি। একটু পক্ষপাত দূষ্টও হয়তো। তাই এটাকে গবেষণার ওহী বলে ধরে নেয়ার কোন অবকাশ নেই। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বেশীর ভাগ পাকিস্তানীকেই আমার এমন মনে হয়েছে। সবাই নয়, কারন আমি নিজেই ব্যক্তিগত ভাবে কিছু পাকিস্তানীকে চিনি যাদেরকে কোন ভাবেই এ তালিকার সাথে মেলানো যাবে না। এদের মধ্যে ফারহান আর হুসেইনকে তো রীতিমত আমার কাছের বন্ধু বলে ধরা যায়।

আরেকটা ঘটনা বলি। আমি তখন পিটারব্রোতে থাকি। একটা বাসায় একটা রুম ভাড়া নিয়েছি। বাসাটা রুথ নামের এক বয়স্কা মহিলার, উনিও সেখানেই থাকেন। ভাড়া নিয়েছি একটা রুম ঠিকই, কিন্তু রুথ আমাকে ছেলের মতই দেখতো (এখনো দেখে, থ্যাংকস গিভিং, ক্রিসমাসে নিয়ম ধরে কার্ড আর দাওয়াত পাই)। তাই পুরো বাসা জুড়েই আমার অবাধ যাতায়াত। সেই বাসার ফ্ল্যাগস্টান্ডটা ফাঁকাই পড়ে থাকতো। তাই আমি একটা প্রমান সাইজ বাংলাদেশের পতাকা সেখানে টাঙিয়ে দিলাম। সে পতাকা পতপত করে উড়তো, আর আমার বুকে দ্রিম দ্রিম দামাদা বাজতো।

সে যাই হোক। সে সময় কোন এক পাকিস্তানী ধর্ম প্রচারক দল টরান্টো থেকে পিটারব্রো এসেছে। এসে ফোন ডিরেক্টরি ঘেঁটে ঘেঁটে মুসলমান নাম খুঁজে বের করে সবাইকে ফোন করেছে। তাদের নাকি কি মজলিশ হবে। আমি ফোনে বলেছি, "যাব না।" এর পরেও বিকালে দেখি পরিচিত এক ছেলেকে নিয়ে আমার বাসায় চলে এসেছে।

দাড়ি ওয়ালা, জোব্বা পড়া, সেই রকম সুফি ভাব একেক জনের! আমাকে দেখেই হাত ধরে ফেলেছে, আমি আর "না" করতে পারলাম না।

গাড়িতে উঠেছি, আর একজন বলে ওঠে, "কোন দেশের পতাকা?"
তখনি গেছে আমার মাথায় রক্ত উঠে! তুমি বাংলাদেশের পতাকা চিন না!
"বাংলাদেশের!"
"বাংলাদেশের পতাকা টাঙানোটা ঠিক হয় নাই! এইগুলা ভাইয়ে ভাইয়ে ভেদাভেদ তৈরী করে। আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা মুসলমান!"
আমি বেশ রুঢ় ভাবেই জবাব দিলাম, "আমার তো তা মনে হয় না! সবার প্রথমে আমি মানুষ, এর পর বাংলাদেশী, মুসলমান তো আমার তালিকাতেই আসে না!"
কথার তাল সেই তক্ষুনি কেটে গেল।

আরেক জন পাকিস্তানীর কথা মনে পড়ে গেল। এ লেখার সাথে হয়তো এ ঘটনার কোন সম্পর্ক নেই, তবু মনে পড়লো দেখে বলছি।

কানাডাতে প্রথম বছর, আমি তখনো আন্তঃর্জ়াতিক ছাত্র। ক্যাফেতে বসে লাঞ্চ করছি, এমন সময় এক বয়স্ক পাকিস্তানী ছাত্র উল্টো দিকের চেয়ার টেনে বললো, "বসবো? সমস্যা নেই তো?"
"আরে নাহ! কি সমস্যা! Be my guest!"
সে আমাকে অবাক করে দিয়ে একাত্তর নিয়ে অনেক কথা বললো। পাকিস্তান আমাদের সাথে অবিচার করেছে, বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে - এটা তো হবারই কথা, বাংলাদেশ হ্যান - বাংলাদেশ ত্যান!
শুনতে মন্দ লাগছিল না।
এর ফাঁকে সে দুম করে জিজ্ঞেস করে, "তুমি ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট তাই না?"
"হুম!"
"অনেক টাকা ট্যুইশন তো! লোকালদের তিন গুন!"
"কি আর করা!"
"বিয়ে করবা?"
হঠাৎ এমন প্রশ্নে আমি একটু চমকিত হই, "কি বললা? বিয়া?"
"হ্যাঁ! আমার বোন আছে! কানাডার সিটিজেন। দশ হাজার ডলার। ওকে বিয়া করো, কাগজ বানাও, পরে ডিভোর্স! এক নম্বর বুদ্ধি!"
আমি হতবাক হয়ে বললাম, "তোমার বোন?"
সে বলে, "আমার বোন, কোন রিস্ক নাই!"
এ কথা শোনার পর বেশ কিছু উত্তপ্ত বাক্য তার দিকে ছুঁড়ে দিয়েছি... কি বলেছিলাম তা আর নাই বলি। সে ভয়ার্ত মুখে পালাতে পালাতে বলে, "একটা উপকার করতে আসলাম, আর তুমি এভাবে... মুসলিম-মুসলিম ভাই-ভাই!"

আমি কিন্তু হিন্দী ভাষাটা বেশ ভালো জানি। এটার কারন হচ্ছে দেশে বিদেশী চ্যানেল গুলো আসার পর দেখলাম আমি বেশীর ভাগ চ্যানেলই দেখতে পারছি না হিন্দী জানিনা বলে। আমার বাবা-মা'রও হিন্দী জ্ঞান নেই বললেই চলে। মা'র তাও কিছু ধারনা আছে, বাবার তাও নেই, যদিও তিনি দাবী করবেন তিনি হিন্দী বোঝেন।

তাঁর হিন্দী বোঝা মানে হিন্দী শব্দের কাছাকাছি কোন একটা বাংলা শব্দকে সেটার মানে ধরে নেয়া।

উদাহরণ দেয়া যাক। হয়তো টিভিতে বললো "...খুঁজলি (চুলকানি)"
বাবাকে সে শব্দের মানে জিজ্ঞেস করলে সে খুব আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলবে, "কিছু একটা খোঁজার কথা বলা হচ্ছে..."

তাই আমি সে সময় নীলক্ষেত থেকে হিন্দী শেখার বই কিনে ফেললাম গোটা কয়েক। সেসব বই পড়ে বেশ ভালই হিন্দী শিখেছি।

তবে কানাডাতে আমি কোন ভারতীয় কিংবা পাকিস্তানীদের সাথে হিন্দী চালাই নি (যেটা অনেক বাংলাদেশীই করে থাকেন)। আমার যুক্তি হচ্ছে, কানাডাতে দাঁড়িয়ে কানাডার ভাষাতেই কথা হবে - হয় আমি ইংরেজীতে বলবো, না হয় বাংলায় বলবো। তৃতীয় কোন ভাষায় বলবো কেন!

সে যাই হোক, একদিন টরান্টোর রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছি। Rush hour, তাই তুমুল ভিড়। এমন সময় হঠাৎ কেউ একজন আমার হাত ধরে ফেললেন।

আমি তাকিয়ে দেখি মোটা-সোটা-বয়স্কা-পাকিস্তানী ধাঁচে সালোয়াক-কামিজ-ওড়না জড়ানো এক মহিলা। উনি ভয়ার্ত উর্দূতে বললেন, "সাবওয়ে স্টেশন খুঁজে পাচ্ছি না!"

আমি মুহুর্তে যা বুঝলাম, উনি হারিয়ে গেছেন। ইংরেজী জানেন না, তাই কাউকে জিজ্ঞেস করতেও পারছেন না। আমাকে দেখে তাঁর মনে হয়েছে পাকিস্তানী, তাই হালে পানি ফিরে পেয়েছেন।

আমি আমার বাংলাদেশী গড়িমা নিয়ে, ইংরেজীতে, কোথায় কিভাবে যেতে হবে নিখুঁত ভাবে বুঝিয়ে দিয়ে হন হন ভিড়ের মাঝে মিশে গেছি। তারপর আর সে কথা সারাদিন মনেই নেই। পরে রাত্রে বাসায় এসে মনে হলো, "এ আমি কি করেছি! এ বয়স্কা মহিলা তো ইংরেজী জানেন না! কিন্তু আমি তো তাঁর ভাষাটা জানি। এ মায়ের বয়সী মহিলাকে হিন্দী বা ঊর্দূতে দুটো কথা বললে আমার কি ক্ষতিটা হতো!"

আমার হৃদগতি বেড়ে যায়। খালি দুঃশ্চিন্তা হয়, মহিলা ঠিক মত বাসায় পৌঁছুতে পেরেছিলেন তো? কতক্ষন তাঁকে আরেকজন পাকিস্তানীর মত দেখতে পথচারীর জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল? কতজনের ধাক্কা-গুঁতো খেয়ে তিনি অসহায়ের মত সে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন?

আমার মা'ও ইংরেজী বলতে পারেন না। হঠাৎ করেই সে মহিলাকে আমার নিজের মা'র মতই মনে হয়। আমি সারারাত ঘুমোতে পারি না। এপাশ-ওপাশ করি আর তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে আসে, নিজেকে মনে হয় নর্দমার কীট।

এতদিন হয়ে গেছে, এখনো আমি সে ঘটনাটা ভুলতে পারি না। চিন্তায়-দুঃস্বপ্নে আমার সে অর্থহীণ দাম্ভিক আচরনের স্মৃতি আমার বিবেককে নাড়া দিয়ে যায়।

সেদিনের পর থেকে আমি খুব সতর্ক থাকি - আমার অহংকার যেন কখনো অহেতুক অন্যের ক্ষতির, অন্যের কষ্টের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়!

© অমিত আহমেদ

বিঃদ্রঃ (এক) টুকরো টুকরো ঘটনার সমষ্টি এ লেখাটি সম্পূর্নই অর্থহীণ, আমার "বেহুদা পোস্ট" সিরিজের অন্য লেখা গুলোর মতই। জ্ঞানার্জন, গূঢ়তত্ত্ব, কিংবা অন্তর্নিহীত ভাব খুঁজতে এ লেখা পড়াটা পাঠকের একটা অপচেষ্টা বলে গন্য হবে।
(দুই) পাকিস্তানীদেরকে নিয়ে আপনার সুখের, দুখের, বিরক্তির, রাগের, অনুরাগের, হিংসার, প্রতিহিংসার, প্রতিশোধের, বন্ধুত্বের, প্রেমের কিংবা আর যে কোন রকমের কাহিনী আমাদের শুনিয়ে যেতে পারেন কিন্তু এখানে!


মন্তব্য

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ভালো পোস্ট অমিত।

মন্তব্যে ৫ অলৌকিক হাসান



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অমিত আহমেদ এর ছবি

ওদেরকে বন্ধু বললে নিজেরই অপমান হয়। কানাডাতে আসার পর পরই ওদের সাথে পরিচয়। কয়েক মাসের মধ্যেই কাহিনী দেখে ওদের সাথে আমার আর বনেনি... যেমন বললেন "ওদের চোদার টাইম নাই।" একই কারনে এতদিন থাকার পরও কানাডায় আমি আমার বাঙালি বন্ধু আঙ্গুলেই গুনে ফেলতে পারি। পাকিপ্রেম নিয়ে কোন সহনশীলতা থাকার প্রশ্নই নাই।

--

আপনার কমেন্ট টা আসলে বেশী জোস হয়েছে। কিছু ঘটনা সব জায়গাতেই কমন পরে যায় মনে হয়।


ব্লগস্পট | অর্কুট | ফেসবুক | ইমেইল

সৌরভ এর ছবি

হুমমম।



আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

কেমিকেল আলী এর ছবি

অনেক ঘটনা বাদ গেছে মামা!!
পাকি "কাওয়ার মা" এর কথা তো কইলা না!!
আর ঐ যে পাকিগুলো যারা তোমার প্রোপোজাল চুরি করল, আর পাকি সাজ্জাদের প্রেম কাহিনী ও কইলানা!!
যোগ কইরা দেও এইগুলো।
সবচেয়ে বড় যে ঘটনা বাদ গেছে সেটা হল লেকহেড ইউনিভারসিটির ফায়ার ওয়ার্কস দেখার সময় কয়েকটা পাকি আমাদের পিছে পিছে ছিল, আর এক ফাঁকে বলল, বাংলাদেশ তো ইচ্ছা করেই পাকিস্থানের থেকে আলাদা হয়ে গেছে। তোমারা আমাদের সাথে থাকলেই পারতে!!

তবে মামা একটানে তোমার লেখাটা পড়লাম।
যেগুলো বাদ গেছে সেগুলো দিয়ে ২য় পর্ব দিলে ভালই হবে মনে করছি।

নিঘাত তিথি এর ছবি

খুবই উপভোগ্য লেখা।
আপনার বাবার "খুঁজলি" মানে কিছু খুঁজতে বলা হচ্ছে পড়ে হাসতে হাসতে বিষম খাওয়ার দশা হলো। গড়াগড়ি দিয়া হাসি

--তিথি

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

ফারুক হাসান এর ছবি

পাকি শালারা শালার যোগ্য না। সব শালার এমন ভাব যে দুনিয়াটা একটা হলিউড, আর বোাুদারা একএকটা টমক্রুজ। আর কি নিদারুন পরিহাস, রাজাকার সব যুগে যুগে থাকে। পাকি শালাদের সাপোর্টে থাকে এই আবালের দল।
পোস্টের প্রতিটা অক্ষরের সাথে একমত। শুধু একটা বিষয় ছাড়া- আমি কোনো ভালো পাকি শালা দেখি নাই। কারণ কোনো পাকি শালারেই আমার ুদার টাইম নাই।
-----------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।

দ্রোহী এর ছবি

১.
জ্যাকসন হাইটসে একদিন ফটোকপি করাতে গেলাম। দোকানদার ব্যাটা পাকিস্তানী।
--ব্যাটায় ফটোকপি করে আর আমারে জিগায়, "কোন্দেশ?"
--আমি কই, "বাংলাদেশ"
--ব্যাটা কয়, "ও ইষ্ট পাকিস্তান!"
--আমি কই, "হ, মুসা নবীর আমলে আছিল। তয় বেশী সুবিধা করতে পারে নাই।"
ব্যাটায় চুপ মাইয়া গেল। বুঝলো আমি তার ব্রাদার না।

২.
রোজার মাসে মসজিদে ফ্রি ইফতার ও ডিনার খাওয়ান হয়। আমি ৫/৬ দিন গেছি (ছোলা বুট আর পিয়াজু খাবার লোভে)। আমার বাঙ্গালী ভাইয়েরা তাদের পাকি ভাইদের ব্রাদার কইতে কইতে মুখে ফেনা তুলে ফেলে। এখন আর যাওয়া হয় না। আমার ডাইল-ভাতই ভালা।


কি মাঝি? ডরাইলা?

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

মাশীদ এর ছবি

চমৎকার পোস্ট। এটার দরকার ছিল খুব। কারণ আমরা যারাই দেশ ছেড়ে অন্য দেশে আছি, আমাদের প্রায় সবাইকেই মনে হয় এরকম অনেক কিছুর মুখোমুখি হতে হয়।

আমার এরকম প্রথম অভিজ্ঞতাটা অবশ্য অনেক আগের। ১৯৯৮ এর দিকে বোধ হয়। তখন mIRC তে খুব চ্যাট করতাম। সেখানে খুব বন্ধুত্ব হল এক পাকিস্তানী ছেলের সঙ্গে। যথাসম্ভব বন্ধুত্বপূর্ণ মনমানসিকতাই ছিল সেসময়। ভাবতাম, one world, সবাই সমান। যা হয়েছিল অনেক আগে, এর তো প্রত্যক্ষ প্রভাব ছিল না সেসময়। যা হোক, একদিন ঐ ক্রিকেট খেলা প্রসঙ্গেই কেমন করে জানি যুদ্ধের কথা উঠল। দেখা গেল পুরা উল্টাপাল্টা কথা বলছে, যেন যু্দ্ধটা হয়েছিল ইন্ডিয়ার সাথে আর আমরা শুধু ভারতের দালালি করেছি সেসময়। মাথায় পুরা রক্ত উঠে গিয়েছিল। দেখলাম, ওর কোন ধারণাই নেই আসলে কি হয়েছিল ১৯৭১-এ। মনে হল, এই প্রজন্মের ওরা জানেই না ইতিহাস। ওকে আচ্ছামতো শুনিয়েছিলাম তো বটেই, এরপর থেকে পাকিস্তানীদের পারতপক্ষে এড়িয়েই চলি। কপালজোরে মাস্টার্সে সিঙ্গাপুরে বেশি কোন পাকিস্তানীর সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ হয়নি। যে অল্প কয়েকজনের সাথে হয়েছে তাদের মধ্যে একজন ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বিরক্তিকর ছেলে শামস্, যে নিজেকে যে কি ভাবে সেই জানে! ওর সাথে বা অন্যদের সাথে তেমন বেশি সময় কাটাতে হয়নি দেখে ১৯৭১ বিষয়ে ওরাও কি বিশেষভাবে অজ্ঞ কিনা জানা হয়নি।

আন্ডারগ্র্যাডের অনেককে দেখেছি বাংলাদেশী অনেকের সাথে বেশ খাতির আছে। আমার ব্যক্তিগত ধারণা সেটাও ঐ মুসলিম-মুসলিম ভাই-ভাই টাইপ। আমরা যেমন অনেকেই ভাবি আগে বাংলাদেশী, পরে মুসলিম, ওদের সেটা রিভার্সর্ড বলেই মনে হয়েছে। অমিতের মত আমারো ধারণা ওরা একদিকে ঠিকই চুটিয়ে মাস্তি করে বেড়ায়, অন্যদিকে সাচ্চা মুসলমান হিসেবে খুব ভাব দেখায়। তবে এটাও আমার ব্যক্তিগত ধারণা।

ভাষা নিয়ে আমার এরকম অভিজ্ঞতা ভারতীয়দের কাছ থেকে বেশি, সাথে ঐ শামসও আছে। আমি বাংলাদেশী শুনে অবলীলায় হিন্দী বা উর্দুতে কথা শুরু করে দিত। মেজাজ খুবই খারাপ হয়ে যেত। আমি অনেকসময় বুঝতে পেরেও না বোঝার ভান করেছি। অনেকে অবাক হত, কারণ ওরা অনেক বাংলাদেশীকে এর আগে পেয়েছে যারা হিন্দী-উর্দু পারে, আমি কেন পারিনা। আমি স্ট্রেইট বলতাম, আমার পারার কোন কারণ নেই, আমার ভাষা হিন্দী-উর্দু না। আমার যদি এটা পারার কথা থেকে থাকে, তবে সে হিসেবে তোমাদেরও বাংলা পারা উচিত। অবশ্য ভারতীয়দের মধ্যে আমার খুব কাছের বন্ধু ছিল এবং আছে, যারা বিশেষ ভদ্রতায় সবসময় ইংলিশেই কথা বলেছে বা হিন্দীতে চলতে থাকা ডায়ালগ অনুবাদ করে দিয়েছে।

এই পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ। তোমার সাথে পুরোপুরি সহমত। শেষে তোমার কষ্টটাও অনুভব করলাম। আসলেই, ঐ মহিলার জায়গায় আমরা যে কেউ হতে পারতাম। সাহায্যের হাত বাড়ানোর সময় সেটা বাড়াতে আসলেই এরকম দ্বিধা থাকাটা ঠিক না। তারপরেও এরকম ভুল করে ফেলি আমরা।


ভাল আছি, ভাল থেকো।


ভাল আছি, ভাল থেকো।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

লেখাটা খুব ভালো লেগেছে অমিত।
আমার একটা লেখা আছে এই বিষয়ে কিনতু কমপোজ করা নেই বলে পোসট করা গেলো না।
মাউস দিয়ে মনতব্য লিখতেই জান শেষ।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

আরিফ জেবতিক এর ছবি

বিস্তারিত কমেন্ট করবো পরে।লেখাটা পড়েছি দিনের বেলাতেই,আর ভালো লেগেছে সেটা বলা বাহুল্য।

অমিত আহমেদ এর ছবি

সুমন চৌধুরী » মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ বদ্দা!

কেমিকেল আলী » "কাওয়ার মা", "সাজ্জাদের প্রেম" আর "ফায়ার ওয়ার্কসের" মত ঘটনা তো অনেক, আমি অংশ বিশেষ তুলে ধরেছি মাত্র। আপনি যেহেতু ঘটনা গুলো জানেন, আপনিই একটা পোস্ট দেন না?

আর আমার পিএইচডি'র থিসিস প্রোপোজাল চুরি করেছিল পাকি নয়, এক ভারতীয়। ঘটনাটা এ রকমঃ

সতিশ নামের ভারতীয় ছেলেটি আমার সাথে লেকহেড বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে ছিল। অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন, প্রোজেক্ট সহ নানা বিষয়ে ওকে আমি খোলা মনেই সাহায্য করেছি।

মাস্টার্সের দ্বিতীয় বর্ষের শুরুর দিকে অনেক খেটে-খুটে পিএইচডি অ্যাডমিশনের জন্য একটা প্রোপোজাল লিখেছি। সে প্রোপোজাল ইয়র্কের এক ডাঁকাবুঁকো গবেষককে পাঠানোর আগে সতিশের অনুরোধে ওকেও একটা কপি ইমেইল করেছি প্রোপোজাল লেখার ফরম্যাট বোঝানোর জন্য।

যাই হোক, সে প্রোপোজাল গ্রহীত হয়নি, আমি আরো খেটে আরেকটা প্রোপোজাল বানিয়ে আরেক অধ্যাপকের তত্ত্বাবধায়নে গবেষণা শুরু করে দিয়েছি। এই সেদিন এক পার্টিতে সেই গবেষকের সাথে দেখা। কথায় কথায় বেরিয়ে পড়লো পছন্দ হওয়ার পরেও সে আমাকে তুমুল ফান্ডিংয়ের সে প্রোপোজালটা নিতে পারেনি, কারন একই স্কুলের আরেক ছাত্র তাঁর কাছে ঠিক একই প্রোপোজাল পাঠিয়েছিল!

একজন গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট যে আরেক স্টুডেন্টের প্রোপোজাল যে কেবল নাম পাল্টে পাঠিয়ে দিতে পারে সে ধারনা আমার ছিল না! সেই অধ্যাপকের সাথে সেদিন বিস্তারিত আলাপ না হলে সে হয়তো কোন ভুল ধারনা নিয়েই থাকতো!

নিঘাত তিথি » ওরে ব্বাপরে! বাবার কথায় হাসলে আবার তাঁর রাগ সপ্তমে উঠে যায়। হাসি

ফারুক হাসান » আপনার কমেন্টে চেনা আবেগ! তবে ইদানিং আমি পরিচয় হবার আগেই উপসংহারে চলে যাওয়ার অভ্যেসটা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছি... তবুও...

দ্রোহী » হাঃ হাঃ হাঃ... সেই রকম... "মূসা নবীর আমলে"... ডায়ালগটা কাজে লাগবে!

আনোয়ার সাদাত শিমুল » লেখার পরে মনে হলো টাইটেলে ব্লগে-ব্লগে একটা ঝগড়া লাগানোর একটা উপাত্ত খুঁজে নিতে পারে গর্ধভের দল। সচলের প্রথম দিকে এসব এড়িয়ে চলাই ভাল। আপনি খেয়াল করেছেন (এবং আমি নিশ্চিত কারনটাও ধরতে পেরেছেন) দেখে আপনার প্রতি মুগ্ধতা আরো বাড়লো!

মাশীদ » আপনার কমেন্ট আমার এ লেখাটাকে পূর্ণ করেছে! থ্যাঙ্কু!

লুৎফর রহমান রিটন » রিটন'দা, এটা আপনার আমার কোন লেখায় প্রথম মন্তব্য... স্বাগতম! আপনি এত কষ্ট করে, মাউস টিপে টিপে, এই লেখাটায় মন্তব্য করার উপযোগী মনে করেছেন সে আনন্দেই আমি আপ্লুত!

সচলের কতৃপক্ষ, রিটন'দা যেন নিয়মিত লিখতে, কমেন্ট করতে পারেন সে ব্যবস্থা দ্রুত করে দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।

আর রিটন'দা লেখাটা চটজলদি কম্পোজ করে ফেলেন। পড়ার জন্য তুমুল আগ্রহ হচ্ছে!

আরিফ জেবতিক » বিস্তারিত কমেন্টের অপেক্ষায় রইলাম!

-- ধন্যবাদ সবাইকে!


ব্লগস্পট | অর্কুট | ফেসবুক | ইমেইল

??? এর ছবি

প্রিয় পোস্টের খাতা খুললাম এই লেখাটা দিয়ে।

..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

কেমিকেল আলী এর ছবি

অমিত আহমেদ,
আমি লিখলে এত সুন্দর করে লিখতে পারব না, আর পড়েও অন্যরা সেজন্য মজা পাবে না, তাই তোকে বললাম।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনুমানটা সত্য হলো। তবুও মনে করি, আপনি যদি সাবলীলভাবে ঐ শিরোনামটি লিখে থাকেন, রাখা উচিত ছিলো। গর্দভেরা সব সময় ঝগড়া লাগানোর জন্য সুযোগ খুঁজবে। তবে, আপনার শিরোনাম নিয়ে ক্যাচাল করলে তাদের গর্দভগিরির মাত্রা আরো প্রকাশ পেতো। সমকালীন এবং সমমনা মানুষ হিসেবে আমার মনে প্রশ্ন জাগছে - কিছু শব্দের পেটেন্ট কি গর্দভরা নিয়ে গেলো? কে জানে হয়তো- সঞ্জীব চৌধুরীর 'ছুরি চিকিৎসা' শুনেও একটা শব্দে কোনো গর্দভের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হবে হাসি

পাকি প্রেমী প্রসঙ্গে - দেশের বাইরে এসে পাকিদের থেকে দূরে থেকেছি। তবুও দেখেছি - টোয়েন্টি২০ তে নাটকীয় পরাজয়ের পর পাক-ভক্ত বাংলাদেশীদের কপাল থাপড়ানো, চুল ছিড়া। কে জানে হয়তো - কাশ্মিরী পরোটা আর তলানীর শরাবের জন্য খানিকটা কমিটমেন্ট! মনের তীব্র ঘৃণা ঐসব বাংলাদেশীদের প্রতি।

দেশেই দেখেছি - পাকপ্রেমী বিশাল এক জেনারেশন। আপনিও দেখেছেন নিশ্চয়। সংখ্যাটা বেড়েই চলেছে, উদ্বেগজনক ভাবে - - -

বিপ্লব রহমান এর ছবি

পড়ে ভাল লাগলো।
-------------------------------------
...জেগে আছে একাত্তর, জবাব দেবে বাংলাদেশ।...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

অনিকেত এর ছবি

অ-সা-ধা-র-ন লেখা!

একে বারে আমার মনের কথা বলেছেন।

আবারো ধন্যবাদ।

ছায়ামূর্তি [অতিথি] এর ছবি

চলুক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

নিজের লোক যদি বিপক্ষে চলে যায় তাহলে আর কিভাবেই বা লড়াই চালানো যায়!

মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।