অসম্ভবের বিজ্ঞান (প্রথম পর্ব)

অভিজিৎ এর ছবি
লিখেছেন অভিজিৎ (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৬/১০/২০০৮ - ৯:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

-'এনার্জাইস'! গাঢ় স্বরে উচ্চারণ করলেন ক্যাপ্টেইন কার্ক।

স্পেশশিপের মাঝামাঝি এলাকায় মেঝের মধ্যে গোলাকার চাকতি আঁকা জায়গাটায় এসে সোজা হয়ে দাঁড়ালেন ক্যাপ্টেন কার্ক।

ধাতব এক ধরনের ভোতা যান্ত্রিক গুঞ্জন উঠল চারিদিকে। লেজার রশ্মির তীব্র আলোয় ঢেকে গেল গোলাকার অংশটুকু। আলোর তীব্র ঝলকানিতে ঢাকা পড়ে গেল কার্কের দেহ। এর মধ্যে ক্রমশঃ ম্লান হয়ে আসছে কার্কের অবয়ব স্পেশশিপপের অন্যান্য অভিযাত্রীদের কাছে। সারা কক্ষ জুরে ধাতব গুঞ্জন বাড়তে লাগলো। ফিকে হতে হতে স্বচ্ছ হয়ে যাচ্ছে কার্কের শরীর; একসময় শূন্যে মিলিয়ে গেল কার্কের পুরো দেহটা। সাথে সাথে ধাতব শব্দ থেমে গেলো। থেমে গেলো আলোর ঝলকানিও। গোলাকার শূন্য জায়গাটায় এখন কেবল নিঃসীম স্তব্ধতা। ...
প্রায় ছয় আলোকবর্ষ দূরের এক পাথুরে নিষ্প্রাণ গ্রহে অবতরণ করলেন কার্ক ...

auto

স্টারট্রেকের এ ধরনের অসংখ্য দৃশ্যের সাথে দর্শকেরা নিশ্চয় কমবেশি পরিচিত। এই অদ্ভুতুরে মামদোবাজির পেছনের তত্ত্বটা আসলে আহামরি জটিল কিছু নয়। একটা দেহকে অণু-পরমাণুতে ভেঙে ফেলে নিমেষ মধ্যে দূরবর্তী জায়গায় প্রেরণ করে দেহকে আবার ঠিক ঠাক মত জোড়া লাগিয়ে দেওয়া। বিজ্ঞানের ভাষায় এর একটা গালভরা নাম আছে – 'টেলিপোর্টেশন'।

auto

মজার ব্যাপার হচ্ছে স্টারট্রেকের অভিযাত্রীরা সবসময় যে টেলিপোর্টেশনকে ঠিকমত নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন তা কিন্তু হলফ করে বলা যাবে না। 'এনিমি উইদিন' নামের একটা এপিসোডে কার্ক নিজেকে টেলিপোর্ট করতে গিয়ে ভয়ানক ভ্যারা চ্যারা লাগিয়ে দেন। টেলিপোর্ট করার পর দেখা গেল কার্কের দেহ বিভক্ত হয়ে দুটো কার্কে পরিণত হয়ে গিয়েছে। এক কার্ক ভালমানুষ আর অন্য কার্ক মহাশয়তান। এই মহাশয়তান কার্ক সারা স্পেশশিপ জুড়ে শুরু করলো নানা তেলেসমাতি কাজ কারবার। শেষ পর্যন্ত যথারীতি সিনেমার ম্যানুফ্যাকচারিং অনুযায়ী - 'ভাল কার্ক' ওই 'শয়তান কার্ক' কে পরাস্ত করে স্পেশশিপে শান্তি আনয়ন করলেন। মধুরেণ সমাপয়েৎ।

কিন্তু স্টারট্রেক তো হাজার হলেও আমুদে দর্শকদের মনোরঞ্জনের জন্য বানানো কাল্পনিক সিনেমা। সেখানে হাজারটা 'গাঁজাখুড়ি' জিনিস দেখিয়ে পার পাওয়া যায়। সেখানে যাই দেখাক না কেন, বাস্তবে টেলিপোর্টেশন করা কি আদৌ সম্ভব? ওই ভাল কার্ক আর শয়তান কার্কের কেচ্ছা-কাহিনী না হয় বাদ দেই, কিন্তু টেলিপোর্ট করে কোন কিছুকে সত্যই কি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ম্যাজিকের মত পাঠিয়ে দেয়া সম্ভব?

বিজ্ঞানীরা আজ নিশ্চিৎ করে বলছেন ' সম্ভব'। অস্ট্রেলিয়ান রিসার্চ কাউন্সিলের কোয়ান্টাম- অ্যাটম অপটিক্স ল্যাবের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি আনবিক স্কেলে সফলভাবে টেলিপোর্ট করে দেখিয়েছেন। আরেক বিজ্ঞানীর দল ফোটনকে 'টেলিপোর্ট' করে পাঠাতে পেরেছেন দানিয়ুব নদীর এক পাড় থেকে অন্য পাড়ে। অনেক বিজ্ঞানীই মনে করেন কয়েক দশকের মধ্যেই ভাইরাসের মত 'জটিল' অণু কিংবা আমাদের ডিএনএ টেলিপোর্ট করা সম্ভব হবে। কিন্তু স্টারট্রেকে যেরকম দেখানো হয়েছে সেরকম পূর্ণ অবয়বের টেলিপোর্ট যন্ত্র বানাতে হয়ত বিজ্ঞানীদের লেগে যাবে শ'খানেক বছর। তা লাগুক। অন্ততঃ তাত্ত্বিকভাবে যে টেলিপোর্টেশন আর 'অসম্ভব' কোন বিষয় না তা কিন্তু বুঝতে পারা যাচ্ছে এখনই। এই ধরণের সফল টেলিপোর্টের পেছনে যে তাত্ত্বিক ভিত্তিটি দাঁড়িয়ে আছে সেটিকে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন 'কোয়ান্টাম আঁতাঁত' (Quantum Entanglement)। আর সে জন্যই DARPA (Defense Advanced Projects Research Agency) এখন QuEST (Quantum Entanglement Science and Technology) নামে বড় সড় এক প্রজেক্ট হাতে নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি স্টারট্রেকের টেলিপোর্টেশন যন্ত্রের বাস্তব রূপায়ন ঘটানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন।

শুধু টেলিপোর্টেশন নয় - স্টারট্রেক, ব্যাক টু দ্য ফিউচার, এলিয়েন, হলো ম্যান কিংবা আই রোবোটের মত ছবি দেখলেই আমার মাথায় কিল বিল করা শুরু করে হাজারটা 'অসম্ভবের প্রশ্ন' -

- কখনো কি সময়-পরিভ্রমণ করে আমরা অতীতে বা ভবিষ্যতে ফিরে যেতে পারব? সত্যিই কি টাইম মেশিন জাতীয় কোন কিছু আমাদের পক্ষে বানানো সম্ভব?

- অনন্ত মহাবিশ্ব বা সমান্তরাল মহাবিশ্ব কি সত্যই আছে? কোনদিন কি আমরা ওয়ার্ম হোল বানিয়ে সমান্তরাল মহাবিশ্বের বাসিন্দাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারব?

- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ কতটুকু? রোবটেরা কি সত্যই অদূর ভবিষ্যতে মানবতাকে পরাস্ত করে এই পৃথিবীটা অধিকার করে নেবে?

- কখনো কি 'কোয়ান্টাম টানেলিং'-এর মত কোন প্রক্রিয়ায় আমরা দেয়াল ভেদ করে ভুতের মত এক পাশ থেকে অন্য পাশে চলে যেতে পারব?

- কখনো কি কাউকে পুরোপুরি অদৃশ্য করে দেয়া যাবে?

- কখনো কি অ্যান্টিম্যাটার দিয়ে রকেট বা স্পেশশিপ চালানো যাবে?

- কখনো কি স্টার ওয়ার্স-এর লেজার গান দিয়ে আন্তনাক্ষত্রিক যুদ্ধ শুরু হবে?

- কখনো কি মহাজাগতিক অধিবাসীদের সাথে আমাদের মোলাকাৎ হবে?

আমার বইয়ের শেলফ থেকে আমি মুহম্মদ জাফর ইকবালের কল্পবিজ্ঞানের পুরোন কোন বই হাতে তুলে চোখ বুলাই - যেখানে বর্ণনা পাই নিওপলিমারের জামা পড়ে পঞ্চম মাত্রার মহাহাকাশযানে বসে ইবান হলোগ্রাফিক স্ক্রিনে কথা বলে মর্তবাসী প্রিয়জনের সাথে, আর নিহিলিন সেবন করে রিশা না ঘুমিয়ে থাকে রাতের পর রাত, কিংবা গ্রিশিন গ্রহ থেকে ফেরার পথে স্পেশশিপ নিয়ে হাইপারডাইভ দেয় রিতুন ক্লিশ ... সেই কৈশোরের আবেগে বারে বারেই উদ্বেলিত হয়ে উঠি নিজের অজান্তেই। নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করি - এগুলো কি সত্যই সম্ভব হবে কখনো?

ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! পেশাগত কারণে কাঠখোট্টা বিজ্ঞান আর নিরস জাভা প্রোগ্রামিং নিয়ে কাজ করে গেলেও কাজ লাজ-লজ্জা বিসর্জন দিয়ে এখনো অসম্ভবের বিজ্ঞান নিয়েই চিন্তা করে যাচ্ছি শয়নে স্বপনে ...। তবে, আমার মাথায় এ ধরনের প্রশ্নের সূত্রপাত কিন্তু হলিউডের মুভি দেখে কিংবা জাফর ইকবালের বই পড়ে নয়, মাথায় এই ধরনের বিদঘুটে প্রশ্নের কিলবিলানির শুরু হয়েছিলো আরো অনেক অনেক আগে।

***

প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর সাগরতলে নটিলাস নামের সাগর দানবে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ক্যাপ্টেন নিমো, আর মাঝে মধ্যেই লিঙ্কন দ্বীপে রবিনসন ক্রুসোর মতই আটকে পড়া সাইরাস স্মিথ আর তার দলবলকে নানা বিপদ আপদ থেকে রহস্যময়ভাবে উদ্ধার করে চলেছেন একের পর এক ...।

ছোটবেলায় যখন সেবা প্রকাশনী থেকে অনুবাদ করা জুলভার্ণের 'রহস্যময় দ্বীপ' (Mysterious Island) প্রথম পড়া শুরু করেছিলাম বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। শুধু 'রহস্যময় দ্বীপ' নয় -এখনো মনে আছে কি গোগ্রাসে গিলেছিলাম Twenty Thousand Leagues Under the Sea (সাগর তলে), Around the World in Eighty Days (আশি দিনে বিশ্বভ্রমণ), From the Earth to the Moon (চাঁদে অভিযান), -এর মত সায়েন্টিফিক ফ্যান্টাসিগুলো। আমার বিজ্ঞানের প্রতি 'প্রেম' শুরু হয় বোধ হয় তখন থেকেই। অবাক হয়ে ভাবতাম - কী পরিমান ধী-শক্তি আর কল্পণাপ্রবণতা থাকলে কত্ত আগেকার সময়ের একটা লোক ভবিষ্যতের বাস্তবতাকে তুলে ধরতে পারেন নিখুঁত সৌন্দর্যে এবং সৌকর্যে। তিনি যখন আঠারো শতকে তার উপন্যাসগুলো লিখেছিলেন, তখন বাসায় বাসায় বিদ্যুতের হরেক রকম ব্যবহার ছিলো না - ছিলো না এই রকম ছাঁদ ফুরে বেরুনো ঝলমলে ঝাড়বাতি, কালার টিভি, কম্পিউটার, ওয়াশিং মেশিনের কোন কিছুই। অথচ জুলভার্ণ শুধুমাত্র তার Twenty Thousand Leagues Under the Sea উপন্যাসটিতেই বৈদুতিক শক্তির এমন সমস্ত ব্যবহারিক প্রয়োগ উল্লেখ করেছিলেন তা সত্যই অবাক করার মত। তিনি তখনই দেখিয়েছিলেন বৈদুতিক বাতি আর সার্চ লাইটের ব্যবহার, তার পাশাপাশি উল্লেখ করেছিলেন বৈদুতিক ঘড়ি এবং বৈদুতিক হিটারের, কল্পণা করেছিলেন ইলেক্ট্রিক প্রপেলারের, গভীর সমুদ্রে অভিযানের জন্য তৈরি করেছিলেন ডুবুরীর পোষাকের, লিপিবদ্ধ করেছিলেন সমুদ্রের নোনা জলকে সুপেয় জলে পরিবর্তনের অত্যাধুনিক প্রক্রিয়া এবং সর্বোপরি নিঁখুতভাবে অনুমান করেছিলেন সত্তুর মিটার লম্বা চুরুট আকৃতির ডুবোজাহাজ (সাবমেরিন) নটিলাসের - যাতে সওয়ার হয়ে ক্যাপ্টেন নিমো তার যাবতীয় অতিমানবীয় কারিশমাগুলো দেখাতেন।

এরকম কত ভবিষ্যদ্বানী যে জুলভার্ণ সঠিকভাবে করেছিলেন তার অন্যান্য উপন্যাস এবং গল্পগুলোতেও, তার কোন ইয়ত্ত্বা নেই। তিনি সে সময়ই কল্পনা করেছিলেন হেলিকপ্টার, ফ্লাইং মেশিন, বহুতল ভবন, প্রজেক্টর, জুক বক্সের –যেগুলো তখনকার দিনে আক্ষরিক অর্থেই ছিলো আকাশ কুসুম কল্পণা। এমনকি এপেলো অভিযানের একশ বছরেরও আগে তিনি লিখে ফেলেছিলেন - 'চাঁদে অভিযান’ (১৮৬৫)। অবশ্য রকেটের বদলে তিনি তার উপন্যাসে চাঁদে যাওয়ার জন্য দেগেছিলেন কামান। সেই কামানের নাম ছিলো 'কলম্বিয়াড'। কি আশ্চর্য - এর প্রায় একশ বছর পর এপেলো-১১ মিশনের জন্য যে রকেট মার্কিন বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছিলেন – তার 'কমান্ড মডিউলের' নাম ছিলো 'কলম্বিয়া'- জুলভার্ণের দেয়া নামের একদম কাছাকাছি। জুলভার্ণ হিসেব নিকেষ কষে কলম্বিয়াডের জন্য যে প্রক্ষেপণ পথ বানিয়েছিলেন সেই পথও ছিলো নাকি এপেলো ১১ এর খুবই কাছাকাছি। শুধু তাই নয়, কামান দাগার জন্য জুলভার্ণ বেছে নিয়েছিলেন ফ্লোরিডাকে। তাজ্জব ব্যাপার - প্রায় একশ বছর পর চাঁদে সত্যিকার অভিযানের জন্য নাসার রকেট উৎক্ষেপণও ঘটেছিলো শেষ পর্যন্ত ওই ফ্লোরিডা থেকেই।

auto
কি ভাবছেন? কাকতলীয় গোঁজামিল? ঝড়ে বক পড়ে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে? তাহলে মজার ব্যাপারটা তো বলিইনি এখনো। ১৮৬৩ সালে জুলভার্ণ একটি বই লিখেছিলেন - 'Paris in the Twentieth Century' নামে। তার প্রকাশক হেটজেল সাহেব ছিলেন মহা রগচটা মানুষ। তিনি পান্ডুলিপি পড়ে বললেন, 'মিয়া ভাই, এই বই তো চলব না। কি সব আজগুবি কথাবার্তা হান্দাইছেন মামা! এর মইধ্যে সায়েন্স নাই- খালি আছে বেহুদা ফ্যান্টাসি। ইট্টূ ঠিক ঠাক না করলে তো এই বই ছাপাইবার পারুম না।' জুলভার্ণ মনের দুঃখে পান্ডুলিপি নিয়ে ঘরের চিপায় ফেলে রাখলেন। জুলভার্ণ যখন মারা যান, তখনো কেউ এই পান্ডুলিপিটার কথা জানতো না। জুলভার্ণ নিজেও আর কখনো পরবর্তীতে তার এই উপন্যাসটি ছাপানোর ব্যাপারে গা করেননি। জুলভার্ণ মারা যাওয়ার বহু বছর পর তার এক নাতি হঠাৎ করেই পান্ডুলিপিটি খুঁজে পান পরিত্যক্ত কাগজপত্রের ভীরে, আর শেষ মেষ এই পান্ডুলিপি বই আকারে বের হয় এই সেদিন - ১৯৯৪ সালে। বইটা বেরুনোর পর সকলের তাব্দা লেগে গেল। সেই ১৮৬৩ সালেই জুলভার্ণ নিখুঁতভাবে কল্পণা করতে পেরেছিলেন - বিংশ শতাব্দীতে 'আধুনিক' প্যারিসের রূপ কেমন হতে পারে। তিনি উল্লেখ করেছিলেন ফ্যাক্স-মেশিনের, ক্যালকুলেটরের, কল্পণা করেছিলেন বহুতল কাঁচ-দালানের, ইলেকট্রিক চেয়ারের, গ্যাস-পরিবাহিত গাড়ির, শীততাপনিয়ন্ত্রক যন্ত্রের, টেলিভিশন এবং এমনকি ইন্টারনেটের। ১৮৬৩ সালে জুলভার্ণের জন্য যেগুলো ছিল আকাশ কুসুম 'বৈজ্ঞানিক ফ্যান্টাসি', আজকে সেগুলোই আমাদের জন্য সহজ সরল বাস্তবতা।

প্রিয় পাঠক, অসম্ভবের বিজ্ঞান সিরিজে স্বাগতম!


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চমৎকার! অনেকে বলে থাকেন জুল ভার্ন নাকি টাইম ট্রাভেল করে দেখে গিয়েছিলেন। বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করবেন নিশ্চয়ই।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অভিজিৎ এর ছবি

অবশ্যই। টাইম ট্রাভেল, ইনভিজিবিলিটি, টেলিপোর্টেশন, রবোট, স্টারশিপ, স্টার ওয়ারস, প্যারালাল ইউনিভার্স... অনেক কিছু নিয়েই আলাদা আলাদা ভাবে লিখব এ সিরিজটায়।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

কীর্তিনাশা এর ছবি

সিরিজের চমৎকার সূচনা। নিয়মিত চলবে আশাকরি।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

মূলত পাঠক এর ছবি

অসাধারণ লিখছেন অভিজিত, আপনার লেখা কখনোই হতাশ করে না, যেমন বিষয় নির্বাচন, তেমনি লেখার হাত। প্রতীক্ষায় থাকবো পরবর্তী অংশের জন্য।

দিগন্ত এর ছবি

আমার একটা ব্যক্তিগত কৌতুহল আছে - স্টার ওয়রস-এ যেমন লেসার বিম-এর তলোয়ার ব্যবহার করা হয় তেমনটা কি সম্ভব? আমি কিছুতেই ভেবে পাইনা কি ভাবে কোনো বিম কিছুটা উঠে থেমে থাকে ...

আর কল্পবিজ্ঞানের সত্যি হবার ব্যাপারটা কিন্তু কিছু লেখকবিশেষে ঠিক ... আমি জুল ভার্নের সমসাময়িক আরো কয়েকজনের লেখা পড়েছি, যা বাস্তবের ধার-কাছ দিয়েও যায় নি। আবার অন্যভাবে দেখলে চাঁদে যাওয়া, টাইম মেশিন বা ইনভিসিবল ম্যান হবার মানুষের আকাঙ্ক্ষা অনেক পুরোনো।

পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অভিজিৎ এর ছবি

লেসার বিম নিয়ে আপনার প্রশ্নটির উত্তর দিতে গেলে অনেক কিছু বলতে হবে। আমি ভাবছিলাম এ নিয়ে আলাদা একটা পর্ব করব। তা আপনি যখন প্রশ্ন করেছেনই, এখন আপনাকে উত্তর দিতেই হবে।

অনেক ধরনের লেজারের ব্যাবহারের কথা আমরা জানি। এখন ত খেলনার দোকানে, ফাইবার অপটিক্স কেবেলে, লেজার প্রিন্টারে, সিডি প্লেয়ারে, আধুনিক কম্পিউটারে, কস্মিক সেলুনে, সার্জারিতে, চোখের ক্যাটেরাক্ট অপারেশনে হরহামেশাই লেজার ব্যবহৃত হচ্ছে। তা হলে লেজার গান তৈরিতে অসুবিধা কি?

সবচেয়ে বর অসুবিধা হল পোর্টেবল পাওয়ার প্যাক-এর অপ্রতুলতা। লেজার গানের জন্য এক বিরাট শক্রির পাওয়ার প্যাক নিয়ে বয়ে বেড়াতে হবে। মানে আজকের দিনের বড় বড় পাওয়ার স্টেশনগুলোকে ছোট করে আপনার তালুর সমান ছোট করে ফেলতে হবে।

আর দ্বিতীয় কারণ হল লেজার গানে ব্যবহৃত পদার্থের স্থায়িত্ব। তাত্ত্বিক ভাবে আপনি শক্তিকে ইচ্ছে মত লেজারে কনসেন্ট্রট করতে পারেন - কোন বাধা নেই। কিন্তু সেই শক্তিকে ধরে রাখার মত পদার্থ আমাদের হাতে নেই। ক্রিসটাল লেজার - ওভারহীটেড হয়ে ক্র্যাক করে যায় - যদি আপনি খুব বেশি এনার্জি পাম্প করে ভরে দেন। পদার্থবিদ মিচিও কাকু তার বইয়ে বলেছেন, 'Because of the problems in creating a portable power pack and a stable lasting material, building a handheld ray-gun is not possible in today's technology'। ভবিষ্যতের নেনোটেকনোলজির মাধ্যমে যদি অল্প জায়গায় অফুরন্ত পাওয়ার স্টোর করার ব্যবস্থা করা যায়, তা হলে হয়ত এ জিনিস সাফল্যের মুখ দেখবে।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

জাফরী এর ছবি

খুব ভাল লাগল অভিজিত দা'র লেখাটা পড়ে।
আমি যখন প্রথম কোয়ান্টাম কম্পিউটিং কোর্স টা করছিলাম আমার উতসাহ দেখে ইন্সট্রাকটর হাসতে হাসতে বলেছিলেন কোয়ানটাম কম্পিউটিং এর ব্যপারে বিখ্যাত একটি উক্তি,
"There is a 50-50 law of Quantum Computers. A 50% chance that it would come to reality in 50 years."
টেলিপোর্টেশন এর গানিতিক ফর্মুলেশন এর ভিত্তি কিন্তু কোয়ান্টাম কম্পিউটার এর কনসেপ্ট থেকেই শুরু। আসলে শুনতে যতটা আশাব্যন্জক লাগে ব্যবহারিক ভাবে কিন্তু অগ্রগতি তেমনটা নয়।
quantum gate গুলো কিন্তু এখনও থিওরিতেই রয়ে গেছে। অজানা কোয়ান্টাম স্টেট হয়ত টেলিপোর্ট করা যায় কিনতু তার জন্য বিশুদ্ধ শেয়ারড এনটেংগেলড স্টেট দরকার যা তৈরি করা এখনকার টেকনোলোজি তে প্রায় অসম্ভব। তাও আশা করতে দোষ কি?

জাফরী
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, রিভারসাইড

পরিবর্তনশীল এর ছবি

অসাধারণ! অসাধারণ সূচনা।

জুলভার্নের অংশে এসে অনেক কিছু মনে পড়ে গেল। জীবনে নিজের বুদ্ধিতে প্রথম বই কিনেছিলাম- নীল মলাটের জুলভার্ন রচনাসমগ্র। জুলভার্নের মত এত সুন্দর করে ভবিষ্যতকে দেখতে- এত সত্যি ভাবে- আর কেউ কি পেরেছেন? কোন লেখক? কিংবা কোন মানুষ?

আমি শুনেছিলাম- ইউএসএ এ নাকি তাদের প্রথম সাবমেরিনের নাম দিয়েছিল টু থাউজ্যান্ড লিগস আণ্ডার দ্য সি- এর পানির নীচের জাহাজ এর নামানুসারে। সম্ভবত ''ডোনাভান'' বা এরকম কিছু। ঠিক মনে নেই। সত্যি নাকি?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

জ্বিনের বাদশা [অতিথি] এর ছবি

বস,
'কোয়ান্টাম আঁতাঁত' নিয়ে একটু আলোচনা করলে ভালো লাগতো। লিংক দুটো পড়লাম, কিন্তু কিছুই বুঝলামনা? কোয়ান্টাম কম্পিউটিং সম্পর্কে ভালো জানিনা বলেই হয়তো বুঝলামনা।
আমার তো ধারনা ছিলো ফাইবার অপটিক কমিউনিকেশনে অহরহই আলোককণারা দুনিয়ার এমাথা থেকে সেমাথা ঘুরে বেড়ায়। এই আলোককণা কি ফোটন না? (ভাই হাইসেননা, আমার কণা সম্পর্কিত জ্ঞান আসলেই জিরো মন খারাপ)
দানিয়ূব নদীর এক্সপেরিমেন্টের ফোটনের নদী পার হবার ব্যাপারটায় তাই আটকায়া গেলাম চোখ টিপি

অভিজিৎ এর ছবি

আমি ইচ্ছে করেই কোয়ান্টাম আঁতাতের পেছনের কারিগরী দিকগুলো এড়িয়ে গেছি। আমি প্রথম পর্বেই জটিলতা টেনে এনে নিরস আলোচনা শুরু করে দিয়ে কারো মাথা বিগড়ে দিতে চাইনি। ভেবেছিলাম - টেলিপোর্টেশন নিয়ে আলাদা করে লেখা তো হবেই এ সিরিজে - তখনই না হয় এ ব্যাপার স্যাপারগুলো পরিস্কার করা যাবে।

টেলিপোর্টেশনকে তারের মধ্য দিয়ে ডেটা ট্রান্সফার কিংবা 'ফাইবার অপটিক কমিউনিকেশনে আলোক কণার এমাথা থেকে সেমাথা ঘুরে বেড়ানোর' সাথে তুলনা করলে ভুল হবে। হ্যা সেরকম ব্যাপার স্যাপার তো আমরা অহরহই দেখছি। টেলিপোর্টেশন কিন্তু সে ধরনের 'তারের মধ্য' দিয়ে তথ্য সরবরাহ নয়। টেলিপোর্টেশন হচ্ছে এমন এক পদ্ধতি - যেখানে আপনাকে কিংবা অন্য যে কোন বস্তুকে চোখের নিমেষে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দেয়া যাবে। ধরুন আপনি আমার পাশের চেয়ারটায় বসে গল্প করছেন। হঠাৎ আমি দেখব আপনি অদৃশ্য হয়ে গেছে, আর তারপর পরই আপনার অভুদয় ঘটল পাশের রুমে দিগন্তের খালি চেয়ারটায়। ব্যাপারটা হয়ত এখন আধিভৌতিক গাঁজাখুড়ি মনে হচ্ছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, টেলিপোর্টেশনের সাহায্যে এই ভৌতিক অবাস্তবতাকেই সম্ভব করা যাবে।

এর এপ্লিকেশনের মাহাত্ম্য চিন্তা করুন। এই পদ্ধতি সফল হলে আজকে যানবাহনের পেছনে যে হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে- তা আর থাকবে না। বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে হলে সত্তুর আশি হাজার টাকা খরচ করে প্লেনের টিকেট কিনতেহয়। আর প্লেনে একবার উঠলেও আমেরিকায় পৌঁছুতে লাগে দুই থেকে তিন দিন। এখন আপনার কাছে টেলিপোর্টেশন যন্ত্র থাকলে আপনি সেটাতে কেবল চড়ে বসবেন - আর চোখের নিমেষে আপনি পৌঁছে যাবেন আমেরিকা। যোগাযোগ শুধু নয় - আরো চিন্তা করুন - এই টেলিপোর্টেশন সমরাস্ত্রের জগতে রীতিমত বিপ্লব এনে দেবে। শত্রু খতম করতে তখন আর সময় আর অর্থ নষ্ট করে লোক-লস্কর, ট্যাংক, যুদ্ধজাহাজ নিয়ে মাইলের পর মাইল পাড়ি দিতে হবে না। এক লহমাতেই শত্রুর ক্যাম্পের পেছনে 'ভুতের মত' আপনি আবির্ভুত হতে পারবেন, আর তারপর ঝাকানাকার মত কষতে পারবেন জুজুৎসুর এক মোক্ষম প্যাঁচ। ব্যাস শত্রু আপনার বগলদাবা।

যাহোক এখন মূল আলোচনায় আসি। 'কোয়ান্টাম আঁতাত'-এর মাধ্যমে কিভাবে টেলিপোর্ট করা যাইয় - তা সহজে বোঝানো একটু জটিলই বটে। আসলে টেলিপোর্টেশন দাঁড়িয়ে আছে ১৯৩৫ সালে আইনস্টাইনের একটি পেপারের উপর ভিত্তি করে। আইনস্টাইন তার অন্য দু'জন সহযোগীর (বরিস পোডলস্কি এবং নাথান রোসেন) সাথে মিলে একটি পেপার লিখেন - মূলতঃ কোয়ান্টাম বলবিদ্যাকে নস্যাৎ করার অভিপ্রায়ে। পেপারটি পদার্থবিদ্যার জগতে পরিচিত হয়ে আছে 'EPR experiment' নামে।

মনে করুন, একটি সিস্টেমের টোটাল স্পিন শূন্য। ধরুন সেই সিস্টেমে দুটো ইলেক্ট্রন সংবদ্ধভাবে আন্দোলিত (oscilating in unison or coherence) হচ্ছে, অজানা কোণ দূরত্বে। ইলেক্ট্রনের স্পিন হতে পারে দু'রকম - 'আপ' অথবা 'ডাউন'। এখন যেহেতু আপনি জানেন সিস্টেমের টোটাল স্পিন শূন্য, কাজেই কোন ভাবে যদি আপনি প্রথম ইলেক্ট্রনের স্পিন নির্নয় করতে পারেন- আপনি তাৎক্ষনিক ভাবে জেনে যাবেন অপর ইলেক্ট্রনের স্পিন কি হতে পারে (যেহেতু ইলেক্ট্রনযুগল সিস্টেমে সংবদ্ধভাবে আন্দোলিত হচ্ছে )। যেমন প্রথম ইলেক্ট্রনের স্পিন যদি পাওয়া যায় 'আপ', আপনি সেই মুহূর্তেই জেনে যাবেন অপর ইলেক্ট্রনের স্পিন হবে 'ডাউন'। আর তা আপনি জেনে যাবেন আলোর গতিরও অনেক আগে। আইনস্টাইন এই ব্যাপারটিকেই বলেছিলেন 'spooky-action-at-distence'। এখন যেহেতু কোন কিছুই আলোর গতির চেয়ে বেশি গতিবেগে চলতে পারে না, সেহেতু আইনস্টাইনের অনুসিদ্ধান্ত ছিলো কোয়ান্টাম বলবিদ্যা ভ্রান্ত।

কিন্তু ১৯৮০ সালে ফ্রান্সে এলেন অ্যাস্পেক্ট এবং তার সহযোগিরা মিলে EPR experiment সম্পন্ন করেন- এবং এর ফলাফল গেলো কোয়ান্টাম বলবিদ্যার পক্ষে - অর্থাত, আইনস্টাইনের অনুমানের বিপরীতে (ঈশ্বর তা হলে সত্যই পাশা খেলেন!)।

১৯৩৩ সালে চার্লস বেনেটের নেতৃত্বে আইবিএম এর বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মত দেখালেন যে, টেলিপোর্ট করা সম্ভব- অন্ততঃ আনবিক স্কেলে। তখন থেকেই বিজ্ঞানীরা ফটন কনা কিংবা একটি সিজিয়াম অনুর সমস্ত তথ্য টেলিপোর্ট করতে শিখেছেন। আমি আমার রচনায় যে ভিয়েনার গবেষক দলের কথা বলেছি তা নিশ্চয় লক্ষ করেছেন।

বিজ্ঞানীরা কোয়ান্টাম এন্টাংগেলমেন্ট ছাড়াও টেলিপোর্ট করতে পেরেছেন। অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা (এস্টন ব্রাডলি আর তার দলবল) সেরকমটিই দাবি করেছেন। তারা এ পদ্ধতিটির নাম দিয়েছেন 'ক্লাসিকাল টেলিপোর্টেশন'। এই টেলিপোর্টেশনের ভিত্তি হচ্ছে বোস-আইনস্টাই কনডেন্সেশন। কিভাবে বোস আইনস্টাইন পদ্ধতিতে এন্টাংগেলমেন্ট ছাড়াই টেলিপোর্ট করা যাচ্ছে তা বলতে গেলে আরো হাজারটা কথা বলতে হবে। আজকে ক্ষ্যামা দেই আপাততঃ। টেলিপোর্ট নিয়ে যখন আলাদা ভাবে লিখব, তখন সেগুলো বলবার ইচ্ছে আছে।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

শিক্ষানবিস এর ছবি

অভিজিৎ রায়ের লেখা কতটা সুন্দর তা তো আর নতুন করে বলার কিছু নেই। এবারের বিষয়টা আমার স্বপ্নের সাথে পুরো মিলে গেল। খুবই সময়োপযোগী একটা সিরিজ শুরু করেছেন। সন্দেহ নেই, সিরিজের প্রতিটা লেখা আমি গোগ্রাসে গিলবো। তাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।

জুল ভার্ন আর স্টার ট্রেক; দুই কল্পবিজ্ঞানের মধ্যে স্টার ট্রেকের সান্নিধ্যে আসার সৌভাগ্য এখনও হলো না। সুযোগ পেলেই দেখে ফেলব। মনে হচ্ছে, তাতে কল্পনাশক্তি কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। তবে তা বোধহয় জুল ভার্ন পাঠের মুগ্ধতাকে ছাড়াতে পারবে না। কারণ, জুল ভার্নের অনেক কিছু তো এখন বাস্তব।

টেলিপোর্টেশন সম্ভব, এই কথা শুনে যারপরনাই খুশী হইছি। আরেকটা কল্পবিজ্ঞানের বাস্তব প্রয়োগের আশায় আছি।

জুলিয়ান সিদ্দিকী [অতিথি] এর ছবি

দাদা, আমিও আছি এই সিরিজের লগে!

বজলুর রহমান এর ছবি

অস্ট্রিয়াতে ঠিকই কোয়ান্টাম টেলিপোরটেশন ঘটানো হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ায় শুধু একটা তাত্ত্বিক পদ্ধতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা এই খবরের প্রতিবেদক গুলিয়ে ফেলেছেন, ফলে এটা মনে হতে পারে যে আসলেই পরমাণুসমষ্টিকে লেজার দিয়ে উড়িয়ে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

অস্ট্রিয়াতে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের রেজিস্টারের মৌলিক অংশক কোয়ান্টাম এন্ট্যাংগল্ড 'বিট' বা 'কিউবিট' এবং এক ধরনের কোয়ান্টাম লজিক গেইটও তৈরী হয়েছে। আলোর বা ফোটনের দু রকম পোলারায়নের সংমিশ্রনে এই কিউবিট এবং অন্য আলোর প্রভাবে এই পোলারায়নের পরিবর্তন করা হয় গেইটে। সত্যিকার কাজের উপযোগী কোয়ান্টাম কম্পিউটার বানাতে এখনো বহু দশক বাকি আছে।

আসলে টেলিপোরটেশন সম্বন্ধে অস্ট্রিয়া ও অন্যত্র যেসব গবেষণা হচ্ছে, তা তথ্যের দূরপ্রেক্ষণ মাত্র, পদার্থের নয়। এমন কি অস্ট্রেলিয়াতে ওলসেন ও হেইনের গবেষণারও লক্ষ্য কিছু পরমাণুকে নিম্ন তাপমাত্রায় নিয়ে গিয়ে বোস কন্ডেন্সেশন ঘটিয়ে, তাদের সম্পর্কিত তথ্য ফোটন দিয়ে দূরে ফাইবার কেবলের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়া, এবং সেই প্রান্তে অনুরূপ কন্ডেন্সেটের মধ্যে সেই তথ্যের পুনর্বিকাশ ঘটিয়ে এ প্রান্তের পরমাণুসমন্বয়ের ক্লোন তৈরী করা। এটা করতে তাঁরা চার বছর লাগবে আশা করেন। দেখা যাক। অন্য কোথাও এবিষয়ে উৎসাহ দেখছি না।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

দয়া করে এসম্পর্কে একটা বিস্তারিত পোস্ট দেবেন? ইন্টারেস্ট বেড়ে গেলো
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

তানভীর এর ছবি

এখনো মনে আছে কি গোগ্রাসে গিলেছিলাম Twenty Thousand Leagues Under the Sea (সাগর তলে), Around the World in Eighty Days (আশি দিনে বিশ্বভ্রমণ), From the Earth to the Moon (চাঁদে অভিযান), -এর মত সায়েন্টিফিক ফ্যান্টাসিগুলো।

Around the World in Eighty Days-এ কোন সায়েন্টিফিক ফ্যান্টাসি ছিল বলে তো মনে পড়ছে না বা এটা বৈজ্ঞানিক কোন কল্পকাহিনীও নয়- মিঃ ফিলিয়াস ফগ আর পাশেপারতুর জমজমাট বাস্তবসম্মত ভ্রমণকাহিনী।

সিরিজটা পড়ার আগ্রহ রইলো।

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

অভিজিৎ এর ছবি

Around the World in Eighty Days-এ কোন সায়েন্টিফিক ফ্যান্টাসি ছিল বলে তো মনে পড়ছে না বা এটা বৈজ্ঞানিক কোন কল্পকাহিনীও নয়- মিঃ ফিলিয়াস ফগ আর পাশেপারতুর জমজমাট বাস্তবসম্মত ভ্রমণকাহিনী।

হ্যা আপনার কথা ঠিক। ওটাকে সায়েন্টিফিক ফ্যান্টাসি না বলে শুধু ফ্যান্টাসিই বলা উচিৎ, কিংবা আরো স্পস্ট করে 'এডভেঞ্চার নভেল'। ফগ সাহেব ৮০ দিনে বিশ্ব ঘুরে এসে ২০,০০০ পাউন্ড বাজী জয়ের মজার কাহিনী।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

রণদীপম বসু এর ছবি

আশি দিনে বিশ্ব ভ্রমনে চমৎকারিত্বটা ছিলো পৃথিবীর আহ্নিকগতির অনুকূলে ভ্রমন শেষে আশি দিনের হিসাবটা যে আসলে উনআশি দিন হয়েছে ফগ সাহেবের নিজেরও এক আবর্তনের কারিশমায়, সেই বৈজ্ঞানিক সত্যটাকে ফিকশনাল উপস্থাপন। বালক বয়সে আমি কিন্তু খুব মজা পেয়েছিলাম পড়ে। পৃথিবীর ভূপ্রাকৃতিক অবস্থাটাও কল্পনায় যে সত্যিকার বস্তুনিষ্ঠতায় ধরে ফেলেছিলেন, তাও যে সে কথা ছিলো না তখন।

সেই বালকবয়সে আমার অভিজ্ঞতাগুলোর সাথে আশ্চর্য মিল পেয়ে পোস্টটি আরো আকর্ষণীয় হলো আমার কাছে।

একসময় বিটিভিতে স্টারটেক সিরিয়ালের ভীষণ ভক্ত ছিলাম। আর এখনো জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশন পেলেই গিলে ফেলি।

দুর্দান্ত বিষয়ে দুর্দান্ত ব্যক্তিটা যখন কলম ধরেছেন, তখন আর কোন মন্তব্য নয়। কেবল পড়া। আর বরাবরের মতো আমার শুরুটা একটু দেরিতে হলো, এই যা।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

জুল ভার্ণ শুনলেই আমার "রহস্যের দ্বীপ'-র কথা মনে পড়ে। কী বুঁদ হয়েই না পড়েছিলাম।

টিকটিকির ল্যাজ এর ছবি

প্রযুক্তি যেভাবে এগুচ্ছে, কণাকে যদি টেলিপোর্ট করা যায়, একসময় আস্ত মানুষকেও করা যাবে আশা রাখি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এপ্রান্তের মানুষের শরীরের প্রতিটি কণা অন্যপ্রান্তে সরিয়ে নেয়া গেলেও, বা বজলুর রহমান ভাইয়ের কথানুসারে, অনুরূপ পুনর্নিমাণ করা গেলেও ‘প্রাণ’টার কি হবে? ও বস্তুতো বোধকরি কোন কণা না। ওটাতো আমাদের কাছে এখনো রহস্যই!!! চিন্তিত

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

চমৎকার লেখা। সিরিজটা খুবই জমজমাট হবে মনে হচ্ছে। ছোটবেলায় জুল ভার্ণের "চাঁদে অভিযান" বইটা পড়ে যে কি মুগ্ধই হয়েছিলাম!

লেখায় টেলিপোর্টেশন সম্পর্কে পড়ে আমার মাথাতেও যে প্রশ্নটা এসেছিল, তা দেখলাম উপরের মন্তব্যেই করা হয়ে গেছে। আমারও কৌতুহল, বিজ্ঞানীরা "প্রাণ" (বা আত্মা) টেলিপোর্ট করবে কিভাবে! হয়ত আপনার টেলিপোর্ট সম্পর্কিত মূল লেখায় বিস্তারিত জানা যাবে। অপেক্ষায় থাকলাম।
_______________
বোকা মানুষ মন খারাপ

শিক্ষানবিস এর ছবি

যতদূর জানি বিজ্ঞানীরা প্রাণ বলতে বিমূর্ত কিছু বোঝেন না। অর্থাৎ কিনা, প্রাণী দেহের এমন কিছু নেই যা জীববিজ্ঞানের আওতার বাইরে। জড় থেকেই এই প্রাণের উদ্ভব ঘটেছে। প্রাণ হল জড়বস্তুর একটি বিশেষ সন্নিবেশ মাত্র।
এখানে আত্মার কথা আসতে পারে। বিজ্ঞানীরা আত্মা বলে কোন কিছুর অস্তিত্বকে স্বীকার করেন না।
তাই, মানুষের দেহে ইলেকট্রন-প্রোটন-নিউট্রনের বাইরে কোনকিছুই নেই। প্রাণ কোন বস্তু না, এটা হল জড় বস্তুর একটা বিশেষ সন্নিবেশের নাম।
আমার অন্তত সেই রকমই মনে হইতেছে।

অমিত আহমেদ এর ছবি

আপনার কথা ঠিক শিক্ষানবিস। প্রান-আত্মা এগুলো সেই 300/400BC আগের ধারণা। এগুলোর আলাদা কোনো অস্তিত্ব নাই।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

স্যরি, আমার বলা উচিত ছিলো টেলিপোর্টেশন কি সে সম্পর্কে জানি, আপনাকে খালিখালি দুপ্যারা লিখতে হতোনা চোখ টিপি

"১৯৩৩ সালে চার্লস বেনেটের নেতৃত্বে আইবিএম এর বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মত দেখালেন যে, টেলিপোর্ট করা সম্ভব- অন্ততঃ আনবিক স্কেলে। তখন থেকেই বিজ্ঞানীরা ফটন কনা কিংবা একটি সিজিয়াম অনুর সমস্ত তথ্য টেলিপোর্ট করতে শিখেছেন। আমি আমার রচনায় যে ভিয়েনার গবেষক দলের কথা বলেছি তা নিশ্চয় লক্ষ করেছেন।"
এটা কি ১৯৩৩ না ১৯৯৩? আণবিক স্কেলে যদি তখনই টেলিপোর্টেশন হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে এখন অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানীদের ফোটন স্কেলে টেলিপোর্টেশনের সিগনিফিক্যান্স কি এটাই যে তারা ল্যাবের বাইরে রিয়াল ওয়ার্ল্ডে এটা করতে পেরেছেন?

ফোটন সম্পর্কিত ব্যাপারটা এখনও ক্লিয়ার হলোনা। নরম্যালি কি অপটিক ফাইবার দিয়ে ফোটন ছুটে বেড়ায় না? অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানীরাও তো বলছে যে তারা ৮০০ মিটার লম্বা অপটিক ফাইবার দিয়েই পাঠিয়েছে; চোখের নিমিষেই পাঠাক আর যত দ্রুতই পাঠাক একটা মাধ্যম তো লাগবে, তাইনা?

কোয়ান্টাম আঁতাত নিয়ে লেখা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম

সাথে চার্লস বেনেট আর এ্যালান এস্পেক্টের পরীক্ষাগুলোও আলোচনা কইরেন, এরকম পোস্টে আবারও পাঁচতারা চলুক
(রেটিং যখন দেয়া যাচ্ছেনা, তখন মুখের কথাতেই রেটিং চোখ টিপি)
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

অভিজিৎ এর ছবি

এটা কি ১৯৩৩ না ১৯৯৩?

হ্যা, ওটা ১৯৯৩ ই হবে। সরি।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

অভিজিৎ এর ছবি

ও হ্যা, আরেকটা ব্যাপার।

আণবিক স্কেলে যদি তখনই টেলিপোর্টেশন হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে এখন অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানীদের ফোটন স্কেলে টেলিপোর্টেশনের সিগনিফিক্যান্স কি এটাই যে তারা ল্যাবের বাইরে রিয়াল ওয়ার্ল্ডে এটা করতে পেরেছেন?

আমি যতদূর জানি ২০০৪ সালের আগে টেলিপোর্টেশন নিয়ে যা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিলো - সবই ফোটন নিয়ে। ২০০৪ সালের ভিয়েনা টিমের গবেষণা এ কারনে গুরুত্বপূর্ণ, যে তারা ফোটন নয়, আসল অণুকে টেলিপোর্ট করতে প্রেছিলেন।

আর ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার টিম যা করেছেন - তা হল কোয়ান্টাম এন্টাংগেলমেন্ট ছাড়া ভিন্ন এক পদ্ধতিতে টেলিপোর্টেশন করে দেখানো, যেটাকে বলা হচ্ছে 'ক্লাসিকাল টেলিপোর্টেশন'।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

অভিজিৎ এর ছবি

আমারও কৌতুহল, বিজ্ঞানীরা "প্রাণ" (বা আত্মা) টেলিপোর্ট করবে কিভাবে!

এটা একটা দার্শনিক প্রশ্ন। এর উত্তর নির্ভর করে আপনি প্রাণ বলতে কি বোঝেন তার উপর। উপরে শিক্ষানবিসের উত্তরটি দেখুন। আধুনিক জীববিজ্ঞানীরা কিন্তু আত্মা দিয়ে প্রাণকে আর সংজ্ঞায়িত করেন না, ওটা অনেক আদিম পদ্ধতি। আপনি এ প্রসঙ্গে আমার বই 'মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে' বইটি দেখতে পারেন। আসলে আত্মার অস্তিত্ব ছাড়াই বিজ্ঞানীরা আজ মানুষ সহ অন্যান্য প্রাণির আচরণ, আচার-ব্যবহার এবং নিজের 'আমিত্ব' (self) এবং সচেতনতাকে (consciousness) ব্যাখ্যা করতে পারছে, এমনকি খুঁজে পেয়েছে ধর্মীয় অপার্থিব অভিজ্ঞতার বিভিন্ন শরীরবৃত্তীয় উৎস। এ নিয়ে সচলায়তনেও আমি একটা সিরিজ আগে লিখেছি - আত্মা নিয়ে ইতং বিতং ( | | | | ) । আপনি পড়ে দেখতে পারেন।

কিন্তু আমার প্রশ্নটি অন্য জায়গায়। ধরে নিলাম স্টারট্রেকের মত সত্যিকার টেলিপোর্ট করা সত্যই একদিন সম্ভব হল। এবং সে প্রক্রিয়া নিখুঁত। এখন,
এক প্রান্ত থেকে টেলিপোর্ট করার পর অন্য জায়গায় যে মানুষটা বেরিয়ে আসবে ট্রান্সমিটার থেকে - তাকে দেখতে অবিকল প্রেরিত মানুষের মতই দেখাবে - চেহারায়, আচার আচরন, চিন্তা চেতনায়। কিন্তু তারপরও সে মানুষটা স্রেফ একটা 'কপি' (অন্ততঃ কোয়ান্টাম এন্টাঙ্গেলমেন্ট-এর মাধ্যমে এ স্থানান্তর হলে তাই হবে)। আসলে মূল মানুষটি টেলিপোর্ট করার সময়ই হারিয়ে যাবে (মৃত্যু?), আর যে মানুষটাকে অন্যপ্রান্তে পাওয়া যাবে - তিনি স্রেফ পূর্বেকার মানুষটির 'নকল' ছাড়া কিছু নন। এখন টেলিপওর্টেশনের পর মানুষটির আচার আচরণে যদি কোন পার্থক্য না পাওয়া যায়, আর প্রক্রিয়াটি যদি হাজার খানেকবার চালিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় করে তলা হয় - মানুষেরা হয়ত আর এ নিয়ে তেমন চিন্তা করবে না। কিন্তু তারপরও, প্রথম যে মানুষটি নিজেকে টেলিপোর্ট করতে রাজী হবে - তাকে হতে হবে খুব সাহসী, নয়ত চিন্তাশূন্য নির্বোধ। অন্ততঃ ওয়ার্ল্ড ফিউচার সোসাইটির ডাইরেক্টর মার্ভিন জে .কার্টন তাই মনে করেন।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ধন্যবাদ অভিজিৎ'দা। আপনার বই আর পোস্টগুলো সময় করে অবশ্যই পড়ব।

শিক্ষানবিসের উত্তর দেখলাম। আমি আসলে ঠিক দর্শনতত্ত্ব থেকে প্রশ্নটি করিনি। আমার জিজ্ঞাস্য ছিল যে, কারো প্রাণ বা আত্মাকে (তা সে যাই হোক না কেন) যখন কণায় ভেঙে, ধীরে ধীরে, টেলিপোর্ট করা হবে, তখন সে ব্যক্তি আদৌ জীবিত থাকবে কি না! আপনার মন্তব্যে তা পরিষ্কার হলো।

আমিও ভেবেছিলাম, যাকে টেলিপোর্ট করা হবে, সে "মারা" যাবে, আরেক জায়গায় তার কার্বন-কপি বা ক্লোন তৈরি হবে হয়ত। সমস্যা হল, টেলিপোর্ট মেশিনে কোন কারণে গ্লীচ দেখা দিলে, সে ক্ষেত্রে টেলিপোর্টকৃত ব্যক্তির কি হবে! সে কি "অন্য কেউ" তে বদলে যাবে? স্টারট্রেকের কার্কের মত?! কত কিছু অজানা এখনো!

তবে স্কেপটিক হতে মন চায় না, আমি বিশ্বাস করতে চাই যে, বিজ্ঞানীদের দ্বারা একদিন মানুষেরও সফল টেলিপোর্টেশন সম্ভব হবে। শুধু কাম্য এটাই যে, মৃত্যুর আগে যেন দেখে যেতে পারি তা!

আমি প্রচন্ড সাহসী কেউ নই, আবার বোকা হলেও, আমার ধারনা, একদম চিন্তাশূন্য নির্বোধও নই, তবুও বলব, কখনো সুযোগ আসলে আমি নিজেকে টেলিপোর্ট করতে রাজী হয়ে যাব!
____________
বোকা মানুষ মন খারাপ

বজলুর রহমান এর ছবি

বহু বছর আগে এক বন্ধুর বাসায় সাহিত্য-বিজ্ঞান মিলন সভায় (যেখানে সৈয়দ হকও ছিলেন) প্রশ্ন রেখেছিলাম - আমার মস্তিষ্কের অর্ধেক আর অন্য এক জনের মস্তিষ্কের অর্ধেক কোন দক্ষ সার্জন দল বদলাবদলি করে দিলে আমার কি মৃত্যু হবে, নাকি আমি এদের একজনের মধ্যে বেঁচে থাকব, কোন দেহে তাহলে? বলাবাহুল্য এই সব প্রশ্নের উত্তর কারো জানা নেই। যেমন কেউ জানে না একই মস্তিষ্কে একাধিক চেতনার অবস্থান (মস্তিষ্কে অপারেশনের পরে স্কিৎসফ্রেনিয়া) একাধিক প্রাণের নিদর্শন কি না।

আমার মনে হয় অভিজিত এসব প্রশ্ন নিয়ে অতীতে বেশি মাথা ঘামিয়েছেন।

পদার্থবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে টেলিপোরটেশন ছাড়াই আমাদের প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু ও নবজন্ম হচ্ছে , কেন না শরীরের প্রতিটি কণা কোয়ান্টাম ফীলড প্রোপাগ্যাটরের মাধ্যমে সময়ে এগিয়ে যায়, এবং এই সব প্রোপাগ্যাটর আসলে কণা ধ্বংস ও সৃষ্টি অপারেটরের যুগ্ম অবস্থান সম্ভূত। তুলিরেখা ভালো ব্যাখ্যা দেবেন , আশা করি।

অমিত আহমেদ এর ছবি

স্টার ট্রেকে ট্রান্সপোর্টেরে সমস্যা একটি ক্লাসিক সমস্যা। স্টার ট্রেক: নেক্সট জেনারেশনে সেকেন্ড অফিসার রাইকারের এনার্জিপ্যাটার্ন প্রতিফলিত হয়ে দুই ট্রান্সপোর্টারে দুই কপি হয়ে গেলো। তবে স্টার ট্রেক :নেক্সট জেনারেশনে স্টার ট্রেক: অরিজিনাল সিরিজের অনেক ভুল শুধরে নেয়ার কারণে দুজনে একই রকম ছিলো। একজন ভালো আরেকজন মন্দ না। এমন অনেক কাহিনী আছে। টেলিপোর্ট নিয়ে মানুষের ভয় দেখানো হয়েছে স্টারট্রেক: এন্টারপ্রাইজে।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

তুলিরেখা [অতিথি] এর ছবি

নতুন নামে ডাকবে মোরে/বাঁধবে নতুন বাহুর ডোরে/আসবো যাবো চিরকালের সেই আমি।
হো হো হো))
যাক কবিতা থাক, খুব ভালো লাগলো লেখাটা।
জুল ভার্ণের অপ্রকাশিত কাহিনির কথাটাও।(তিনি কি এখনো অপ্রকাশিত লিখছেন? চোখ টিপি)

অভিজিৎ এর ছবি

কবিতাটার মর্মাথ কি? কার উদ্দেশ্যে নিবেদিত? 'নতুন বাহুর ডোরে/আসবো যাবো' শুনেই ভয় পেয়ে গেলাম। হাসি

জুলভার্ণ এখনো অপ্রকাশিত লিখছেন কিনা - তা আমি বলতে পারব না। তার নাতিরে জিগাইতে হবে।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

তুলিরেখা [অতিথি] এর ছবি

ভবিষ্যত দেখা নিয়ে একটা বাংলা কল্পবিজ্ঞান দেখলাম এইখানে-২৩২১ সালের কাহিনি।
http://www.guruchandali.com/guruchandali.Controller?portletId=8&porletPage=2&contentType=content&uri=content571&contentPageNum=1
আপনার আগে কেউ পড়েছেন কি?

অভিজিৎ এর ছবি

দেখলাম লেখাটা। সময় করে পড়তে হবে। ধন্যবাদ লিঙ্কটার জন্য।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

তুলিরেখা [অতিথি] এর ছবি

কবিতাটা তো পুরানো। রবীন্দ্রনাথের।:-))
সেই যে "যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে/যখন বাইবো না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে.....":-))
গল্পটা পড়া হলে বইলেন কেমন লাগলো। ঐ সাইটে এনার লেখা আরো কল্পবিজ্ঞান আছে, চাইলে বইলেন সেইসব লিংক ও দিব নাহয় তখন।

শামীম এর ছবি

চমৎকার লেখনি। দেখতে থাকবো।

টেলিপোর্টেশনে যদি ফটোকপি বা আরো ভালভাবে বললে ফ্যাক্সের মত করে ডেটা পাঠানো হয় আর সেই ডেটা দিয়ে সেখানে একটা কপি তৈরী হয় তাহলে তো মূল শরীরটাকে ভাঙার দরকার নাই - ফ্যাক্সের বা সিটিস্ক্যানের মত স্ক্যান করে একটা ডিজিটাল ডেটাবেস তৈরী হবে। আর এভাবে তো অনেক কপি করা সম্ভব। (আমার বুঝতে ভুল হলে এ বিষয়টাকে পাত্তা দেয়ার দরকার নাই আপাতত .... আপনার ভবিষ্যত লেখাতেই উত্তর পাওয়া যাবে আশা করছি)

আর যদি বাস্তবেই কনাগুলোকে দ্রুততর মাধ্যম দিয়ে পাঠানো হয় তাহলে ধরে নিচ্ছি যে, কণাগুলো বড় আকারে পরিবহন ঝামেলা জন্য ছোট আকারে (ফোটন কণার আকারে হয়তো) পাঠানো হচ্ছে .... সেক্ষেত্রেও কিন্তু পাঠানোর জন্য মাধ্যম লাগবে। আর এই তত্ত্ব যদি ঠিক হয় তাহলেও একটা বস্তুর (মানুষের/প্রাণীর) অনুরূপ তৈরী করা সম্ভব ... কারণ কণাগুলোতো মৌলিক কণায় বিভক্ত হয়ে যাবে, আর ওগুলোর বিশেষ একটা পারষ্পরিক অবস্থানের জন্যই রহিম রহিম হবে আর বুশ বুশ হবে। কাজেই অন্য একাধিক বস্তু ভেঙ্গে সেখান থেকে ঐ কণাগুলো জোগাড় করে রহিমের রেকর্ড অনুযায়ী সংযুক্ত করলে আরেকটা রহিম পাওয়ার কথা। (ব্যাপারটা অনেকটা লেগো দিয়ে খেলার মত হচ্ছে সেক্ষেত্রে)

যা হোক, অপেক্ষায় থাকলাম গুতাগুতি করার জন্য। চোখ টিপি
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ভালো পয়েন্ট@শামীম ভাই
তখন আর মানুষের শারীরিক পরিচয়টা মূল থাকবেনা, অবস্থানগত পরিচয়টাই মূল হয়ে যাবে

তার আগে অবশ্যই এই এক্সপেরিমেন্টটায় সফল হতে হবে -- কণার পর্যায়ে একটা জীবের শারিরিক গঠনের সম্পূর্ণ মডেল তৈরী করে তারপর সেই মডেল অনুসরণ করে জীবটাকে তৈরী করতে সফল হওয়া

মনে হয়না দুই/তিনশ বছরের সম্ভব ... ========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

শামীম এর ছবি

আমার কাছে বরং ম্যাট্রিক্সের মত ব্যাপারটা অদুর ভবিষ্যতেই সম্ভব বলে মনে হয়। ইতিমধ্যেই অনলাইনে 3D চ্যাটরূম আছে, সেখানে আপনার ইচ্ছামত ক্যারেক্টার নিয়ে আপনি কোন রূমে যেতে পারবেন ভার্চুয়ালি ... অন্যেরাও একইরকম ভাবে থাকে। বাস্তবে একইরকম ভাবে কোন মানুষের হলোগ্রাফিক ইমেজ যে কোন জায়গায় পাঠানো যাবে।

বর্তমানে নেট কনফারেন্সিং-এর মত তখন যে যাবে সে ম্যাট্রিক্স সিনেমার মত মাথায় একটা রিসিভার লাগিয়ে আরেক জায়গায় চলে যাবে, অন্য জায়গার সমস্ত তাপ/চাপ/অনুভুতি সে পাবে রিসিভারের মাধ্যমে আর ঐ জায়গার লোকজন তার বদলে দেখবে একটা হলোগ্রাফিক ইমেজ ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেকটা রিমোট কন্ট্রোল রোবোটের মত।

ইদানিং এই ধরণের আইডিয়া শুধু গেমিং-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। যেখানে গেমারের চোখে থাকে 3D চশমা, তাই সব কিছুই তার কাছে আপাত বাস্তব মনে হয়। ইউনিভার্সাল স্টুডিওতে এরকম 3D রাইড আছে কয়েকটা .... তবে স্পাইডারম্যানেরটা সবথেকে জ্যান্ত মনে হয়েছিল। অর্থাৎ ইতিমধ্যেই এই ধরণের ট্রাভেল সম্ভব হয়েছে তবে সেটা শুধু কন্ট্রোল্ড স্পেস বা আগে থেকে বানানো মডেলের মধ্যে সীমাবদ্ধ (ম্যাট্রিক্স মুভিতেও তাই) .... কবে যে, যে কোনো জায়গায় এভাবে যাওয়া যাবে।

এ ধরণের সিস্টেমের সুবিধা হল, আপনি কোথাও বেড়াতে যেতে চান। শুধু একটা রিসিভার (হেডফোন, চশমা-মনিটর, ইত্যাদি) লাগিয়ে চলে যান। মনে হবে আসলেই সেখানে হাঁটছেন, কথা বলছেন, দৃশ্যাবলী দেখছেন। এর সাথে রাইডগুলোর মত ইন্টারেকটিভ এনভায়রনমেন্টে বরফে পড়লে ঠান্ডা লাগবে, গায়ে বাতাস লাগবে ইত্যাদি। বর্তমানে এটা সম্ভব শুধুমাত্র আগে থেকে প্রোগ্রাম করা মডেলের মধ্যে, কিন্তু অন্য কোন বাস্তব এলাকায় যাওয়া সম্ভব না।

কিন্তু এমন যদি হতো যে, মঙ্গলগ্রহে নামা রবোটের মত আমাদের হলোগ্রাফিক ইমেজটাকেও যে কোন জায়গায় নিয়ে ফেলা যেত, আর সাথে সাথে ওখানকার দৃশ্য এবং ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অন্য সব অনুভুতি নিয়ে আসা যেত তবে ট্রান্সপোজারের ৫০% কাজ হয়ে যেত। পাশাপাশি, কোনো টেকনোলজির (হলোগ্রাফি যেহেতু আলো দিয়ে তৈরী হবে তাই লেজার টেকনোলজি) সাহায্যে যদি সেই হলোগ্রাফিক ইমেজ সেখানে কিছু কাজ করতে পারে তাহলে তো কেল্লা ফতে।

আপনি বাসার কলিং বেলের শব্দ শুনে দরজা খুলে দেখেন বাইরে আমার হলোগ্রাফিক ইমেজ দাঁড়িয়ে আছে। তারপর সেটার সাথে আপনি আপনার কথাবার্তা সেরে নিলেন (চা-বিস্কিট দেয়ার ঝামেলা নাই চোখ টিপি )। অনেকটা নেট-চ্যাটের মত।

সবচেয়ে বাস্তবসম্মত হলো ভাড়ায় খাটা রবোট। অর্থাৎ আপনার শহরের একটা যোগাযোগ কম্পানিতে মানুষের মত রবোট থাকবে। আমি ওটার সাথে কানেক্ট হলে সেটাকে হুবুহু মানুষের মত চালাবো। ওটা চোখের লেন্স থেকে দৃশ্য আর শব্দ রিসিভার থেকে শব্দ, থার্মোমিটার এবং অন্য আরো কিছু মিটার থেকে পরিবেশ সবই এখানকার ট্রান্সমিটার দিয়ে আমার শরীরে অনুভুত হবে। যে কোন জায়গায় হেঁটে /দৌড়ে বা অন্য যানবাহনে করে সেখান থেকে যেতে পারবো (আসলো রোবোটটা যাবে)। কাজ করতে পারবো, কথা বলতে পারবো ইত্যাদি। ....

সকালে লগ-ইন করে ওসাকায় যোগাযোগ কম্পানির রবোট ভাড়া নিয়ে সেখানকার কনফারেন্সে চলে গেলাম এবং চমৎকারভাবে পেপার প্রেজেন্টেশনটা করে ফেললাম। কাজ শেষে ঐ রবোট কম্পানিতে ফিরে এসে লগ আউট করে ফেললাম। আবার বিকালে নিউইয়র্ক-এ একটা রোবোটে লগ-ইন করে একটা লেকচার দিলাম। অন্য সময় কুয়ালালামপুরের একটা রোবোটে লগ-ইন করে সেখানে আমার প্রতিষ্ঠানে গেলাম এবং সমস্ত অফিসিয়াল কাজগুলো করলাম। অন্যদিন হয়তো আরেকটা রবোটে লগ-ইন করে ল্যাবের এক্সপেরিমেন্টগুলো করে ফেললাম। এরকম হরেক রকম কাজের জন্য বিভিন্ন রকম ক্ষমতা সম্পন্ন রবোট ভাড়া করা যেতে পারে। চাল্লু
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

লাভ নাই ... বাংলাদেশে তখনো হাইস্পীড নেট থাকবে না ... রোবটে লগইন করতে করতে টাইম আউট খাইবেন দেঁতো হাসি
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

জ্বিনের বাদশা [অতিথি] এর ছবি

আপনি আর আমি পুরা ভিন্ন দুই লাইনে ভাবতেছি এটা বোঝা যাচ্ছে ... আপনি ব্যক্তির ফিজিককে অপরিবর্তিত রেখে, বোধকে ম্যানিপুলেট করার ব্যাপারটা ভাবছেন ....মানে আমার এখন টোকিও থেকে নিউইয়র্ক যাবার প্রয়োজন হলো, তো আমার শরীর ঠিকই টোকিওতে থাকবে, শুধু বোধটা এমনভাবে ম্যানিপুলেটেড হবে যে আমার মনে হবে আমি নিউইয়র্কে। আর হলোগ্রফিতে ১০০% সলিডিটি পাওয়া গেলে নিউইয়র্কেও লোকে আমাকেই দেখবে

টেলিপোর্টেশন বলতে আমি যেটা বুঝছি সেটা কিন্তু ভিন্ন জিনিস ... সেখানে আমার শরীরটাকেই নিউইয়র্কে নিয়ে যাওয়া হবে মূহুর্তে ... কোন হলোগ্রামিক জ্বিনের বাদশা না, একদম রিয়াল !!! ....

তো আপনার থ্রি-ডি ড্যাটাবেস সিস্টেম এ্যাপ্লাই করলে আসলে আলট্রা স্পিড নেটওয়ার্ক দিয়ে আমার শরীরকে টোকিও টো নিউইয়র্ক পাঠাতে হবেনা, নিউইয়র্কে আমাকে প্রয়োজন, সমস্যা কি? লেটেস্ট আপডেটেড ডেটাবেস থেকে আমার থ্রিডি-স্ট্রাকচারের সব তথ্য নিয়ে সেখানেই বানিয়ে ফেলো (এটা হলোগ্রাফিক ইমেজ না, রিয়াল মানুষ)।

সেটাই বলতে চাইছি .... ধরুন একটা বস্তুর কণালেভেলের ত্রিমাত্রিক গঠনের সব তথ্য হাতে আছে ...সেখান থেকে কণা জোড়া লাগিয়ে বস্তুটা তৈরী করাটা মূল কাজ .... সেটা সম্ভব করাটা হবে টেলিপোর্টেশনের প্রথম ধাপ (এটা মনে হয় পারমাণবিক/আণবিক লেভেলে হয়ে গেছে, নাকি?)

আপনি যেটা ভাবছেন সেটা সম্ভবতঃ অনেকদূর চলে এসেছে ... হলোগ্রাফিক ডিসপ্লে নিয়েও কাজ অনেকদূর হয়ে গেছে ... ২০০১ সালে সম্ভবতঃ অন্ধ লোককে মাথার পেছনে ক্যামেরা আর নার্ভের সাথে ওয়াইয়ার কানেক্ট করে দৃষ্টিশক্তি দেয়া হয়েছে .... দৃষ্টির নার্ভের মতো অন্যান্য বোধের নার্ভকে ম্যানিপুলেট করা গেলে যে কোন মূহুর্তে শাকিরার সাথে ডেট করা সম্ভব ...শাকিরা টের পেলো কি পেলোনা সেটা নিয়ে না ভাবলেই হয় চোখ টিপি

অমিত আহমেদ এর ছবি

শামীম ভাইয়ের আইডিয়াটা কিন্তু ফিকশনে বেশ জনপ্রিয়। এমনকি জাফর ইকবাল স্যারের একটা গল্পেও এই আইডিয়া আছে। ফিউচারামার একটি সিরিজও এই আইডিয়াকে ডেডিকেট করা হয়েছিলো। তবে আমরা কিন্তু এখানে পুরো দেহ প্রতিস্থাপন করার কথা বলছি।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

শিক্ষানবিস এর ছবি

ক্রিস্টোফার নোলানের প্রেস্টিজে মানুষের প্রতিলিপি তৈরীর যে প্রক্রিয়া দেখানো হয়েছে তা কি অসম্ভব বিজ্ঞান আলোচনায় আসতে পারে? আমার মনে হয় এটা নিয়েও কিছু লিখতে পারেন।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ধন্যবাদ অভিজিৎ, এই জাতীয় লেখা আপনার হাতে ভাল ফলে, এগুলোই বেশি চালানো দরকার। ধন্যবাদ সুউপস্থানের জন্য।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

অমিত আহমেদ এর ছবি

আমি সাইফাই বই-সিনেমা-টিভি সিরিজের পাগলা ফ্যান। তাই আপনার সিরিজ দেখে মনটা কেমন ভালো হয়ে গ্যালো। দুর্দান্ত।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।