এডিংটন-চন্দ্রশেখরের বিখ্যাত বিবাদ

অভিজিৎ এর ছবি
লিখেছেন অভিজিৎ (তারিখ: রবি, ১৬/০৯/২০০৭ - ১:২৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার এ লেখাটি এ মাসের সায়েন্স ওয়ার্ল্ডে প্রকাশিত হয়েছে। হয়ত সচলায়তনের পাঠকদের ভাল লাগবে। মূল লেখাটি অবশ্য আগে একটু পরিবর্তিত আকারে মুক্তমনায় প্রকাশিত হয়েছিল।

চন্দ্রশেখর সীমার যৌক্তিকতা নিয়ে এডিংটন-চন্দ্রশেখর বিবাদ জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে একটি খুবই আকর্ষণীয় ঘটনা। বিবাদটি নিঃসন্দেহে অসম নানা দিক থেকে : প্রথমত বয়স ও পদমর্যাদা, দ্বিতীয়ত বৈদগ্ধতা ও জ্ঞান। আর্থার স্ট্যানলি এডিংটন (১৮৮২-১৯৪৪) সেকালের খ্যাতনামা জ্যোর্তিপদার্থবিদ, কেম্ব্রিজে প্লুমিয়ান প্রফেসর । আর চন্দ্রশেখর কেম্ব্রিজের পি-এইচ. ডি করতে আসা ভারতের এক অখ্যাত আনকোরা ছাত্র।

চন্দ্রশেখরের পি-এইচ. ডি গবেষণার মূল প্রতিপাদ্য ছিল যে সব নক্ষত্রের ভর সূর্যভরের তুলনায় ১.৪ গুণের চাইতে বেশী তারা শ্বেত বামনে পরিণত হবে না। এই গণ্ডিরই নাম ‘চন্দ্র শেখর সীমা’ (Chandrashekhar’s Limit), যা আজ পদার্থবিজ্ঞানে সুপ্রতিষ্ঠিত। যে সব তারকা এই গণ্ডির মধ্যে পরে তাদের সবাইকে শ্বেত বামনের ভাগ্য বরণ করতে হয়। কিন্তু এর চাইতে বড় তারকাদের ভাগ্যে কি ঘটবে চন্দ্রশেখর কিন্তু তখন সে সম্পর্কে পরিস্কার করে কিছু বলতে পারেন নি, আর তাঁর বিরূদ্ধে থেকে শাণিত আক্রমণ এসেছিল ও দিক থেকেই! এডিংটন চন্দ্রশেখরের গবেষণাকে এক ফুঁ এ উড়িয়ে দিয়ে তার গবেষণাকে “নাক্ষত্রিক ভাড়ামি” (Stellar Buffoonery) হিসেবে অভিহিত করেছিলেন । ১৯৩৫ সালে ১১ই জানুয়ারিতে লন্ডনে রাজকীয় জ্যোতির্বিজ্ঞান সমতির সদস্যদের সামনে জ্যোতির্পদার্থবিদের মহাপুরোহিত সেদিন সমিতির বিজ্ঞ সদস্যদের সম্মূখে তরুণ ভারতীয় ছাত্রকে মমতাহীনভাবে ছিন্নভিন্ন করেন। সবচাইতে দুঃখজনক হল সমিতির শ্রোতাদের মধ্যে কেউ সাহস করে চন্দ্রের ফলাফলের পক্ষে কথা বলেন নি, এমন কি সহানুভূতিও জানান নি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে, চন্দ্র শেষ মেষ ইংল্যান্ড ছেড়ে আমেরিকা পাড়ি জমিয়েছেলেন, কারণ তিনি বেশ বুঝেছিলেন এডিংটনের দেশে আর যাই হোক ভাল কোথাও চাকরি পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

আজ কিন্তু আমরা জানি সেসময় চন্দ্রই ছিলেন সঠিক। আজ শত শত শ্বেতবামনের আস্তিত্ব বিজ্ঞানীরা জেনেছেন, সবাই কিন্তু চন্দ্রের দেখানো নিয়ম-ই অনুসরণ করে, একটিও ব্যাতিক্রম পাওয়া যায়নি। পুরো লেখাটির লিঙ্ক এখানে (লেখাটি পড়তে এক্রোবেট রিডার লাগবে)ঃ

http://www.mukto-mona.com/Articles/avijit/chandra_eddington.pdf


মন্তব্য

অভিজিৎ এর ছবি

আমার আগের লেখাগুলা ইউনিকোডেড না। লিখছিলাম বর্ন সফটে। কোনভাবে কনভার্ট করার ব্যবস্থা থাকলে হয়ত পিডিএফ এর লিঙ্ক দেওয়ার প্রয়োজন হত না। এ বিষয়ে মডারেটরদের সাহায্য কামনা করছি।

==========================

পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

বর্ণসফট কনভার্টার নাই আমাদের। করে ফেলব শিঘ্রী।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অভিজিৎ এর ছবি

প্রত্যাশায় থাকলাম। বর্ণসফটের বানান রীতি অনেকটা অভ্রের মত। আপনাদের যখন অভ্র আছে, বর্নসফটের কনভার্টার খুব শিগগিরি বানাতে পারবেন বলে মনে করছি।

============
পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

লেথাটা জোস লাগল।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অভিজিৎ এর ছবি

থ্যাঙ্কস। সচলায়তনে লিখতে পেরে আমারো খুব ভাল লাগছে। অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি সচল সাইট উপহার দেবার জন্য। সেই সাথে ধন্যবাদ আরূপ এবং অন্যান্যদেরও যারা এর সাথে জড়িত আছেন।

=========
পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

হিমু এর ছবি
দিগন্ত এর ছবি

এডিংটনের ব্যবহারের সাথে আরেকজন ধর্মীয় মৌলবাদীর ব্যবহারের কোনো পার্থক্য নেই ...


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।