আলিশা চিনয়। ছিয়ানব্বুই সালের দিকে “মেড ইন ইন্ডিয়া” অ্যালবাম দিয়ে বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন এই ভারতীয় পপ মিউজিক শিল্পী। এতোদিন পরেও সেই কথা মনে আছে কারন আলিশা চিনয়ের সেই অ্যালবামের জনপ্রিয় হিন্দি গানের সুর আর মিউজিক ভিডিও দিয়ে ভারতীয় টিভি চ্যানেল আর ঢাকার রাস্তাঘাটের অডিও দোকানগুলো আমাদের চারপাশ সয়লাব করে ফেলেছিল।
হাবিব ওয়াহিদ। নতুন প্রজন্মের মাঝে বেশ সাড়া জাগানো শিল্পী। ২০০৫ সালের দিকে তার মায়া, কৃষ্ণ এসব অ্যালবামের গান দিয়ে আমাদের অনেকের দৃস্টি কেড়ে নিয়েছিল হাবিব। নতুন প্রজন্মের এই সৃস্টিশীলতায় মুগ্ধ হয়েছিলাম। এই অ্যালবামের মিউজিক ভিডিও আমার দেখা ছিল। এমনকি দূরের যাত্রায় হাবিবের এসব গান এখনো আমার গাড়ীতে বাজে।
কিভাবে যেন সেদিন ইউটিউবে আলিশা চিনয়ের “মেড ইন ইন্ডিয়া” অ্যালবামের একটি গান হঠাৎ চোখে পড়ে গেল। কেমন যেন চেনা চেনা লাগল সব কিছু। ঢাকার রাস্তায় বহু শোনা গান বলে নয়, তার চেয়েও বেশী কি যেন একটা চেনা চেনা লাগলো। এই চেনা চেনা লাগার অনুভূতিটা খুব বিরক্তিকর—সমাধান না করা পর্যন্ত জ্বালাতেই থাকে।
অবশেষে আমি মনে হয় সেই চেনা চেনা লাগার যোগ সূত্রটা ধরে ফেললাম। হাবিব,অর্নবের মতো আমাদের নতুন প্রজন্মের এই সৃস্টিশীল শিল্পীরাও তাহলে এমন? নাকি এ আমার ভুল দেখা? আপনাদের সবার দেখার জন্য তুলে ধরলাম। সবার আগে আলিশার ভিডিওটা দেখুন। এরপর পরপর দেখুন হাবিবের মায়া অ্যালবামের ভিডিও দুটো। কিছু কি চেনা চেনা লাগে?
ঢাকাতে যদি এই শিল্পীদের সাথে কারো যদি চেনা জানা থাকে- সময় হলে একবার প্রশ্ন করে দেখতে পারেন।
মন্তব্য
অনেকদিন পরে আপনার লেখা বাবুভাই। হাইবারনেশন থেকে বেরোলেন তাহলে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
নিচের বাংলা গানদুটি সম্ভবত সিলেট অঞ্চলের কোন লোকসঙ্গীতের রিমিক্স, হাবিবের মৌলিক গান নয়।
গান তিনটার সংগীতায়োজন প্রায় একই ধরনের। আলিশার গানের স্বভাবসূলভ যৌনআবেদন এই গানদুটোতে নেই। তবে র্যাপের সংযোজন নিতান্তই অনাবশ্যক ছিলো।
হাবিবকে আর কি বলি; সম্প্রতি জনৈক তুষার একটা রবীন্দ্রসংগীতের এ্যালবাম বের করেছেন 'রক উইথ রবীন্দ্রনাথ' নাম দিয়ে। তার ব্যাখ্যায় রক মানে হচ্ছে উল্লাস। তিনিও তার আয়োজিত এ্যালবামে রবীন্দ্রসংগীতে র্যাপ লাগিয়েছেন। যারা এইসব কাজ করেন তারাই ভালো বলতে পারবেন যে কেনো তারা এগুলো করেন, না করলে কি ক্ষতি ছিলো। আমার স্নেহাষ্পদ একজন বয়োঃকনিষ্ঠ বন্ধু ওই রবীন্দ্রসংগীতের এ্যালবামে কয়েকটা গান গেয়েছিলেন। দুঃখ!!!
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
রবীন্দ্র সংগীত র্যাপ গানের মত করে গাইলে তাকে বলে "রেপ উইথ রবীন্দ্রনাথ"।
এই এ্যালবামের একটা ফেসবুক ফ্যান পেজ ছিলো। ওখানে জনৈক রাজা মিয়া লোকসংগীতের একটা এ্যালবামের নামকরনের জন্যে তুষার সাহেবের কাছে প্রস্তাব করেছিলেন। নামটা ছিলো 'ফাক উইথ ফোক'।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
এইরকমই হয়, নিজের বাড়িত না থাকলে পাশের বাড়ি থিকা ধার করাটা তো আমাগো মজ্জার দোষ ...
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
...........................
Every Picture Tells a Story
গানগুলোর সঙ্গীতায়োজন একই রকমের। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে এটাকে আমার চুরি মনে হচ্ছে না। আলিশার গানটির সঙ্গীতায়োজনও তার নিজস্ব মৌলিক কিছু নয়। একই ধারার সঙ্গীতায়োজন হচ্ছে এবং হবেই।
'চুরি' আর 'ছায়া অবলম্বন' ভিন্ন বিষয়। কবির সুমন অথবা অঞ্জনের অনেক গানই বিদেশি গানের এডাপটেশন (ভালো বাংলা এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না)। আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের সুরও কিন্তু একটি লোকগানের সুরের অনুকরণ।
অবশ্য বলছি না যে বাংলা সঙ্গীতাঙ্গনে কেউ সুর/সঙ্গীত/কথা চুরি করেনা। বিদেশী সুর মেরে দেয়ায় আর্ক ব্যান্ডের পঞ্চমের ধারে কাছে কেউ এখনো আসতে পেরেছে কিনা জানিনা! উনি সুরের একেবারে লোম, দাড়ি, কমা, গোঁফ, সেমিকোলন, চুল সব মেরে দিতেন!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দুঃখিত, আমার কাছে চুরি বা নকল কিছুই মনে হল না।
----------------------
তৌফিক, চিলেকোঠা
সঙ্গীতের বেলায় চুরিধারী মনেহয় অন্যরকম ভাবে কাজ করে। আমি বছর খানেক আগে একেবারেই হঠাৎ করে দক্ষিণ আমেরিকান বেশ পুরনো একটা গান শুনেছিলাম যেটার সুরের কিয়দংশ আমি শুনেছি এ আর রহমানের সঙ্গীতায়োজনে।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কীসের মিলের কথা বললেন ধরতে পারলাম না! মনে হচ্ছে আপনি সঙ্গীতজগতের খোঁজখবর কিছুই রাখেন না।
Delightful Girl Choon-Hyang নামের একটা কোরিয়ান টিভি সিরিয়ালের Sarang Hae Yo ট্র্যাক হচ্ছে এই গানটা।
নিচের গানটার সুরকার প্রীতম আর গাতক পাকিস্তানি কুকিলকন্ঠী আতিফ এচলাম। সিনেমার নাম "রেস"।
উপরে যে দুটো গান শুনলেন দুটোই কিন্তু মৌলিক গান।
হাতে সময় নিয়ে একদিন গান দুটোর কোন কোন অংশ আমার কাছে মিল লাগছিল, তা ভিডিও ক্লিপের সময় উল্লেখ করে লিখবো।
তবে ছায়া অবলম্বনে গান করলেও, তা উল্লেখ করে দেয়ার দায়িত্বের মাঝে পড়ে। এই অ্যালবাম কাভারে তেমন কিছু দেখছি বলে মনে পড়ছে না। তবে আমি আবার তা খোঁজ নিয়ে দেখব।
সঙ্গীতে মৌলিকতার সুনির্দিস্ট সংজ্ঞা কিভাবে দেয়া হয় আমার জানা নেই। তবে শ্রোতা হিসেবে মৌলিকতার সংজ্ঞা নিয়ে আমাদের দৃস্টিভঙ্গির পার্থক্য যে ঢের তা এই আলোচনা থেকেই আঁচ করতে পারছি।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
নতুন মন্তব্য করুন