দেশের অন্যতম প্রধান মানবাধিকার সংস্থা 'অধিকার' শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রকাশ করেছে ওয়ান ইলেভেনের পর গত এক বছরের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন। একে ফখরুদ্দীন - মইন উ. র শাসনামলের মানবাধিকারের সালতামামিও বলা যায়।
*
অধিকারের প্রতিবেদনে বলা হয়, জরুরি অবস্থায় গত এক বছরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে নির্যাতন এবং মানবাধিকার লংঘনের বহু অভিযোগ এসেছে।
অন্যদিকে দুর্নীতি বা অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি বা অন্য কারও বিরুদ্ধে সাক্ষ্য আদায়ের জন্য রিমান্ডে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি বিএনপির যুগ্ম সচিব তারেক রহমান আদালতে অভিযোগ করেছেন যে, তাকে রিমান্ডে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৮ ঘন্টাই চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং বেঁধে ও ছাদ থেকে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে।
এছাড়া কাউকে কাউকে 'ক্রসফায়ারে' মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়েছে (যেমন, আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সেখ সেলিম) ।
জরুরি অবস্থাকালে অন্তত ৯২৯ জন ব্যক্তিকে বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ অনুযায়ী আটকাদেশ দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ আটকাদেশ প্রাপ্তই হলো রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ। তাঁদের মধ্যে ৩৯৫ জন এখনও আটকাদেশের আওতায় আছেন। গ্রেপ্তারের পরে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে এই আটকাদেশ প্রাপ্তব্যক্তিকে সংবিধান অনুযায়ী, সময়মতো ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হয়নি।
এছাড়া ১২ জানুয়ারি ২০০৭ থেকে ১০ জানুয়ারি ২০০৮ পর্যন্ত মোট ১৭৬ জন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ওই ১৭৬ জনের মধ্যে ১২৩ জন ক্রসফায়ার বা এনকাউন্টার বা বন্দুক যুদ্ধে মারা গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ আছে, ২৭ জন নির্যাতনের শিকার হয়ে, ১৫ জন গুলিতে এবং বাকি ১১ জন বিভিন্নভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে মৃত্যুবরণ করেছে।
*
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আগস্টে ক্যাম্পাস বিক্ষোভের ফলে ছাত্র -- শিক্ষক গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে আইনের অনুশাসন সঠিকভাবে অনুসরণ করা হয়নি বলে সংস্থাটি মনে করে। ছাত্র -- শিক্ষকদের গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার করে অজ্ঞাত স্থানে প্রায় ৪০ ঘন্টা রেখে দেওয়া আইনের চরম লংঘন।
অথচ সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদের ১ উপ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বলা হয়েছে, 'গ্রেপ্তারকৃত কোন ব্যক্তিকে... কারণ জ্ঞাপন না করে প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না এবং উক্ত ব্যক্তিকে তাহার মনোনীত আইনজীবির সহিত পরামর্শের ও তাঁহার দ্বারা আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার হইতে বঞ্চিত করা যাইবে না।'
সংবিধানের ২ উপ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বলা হয়েছে, ' গ্রেপ্তারকৃত ও প্রহারায় আটক.. ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ... হাজির করা হইবে...।'
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে হাজির করারও বিধান রয়েছে।
এছাড়া শিক্ষকদের 'জয়েন্ট ইন্টারগেশন সেল' (জেআইসি) এ রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করায় তাঁদের অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে।
*
এই প্রতিবেদনে অবিলম্বে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
এতে সরকারের কাছে আরও সুপারিশ করা হয়েছে: আইনের স্বচ্ছ প্রয়োগ ও মানবাধিকার সমুন্নত রেখে রাজবন্দীদের মুক্তির বিষয়ে আইনের অনুশাসন অনুসরণ, গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীদের মুক্তি প্রদান, গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করা এবং পাটকল ও তৈরি পোশাক প্রস্তুত কারখানায় কর্মচারীদের বিরুদ্ধে জরুরি অবস্থা ভঙ্গের মামলাসমূহ প্রত্যাহার করা।।
মন্তব্য
হুমমম!
ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল
রাজনৈতিক সরকারগুলোর চেয়ে এরাই বা কম কীসে!
মানবাধিকার লঙ্ঘনে এরাও অনেক নম্বর পেয়েছে দেখছি।
..................................................................................
শোনো, বীণা আমি বাজাইনি প্রতিবারই নিজে, এমনও হয়েছে
বীণায় রেখেছি হাত, নিজেই উঠেছে বীণা বেজে!
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
হুমম।
তবে এইগুলান করে আর কী হবে? পড়েছো জলপাইর হাতে,,,
আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
অধিকারের সাইটটা ঘুরে দেখতে পারেন। বেশ তথ্যবহুল। তথ্যসচেতন মানুষের কাছে শক্তিমানও অসহায়। ধন্যবাদ।
অন্ধকারের উতস হতে উতসারিত আলো
হায়রে সুশাসন!!!
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
জলপাইযুগে মানবাধিকার - OXYMORON-এর জুতসই উদাহরণ।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
জলপাই রঙ নাকি শান্তির প্রতীক?
হায়রে দুঃশাসন!
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
নতুন মন্তব্য করুন