বরাবর,
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
তেজগাঁও থানা, ঢাকা।
বিষয়: হত্যা মামলার এজহার দায়ের।
জনাব,
আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী নিজে থানায় উপস্থিত হইয়া এই মর্মে এজহার দিতেছি যে, আমি সম্প্রতি রিপোর্টার নাম ঘুচাইয়া একটি টেলিভিশন চ্যানেলে পোর্টারের পদে বহাল হইয়াছি। ইহা পদোন্নতি না পদাবনতি তাহা কর্মফল না দেখিয়া এখনই বলা যাইতেছে না।
কিন্তু মহোদয়, বিষয় হইতেছে, অফিস নামক বস্তিবাস দীর্ঘ ও বিলম্বিত; নূন্যতম ১২ ঘন্টা। ঊর্দ্ধে ১৩-১৪-১৮ ঘন্টা পর্যন্ত। সর্বশেষ সদ্য সমাপ্ত সিটি ও পৌর নির্বাচনের ভোটবাজীর সময় টানা ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করিতে হইয়াছে!
টেলিভিশনের এই অফিস ঘরটির নাম আমি আদর করিয়া 'লাদেনের গুহা' রাখিয়াছি। অর্থাৎ কী না, এই লাদেনের গুহাতে প্রবেশ করিলে দিন-রাত্রি, সকাল-বিকাল, কী শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা কোনোটাই টের পাওয়া যায় না।...সবকিছু এই খানে আসিয়া যেনো একটি প্রচণ্ড বিগ ব্যাঙ-এ পরিনত হইয়াছে।
আর একেকটি জীবন্ত-সংবাদ শুরু হইবার এক-দেড় ঘন্টা আগে সমগ্র নিউজ-রুম জুড়িয়া যেনো যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় একশত সংবাদ-কর্মী সমগ্র নিউজ রুম জুড়িয়া শুরু করেন ছুটোছুটি, আর তুমুল হট্টগোল। এই সংবাদ, সেই সংবাদ, এই খবরের স্ক্রিপ্ট, ওই খবরের টেপ--ইত্যাদি লাইয়া হুলুস্থুল ছুটোছুটি, চিৎকার-চেঁচামেচিতে অসাংবাদিক যে কেউ দশ-পনের মিনিটে হয়তো জ্ঞান হারাইবে। ...ইহা সাধারণের পক্ষে বোঝা সত্যিই দুস্কর।
তো মাননীয়, পর সমাচার এই যে, ইহার পর আবার গোদের ওপর বিষ ফোঁড়ার মতো যোগ হইয়াছে 'রান-ডাউন' নামক একটি বিতিকিচ্ছিরি বিষয়। আমি আদর করিয়া ইহারও একটি গাল-ভরা নাম রাখিয়াছি: গান-ডাউন!
রান-ডাউন আর কিছুই নহে; ইহা হইতেছে অনেকটা জাহাজে ক্যাপ্টেনের লগ-বুকের মতো। অর্থাৎ কোন সংবাদের পর কোন সংবাদ চলিবে, ইহা তারই দিক-নির্দেশনা। তাই নিউজ অন-এয়ার হইবার জন্য ইহা অতিব গুরুত্বপূর্ণ। আর একেকটি সংবাদের জন্য একটি রান-ডাউন মাত্র-দুই হইতে পাঁচ কী দশ মিনিট পর পর বদল হয়। এইভাবে বার-বার বদল হইতে হইতে আধাঘন্টা বা পয়তাল্লিশ মিনিট পর সঠিক রান-ডাউন তৈরি হয়। সংবাদ-সাজানো চাট্টিখানি কথা নহে মহাশয়। এইরূপ প্রচণ্ড উত্তেজনা আর শব্দ-দূষণের মধ্যে কাজটি সুসম্পন্ন করা সত্যিই মুন্সিয়ানার বিষয় বটে।
ইহার পর আছে অটো-কিউ নামক রান-ডাউনের আরেকটি বাই-প্রডাক্টের কাজ। ইহা হইতেছে প্রত্যেকটি সংবাদের 'লিংক' বা যে অংশটি সংবাদ পাঠক/পাঠিকা পড়িবেন, তাহা অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে রান-ডাউন অনুযায়ী বিন্যাস্ত করা। এই কাজ মাত্র ১২ ফ্রন্টে করিতে হয়। আর ইহা মোটেও এমএস ওয়ার্ড কামান্ড অনুযায়ী হয় না। ...মহাশয়কে এই ফাঁকে জানাইয়া রাখি, ক্ষীণ দৃষ্টির কারণে ইহাতে চোখের ওপর মারাতœক চাপ পড়ে। আর মস্তিস্কের ওপর চাপ? ইহাই এই বয়ানের মূল কথা।
তো ভুলবশতঃ রান-ডাউনে একটি সংবাদ বিন্যাস্ত করিতে না পারিলে, এমন কী একটি বাক্য তো দূরের কথা, একটি শব্দ বা অক্ষরও বাদ পড়িলে বা সংযোজনে ওলট-পালট হইলে সাড়ে-সর্বনাশ! লাইভ-নিউজে একের পর এক ভুল সংবাদ পঠিত হইবে। আবার দেখা যাইবে, সংবাদ চলিতেছে এক রকম, দেখানো হইতেছে অন্য দৃশ্যাবলী (ফুটেজ)!!
মহাশয়, নাওয়া-খাওয়া ঘর-সংসার ভুলিয়া এই রকম ওভার-ওয়ার্ক এবং রান-ডাউন নামক একটি অপ্রীতিকর ও অসৃজনশীল অফিস-কর্ম করিতে করিতে এখন স্পষ্ট বুঝিতে পাই, আমার মস্তিক তাহার স্বাভাবিক কার্য ক্ষমতা হারাইতে বসিয়াছে। বুদ্ধি ক্রমশঃশই ভোঁতা হইতেছে। বোধকরি ঘিলুও শুকাইয়া আসিতেছে। রাস্তায় হাটিবার সময় মাথার খুলির সঙ্গে ঘিলুর বাড়ি খাইবার খটর-খটর অস্পষ্ট একটা শব্দ যেনো শুনিতে পাই। এই রূপ কিছুদিন চলিলে নির্ঘাত আমি একটি মস্তিস্কহীন জড়ভরত মানুষের খোলসে পরিনত হইবো। ...
এই অবস্থায় আমি আমার মস্তিস্ক খুন করিবার ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টার দায়ে নিম্নোক্ত আসামীদের অভিযুক্ত করিয়া ফৌজদারী দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা রুজ্জু করিবার আর্জি করিতেছি।
আসামী...১। নাম-তথ্য সংবাদিকতা, পিতা-আইটি, সাং-অমুক টেলিভিশন, কারওয়ান বাজার, ঢাকা।
আসামী...২। অজ্ঞাত পরিচায়নামা আরো ২০ হইতে ২৫ জন। নাম-পরিচয় না জানিলেও উহাদের দেখিলেই চিনিবো।
বিনীত নিবেদন--
স্বাক্ষর অস্পষ্ট।
মন্তব্য
থানা লইছে কেস?
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
হা হা হা হা...
আপনাদের চ্যানেলে শুনি নতুন টাকা আসিয়াছে অনেক? তবে তো সুখের সময়...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ভাই চিন্তাই নিয়েন না ওসি সাহেব মাল কামানোর ধান্দায় বাইর হইসেন থুক্কু বাড়িতে এট্টু রেস্ট নিতে গেসেন। আইসা পড়লেই আপনার কেস জলবততড়লং হইয়া যাইবো।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
হুমম। ...এজহার দায়েরের আশায় সেই প্রত্যূষ হইতে একখানা মোট অংকের খাম লইয়া অপেক্ষায় রহিয়াছি। ওসি মহোদয়ের সাক্ষাত পাইবা মাত্র ইহা তাহাকে ভেট দিবো।...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
সংবাদ সংস্থায় বেচারারা যে এতোটা কষ্টে থাকেন তা এই বর্ননা বিনা অনুধাবন মুশকিল!
আপনার এজহারকে সাধারণ ডায়েরি হিসাবে গ্রহণ করা হইল
আপনি মারা যাইবার সঙ্গে সঙ্গে ইহাকে সারকারবাদী মামলার এজহার হিসাবে বিবেচনা করা হইবে...
এইবার নিশ্চিতে আপনি মরিবার অপেক্ষা করিতে থাকেন
আর মরিবার সাথে সাথে অবশ্যই আমাদিগকে অবহিত করিবেন
মৃত্যূর পর ওইপারে মোবাইল ফোন চলে কী না, তাহার সঠিক বলিতে পারি না। ব্যবস্থা থাকিলে নিশ্চয়ই এসএমএস ঠুকিবো।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
পাঁচুদা প্রথম দিন থেকেই প্যানপ্যান শুরু করসেন )।
হাঁটুপানির জলদস্যু
এই জন্যেই বুঝি কবি গাহিয়াছেন,
...কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কীসে, কভু আশি-বিষে, দংশেনি যারে?...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
- অরে ধরে কেঁচোর কামড় খাওয়াইয়া দেন বিসমিল্লা ভাই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কেইসের শুনানী কবে শুরু হইবো ?
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
সাক্ষি লাগলে বইলেন, আমি সব না দেখিলেও শুনিয়াছি, আর আদালত এদানিং 'শোনা কথায়' কান দিয়া রায় দিতেছে। ওদিকে আসামি নাকি আসাম দেশে পলাইছে, ফলে বিষয়টি নিয়া ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় ফ্লাগ মিটিংও দরকার।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
আহারে !
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
'লাদেনের গুহা' হাহাহাহাহাহাহা
আপনার বর্ননা শুনে অফিসের ছুটাছুটি খুব দেখতে ইচ্ছা করছে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
হে পোস্ট দিয়াই মরতে গেছেগা। থানা থাইকা ফোন দিছিল, ইউজার বিজি মারছে।
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
দ্বীন দুনিয়ার মালিক খোদা দিল কি দয়া হয় না . . . .
যে রাতে গুঁজেছো চুলে বেগুনি রিবন বাঁধা ভাট,
সে রাতে নরকও ছিলো প্রেমের তল্লাট।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . (আবু হাসান শাহরিয়ার)
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
মরলে খবর দিয়েন। খিচুড়ি খাতি আসবানে.............
কী ব্লগার? ডরাইলা?
বিপ্লব ভাই @ আপনার মস্তিকের জন্য সমবেদনা রইলো। আশা করি প্রচন্ড চাপ মোকাবেলা করে মস্তিক বরাবরেরই মতোই সচল, কর্মক্ষম ও সৃজনশীল থাকিবে।
কাওরান বাজারে এক ধরণের মাছ পাইবেন। 'বাঘাইড়'। ইহাতে চোক্ষের জ্যোতি পুণরুদ্ধার হইতে পারে ।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
ঝাকানাকা, পাচ তারা
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
মজা পাইছি লেখাটা পড়ে বিপ্নব ভাই।
---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল
-
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
একটু দেরীতে কহিতেছি। ধন্যবাদ। ইতি।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
নতুন মন্তব্য করুন