আমি বিডিআর-এর সদ্য সমাপ্ত বিদ্রোহটিকে কোনোভাবেই ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ এর সঙ্গে তুলনা করতে নারাজ। কারণ সেটির প্রেক্ষাপট ছিলো ভিন্ন; এটি ছিলো সফল এক সিপাহী -জনতার বিদ্রোহ।
বরং বিডিআর বিদ্রোহটিকে ১৮৫৭ সালের মঙ্গলপাণ্ডের অসংগঠিত বিদ্রোহের সঙ্গে খানিকটা তুলনা করা চলে। যদিও সেটি ছিলো আমাদের স্বাধীনতার প্রাথমিক লড়াই; এর দমন প্রক্রিয়াও ছিলো ভিন্নতর। ওই বিদ্রোহটি ব্রিটিশ সেনা বাহিনী দমন করেছিলো নির্মম বারুদ ও ফাঁসির দড়িতে।
ইতিহাস স্বাক্ষী, ১৯৭১ এর সেনা, ইপিআর ও পুলিশের বিদ্রোহ শেষ পর্যন্ত মহান মুক্তিযুদ্ধকে সফলতা এনে দিয়েছে। আর এর পরে ১৯৭৫ এর ৭ নভেম্বরের বিদ্রোহটি ছাড়া সব কয়েকটি বাহিনীর বিদ্রোহই হয়েছে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ।
এর একটি কারণ বোধহয়, ওই দুটি বিদ্রোহ ছিলো পরিকল্পিত, জনসমর্থিত ও রাজনৈতিক।
বিডিআর বিদ্রোহ মনে করিয়ে দেয়, আমাদের করের পয়সায় গড়ে ওঠা রাষ্ট্রীয় এইসব দুর্নীতি ও নিপীড়নমূলক বাহিনীগুলোর অভ্যন্তরীণ দৈন্যতা কতো প্রকট। আর এ কথা কে না জানে, একেকটি বিদ্রোহের পেছনে থাকে কতদিনের ছাইচাপা ক্ষোভ, বৈষম্যের মর্মবেদনা!
স্বীকার করতে দোষ নেই, শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকার বেশখানিকটা মুন্সিয়ানার সঙ্গেই পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছে। সদর দফতরে মে. জে. শাকিলসহ কয়েক অফিসার নিহত হলেও তাদের স্ত্রী-কন্যারা ধর্ষিত হননি। সীমান্তেও হয়নি তেমন কোনো রক্ষক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ।
আর যদি শ'খানেক লাশ ও জনগণের বাড়তি করের বিনিময়ে অপারেশন ডাল-ভাতের সফলতার (?) দাবিদার সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরীগণের বেতন-ভাতা-রেশন বাড়ে, তাহলে জাতির তেমন কী-ই বা আর আসে-যায়?
---
ছবি: পিলখানা অভিমুখে সাঁজোয়া বাহিনীর অভিযান, ২৬ ফেব্রু. বিকেল সাড়ে ৪টা, লেখক।
মন্তব্য
শিরোনাম ও শেষলাইন মডারেট করা হল
একটি জঘন্য গুজবের ভিত্তিহীনতা জানানোর জন্য ধন্যবাদ
_________________________________
সচলায়তন.COM কর্তৃপক্ষ
_________________________________
সচলায়তন.COM কর্তৃপক্ষ
ঠিক আছে।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
বিপ্লবের লেখাটির মূলসূত্রটি বুঝতে পারি।
যদি অরাজনৈতিক বা সেনাসমর্থিত কোনো সরকার আজ ক্ষমতায় থাকতো তাহলে বুড়িগঙ্গায় আজ রক্তের স্রোত বইতো।
তিনবাহিনীর প্রধানের সাথে মিটিং-এ শেখ হাসিনা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানে পৌঁছার যে নির্দেশনা দেন তা ছিল সত্যিকার রাষ্ট্রনায়কসুলভ। সাধারণ এরকম ক্ষেত্রে সেনাপ্রধানদের নির্দেশনাতেই সরকার প্রধানরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
নানক, মির্জা আজম, সাহারা খাতুন, কামরুল ইসলাম, তাপস, চুমকিসহ অন্যান্য সংসদ/সদস্য ও মন্ত্রীরা অনেক সাহসী ভূমিকা রেখেছেন।
এই প্রথম বাংলাদেশে আমরা এরকম অস্ত্রবাজির মুখে শান্তিপূর্ন সমাধানের পদ্ধতি দেখলাম।
জয় হোক গণতান্ত্রিক সরকার ও সরকার পদ্ধতির।
আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা অবশ্যই জাতির কৃতজ্ঞতা পাওয়ার দাবীদার।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
একমত।
___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে
ঠিক ... এবারের সংকটটা সরকার খুব চমৎকারভাবে হ্যান্ডল করেছে এখন পর্যন্ত ... মাহবুব আরা গিনির নামটা কি বাদ পড়লো?... উনিই নাকি প্রধান মেডিয়েটর ছিলেন
তবে এখনও সব শেষ হয়নি ...আমাদের চোখ রাখা উচিত আফটারইফেক্টের উপর ... কত হাজার বিডিআর সদস্য পিলখানায় ছিলো জানিনা, কেউ বলে ১৫ হাজার, কেউ বলে ৮ হাজার আবার কেউ বলে ৪ হাজার ... এদের মধ্যে কতজনের কি শাস্তি হয় সেটার যেন একটা যথাযথ হিসেব জনগন পায় এটা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে
মিডিয়াকেও তৎপর থাকতে হবে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
একমত @ বিগ সি @ জ্বি. বা.
---
কিন্তু আমার মনে হয়, পিলখানায় কতো বিডিআর সদস্য ছিলো, তার চেয়ে বেশী জরুরী এই প্রশ্নগুলোর কারণ খোঁজা:
১. কেনো এই বিডিআর বিদ্রোহ?
২. এর নেপথ্যে বহিরাগত কোনো শক্তির মদদ আছে কী না, বা তারাই এর উস্কানীদাতা কী না?
৩. একাধীক সামরিক-বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এ সংক্রান্ত কী কোনো আগাম তথ্য ছিলো? তারা কী সরকারকে সতর্ক করেছিলো?
৪. সামরিক-বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আগাম তথ্য দিতে ব্যর্থ হলে এসব সংস্থার বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কী না?
৫. এই বিদ্রোহ আরো বড় ধরণের কোনো ঘূর্ণীঝড়ের পূর্বাভাস কী না?
৬. ঘটনার শেষ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া একটি দায়সারা গোছের সংবাদ সম্মেলন করেই তার দায়িত্ব পালন করলেন কেনো? তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য দিলেন না?
এবং
৭. জামাতই বা এতো চুপ কেনো? বিএনপি-জামাত গোষ্ঠি কী আরো বড় ধরণের কোনো বিপর্যয় আশা করেছিলো?
---
-কে জানেন এ সব আবান্তর প্রশ্নের উত্তর?...
ধন্যবাদ।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
"এই প্রথম বাংলাদেশে আমরা এরকম অস্ত্রবাজির মুখে শান্তিপূর্ন সমাধানের পদ্ধতি দেখলাম।"
এত্তগুলি মেধাবী অফিসার মারার খবর জানার পর আপনার মন্তব্যের সাথে ২য় মত প্রকাশ করছি।
সরকার সিদ্ধান্ত নিতে অনেক দেরী করেছে
আর যার কাজ তারে সাযে অন্যে গেলে গ্যাঞ্জাম বাজে
বিদ্রোহ দমনের কাজ ত সেনাবাহিনী ই করলো তবে শুরুতেই সেনা পাঠানো হলে লোক জন মারা পড়তো কম।
বিপ্লব ভাই এর ৪ নাম্বার প্রশ্নের জবাবে বলি বাংলাদেশে গোয়েন্দা সংস্থাকে শুরু থেকেই তেমন বাড়তে দেয়া হয়নি পাশের দেশগুলোর মত ক্ষেমতা ও তাদের নেই , প্রশিক্ষন এবং টেকনোলজী দুটোই বাংলাদেশের বাঘা বাঘা গোয়েন্দারা সপ্নেও দেখেন কিনা সন্দেহ আছে
যতটুকু সফলতা আসে তাতে দলগত কারিশমার চাইতে ব্যাক্তিগত কারিশমাই বেশি থাকে।
আর কোথাও ভুল হলে প্রথম আঙ্গুল টা তদের দিকেই তোলা হয়
ফারুক ওয়াসিফ এর লেখার মন্তব্যে যেমনটা বলেছি
৭৫ এর বীজ বপন করা হলো মাত্র
এটাকে এখনই উপড়ে ফেলতে না পারলে
বাংলাদেশকে আরেকটা সত্তুর আশির দশক উপহার দেয়ার জন্য আওয়ামিলিগ দায়ী থাকবে।
আপনার কথা হয়তো ঠিক । তবে একটা ছোট সংশোধনী । অফিসার হয়তো কম মারা পড়তো( নিশ্চয়তা কে দিচ্ছে?) কিন্তু 'লোকজন' মারা পড়তো অনেক বেশী- যদি সশস্ত্র দুই পক্ষে সরাসরি সংঘর্ষ হতো ।
আফসোস, বাংলাদেশের অনেক 'লোকজন' নিজেদের মতো সিভিলিয়ানদের জীবনের চেয়ে সেনাকর্মকর্তাদের জীবনকে অধিক দামী মনে করেন ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
নতুন মন্তব্য করুন