(ফুন্দুরী রাঙ্গা ঝুরবো ফেগ/ তম্মা মইলে মুইদো এজ...চাকমা লোকগীতি...রাঙালেজের কান্ত পাখি/ তোমার মা মারা গেলে আমার কাছে এসো...)
এক. কোনো পেশাগত কারণে নয়, স্রেফ বেড়াতে যাওয়ার জন্যই একবার পাহাড়ে যাওয়া হয় চাকমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব বিঝুর আমন্ত্রণে। পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে বিশাল দলবলসহ ১৯৯২ সালের ১১ এপ্রিল সকালে কলাবাগান থেকে লক্কড় -- ঝক্কড় বাস 'ডলফিন' ছাড়ে। সেটা শান্তিচুক্তি স্বারেরও বছর পাঁচেক আগের ঘটনা। পাহাড় তখন দারুন অশান্ত, যুদ্ধ -- বিক্ষুব্ধ। জনসংহতি সমিতির সাবেক গেরিলা গ্রুপ শান্তিবাহিনীর সঙ্গে সেনা বাহিনী সদস্যদের রক্তক্ষয়ী বন্দুক যুদ্ধ লেগেই আছে।
পাশের আসনের সঙ্গী প্রধীরদা (প্রধীর তালুকদার, অখণ্ড পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বা পিসিপির সাবেক নেতা, পরে শান্তিবাহিনীতে যোগ দেন) পাহাড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বর্ণনা করছিলেন। বলছিলেন জলপাই শাসনের ভয়াল রূপ। আশৈশব থেকে দেখা তার চিরচেনা পাহাড় দিনের পর দিন বহিরাগত বাঙালি সেটেলারদের দখলে যাওয়ার বেদনাদায়ক ইতিহাস।
দুই. কুমিল্লা সেনা নিবাস পার হওয়ার পথেই বোঝা যায় আতংকিত জনপদে প্রবেশের যন্ত্রণা। বেশ কয়েক জায়গায় বাঁশ -- কল দিয়ে গাড়ি আটকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যাত্রীদের নাম -- ধাম ইত্যাদির তালিকা তৈরী করে। লাগেজ -- ব্যাগেজও তল্লাসী হয় কয়েকবার।
সফরসঙ্গী ইলিয়াস ভাই (প্রয়াত লেখক আখতারুজ্জামন ইলিয়াস), আনু ভাই (অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ), শাজাহান ভাই (প্রয়াত ব্যারিস্টার লুৎফর রহমান শাজাহান), সারা আপা (ব্যারিস্টার সারা হোসেন), আহাদ ভাই (আহাদ আহমেদ খন্দকার, তৎকালীন অখন্ড ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি) -- তারাই নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
বাস রামগড় প্রবেশের সময় চোখে পড়ে পথের দুপাশের উঁচু উঁচু পাহাড়ে এক কিলোমিটার অন্তর অন্তর নিরাপত্তা বাহিনীর ওয়াচ -- পোস্ট।
বাস খাগড়াছড়ি পৌঁছানোর আগেই পথের মধ্যে দু -- এক জায়াগায় কয়েকজন পাহাড়ি বাস থামিয়ে সঙ্গী অপরাপর পাহাড়ি বন্ধুদের সঙ্গে কথোপকথন সেরে নেন। এভাবে বাসের মধ্যেই লোকমুখে জানা হয়ে যায় সেই লোমহর্ষক গণহত্যার কাহিনী।
আগের দিনই (১০ এপ্রিল) খাগড়াছড়ির পানছড়ির লোগাং নামক পাহড়ি গ্রামে সেনাবাহিনী, ভিডিপি, আনসার ও সেটেলাররা একযোগে আক্রমণ চালায়। নিরস্ত্র, হত -- দরিদ্র সাধারণ পাহাড়িদের বাড়ি -- ঘর জ্বালিয়ে -- পুড়িয়ে নির্বিচারে গুলি করা হয়। সেটেলারদের দায়ের আঘাতে প্রাণ যায় অনেকের। হতাহতের সংখ্যা কত হবে, কেউ তাতক্ষণিকভাবে কিছু বলতে পারছে না। পুরো এলাকায় নাকি কারফিউ বলবত করা হয়েছে -- ইত্যাদি ইত্যাদি।
খাগড়াছড়ি পৌঁছানোর পর পিসিপির ছেলে -- মেয়েরা ফুল দিয়ে স্বাগতঃ জানায়। তবে লোগাঙের কথা শুনে সবারই চোখ -- মুখ কেমন যেনো শুকনো বলে মনে হয়। শান্তিবাহিনীর প্রতিশোধমূলক আক্রমণ, আর নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা আক্রমণের আশংকায় ছোট্ট পাহাড়ি শহর খাগড়াছড়ি একেবারেই শুনশান হয়ে পড়ে। ঝপ করে সন্ধ্যা নামে কালা পাহাড়ের দেশে।
তিন. জেলা সার্কিট হাউজে অতিথিদের থাকা -- খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সাড়ে সাতটার বিবিসির রেডিওতে খাগড়াছড়ি সংবাদদাতার বরাত দিয়ে প্রচার করা উল্টো খবর। লোগাঙে নাকি শান্তিবাহিনীর আক্রমণে মাত্র ১০ জন পাহাড়ি ও তিনজন বাঙালিসহ মোট ১৩ জনের মৃত্যূ ঘটেছে।
সাংবাদিক হওয়ার সুবাদে জানা ছিলো, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান -- এই তিন পার্বত্য জেলার সাংবাদিকদের তখন আসলে নিয়ন্ত্রণ করতো নিরাপত্তাবাহিনী। সেনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে সংবাদ পরিবেশনের উপায় ছিলো না। সব মিলিয়ে বিবিসির খবর বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে না।...
সার্কিট হাউজে যখন অতিথিদের রাতের খাবার হিসেবে পাহাড়ি ছেলে -- মেয়েরা প্লেটে পোলাও -- মাংস তুলে দিচ্ছিলেন, তখন বাইরের বারান্দায় দেখা মেলে এক গামলা মুড়ি খেতে দরিদ্র একজন পাহাড়ি লোককে। কোলে একরত্তি এক দুধের শিশু। লোকটিকে কান্তি আর অজানা এক অনুভূতি ঘিরে রাখে। সে যত না মুড়ি খায়, তার চেয়েও বেশী পানি খায় ঢক ঢক করে। কোলের শিশুটিকেও পানি খাওয়ায় কয়েকবার।
তার পরিচর্যা করছিলো যে সব ছেলে -- মেয়েরা তাদের কাছ থেকে জানা গেলো, এই ভাগ্যহতের ইতিকথা। দ্রুত নোট প্যাড বের করে টুকে নেয়া হতে থাকে সেই বিসতৃত নামের পাহাড়িটির কথা।
লোকটি লোগাং গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শি, প্রাণে বেঁচে যাওয়া সৌভাগ্যবানদের একজন।
তাদের গ্রামে আক্রমণ হতেই শিশুটিকে কোলে করে দুর্গম পাহাড় -- জঙ্গল ভেঙে প্রায় ৩০ কিলিমিটার পথ পাড়ি দিয়ে প্রথমে পৌঁছান সদরে। পিসিপির নেতারা সার্কিট হাউজে আছে -- এই খবর শুনে আসেন এখানে। অনর্গল চাকমা ভাষায় শুধু একটা কথাই বলেন তিনি, বাবারা আমাকে একটু আশ্রয় দাও। চিদরেরা (নিরাপত্তা বাহিনী) আমার কথা জানতে পারলে হয়তো আমাকেও তারা মেরে ফেলবে!
ছাত্র নেতারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে সিদ্ধান্ত নেন, পিসিপির কাছে ভাষ্য দেয়ার অপরাধে লোকটিকে নিরাপত্তা বাহিনী হয়তো ছেড়ে কথা বলবে না। তাই দ্রুত তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় কোনো একটি নিরাপদ আশ্রয়ে। আহাদ ভাইয়ের ক্যামেরা ধার করে লোকটির কয়েকটি ফটো নেয়া হয়।
চার. সেদিন রাত কাটে বর্ষিয়ান পাহাড়ি নেতা অনন্ত মাস্টার তথা রামগড়ের স্কুল শিক অনন্ত বিহারী খীসার নারানখাইয়ার বাসায়। উনি অখন্ড পিসিপির সাবেক নেতা, বর্তমানে শান্তিচুক্তি বিরোধী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট বা ইউপিডিএফের আহ্বায়ক প্রসিত বিকাশ খীসার বাবা।
পরদিন ১২ এপ্রিল ছিলো ফুল বিঝু। খুব ভোরে নাস্তার টেবিলে অনন্ত মাস্টার সুন্দর করে বুঝিয়ে বলছিলেন ফুল বিঝু, মূল বিঝু ও গজ্যাপজ্যা বিঝুর কথা।
এমন সময় কোথা থেকে যেনো একদল পাহাড়ি শিশু -- কিশোর কিচির -- মিচির করতে করতে হাজির হয় সেখানে। ঝুপ ঝুপ করে সকলে অনন্ত মাস্টারকে করে ফুল বিঝুর প্রণাম। বাঙাল অতিথির দিকে ওরা ফিরেও তাকায় না। ...
পাঁচ. সার্কিট হাউজে এসে শোনা গেলো ইলিয়াস ভাই, আনু ভাই, শাজাহান ভাই -- সকলে পিসিপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ওই সকালেই লোগাং যাওয়া হবে। সরজমিনে দেখা হবে আসলে কি হয়েছে সেখানে।
কয়েকটি ভাঙাচোরা জিপ (স্থানীয় নাম চাঁদের গাড়ি) ভাড়া করে রওনা দেয়া হয় লোগাঙের উদ্দেশ্যে।
আবারও পথে পথে তল্লাসী, জেরা, তালিকা নির্মাণ --ইত্যাদি। লোগাঙের আগেই চাঁদের গাড়িগুলোকে আটকে দেয়া হয় পানছড়ি বাজার সংলগ্ন সেনা চেক পোস্টে।
সেখানে হাজির হন ৩৩ নম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জোন কমান্ডার মেজর খালিদ রেজা। তিনি তখন পানছড়ির ক্যাম্পের দায়িত্বে। লোগাং যাওয়া না যাওয়ার প্রশ্নে তুমুল তর্কাতর্কি বাধে দুপরে মধ্যে।
মেজর খালিদের কথা একটাই, লোগাঙে যাওয়া নাকি নিরাপদ নয়। যে কোনো মূহুর্তে সেখানে শান্তিবাহিনী আবারও পাল্টা হামলা করতে পারে। তাছাড়া তার সন্দেহ, এই দলটি বোধহয় শান্তিবাহিনীর আমন্ত্রণে লোগাং যাওয়ার জন্যই ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি এসেছে। বিঝু -- টিঝু আসলে নাকি ফালতু অজুহাত!
তর্কাতর্কির মুহুর্তে সে সময়ের পিসিপির নেতা (বর্তমানে ইউপিডিএফের দলছুট নেতা) সঞ্চয় চাকমাকে দেখা যায় চেক পোস্টের কাছেই একজন পাহাড়ি লোকের সঙ্গে কথা বলতে। লোকটির পিঠে এক টুকরো কাপড়ে বাধা ছোট্ট একটি শিশু। তার হাত ধরে আছে আরো এক শিশু। তার সর্বাঙ্গে শুকিয়ে যাওয়া রক্তের ছিট।
কথা হচ্ছিল ফিসফিসিয়ে। সেখানে উপস্থিত হতেই লোকটির কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি বুঝে সঞ্চয়কে ক্যামেরা দিয়ে বলা হয় লোকটির একটি ফটো তুলে রাখতে। আর তার ভাষ্য সবই যেনো সে নোট করে রাখে।
ছয়. পরে জানা যায়, সেও লোগাং গণহত্যার আরেক প্রত্যদর্শি। সামান্য এক গ্রাম্য কোন্দালকে উপল করে সেটেলার ও নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন একসঙ্গে কেরোসিন দিয়ে আগুন ধরায় লোগাং গ্রামে। নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন গুলি চালায়, আর সেটেলাররা কসাইয়ের মতো কুপিয়ে কাটে নিরাপরাধ পাহাড়িদের। প্রাণে বেঁচে যাওয়া লোকটির চোখের সামনেই কুপিয়ে খুন করা হয় তার স্ত্রী ও এক শিশুকে। কোনো রকমে গহিন জঙ্গলে শিশু দুটিকে নিয়ে লুকিয়ে থেকে প্রাণে রা পান। জঙ্গলে পালানোর সময়ে বুনো কাঁটার আঘাতে তার ছড়ে যায় সর্বাঙ্গ। গত দুদিন তার দানা --পানি কিছুই জোটেনি।
সঞ্চয় তাকে পকেট থেকে সামান্য টাকা দিয়ে খাবার কিনে বাচ্চাদের খাওয়াতে বলে। আর পরামর্শ দেয়, অন্য কোনো পাহাড়ি গ্রামে আপাতত লুকিয়ে থাকতে।...
সাত. সেদিন আর লোগাং যাওয়া হয়নি। তবে খবংপুইজ্জা নামক পাহাড়ি গ্রামে রাতে দেখা মেলে লোগাং গণহত্যার প্রত্যদর্শি আরো কয়েকজনের।
এদের মধ্যে এক কিশোরও রয়েছে, যার মা -- বাবা, ভাই -- বোন সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। জঙ্গলের ভেতর লুকিয়ে থেকে দূর থেকে সে প্রত্য করে এই বেদনাদায়ক নৃশংস দৃশ্য। রাতে ইয়ং -- স্টার কাবে পিসিপি নেতা প্রধীরদা কাপড়ে মুড়িয়ে নিয়ে আসেন আগুনে পুড়ে যাওয়া এক শিশুর কংকাল। লোগাং হত্যাযজ্ঞ এই নাম না জানা অবোধ শিশুটিকেও রেহাই দেয়নি।
আট. পরে ঢাকায় ফিরে আরো এক সহকর্মী প্রিসিলা রাজের সঙ্গে 'পাহাড়ে বিপন্ন জনপদ: শোকার্ত লোগাং' শীর্ষক দুই পর্বেও সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় সাপ্তাহিক 'প্রিয় প্রজন্মে' (তখন এর সম্পাদক ছিলেন ফজলুল বারী, বর্তমানে দৈনিক জনকণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার)।
সেখানে স্থানীয় একজন স্কুল শিকিা, পানছড়ি হেলথ কমপ্লেক্সের সরকারি চিকিৎসক, খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি আহত কয়েকজনসহ অন্তত ১০ জন প্রত্যদর্শিকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়, লোগাং গণহত্যার লোমহর্ষক সব তথ্য। জানানো হয়, পাহাড়ের অসুস্থ রাজনীতি এই একটি গণহত্যাতেই কেড়ে নিয়েছে অন্তত ২০০ জন নিরপরাধ পাহাড়ির জীবন। নিখোঁজ ও আহতদের একটি আনুমানিক সংখ্যাও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনটিতে। পাশাপাশি দেয়া হয় স্থানীয় প্রশাসন পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ভাষ্য।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরই পরেই সে সময় ফজলুল বারী ভাইয়ের ওপর উর্দ্ধতন মহলের চাপ আসে। জানা যায়, সেনা সদস্যরা সে সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের সব কয়েকটি প্রিয় প্রজন্মের কপি কিনে ফেলেছিলো, যেনো এর কোনো সংখ্যাই আর সাধারণ পাঠকের হাতে না পৌঁছে।
তবে পাহাড়ি বন্ধুরা প্রতিবেদনটি ফটোকপি করে নিজস্ব উদ্যোগে পাহাড়ে বিলি করেন। প্রচার করেন ওই প্রতিবেদনটি। এই কাজ করতে গিয়ে সেসময় পিসিপি নেতা সঞ্চয় চাকমা জগন্নাথ হল থেকে 'শান্তিবাহিনী' অভিযোগে প্রথমবারের মতো গ্রেফতারও হন। তিনি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের ছাত্র।
বলা বাহুল্য, সেবার আর বিঝু উৎসব দেখা হয়নি। লোগাঙের শোকে পাহাড়িরা বিঝু বর্জন করেন সেবার।।
---
লেখাটি এর আগে সামহোয়ার ইনব্লগ ডটনেট- এ প্রকাশিত।
মন্তব্য
এইসব শুনলে আর বাঙালি হয়ে থাকতে ইচ্ছে করেনা।
এ আমার পাপ। যার অধিকার, তাকে বঞ্চিত করে আমার এ আগ্রাসন মহাকাল ক্ষমা করবেনা।
আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
সৌরভ,
আপনার এই অনুভূতি আমারো। তবে আমার অনুভূতিটা হয়তো তীব্র...যেহেতু একেবারে কাছ থেকে দেখা।...আর দেখতে বোধহয় এখন চোখ ক্ষয়ে যাচ্ছে।
পাহাড়ে প্রায় দুই দশক যুদ্ধ হলো,আনুমানিক ২০ হাজার মানুষ জীবন দিলেন,শান্তিচুক্তি হলো, কিন্তু এই সব গণহত্যার বিচার হলো না! চুক্তিটি বাস্তবায়নের দায়ও যেনো কোনো সরকারেরই নেই।...
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আগামীতেও সঙ্গে থাকার অনুরোধ।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
বিপ্লব ভাই,
টানা বছর চারেক প্রবাসে। পাহাড়ের বর্তমান খবরাখবর কিছুই জানি না। জেএসএস-ইউপিডিএফ দুদিকেই মেলা বন্ধু-বান্ধব ছিল। কেমন যেন নাড়ির টান অনুভব করি ওদের সাথে। আপনি গত তিন-চার বছরের একটা রিভিউ দিলে কৃতার্থ হতাম।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
সু.চৌ.
আপনার আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ। আপনাকে আগামীতেও সঙ্গে পাবো নিশ্চয়ই।
ওই বিষয়ে আলাদা একটি লেখার কথা ভাবছি। এখানে সংক্ষেপে শুধু ইউপিডিএফ এর শীর্ষ নেতা সঞ্চয় চাকমার ( এই লেখায় সঞ্চয়ের নাম উল্লেখ আছে)কথা বলছি। এ থেকে সামান্য ধারণা পেতে পারেন।
পাহাড়ে পূর্ণ স্বায়ত্বশাসন হবে কী ভাবে, প্রতিষ্ঠার প্রায় সাত বছরেও এ বিষয়ে কোনো তাত্বিক ধারণা হাজির করতে না পারা, জুম্ম (পাহাড়ি) জাতীয়তাবাদের অগ্রদূত এমএন লারমাকে অনুসরণ না করা, সন্তু লারমাকে ঠেকানোর নামে পাহাড়ে নতুন করে সন্ত্রাসবাদের জন্ম দেওয়া - ইত্যাদি আদর্শিক কারণে বছর তিনেক আগে সঞ্চয় দলত্যাগ করেন। 'বিশ্বাস ঘাতকতার' দায়ে দল তাকে মৃতূদণ্ড দেয়। বাধ্য হয়ে সঞ্চয় পাড়ি জমান বিদেশে। এখন সুইজারল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে আছেন।...
আমার সাবেক কর্মস্থল যুগান্তরে সে সময় 'ইউপিডিএফ এর শীর্ষ নেতারা দল ছাড়ছেন, পাড়ি জমাচ্ছেন বিদেশে' শিরোনামে সংবাদ করায় আমাকেও হুমকি দেওয়া হয়। ...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
জেনে খারাপ লাগলো। সঞ্চয় চাকমাকে সরাসরি চিরতাম না। প্রসীত বিকাশ খীসাকে চিনতাম জাহাঙ্গীরনগরে থাকাকালিন এক সেমিনার সূত্রে। আওয়ামী লীগ আমলে যারা পাহাড়ের খোজ খবর রাখতেন খুব স্বাভাবিকভাবেই তাদের সহানুভূতি ইউপিডিএফ এর দিকে পড়তো। ২০০১ এর নির্বাচনে প্রসীত'দা দাড়ানোতে খারাপ লেগেছিল। তার কিছুকাল পরে দেশ ছাড়লাম। আজ প্রায় সাড়ে চার বছর পরে আপনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন সেইসব কথা। আমাদের ব্লগার কর্ণজয়ের সাথে অনেক রকম প্ল্যান ছিল অনেক কিছু করার। সেসব এখন শুধুই শুকনো স্মৃতি। তবে মধ্যবিত্তের তথাকথিত "নৈতিক সমর্থন" দিয়ে যাবো যতদিন বেঁচে আছি।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
প্রিয় প্রজন্মের ঐ লেখাটা মনে আছে ।
কততো বছর আগের । ভুলিনি তবু ।
বিপ্লব,আপনার পাহাড় সংক্রান্ত সকল লেখার জন্য অগ্রীম ৫ তারা ।
-----------------------------------
'আমি ও অনন্তকাল এইখানে পরস্পর বিস্ময়ে বিঁধে আছি'
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
হাসান মোরশেদ,
আপনার পাঠের জন্য, অধিকার হারা, বঞ্চিত পাহাড়িদের কথা মনে রাখার জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
আমার ধারণা আমি বিবিসির একটা ভিডিও দেখেছিলাম এই ঘটনার ওপর। সেটা ইউটিউবে ছিল। পেলে দেব।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
সু.চৌ,
এভাবে বলছেন কেনো? আমরা প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি।...আপনি যে নৈতিক সমর্থনের কথা বলছেন, সেটিও কিন্তু একেবারে ফেলনা নয়।
দিগন্ত,
তাই না কী? জানতাম না তো!আপনি একটু খুঁজে দেখুন না প্লিজ। যদি সেটা পাওয়া যায়, তবে তা হবে একটি দূর্লভ ফুটেজ। অপেক্ষায় রইলাম।
...পাঠের জন্য, মন্তব্য করার জন্য আবারো আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
পাচ্ছিনা, তবে এটা দেখতে পারেন।
এটাও মর্মস্পর্শী - দেখতে পারেন।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
সত্যিই মর্মস্পর্শী। আপনাকে অনেক শ্রদ্ধা।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
নতুন মন্তব্য করুন