কারফিউ

বিপ্লব রহমান এর ছবি
লিখেছেন বিপ্লব রহমান (তারিখ: শুক্র, ২৪/০৮/২০০৭ - ৫:১৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এক. বুধবার রাত সাড়ে ৮ টা। কারফিউ শুরু হয়েছে মাত্র। ধানমণ্ডির ২৭ নম্বর রোডে আমার কর্মস্থল বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম অফিসের সামনে দুজন সহকর্মি পারভেজ ও লেনিন দাঁড়িয়ে দেখছিলেন কারফিউ পরিস্থিতি। যেহেতু প্রেসনোটে বলা হয়েছিলো, আইডি কার্ডই কারফিউ পাস হিসেবে চলবে, তাই সন্ধ্যার মধ্যেই সবার গলায় আইডি কার্ড ঝোলানো হয়েছে।

তো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেনা বাহিনীর দুটি জিপ অফিসের সামনে ঘ্যাঁচ করে ব্রেক কষে। লাফিয়ে নামে পাঁচ -- সাত জন সেনা। লেনিন আইডি কার্ড উঁচিয়ে ধরে শুধু বলতে পেরেছিলেন, বিডিনিউজ।...ওরা বলে, সো হোয়ট! এরপরই শুরু হয়, রাইফেলের বাট দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট।

আমি তখন মিরপুর - কলেজগেটের সর্বশেষ আপডেট নিউজ লিখতে ব্যস্ত। আগের দিনের নাইট ডিউটি, বুধবার দিনভর মিরপুর বাংলা কলেজ আর আগারগাঁওয়ের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র -- জনতার সহিংস বিক্ষোভের স্পট কাভারের ক্লান্তিতে শরীর ভেঙে আসতে চায়। যে টাইপ স্পিড নিয়ে মনে মনে আমার অহংকার, সেই স্পিড স্লথ থেকে স্লথতর হয়ে আসে।...

একজন অফিস পিয়ন দৌড়ে এসে নিউজ রুমে পরভেজ - লেনিনকে মারপিটের খবর জানায়। সবাই কাজ ফেলে নীচে দৌড় দেই পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে। লিফট ওপরে উঠতে দেরী দেখে আমি সিঁড়ি ভেঙে নীচে নামতে থাকি। দোতলা পর্যন্ত নামতেই দেখি লেনিন সিঁড়িতে বসে কোঁকাচ্ছেন। তাকে পরিচর্যা করছেন আরেক সহকর্মি। আমি জিজ্ঞাসা করি, পারভেজ কোথায়? লেনিন, মাথা নেড়ে জানান, তিনি জানেন না।

নীচে নেমে পারভেজকে না পেয়ে আবার সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে ওপরে উঠি। আফিসের ফ্লোরে পৌঁছে দেখি লিফটের দরজা খোলা। পারভেজের মোটা আর ভাড়ি শরীর ঘামে ভিজে একাকার, মুখ হা করেও শ্বাস নিতে পারছেন না। ওর হাত ধরে টেনে লিফট থেকে নামাতে চাই, পারি না। আমাকে সাহায্য করেন আরো দুজন সহকর্মি।

ধরাধরি করে পারভেজকে ফ্রন্ট ডেস্কের সোফায় বসানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক তানভিকে কাছে পেয়ে বলি, আপু দৌঁড়ে একটু পানি নিয়ে এসে ওকে খাওয়ান তো। বুঝতে পারি, বিশ্রাম নিলে পারভেজ সুস্থ হয়ে উঠবেন।

সময় নষ্ট না করে আমি স্বার্থপরের মতো আমার নিউজের আপটেড লেখায় মন দিতে চেষ্টা করি। ... এর মধ্যে পারভেজ - লেনিনকে সেনা - অত্যাচারে বিষয়েও একটি ছোট্ট নিউজ তৈরি করা হয়।

দুই. প্রেস নোটের বয়ান অনুযায়ী, সাংবাদিকদের কারফিউ পাসের বদলে আইডি কার্ডই যথেষ্ট -- এই নিয়ে অফিসের সাংবাদিকরা বিভ্রান্তিতে পড়েন। পারভেজ - লেনিন অত্যাচারিত হওয়ার ঘটনাকে অনেকে বলেন, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সেনা নওজোয়নরা হয়তো অতি উৎসাহী হয়ে এই কাজ করেছেন।

তারপরেও পাসের বিষয়টি নিশ্চিত হতে অফিসের পিএবিএক্সের টেলিফোনগুলো ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সন্ধ্যা ৭ টা থেকেই সবগুলো মোবাইল টেলিফোন অচল করে দেওয়া হয়েছে। শুধু সিটিসেল থেকে সিটিসেলে ফোন করা যাচ্ছে। তাও নেটওয়ার্ক সব সময় কাজ করছে না।

আমি নিজেই পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করে ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কথা বলি। তিনি জানান, এখনো তারা কোনো কারফিউ পাস ইস্যু করছেন না। আমি বিষয়টি অফিসের বসদের জানাই। তখন সকলে বলেন, ইলেভেন/ ওয়ানের সময়ও সাংবাদিকদের পাস প্রয়োজন হয়নি। এবারো প্রয়োজন হবে না। তাছাড়া প্রেসনোটে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আছেই।

তিন. এইসব বৃত্তান্তের পর রাত ৯ টারদিকে আমি ও আমার আরো দুই সহকর্মি লিটন ও রম্যভাইসহ অফিসের সিএনজি চালিত বেবি ট্যাক্সিতে বাসার উদ্দ্যেশে রওনা দেই। আমাদের তিনজনের বাসাই মোহাম্মাদপুরে। এর আগে নিশ্চিত হই, সবাই আইডি কার্ড আর বেবী টেক্সির সামনে সংবাদপত্রের লাল ব্যানারটি সম্পর্কে। বেবি ট্যাক্সি চালককে বার বার বুঝিয়ে বলা হয়, কেউ থামার সিগনাল দিয়ে যেনো সঙ্গে সঙ্গে থামে; তার গতি যেনো থাকে মন্থর।

শুনশান নিরবতার ভেতর বেবী টেক্সি শঙ্কর বাস স্যান্ড মোড়ে পৌঁছাতেই অন্ধকারে ঘাপটি মেরে থাকা সেনা বাহিনীর তিনটি সবুজ রঙের খোলা জিপ সচল হয়। হেড লাইটের তীব্র আরো ফেলে দ্রুত গতিতে গাড়িগুলো ঘিলো ফেলে আমাদের ছোট্ট যানটিকে। সৈনিকেরা বন্দুক উঁচিয়ে তেড়ে আসে, শার্টের কলার চেপে টেঁনে হিঁচড়ে নামায় আমাদেরকে। সেই সাথে চিৎকার চলতে থাকে, থাম! ধর শালাদের! শুয়রের বাচ্চারা কই যাস!

দলপতি এক তরুন ক্যাপ্টেন, লোহার শিরস্ত্রানের নীচে তার গোল্ড রিমের চশমাটিতে ল্যাম্পপোস্টের আলো ঠিকরে পড়ে। তার পোষাকে নেমব্যাজ নেই।

আমি গলায় ঝোলানো আইডি কার্ড উঁচিয়ে বলি, সাংবাদিক। প্লিজ!...

ক্যাপ্টেন ধমক দিয়ে বলেন, প্লিজ কি? প্লিজ মানে?

আমি বলি, প্লিজ মানে হচ্ছে, আপনার সোলজারদের গায়ে হাত দিতে না করুন। আমরা সাংবাদিক।

কারফিউ পাস আছে?

নেই। প্রেসনোটে বলা হয়েছে, আইডি কার্ডই যথেষ্ট। পাস লাগবে না।

আমরা প্রেসনোট পাইনি। আপনারা গাড়িতে উঠুন!

তার ইশারায় সৈনিকেরা শার্টের কলার ধরে আমাদের টেনে হিঁচড়ে পিক আপে তোলে। এরমধ্যে অন্যান্য সেনারা পথচারি কয়েকজন দিনমজুরকে রাইফেলের বাট আর গজারি কাঠের লাঠি দিয়ে মারতে মারতে জিপগুলোতে তোলে। গাড়িতে উঠতে একটু দেরি করলেই আবারো মারধোর, বুটের লাথি।

গাড়ির বহর এগিয়ে চলে মোহাম্মাদপুর শাররীক শিক্ষা কলেজের সেনা ক্যাম্পের দিকে। আমার মনে পড়ে যায়, এখানেই পাকিস্তানী সৈন্য আর তাদের সহযোগি আলবদর, আল শামস, রাজাকাররা ১৯৭১ এ জল্লাদখানা বানিয়েছিলো!

চার. সামান্য এগুতেই গাড়ি থেকে সিগনাল দেওয়া হয় এক মটর সাইকেল আরোহীকে থামার জন্য। সে আবার সিগনাল না বুঝে এগুতে চেষ্টা করলেই জিপ নিয়ে তাকে ধাওয়া করে ধরে ফেলা হয়। ঝুপঝাপ করে লাফিয়ে নামে সেনারা। আমাদের পাহারায় থাকে একটি দল। আর বাদবাকীরা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে মটর সাইকেল আরোহীকে ঘিরে ধরে। এক দল রাইফেল দিয়ে তার মটর সাইকেল ভাঙতে থাকে। আর আরেকদল রাস্তায় ফেলে রাইফেলের বাট, গজারির লাঠি ও বুটের লাথিতে আঘাতের পর আঘাত করতে থাকে আরোহীকে।

বয়স্ক মতোন সেই লোকটি তার আইডি কার্ড দেখানোর সুযোগও পাননি। তিনি শুধু অমানুষিক চিৎকারে বলতে থাকেন, আমাকে মারবেন না! সাংবাদিক! সাংবাদিক!

রাতের নিরবতার ভেতর তাঁর আর্তনাদ, মাংস থেতলানোর ধুপধাপ ভোঁতা শব্দ আর সৈনিকদের উন্মত্ততা ছাড়া পৃথিবীতে যেনো সমস্ত দৃশ্য থমকে সিনেমার স্লাইডের মতো আটকে গেছে। মূহুর্তের মধ্যে সেই সাংবাদিক পরিনত হন একটি থেঁতলানো মাংস পিন্ডে। তাকে কোথায় যেনো চ্যাংদোলা করে নিয়ে যাওয়া হয়। বাতিল লোহা লক্করে পরিনত হওয়া তার মটর সাইকেলটিকে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার কসরত করেন কয়েকজন। আর পুরো অপারেশনটি এক পাশে দাঁড়িয়ে তদারকি করেন গোল্ডরিম ক্যাপ্টেন।

একসময় তিনি বলেন, সাংবাদিক তিনজন নেমে আসুন। আমাদের মেজর স্যার আসছেন।

অনামিকা কালো মতো মেজরটিকে মনে হলো খানিকটা টেন্স ও ক্লান্ত। তিনি সব শুনে বলেন, দেখেছেন তো সাংবাদিকের পরিনতি। আপনাদের তো সে তুলনায় কিছুই করা হয়নি। হঠাৎ আমার কাঁধের ব্যাগটিকে দেখে মেজর বলেন, সঙ্গে ক্যামেরা আছে না কি? ছবি তোলেননি তো? আমি তাকে নিশ্চিত করি, ব্যাগে জরুরি কিছু কাগজপত্র - কলম ছাড়া আর কিছুই নেই। মেজর আদেশ করেন সবাইকে মোহাম্মাদপুর থানায় নিয়ে যেতে।

আমরা নিজেরা ফিসফিসিয়ে বলা বলি করতে থাকি, যাক। থানায় নিলে অন্তত মারধোর করবে না। সেনা ক্যাম্পে নিলে তো হাড়গোড় ভাঙার বিষয়টি নিশ্চিত ছিলো!

মোহাম্মাদপুর থানায় দেখা মেলে আরো কয়েকজন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীর সঙ্গে। এরমধ্যে বৈশাখী টেলিভিশনের হেড অব দা নিউজ আনিস আলমগীর ভাইয়ের অবস্থা বেশ করুন। সৈন্যরা তাকে চেলা কাঠ দিয়ে দুই পায়ে ইচ্ছে মতো পিটিয়েছে। তার মোটা জিন্সের প্যান্ট এখানে - সেখানে ছেঁড়া। থানার ওসি তাকে কয়েকটি প্যারাসিটামল দিয়েছেন। সেগুলো হাতে নিয়ে আনিস ভাই বসে আছেন, পেট খালি বলে অষুধ গিলতে সাহস পাচ্ছেন না।

কারফিউ পাসের অভাবে আরো সাংবাদিকের দল ধরা পড়তে থাকে। এক সময় ওসির কক্ষটিতে আর স্থান সংকুলান না হওয়ায় আমাদের দুই গ্র“পে ভাগ করে পাশের সেকেন্ড অফিসারের রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি ল্যান্ড ফোন পেয়ে আমি প্রথমেই ফোনটি দখল করে আমার অফিসে চিফ রিপোর্টারকে ফোন করে সংক্ষেপে পুরো ঘটনা বলি। তাকে বলি, এখুনি এ বিষয়ে বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমে নিউজ করতে। একটু পরেই ওই কক্ষের ছোট্ট একটি টেলিভিশনে দেখি, আমাদের আটক, মারপিট ও হয়রানী করার খবরটি দু - তিনটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। বুঝতে পারি, আমার টেলিফোনে কাজ হয়েছে।

অবস্থা বেগতিক দেখে সেকেন্ড অফিসার টেলিফোনটির তার খুলে সেটটি তার ড্রয়ারে তালাবদ্ধ করে রাখেন। তার কাছেই শুনতে পাই, রাস্তায় যাকে সেনারা তুলোধুনো করেছে, তিনি একটি সাপ্তাহিকের সাংবাদিক। তাকে গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তার বাইকটি জমা আছে থানায়। সেকেন্ড অফিসার নিজের অসাহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, ভাই, আপনাদের জন্য ওসি সাহেব ডিসি - এসপিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।

পাঁচ. রাত সাড়ে ১০ টার দিকে জনা ত্রিশেক সাংবাদকর্মীর নাম ধাম রেজিস্টার খাতায় লেখা হয়। সেই মেজর আর ক্যাপ্টেন থানায় এসে ওসিকে ধমকে বলেন, এরা সবাই আপনার রুমে কেনো? এরা কি আপনার গেস্ট না আসামী? যদি আসামী হয়, তাহলে এক্ষুনি এদের ঘাড় ধরে লক আপে ঠোকান! স্যার, স্যার বলা ছাড়া ওসির কোনো গত্যান্তর থাকে না। একে একে নাম ধরে ধরে সবাইকে লক আপে ঢোকানো হয়।

ঘুপচি লক আপে ঘুমোট গরম আর ঘামের দুর্গন্ধে বমি আসতে চায়। এরই মধ্যে পরিচিত সব সাংবাদিক হিসেব করে ফেলেন, কার কাছে কয়টি সিগারেট আছে। কারণ সারা রাতের ব্যাপার। কারফিউ বলে দোকান পাট বন্ধ; পুলিশকে টাকা দিয়ে সিগারেটও আনা যাবে না। আমরা সিদ্ধান্ত নেই যদি কেউ একটি সিগারেট ধরায়, তাহলে তা একা খাওয়া যাবে না, অন্য একজনের সঙ্গে শেয়ার করতে হবে; ব্যান্ড কোনো বিষয় নয়।

ইরাক যুদ্ধ কাভার করা সাংবাদিক আনিস ভাই, সকলকে অভয় দিয়ে বলেন, জেল খাটার একটা অভিজ্ঞতা বাকি ছিলো, সেটাও হতে যাচ্ছে। কি বলেন সবাই! সকলে হইচই করে তার কথায় সমর্থন দেই। রম্য ভাই গান গাওয়ার চেষ্টা করেন, আমি বন্দি কারাগারে।...

রাত ১২ টার দিকে একজন এসআই এসে খবর দেন, সুখবর আছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের ছেড়ে দেওয়া হবে!

আরো কয়েক মিনিট পর একে একে নাম ধরে ডেকে, আইডি কার্ড মিলিয়ে সেনা কর্তারা আমাদের ছাড়তে শুরু করেন। আমরা মোহাম্মাদপুর গামি তিন সাংবাদিক বাসার পথ ধরি। রম্য ভাইয়ের বাসায় ল্যান্ড ফোন আছে। সিদ্ধান্ত হয়, তিনি বাসায় পৌঁছে অফিসে টেলিফোন করে আমাদের মুক্ত হওয়ার খবরটি পৌছে দেবেন।

*পুনশ্চ: সাংবাদিকদের আটক ও হয়রানীর বিষয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ করে যেসব সহব্লগার পোস্ট দিয়েছেন, মন্তব্য করেছেন, এই লেখার মাধ্যমে তাদের সকলের কাছে জানাচ্ছি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ।।


মন্তব্য

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

পোস্ট পরে পড়বো। আগে ফিরে এসেছেন বলে শোকরানা আদায় কইরা লই।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ওয়েলকাম ব্যাক। দারুন এপিক! আশা করি শীঘ্রি সেই দুঃসহ স্মৃতি ওভারকাম করতে পারবেন।

(লেখাটার একটা কপি নিজের কাছে রাইখেন)

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

বিডি নিউজ২৪ এ খবর পাওয়ামাত্র আমরা প্রতিবাদ শুরু করেছিলাম।
ভালয় ভালয় এ ফাঁড়া কেটেছে। সাবধান থাকবেন।
এই ঘটনা যেন মনের উপর চাপ ফেলতে না পারে সেজন্য চেষ্টা করবেন।

প্রতিবাদী পোস্টের লিংক
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

গাড়ির বহর এগিয়ে চলে মোহাম্মাদপুর শাররীক শিক্ষা কলেজের সেনা ক্যাম্পের দিকে। আমার মনে পড়ে যায়, এখানেই পাকিস্তানী সৈন্য আর তাদের সহযোগি আলবদর, আল শামস, রাজাকাররা ১৯৭১ এ জল্লাদখানা বানিয়েছিলো!

কিছু কি বদলায়?
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

পড়লাম। ফার্স্ট হ্যান্ড এক্সপিরিয়েন্স। গুছিয়ে লিখেছেন।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

শামীম এর ছবি

হারানো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রমী এদের কাছে সেই গণতন্ত্রের একটা নমুনা পাওয়া গেল। নমুনার যে অবস্থা তাতে সেই গণতন্ত্র আসার পর কী হবে সেটা ভেবে শিউরে উঠছি।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

শুধু কষ্ট হচ্ছে, কষ্ট। দেশের সেনারা দেশের মানুষের উপরই যত ঝাল ঝাড়ে। আহারে আমার দেশপ্রেমিক সেনাদল!

হাসান মোরশেদ এর ছবি

কি আর বলবো? সব অনুভূতি প্রকাশযোগ্য নয় ।

-----------------------------------
'আমি ও অনন্তকাল এইখানে পরস্পর বিস্ময়ে বিঁধে আছি'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

কনফুসিয়াস এর ছবি

ঠিকঠাক ফিরে আসছেন এতেই খুশি।
-যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

হযবরল এর ছবি

আরো লেখা চাই।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া কিছু করার নেই আর। আশা করি সুস্থ হয়ে উঠবেন তাড়াতাড়ি।

অয়ন এর ছবি

শামীম লিখেছেন:
হারানো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রমী এদের কাছে সেই গণতন্ত্রের একটা নমুনা পাওয়া গেল। নমুনার যে অবস্থা তাতে সেই গণতন্ত্র আসার পর কী হবে সেটা ভেবে শিউরে উঠছি।

কথা তো এটাই, গণতন্ত্র ফেরত আসার পর কি হবে?

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

শুকরিয়া।
বিবিসি বাংলায় আপনার প্রতিক্রিয়া শুনেছি। (মনে মনে ৫ দিয়েছি কিন্তু---)

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

Biplob bhai,

Tar aager raatei Bachal'e apnar shathe chat'e kotha hochhilo. Pordin office'e ei bhoyaboho news pori online'e ebong shorir him hoye giyechhilo. Apni allah'r rohmot'e bhalo'e bhalo'e firey eshechhen, shetai anonder bepar. Shei boyoshko shangbadik'er kotha porey khub kharap laglo. Ei soldier'ra janowar'ero odhom.

Bhalo thakben.

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ফিরা আসছেন, এর চাইতে বেশি কৃতজ্ঞতা আর কীসে প্রকাশ করা যেতে পারে।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

বস, ভালয় ভালয় ফেরত আসছেন এই খুশিতে এক ঝুড়ি বিপ্লব দিলাম ...

পোস্টটা খুবই ভাল্লাগছে ... সেইটা নাইবা বল্লাম ...

থার্ড আই এর ছবি

যুদ্ধ ফেরত কলম সৈনিক স্বাগতম। কলম যুদ্ধ যাদের আমরন সংগ্রাম তাদের তৈরী থাকতে হবে অন্যকোন যুদ্ধের জন্য।
আপনার গ্রেফতারে আমাদের মধ্যে যে হাহাকার তৈরী হয়েছিলো আপনার পোষ্টে সেটা কিছুটা কমেছে।

----------------------
জল ভরো সুন্দরী কইন্যা, জলে দিছ ঢেউ।
হাসি মুখে কওনা কথা সঙ্গে নাই মোর কেউ।

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

সৌরভ এর ছবি

কেঁদে ফেললাম।
এ আমার দেশ নয়।



আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

আপন এর ছবি

এই বিষয়টা নিয়ে ওই দিনই কথা হচ্ছিল পারভেজের সঙ্গে। বেচারা কোনদিনই হয়তো এই দুঃসহ স্মৃতির কথা ভুলতে পারবে না। খারাপ লাগছে খুব।
আপনার এবং সেনা হয়রানিতে পড়া সবার জন্য শুভ কামনা!

নীলের সঙ্গে পথ চলা,ভুল পথে
অথবা তারপরও ভালো আছি ...

বিপ্লব রহমান এর ছবি

সঙ্গে থাকার জন্য আবারো সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

এখন বাংলাদেশে সবার নাকি ভালো থাকার হুকুম আছে। সতর্ক থাকবেন।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

দৃশা এর ছবি

ফিরা আসছেন এটা অবশ্যই আনন্দের সংবাদ...
তবে আমি কমু না এই ঘটনা ভুলে যান...আজীবন মনে রাখুন আর প্রচন্ডভাবে ঘৃনা করুন এসব নরপশুদের... একদিন আমাদেরও সময় সুযোগ আসবে...তখন এই ঘৃনাটা কাজে আসবে।

দৃশা

বিপ্লব রহমান এর ছবি

জুবায়ের,

হুকুম মেনে আমরা ভাল আছি; ৩০ টাকা কেজিতে চাল খাচ্ছি।

দৃশা,

একমত। ঘৃনাটা থাকা খুব জরুরি।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

Bolbona এর ছবি

Biplob da
I really would not able to find out for satisfactory words but feeling too sad to read this blog, as I can imagine, what we have been facing in CHT. Finally, thanks GOD you come back alive.

Ojana এর ছবি

Very strange !!! Obak Bangladesh

অতিথি এর ছবি

সহি সালামতে ফেরত আসছেন... তাই শুকরিয়া।
এই দেশে এখন এক সমস্যা বিরাজ করে... আগের সরকারগুলা খারাপ ছিলো... তাই এই সরকার দেবতুল্য... এই দেশের সেনাবাহিনী নিয়া কোনো কথাই বলা যাবেনা... দেশে য্যান এখন সেনাপূজা চলতেছে...
আপনার এই পোষ্ট তাদের ঘুম ভাঙ্গাক...
এই বিষয়ে আমি একখান পোষ্ট লেখতে চাইছিলাম... কিন্তু এডমিন এখনো আমার সদস্যতা পেন্ডিং রাখছে... কপালে জুটলে লেখার বাসনা করি। ভালো থাইকেন... যত্ন নিয়েন

বিপ্লব রহমান এর ছবি

অনেক দেরীতে বলছি...

প্রিয় বলবো না,

পাহাড়ে জলপাইয়ের ভয়াল রূপ আপনাদের চেয়ে ভাল আর কে বলতে পারে?

অজানা,

সত্যিই অবাক বাংলাদেশ!

অতিথি,

শিগগিরই সচল হবেন নিশ্চয়ই; তবে এখন অতিথি লেখকদেরও লেখার সুযোগ আছে।

...সঙ্গে থাকার জন্য আবারো সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।