কিউবায় পিসি বিক্রি, কিছু ভাবনা...কিছু প্রশ্ন

বিপ্রতীপ এর ছবি
লিখেছেন বিপ্রতীপ (তারিখ: শুক্র, ০৯/০৫/২০০৮ - ১০:৪১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইদানিং পত্রিকা হাতে নিলে মূল পাতার সংবাদগুলো তেমন একটা পড়তে ইচ্ছে করে না। মাঝে মধ্যে গরম কিছু ঘটলে মূল পাতার সংবাদ মনযোগ দিয়ে পড়ি। তেমন গরম কিছু চোখে না পড়ায় আজ সকালে প্রথম আলো হাতে নিয়েই সব পাতা বাদ দিয়ে প্রজন্ম ডট কম পাতায় চলে গেলাম। ছোট্ট একটা ছবির ক্যাপশনে চোখ আটকে গেলো-কিউবা-তে এখন থেকে ব্যাক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহার করা বৈধ করা হয়েছে। সম্প্রতি দেশের নতুন রাষ্ট্রপ্রধান রাউল ক্যাস্ট্রো সম্প্রতি এ ঘোষনা দিয়েছেন। খবরটা শুনে রীতিমতো অবাকই হলাম। এ কেমন কথা? একুশ শতকে একটি দেশে পিসি কেনা যাবে না! ইন্টারনেটে এ নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করে দেখলাম শুধু কম্পিউটারই নয়...মোবাইল, ডিভিডি প্লেয়ার সহ প্রায় সব ধরনের প্রযুক্তি পন্যের উপরেই এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে নিজের একটি ব্যাক্তিগত কম্পিউটার কিনতে পারলেও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ মিলছে না। শুধুমাত্র কিছু অনুমোদিত অফিস এবং নির্দিষ্ট সাংবাদিক ইন্টারনেট ব্যবহারের অনুমতি পাবেন।
auto
যাই হোক এ খবরে কিছু প্রশ্ন মাথায় আসলো। সমাজতান্ত্রিক দেশ কিউবার পুঁজিবাদী দেশের পন্য বর্জনের মানসিকতা নতুন কিছু নয়। তবে কম্পিউটারের উপরেও নিষেধাজ্ঞা থাকতে পারে তা কখনও কল্পনা করিনি। সমাজতন্ত্রের প্রতি অনেকেরই একটা দূর্বলতা আছে। আমার নিজেরও একসময় আগ্রহ ছিল। তবে একসময় মেকি মনে হয়েছে। তাই এ বিষয়ে আলেক মাওলাদের বই বেশি পড়া হয়নি বলে আমার জানারও বেশ সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু এভাবে একটি দেশের জনগণকে তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার ব্যাপারটা বোধগম্য হলো না। এ ধরনের কট্টর সমাজতন্ত্র একটি দেশের উন্নয়নের পক্ষে কতোটা ইতিবাচক? সত্যি কথা বলতে কি এ ধরনের অধিক কট্টর মানসিকতা দেখলে তান্ত্রিকদের মৌলবাদীদের চেয়ে আলাদা করতে পারি না...


মন্তব্য

পরিবর্তনশীল এর ছবি

আমরা অনেক আরামে আছি- তাইলে।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

বিপ্রতীপ এর ছবি
পরিবর্তনশীল এর ছবি

দেঁতো হাসি
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

স্নিগ্ধা এর ছবি

সমাজতন্ত্র তন্ত্র হিসেবে, আদর্শ হিসেবে, সমাজ ব্যবস্থা হিসেবে অবশ্যই ভালো, অন্তঃত আমি ব্যক্তিগতভাবে মার্ক্সের তাত্ত্বিক অবদানের প্রতি ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ। কিন্তু সেই তত্ত্ব মানুষ প্রয়োগের ক্ষেত্রে কি করবে বা কিভাবে বাস্তবায়িত করবে সেটা একটা আলাদা ব্যাপার। সবচেয়ে দুঃখের কথা কেন যে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর এতো insecurity যে সবসময় এতো নিয়ম আর বাধানিষেধ চাপিয়ে দেয়া, সেটা আমার বুদ্ধির অগম্য। তা যতোই না কেন 'ব্যক্তি মালিকানা' বা 'ব্যক্তি স্বার্থ'এর প্রসার ঠেকানোর অজুহাতে সেটা করা হোক।

তবে এখনকার যে পৃথিবী - তাতে যে কোন তত্ত্বই আসলে reconceptualize করার সময় এসেছে। কোন কিছুই আর সার্বজনীন ভাবে বোধ হয় 'ঠিক' বা 'ভুল' বলা যায় না।

বিপ্রতীপ এর ছবি

আমি আসলে এককভাবে দোষ দিচ্ছি না...তবে আমার যা মনে হয় সমাজতন্ত্র কিংবা গণতন্ত্র কোনটিই এককভাবে সঠিক সমাধান নয়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

অতিথি লেখক এর ছবি

বিপ্রতীপ লিখেছেন:
সত্যি কথা বলতে কি এ ধরনের অধিক কট্টর মানসিকতা দেখলে তান্ত্রিকদের মৌলবাদীদের চেয়ে আলাদা করতে পারি না.

হে হে।
অনেক হাচা কথা। গুণগত দিক একই।

পাগলপ্রাণ

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍এ ধরনের অধিক কট্টর মানসিকতা দেখলে তান্ত্রিকদের মৌলবাদীদের চেয়ে আলাদা করতে পারি না...

১০০% সহমত। তন্ত্র ধরে রাখতে দেশের লোকজনকে কুয়োর ব্যাঙ বানিয়ে রাখতে হবে! কী অদ্ভুত কথা!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব দেবো। কিন্তু কী পাবো তার বদলে? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

পাঁচতারা দিলাম। কিউবার পিসির সাথে আমাদের আরামে থাকার কি সম্পর্ক বুঝলাম না, তবে এইটা পুরানো কৌশল...
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

বিপ্রতীপ এর ছবি

আমাদের দেশে প্রযুক্তি পন্যের কেনাবেচায় এ ধরনের কোন কট্টর নীতি নেই বলেই পরিবর্তনশীল এই কথা বলেছেন। অবশ্য তথ্য পাচারের অজুহাতে আমাদের দেশে কতকিছু দেরিতে হয়েছে...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

দ্রোহী এর ছবি

হুম সমাজতন্ত্র হইলো - দেখতে ভাল শুনতে ভাল শুঁকলে পরে আরও ভাল কিন্তু খাইতে খারাপ।

অদৃশ্য ভগবানের ব্যক্তিগত ব্লগে একটা অসাধারণ কৌতুক আছে।

— সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় কি সজারুর উপর বসা সম্ভব ?
— সম্ভব কেবল তিনটি ক্ষেত্রে ।
এক— যদি পশ্চাদ্দেশ নিজের না হয়;
দুই— যদি বসার আগে সজারুর কাঁটা ছেটে ফেলা হয়;
তিন— যদি পার্টি নির্দেশ দেয়।

পার্টির ঠ্যালা এমনই ঠ্যালা - পিসি ব্যাভার দুরে থাক! মাসীকে পর্যন্ত লীডারের কাছে দিয়ে আসতে হয়।


কি মাঝি? ডরাইলা?

ধ্রুব হাসান এর ছবি

@দ্রোহী ভাইজান আপনি তো অভিজ্ঞ মানুষ, একটা প্রশ্ন বহুদিন থেকে মাথায় গুড়্গুড় করতাছে, অনেক কমুনিষ্ট লীডারদেরও জিগাইছি মাঝেসাঝে, হেরা নানা ভাবের কথা কইয়া প্রশ্নখান এড়াইয়া যান। দেখা যায় সমাজতন্ত্রী লীডারগো মইধ্যে (বিশেষ করে সাউথ এশিয়ান লীডার গো মইধ্যে) অনেকে আমৃত্যু বিবাহবন্ধনে বা কোন রকম পার্টনারশীপে যান নাই। আমার বিনীত প্রশ্নখান হইলো, এরা কেমনে নিজেগেও প্রাকৃতিক চাহিদা মানে যৌন চাহিদাটারে নিভালেন? সারা জীবন কি অবদমন করলেন(শুধুমাত্র মাষ্টারভেশনরে সঙ্গী কইরা)? নাকি ঐ অনুভূতিই জাগে নাই কোনদিন? প্রবৃত্তি দমনের এতো দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া ওনারা শিখলেন কি করে? সরি ভাই বেশী বাজে প্রশ্ন হইলে এড়াইয়া যাইয়েন, আর ইচ্ছে হইলে অধমরে একটু উত্তর দিয়েন (ভাবলাম আপনিই একমাত্র লোক যারে এই কথাখান জিগান যাই)।

দ্রোহী এর ছবি

তাহলে আরেকটা কৌতুক শোনেন (কৃতজ্ঞতা: অদৃশ্য ভগবান)

কমিউনিজমের মূল কথা হল, এক তাত্ত্বিক বোঝাচ্ছেন অন্য জনকে, "প্রতিবেশীর সঙ্গে নিজেরটা ভাগ করে নেওয়া ।"
—"না মোটেই না।" আরেকজন প্রতিবাদ করেন, কমিউনিজমের মূল কথা হল, "প্রতিবেশীরটা নিজের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া ।"

নিজের বউ ভাগ করে মজা আছে? আপনেই বলেন?
ওই যে মাসীর ব্যাপারটা বললাম — ওইটা হচ্ছে প্রতিবেশীরটা নিজের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া।

যৌন চাহিদা নিভাতে বিয়ে করা লাগে এই কথা আপনাকে কে বললো?


কি মাঝি? ডরাইলা?

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍@ দ্রোহী

সমাজতন্ত্র হইলো - দেখতে ভাল শুনতে ভাল শুঁকলে পরে আরও ভাল কিন্তু খাইতে খারাপ।

আপনাকে জাঝা, গুল্লি, (বিপ্লব) ... আর কী দেবো, ভেবে পাচ্ছি না।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব দেবো। কিন্তু কী পাবো তার বদলে? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

দ্রোহী এর ছবি

লিখতে গিয়ে গোয়েন্দা ঝাকানাকার বন্দুকের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল।


কি মাঝি? ডরাইলা?

বিপ্রতীপ এর ছবি

দ্রোহী ভাইয়ের কৌতুকে বিপ্লব !
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

ধ্রুব হাসান এর ছবি

পার্টির ঠ্যালা এমনই ঠ্যালা - পিসি ব্যাভার দুরে থাক! মাসীকে পর্যন্ত লীডারের কাছে দিয়ে আসতে হয়।
......@ দ্রোহী এইটা যে কত্তোরো হাছা কথা কইছেন...আমগো লাল চীনে নাকি কিশোরী কইন্যাদের নিজেদের যতনের অঙ্গখানি কিছু রাতের জন্য মাননীয় পলিট বুড়াদের জন্য সম্প্রদান করেই তবে বিদেশ প্রস্তানের ভিসা লাগাইতে হয়!

@বিপ্রতীপ শুধু কি ভাই ব্যক্তিগত পিসি ব্যবহার নিষেধ আরো কতো শত ইচ্ছের যে কবর দিতে হয় ঐ সব দেশে দেশের আর সবার স্বার্থের কথা চিন্তা করে, তার কি ইয়ত্তা আছে? একটা মজার ঘটনা বলি ফিদেল কাস্ত্রো যখন অসুস্থ হলেন (প্রায় মারা যাচ্ছিলেন বলে...) তখন য়ুরোপ ও লন্ডন থেকে হঠাত করে ভ্রমনকারীর সংখ্যা বেড়ে গেছিলো। এই বিশাল গ্রুপের মধ্যে আমারো কিছু ল্যাটিন/ কিউবান/স্প্যানিশ বন্ধু ছিলো যারা ছুটে গিয়েছিলো ঐ সময় চাকরী থেকে ছুটি নিয়ে! প্রায় সপ্তাহ দশ দিন পর ওরা যখন একরকম হতাশ হয়ে ফিরলো, আমি ওদের জিজ্ঞেস করলাম কি ব্যাপার তোমরা কেমন দেখলা ফিদেলের কিউবা (বেশ উচ্ছ্বসিত হয়েই জিজ্ঞেস করছিলাম)? একজন আমতা আমতা করে, আরেকজন ক্ষেপে গিয়ে বলে, মেইট দেট ওয়াস টোটাল লস ট্রিপ। আমি জিগাইলাম কেন? হে কয়, আরে কইসনা আমরা ভাবলাম বুড়া মরার পর একটু সবাই মিলে হৈহুল্লোড় করুম, কিন্তু ব্যাটা এখনো জীবিত! (আমার প্রায় সকড্‌ হওয়ার দশা!) বললাম, কস্‌ কি? এরকম একটা লীডার মারা যাবে আর তোরা গেলি ফুর্তি করতে! ওরা কয়, ভাইবা দেখ কিরম একটা ঐতিহাসিক ফুর্তি হইতো, আর য়ু নো...কিউবান গার্লস্‌ আর ফকিং হট্‌।
আমি কতোক্ষন হা করে থেকে ভাবলাম, এতো বড়ো মহৎ মানুষ যারে ভাবি তার মৃত্যু দেখতে কেন হাজারে হাজারে মানুষ কাজ কর্ম বাদ দিয়ে গিয়ে কিউবা বসে থাকে? মাথায় নানা রকমের উত্তর খেলা করে কিন্তু কিছু মিলে না ঠিক। আসলেই মানুষ বা কোন প্রানীই বোধহয় পরাধীনতা জিনিষটা পছন্দ করে না, হোক সে লাগাম টানা সাম্যের নামে/ ধর্মের নামে/ গনতন্ত্রের নামে!

বিপ্রতীপ এর ছবি

ধ্রুব ভাই,
কিউবাতে অনেক কিছুর উপরে নিষেধাজ্ঞা ছিল জানতাম। তবে ব্যাক্তিগত পিসি বা মোবাইলের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকতে পারে সেটা সত্যি কল্পনাও করিনি...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

অতিথি লেখক এর ছবি

এই সুযোগে দু'টি লাইন লিখলাম । আমার মতে সমাজতন্ত্র আর পুঁজিবাদের একটা তুলনামূলক বিচার ।

সমাজতন্ত্রে আপনি আরো একদল লোকের সাথে একটা ঘরে বন্দী, সবার গলায় লোহার বেড়ি হাতে লোহার কড়া, সবাই সমান ।

পুঁজিবাদে কারো হাতে পায়ে গলায় কোন কড়া-ফড়া কিছু নেই, ইচ্ছা মত ঘুরে বেড়েচ্ছে, কিন্তু সবাই সেই একই বদ্ধ ঘরে । তবে ঘরের দেয়ালে সুন্দর অপ্টিকাল ইলিউশনের ছবি সাঁটানো আছে । সুন্দর গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের সমূদ্র তীরের দৃশ্য । মনে হচ্ছে যেন সেখানেই আছেন সবাই । আসলে সবাই সেই একই কুয়ার ব্যাং - সবাই সমান ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।