কথাগুলো মাথায় বেশ কিছুদিন ধরেই ঘুরেফিরে আসছিলো। সম্প্রতি ডেইলি স্টারে একটা নারীবাদী লেখা পড়ে সেই চিন্তাভাবনাগুলো আবার মাথার মাঝে ঘুরেফিরে আসতে লাগলো।
আসলে নারী অধিকার বলতে নারীবাদীরা কি বুঝাতে চান সেটা মাঝে মধ্যে সেটা বুঝতে পারি না। অনেক সময়েই দেখে নারীমঞ্চ টাইপের পাতায় লেখাগুলো এমনভাবে লেখা হয় যেন আমাদের দেশের সকল নারীরা ব্যাপক কষ্টে আছেন। এদেশ নারীদের বসবাসের উপযোগী নয়। ডেইলি স্টারের সেই লেখিকার মতেও এদেশের পুরুষেরা নারীদের সম্মান করতে জানে না। লেখায় অত্যন্ত নোংরাভাবে পুরুষদের তিনটি শ্রেনীতে বিভক্ত করা হয়েছে। সব পুরুষ একেবারে সাধু হবেন কিংবা শুধুমাত্র ভালোবাসার দৃষ্টিতে নারীর দিকে তাকান সেটা একেবারেই সত্য নয় মানছি। কিন্তু এভাবে গণহারে সবাইকে এক কাতারে দাঁড় করানোর ব্যাপারটা বোধগম্য হয় না। নারীরা কি পুরুষদের দিকে তাকান না? [এই কথাটি লিখতে গিয়ে ভানুর একটা কৌতুকের কথা মনে পড়ে গেলো। নারীরা যদি পুরুষদের দিকে নাই তাকান তাহলে পুরুষেরা যে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে সেটা দেখেন কিভাবে! যাই হোক লেখাটা হালকা করতে চাই না। মন মেজাজ খারাপ হয়ে আছে।]
শুধু এই লেখিকা না...বেশির ভাগ লেখিকা যারা নারী অধিকার নিয়ে লেখালিখি করেন তাদের সবার মাঝেই এই ব্যাপারটা লক্ষ্যনীয়। আসলেই কি শুধু পুরুষরাই নারী সমতার পথটি বন্ধ করে দিয়েছেন?
নারী সমতা মানে কি নারীদের জন্য বাসে আলাদা সিট, ব্যাংকের আলাদা লাইন কিংবা লাইন ভেঙ্গে লেডিস ফার্স্ট সুবিধা উপভোগ করা? পুরুষেরা নারীদের সম্মান করছে না। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো ফলাফলের আশায় শিক্ষকদের সাথে আলগা খাতির জমানোর মাধ্যমে নারীরাই কি তাদের সম্মানটুকু কমিয়ে ফেলছেন না? কথাটা হয়তো অনেক বাজে শোনাচ্ছে...তবে ডেইলি স্টারের সেই লেখিকার লেখা পড়ার পর নিজের চোখে দেখা এই সত্যটুকু বলতে বাজে লাগছে না আমার। কারন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যদি গুটিকয়েক পুরুষের জন্য সমস্ত পুরুষ জাতিকে নোংরা ভাষায় নিয়মিত কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে চলেছেন এ ধরনের লেখিকারা।
নারীদের উন্নয়ন কিভাবে সম্ভব সেটা নিয়ে না ভেবে শুধু পুরুষদের ঢালাওভাবে গালিগালাজের মাধ্যমে কি নারী অধিকার বা সম্মান আদায় আদৌ কি সম্ভব?
[উলটা পালটা কিছু বলে ফেললাম কিনা কে জানে...আসলে ডেইলি স্টারের লেখা আর ছবিটা দেখে মন-মেজাজ খারাপ হয়ে গেছিলো]
মন্তব্য
বিপ্রতীপ - আপনার লেখায় মন্তব্য করতে গিয়ে বুঝতে পারলাম এত কথা বলার আছে যে আলাদা পোস্ট ছাড়া সেটা সম্ভব নয়, আবার এই মুহূর্তে আলাদা পোস্ট দেয়াও সম্ভব নয়, অতএব যদ্দূর পারি সংক্ষেপেই সারি।
ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি নারীবাদী বা যে কোন 'বাদী' রই এই গালাগালি কি ঢালাওভাবে দোষারোপ করা বাদ দিলে ভালো। প্রথমতঃ সেটা অনুচিত, আর দ্বিতীয়তঃ - না, বিনয় ফিনয় বিরাট কোন গুণ বলে মনে করি সে জন্য মোটেই নয়, বরং কৌশলগত কারণে (strategically র ঠিক বাংলা কি হলো?)। ডেইলী স্টারে কি লিখেছে আমি জানি না, কিন্তু আপনি নিজেও যদিও খুব ভালো করেই জানেন যে সারা পৃথিবীতে তো বটেই, আরো বিশেষ করে আমাদের উপমহাদেশে নারীর অবস্থান কোথায়, তারপরও শুধুমাত্র লেখার আক্রমণাত্মক ভঙ্গির জন্যই একজন পুরুষ হিসেবে আপনি বিরক্ত হয়ে উঠলেন, ডিফেন্সিভ হয়ে উঠলেন, এবং লেখাটার কোন উপযোগিতাই আর আপনার কাছে রইলো না।
আমি নিজে একজন নারী বলেই জানি, যারা এভাবে লেখেন তাদের এই রাগ, এই ঝাঁঝ, এই হতাশা কোত্থেকে আসে। এও জানি, যে এভাবে না লিখলেও অনেক সময়ই শুধু 'নারীবাদী' এই তকমাটা সাথে থাকে বলেই অনেকে ধরেই নেন তাদের সদাই রণং দেহি ভাব।
তবে, একটা কথা ঠিক, শুধু নারী হলেই সে বঞ্চিত আর পুরুষ হলেই অত্যাচারী - এত সহজ কি আর হয় কিছু? নারী বা পুরুষ যেই হোক, সে সমাজের কোন শ্রেনীর সদস্য, ক্ষমতার স্পেক্ট্রামের কোন জায়গাটিতে তার অবস্থান - সেগুলো দিয়ে নির্ধারিত হয় কে কাকে কতটুকু অত্যাচার/শোষন করতে পারবে - নারী এবং পুরুষ উভয়ই।
শেষপর্য্যন্ত যেহেতু সবাইই 'মানুষ' - অতএব নারী বা পুরুষ যে যখন পারে স্বার্থোদ্ধারের জন্য দরকারমত নিজ নিজ অস্ত্র প্রয়োগ করে, নারী বলে অসহায় কি অনভিজ্ঞ হবে এমন মোটেই নয়।
নারীবাদীদেরও সেটাই কথা - শেষপর্য্যন্ত সবাইই মানুষ, নারীরাও মানুষ, শুধু 'নারী' নয়।
যে কোন সরলীকরণই শেষ পর্য্যন্ত ভুল।
শেষের লাইনটা নিয়ে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক একটা প্রতি-মন্তব্য -
স্নিগ্ধাদি, ভাষার গঠনই কি এমন নয় যে, সরলীকরণ ছাড়া কোনো বাক্যই আসলে গঠন সম্ভব নয়? প্রতিটা শব্দ, এবং বাক্য সিদ্ধান্তময়তায় আক্রান্ত এবং মানুষের জ্ঞানকাঠামো বরাবরি কি ডিডাকটিভ থিওরেম অনুসরণ করেনা? আমি এটাকে কোনো ত্রুটি বলছিনা। ভাষা এমনি। একটা ফ্যাক্ট।
এমনকি ফুকোর প্রোপজিশানেও অবরোহী প্যাটার্ন-ই ফুটে ওঠে। তার এইটি থেকে সরে যাবার চেষ্টার পরো।
আমার মনে হয় - সরলীকরণ ছাড়া মানুষের পক্ষে কথা বলাই সম্ভব না। চিন্তা তো নয়ই।
আমি আপনার এক্ষেত্রে শব্দটা ব্যবহার নিয়ে কোনো কথা বলছি না। শব্দের সামাজিক-রাজনীতিক ব্যবহার তার সেমিওটলজিক্যাল রূপের চেয়ে অনেক বেশি চোখে পড়ে এবং আপাত-গুরুত্বপূর্ণ। সেটা মেনেই বললাম।
জিফরান খালেদ - এই ডিডাকটিভ থিওরেম যদি আপনি আমাদের প্রাত্যহিক বা দৈনন্দিন জীবন বা ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলেন, তাহলে আমি একমত। কিন্তু জ্ঞানকাঠামোর অন্যান্য ক্ষেত্রে - যেমন ধরুন রিসার্চ বা অনুসন্ধান - আমরা কিন্তু অনেক সময়ই ইন্ডাকটিভলি আগাই। এটাও ঠিক যে প্রতিটি বাক্য বা শব্দই সিদ্ধান্তময়তায় আক্রান্ত সে অর্থে যে অর্থে আমরা বলে থাকি টোটাল অব্জেক্টিভিটি হয় না, আমরা আমাদের অবস্থান অনুযায়ী একটা (প্রায় বা পুরো) সিদ্ধান্তে এসেই চিন্তাটাকে কথায় প্রকাশ করি।
কিন্তু, যখন আমরা একদল/একশ্রেনী/একবর্ণ/একধর্ম ইত্যাদির ক্ষেত্রে কোন একটা ঢালাও ধারনা পোষণ করি, সেই সরলীকরণ আসলে শুধু ভুলই নয়, ভীষণভাবে মিসলিডিং ও। সেটা যদি এমনকি এও হয় যে - "নারী মাত্রেই নিগৃহীত"।
আমি জানি আপনার প্রশ্নটা আসলে অনেকটা ড়েটোরিক্যাল ছিলো, আপনি বক্তব্যের চাইতে আসলে সেম্যানটিকালি ব্যাপারটাকে দেখতে চাইছিলেন, কিন্তু আমি ব্যবহার করেছি সাধারণ অর্থে
এই কথাটা কি একটু ব্যাখ্যা করবেন? আমি ঠিক বুঝতে পারি নি। ফুকোর 'অবরোহী' প্যাটার্ণ কি?
ভাষার এই ব্যাপারটাতে আমার কোনো একটা লিখায় আরেকটু বিস্তৃত আলোচনা আছে। আমি আপনাকে লিঙ্ক খুঁজে দেব খানিক পরেই।
টোটাল অব্জেক্টিভিটির ধারণাটাই একটা লিঙ্গুয়্যাল ফ্যালাসি নয়? ভিটগেন্সটাইন আমাদের এক্ষেত্রে চুপ করে যেতে বলেছিলেন।
যাক, আমি যেটা বলতে চেয়েছি, সেটা হলো, ভাষার যে সামাজিক-রাজনীতিক ব্যবহার আছে, সেক্ষেত্রে আমরা কখনোই এর সেমান্টিক ভূমিকা খেয়ালে রাখি না। সম্ভবও না বোধকরি।
আমার বক্তব্য ছিল - সিদ্ধান্তমূলকতা ছাড়া জ্ঞানকাঠামোর সাথে ভাষার সম্পর্কটি একটি অসম্ভাবনায় রূপ নেয়। ভাষা মিনিং ছাড়া হয় কিভাবে? কখন? জ্ঞানকাঠামো যখন এর 'বোঝা' ও 'না-বোঝা' কম্পার্টমেন্টগুলোর একটাতে স্টেইটমেন্টকে ফ্যালে, তখনি না? মিনিং ব্যাপারটা কার তৈরি করা? ভাষা নাকি জ্ঞানকাঠামোর? আমার কেন জানি মনে হয় - এম্পিরিক্যাল অনুসন্ধানো কি একটা ডিডাকটিভ স্টেইট্মেন্ট এর জন্যে নয়? যাকে আমরা ইন্ডাক্টিভ বলছি, সেওতো সিদ্ধান্তমূলক বচনের মিলিত রূপ। এখানে সিদ্ধান্তমূলকতা আর ডিডাকশনকে এক করে দেখা হয়েছে।
ফুকোর অবরোহী প্যাটার্নের কথা বলা হয়নি। বলেছি - তিনি তা এড়াতে পারেননি।
ফুকো অব্জেকটিভ ট্রুথকে মেটিকুলাসলি পাশ কাঁটিয়েছেন। সাব্জেক্টিভিটির যে ডিস্কার্সিভ মিনিং এর প্রতি তাঁর ডিসকোর্স এর আলোচনা কেন্দ্রীভূত ছিলো, তাও তাঁর জ্ঞানকাঠামোকে সুনির্দিষ্ট ঐতিহাসিক প্রেক্ষিতে দেখারি ফল বলে মনে হয়। তর্কের মাধ্যমে জ্ঞান অন্বেষণ তাই তাঁর মেথোডলজি ছিলনা। তর্ককে তিনি সাব্জেকটিভ মিনিং এর দ্বন্দ হিশেবেই দেখতেন বলে মনে হয়। এইরূপ আরোহী বা ইন্ডাকটিভ প্যাটার্নের পরো তাকে সিদ্ধান্তমূলক কাঠামোবাদী দর্শনের আওতায় আলোচনা করা হয়, হয়েছে। তিনি ঘোষণা দিয়ে এর থেকে নিজেকে সচেতনভাবে ডিট্র্যাক্ট করার পরো।
এই কারণেই বলা ওটি।
আপনার ব্যবহারের ক্ষেত্র আমি বুঝেছি। তা প্রথম মন্তব্যেই উল্লেখ করেছি। এবং এও বলেছি - এহেন ব্যবহারি শেষতক প্রায়োগিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আপাত হলেও।
ভাষা ভিন্ন আলোচনার দাবী রাখে মনে হয়। ইমরুল ভাই থাকতে এই বিষয়ে কিছু আলোচনা হয়েছিল।
আমিও আসলে তাইই বোঝাতে চাচ্ছিলাম।
আমি ফূকোর 'অবরোহী' প্যাটার্ণ টা কি সেটাই জানতে চাচ্ছিলাম। তবে আপনার মন্তব্য পড়ে বুঝলাম - ডিডাক্টিভ ।
অবশ্যই। মার্ক্স বা ফূকো - যদিও শেষপর্য্যন্ত ফূকো মার্ক্সিজমকে যদ্দূর জানি অনেকাংশে পরিত্যাগই করেছিলেন - ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে প্রচন্ড গুরুত্ব দিয়েছেন।
আসলে 'জ্ঞান' ই তো ফূকোর কাছে সাব্জেক্টিভ ছিলো। কাজেই জ্ঞান অর্জনের চাইতে 'যে ভাবে' আমরা জ্ঞান অর্জন করে থাকি, বা 'যা কে' আমরা জ্ঞান বলে স্বীকৃতি দেই - এসব নিয়ে অর্থাৎ 'মেথোডলজি' নিয়েই তার ছিলো প্রধান আগ্রহ। অন্তঃত আমি এভাবেই বুঝেছি, আমার ভুলও হতে পারে।
লিঙ্কটা পারলে দেবেন অবশ্যই, আগ্রহ রইলো পড়ার।
হাহাহা...
দিদি, ফুকোর অবরোহী পদ্ধতির কথা বলিনি তো!
বলেছি তাঁর আরোহী পদ্ধতির পরো তাঁর সিদ্ধান্ত অবরোহী পদ্ধতিগত মাত্রায় এসে ঠেঁকে। কারটা যে ঠেকে না, খোদা মালুম।
এই-ই।
আমার অহেতুক প্যাচাল শুনলেন বলে ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।
পড়ালেখার বিকল্প নাই ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
বলার আছে অনেক কিছু, তবে সময় বেশি নাই
বাসে সংরক্ষিত সীটের দরকার আছে - অন্তত আমার হিসেবে। দেশের কথা জানি না, কিন্তু বাসে শতকরা পঞ্চাশ জনের মত এমন বীর পুঙ্গব থাকেন, যারা ছলে বলে কৌশলে একটু ছুঁয়ে দিতে চান - এমনটা আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই দেখা। সে তুলনায় বিরক্তিকর লাগে যখন ব্যাংকে টেলিফোন বিল দেওয়ার সময় কেউ "মহিলা" হিসেবে লাইনে না ঢুকেই বিল দেওয়ার চেষ্টা করেন।
নারীবাদী ট্যাগিং এ আমার বিরাট আপত্তি। নারী হোক পুরুষ হোক সে মানুষ। তাই নারীর প্রতি আলাদা সম্মান নয়, বরং একজন মানুষকে তাঁর যোগ্য সম্মান দেওয়ার ব্যাপারেই আমি আগ্রহী।
বিপ্রদা, আপনি খুব সম্ভবত একটু উত্তেজিত রিপোর্টটা পড়ে, তবে একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখবেন। আমার মনে হয় স্বীকার করবেন যে, আসলেই নারীরা অন্তত আমাদের দেশে অনেক বেশি নিগৃহীত - সংখ্যাটা আশংকাজনক।
প্রান্তিক পর্যায়ের নারীদের উপর দমন পীড়ন নিয়ে হয়ত আমরা তাও ভাবি, কিন্তু মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্তের ঘরে - আমরা কয়জন ভাবি আমাদের পরিবারে নারীদের অবস্থান নিয়ে ? কতগুলি পরিবারে তাঁদের যোগ্য সম্মান দেওয়া হয় ? আমি এমন বহু ধনী পরিবারের কথা জানি যেখানে তারা মেয়েকে বেশি পড়াশোনা শেখাতে আগ্রহী না। এমন অনেক শিক্ষিত বিগ-শটকেই চিনি, যারা বিয়ের জন্য মেয়ে খোঁজেন কম শিক্ষিত কিংবা অপেক্ষাকৃত খারাপ ছাত্রী , কারণ "যাতে মুখে মুখে তর্ক না করে"।
এরকম আরো অনেক কথাই বলার আছে - যা বলতে গেলে আসলে রীতিমত একটা পোস্টই হয়ে যাবে। মোদ্দা কথা এই, আসলেই নারীরা অনেক বেশি নিগৃহীত।
p.s. অনেক দিন পর আপনাকে দেখলাম বিপ্রদা ! কেমন আছেন ? ব্যস্ত নাকি ?
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
নারীরা আর কি চায় বুঝলাম না। সবজান্তা সাব নারীর নিগ্রহটা দেখলেন (নিজের নিগ্রহটা ভবিষ্যতের জন্য তোলা রইলো মনে হয়।) আমার দৃষ্টিকোণ থেকে যখন একজন নারীকে নারীবাদের আওতায় ফেলে দেখি, তখন দেখতে পাই সে এতটাই সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে, যেখানে একজন পুরুষের বলার কিছু নাই। আপাত দৃষ্টিতে নারী নিগ্রহের ব্যাপারটি খুবই জোর গলায় প্রচার হচ্ছে। তাই আমরাও দেখছি তাদের করুণ হাল।
ওই যে ব্যাঙ্কে বাসে স্টেশনে যা দেখেন সেখানেও তারা কিছুটা বেশিই সুবিধা পাচ্ছে। কিন্তু তাহারা স্বীকার করেন না। কর্মক্ষেত্রে কোথায় নারীর অবস্থান নেই? আমাদের বাংলাদেশেই তো নারীকে দেখেছি রিকশা চালাতে। অর্থাৎ তাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। (যদিও নিতান্তই দায়ে পড়ে মহিলাটি রিকশা চালাতে বাধ্য হয়েছেন।) সব পেশাতেই এখন নারীর অবস্থান সুদৃঢ়। তবে তার কাজটি যদি কোনো পুরুষ সহকর্মী করে দিতে পারতেন তাহলে হয়তো তিনি আরো খুশি হতেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের অধিকার রক্ষা হচ্ছে কথাটি স্বীকার করলেই প্রতিযোগীতার মুখে পড়তে হবে। কিন্তু সে পথে যাবেন না। বাড়তি সুবিধাটুকু পেয়ে গেলে আর কষ্টটুকু করতে হয় না। তার চেয়ে ভালো বলা যায় অবলা সেজে থাকলে ঝামেলা কম। যদিও তাদের নাকের পানি চোখের পানির কারণেই আমাদের দেশেও পারিবারিক আদালতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষায়-চাকরিতে তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। এমন কি বিবাহ ক্ষেত্রে যখন তখন স্বামীটিকে তালাক দিয়ে নির্ঝঞ্ঝাট হয়ে যাওয়ার মত বিশাল ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা সব সুযোগ পেয়েও আর কী চান হয়তো তারা নিজেরাই জানেন না। কোথায় তাদেরকে বাধা দেওয়া হচ্ছে? তা একটিমাত্র জায়গায়। আর তা হলো (তসলিমার ভাষায়) একজন নারী কেন চারজন পুরুষকে বিয়ে করতে পারবে না? আমার দৃষ্টিতে নারী অধিকারে এই সংযোজনটুকুই বাকী আছে। আশা করি অচিরেই তা বাস্তবায়ন হবে। কারণ, ডিএনএ টেস্ট জানিয়ে দেবে যে, সন্তানটি চার স্বামীর কোন জনের!
তা ছাড়া নারীর অধিকার কোনদিক দিয়ে ক্ষুন্ন হচ্ছে আমার চোখে পড়ে না। তবে আমার মনে হয় নারীরা এখন বেশ আরাম আয়েশেই কাল কাটাচ্ছে। সুখে থাকলে ভূতে কিলায় বলে অযথা গলাবাজি করছেন হয়তো।
বছর কয়েক আগে একটি পত্রিকায় পড়েছিলাম যে, ইউরোপের মেয়েরা ফের ঘরে ফিরে আসতে চাচ্ছে। চাকরি জীবন তাদের কাছে আর ভালো লাগে না। দুর্বিসহ মনে হয়। কাজেই তিনিই কনের মাসি আবার তিনিই বরের পিসি। কী আর করা! কানে তো আর তুলো গুঁজে রাখা সম্ভব না!
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
আমি আপনার মন্তব্যের এই অংশ পড়ে স্তম্ভিত। আপনি শুধু নারীর ওপর সংঘটিত নির্যাতনকেই পাশ কাটিয়ে গেলেন না, এর নিরসনের বিচারিক প্রক্রিয়াকেও অবজ্ঞা করলেন।
এই বাধাদানের সুমহান দায়িত্ব কে কাঁধে তুলে নিয়েছে একটু পরিষ্কার করলে ভালো হয়।
এ অংশটি অশালীন মনে হয়েছে আমার কাছে। দুঃখিত।
কয় বছর আগে পড়েছিলেন? ইয়োরোপে মেয়েরা আরো বেশি পরিবারবিমুখ হয়ে পড়েছে। জার্মান ভাষায় যাকে বলা হয় কারিয়েরেফ্রাউ, তাদের উপস্থিতি ক্রমশ জোরালো হয়ে চোখে পড়ছে সমাজে।
সবশেষে বলি, আমি নিজে ব্যক্তিগত জীবনে, ভাবনা আর প্রয়োগে প্রবলভাবে পুরুষতান্ত্রিক। আমি নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে সবকিছু দেখি আর মাপি। কিন্তু অন্যকে তার জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখতে আর মাপতে দেয়ার ব্যাপারে আমার মধ্যে কোন সংস্কার নেই। আপনার লেখা পড়ে মনে হলো, সে সংস্কার আপনার মধ্যে আছে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
@ জুলিয়ান সিদ্দিকী
হিমু প্রায় সবটাই বলে দিয়েছেন। তবু নিজের থেকে আরও কিছু লেখার তাগাদা বোধ করছি।
নারীজাতির জন্য রীতিমতো মর্যাদাহানিকর এই মন্তব্যটি মেনে নেয়া যায় না।
এটা কি দয়াদাক্ষিণ্যের ব্যাপার? নাকি মানুষ হিসেবে তাদের প্রাপ্য অধিকার?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
হিমুর সাথে সর্বাংশে একমত!!
জুলিয়ান সিদ্দিকী - মেয়েদের 'ঘরে ফিরে আসা' মানেটা ঠিক কি? এটার মানে কি এই যে, আপনি মনে করেন মেয়েদের স্থান ঘরে?
আপনি কি মনে করেন যে মেয়েটাকে তার স্বামী যৌতুকের জন্য, অথবা নিছক ইচ্ছে হলো বলে পরিত্যাগ করে চলে যায়, আর সে মেয়েটা (ততদিনে বাচ্চা তো একটা হয়েই যায়!) বাচ্চা নিয়ে হটাৎ করে জীবনযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য হয়, সেও খুব আয়েশে আছে?
ভিড়ের মধ্যে যে মেয়েটাকে অশ্লীল স্পর্শের মোকাবিলা করতে হয়, সে প্রতিবাদ করলেও কি সেটা অযথা গলাবাজি করছে?
এসিড নিক্ষেপ, বধূ নির্যাতন, ধর্ষণ এবং এরকম আরো অগণিত সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করে আইন বা সমাজনীতি বদলানোও কি সুখে থাকতে ভূতে কিলানো সিন্ড্রোম ??
কী বলব?
আলোচনা কোথা থেকে কোথায় চলে গেল!
১. দৃষ্টভঙ্গি, সেটা আসে পারিবারিক শিক্ষা থেকে।
২. সামাজিকতা, সেটা আসে লোকলজ্জার ভয়ে।
৩. পেট, বিধাতা দিয়েছেন।
৪. ইচ্ছা-অনিচ্ছা, পুরুষের হাতে।
৫. আশা নিরাশা, থাকতে নেই।
আমাদের দেশের নারীরা অনেক ক্ষেত্রেই নিগৃহীত-একথা কোনভাবেই মিথ্যা নয়। কিন্তু এর প্রধান কারনটা কি? শুধুমাত্র পুরুষদের আগ্রাসন? আমি মোটেও তা বিশ্বাস করি না। এর বিভিন্ন কারন আছে-
১। সচেতনতার অভাবে ভুল করা...(সেই ভুলটা অনেক ধরনের)
২। নারী অধিকারের নামে বাড়তি সুবিধা আদায়ের চেষ্টা। এই ফ্যাক্টরটা নারী অধিকার আদায়ের নামে একটি বিরক্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে...শুধু ব্যাংকের লাইনে নয়... অনেক জায়গায়।
৩। নারীরা শুধুমাত্র নিগৃহীতই হচ্ছেন সেটা নিশ্চয়ই সত্য নয়। নারী অধিকার আদায়ের নামে পজেটিভ দিকগুলোকে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করা হয় সব সময়... । নারীদের জন্য আলাদা পাতাগুলো পড়লে তাই মনে হয়, কোন পজেটিভ খবর থাকে না। নারীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারলে সেটা পুরুষের আগ্রাসন, আর নারীরা ভালো কিছু করলে সেটা তার নিজের চেষ্টা!
স্নিগ্ধা আপু\\\'র এই কথাটাই ছিল আমার এই লেখার মূখ্য উদ্দেশ্য। অবশ্য স্নিগ্ধা আপু এবং জিফরান ভাইয়ের কিছু কথা নেটওয়ার্কের উপর দিয়ে গেছে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ওয়েব ও ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
আপনার মনমেজাজ যখন ভালো হবে, তখন একই বিষয় নিয়ে আরেকটি লেখা আশা করছি। হয়তো দুটোর মধ্যে পার্থক্যটা ব্যাপক হবে না, কিন্তু অ্যাপ্রোচটা ভিন্ন হবে।
কিছু কিছু ব্যাপারে আপনার সাথে একমত। আর যেগুলো নিয়ে দ্বিমত- সেগুলো অলরেডি স্নিগ্ধা আপু বলে দিয়েছেন।
সংবাদপত্রের নারীদের পাতা নারী আন্দোলনের একটি কার্যকর প্লাটফর্ম হতে পারতো। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ পাতাগুলো ব্যবহৃত হয় নারীকে আরো 'নারী' বানানোর ক্ষেত্রে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
গৌতমদা,
আমার এই জায়গাটাতেই আপত্তি। যারা নারী অধিকার আদায়ে নিজেদের ভূমিকার কথা ভেবে গর্ববোধ করেন তারা সমতা সৃষ্টি নয় বরং নারীকে নারী বানাতেই ব্যাস্ত। গত বছর এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানে কথা প্রসঙ্গে সাহিত্যিক নাসরিন জাহান বলেছিলেন নারী পাতা নিয়ে তার অভিমত। তাকেও লেখালিখির শুরুতে বিভিন্ন পত্রিকায় নারীদের জন্য সংরক্ষিত আলাদা পাতায় লেখার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো। তিনি তা প্রত্যাখান করেছিলেন আত্মবিশ্বাসের সাথে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ওয়েব ও ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
স্বল্পবুদ্ধির মানুষ এত্তকিছু একসাথে চিন্তা করে দেখি নি। আসলে নারীবাদী বলে অনেক কিছু একসাথে নিয়ে আসা হয়েছে। আসল উদ্দেশ্য ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। আমার প্রশ্ন নারীবাদী কি?
লেখকের অভিব্যাক্তি বেশ খ্যাপাটে মনে হচ্ছে। আপনি হয়তোবা পুরুষদের ওই ধরনগুলোর মধ্যে পড়েন না।
কোনো এক জায়গায় অনেক মানুষের মধ্যে কোনো নারী উচ্চস্বরে কথা বলে উঠলে তাকে কিভাবে কোনঠাসা করা হয় দেখেছেন? সবাই কিভাবে চেঁচিয়ে ওঠে লক্ষ্য করেছেন?
বাসে দাঁড়িয়ে যেতে চাইলেও শুধু নারী বলেই একজনকে নেয়া হয় না, আপনার বেলায় যদি এমন হতো, শুধু পুরুষ বলে নেয়া হবে না, আপনার ভেতর বিষয়টি কী প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতো?
প্রতিটি পদে পদে পুরুষতান্ত্রিক অবিচারের শিকার নারীরা, এখানে শুধু একজন পুরুষ বা একজন নারী এভাবে বিচার করলে ভুল হতে পারে। কারণ, সবাই ওই তন্ত্রের শৃংখলের পুতুল। "অমুক পুরুষ বলেই এমন কাজটা করতে পারলো" বা "নারী হয়ে নারীর বিরুদ্ধে এমন কাজ করলো!" -এখানে দুজনই তার সমাজব্যবস্থার ক্রীড়নক। অধিকাংশ নারী-পুরুষ না বুঝেই পুরুষন্ত্রের গোলামী করে। জুলিয়ান সিদ্দিকীর বেলায়ও আমার এমনই মনে হয়েছে। কারণ, ব্যক্তিগতভাবে আপনি যদি নারীকে মানুষ বলে না ভাবতে শিখেন, শুধু শুধু অনেকগুলো অহেতুক বিতর্কের অবতারণা করবেন এবং হাস্যকর কতগুলো বিষয় উপস্থাপন করবেন।
একজন নারীর চোখে পুরুষদের একটা দিক ফুটে উঠলে এতটা মেজাজ খারাপ করার বোধহয় কিছুই নেই। কারণ, একজন নারীর কি অভিজ্ঞতা হচ্ছে, সামাজিক সবগুলো সুবিধাভোগী পুরুষ হয়ে তা বোঝা সত্যিই কঠিন।
খালিদ
যে লেখার পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্লগটি লেখা হয়েছে সেটা কি পড়েছেন? আমার মনে হয় লেখার মূল উদ্দেশ্য বুঝতে পারেননি। মন্তব্য, ব্লগ এবং ডেইলি স্টারের সেই লেখাটি পড়লেই বুঝতে পারবেন।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ওয়েব ও ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
জ্বি জনাব পড়েছি। আপনার লেখার মূল উদ্দেশ্যও বুঝতে পেরেছি। পত্রিকার নারী-পাতা যা হতে পারতো তা না হয়ে বিপথগামী হয়েছে এটাই তো আপনার মূল বক্তব্য?
মুজিব মেহেদী ভাই নারী-পাতার উদ্দেশ্য পরিস্কার করেছেন। সেখানে যদি একজন নারী তার আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করে, হয়তবা সেটা আপনার বিচারে বা নিরপেক্ষ বিচারে সবটুকু সত্য নাও হতে পারে, তবু তার অন্তর্নিহীত যন্ত্রনাটা ভীষণভাবেই সত্য, সে তীব্রতা আপনাকে সহ্য করতেই হবে। কারণ, স্বাধীনতাকামীদের প্রকাশ কখনই মাত্রা মেপে চলে না।
নটরডেম কলেজে আমাদের একদিন ক্লাস নিতে এসেছিলেন অসংস্কৃত, সভ্যতা-ভব্যতা বিবর্জিত একজন শিক্ষক, সুহেল আহমেদ ( তিনি নিজের নামটাকে এই বিকৃত ভাবেই উচ্চারণ করতেন। বাকি উচ্চারণের কথা বাদই দিলাম। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ডিবেটিং ক্লাবের টাকা নয় ছয়ের প্রমাণ পাওয়ার পর উনাকে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। )
যাই হোক, সেই সুহেল আহমেদ একদিন আমাদের ক্লাস নিতে এলেন ( আরেক কুখ্যাত শিক্ষক মুখতার আহমেদের পরিবর্তে )। সেদিন আমাদের বেগম রোকেয়ার প্রবন্ধ পড়ানোর কথা ছিলো। সুহেল সাহেব এসেই বই বাদ দিয়ে পড়লেন বেগম রোকেয়াকে নিয়ে। তার ভাষ্যমতে, বেগম রোকেয়ার যেহেতু নিজের সুখের সংসার ছিলো, তিনি চেয়েছেন যাতে অন্যের ঘর ভাঙ্গুক। আরো বলেছেন যে, আদতে নারী নির্যাতন বলে কিছুই নেই। এসবই ভদ্রলোকের ঘর ভাঙ্গার পায়তারা।
খুব স্বাভাবিকভাবেই ক্লাসের সবাই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি। কিন্তু কেন যেন আমার মুখটা তেতো হয়ে গিয়েছিলো। ভাবছিলাম কি পাষণ্ড এক জনের ক্লাস করলাম ! অধিকাংশ ছেলেই কিন্তু সুহেল আহমেদের বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করেছিলো - মাঝে দিয়ে আমি স্রোতের বিপরীতে বলে উপহাসের শিকার হয়েছিলাম।
নটরডেমের মত কলেজে যখন একজন শিক্ষক এমনটা মনে করেন, সারা দেশ কী এর থেকে খুব বাইরে ?
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
সবজান্তা,
আমি কিন্তু অস্বীকার করছি না। কিন্তু এর পাশাপাশি পজেটিভ কিছুও কিন্তু নেহায়েত কম নয়। আর আমি শুধু সেটুকু পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়াটাকে মানতে নারাজ। নারী সমাজ নারী নয় মানুষ হিসেবে নিজের অধিকার অর্জন করে নিক। নারীদের আলাদা পাতার মতো আমার মূল বক্তব্যটুকুও অনেকেই পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছেন।
সবশেষে একটা কথা বলতে চাই-নিচের ছবিটাই কি পুরুষ সমাজের সব চিত্র তুলে ধরেছে?
@সবজান্তা
একটু ঝামেলার মাঝে আছি। তাই নিয়মিত আসতে পারি না। তোমার কি খবর? তোমাদের ক্লাস শুরু হচ্ছে না শনিবার?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ওয়েব ও ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
হায় হায়! সোহেল স্যারের এইরকম মানসিকতা ছিল! ভাবতেই ঘেন্না লাগছে। তাঁর শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
প্রচলিত ধারায় সামাজিকীকৃত সংস্কারের কারণে নারীকে ঊনমানুষ হিসেবে গণ্য করবার যে প্রথা, তা নারীর স্বাভাবিক বিকাশকে রহিত করে দেয়, জীবনদৌড়ে তাকে পিছিয়ে দেয়, শারীরিক-মানসিকভাবে তার প্রতি নির্যাতনে ইন্ধন দেয়। এই বক্তব্যকে মেনে এ অবস্থার পরিবর্তনে যিনি সচেষ্ট তিনিই নারীবাদী। নারীবাদী হতে নারী হতে হয় না। এই ব্যবহারিক সংজ্ঞাদৃষ্টে আমি নিজে একজন নারীবাদী। কেউ কি হাসছেন? হাসলে জানান দিয়ে হাসেন প্লিজ।
যে প্রথার কথা বলা হলো, সেটার নাম পুরুষতন্ত্র/পিতৃতন্ত্র। আর পুরুষতন্ত্র বা পিতৃতন্ত্রের চর্চা কেবল পুরুষই করেন না, করেন নারীদের একাংশও। সুতরাং ঢালাও কথার সুযোগ এখানে কম। আমরা সেটা বলতেও চাই না।
পুরুষ হয়েও পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমার যে লড়াই, সেটা সচেতনতাজাত, কিন্তু লিঙ্গগতভাবে আমি যেহেতু পুরুষ, কাজেই আমার বলা-করার মধ্যেও অনেক সময়ই পুরুষতান্ত্রিক আচরণের প্রকাশ ঘটে যায়। এই পোস্টেও সেরকম প্রকাশ ঘটেছে। আমি এ ব্যাপারে সতর্ক। কাজেই ভিতরের পশুটার জেগে ওঠাকে প্রতিহত করবার দায়টাও কাঁধে রাখতে হয়, পূর্বপুরুষের পাপের প্রায়শ্চিত্ত্যার্থে।
সচেতন সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ নারীকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেবার যে রীতি এখন প্রচলিত আছে, সেটাকে ইংরেজিতে বলা হয় পজিটিভ ডিসক্রিমিনেশন বা অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন। হাজার বছর ধরে আমরা পুরুষরা নারীদের যে বঞ্চনা করে এসেছি, এটা তার জন্যে নিয়মিত ক্ষতিপূরণ দিয়ে যাওয়া। যাকে আমরা নানা কৌশলে অতটা পিছে ফেলে এসেছি, নিজে একটু ধীরে হেঁটে কিংবা পিছেপড়া জনকে হাঁটায় সহযোগিতা দিয়ে এক কাতারে এসে না দাঁড়াতে দেয়া পর্যন্ত দৌড় প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া সঙ্গত নয়। এ অবস্থা চিরকাল চলুক তা নারীরা চান না, নারীবাদীরাও না। কিন্তু ততদিন চলা জরুরি যতদিন না এক সমতলে নারী-পুরুষ উভয়ই দাঁড়াতে পারছে।
সংবাদপত্রের নারীদের পাতাগুলোর যাত্রা শুরু হয়েছিল পড়ালেখাসহ নানাভাবে পিছিয়ে পড়া নারীদের চিন্তা ও সৃজনশীলতা চর্চার সুযোগ করে দেবার জন্য। কারণ নারীদের লেখা মূল সাময়িকীতে পত্রস্থ হবার অবকাশ খুব কমই পেয়েছে বহুদিন। এক্ষেত্রে অবস্থা এখন বদলেছে অনেক। এখন নারীপাতার আর প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না আমার। অনেক নারীই এখন লেখার গুণেমানে ও জানাবোঝায় পুরুষের চেয়ে কোনো অংশে কম যান না। তাছাড়া আমাদের হাতে পরীক্ষানিরীক্ষালব্ধ কিছু উদাহরণও জমা হয়েছে যে, ক্রমশ মূল সাময়িকীতে পত্রস্থ হবার যোগ্যতা যাঁরা অর্জন করে উঠতে পারেন নি, তাঁরা লেখক হিসেবেও উঠে দাঁড়াতে পারেন নি। এটা হলো সৃজনশীল লেখার প্রসঙ্গ, কিন্তু আপামর শিক্ষিত নারীর মনের কথা প্রকাশে সংবাদপত্রের নারীপাতা ছাড়া এখনো বিকল্প আছে কি? নেই। এই বিবেচনায় ওই পাতা থেকে যাওয়ারও দরকার আছে বৈকি। কারণ ওই একটিই পরিচিত জায়গা, যেদিকে তাকালে পুরুষদের ন্যাক্কারজনক মনোবৃত্তির সাথে নিয়মিত দেখাসাক্ষাতের একটা সুযোগ ঘটে, সুযোগ ঘটে নারীদের ভিন্নমুখী অগ্রগতির দেখবারও।
................................................................
জেতা মৎস্য গিলে বকে মনুষ্য খায় বাঘ-ভালুকে
রহস্য বোঝে না লোকে কেবল বলে জয়।
(দীন দ্বিজদাস)
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
মুজিব ভাই,
আপনিও বোধহয় এড়িয়ে গেলেন মূল প্রসঙ্গটি। নারীদের জন্য আলাদা পাতাগুলো কেমন ভূমিকা রাখছে নারীদের সৃজনশীলতা বিকাশে? পুরুষ জাতি বদমায়েশ...শুধুমাত্র এটা শিখানোর মাধ্যমেই কি নারীজাতির সৃজনশীলতার বিকাশ সম্ভব?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
http://biprodhar.com
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
বাহ্, চমতকার এই বিশ্লেষনের সাথে শুধু এটুকুই যোগ করতে চাই , আমার খুব প্রিয় একজন বন্ধু আছেন, যিনি লৈঙ্গিক পরিচয়ে পুরুষ এবং আত্মপরিচয়ে নারীবাদী, সেটি, অবশ্যই , হাসার নয়, বরং মুগ্ধ হবার মতো । দ্বিতীয় পুং নারীবাদী - আপনার খোঁজ পেয়ে সম্মানিত বোধ করালেন। আপনি আমার অভিবাদন গ্রহণ করুন।
জীবন জীবন্ত হোক, তুচ্ছ অমরতা
এই লেখাটা নিয়ে ডেইলি স্টারে একটা মতামত পাঠিয়েছিলাম...আজ ছাপা হয়েছে...
ডেইলি স্টার লিংক
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
http://biprodhar.com
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
নতুন মন্তব্য করুন