বিশ্বজুড়ে বর্তমানে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস হিসেবে যেসব প্রযুক্তির নাম শুনছেন তার মাঝে উল্লেখযোগ্য একটি হলো ফুয়েল সেল। ফুয়েল সেল হচ্ছে এমন একটি তড়িৎ রাসায়নিক কোষ যেখানে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের বিক্রিয়ায় সরাসরি ডিসি কারেন্ট হয় এবং বাই প্রোডাক্ট হিসেবে পানি এবং তাপ উৎপন্ন হয়।
অন্যান্য সাধারন তড়িৎ রাসায়নিক কোষের মতো ফুয়েল সেলেও অন্যোড এবং ক্যাথোডের মাঝে ইলেক্ট্রোলাইট থাকে।এর গঠন অনেকটা স্যান্ডউইচের মতো। অন্যোডে হাইড্রোজেন ভেঙ্গে তৈরি হয় প্রোটন(H+) এবং ইলেকট্রন(e-)। প্রোটনটি ইলেক্ট্রোলাইটের মধ্য দিয়ে ক্যাথোডে গিয়ে অক্সিজেনের সাথে মিশে তৈরি করে পানি। আর এই ইলেকট্রনের চলাফেরায় তৈরি হয় বিদ্যুত।
ছবিঃ ফুয়েল সেলের অন্তর্নিহিত প্রযুক্তি
অ্যানোডঃ 2H2=4H + 4e-
ক্যাথোডঃ O2+4H-+4e-=2H2O
নীট বিক্রিয়াঃ 2H2+O2=2H2O
একটি সাধারন ফুয়েল সেলে উৎপাদিত বিভব শক্তির পরিমান ০.৭ ভোল্ট।
১৮৩৯ সালে সৌখিন ব্রিটিশ পদার্থবিদ উইলিয়াম গ্রোভ সবর্প্রথম ফুয়েল সেল তৈরি করেন। এই আবিষ্কারের প্রায় ১২০ বছর নাসা ১৯৬০ সালে মহাকাশযানে বিদ্যুত ও পানির উৎস হিসেবে ফুয়েল সেলের ব্যবহার শুরু করে। মজার ব্যাপার হলো, ফুয়েল সেলে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যে পানি উৎপন্ন হয় তা নভোচারীদের পানির তৃষ্ণা মেটায়।
বহুদিন আগে আবিষ্কৃত হলেও প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় ফুয়েল সেল এতোটা জনপ্রিয় হয়নি। তবে ক্রমবধর্মান জ্বালানী সমস্যার কারনে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের দৃষ্টি আবারও ফুয়েল সেলের দিকেই পড়েছে।
ফুয়েল সেলে ওজন কিছুটা কম এবং পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় আটোমোবাইল শিল্পে ফুয়েল সেলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ইতোমধ্যে ফোর্ড, ভলভো, টয়োটা সহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি অটোমোবাইল কোম্পানি ফুয়েল সেল চালিত গাড়ির প্রটোটাইপ তৈরি করেছে। এছাড়াও অনেক গবেষক ফুয়েল সেল চালিত বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির কথা ভাবছেন।
[লেখাটি কিছুদিন আগে আমাদের প্রযুক্তি ফোরামে প্রকাশ করেছিলাম]
মন্তব্য
বেশ লাগল কিন্তু।
ধন্যবাদ অনিকেত...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
নতুন মন্তব্য করুন