অসম্ভব মন খারাপ করে আজ নেটে বসেছি।
আজ থেকে পাঁচ বছর আগে হাতে ছিল দুই মেগাপিক্সেলের একটি কোডাক ক্যামেরা। শখ করেই ছবি তুলতাম। প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারদের মনে হতো অনেক দূরের মানুষ। যারা অন্যরকম, আমার মতো না। সত্যি কথা হলো, আমার ফটোগ্রাফার হওয়ার কথা ছিল না।
সে ক্যামেরায় তোলা ছবি দেখে এক ভদ্রলোক মন্তব্য করেছিলেন, আপনার একটি এসএলআর ক্যামেরা দরকার।
মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আমি। লাখ টাকা দিয়ে ক্যামেরা কেনার স্বপ্নও ছিল বিলাসিতার বিষয়। সেই আমি ডিজিটাল এসএলআর কেনার সাহস করলাম। টাকা কিভাবে যোগার হয়েছিল আজও ভেবে অবাক হই। কেবল এইটুকু বলি, ওই ভদ্রলোকের উৎসাহ না পেলে আমি ফটোগ্রাফি ক্যারিয়ারের বাজী ধরতাম না। কখনো সাহস করতাম না একটি দৈনিক পত্রিকায় ফটোগ্রাফি বিষয়ে নিয়মিত আর্টিকল লেখার।
আমার উৎসাহ দেখে তিনি আপন করে নিয়েছিলেন আমাকে। কখনো কোথাও আলাপ করিয়ে দিলে বলতেন আমার বন্ধু, ফটোগ্রাফার। তার ছেলেটাকে দেখতাম বাবার মতোই ছবি তুলছে, ডিজাইন করছে। অথচ এ বয়সী ছেলেদের পিসিতে বসে গেম খেলার কথা। ডিসেম্বরে সে বাবার পিসিতে বসেই একটি ক্যালেন্ডার ডিজাইনের কাজে হাত দেয়। এডোবি ইলাস্ট্রেটর আমার কাছে ভীতিকর এক সফটওয়্যার, অথচ নয় বছরের জারিফ অনায়াসে ইলাস্ট্রেটরের বিভিন্ন টুল ব্যবহার করতো। যে ডিজাইন সে দাঁড় করিয়েছিল সেটি দেখেই বোঝা যেত ছোট বয়সী কারো ডিজাইন, কিন্তু তার আগ্রহের কোনো কমতি ছিল না। ক্যালেন্ডারের কাজ শেষ হলে দেখা গেল ডিজাইন টুল নিয়ে তৈরি করছে নানা ধরনের গাড়ীর ডিজাইন।
সে ছেলেটি এখন এমন একটি অসুখে আক্রান্ত, ডাক্তারী ভাষায় যাকে বলা হচ্ছে অ্যাপ্লাস্টিক অ্যনিমিয়া। বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন করতে হবে যদি আমরা ছেলেটিকে আবার সুস্থ দেখতে চাই। এ মুহূর্তে জারিফকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ইনডিয়ায়। ভর্তি করা হয়েছে ভেলোবের একটি হসপিটালে। সেখান থেকে বলা হয়েছে চিকিৎসার জন্য দরকার প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
বাংলাদেশে সাধারণ জীবনযাপন করেন এমন কোনো পরিবারের পক্ষে কি সম্ভব এতা টাকার ব্যবস্থা করা? আমি জানি না।
আমার নিজের ক্ষমতা অনেক সীমীত। আমি জানি যারা নিয়মিত বস্নগিং করেন, তারাও আমার মতোই সাধারণ, সীমীত সাধ্যের মানুষ। আমরা কেবল পারি নিজেদের পরিচিতদের মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে দিতে। এর ফলে হয়তো এমন কারো কাছে এ বার্তটি পৌছাবে যার মন আর সাধ্য দুটিই আছে।
কলম্বাসের আমলে বা তারও আগে জাহাজ ডুবে অজানা দ্বীপে আশ্রয় নেয়া মানুষ বোতলে বার্তা লিখে ছিপি বন্ধ করে ভাসিয়ে দিতো সমুদ্রে- যদি কোনো নাবিকের চেখে পড়ে। আজ আমার নিজেকে তেমন একজন বলে মনে হচ্ছে।
মন্তব্য
গতকাল থেকে এইরকম একটি বিষয় আমাকেও কাঁদাচ্ছিলো। আমাদের এক বন্ধুর ছেলে লিওকোমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মাস তিনেক ধরে পিজিতে। দিনে দশ হাজার করে লাগে চিকিৎসা খরচ। গতকাল ফোন করে বলছিলো- যা ছিলো সব তো শেষ-এখন কি করবো? আমি তাকে দিতে পারিনি কোন আশ্বাস।
---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
নির্বাক পাঠক হয়ে পড়লাম! দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়া আর কী করতে পারলাম!
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
আমাদের অসহায়ত্ব আরেকবার টের পেলাম। জারিফের প্রতি শুভকামনা রইলো।
কীর্তিনাশা
সচল কতৃর্পক্ষের প্রতি পোস্টটি স্টিকি করার অনুরোধ জানাই...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
যে ভুগে সে অভাগা। আর কিছু করতে না পারার কষ্ট নিয়ে যে অসহায় হয়ে তাকে দেখে যায়, সে হচ্ছে দুর্ভাগা। অভাগার জন্য দুর্ভাগারাই কষ্ট পায় !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সহপাঠী হৃদয়ের বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার জন্য পুরো ভার্সিটি জুড়ে বছর কয় আগে বড়সড়ো ক্যাম্পেইন চালানো হয়েছিলো... সত্যি, অনেক টাকার ব্যাপার। পরে অবশ্য জোগাড় হয়েছিলো। সে এখন সুস্থ আছে বেশ, ক্লাস করছে। মন খারাপ করবেন না; আমরা আশাবাদী হতে পারি।
এখন মনে পড়লো হৃদয়ের জন্য পত্রিকায় কিছু লিখতে জাফর ইকবাল স্যারকে কত অনুরোধ আমাদের! রাখেননি তিনি। হয়তো যৌক্তিক কারণ ছিলো তাঁর কিন্তু আমাদের সেই অভিমান আজও কাটেনি...
যে কোন ভাবে যুক্ত হবার সুযোগ থাকলে জানাবেন। আমি আছি।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
ডিজাইনার হতে চেয়েছিল, এখন কি সে চায় না? নিশ্চয় চায়। হাল ছাড়ার কিছু নাই এখনও...
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
খুব মন খারাপ হলো। আমাকে আপনার ফোন নম্বরটা একটু দেন। আপনার সাথে কথা বলতে চাই।
সকাল বেলায় মন খারাপ হয়ে গেল।ঈশ্বর কেন যে ভাল ভাল মানুষগুলোকে বেছে নেন এমন অসুখদেন আজও বুঝিনা।
রবিন
নতুন মন্তব্য করুন