প্রায়শই
(নামতা'কে)
___________________________
শৈশবের প্রিয় সাইকেলের ট্রেইনিং হুইলের মতো
তোমার দুই বেণী,
চোখে স্বাভাবিক কাঁজল; পরিপাটি চুলের ভাঁজে
এলোমেলো রঙিন ক্লিপ
গরমে গলে যাওয়া ঘন চকলেটের মতো
অসময়ের আবদার; অথবা
গভীর রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে আধো আধো বোলে
'বাবা; পানি খাব।'
গ্লাস ভরা হাতে দেখি গভীর ঘুমে, এই স্বচ্ছ
জলের মতো
তোমার গোলাপি ঠোঁট;
তুমি কেমনে স্বাধীন হইবা?
-----------------------------------
তুমি কেমনে স্বাধীন হইবা?
তোমার জানালায় অন্য জানালা; সিঁড়িতে অন্ধকার।
তোমার ব্যালকনি কাঁটাবনের খাঁচা,
তোমার অর্ধেক চাঁদ, বাকি অর্ধেক পাশের বাড়ির
চশমার নেগেটিভ পাওয়ারে
তুমি কেমনে পজিটিভ হইবা? তুমি কেমনে স্বাধীন হইবা?
তোমার থালায় কোমল রসায়ন; কামড়ে ফরমালিন- ঠিক তোমার
খুব গোপন পাপগুলোর মতো; গন্ধহীন;
বরফ
----------------
এইযে টায়ারের ভীড় ঠেলে তোমার এগিয়ে যাওয়া
হোন্ডায় সদ্য ভরা অয়েলের ঘ্রানে পোড়ে পড়ন্ত দুপুর; হেলমেটের
কার্নিশ ঠেলে বের হয়ে থাকা অবাধ্য চুল
উড়ছিল বুঝি? চুল ? স্বপ্ন ? অথবা তোমার এই চলে যাওয়া
পথের বাঁকে কোন নার্সারীর ফুল?
অবশ্য ভাবনার এসব স্টপেজে তোমার বিরতি কই?
আমিতো কস্মিনকালে ভাবি নাই, আমাদের উল্টানো পথে
বিকেলের রঙ ভিন্ন হবে।
উইক পয়েন্ট
------------------
শুরুতে তুমি আপনিতেই ছিলে, আমি
স্রেফ তুমি দিয়েই শুরু করেছিলাম;
তারপর বাকি আট-দশটা সম্পর্কের মতো
প্রিয় গান, প্রিয় ফুল, টুকে নেয়া সেলফোন নাম্বার
আর বাড়িতে কটা মাথা তা গুনে নেয়া -
মানে স্বাভাবিক আলাপচারিতা ;
এরপর একদিন হঠাৎ করে তুমি জানতে চাইলেঃ
"আচ্ছা, তোমার ভালোলাগা গুলো কি কি?"
আমি ঠিক বুঝিনি, তাই তুমি বল্লে, ইয়ে.. মানে
তোমার উইক পয়েন্ট ..
অপেক্ষা
-----------
জানালা দিয়ে যতটা দেখা যায় -
ড্রেসিং টেবিলের পাশে রাখা
একপাতা টিপের মতো
রাতের আকাশ জোড়া কিছু নক্ষত্র;
আর একটু দূরে তোমার জানালা আড়াল করে
মুঠি মুঠি শিমুল ফুল; তার ফাঁক গলে
জানালার পর্দায় নকশা করা প্রজাপতি -
অপেক্ষায় থাকি;
কখন দমকা হাওয়া এসে উড়িয়ে দেবে আড়াল, দেখা যাবে
তোমার কাঁধ বেয়ে কোমরে নামা
একটা পূর্নদৈঘ্যের রাত্রি;
ফাটল
-------------
"as the sky contained my garden,
I opened my door"
রোদ নেমে আসে; বিকেলের লিলির পাঁপড়িতে
বাতাস দোলে
ব্যালকনিতে বিয়ারের ক্যান,
ব্যালকনিতে রক্তের দাগ,
ক্যানের অগ্রভাগে ঢুকে যাওয়া আঙ্গুল টনটন করে ব্যাথায়
একটা মুখ ভাবি -
আমার শেভ করা গালে একটা হাত; গাল ঘসে ঘসে
চিবুকে এসে থামে
ক্যানভাসের বাড়িয়ে দেয়া হাতে ফুঁটে ওঠে মিলিত অবয়ব
স্তনের ভাঁজে তিল
মূলতঃ আমি একটা আকাশের কথা বলছি
--------------------------------------------
চকচকে মেঝেতে চৌকোনা রোদ্দুর;
মূলতঃ আমি একটা আকাশের কথা বলছি
যেটা জানালাপ্রসূত,
তার পাশে বাসি সর জমা চায়ের কাপে
কিছু মৃত পিঁপড়ে;
একটু দূরে বইয়ের তাক, কিছু গোছানো বই; আর
ধুলো জমা বিষাদমনস্ক শোপিসের কলোনী;
মূলতঃ আমি তোমর জন্মদিনের কথা বলছি;
অথবা তোমর ফিরে আসার সম্ভাবনার কথা ভেবে
প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ,
আপনাকে নিয়ে এরকম ভাবে লিখতে হবে কখনো ভাবিনি। মৃত্যু তো খুবই একটা স্বভাবিক ব্যাপার, এমনি করে সবাই যাবে। তবুও কেউ চলে যাবে একদিন জেনেও আমরা প্রস্তুত থাকি না। অথবা আমরা এটা সচেতন ভাবে ভাবতে চাই না। তাই খুব অপ্রস্তুত অবস্থায় আপনাকে স্মরন করা যাদুকর।
যেসব গল্প কেউ জানে না-১
------------------------------------