বাংলাদেশে হিন্দুরা যেই পরিমাণ অসহায়ত্ব নিয়ে থাকেন, আমাদের পদে পদে লজ্জা পাওয়া উচিত আমরা এরকম একটা রাষ্ট্রব্যবস্থার নাগরিকত্ব ধারণ করি বলে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচুর চমৎকার সব কাজ আছে। এই সরকারের সময়ে যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে দেশে অতটুকু আর কারো দিয়ে হতোনা এই কথা নিঃসন্দেহ হয়েই বলা যায়। কিন্তু একজন দরিদ্র কৈবর্তের শেষ সম্পদ মাছ ধরা জাল যখন লুট হয়ে যায় ধর্ম রক্ষার নামে, পূজারীর সামনে যখন ধুলায় লুটায় তার পরম আদরের প্রতিমা তখন এইসব উন্নয়নকে মনে হয় সেই মণিহারের মতো। যাকে ধরতে গেলেই লাগে, যারে পরতে গেলেই বাজে। আমরা উন্নয়নের ওম চাই চাই প্রিয় রাষ্ট্র-সুপ্রীয় সরকার কিন্তু আমার দেশের মানুষের চিতার আগুনের তাপে নয়। সময় থাকতে এই আগুন নেভান। চিতা যেন দাবানলে বদলে না যায়। দাবানল দেবালয় এড়ায় না।
কিন্তু এতোকিছুর পরেও থেমে থাকেনি তার বিচার। চট্টগ্রামের এই ত্রাস, রাউজান এলাকার দুর্দমনীয় আতংক শেষ পর্যন্ত ফাঁসির দড়ি গলায় নিয়ে ঝুলেছে। বিচার পেয়েছে তার হাতে নির্যাতিত, নিহত,অত্যাচারীত শত শত মানুষ, সহস্র পরিবার। পয়সা আর গ্ল্যামারের ঝলমলে আলোয় ঝলসে যাওয়া মিডিয়া কোনদিন বলবেনা এইসব অসম সাহসী সাক্ষী যারা প্রাণের ভয় তুচ্ছ করে, সব হারাবার সম্ভাবনাকে অসীম শক্তিতে মাড়িয়ে দিয়ে আদালতে এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন এই অকল্পনীয় দানবের বিরুদ্ধে তাদের কথা। তারা ব্যস্ত হুম্মাম কাদের নামের চৌধুরী পরিবারের আরেকটা অশ্লীল লোকের দম্ভভরা সাক্ষাৎকার নিতে, সালাউদ্দীনের শেষ খাবারের মেন্যু, তার শেষকৃত্যের খুঁটিনাটি বর্ণনা নিয়ে।
দিনের শেষে এই জ্যোৎস্নাবালা এই গোপাল দাশেরাই বাংলাদেশ। মিডিয়া নামের যাত্রার প্রিন্সেসদের নৃত্য শেষ হবার অপেক্ষা না করে এরাই সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর অটল সাম্রাজ্য ধংশ করে, সম্মিলিত হাতে ফাঁসির দড়ি পরিয়ে দেয় এই দানবের গলায়।
মধ্যগহীরা, সুলতানপাড়া, উনসত্তরপাড়া গ্রাম আপনাদের আত্মত্যাগ আজ বাংলাদেশকে নতুন জীবন দিল। জয় বাংলা।
আমরা ছোট একটা প্রতিবাদ জানাতে কুন্ঠিত হই। বড় বড় সমাবেশ করতে চাই, যেখানে বিপুল বৈভবে সাজবে জনতার মঞ্চ। আন্দোলন শুধু বড় মঞ্চে হয়না,আসলে একেবারেই হয়না। সংস্কৃতির আন্দোলনের কথা ভাবুন। আমরা কি ধরে নেই সংস্কৃতি হয় চ্যানেল আই কিংবা এন টিভির প্রচুর অর্থের ঝনঝানাতিতে ঝংকৃত হতে থাকা ট্যালেন্ট হান্টে? এগুলো একেকটা বুদবুদ। সংস্কৃতি বিকশিত হয় বড় শহরের আড়ালে পড়ে থাকা ছোট্ট মফস্বল কলেজের নবীন বরনে, রবীন্দ্রনাথ মিশে থাকেন কোন এক অজ্ঞাত গ্রামের স্কুল শিক্ষকের পাগলামোতে আয়োজন করা পঁচিশে বৈশাখের অনুষ্ঠানে। মুক্তিযুদ্ধ বেঁচে থাকে দূর ভাটি অঞ্চলের রাজাকার চেয়ারম্যানের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে কিছু দরিদ্র কিন্তু দৃঢ় মুক্তিযোদ্ধার আলাদা বিজয় দিবস উদযাপনে।
খুব বেশিদিন আগের কথা নয় যখন যৌনকর্মীরা স্যান্ডেল পড়ে চলাচল করতে পারতেন না।
যৌনপল্লীর কোন যৌনকর্মীর সাধারণ কবরস্থানে কবর হয়না। তাদের জন্য পল্লীতে আলাদা কবরস্থান থাকে। অন্য ধর্মাবলম্বীরাও একইরকম পার্থক্যের স্বীকার হন।
সম্ভবত গত বছর ফরিদপুরে যৌনকর্মীদের নিয়মিত কবরের ব্যবস্থা করেছে দ্য প্রস্টিটিঊট এসোসিয়েশন ফরিদপুর।
বাংলাদেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর আওতায় যৌনকর্মীরাও পড়েন। কিন্তু কোনরকম অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে ৯৯.৯৯ ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের অভিযোগ আমলে নেয়া হয়না উল্টো সামাজিক এক্সপোজারের ভীতি দেখানো হয়।
(আঞ্চলিক ভাষা সংযুক্ত করে অশেষ কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ করেছেন টিউলিপ এবং নীল কমলিনী)
----------------
জয়তুন বেওয়া দুই হাতের ওপর ভর করে হেঁচড়ে হেঁচড়ে আবার মাটির ডিবির সামনে দাঁড়ায়। মাটির গায়ে হাত বুলাতে বুলাতে বলেন তুমার দুক্কু লাগতাসে গো চাষার ব্যাডা? হেয় নাকি মাফ চাইব। রাজার সোয়ামী রে বলে হে মারছিলো? রাজায় মাফ কইরবার কেডা?
জয়তুন বাড়ির পথ ধরে। আলী হোসেন ডেকে বলে ও হেসরি বেডি, বিচার শুইন্না খুশী হইছুনি?? হেঁচড়ে হেঁচড়ে চলে তাই গ্রামের লোকেরা বলে হেসড়ি বেটি।
দেশ ছাড়ার আগে জমানো সব চিঠি পড়েছিলাম একবার দুবার বারবার। নাহিদের বাবা একটা চিঠি লিখেছিলেন। কী অসাধারণ একটা চিঠি। শুরুটাই ভীষন মজার।
"উড়ো চিঠি উড়ো লিখছে এক বুড়ো
চেনাজানা কম হলেও দেশাচারে খুড়ো"
একটা ছোট্ট নোটবুক।লিমি কিংবা রোজীর লেখা
"ছাদ তারা সূর্য নও তুমি
তুমি এক গাধা রানা"
তখন মোবাইলে একমিনিট কথা বলতে সাতটাকা লা...
অন্য জেলার প্রতি আমাদের সিলেটের লোকজনের একধরনের উদাসীনতা আছে। সেই উদাসীনতার আছে আবার বিভিন্ন রুপ। কখনো তাচ্ছিল্য কখনো ভয়।
আমার এক বন্ধুর দেশের বাড়ি ...
বেড়াল জিনিসটা সহ্য করতে পারিনা একদম ছোটবেলা থেকেই।
আব্বা যখন ছিলেন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ঋদযন্ত্র দ্বিতীয়বার বন্ধ করে যন্ত্র নয় মানুষ প্রমান করায়, তখন সোহরাওয়ার্দীতে দেখা যেতো শয়ে শয়ে বিড়াল।
আমি ভয়ে ভয়ে গিয়ে বসতাম আব্বার বিছানায়। ছোট ছোট বেড়ালের বাচ্চা আমার কাঁধে ঝাপ দিতো। পায়ের কাছে বসে উচ্ছিষ্ট খেতো। লাথি দিতে চাইলে ফুসে উঠতো মা বেড়াল।
সেইসব দিন থেকে বেড়াল ঘৃনা করি আমি...
তার পায়ে আলতার রং মুছে যেতে থাকলে
জানতে পারি আজ তার রঙিন দিন ছিলো।
চারপাশ নিকষ শুস্ক। তার আলতা এলোমেলো কী করে?
সে কাঁদছে তাই?পা ভিজিয়ে দেয় চোখের জল?
সে হাত দিলে সাদা কাগজ পদ্ম হয়ে যায়।
সে কালি ছুলে লেখা গুলো পদ্য হয়ে যায়।
তার অশ্রুতে সারা শহর আল্পনা।
তার বদলে তার পা রংহীন হয়।
আমি ভয় পেয়ে যাই।
ভীষন ভয় পেয়ে যাই।
তার আলতা মুছে গেলে লাল ঠোঁট টিয়া কোথায় যাবে?
ভয় পেলে আমার কথা বলা রো...