এক।।
বিয়ের পর এই প্রথম অরণিদের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। গ্রামের নাম কাৎলাসেন। সেখানে থাকেন অরণির বড়মামা, তিনি অকৃতদার। কাৎলাসেন ঢাকা থেকে খুব বেশি দূরে নয় অথচ যাই যাই করেও যাওয়া হয়নি এতদিন। এবারে ঈদ, বড়দিন, আর অনিন্দ্যর স্কুলের ছুটি, সব একসাথে পড়ে যাওয়ায় বেশ লম্বা একটা সময় মিলে গিয়েছে হাতে। বছর জোড়া ট্রাফিকজ্যাম-অফিস-বাজার আর ড্রইংরুমের বৃত্তে আটকে থেকে আমিও হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। অরণির মামার চিঠি পেয়ে ভাবলাম, যাই তিনটা দিন কাটিয়ে আসি।
অনিন্দ্য কখনো গ্রাম দেখেনি। আমি ঢাকায় বড় হওয়া মানুষ, গ্রামের সাথে যেটুকু যোগাযোগ ছিল বাবার মৃত্যুর পরে তার সবটুকুই ঘুচে গিয়েছে। আমার আগ্রহ অনিন্দ্যের চেয়ে কম নয় কোন অংশেই। অরণি অবশ্য চেয়েছিল দেশের বাইরে বেড়াতে যাই, নেপাল, শিলং কিংবা ভুটান।
এক বিষণ্ন বর্ষার সকালে আমরা কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছি বার্মার এক কারাগারের কনডেম সেলের সামনের খোলা জায়গাটায়। উঁচু পাঁচিলের উপর দিয়ে একপাশ থেকে আসছে সূর্যের মলিন হলুদ আলো। সামনের সারিবাঁধা সেলগুলো অনেকটা পশুর খাঁচার মতোই- একটা চৌকিখাট আর পানির পাত্র দিয়েই ভরে গেছে দশ ফুট বাই দশ ফুটের মেঝে। তারই কয়েকটার মধ্যে গায়ে কম্বল পেঁচিয়ে বসে আছে কয়েকজন মানুষ। এরা সবাই ফাঁসির আসামী, আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই ফাঁসি হয়ে যাবে এদের সবার।
সাউথ আফ্রিকা বনাম বাংলাদেশের খেলা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। ৪৭ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ২২৩/৫। ওদেরকে আড়াইশোর নিচে আটকে রাখাই আমাদের জন্য বিশাল সাফল্য তখন। মাত্র তিন ওভার বাকি আছে, খুবই সম্ভব। ধারাভাষ্য দিচ্ছে চৌধূরী জাফরুল্লাহ শরাফত।
অনেকদিন ধরে বিষয়টা নিয়ে একটা লেখা লিখতে চাচ্ছিলাম। লেখাটার মুখ্য উদ্দেশ্য আসলে যারা ‘বাংলা লেখা’ বিশেষত অভ্র অথবা রিদ্মিক নিয়ে লেখালেখি করে বা বিষয়টা জানে তাদের কাছে সরাসরি পৌঁছানো। সেজন্য ফেসবুকে নিজের দেয়ালে না লিখে সচলায়তনের দ্বারস্থ হলাম। সম্প্রতি নতুন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীর নাম শুনে মনে পড়ে গেলো এই বিষয় নিয়ে লেখাটা আর হয়ে ওঠেনি। তাই ব্লগের উপর নতুন কোন আইন পাশ হবার আগেই আমি
গল্প-উপন্যাস এবং সিনেমায় ভুতের যে বর্ণনা পাওয়া যায় তার অধিকাংশই ভুল। ভুত মানেই কঙ্কাল নয়। শরীরের জায়গায় জায়গায় ছোপ ছোপ রক্ত, আর ছেঁড়া ছেঁড়া পচা গলা মাংস নিয়ে ঘুরে বেড়ানো ভয়ঙ্কর যে অবয়ব মানুষের সামনে তুলে ধরা হয় তার সর্বৈব মিথ্যে। ভুতেরা খোনা সুরে কথা বলেনা, তাদের চোখ ভাঁটার মতো গনগনে নয়, যখন তখন যে কোন রূপে আবির্ভুত হবার ক্ষমতাও তাদের নেই।
২০১৩ সালে নটিংহ্যাম এবং ডার্বি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষক জেমস বন্ডের ১৪ টি বই পড়ে, বন্ডের ভদকা মার্টিনি পানের পরিমানের উপর ভিত্তি করে দাবী করে জেমস বন্ড একজন মদ্যপ মাতাল !! হ্যা, ০০৭ , লাইসেন্স টু কিল জেমস বন্ডের কথাই বলছেন দুই লেখক । ১৯৫৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত জেমস বন্ডের ১৪ বই পর্যালোচনা করে তারা আবিষ্কার করেন বন্ড প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১লিটারের (৯২ ইউনিট) মদ খেয়ে চলেছে । এই হারে মদ খাওয়া চালাতে থাকলে অল্প বয়সেই পটল তোলার সম্ভবনা আছে । তাছাড়া মাতাল অবস্থায় জেমস বন্ড প্রায় গাড়ি চালায়, গোলাগুলি করে যা জনসাধারনের জন্যও বেশ বিপজ্জনক ।
ট্রেনে শেষমেশ ঊঠতে পেরে মতিন মিয়া হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। কাঁধের দুটো ঝোলা আর হাতে ধরা শাড়ির প্যাকেটটা নিয়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে সে তাল সামালাতে পারছিল না ভীড়ের মধ্যে । ট্রেন যখন চলতে শুরু করল তখন মরিয়া হয়ে সে দরজার হাতল লক্ষ্য করে ঝাঁপ দিল। একমুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল হাত ফসকে সে বুঝি পড়েই যাবে ট্রেনের চাকার নীচে। এমনকি মৃত্যুভয়ে কেঁপেও উঠেছিল সে। ভাগ্য ভাল যে কিছু হয়নি আর ঝোলাও অক্ষত আছে। এগুলো নষ্ট হলে ক
*****শীতনিদ্রা কাটিয়ে আবার লিখতে শুরু করেছি। লেখার শেষে প্রথম কিস্তির লিংক।
সাত।।
সেই রাত্রেই পালিয়ে এসেছি। পেওলার মুখোমুখি হাবার সাহস হয়নি আমার।
প্রথম বিশ্বের কোন দেশে থাকার অনেক সুবিধা। না খেয়ে মরতে হয় না, নিতান্ত অপদার্থ না হলে ঘুমুতে হয়না খোলা আকাশের নিচে, একটা না একটা কাজ জুটেই যায়। ওয়ান টু পিৎজা ছেড়ে পালিয়ে আসার সময় তবুও খুব চিন্তা হচ্ছিলো। কোথায় যাবো, করব কী, জমানো টাকা ফুরিয়ে গেলে কেমন করে চলবে, এই সব। শেষমেশ বুদ্ধি করে একটা ট্রেনে উঠে পড়েছি। টরোন্টো থেকে ভ্যানকুভার, প্রায় সাড়ে চার হাজার কিলোমিটারের পাড়ি। টিকিটের দাম পড়েছে চার’শ ডলার, প্লেনে গেলে দু’শ ডলারেই হয়ে যেতো। কিন্তু আমিতো আর বেড়াতে যাচ্ছি না। আমার দরকার কিছুটা সময়, ভাবনাগুলোকে গুছিয়ে নেবার জন্য। প্লেনে সেই সময় কোথায়! মাত্র তো পাঁচ ঘণ্টার পথ। রেলগাড়ি চলবে চার রাত তিনদিন। থাকা খাওয়ার খরচ ধরলে চার’শ ডলারে চার দিনের জন্য একটা হোটেলও মেলেনা আজকাল।
ভিয়া রেলের কর্তারা রসিক বটে। ইকোনমি ক্লাসের টিকিটে ভাড়ার জায়গায় লিখে রেখেছেন ‘এস্কেপ ফেয়ার’। আমি নাকের উপর একটা বই রেখে আড়ে আড়ে সহযাত্রীদের দিকে তাকাই। পাশের চেয়ারটা খালি। পরের সারিতে প্রথম সিটে যে বসে আছে তার গায়ে হাওয়াই জামা, মাথায় উল্টো করে ঝোলানো বেসবল টুপি, আসার পর থেকেই সে ফোনে বকবক করে চলেছে সদ্য গোঁফ গজানো কিশোরের মতো। সুখী সুখী চেহারার ওই আধবুড়োটা পালিয়ে যাওয়ার মানুষ নয়।
ডং … ডং … ডং … । অনেক দুর থেকে ভেসে আসা ঘন্টার শব্দ । গোধুলির আলো-আঁধারের আবছায়ার ঘন্টার শব্দটা যেন লেকের টলটলে জলে ভেসে আসছে । হঠাৎ করেই চিন্তাটা এলো মাথায় । সেই ডুবে যাওয়া ঘন্টাটার আওয়াজ নয় তো !! সত্যি তো, ঘন্টার শব্দটা কেমন যেন জলের অতল তল থেকে উঠে এসে লেকের জলের ঢেউয়ে ভর করে ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে ।
এক.
বাসার ঠিক পেছনেই পাইন হিকরির একটা জঙ্গল। যখন বাতাস আসে, যখন হাওয়ার দমকে কেঁপে কেঁপে ওঠে বুড়ো থুড়থুড়ে গাছ গুলোর পাতা, তখন বড় ভয় লাগে, মনে হয় কারা যেন কেঁদে কেঁদে কথা বলছে। বাতাস না থাকলে আবার শুনশান চারিদিক। হঠাৎ হয়তো দুরের কোন গাছের ডালে ডানা মেলে ডেকে ওঠে একটি পাখি, কখনো বা ভয়ার্ত গলায় খ্যা খ্যা করতে করতে বেরিয়ে পড়ে কোন কাঠবিড়ালির ছানা। জংগলটার দিকে চোখ পড়লেই মনে হয় কী যেন একটা গুঁড়ি মেরে বসে রয়েছে গাছগুলোর আড়ালে।