সালেক খোকন
মূল রাস্তার পাশেই আলতাফ আলীর বাড়িটি। পাকাবাড়ির পেছন দিকটায় ছোট্ট একটি বাগান। বাগানে শিম, কলা আর হরেক রকমের গাছগাছালি। বাগানীর হাতের ছোয়ায় শিমগাছের মাচায় ঝুলছে শত শত নীল রঙের শিমফুল। মৌমাছিরা মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে ফুল থেকে ফুলে। সবুজে ঢাকা বাগানটির সোভা যেন বাড়িয়ে দিচ্ছে শিমফুলগুলো।
গোটা বাগানটি নিখাত সমতল। কোথাও কোন উচু নিচু ভাব নেই। নেই কোন কবর ব ...
১
হঠাৎ চমকে উঠে আবার খেয়াল করি। নাহ্, আসলে ওটা কি? ভ্রু কুঁচকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বোঝার চেষ্টা করি। চারপাশের হালকা নীলচে আলো আরও রহস্যময় করে রেখেছে ওটাকে, চমকে ওঠাটাই স্বাভাবিক। অথবা আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। আবার নড়ে উঠে ওর সামনের অংশ। দক্ষিণের দেয়ালে আটকে আছে নীলচে বর্ণের ডিমলাইটটার পূর্ব পাশে কয়েক গজ দূরত্বে। মাত্র পাঁচ ওয়াট হলে কি হবে, লাইটটা সম্পূর্ণ সজাগ হয়ে যে ...
ইন্টারনেট
ছিপ নিয়ে মাছ ধরতে বসি অবসন্ন পুকুরটাতে
এক হাতে এক ধেড়ে ইঁদুর, প্রিয়ার শাড়ি অন্যহাতে।
জল ঘুলিয়ে নোংরা করি অন্ধকারে পৌষমাসে,
পুকুরজলে হাজার হাজার মরা ইঁদুর খেলতে আসে।
শাড়ির ছলে জাল ফেলি রোজ, ছিপের চেয়ে জালই ভালো,
নরম নরম মাছ পড়েছে, নরম নরম চাঁদের আলো।
মাছের পেটে মরা ইঁদুর,জলে আঁধার --- শ্যাওলা ভাসে,
জংলা বুনো লতাপাতা আড়চোখে চায় --- মুচকি হাসে।
অন্ধকার হাঁ করে আর গিলতে চায় ...
স্রী শুধায়, চাল ফুরালো, ডালও শেষের দিকে
অফিস ফেরত ক্লান্ত স্বামীর মুখটা ঠেকে ফিকে।
সাবান মাখেন গালে, সাথে ভাবেন সমান তালে
আয়ের চেয়ে খরচ কিবা কমবে কোনকালে?
চোখ জ্বলে বেশ, তাই তিনি তার হাতটা চালান জোরে
পাড়ার সকল ছেমড়া-ছোড়ার আড্ডা গলির মোড়ে।
মেয়ে পড়ে তার ইন্টারে, বেশ দেখতে লাগে তাকে,
বাড়ির পথে গলির মোড়ের কেউ কি তাকে ডাকে?
টেনশনে আর হয় না গোসল, গলির দিকে ছুটেন
সিড়ির গোড়ায় মেয়েকে দে ...
এটি une saison en enfar এর শেষ বা সপ্তম অধ্যায়। এই অধ্যায়ের শিরোনাম adeu। ধারাবাহিকভাবে দেয়া গেল না বলে দুঃখিত।
_________________________
বিদায়
শরত্ চলে এল। তবে কেন আক্ষেপ অনন্ত গ্রীষ্মের , যদি আমরা মগ্ন থাকি সেই মহিমান্বিত আলোর উদ্ভাবনে -নশ্বর লোকালয়গুলো থেকে যা দূরবর্তী।
শরত্! স্থির কুয়াশা ভেদ করে ছুটে চলেছে আমাদের জাহাজ, গন্তব্য দারিদ্র্যের বন্দর-সেই বিকট শহর যার আকাশ রাঙানো থাকে আগুন আর কাঁদায়। আহ ...
শুধু তিনদিনের একটা ট্যুরেই পারভেজের কপালে জুটে গেল নামকরা দুটো ডিগ্রী। কপাল বটে, যেখানে পাঁচ বছরে টেনেহিঁচড়ে বুয়েট থেকে একটি ডিগ্রী নিতে পারভেজের কদু-টাইপ ভুড়ি এখন পূর্ণ যৌবনে বিকশিত কলসী টাইপে; সেখানে আদনান-রকিব-পারভেজ-শোয়েব-সুমন এর ডিসিশন মেকিং পঞ্চায়েৎ এর এবরশন করে বের করা একটি জমজ ট্যুরের কল্যাণে মাত্র তিন দিনে সে পেয়ে গেল দুদুটো টাইটেল। সুইং মাস্টার (মতান্তরে শুইং মাশটা ...
আঠারো তারিখ, শনিবারঃ
আমি বিলু।
আমার নাম আসলে অনেকগুলো। বিলু,বাপী,বাবন। আর কয়েকদিন পর আমার অবশ্যি কোন নামই থাকবে না। আমি তখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরব, কাগজ টুকাবো। কাগজ টুকানি ছেলেকে কি কেউ বিলুমণি বলে ডাকে? আদর করে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়?
রাস্তায় কারা থাকে? যাদের মা নেই, বাপ নেই, তারা। আমার অবশ্যি সবাই আছে। তাও আমি রাস্তায় থাকবো। কারণ আমার মা আর বাবার মধ্যে শিগগিরি ডিভোর্স হয়ে যাবে।
ক ...
সে পাপই বটে, পাপ নয়?
অনুমতিহীন পদক্ষেপ আঁকো যদি তুমি
নিজস্ব জমিনে কারো, চুপচাপ নয়,
রণভঙ্গিতে, যেন দখল করবে ভূমি?
আমি তাকে পাপ বলি, যদি
ভয়ার্ত শিয়ালের মত তুমি রণেভঙ্গ
দাও-তথাস্তু তথাস্তু বলে, ভাবো, ফোঁস করা অধিপতি
সে ভূমের নিশ্চই বিষধর ভুজঙ্গ।
-শোনো হে সখা, মহাবীরেরা নিষ্পাপ,
তুমি হানো, ভাঙো, লোটো, করো হত্যা,
তুমি মৃত্যু আর ধ্বংসের তোলো বিষভাপ,
বিজয়ীর পাপ নেই, সে চিরকালই মহাত্বা।
- ...
মোল্লা, ডিসেম্বর ২০১০।
১৯৮৯ সালের দিকের কথা। তরুণ আসান্জ্ ও তার সহ-হ্যাকাররা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক নিরাপত্তা সমন্বয়-কেন্দ্রের কম্পিউটার নেটওয়ার্কে গোপনে প্রবেশে সক্ষম হয়। একটি গুপ্ত চোরাছিদ্রের ( back door ) মাধ্যমে তারা অনায়াসে এই সামরিক ইন্টারনেটে ঢুকতে পারতো। আবিষ্কারের পর প্রায় দুবছর যাবৎ এইসব সামরিক কম্পিউটারে তাদের অবাধ বিচরণ ছিল। আসান্জ্ তখন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ণ ...
- মাইনুল এইচ সিরাজী
আমাদের ৫ বছরের মেয়ে কুশিয়ারা। একটু বড় হওয়ার পর যখন সে খাতা-পেনসিলে আঁকিবুকি করতে শিখল, তখন থেকেই সে স্কুলের স্বপ্ন দেখতে থাকল। টিভিতে যখন সে স্কুল-ড্রেস পরা বাচ্চাদের দেখে, কিংবা যখন কোনো স্কুলের সামনে দিয়ে যায়- বলে, মা আমি কখন স্কুলে যাব? বলে, বাবা আমাকে স্কুল-ড্রেস কিনে দাও না কেন?
তার সঙ্গে আমরাও স্বপ্ন দেখি, চার-পাঁচ বছর হলেই তাকে স্কুলে দেবো। শাদা-মেরুন কিং ...