রোবটরা আমাকে ভালোবাসে।
অবশ্য রোবটদের পক্ষে যতটা সম্ভব ততটা। এবং জৈবনিক বিচারে, অবশ্যই। আমার চেহারায় নাদুশনুদুশ শিশুসুলভ একটা ব্যাপার আছে। হয়তো এটা ওদের কপোট্রনিক মস্তিষ্কের বাবাসুলভ প্রবৃত্তিকে জাগিয়ে তোলে। যার দরুন তারা আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য হয়। আর এ ব্যাপারটা আমার দায়িত্ব পালনে খুবই সাহায্য করে।
বসার ঘরের মাঝখানে অনড় পড়ে থাকা রোবটটার সামনে আমি হাঁটু গেড়ে বস...
বইয়ের অমন তালিকাটা দেখলে যে কারোরই হিংসা হবে। আর যদি জানতে পারে যে চার বছর তিন মাসের এক পিচ্চি মেয়ের পড়া বইয়ের তালিকা এটা তাহলে এক্কেবারে নির্বিকার মানুষটিরও চোখ কপালে উঠবেই! মিস ফেল্পস একাই এই আশ্চর্য ব্যাপারটার চাক্ষুষ সাক্ষী ছিলেন আর তার আনন্দ আর বিস্ময়েরও কোন সীমা-পরিসীমাই ছিলো না। কিন্তু একদিক দিয়ে ভালো যে তিনি খুশির চোটে দিশেহারা হয়ে যাননি। যে কোন মানুষই নিজের চোখের সাম...
সুখ কি
দুঃখই বা কি
কতটুকু বুঝি তার, কতটুকু ভান
রক্তে-ঘামে বৃত্ত আঁকে সহস্র সন্তান,
জিতে গেলে একজন হারে অন্যজন
ভীষণ নাগরিক যুদ্ধে ক্ষমতা প্রদর্শন
কেবল অসহায়ত্বে দুর্বলের-দরিদ্রের,
খাদ্যে অলঙ্করণ বেশি, পাশাপাশি
স্বল্পমূল্যে নিয়মিত ভর পরিমাপ;
সেইসব ক্ষমা, যা শুধুই সহজলভ্য ভিক্ষুকের হাতে
সেইসমস্ত আশা, যা বিদ্যমান জ্যোতিষীর অতশীতে
তীব্র আন্দোলন, যা দানা বাঁধে রিকশায় - মিনিবাস...
পুরনো ডায়েরি থেকে..
সেদিন ছিল রবিবার. স্কুল থেকে ফিরছিলাম আমি আর নীপা. রিক্সায় কত গল্প..হঠাত রাস্তায় রিক্সার চেইন পরে গেল. যা হয়, একবার চেইন পড়লে বার বার পড়তে থাকে, তাই হলো. খুব বিরক্ত লাগছিল. বাসায় ফিরেই গোসল করে, খেয়েই ছুটতে হবে সেইন্ট জোসেফ স্কুল এ. বিতর্ক কর্মশালা. যত না শেখার আগ্রহ তার থেকে বেশি আগ্রহ ছেলেদের স্কুল তিতে যাবার জন্য. অবশেষে বাসায় পৌছালাম. মা খুব বিরক্ত. এই ঘন ঘন বিতর্...
জহিরুল ইসলাম নাদিম
এক বনেতে ছিল নাম না জানা শত পাখি।
উড়তো ডালে ডালে
নাচতো তালে তালে
ভোর-বিহানে তারা করতো কত ডাকাডাকি!
নগদ সুখ ছিল, সুখে ছিল না কোনো ফাঁকি।
দোয়েল-শ্যামা-ফিঙে-ময়না-মাছরাঙা-টিয়ে-
থাকতো পাশাপাশি
করতো হাসাহাসি
একটি সুখী ছিল আর জনার সুখ নিয়ে।
বিভেদ কাকে বলে কেউ তো যায়নি শিখিয়ে।
চাইলে মন খুলে সেই পাখিরা গেত গান।
কিচিমিচির সুরে
বায়ুর বুক ফুঁড়ে
ছড়াতো চারিদিকে ভরা...
ডানা ঝাপ্টানোর শব্দটা কানে আসতেই অন্যমনস্ক হয়ে যান মহসিন সাহেব। হাল্কা সবুজ ডানা, ছাই রঙের মাথা আর কালচে লেজ। শেষ কবে সবুজ ঘুঘু দেখেছেন মনে করতে পারলেন না মহসিন সাহেব।
একটা বুড়ো চাপালিশ গাছের মাঝারি ডালে স্থির হয়ে আছে পাখিটা। কেয়ারটেকার মন্টু মিয়ার বিরতিহীন বকবকও ধ্যান ভাঙাতে পারছে না সুন্দর পাখিটার। প্রথম কিছুকক্ষণ শোনার ব্যর্থ চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দিয়েছেন অবশেষে। স্মৃতি...
প্রখর-রোদ্দুর
==========
তোমার হাতে জল ছিলো
আর, আমার বুকে ক্ষয়
মাতাল হাওয়া আকাশ জুড়ে রঙ্গের ফানুষ বয় ।
আমার বুকে অরণ্য
আর, তোমার কাঁধে চর
দরজা খিলান খুঁজতে থাকে আকাঙ্খার-ই জ্বর ।
ঝড়ের মাঝে খড়কুটো
আর, নদীর গায়ে টান
বাতাস করে ফন্দি ফিকির জোয়ার জলে বান ।
চাঁদের গায়ে মখমল সাজ
আর, নেকড়ে গলায় ডাহুক
মাতাল করা জোছনা মেখে রাজকুমারী জাগুক ।
ঢাকায় বেড়াতে এলে গ্রামের আত্মীয়-স্বজনেরা যেসব জায়গায় বেড়াবার বায়না করেন, তার মধ্যে অন্যতম চিড়িয়াখানা, জাদুঘর -এগুলো। এটা সর্বজনীন চিত্র। আমার এক বন্ধু তো জাতীয় জাদুঘরে গিয়ে 'সরষের তেলের গন্ধ' পায়, কারণ সেখানে নাকি এইমাত্র গ্রাম থেকে আসা বাঙ্গালরাও চলে যায়। ঢাকার মানুষের কাছে অবহেলিত এই সরষের তেলের গন্ধসমৃদ্ধ স্থানটাতে কী পায় গ্রামের মানুষ? নাকি এটা শুধু গেঁয়োদেরই স্থান?
যদি ...
রাত ৯ টা। গ্রামীণ রাস্তা, দু'ধারে বাঁশঝাড়। ঝকমকে আলোর ঝলকানি আর বিকট ভো ভো শব্দে একটি মোটরবাইকের সাড়া পেয়ে চিক চিক শব্দ করে দ্রুত রাস্তা পাড় হলো একটি ছুঁচো। রাস্তা পাড়ি দে'য়া ছুঁচোর নিত্য দিনের ব্যাপার। ইদানিং তাকে পড়তে হচ্ছে নানা ঝুট ঝামেলায়।
জানে বেঁচে গিয়ে ধাতস্ত হলো।তার অভিজ্ঞতায় নাই এমন যন্ত্রচালিত জন্তু।
আবহমান কাল থেকে চলে আসা জিনেটিক কোড, পুরাণ, স্মৃতি বা শ্রুতিতে পা...
১.
গোলকগ্রাম। উহার নির্ভুল অবস্থান জানাইবার বোধকরি কোন প্রয়োজন নাই। গোলকগ্রামের সীমানা ছুইবা মাত্র ভদ্রমোহদয়গন ‘দূচ্ছাই’ বলিয়া মিনিট এবং সেকেন্ডের কাঁটা একযোগে উপড়াইয়া ফেলেন; এই অঞ্চলে উহাদের বিশেষ কোন কারবার নাই। ততোধিক কুলীনেরা ঘড়ি ছুড়িয়া ফেলিয়া ক্যালেন্ডার বগলদাবা করিয়া গ্রামে প্রবেশ করেন।
এই গন্ডগ্রামের বিদ্যানাশিনী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অতি দীর্ঘ দুইখানা ব...