"ওরে নীল দরিয়া, আমায় দে রে দে ছাড়িয়া, বন্দী হইয়া মনোয়া পাখি হায়রে..." - ৬ নম্বর বাসে "তিল ঠাঁই আর নাহিরে"- পরিমাণ ভিড়ের মধ্যে এমন কর্কশ আওয়াজের মধুর সংগীত আপনার নজর কাড়বেই। আমারও কেড়েছে। উৎসের দিকে না তাকিয়েই বলে দিতে পারি নকিয়া-১১০০ গোত্রের মুঠোফোন নিঃসৃত এ ধ্বনি।
- হ্যালো, স্লামালিকুম।
মিহি সুর শুনে আন্দাজ করা যায় - উনি তরুণী না হলেও মধ্যবয়স্ক হবেন না। একই সুরে আবার -
- ওয়ালাইকুম সাল...
||১||
ছয় নাম্বার বাড়ির ছাঁদে মিটিং চলছে। এলাকার গণ্যমান্য সবাই উপস্থিত। সবার মধ্যেই উত্তেজনা চেপে রাখার একটা চাপা প্রয়াস। এমন গুরুত্বপুর্ণ বিষয় নিয়ে অবশ্য উত্তেজনা থাকাই স্বাভাবিক।
সভাপতি মহাশয় গলা খাকারি দিয়ে ওঠা মাত্র সবাই মনোযোগ দেন তার প্রতি। সৌম্যদর্শন সভাপতি শ্লেষ মিশ্রিত গলায় তার বক্তব্য শুরু করেন-
‘প্রিয় এলাকাবাসী, আজ এই গুরুত্বপুর্ণ মিটিংএ অংশগ্রহণ করার জন্য আপন...
#১. গতকাল সারাদিন যাব না, যাব না করেও হঠাৎ দুপুর ২টার দিকে সিদ্ধান্ত এবার ছাত্রাবস্থায় শেষবারের মত শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর যে লোকদেখানো ব্যাপারটা সেটা সেরে আসি। ছেলেপিলেদের সাথে আগেই যোগাযোগ করা ছিল, তারা রওয়ানা দিল, আমিই বরং সবার শেষে তাদের সাথে যুক্ত হলাম। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিযে আসলাম। কিছুক্ষণ ছবি তুলে যার যার মত, হলে ফিরে আসা। কিছু সময় পর আরেক বন্ধুর সাথে কর্পোরেট প্রচ...
১। সচলের সাথে ঠিক কবে পরিচয় তা আর দিনক্ষণ হিসাব করে বলতে পারবো না তবে আনুমানিক ২০০৭ এর শেষভাগ কিংবা ২০০৮ এর প্রথমদিকে । তখন 'অভ্র'র সহায্যে নতুন নতুন নেটে বাংলা লিখতে শিখেছি আর গুগুলে যেয়ে বিভিন্ন বাংলা 'কি ওয়ার্ড' দিয়ে সার্চ এর ফলাফল দেখছি, কিছুটা উত্তেজনা আছে ব্যাপারটায় কারণ তখন পর্যন্ত আমার সাত বছরে নেট ব্যাবহারের অভিজ্ঞতায় এটা(নেটে বাংলা লেখা) একেবারে নতুন সংযোজন । যাইহোক বা...
এতক্ষন পর্যন্ত আধো ঘুম, আধো জাগরনে প্রায় আচ্ছন্ন অবস্থাতেই শুয়েছিল জয়িতা। হঠাৎ ডোরবেলের একটানা চিঁ-হি-ই-ই আওয়াজটা যেন তার সমস্ত আচ্ছন্নতাকে খান খান করে দিল। সারা সপ্তাহ একটানা ঘড়ি ধরে সকাল ছ’টায় ঘুম থেকে ওঠা; আর তারপর থেকেই তার প্রাত্যহিক বাঁধা গতের রুটিন লাইফ। ঘর-দোর পরিষ্কার, রান্নাবান্না ইত্যাদি সারতে সারতেই একমাত্র মেয়ে রুম্পির স্কুলের সময় হয়ে যায়। তারপর তাকে তৈরী করে টিফ...
অ বর্ণের অর্থ হল--অস্তিত্বের আধার মাত্র। যে অস্তিত্বকে ধরে রাখে বা বহন করে।
'ক' মানে 'করণ', কিন্তু 'করণ'কে দেখা যায় না, যদি তার আধার না থাকে। তাই 'ক্'+অ='ক'। এই 'ক' মানে 'করে যে' বা 'কারী'। এইভাবে (গ্+অ) 'গ' মানে 'যায় যে'; (প্+অ) 'প' মানে 'পালন বা পান করে যে; (ব্+অ) 'ব' মানে 'বহন করে যে'। অতএব 'অ'-এর মানে হল--'অস্তিত্বকে অবয়ব দেয় যে'। এ হল শুধুমাত্র ধরে রাখা। কিন্তু যাকে ধারণ করা হয়, তাকে লালন -পালন ও তার বিকাশসাধন ...
“মামণি, মামণি”।
মেয়ের আচামকা ডাকে দুপুরের কাঁচা ঘুমটা ভেঙ্গে যাওয়ায় মেজাজ খারাপ করে সাথে সাথে জবাব দেন না সিগ্ধা। ‘ডাকুক গে, থাক। এমন অসময়ে কেউ ডাকে? কি এমন মরার দরকার, গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে দুনিয়া উজাগার করার?’ ভাবতে ভাবতে আবার একটু তন্দ্রামত লেগে আসে। সেই সাত সকালে নাস্তা বানানো, অফিসে নিয়ে যাবার জন্য স্বামীর লাঞ্চের প্যাক তৈরি, বাচ্চাকে ঘুম থেকে তুলে স্কুলে যাবার জন্য তাড়া দ...
পরিস্থিতি তাড়া করে ফেরে মানুষকে।
লয়
সৃজন কিংবা রক্ষণ?
জীবন-আনন্দ কখনো বা নিক্ষিপ্ত ট্রামলাইনের
মৃত্যুহিম নীল খাদে।
কখনো বা আজকের সীজারের দুচোখে
চিরকালীন অজ্ঞতা ও বিস্ময়;
জগদ্দল পাথরের মতন- “ব্রুটাস, তুমিও?”
অমলের দুচোখের পাতায় কালো যবনিকা;
স্টিকিং প্লাস্টারের মতন।
পঙ্কিল ধূসরতায় আচ্ছন্ন হরিৎ।
ব্যতিক্রম কখন আসে
রসায়নের পদার্থশ্রেণীর মত।
দায়িত্ব নেয় সৃজন, লালনের।
মুক...
আমাদের ঘরের পাশেই 'মিষ্টি' আম গাছটা ছিল। পাশে না, পাশে না। ঘরের ভিতর। ঘরের ভিতরই তো! না হলে বারান্দাটা ঐ কোণে এসে বেঁকে গেল কেন? আমাদের বারান্দাটা গাছটাকে একদম দেখতে পারত না, আর আমাদের সবার প্রতি ভীষণ ক্ষোভ তার। গাছটার প্রতি আমাদের পক্ষপাতিত্বের কারণে বাড়ির ডিজাইনের মাঝে গাছটা এসে পড়লেও তা আর কাটা হয়নি, বরং ছেঁটে দেয়া হয়েছে হতভাগা বারান্দাকে। আর আমরা গাছটার প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হব...
খুব বেশি দিন হয় নাই আমার বিদেশ আসার।ভাগ্যের অশেষ কৃপায় হোক আর নিজ কর্মের গুনেই হোক, বাংলাদেশ থেকে বি এস সি (Engg.) শেষ করে ভর্তি হলাম বেশ নামী একটা বিশ্ববিদ্যালয় এ। যেটা কিনা আবার পৃথীবির শ্রেষ্ট বসবাস যোগ্য শহর এ অবস্থিত। নুতন পরিবেশ, নুতন মানুষ, নুতন শহর সব মিলিয়ে বেশ ভালোই যাচ্ছিল।যেহেতু মাস্টার'স প্রোগ্রাম এ পড়া, তাই প্রথম থেকেই একটা ধরনা ছিল যে, পড়া শেষ না করে বুঝি আর দেশে যাওয়া হব...