ইয়ার ফাইনালের ক'দিন আগে একদম টিপিক্যাল বাংলা সিনেমা কায়দায় টেলিগ্রাম এলো, ফাদার ইল, কাম শার্প। নিচের ঠিকানাটা উত্তরের এক জায়গার। খোঁজ নিয়ে জানা গেলো কদিন আগে বাবা বদলি হয়ে ওখানে গেছেন আর গিয়েই অফিসের বদলে হাসপাতালে। সেই ধ্যাদ্ধেড়ে গোবিন্দপুরে চব্বিশ ঘণ্টায় বাস যায় একখানা, তাও কেবল রাতের। উপায় নেই বলে বিরস মুখে তাতেই চাপতে হল। টিকেটে লেখা আছে আরামদায়ক সুপার সেলুন কোচ। একটু পরেই দেখি সুপার সেলুন কোচ
সেবার অনেকদিন বাদে বাবা বাড়ি ফিরল একটা কলার ডোঙা হাতে করে। বৃষ্টিটা সবে ধরে এসে চারদিকে তখন ছায়া ছায়া সন্ধ্যে নামছে একটু করে। বর্ষার শেষাশেষি বিকেলগুলো যেমন হয়, ভেজা ভেজা স্যাঁতস্যেঁতে। চারপাশ ভিজে থুবড়ে আছে। গাছপালার পাতা থেকে সরসর টুপটাপ পানি পড়তে ব্যাঙগুলো ঝিঁঝিঁদের সাথে পাল্লা দিয়ে ঘ্যাঁ ঘোঁ ঘ্যাঁ ঘোঁ করে রাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে একসাথে। এর মাঝে লম্বা লম্বা পা ফেলে শেওলা ধরা উঠোনটা মাড়িয়ে বারান্দায় উঠে এসে ডোঙাটা সামনে বাড়িয়ে ধরে একমুখ হাসি দিয়ে বাবা বললে, দ্যাখো, তোমার জন্যে কি এনেছি! হ্যাপি বার্থডে!
খুব ভোর ভোর গাড়িটা থামতে ঘুম ভেঙে বাইরে তাকিয়ে চোখে পড়ল দুধারে নিয়নের সার দেয়া চওড়া কালো পিচের রাস্তা এঁকেবেঁকে চলে গেছে দূরে। এদিকে রাতে বোধ হয় বৃষ্টি হয়েছিল, পথঘাট সব ভেজা ভেজা। রাতের বাতিগুলো নেবেনি এখনও কিন্তু ওপাশের আকাশ লাল করে সূর্যটা উঠে আসছে। পাশ থেকে ভাইয়া অল্প একটু ধাক্কা দিয়ে বললে, আর কত ঘুমোবি, উঠে পড়, ঢাকায় চলে এসেছি। জানলার বাইরের শেষ দেখতে না পাওয়া নিওন বাতিজ্বলা প
ব্যাচেলরদের ঘরগুলো কেন যেন একই রকম হয়। হাজার গোছানো থাকলেও কেমন একটা ছেলে ছেলে গন্ধওলা লক্ষ্মীহীন হাবভাব ছড়ানো থাকে। সেরকম একটা ঘরে বসে থাকতে থাকতে খেয়াল করে দেখলাম আমার বয়েসখানা যেন অনেকটা কমে গেছে। কিশোরী কিশোরী চেহারায় লাল চেলি পড়ে সেজেগুজে লজ্জা লজ্জা মুখ করে বসে আছি সে বাড়ির বাড়িউলির সামনে। ইনফরমেশন আছে মহিলা ভয়ানক দজ্জাল, কথাবার্তা সাবধানে বলতে হবে।
জগতের কিছু মানুষ আছে যারা বেজায় চটপটে বুদ্ধিমান। ভালো বাংলায় যাদের বলে প্রত্যুৎপন্নমতি। এরা হল নেহাত পচা মানুষ। এদের জন্যেই তো আমরা যারা অন্য দলটায় পড়ি তারা দেখে দেখে কিছু শিখতে পাইনা। এরা কিনা কোথাও আটকায়না, তরতরিয়ে এগিয়ে যায়। এরা ঠিক জায়গায় ঠিক কথা বলে, ঠিক কাজ করে, এমনকি ঠিক সময়ে হাজির হয়ে যেকোনো কাজ ঠিকঠাক উতরে দেয়। অথচ যত রাজ্যের মুশকিলে পড়ি আমরা; মানে আরও ভালো করে বললে, আমি।
ছিল রুমাল, হয়ে গেলো টকটকে একটা বেড়াল। এমনটা কি হয়না ? দিব্যি হয়। সুকুমারের বইতে যেমন, এই সচয়ালতনেও তেমনি কি আর কম হয়! এই যেমন, আমি। ছিলাম নেহাত খাই দাই ঘুমাই টাইপ ঘোরতর এক সংসারী, হটাত হয়ে গেলাম সচলায়তনের আশালতা।
আজ চৈত্রের সতেরোয় কোথাও কিচ্ছু পাল্টে যায়নি তবু দিনটা খুব অন্যরকম হয়ে গেলো। আজ নিজের করে একটা নাম পেলাম। এমনিতে চেনা পৃথিবীতেও আমার একটা নাম আছে অবশ্য। কিন্তু আজকাল নিজেই সেটা ভুলতে বসেছি। সচলবন্ধুদের সে নাম বললেও ব্যাবহার হতে দেখিনা। সচলের কাছে তাই আশালতাই থেকে গেলাম। খুব অদ্ভুত এক যাত্রার শেষ হল আজ। অথবা শুরু।
পরীক্ষা দিতে বসে একটা শব্দ কিছুতেই মনে করতে পারছিলাম না। কতক্ষণ কলম পেন্সিল কামড়ে লাভ না হতে পাশের বান্ধবীকে গুঁতোলাম-
-এই, ঐ শব্দটা যেন কি রে ?
- কোনটা ?
- ওই যে শুকনো করে লম্বামত...
- ??!
- আরে, ওই...যেটা বেশ সরু সরু... গাছের ডালে পাওয়া যায়...
- !!!
- আহ্..., ওই যেটা দিয়ে পুলিশরা মারে... ওই যে...
অনেকদিন হল এই শহরে আর বৃষ্টি হয়না।
শহরের কি প্রাণ থাকে আমাদের মত ? ওরাও তো বেড়ে ওঠে, প্রাচীন হয় ; মাঝে মাঝে মন খারাপ করে মরে যেতে থাকে ঠিক আমাদের মত । এই শহরটারও আজ তেমনি মন খারাপ বুঝি। বহুদিন বৃষ্টির দেখা পায়না যে। টলটলে জলে তার ভেজা হয়না কতদিন। অযত্নে বেড়ে ওঠা ছেলের খড়ি ওঠা হাত পায়ের মত তার ইঁট কাঠ পাথরের পরতে পরতে ধুলো ময়লার ক্লেদ। বহুদিন হল বৃষ্টিরা ভালোবেসে কপালে চুমো আঁকেনা বলে দোয়েলের ছবি আঁকা নোটের দিকে ভিখিরির প্রতীক্ষিত চোখ নিয়ে তাকায় আকাশে আকাশে।
[এটা বস্তুত সচলাড্ডার বিবরণ দেবার পোস্ট নয়, এটা শুরুতেই বলে রাখা ভালো। সচলবাজি একটা পৌনঃপুনিক বিষয়। তাই এর পর বলে কিছু হয়না আসলে। এটাকে সচলদের সাথে আশালতার আলাপ প্রলাপ নিয়ে বিলাপমূলক পোস্ট বলা যায়। ]
আমার চেনা লোকেদের সামনে 'আশালতা একজন অতি আলাপি স্বভাবের মিশুকে মানুষ' জাতীয় বাক্য বললেই তারা যে ফ্যাচফ্যাচ করে বিচ্ছিরি রকমের হাসতে শুরু করবে এ ব্যাপারটা প্রায় নিশ্চিত। খুব বড় শত্রুও আমার নামে এ অপবাদ দেবেনা। এই তো সেদিনও একজন আমায় 'মানসিক জড়তাগ্রস্ত' বলে তার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে কানে ধরে বের করে দিয়েছে । দোষ বোধ হয় আমারই। লেখক বা পাঠক শুনেই যে কাউকেই এড করে ফেলার বদভ্যাস আছে আমার। কিন্