একটা সময় ছিল যখন নতুন বছরটা আসত যেন ঘোড়ায় চেপে, টগবগিয়ে। তখন নতুন বছর মানেই নতুন ক্লাস, কাগজের মায়াবী গন্ধ মাখানো নতুন বই; তাতে রাত জেগে পুরনো ক্যালেন্ডারের মলাট লাগানো। হিম কুয়াশার ভোরে নতুন জুতো মোজা জামা গায়ে স্কুলে যেন উড়ে যেত মন। সেসময়টায় থার্টি ফার্স্টের হুল্লোড়ের সাথে পরিচয় হয়নি আমাদের। মাঝরাতে টিভিতে বম্বের হিরো হিরোইনরা নেচে কুঁদে একশাও হতেন না। তাই বলে কি নতুন বছরের আবাহন হত
সকালটা শুরুই হল তুমুল হট্টগোলে। ঘর থেকে বেরুতেই দেখি বসার ঘরে চার থেকে আট বছর বয়েসি চার পাঁচটে বিচ্ছুর গলা দিয়ে বিকট আওয়াজ বেরোচ্ছে। ব্যাপার ঘোরতর; একজনের পায়ের ওপর দিয়ে আরেকজন ট্রাইসাইকেল চালিয়ে ইচ্ছে করে 'আকসিটেন' করায় এই শোরগোল। বিচার সালিশ শুরু করার আগেই ক্রন্দনরত অত্যাচারিত উঠে এসে অত্যাচারীর প্যান্ট টেনে নামিয়ে দিয়ে প্রতিশোধ নিয়ে নিল । এইবার অত্যাচারীর আঁতে বিষম চোট লাগায় সে রেগে
একটা সময় আমার এইম ইন লাইফ ছিল আইসক্রিমের ফেরিওলাকে বিয়ে করার। বুদ্ধিতে কুলোয়নি যে তার বদলে আস্ত এক আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিককে বিয়ে করা যায় অথবা নিজেই ওরকম এক ফ্যাক্টরির মালিকও হতে পারা যায়। সোজাসুজি মাথায় এসেছিল ফেরিওলার ডিব্বায় থাকে লাল সবুজ কাঠি আইসক্রিম, এমনিতে চাইলে তো দেবেনা, তাহলে বিয়ে করাটাই সোজা উপায়। তাই অনেকদিন পর্যন্ত আইসক্রিমওলাই ছিল আমার হিরো। চাকরি হিসেবেও ওটাই ছিল টপ ফেভ
ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার বিল্ডিঙের একটা রুমে দাঁড়িয়ে আছি। একটা চিঠি আমার নামে ইস্যু হবার কথা দু সপ্তাহ আগেই। সেটা এখনও আসেনি কেন তার খোঁজে এসেছি, কিন্তু যে ভদ্রলোক সেটার হদিস দিতে পারেন তিনি সম্ভবত সৃষ্টিকর্তার খাস লোক। চাইলেই চন্দ্র সূর্য থামিয়ে দেবার ক্ষমতা রাখেন। গত দুদিন টানা সারাদিন বসিয়ে রেখেছেন, আজও ঝাড়া তিন ঘণ্টা বসিয়ে রেখেছেন, মুখ তুলে কথা বলার সময় পাচ্ছেন না। এর মাঝে পাশের লোকের
তারেক অণুর মত কিছু লোক থাকে যাদের পায়ের তলে সর্ষে থাকে। সাধারণ সর্ষে নয়, বেশ বড় বড় দানার বিলেতি সর্ষে। তাইতেই তারা সরসরিয়ে গড়গড়িয়ে উত্তর মেরু দক্ষিন মেরু করে বেড়ায়। আমি সে জাত নই। আমার ভুগোল জ্ঞান একেতো 'ম্রাত্মক খ্রাপ', তায় আবার পায়ের নিচে রয়েছে চুইংগাম। এমনি চুইংগাম নয়, 'বিগ বাবুল' টাইপ বিগ সাইজ চুইংগাম। তাই আমি যেখানেই যাই ধেবড়ে বস
নিজের স্কুল কলেজের দৌড়ঝাঁপ পেরিয়েছি বহদিন হল, তবু এখনও তৃষ্ণার্ত কাকের মত ছুটির দিনগুলোর জন্যে ক্যালেন্ডারের দিকে তাকানো ফুরলো না। ব্যস্ত নাগরিক হুড়োহুড়ির মাঝে ছুটির দিনগুলো বেশির ভাগ দিনই ঘুম ডে হয়ে যায়। পুজোর লম্বা ছুটি পেয়ে তাই বেশ আহ্লাদ হল। কিন্তু আয়েশ করে পায়েস খাবার দিন আর নেই। দুপুরবেলায় কাজ সেরে ল্যাপিটা নিয়ে বসতেই টিং টং বেল। গিয়ে দেখি আমাদের নতুন পড়শি দেখা করতে এসেছেন।
ঝানু তাত্ত্বিকেরা বলে মৃত্যুইচ্ছা নাকি মানুষের সহজাত স্বভাব আর তাইতেই সকলের নাকি খালি খালি মরে যেতে ইচ্ছে করে। কথাটা এমনিতে নেহাত মন্দ নয়। আমাদের জীবনে আমরা কথায় কথায় অসংখ্যবার মরে যেতে চাই। কিন্তু সত্যি করে মৃত্যুর সামনে পড়লে বোঝা যায় এইসব কথা বার্তা কি বিশ্রি রকমের ছেঁদো। অনেক বছর আগে একবার ছোট্ট এক কাঠের নৌকায় করে সেন্ট মার্টিন থেকে ফেরার সময় সমুদ্রঝড়ের কবলে পড়ে বুঝেছিলাম মৃত্যুভয় কি
বয়েসের দোষ নাকি কে জানে, আজকাল বিয়ে 'খেয়ে' তেমন আরাম পাওয়া যাচ্ছেনা। রোদবৃষ্টির ভ্যাপসা গরমের মাঝেও সেদিন একখানা বিয়ের দাওয়াতে গেলাম। দেখি এসিওলা ফিটফাট কমিউনিটি সেন্টারের ফুলসাজানো কোণায় বরকনে হাসিমুখে সোফাসিন। সুবেশী সুশীল লোকজন সবাই এসে মাপা হাসি দিয়ে কথা বলছে, টকাটক ছবি তুলছে, ভিডিও উঠছে। এসবকিছু শেষ হতে ওদিকে টেবল রেডি, ঝাঁক বেঁধে সবাই গিয়ে বিরিয়ানি খেয়ে মিছরি দেয়া পান চিবোতে চ
মানুষ 'চিনতে' পারা এক বিরাট গুণ। এই বিরাট গুণের ছিটেফোঁটাও যে আমার নেই সেটা অ্যাবাকাস ব্রেন বলেই হয়ত বুঝতে জীবনের অর্ধেক পার হল। মানুষের সাথে পরিচয় হলে আমি তার যে কোন একটা বৈশিষ্ট্য মনে আঁকড়ে ধরে বসে থাকি, অন্য আর কিছু চোখেই পড়েনা। তার ফলও হয় সাঙ্ঘাতিক। একবার হা হা করে প্রাণ খুলে হাসতে পারা এক ছেলের সাথে পরিচয় হতে ধারণা হল, আহা, এমন যে হাসতে
ক্লাস এইটের ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট পেয়ে একদম বোকা হয়ে গেলাম। অঙ্কে পেয়েছি চৌত্রিশ। রেজাল্ট কার্ড হাতে পেয়ে মনে হল, 'এই অমূল্য রতন লইয়া আমি কি করিব ?' সবাই এমন ভাব করতে লাগলো যেন পৃথিবীতে এই প্রথম অঙ্কে কেউ এই নাম্বার পেয়েছে। এক বান্ধবী আত্মহত্যা করার দারুন একটা আইডিয়া দিয়ে দিল। বলল, "বেশি করে বেগুন খা। বেগুনের পাতলা চোকাগুলো পেটের নালিগুলোর গায়ে আটকে যায় মাঝে মাঝে। সেই থেকে ঘা হয়ে পে