আশালতা এর ব্লগ

পাগল তোমার জন্য হে

আশালতা এর ছবি
লিখেছেন আশালতা (তারিখ: রবি, ২১/০৮/২০১১ - ১০:১০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সিভিল সার্জেন সাহেবের কন্দর্পকান্তি ছেলেটি পড়াশোনায় তুখোড়। লোকে বলত, এছেলে বাঁচলে কালে একটা কেউকেটা না হয়েই যায়না। সেই ছেলে পরীক্ষায় কি এক অঙ্কের উত্তর মেলাতে না পেরে পাগল হয়ে গেল। ঘরে ফিরল বদ্ধ উম্মাদ হয়ে। দিগম্বর হয়ে সারাদিন ঘরের দেয়ালজুড়ে নানারকম আঁক কষে বেড়ায় আর মেলাতে না পেরে ঝপাঝপ মাথায় পানি ঢেলে এসে ভেজা গায়ে আবার লিখতে বসে। সন্তু একদিন দেখে ফিক করে হাসতেই চোখ গোল করে তেড়ে


সারমেয় সার

আশালতা এর ছবি
লিখেছেন আশালতা (তারিখ: বুধ, ১০/০৮/২০১১ - ৯:২১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দশ বারো দিন আগে পরে আমাদের গ্রামের বাড়িটায় কোত্থেকে দুটো কুকুর এসে হাজির হল। রোগাভোগা শুকনো মলিন মুখ। একজনের আগুনেরঙা বড় বড় ঝোলানো লোম আরেকজন খয়েরি কালোয় মেশানো নেহাত দিশি চেহারা। আমাদের বাড়িটায় লোকজন নেই, সারাবছর খালিই পড়ে থাকে। তাই ওরা হাজির হল পাশের বাসায়। সেটা বড়মামার বাসা। সেখানে লম্বা টানা মাটির বারান্দায় তিন বেলা তিরিশ চল্লিশজনের পাত পড়ে। এরকম সম্পন্ন গেরস্থের বাসায় দুটো কুকু


হত্যা অথবা মৃত্যু

আশালতা এর ছবি
লিখেছেন আশালতা (তারিখ: শনি, ০৬/০৮/২০১১ - ৯:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছোটখাটো শ্যামলা চেহারার নাজমা বেগম থাকেন ছোট্ট এক উপজেলা শহরে। পরিবার পরিকল্পনা অফিসে হেলথ ভিজিটর পদে কাজ করেন, স্বামী সেই অফিসেই আরও নিচু এক ধাপের কর্মচারী। এঁদের ছেলেমেয়েরা মাঝে সাঝে শহরে বেড়াতে এলে আমাদের পাড়াসুদ্ধু বাচ্চাদের বড় দুঃখ হত। দুঃখটা বৈষয়িক। ওরা ওই বয়েসেই ব্যাটারিওলা গাড়ি, আলোজ্বলা কেডস এইসব দুর্লভ সম্পদের অধিকারি ছিল। একবার মেয়েকে সোনার ঘড়ি কিনে দিয়ে আমাদের সবাইকে তাক লাগি


আদ্যিকালের গল্প

আশালতা এর ছবি
লিখেছেন আশালতা (তারিখ: মঙ্গল, ০২/০৮/২০১১ - ৮:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বড় হয়ে যাওয়ার একটা মস্ত অসুবিধে হল ইচ্ছেমত ছোটবড় হওয়া আর চলেনা, সারক্ষন বড় সেজেই থাকতে হয়। অথচ ছোটরা কি মজা করে চাইলেই বড় হতে পারে, আবার ছোটও। এই যে ভাইয়ার ছেলেটাকে দেখি বাবার শার্ট টাই গায়ে জড়িয়ে, রঙের বাক্স হাতে ঝুলিয়ে গম্ভীর গলায় বলে, 'অফিসিস যাই'। এদিকে টলমল পায়ে দুপা যেতে না যেতেই লম্বা কাপড়টায় পা বেঁধে দড়াম করে পড়ে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে চিৎকার করে 'মাটিকে মারো, মাটিকে মারো!


মরাপাতার স্বপ্ন

আশালতা এর ছবি
লিখেছেন আশালতা (তারিখ: শনি, ৩০/০৭/২০১১ - ১০:৫৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অদ্ভুত এক অস্থিরতা নেমেছে আজ জীবন জুড়ে । সাদাকালো সেই অস্থিরতার রঙে ঘর গেরস্থালি ধূসর হতে থাকে। কোথায় তার শুরু, কোথায় বা শেষ জানতে শিখিনি আজও। শুধু জানি তার ধীর নাগপাশে নিঃশ্বাস আঁট হয় কেবল। মানবী নই, যেন ভীরু হরিণী, কোন করাল থাবার নিচে গুঙিয়ে কেবলি পরাজিত মৃত্যুবরণ। চারপাশের কায়দাকেতার অন্ধকারে সামাজিক হায়েনারা ওঁত পেতে থাকে কখন মৃত শরীরটাকে ছেনে নিয়ে নামা যাবে হিংস্র উল্লাসে, পেয়ে যাবে


আলো

আশালতা এর ছবি
লিখেছেন আশালতা (তারিখ: বিষ্যুদ, ২১/০৭/২০১১ - ৯:৩৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পর্বতপ্রমাণ হোমটাস্ক না করার বাহানা করলেই এক একদিন বৃদ্ধ পণ্ডিতমশায় কাঁপা তর্জনী তুলে বলতেন, বুঝলি, শরীরের নাম মহাশয়, যাহা সওয়াবি তাহাই সয়। আমরা সন্ধি-সমাসের গোলক ধাঁধায় ব্যস্ত হয়ে মাথা ঝাঁকিয়ে ওসব কথা বাতাসে উড়িয়ে দিতাম। এখন বুঝি অভ্যাসের ব্যাপারে তিনি কি নিদারুন সত্যি কথা বলতেন । তাইতেই ছোট্ট মিতিন নানুর বাড়ি গিয়ে প্রথমবার একখানা হারিকেন দেখে জুলজুলে চোখে ভারী মন দিয়ে দেখল নানু কি


কচিকাঁচা কথা

আশালতা এর ছবি
লিখেছেন আশালতা (তারিখ: বুধ, ২০/০৭/২০১১ - ২:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছুটির সন্ধ্যায় জম্পেস পারিবারিক আড্ডা চলছে, এর মাঝে ছোট্ট তুতুন মাকে জিজ্ঞেস করে বসল, আমি তোমার পেটে কি করে এলাম আম্মু ?


নিখাদ হাবিজাবি

আশালতা এর ছবি
লিখেছেন আশালতা (তারিখ: সোম, ০৪/০৭/২০১১ - ৮:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমাদের স্বভাবের একটা অদ্ভুত দিক আছে। আমরা অনেকেই সবকিছু বিনিময় মুল্যে হিসাব করি। এই জিনিষটার দাম এত, ওই জিনিষটার দাম তত, এইরকম। ভারী বাজে ব্যপার। টাকায় যার মাপ হয়না সেটা যেন নেহাত খেলো, ফালতু জিনিষ । আমাদের কলেজের প্রিন্সিপাল স্যারের বাসায় নিয়ম ছিল কেবল বড় লোকের ছেলেমেয়েরা ওনার ছেলে মেয়ের সাথে মিশতে পারবে এবং ওনাদের বাসায় যেতে পারবে। গরিব গুর্বোর ছেলেমেয়ের ওনার বাসায় প্রবেশের অনুমতি ছ


ইচ্ছে মোতি

আশালতা এর ছবি
লিখেছেন আশালতা (তারিখ: শুক্র, ০১/০৭/২০১১ - ৮:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথমবার শালবনে গিয়ে অদ্ভুত লেগেছিল। এক পাশে চওড়া কালো ফিতার মত পিচের রাস্তাটা দিয়ে হুস হুস করে সভ্য মানুষের বাস ট্রাক ছুটছে কিন্তু রাস্তা টুকু পেরোলেই সবুজ বন। কি সুন্দর। বনের ভেতর এঁকে বেঁকে ঘুরে গেছে লাল মাটির রাস্তা। সেই পথ বেয়ে একটুখানি ভেতরে গেলেই সভ্যতার চেনা শব্দ গুলো আবছা হতে হতে মিলিয়ে যায়। তখন চারদিকে হরেক পাখির অচেনা শিস, ঝিঁ ঝিঁ পোকার তান আর হাওয়ার সরসরানি। শুকনো পাতাগুলো মাড


প্রেম একবার এসেছিল নীরবে

আশালতা এর ছবি
লিখেছেন আশালতা (তারিখ: সোম, ২৭/০৬/২০১১ - ৯:০৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শীতের সকালটায় হি হি করে কাঁপতে কাঁপতে স্যারের বাসায় পড়তে গিয়ে দেখি বাগানের পুরনো বেদিটায় একা একা বসে আছেন। বললেন, 'আজ পড়াব না রে, মনটা ভালো নেই'। সবাই খুশি মনে ফিরতে শুরু করতেই ডেকে বললেন, 'আশালতা, তুমি থাকো, তোমার সাথে কথা আছে'। আমি অবাক হওয়ার চেয়ে চিন্তিত হলাম বেশি। কারন একা ফিরতে হবে। তার মানে রোজদিন দরজার আড়ালে গোলাপ হাতে দাঁড়িয়ে থাকা উনার পাগল ছেলেটার সামনে দিয়ে একাই যেতে হবে, এইট