বিড়াল জিনিষটা এমনিতে দূর থেকে দেখতে বেশ ভালো। দিব্যি নরম সরম, বেশ একটু বাঘ বাঘ ভাব আছে । কিন্তু মুশকিল হল, এ জাতীয় প্রাণীটি সামনে এলেই ভেতরে কেমন একটা বিজাতীয় বিদ্বেষ অনুভব করতে থাকি । বিড়ালপ্রেমীরা এই স্বীকারোক্তিতে আমার মুণ্ডু ছিঁড়ে ফুটবল খেলতে চাইলেও কিছু করার নেই। কোদালকে কোদাল বলাই উচিত। তার ওপর কোদাল নিজেই যদি তার কারন তৈরি করে তাহলে তো আরও বেশি উচিত।
বাবার অফিস থেকে সন্ধ্যে নাগাদ দুজন লোক এসে কি বলতেই মা যেন কেমনধারা হয়ে কাছের চেয়ারটায় ধপ করে বসে পড়লেন। এই ছবিটায় না থাকলেও বাবা সম্পর্কিত এটাই আমার প্রথম স্মৃতি। পরের স্লটের দৃশ্যটায় দেখি ঐ লোক দুজনের সাথে মা, ভাই আর আমি শীতের রাতে একটা গাড়িতে করে ছুটে চলেছি কোথায়। কে একজন বলছে, আমরা বডি নিতে যাচ্ছি। আরেকজন ধমকে উঠে বলছে, আহ্, কিসব বল, এখনও কনফার্ম হয়নি তো। পাশের সিটে মা পাথরের মত মুখ
মিশকালো সিরিঙ্গে চেহারার কালীমোহন বুড়োকে দেখলেই আমার মেছো ভুতের কথা মনে হত। তখন সদ্য সদ্য নিজেই বানান করে গল্পের বই পড়তে শিখে গেছি। ছবিওলা বাংলার ভূতের গল্প মুখস্ত প্রায়। কালী বুড়ো আমাদের জমি দেখা শোনা করার প্রাচীন কামলা। ময়লাটে হেটো ধূতি আর হাতে একটা নারকেলি হুঁকো - এইই হল তার সারাবছরের ভূষণ। খুব শীতে বড়জোর একটা মার্কিন কাপড়ের টুকরো চাদরের মত গায়ের ওপর ফেলে রাখত । গ্রামের মাটির বাড়িটার
আজকাল রোদন করিনা । পাছে পাঁজর পাথর ফেটে সমুদ্র প্লাবন হয় তাই রোদন করিনা আর। বহুদিন হল বোকাটে কষ্টদের বাক্সবন্দি করে সিল গালা দিয়ে আগল রেখেছি পুরে। ভেতরে তারা ফিসফাস করে সিঁদ কেটে কেটে মাথা কুটে মরে । জানেনা তো সিঁদকাঠিতে আজকাল ভেজাল থাকে ভীষণ । এখন আমার সূর্য সকালে সোনা রোদ হাসে তাই । ক্রন্দসী মেঘ বালিকারা ভোরের আলো চুরি করেনা । রোজ দিন জানালায় ডোরা কাটা চড়ুইএর এলোমেলো গান ।
'ওয়াকিং ডিসট্যান্স' কথাটার মাজেজা দেশের বাইরে যারা গিয়েছেন তাঁরা সম্ভবত হাড়ে হাড়েই বোঝেন । একবার কলকাতায় গিয়ে হাতে কলমে শিখেছিলাম আমিও । যে হোটেলে গেলাম প্রথমে, সেটায় খাবার বন্দোবস্ত ছিলনা । বলল, চিন্তা কি দিদি, এই তো সামনেই খাবার দোকান, ওয়াকিং ডিসট্যান্স । ওদের 'ওয়াকিং ডিসট্যান্স' এর সংজ্ঞাটি তখনও জানা ছিলনা বলে পট করে হোটেল নিয়ে নিলাম । এদিকে ক্ষিধের মুখে বের হয়ে দেখি ত্রিসীমানায় ক
সুয়োরানীর হয়েছিল হাড় মড়মড়ে রোগ, আমার হল উদ্ভুট্টি কান কট কটে ব্যারাম । থেকে থেকে কানের ভেতর কটকট কটকট । কী যে জ্বালা । দেখেবেছে এক ডাক্তারের কাছে হাজির হলাম । দেখি বিরাট সাইন বোর্ডে বড় করে নাম লেখা, বুলন্দ্ চৌধুরী । বাহ, বেড়ে নাম । শুনতেই বেশ তেজিয়াল বোধ হয় । ভেতরে গিয়ে দেখি বেঁটে খাটো শুকনো চেহারার শ্যমলা রঙা অমায়িক বৃদ্ধ । মনে হল, যাহ্, নামকরণের সার্থকতা তো ঘটল না !
দুঃস্বপ্নের চোখে চোখ রেখে শুধোই, ভালবাসা কি ভুল ছিল ?
হা হা করে হেসে উঠে বলে, ছিল, ছিল । ভুল অঙ্কই করিস কেবল ! বুঝিস নাতো কিছু । মাথা নেড়ে স্বগতোক্তি করে, এ খুকিটা কিচ্ছু বোঝে না মা, এ যে ভারী ছেলে মানুষ ! হা হা হা ...।
আমাদের পাড়ায় কুখ্যাত এক বকুল গাছ ছিল । ঝাঁকড়া ডাল পালাওলা বিরাট চেহারা । বড়রা বলত 'দাগী গাছ' । দাগী চোরের মত দাগী গাছ । দুষ্টু জ্বিনের বাদশা সেটায় বাস করত বলে এমন নামকরণ । জ্বিনের বাদশার সাথে আমাদের ছোটদের কোন বিরোধ ছিলনা, বরং মনে হত উনি আমাদের একটু প্রশ্রয়ই দেন । কাজেই এত বড় তথ্য জানা থাকলেও ওইসব আমরা আমল দিতাম না ।
বাঁকা শিঙওলা, ভূষভূষে কালো রঙের বিরাট এক মোষের পাশে বসে আমার স্কুলের প্রথম দিনটা শুরু হয়েছিল । এখনকার বাচ্চারা কি সুন্দর কার্টুন আঁকা ব্যাগ, বারবি পানির বোতল নিয়ে টুক টুক করে ঝাঁ চকচকে স্কুলে পড়তে যায় । আমাদের সময়ে এত কিছু ছিলনা । বাবার ছিল বদলির চাকরি, তাতে আবার ওপরঅলাদের তৈল সিঞ্চনে অপারগ । অবধারিত ভাবেই কিছুদিন পর পর ট্রাকের পেছনে মাল সামান নিয়ে এ শহর ও শহর করতাম আমরা । সেবার গেলাম পলাশ
আজ ব্লগ ঘাঁটতে গিয়ে দেখি একজন প্রমীলা ব্লগার 'ধুর ছাই এই বোরিং জীবন আর ভাল্লাগেনা' বলে একটা আহাউহু পোস্ট দিয়েছেন, আর সবাই উনাকে ভাল লাগাবার নানারকম উপদেশ দিয়ে চলেছেন । এই কাণ্ড দেখে আমার জয়নবদের কথা আবার মনে পড়ে গেল ।