এক.
তারপর জানা যায় কোন এক ভুল বুঝে চলে গেছে কেউ,
কোন এক কথা তবু থেকে গেছে বাকি; --
থেকে যায় অপসৃত ফোঁটা জল, প্রতিশ্রুত ঢেউ!
০১.
নন্দদুলাল, দুলালীরা সবকিছুতেই হাই
হাই এটিচ্যুড, তাপ্পি-বাজি - ফরেন লাগা চাই;
দেখলে পরে মনে হবে ভিনদেশি এক ভুল
ভুল বলেনা ভুল বলেনা বলতে হবে ‘কুওওওল’।
০২.
তাল পেকেছে গাছের ডালে, চুল পেকেছে খোলে,
পাকতে নাকি বয়স লাগে, হদ্দ-দাদু বলে;
এইযে দেখি শিশুরা সব -- ইচ্ছে পাকাপাকি
কম্পুদাদুর চুল-দাঁড়িটা পাকিয়ে দেবে ঠিকই;
পৃথিবীটা হাতের মুঠোয় যথেষ্ট এক ক্লিকই
হাঁপ ধরে যায় যন্ত্র হলে, যন্ত্র হলে টের পাওয়া যায় জীবন মানে যান্ত্রিকতায় তোমার আমার ভুল হয়ে যায়; ভুল হয়ে যায় বলেই বোধহয় থমকে গেলে আর চলেনা সাড়া দেয়া, নাচেনা আর কাঠবেরালি, খরগোশেরা বন্দী এখন কারাগারে, সব ফুলেরা পালিয়ে গেছে শহর ছেড়ে; সবাই পালায়। পালাতে পালাতে অস্থির হয়ে গেছে জারুলেরা সব -- পাখীদের মত ডানাময় পাপড়ি, খসে যেতে যেতে, যেতে যেতে, কেবলই জেনে যায় -- এর চেয়ে ঝড় ভালো!
তুমি ভেবে দেখো, অযাচিত কৌতূহলের ছন্নছাড়া আক্রমণে আমাদের কতখানি নিজস্ব ভূমি দখল হয়ে গেছে, কতটা দখল হয়ে গেছে আমাদের নির্জনতা, আমাদের পরিসর; আমাদের নামে’র আড়ালে মরে গেছে বিভিন্ন আমাদের মানুষ আমাদের অভিন্ন অবয়ব নিয়ে —প্রতিটি মানুষের চোখে স্বপ্ন ছিলো, ছিলো বিশ্বাস, গর্ব আর সুন্দর পৃথিবী গড়ার অঙ্গীকার — সাম্য, সংহতি। এইসব মৃত্যুর দায়ভার কেউ নেবেনা। আমাদের মৃত্যু পৃথিবীকে মহৎ করেছে, মানুষকে করেনি।
অথচ তোমার ভিড়ে লুকোচুরি খেলে দেখি একফোঁটা বুনোজলে ঢাকা পড়ে গেছে তৎপর উষ্ণ আকাশ, রোদ সমাহিত। কৃতার্থ বনভূমি নিবেদিত বাতাসের উতলা তরঙ্গে আহরিত বিষ ঢালে, তোমার শেকলে জমে পরবাসী স্বেদকণা, স্তূপাকার; নিঃশ্বাসে নৈবেদ্য যার, তার তবু ইজেলের পেলব ত্বকে প্রতিটি রাতের ছোবলে আধেক জীবন;
অধম গোলাম হইতে উত্তম যদি তার দেশপ্রেম থাকে।
অধম গোলাম হইতে উত্তম যদি সে নরাধম না হয়, যদি তার না থাকে পশু প্রবৃত্তি।
অধম গোলাম হইতেও উত্তম যদি তার মওদুদি-দাড়ি-টুপি সম্বল না হয়।
একজন অধমের সাথে তবুও ভুল করে মেলানো যায় হাত, গোলামের সাথে আমৃত্যু নয়!
একদিন দাড়াতে হয় যতিচিহ্নের মুখোমুখি, একদিন জানা যায় আর কোন খোলা নেই অবারিত পথ, আপাতত এই। একদিন জেনে নেয়ার চাইতেও নিতে হয় মেনে - সব পথ শেষ হয় কোন এক গহ্বরে!
অতলান্ত গিরিখাতে একদিন তাকিয়ে দেখি অপরিসীম শূন্যতা স্থির হয়ে আছে, স্থির হয়ে জমে থাকে আবদ্ধ বাতাস। মানুষের তলানিতে তবুওতো বিষ, নির্বিষ ছাই থাকে দাবানলে;
সবকিছু হরেদরে মিলে গেছে বলে কি মিলে যেতে হবে? মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে ছবিতে যাদের দেখি জামাতের সাথে হাত মেলায়, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক হয়ে যায়, সব করতে পারে - তাদের দেখে কি হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দিতে হবে? মেনে নিতে হবে আমার নিজস্ব সামর্থ্যে যতটা করা সম্ভব আমি তাও করবোনা?
জামাতের সব টাকা মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসে - এই প্রচলিত মিথ এর দিন এখন আর নেই।
স্মিতহাস্য সক্রেটিস পুত্রবৎ বন্ধুদের কহিলেন -
“ প্রজ্ঞার অন্বেষণে, চষিয়াছি জ্ঞানী জনে;
দেখিলাম কাহারো অজ্ঞেয় কিছু নাই,
যখনই জানিতে চাই
কি আছে অজানা আর কিবা অজ্ঞেয়,
তাহা জানেনা কেহ।”
অতঃপর ক্ষণকাল নির্বাক রহিলেন।
নিষ্পলক চক্ষুদ্বয়, চাহনি সুদূর,
কহিলেন - “কিছুই হইলোনা জানা,
জ্ঞান সসীম নহে অসীম সমুদ্দুর,
আমি তাহাতে মাত্র ক্ষুদ্র বালুকণা”।
হেমলকে মরে নাই প্রজ্ঞা, ঢের বিকশিত