যদি প্রশ্ন করা হয় পৃথিবীতে সবচে' শান্তির জায়গা কোনটি? অনেকের মতো আমিও সপাটে জবাব দেবো বইমন্দির। অর্থাৎ গ্রন্থাগার। রাশি রাশি বইয়ের ভাঁজে শান্তি বড় স্বস্তিতে মুখ ডুবিয়ে থাকে। বইয়ের কাছে গেলে মনে বড় শান্তি শান্তি ভাব আসে। সেরকম পড়ুয়া না হলেও বই বরাবরই ভীষণ প্রিয়। আর বই মেলা তো প্রিয়'র তালিকার গুরুদেব।
মদ্র দেশের নিঃসন্তান রাজা-রানী, অশ্বপতি এবং মালবী সন্তানের আশায় সূর্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সাবিত্রীর নামে পুজো দিয়ে এক কন্যা সন্তান লাভ করেন। দেবীর প্রতি সম্মান জানিয়ে মেয়ের নামকরণ হয় 'সাবিত্রী'। কালক্রমে সেই মেয়ে নিজের সতীত্বের বিশাল ব্যাপক নজির রাখেন। যেকারণে হিন্দু পুরাণে তিনি 'সতী সাবিত্রী' হিসেবে খ্যাত। হাসান আজিজুল হকের দ্বিতীয় উপন্যাস "সাবিত্রী উপাখ্যান" এর কেন্দ্রিয় চরিত্র সাবিত্রী'র নামকরণ সেই দেবী কিংবা রাজকন্যার নামানুসারে হয়েছিল কিনা জানা নেই। তবে সূর্যের আলো কিংবা তথাকথিত সতীত্বের অহংকারের ঠিক বিপরীতে চরিত্রটির নির্জীব অবস্হান। এই অবস্হান নিয়তি নির্ধারিত ছিল না। কিছু পশুর অধম মানুষ আর বিকলাঙ্গ সমাজ সাবিত্রীর পরিণতির জন্য দায়ী। যে কারণে, পরবর্তীতে আলোহীনতার মাঝে সাবিত্রীর স্বস্তি খুঁজে ফেরা। বিকারগ্রস্হ হয়ে মৃতপ্রায় একটা কিশোরী জীবন টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া মর্মান্তিক বার্ধ্যকের দিকে(পঁচাশি বছর বেঁচে ছিলেন সাবিত্রী)।
চিঙ্গিস আইৎমাতভের আলোড়ন তোলা সাহিত্যকর্ম হিসেবে যে নাম পাঠক মনে ভালোবাসায় জেগে থাকে, নিঃসন্দেহে সেটি 'জামিলা’। আইৎমাতভের সুবিখ্যাত এ সৃষ্টির প্রথম প্রকাশ ঘটে রাশান ভাষার মাসিক পত্রিকা 'Novyj Mir' এর ৮ম সংখ্যায়। প্রকাশের সাল ১৯৫৮। ওই একই বছরে কিরগিজ ভাষী পত্রিকা 'Ala-Too' এর দশম সংখ্যায় এটি প্রকাশিত হয়, তবে ভিন্ন নামে। কিরগিজ পত্রিকা 'আলা টু’ তে নভেলাটি 'মেলোডি(Melody)' নামে প্রকাশিত হয়। ১৯৫৯ সালে ‘জামিলা’ রুশ-কিরগিজ দু'ভাষাতে মলাটবন্দী হয়ে পাঠকের হাতে ধরা দেয়। ফরাসি সাহিত্যিক লুই আহাগঅঁ(Louis Aragon) 'জামিলা' পাঠে দারুণ মুগ্ধ হয়ে ১৯৫৯ সালেই বইটি ফরাসী ভাষায় অনুবাদ করেন। লুই আহাগঅঁ মতে, ‘জামিলা ''বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর প্রেমের গল্প"।
একাধারে তিনি কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গীতিকার, চিত্রনাট্যলেখক, নাটক রচয়িতা, প্রবন্ধকার, কলামিস্ট। মানুষটির অনেকগুলো পরিচয়। যেকারণে তাঁকে সব্যসাচী লেখক হিসেবে অভিহিত করা হয়। কিন্তু তিনি নিজে ঠিক কোন পরিচয়ে স্বস্তিবোধ করেন? উত্তরটা সৈয়দ শামসুল হক নামের সব্যসাচীর মুখেই শুনে নেয়া যাক "কবিতা হচ্ছে ভাষার সর্বোত্তম, সর্বোচ্চ, সবচে' সাংকেতিক প্রকাশ। কাজেই যিনি কবিতা লিখেন তাঁকে কবি-ই বলতে হবে, এবং তাঁর অন্য সব লেখা ঐ কবি কাঠামো থেকেই ওঠে আসে।" আগাগোড়া কবিতায় মগ্ন সৈয়দ হকের স্বগোতক্তি," আমাকে যদি আরেকটা জীবন দেয়া হয় আমি শুধু কবিতাই লিখতাম" বোঝা যাচ্ছে, তিনি নিজেকে একজন কবি হিসেবে ভাবতে সবচে' স্বস্তিবোধ করেন। আর স্বস্তি যেখানে, সুখের মতো সৃষ্টিশীলতাও সেখানে বসত গড়ে। দু'হাতে তাই লিখে গেছেন সৈয়দ হক 'সৃষ্টি সুখে উল্লাসে', অজস্র অজস্র কবিতা। চিত্রকল্পের দৃশ্যগত ও ইন্দ্রিয়গম্য দুটি ধারা সৈয়দ হকের কবিতাকে পাঠকের কাছে করে তোলে হৃদয়গ্রাহী, জীবন্ত।
সবার শৈশবের ইনিংসটা দুধেভাতের সম্ভাবনা নিয়ে শুরু হয় না। আমরা অনেকেই দূরে চলে যাওয়া শৈশবকে আহ্লাদে ভেসে গিয়ে কাছে ডাকতে চাই। অনেকেই হয়ত তাদের শৈশবের বুকে বেশ করে ইরেজার ঘষে লোপাট করে দেয়া যেতো যদি, এমন আক্ষেপ নিয়ে দীর্ঘশ্বাস চাপেন। আমাদের ভাবনায় যে শৈশব আছে মলিনতাহীন, নিটোল এক সুন্দরের সরোবর হয়ে; অনেকের কাছে সেটা কেবলি সীমাহীন দুঃখের। সৌভাগ্যবশত আমরা যারা দারুণ শৈশবকে মুঠোবন্দী করতে সক্ষম হয়েছি, তারা ফেলে আসা চিররঙিন দিনগুলোর প্রতি সবটুকু ভালোবাসা মেখে বলতে চাই 'ভালো থেকো মেলা, লাল ছেলেবেলা, ভালো থেকো।' অন্যদিকে কষ্টময় শৈশবের মানুষটি তখন বয়ান করেন তার তিক্ত জন্ম ইতিহাস, 'একহাতে ফুলের গন্ধ, আরেক হাতে নরকের দুর্গন্ধ মেখে আমার জন্ম।'
ভণিতা:
ইতিহাস একজন বেচারা দর্শক মাত্র। তার বুকের উপর এফোঁড় ওফোঁড় করে কত নায়ক মহানায়ক কতশত কাণ্ডকীর্তি করে যায়, ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে দেখা ছাড়া বেচারার আর কিছুই করার থাকে না। কিন্তু ইতিহাস পাঠক চাইলে সেই কীর্তিগুলো উল্টে পাল্টে যাচাই বাছাই করে দেখতে পারে, সত্যি-মিথ্যা নির্ণয়ের চেষ্টা চালাতে পারে। নগন্য ইতিহাস পাঠক হিসেবে সেরকমই একখানা দুঃসাহসিক চেষ্টার ফলাফল এই পোস্ট। এটি শতভাগ নির্ভুল এমন বোকাটে দাবী করছি না। পোস্টখানা একজন খুব জটিল রহস্যময় ঐতিহাসিক রাজনৈতিক ব্যক্তির বৈচিত্রময় উত্থান সম্পর্কে দু'পয়সার কিছু ভাবনা ভাগ করে নেবার চেষ্টা মাত্র।
সহস্র বছরের স্হির বিশ্বাসের হেজিমনিতে যে কোনো আঘাত আমরা সইতে পারিনা। সংস্কারের মিথ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখলে আমরা কেমন একাট্টা হয়ে হৈ হৈ করে উঠি। নিজে আমিষভোজী বা বিবাহের বিপক্ষের বলেই যেন বিপরীত অবস্হানের মানুষের পছন্দকে প্রশ্নবিদ্ধ করায় আমার রায় দেবার অধিকার জুটে যায়।এক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তির একান্ত ব্যাক্তিগত যৌন আচরণের সাথে যদি আমাদের ছকবন্ধ পছন্দের ঠোকাঠুকি লাগে তবে তো হয়েই গেল!
সাহিত্যিক সন্তোষকুমার ঘোষ তার একটি লেখায় বলেছিলেন, "পৃথিবীর সব গল্প বলা হয়ে গেছে, এখন কীভাবে বলতে হবে সেটাই জানা প্রয়োজন।" এ ব্যক্তব্যের পক্ষে বিপক্ষে যথেষ্ট যুক্তিতর্কের অবকাশ আছে। সে প্রসঙ্গে যাচ্ছি না। তবে বলে ফেলা গল্পগুলোকেও অন্যভাবে বলবার আকাঙ্ক্ষায় কেউ কেউ কলম ধরেন বৈকি। তখন জানা কাহিনি কিংবা জানাশোনা জনপদের চেহারা নতুনভাবে ধরা দেয় যেন আমাদের চোখে। নইলে ক্ষুধার্ত জনজীবন কিংবা নিম্নবর
আমি আস্তিক, আমার পরিবার আস্তিক, এবং আমার চোদ্দগুষ্টি আস্তিক ছিলো বলেই জানি। আস্তিকতা হলো ধর্মের প্রতি বিশ্বাস, নাস্তিকতা হলো ধর্মের প্রতি অবিশ্বাস। অধিকাংশ আস্তিক উত্তরাধিকারসুত্রে এবং জন্মগতভাবে। নাস্তিক হয়ে কেউ জন্মায় না, বড় হয়ে নিজস্ব উপলব্ধি, পড়াশোনা, পরিপার্শ্ব ইত্যাদি বিচার করে কেউ কেউ ধর্মে আস্থা হারিয়ে নাস্তিক হয়ে যায়। যারা আস্তিক তাদের কেউ কেউ খুব বেশী ধার্মিক হয়ে যায়, আর কেউ গা বাঁচিয়ে চ